���������������������������
জিমে অনুশীলনের সময় সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর উপায়
শরীরচর্চার সঠিক কৌশলের মাধ্যমে সুঠাম দেহ গঠনের ক্ষেত্রে জিমে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। আর স্বাভাবিকভাবেই থাকে কিছু সতর্কতার প্রশ্ন। কেননা শরীর গঠনের ষোলকলার পাশাপাশি জিমে যেসব উপকরণ থাকে সেগুলোর সঠিক ব্যবহার না জানলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
তাই, জিম করার সময় কোন ধরনের বিপদ হতে পারে এবং সেগুলো এড়িয়ে চলার উপায় জানা জরুরি। চলুন, জিম করার সময়কে আশঙ্কামুক্ত করতে আগেভাগেই এই প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
জিমে ১০টি বিপদ ও সেগুলো থেকে পরিত্রাণের উপায়
জিমের উপকরণে ত্রুটি
জিমে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি থাকে, যেগুলোর প্রত্যেকটির কাজ ভিন্ন ভিন্ন। জিমের নতুন সদস্যদের ক্ষেত্রে প্রথম প্রথম এগুলো ব্যবহার করতে যেয়ে মুশকিলে পড়া মোটেই অস্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে আকারে বড় ও ভারি ওজনের সরঞ্জামগুলো নতুনদের জন্য বেশ বিপদজ্জনক। অসাবধানতাবশত এগুলোর যে কোনোটির ভুল ব্যবহার শুধু উপকরণটির ক্ষতি নয়, ব্যবহারকারীর জন্যও গুরুতর দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
পরিত্রাণের উপায়
প্রতিবার জিমে প্রবেশের পর প্রথমেই পুরো জিম ঘুরে উপকরণগুলো একবার পরিদর্শন করুন। কোনোটিতে কোনোও অসঙ্গতি চোখে পড়লে অবিলম্বে তা জিম কর্তৃপক্ষকে জানান।
সঠিক ব্যবহারের নির্দেশিকা নিয়মিত অনুসরণ করতে করতে এক সময় অভ্যস্ততা চলে আসবে। এছাড়াও ব্যবহার জানার জন্য জিম কর্তপক্ষের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যার প্রবণতা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ
অনুপযুক্ত শরীরচর্চা ও কৌশল
জিমে ভর্তি হওয়ার মুল কারণ সুষ্ঠু ও সঠিক অনুশীলন, যেটা বাসায় একা একা শরীরচর্চার ক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। এই পরিমিতির মধ্যে একদম অল্পও ঠিক নয়, আবার সাধ্যের বাইরে অতিরিক্তও ঠিক নয়। আগ্রহ জাহির করতে যেয়ে সাধ্যাতীত অনুশীলন বা বিস্তারিত না জেনে বা না শিখে ভুলভাবে শরীরচর্চা বিপদের কারণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে এমনকি হাল্কা নড়াচড়াও পেশিতে দীর্ঘমেয়াদি আঘাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
পরিত্রাণের উপায়
এর জন্য ফিটনেস সেন্টার এবং তার প্রশিক্ষকদের ব্যাপারে আগেই ভালোভাবে গবেষণা করে নিতে হবে। ভালো একটি জিমের সঙ্গে একবার সংযুক্ত হতে পারলে শরীরচর্চার পুরো প্রক্রিয়াতে দ্বিধাহীন থাকা যায়। প্রশিক্ষকের নির্দেশনা বিস্তারিত মনযোগ দিয়ে শুনুন ও বোঝার চেষ্টা করুন।
পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারলে তবেই নিজে নিজে চেষ্টা শুরু করুন। একজন দক্ষ প্রশিক্ষক কখনোই প্রথমে ভারি ও শক্ত অনুশীলনগুলো করার পরামর্শ দিবেন না। বরং হাল্কা ও সহজ কাজগুলো সুচারুরূপে করার দিকে অধিক গুরুত্ব দিতে বলবেন।
আরও পড়ুন: স্তন ক্যান্সার সচেতনতায় গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা ও সেমিনার
ডেঙ্গু প্রতিরোধ: বাড়িকে মশামুক্ত রাখার প্রাকৃতিক উপায়
সাম্প্রতিক ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যে গ্রাম ও শহর সব পরিবেশেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাসায়নিক প্রতিরোধে দ্রুত সমাধান মিললেও অনেকেই খুঁজছেন তার নিজ বাড়িকে মশা মুক্ত রাখার প্রাকৃতিক উপায়। এই নির্দেশিকাটিতে রোগ-জীবাণু বহনকারী মশা থেকে পরিত্রাণ পেতে কিছু ব্যবহারিক কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হবে। চলুন, আপনার আশ্রয়টিকে মশামুক্ত রাখার জন্য এমন কিছু উপায় জেনে নেওয়া যাক, যেখানে আপনার স্বাস্থ্য ও চারপাশের পরিবেশ দুই-ই ভালো থাকবে।
বাড়িকে মশামুক্ত রাখার ১০টি প্রাকৃতিক উপায়
জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়া
মশা যে কোনো স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় জমে থাকা স্থির পানিতে বংশবিস্তার করে। তাই আপনার বাড়ির চারপাশে উন্মুক্তভাবে জমে থাকা পানির উৎসগুলো নির্মূল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য ফুলের পাত্র, পোষ্য প্রাণির ঘরে থাকা পাত্রের মতো যাবতীয় পানির পাত্রগুলো নিয়মিত খালি ও পরিষ্কার করতে হবে।
এখানে বিশেষ নজর দিতে হবে নর্দমার দিকে, যেন মশা ডিম পাড়তে না পারে। পুকুর বা ফেলে দেওয়া জিনিসগুলোতে জমে থাকা খুব অল্প পরিমাণ পানিও মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করতে পারে।
প্রয়োজনীয় সতর্কতা
- মশার ডিম বা ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শ রোধ করার জন্য জমে থাকা পানি অপসারণের সময় প্রতিরক্ষামূলক পোশাক ও গ্লাভস পরুন।
- স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় পা পিছলে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সম্ভাব্য মশার প্রজনন স্থান, বিশেষ করে নর্দমার মতো জায়গাগুলো থেকে পানি সরানোর সময় সতর্ক থাকুন।
মশা প্রতিরোধকারী ফ্যান ও আলোর ব্যবহার
মশা তাড়ানোর এক্সস্ট ফ্যানের শক্তিশালী বাতাস মশা ও অন্যান্য পোকামাকড়কে বাড়ির কাছাকাছি উড়তে দেয় না। বায়ু প্রবাহের এই প্রতিরক্ষামূলক বেষ্টনীটি বাড়ির বাইরে কাছাকাছি এলাকায় কৌশলে স্থাপন করুন।
পাশাপাশি বাড়ির আঙ্গিনায় ব্যবহৃত আলোতে হলুদ বা এলইডি লাইট ব্যবহার করা মশা তাড়ানোর কার্যকারিতা আরও বাড়িয়ে দিবে। এ ধরনের আলো মশার কাছে কম আকর্ষণীয়। বাড়ির আশেপাশে যে জায়গায় মশা বেশি জড়ো হয় সে স্থানগুলোতে এই আলো স্থাপন করুন।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে ৫ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬৭৮
প্রয়োজনীয় সতর্কতা
- ফ্যানগুলো এমন জায়গায় স্থাপন করুন যেন তা আপনার ও পরিবারের মানুষদের জন্য দুর্ঘটনার ঝুঁকির কারণ না হয়।
- লাইটগুলো মশা তাড়ানোর পাশাপাশি বাড়ির বাইরের নির্দিষ্ট এলাকায় আলো দিতেও কাজে লাগে। তাই এগুলোর ভালো মানের হওয়া উচিত। তাছাড়া কোনো ত্রুটি দেখা দিলে মেরামতের জন্য আপনার সহজসাধ্য হয় তা নিশ্চিত করুন। এ ধরনের ফ্যান ও লাইট উভয়ের ক্ষেত্রে দক্ষ টেকনিশিয়ানের সাহায্য নেওয়া উত্তম।
জানালায় পর্দা টাঙানো
মশাকে বাড়ির বাইরে রাখার জন্য জানালার পর্দা টাঙানো যেতে পারে। জানালা ও দরজাতে যেন কোনো রকম গর্ত বা ফাঁক না থাকে। মশা এবং অন্যান্য পোকামাকড়কে বাইরে রাখার জন্য নেট সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে। কেননা এটি ঘরের ভেতর তাজা বাতাস চলাচল করতে দেয়। সন্ধ্যায় এবং ভোরবেলা যখন মশার উপদ্রব সবচেয়ে বেশি থাকে, তখন জানালাগুলোর পর্দা টেনে দিলে ভালো কাজ দিতে পারে।
প্রয়োজনীয় সতর্কতা
- নিয়মিত জানালার পর্দাগুলোর যত্ন নিন। অল্প ছেঁড়া বা গর্ত থাকলেও তা দ্রুত ঠিক করুন।
- বাতাস চলাচলে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এমন ধুলো অপসারণ করতে নিয়মিত পর্দা পরিষ্কার করুন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় বছরের সর্বোচ্চ ৫০০ জন হাসপাতালে ভর্তি
জানালা ও দরজায় মশা প্রতিরোধী নেট ব্যবহার
এটি আপনার ঘর থেকে মশা দূরে রাখার একটি কার্যকর প্রাকৃতিক পদ্ধতি। নেটের সূক্ষ্ম ছিদ্রগুলো শুধু মশার জন্য প্রতিবন্ধকতাই তৈরি করে না, ঘরের ভেতর তাজা হাওয়াও ঢুকতে বাধার কারণ হয় না। টেকসই নেটটি সঠিকভাবে স্থাপন করা হলে এর কার্যকারিতা থেকে সর্বোচ্চ উপকারিতা পাওয়া যাবে।
স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক মেডিটেশন ছড়িয়ে যাক সর্বত্র
বর্তমান বিশ্বে সংক্রামক ব্যাধির চেয়ে অসংক্রামক ব্যাধির প্রকোপই বেশি।
হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মেদস্থূলতা, বিষন্নতা, অনিদ্রা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, স্ট্রেস ইত্যাদির ফলে মৃত্যুর হার ক্রমশই বাড়ছে।
এইসব অসুস্থতা থেকে মুক্ত থেকে সুস্থ কর্মক্ষম জীবন পেতে সচেতন মানুষ তাই ঝুঁকছেন এখন লাইফস্টাইল পরিবর্তনের দিকে।
আর লাইফস্টাইল পরিবর্তনের একটি বড় উপাদান হলো দৈনন্দিন জীবনে মেডিটেশন বা ধ্যানচর্চাকে অন্তর্ভুক্ত করা। দিনে ২০-৩০ মিনিট ধ্যানচর্চা হতে পারে প্রশান্ত ও সুস্থ জীবনের পথে একটি উল্লেখযোগ্য অনুঘটক।
সঙ্গে বৈজ্ঞানিক খাদ্যাভ্যাস, যোগব্যায়াম, শারীরিক পরিশ্রম, ভালো ঘুম, ইতিবাচক চিন্তা, হাসি ইত্যাদি যুক্ত হলে তো কথাই নেই। অসংক্রামক ব্যাধির দৌরাত্ম্য কমে যাবে। বেড়ে যাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, কর্মক্ষমতা ও প্রাণচাঞ্চল্য। ফলে সংকুচিত হবে চিকিৎসা-ব্যয়। যা ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও ফেলবে ইতিবাচক প্রভাব।
আরও পড়ুন: মেডিটেশনকে ভ্যাটমুক্ত করার আহ্বান বিশিষ্টজনদের
আশার কথা, আমাদের দেশে সামগ্রিকভাবে এখন মেডিটেশন ও সায়েন্টিফিক লাইফস্টাইল নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি যোগ-মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগে. (অব.) ডা. আব্দুল মালিক, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুনসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহল মনে করছেন, পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্যে বিদ্যমান চিকিৎসার পাশাপাশি প্রয়োজন মেডিটেশন।
‘ভালো মানুষ ভালো দেশ স্বর্গভূমি বাংলাদেশ’- বিশ্ব মেডিটেশন দিবসের এ প্রতিপাদ্যকে বাস্তবে রূপ দিতে সুস্থ সবল কর্মউদ্যোগী মানুষের কোন বিকল্প নেই। তাই মেডিটেশনকেও সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেয়া এখন সময়ের দাবি।
সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই ২০২১ সাল থেকে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন দিবসটিকে উদযাপন করে আসছে। এবছরও ২১ মে রবিবার সকাল ৬টায় সারাদেশে বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে সমবেত হবেন ধ্যানীরা।
মেডিটেশন চর্চার ভেতর দিয়ে সুস্থতা ও প্রশান্তির বাণীকে ছড়িয়ে দেবেন সবার কাছে।
আরও পড়ুন: দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে টোটাল ফিটনেস ডে
বাংলাদেশে পয়েন্ট অব কেয়ার টেস্টিংয়ের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে: শাবি অধ্যাপক
বর্তমানে বাংলাদেশে পয়েন্ট অফ কেয়ার টেস্টিং বা ডায়াগনসিসের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. গোকুল চন্দ্র বিশ্বাস।
শনিবার বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এতথ্য জানান।
তিনি জানান, পয়েন্ট অব কেয়ার টেস্টিং বা ডায়াগনসিস হলো এমন একটা প্রক্রিয়া, যেখানে মাইক্রো অথবা ন্যানো স্কেলের ডিভাইস বা চিপ ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি নিজ বাসভবন বা কর্মক্ষেত্রে বসে অথবা নিকটবর্তী ক্লিনিকে দ্রুত সময়ে স্বল্প খরচে রোগ নির্ণয় করতে পারেন।
এছাড়াও বর্তমানে তার তত্ত্বাবধানে মাইক্রোফ্লুইডিক ভিত্তিক পয়েন্ট অব কেয়ার টেস্টিং নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালু হয়েছে। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যানবেইজ কর্তৃক গবেষণা অনুদানের মাধ্যমে ক্যান্সার এবং সংক্রামক ব্যাধির জন্য পয়েন্ট অব কেয়ার টেস্টিং বা ডায়গনোসিস সিস্টেম ডেভেলপ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অধ্যাপক ড. গোকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, যেমন দু’টি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে-আমাদের দেশে প্রতিনিয়তই ডায়াবেটিস টেস্ট করার জন্য গ্লুকোমিটার ও চিপ ব্যবহার করা হয়; অপরদিকে প্রেগনেন্সি টেস্ট স্ট্রিট ব্যবহার করে গর্ভধারণের পজেটিভ অথবা নেগেটিভ রেজাল্ট নির্ণয় করা হয়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ১০দিনব্যাপী 'কিনে'র বইমেলা
এ দুক্ষেত্রেই ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না বরং মানুষ ঘরে বসেই তাদের প্রয়োজন সম্পাদন করতে পারেন। উন্নত বিশ্বে সংক্রামক ও অসংক্রামক ব্যাধিকে লক্ষ্য করে প্রচুর পরিমাণে পয়েন্ট অব কেয়ার টেস্টিং এর গবেষণা চলছে। এই টেস্টগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলো অনেক বেশি লাভবান হতে পারে কারণ রোগীকে ডাক্তারের শরণাপন্ন কম হতে হয়, এবং ক্লিনিক বা হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।
এতে করে অর্থ ও সময় দু’দিক থেকেই লাভবান হওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তকরণকে ধরা যাক। যখন সারা বিশ্ব ঝুঁকেছে করোনাভাইরাসের জেনোম সিকুয়েন্সিং করার জন্য যাতে করে সুনির্দিষ্ট ভাবে করোনা শনাক্ত করা যায় তখন ল্যাটেরাল ফ্লো স্ট্রিপ ভিত্তিক এন্টিবডি টেস্ট বাজারে চলে এসেছে; যদিও এটা কনফার্মেটরি টেস্ট নয় তারপরও এ ধরনের টেস্ট অনেক উপকারী, কারণ ঘরে বসেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
অপরদিকে কিছু দিন পর, এই ল্যাটেরাল ফ্লো স্ট্রিপ বা বিভিন্ন চিপ ভিত্তিক নিউক্লিক এসিড টেস্ট বা কনফার্মেটরি টেস্টও বাজারে এসেছে।
গতানুগতিক আরটি-পিসিআর ল্যাবের প্রয়োজন ছাড়াই পয়েন্ট অফ কেয়ার টেস্টিং মানুষের কর্মস্থলে রোগ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া পৌঁছে দিতে পারে।
এই ধরনের ডিভাইস বা রোগ নির্ণয় পদ্ধতি মূলত নির্ভর করে মাইক্রোফ্লুইডিক টেকনোলজি এর ওপর জানিয়ে অধ্যাপক গোকুল চন্দ্র বলেন, মাইক্রোফ্লুইডিক টেকনোলজি হল মাইক্রো লিটার আয়তনের সলিউশন বা রিএজেন্ট নিয়ে চিপের মধ্যে অল্প পরিমাণ বস্তু যেমন প্রোটিন বা ডিএনএ/আরএনএ বা অন্য কোন রাসায়নিক দ্রব্য নির্ণয় করা হয়।
আমাদের দেশে এ ধরনের রিসার্চ বা গবেষণার তেমন প্রচলন নেই। উন্নত বিশ্বে অনেকেই উচ্চ শিক্ষার সময় এই টেকনোলজি নিয়ে কাজ করেন কিন্তু বাংলাদেশে এসে গবেষণা অর্থের অভাবে তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেন না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের তেমন কোন গ্রুপ এখনো এ ধরনের টেকনোলজি নিয়ে কাজ করে তেমন সুফল পাননি। এর কারণ এই গবেষণার জন্য চিপ তৈরি বা প্রাথমিক দ্রব্যাদি প্রচুর অর্থনৈতিক সাহায্য দরকার। প্রচন্ড আগ্রহের কারণে তিনি স্বল্প বাজেটের প্রজেক্ট এর মাধ্যমে এই গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছেন।
রাসায়নিক দ্রব্যাদির প্রতূলতা সাপেক্ষে এবং নিরলস কাজ করে যেতে পারলে আগামী বছরের মধ্যে ঘরে বসে মাইক্রোফ্লুইডিক ডিভাইস বা চিপ এবং ল্যাটারাল ফ্লো স্ট্রিপ এর মাধ্যমে ক্যান্সার অথবা সংক্রামক ব্যাধি শনাক্ত করনের গবেষণা সম্পন্ন হবে।
এছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় একই সঙ্গে চার ধরনের ক্যান্সারের প্রাথমিক শনাক্তকরণ সম্ভব হতে পারে। তার ওপরে চেষ্টা করা হবে যাতে করে একই টেস্টের মাধ্যমে ক্যান্সারের স্টেজ বলা যায় কিনা অর্থাৎ কোন পেজের ক্যান্সার সেটা নির্ণয় করা সম্ভব হবে। প্রথমে খালি চোখে ক্যান্সার শনাক্তকরণের চেষ্টা করা হবে অর্থাৎ কলোরিমেট্রিক বা ফ্লুরোসেন্স ভিত্তিক বায়োসেন্সিং সিস্টেম ডেভলপ করা হবে।
পরবর্তীতে ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল ডিটেকশন সিস্টেম তৈরি করার চেষ্টা করা হবে যাতে করে নিখুঁতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক ম্যাথ চ্যালেঞ্জে শাবিপ্রবির ৯ শিক্ষার্থীর সিলভার ও ব্রোঞ্জ পদক অর্জন
দেশে প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে টোটাল ফিটনেস ডে
শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক সব দিক থেকে ফিটনেস অর্জনের আহ্বান নিয়ে দেশব্যাপী প্রথমবারের মতো পালিত হতে যাচ্ছে ‘টোটাল ফিটনেস ডে’। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ‘সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবন’-প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা দেশে দিবসটি উদযাপন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
২০২৩ সাল থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের প্রথম শুক্রবার দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সকাল ৭টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে সচেতনতামূলক বিশেষ সেশনের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: স্তন ক্যান্সার সচেতনতায় গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা ও সেমিনার
ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠানে ছিল- যোগ ব্যায়াম, শারীরিক ভারসাম্য পরীক্ষা বা বডি ব্যালান্স টেস্ট, সচেতনতামূলক বুলেটিন-ব্রোশিউর বিতরণসহ রয়েছে আলোচনা, প্রাণায়াম ও মেডিটেশন। শরীর চর্চাকারী ও স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও দিবসটি উদযাপন করে। সারাদেশের বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে এ ধরনের শতাধিক সেশন আয়োজিত হয়।
দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য টোটাল ফিটনেস নিয়ে মানুষের ভেতর যথাযথ সচেতনতা তৈরি করা। একজন মানুষের ভালো থাকা মানে সব দিক থেকেই ভালো থাকা। সব দিক মানে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক এই চারটি দিকেই ভালো থাকা। সব দিক থেকে ফিট থাকলেই সার্বিকভাবে ভালো থাকা সম্ভব। তাই চার ক্ষেত্রের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ফিটনেস দরকার। দরকার টোটাল ফিটনেস।
আরও পড়ুন: আত্মহত্যার প্রবণতা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ
চোখ উঠা রোগের লক্ষণ, কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
প্রথমবারের মতো পালিত হবে টোটাল ফিটনেস ডে
শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক সব দিক থেকে ফিটনেস অর্জনের আহ্বান নিয়ে দেশব্যাপী প্রথমবারের মতো পালিত হতে যাচ্ছে ‘টোটাল ফিটনেস ডে’। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ‘সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবন’-প্রতিপাদ্য নিয়ে সারা দেশে দিবসটি উদযাপন করবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
২০২৩ সাল থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের প্রথম শুক্রবার দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এদিন সকাল ৭টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে সচেতনতামূলক বিশেষ সেশনের আয়োজন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: স্ট্রোক চিকিৎসা সেবায় রুপান্তর নিয়ে আন্তর্জাতিক সায়েন্টেফিক সেমিনার
ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠানে থাকবে- যোগ ব্যায়াম, শারীরিক ভারসাম্য পরীক্ষা বা বডি ব্যালান্স টেস্ট, সচেতনতামূলক বুলেটিন-ব্রোশিউর বিতরণসহ রয়েছে আলোচনা, প্রাণায়াম ও মেডিটেশন। শরীর চর্চাকারী ও স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও দিবসটি উদযাপন করবে। সারাদেশের বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে এ ধরনের শতাধিক সেশন আয়োজিত হবে।
দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য টোটাল ফিটনেস নিয়ে মানুষের ভেতর যথাযথ সচেতনতা তৈরি করা। একজন মানুষের ভালো থাকা মানে সব দিক থেকেই ভালো থাকা। সব দিক মানে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আত্মিক এই চারটি দিকেই ভালো থাকা। সব দিক থেকে ফিট থাকলেই সার্বিকভাবে ভালো থাকা সম্ভব। তাই চার ক্ষেত্রের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ফিটনেস দরকার। দরকার টোটাল ফিটনেস।
আরও পড়ুন: স্তন ক্যান্সার সচেতনতায় গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা ও সেমিনার
আত্মহত্যার প্রবণতা: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ
বিদেশফেরত কর্মীদের এইচআইভি পরীক্ষা করতে হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে প্রবেশের সময় বিদেশফেরত কর্মীদের পুনরায় এইচআইভি পরীক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘দেশ ত্যাগের আগে যেভাবে এইডস পরীক্ষা করে এইচআইভি নেগেটিভ হলে তারপর বিদেশে যেতে হয়, একইভাবে দেশে প্রবেশের সময়ও তাদেরকে পুনরায় পরীক্ষা করা হবে। এতে করে আক্রান্তদের সঠিক চিকিৎসা দেয়া যেমন সহজ হবে, অন্যদিকে, তাদের পরিবারের অন্যান্য নিরাপদ সদস্যরাও এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাবেন।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে প্রায় ১৪ হাজার জন এইডস রোগী আছে। এদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার জনকে শনাক্ত করা গেছে। যারা নিয়মিত সরকারি চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই এইডস রোগীদের অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলো থেকে এইডস আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরে তারা তাদের পরিবারের কাছের সদস্যদের আক্রান্ত করছেন। দেশে ফেরার সময় নিজেরাও জানতে পারেনি যে, তারা এইডস আক্রান্ত হয়ে এসেছেন।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় দেশে এইডস রোগীদের চিকিৎসা দেয়া প্রসঙ্গে জানান, ‘বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে এইডস রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে। চিকিৎসা নিলে এইডস রোগীরা আরও বেশিদিন সুস্থ থাকতে পারে। তবে সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কথা ভেবে এইডস হলে তারা গোপন রাখে এবং সেকথা কাউকে প্রকাশ না করে অন্যদেরকেও আক্রান্ত করে ফেলে। এতে করে দেশে এইডস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।’
আরও পড়ুন:আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশ যেতে পারবেন না বিডিনিউজের সম্পাদক
উল্লেখ্য, দেশে প্রথম এইডস রোগী ধরা পড়ে ১৯৮৯ সালে। দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে মাত্র ০ দশমিক ০১ ভাগ এবং পতিতাবৃত্তি কাজের সঙ্গে জড়িতদের ৪ দশমিক ১ ভাগ এইডসে আক্রান্ত রয়েছে। অধিকাংশ সংখ্যক এইডস রোগীই মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলো থেকে দেশে প্রবেশ করে থাকে। ২০২২ সালের তথ্যানুযায়ী, এইডস রোগে নতুন ৯৪৭ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং ২৩২ জন মারা গেছে।
তথ্যমতে, ১৯৮৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ৯৭০৮ জন আক্রান্ত ও ১৮২০ জন মারা গেছে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (জনসংখ্যা, পরিবার কল্যাণ ও আইন অনুবিভাগ) ডা. আশরাফী আহমদ, এনডিসি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রাজেন্দ্র পোখড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, লাইন ডাইরেক্টর ডা. খুরশীদ আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গু শনাক্তের হার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু প্রায় আড়াইশ’
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ৫২৩ জন।
এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট ২৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৫১৯
আক্রান্তদের মধ্যে ২৭৭ জন ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাকি ২৪৬ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক হাজার ৯২৯জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এক হাজার ১২৯ জন এবং অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ৮০০ জন রোগী ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৬ হাজার ১৩০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর মধ্যে ঢাকায় ৩৫ হাজার ৮০৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ২০ হাজার ৩২৫জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৫৩ হাজার ৯৫৪ জন ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন।
এদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৫২৬ জন ঢাকার এবং বাকি ১৯ হাজার ৪২৮ জন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৪৬২
দেশে ডেঙ্গুতে ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ২২১
আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২২: ‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে গুরুত্ব পেয়েছে মানসিক স্বাস্থ্য
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস কাউন্সিল (বিআইবিসি) ও উইমেনস ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডব্লিউআইসিসিআই) যৌথ উদ্যোগে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হল আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২২। ‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে উঠে এসেছে মানসিক স্বাস্থ্য, সামাজিক কুসংস্কার, নারীর বর্তমান অবস্থা শিশুদের স্বাস্থ্যসহ দেশের চিকিৎসাব্যবস্থা।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন বুধবার (২৩ নভেম্বর) রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
উদ্বোধনের দিন সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া, বিআইবিসি’র প্রেসিডেন্ট মানতাশা আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. মালিহা মান্নান আহমেদসহ অনেকে।
আরও পড়ুন: মানসিক রোগ সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫% শিক্ষার্থী সচেতন: শাবিপ্রবির গবেষণা
ড. মালিহা মান্নান আহমেদের সঞ্চালনায় ‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে আলোচনা করেন বিডার নির্বাহী পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া, বুশরা আলম, রুনা খান, জাহিদা ফিজ্জা কবির, ড. রুমানা দৌলা, আরিফ মাহমুদ, মৌসুমী ইসলাম।
‘হেলথ ও ওয়েলনেস’ সেশনে আলোচনা শুরু হয় ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. বুশরা আলমের বক্তব্য দিয়ে। উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বলতে আমরা শারীরিক অবস্থাকেই সাধারণত বুঝি। কিন্তু আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে আলাদাভাবে আলোচনা কম। সামাজিক কুসংস্কারের কারণে এটাকে আমরা প্রতিনিয়ত লুকাই। তবে করোনার পরবর্তীতে এ নিয়ে খোলামেলা আলোচনার পরিবেশ কিছু তৈরি হয়েছে।’
সমাজে নারীদের অবস্থান প্রসঙ্গে ডা. বুশরা আলম বলেন, ‘বর্তমানে নারীরা দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন ভূমিকা রাখছে। আমরা চেষ্টা করছি নারীদের কাজের অগ্রগতিকে কীভাবে আরও সামনে নিয়ে আসতে পারি। এটা শুধুমাত্র উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরির বিষয় নয়। বরং এর চেয়েও বেশি। নারীরা পাবলিক যানবাহনে করে তাদের কর্মস্থলে যাতায়াত করে। কিন্তু সেখানে তাদের অবস্থা কী? সেখানে তারা প্রতিনিয়ত হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। এক্ষেত্রে পুরষদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। কারণ সবার সম্মিলত প্রচেষ্টায় পরিবর্তন আসে।’
আরও পড়ুন: কোন দেশে বেশি স্মার্টফোন ব্যবহার, বেশি মানসিক রোগ?
আলোচনার দ্বিতীয় বক্তা ফ্রেন্ডশিপ এনজিও’র প্রতিষ্ঠাতা রুনা খান। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে তার কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ’২০ বছর আগে আমি এমন একটা বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করি যখন দেশে প্রায় ৪০ হাজার এনজিও ছিল। কিন্তু শিশুদের নিয়ে কাজ করার কাউকে তেমন পাইনি। আমি দেখেছি, একজন শিশুর হয়তো ডায়রিয়া হয়েছে, কিন্তু তার মা মাত্র পাঁচ টাকার জন্য শিশুটিকে সেলাইন খাওয়াতে পারছে না। ২০ বছর আগে শিশুদের জন্য ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কাজটা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু আমাদের প্রত্যয় ছিল কাজটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেখান থেকে আমরা স্যাটেলাইট হাসপাতাল পর্যন্ত এসেছি।’
সাজেদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাহিদা ফিজা কবীর বলেন, ‘সাজেদা ফাউন্ডেশন ব্যতিক্রম একটি উদ্যোগ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রেনাটার অর্থে এটা চলে। রেনাটার মুনাফার ৫১ শতাংশ এই সাজেদা ফাউন্ডেশনে খরচ করা হয়। এটি দারিদ্র্য বিমোচন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, জীবনমান উন্নয়নে কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে। বর্তমানে আমরা মানসিক স্বস্থ্য নিয়েও কাজ করছি। যেটি আজকের আলোচনার অন্যতম অংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় আট বছর আগে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি। যখন দেখেছি আমাদের এখানে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের সেবা নেই। সেখান থেকেই আমাদের চিন্তা এলো এমন একটি সেবায় বিনিয়োগ করার বিষয়। যেখানে আমরা আন্তর্জাতিক মানে সেবা প্রদান করতে পারব। এক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা পেয়েছি।’
আরও পড়ুন: মানসিক বিকাশে শিশুর সঙ্গে মা-বাবার টেলিভিশন দেখা হতে পারে উপকারী
বাংলাদেশে প্যালিয়েটিভ অ্যান্ড সাপোর্ট কেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডা. রুমানা দোলা সেশনে কথা বলেন দেশে প্যালিয়েটিভ কেয়ারের অবস্থা প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের দুরারোগ্য ব্যাধিতে প্রতি বছর অনেক মানুষ ভোগে। যার জন্যই প্যালিয়েটিভ কেয়ারের প্রয়োজনীয়তা। অনেকেই আছেন দীর্ঘদিন হৃদরোগ, ক্যান্সার, শ্বাসতন্ত্রের রোগ, এইডস, ডায়াবেটিকে ভুগছেন, এমনকি অনেকে একসময় তীব্র যন্ত্রণায় ভোগেন। প্যালিয়েটিভ কেয়ার এই ধরনের রুগীদের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবার অংশ।’
বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবা প্রসঙ্গে নিয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিকেল সার্ভিসের পরিচালক আরিফ মাহমুদ বলেন, ‘চিকিৎসা সেবা দেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। করোনার সময় আমরা বিষয়টি আরও লক্ষ্য করেছি। তখন বিদেশি যাওয়া বন্ধ ছিল, জনগনকে হয়তো সরকারি বা বেসরকারি চিকিৎসা নিতে হয়েছে। আর আমরা কিন্তু পেরেছি। তবে বর্ডার খুলে দেয়ার পর আবারও মানুষ চিকিৎসার জন্য বাইরে যাচ্ছে। সেটার দুটি কারণ, প্রথমত বাংলাদেশে যেসব চিকিৎসা সম্ভব। দ্বিতীয়ত অনেকের অভিযোগ আমাদের দেশের অনেক ডাক্তার রোগীর বিষয়ে মনযোগী নন। দুটি বিষয়ের উন্নতির জন্য এরই মধ্যে কাজ হচ্ছে।’
বাংলাদেশে মেডিকেল যন্ত্রাংশ ব্যবসায় নিজের উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রমিস্কো গ্রুপের নির্বাহি পরিচালক মৌসুমী ইসলাম বলেন, ‘একজন নারী উদ্যোক্তার হিসেবে আমার শুরু পথটা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু আমি সৌভাগ্যবান, এই কাজে আমি অনেককে বন্ধুর মতো পাশে পেয়েছি। যাদের জন্য আমি এগিয়ে যেতে পেরেছি। বাংলাদেশের অত্যাধুনিক মেডিকেল যন্ত্রাংশ আসার সময়টা কিন্তু নতুন। ২০১৫ থেকে আমরা মেডিকেল যন্ত্রাংশ তৈরি করে আসছি। করোনার সময় আমরা প্রমাণ করেছি বাংলাদেশেরও বিশ্বমানে মেডিকেল যন্ত্রাংশ তৈরি করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: উন্নত দেশ গড়তে ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজিনেস’ সূচক উন্নয়নের বিকল্প নেই: বিডা
বিডার নির্বাহী পরিচালক লোকমান হোসেন মিয়া ২০২২ আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা সম্মেলনের আলোচনা সেশনে বলেন, ‘এই সম্মেলন নারী উদ্যোক্তাদের ভালো একটি সুযোগ আমি মনে করি। যারা অংশগ্রহণ করেছেন সবার মনোবল ও আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে বিশ্বাস করি। এ সম্মেলন নারী উদ্যোক্তাদের মনোবল আরও দৃঢ় ও সাহসী করবে। এ সম্মেলনে চার হাজার নারী উদ্যোক্তা ও প্রায় ৪০টি দেশের পেশাজীবী ও বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিগণ অংশগ্রহণ করছেন।’
বিজয় দিবস উপলক্ষে আবারও ৭ দিনের টিকা ক্যাম্পেইন
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, আসন্ন বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী সাত দিনের বিশেষ টিকা ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, সামনে বিজয় দিবস আসছে, এই উপলক্ষে টিকার ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ নিয়েছি। এটি পহেলা ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে, চলবে ডিসেম্বরের ৭ তারিখ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: দেশেই স্থানীয়ভাবে করোনা টিকা তৈরির প্রচেষ্টার অগ্রগতি হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে আয়োজিত বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, বিশেষ এই টিকা ক্যাম্পেইনে ৯০ লাখ লোককে টিকা দেয়া হবে। আমরা এর আগে যতগুলো ক্যাম্পেইন করেছি, সবগুলোই সফল হয়েছে। আশা করি এটিও সফল হবে।
এছাড়া আমরা এ পর্যন্ত ১৪ কোটি ৬৯ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা আমরা দিয়েছি।
১২ কোটিরও বেশি দ্বিতীয় ডোজ দিয়েছি।
আরও পড়ুন: প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের টিকার ক্যাম্পেইন বাড়ল আরও ৩ দিন