���������������������������
২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় করোনায় আরও ৫ জনের মৃত্যু
কুমিল্লায় করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় করোনা পজিটিভ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। তাদের বয়স ৫৫ বছর থেকে ৯০ বছর। তারা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন বলে বুধবার কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মোবারক হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জেলায় মোট মৃত্যু ৩৮৫ জনে পৌঁছেছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ৪৮ জন। তাদের মধ্যে ২২ জনই সিটি করপোরেশন এলাকার।
জেলায় এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্য ১২ হাজার ১৬৬ জন। মোট সুস্থ ৯ হাজার ৮৬৬ জন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পদত্যাগ করা হেফাজত নেতা আব্দুর রহিম কাসেমী গ্রেপ্তার
ঢাকা, ০৪ মে ( ইউএনবি)- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় জড়িত কর্মী-সমর্থকদের বিচার চেয়ে পদত্যাগ করা সংগঠনটির জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকালে জেলা শহরের ভাদুঘর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার সাবেক শিক্ষক ছিলেন।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. রইছ উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের একটি দল শহরের ভাদুঘর এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও জানান, হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তান্ডবের ঘটনা তদন্ত করে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য হোফাজতে ইসলামের চালানো তাণ্ডবের ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের বিচার চেয়ে গত ২৩ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেন আব্দুর রহিম কাসেমী।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা কওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সাবেক সেক্রেটারিসহ গ্রেপ্তার ৬
ওইদিন সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রহিম কাসেমী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের ডাকে যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি কোনোভাবেই ইসলাম সম্মত হতে পারে না। সেখানে তিনি যাদের প্ররোচনায় দেশ ও জনগণের জানমালের এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জনিয়েছিলেন।
নিরাপরাধ সেই হাছিনা কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন
পুলিশের ভুলের কারণে নামের মিল থাকায় চট্টগ্রাম কারাগারে সাজা ভোগ করা নিরাপরাধ হাছিনা অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ৪র্থ আদালতের বিচারক শরীফুল আলম ভূঁঞার ভার্চুয়াল আদালত হাছিনা বেগমকে মুক্তির আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম কারাগারে হাসিনার সাজা ভোগ করছেন হাছিনা
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উল্লেখ্য মাদকের মামলায় ৬ বছর ধরে সাজাপ্রাপ্ত হাসিনা আক্তার (৪২) নামে টেকনাফের এক নারীর পরিবর্তে এক বছর ৪ মাস ধরে চট্টগ্রাম কারাগারে সাজা খাটছেন হাছিনা বেগম (২৮) নামে একই এলাকার অপর এক নারী।
চট্টগ্রামের আইনজীবি গোলাম মাওলা মুরাদ সম্প্রতি বিষয়টি চট্টগ্রাম মহানগর অতিরিক্ত ৫ম আদালতের নজরে আনেন।
জানা যায়, শুধুমাত্র নামের একাংশ মিল থাকায় প্রকৃত আসামি হাসিনা আক্তারের পরিবর্তে সাজা ভোগ করছেন হাছিনা বেগম। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার একটি মাদক মামলায় ৬ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ হয়েছিল টেকনাফের হাসিনা আক্তারের। তিনি আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ডা. শাহাদাতসহ ১৫ নেতা-কর্মী কারাগারে
বিষয়টি রবিবার চট্টগ্রাম ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালতের নজরে আনেন চট্টগ্রামের আইনজীবি গোলাম মাওলা মুরাদ।
তিনি জানান, আদালত হাছিনা বেগমকে কারাগার থেকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় এখনো পাওয়া যায়নি। আজ সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ছবিযুক্ত বালামে প্রকৃত আসামি হাসিনা আক্তার ও নিরপরাধ হাছিনা বেগম একই আসামি নন বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে সাংবাদিক নির্যাতন: প্রধান আসামিসহ দুইজন কারাগারে
কারাগারে থাকা হাছিনা বেগমের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার চৌধুরী পাড়ায়। তিনি হামিদ হোছনের স্ত্রী। সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামি হাসিনা আক্তারও একই এলাকার ইসমাইল হাজি বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা কওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সাবেক সেক্রেটারিসহ গ্রেপ্তার ৬
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় জেলা কওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সাবেক সেক্রেটারি ও জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের একটি বিশেষ টিম তাকে গ্রেপ্তার করে বলে জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে দেশীয় অস্ত্রসহ ৪ ডাকাত গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার মাওলানা বেলাল হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, গত ২৬, ২৭ ও ২৮ মার্চ হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসাসহ আশপাশের বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্রশিক্ষককে নিয়ে ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালায়। এ সময় তিনি ও তার সিনিয়র মুরুব্বিদের প্রত্যক্ষ নির্দেশে হেফাজতের ছাত্রশিক্ষকরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক তাণ্ডব চালায়।
আরও পড়ুন: হাতিয়ায় অস্ত্র-গুলিসহ ২ ডাকাত গ্রেপ্তার
এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও পাঁচজন হেফাজত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মোট ৫৫টি মামলায় ৪১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৩ জুয়াড়ি আটক
কক্সবাজারে সাদা পোশাকে ছিনতাইয়ের সময় পুলিশের ৩ সদস্য আটক
হেফাজত নেতা হারুন ইজহার ৯ দিনের রিমান্ডে
চট্টগ্রামের লালখান বাজার মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিলুপ্ত হওয়া কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতি হারুন ইজহারের ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় রফিকুল মাদানী রিমান্ডে
পুলিশ জানায়, গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের দুই মামলা ও গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর করা মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
মুফতি হারুন ইজহার বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি ও লালখান বাজার মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরীর বড় ছেলে।
আরও পড়ুন: সালথায় সহিংসতা: উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রিমান্ডে
হারুন ইজহারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নেজাম উদ্দীন নিজা বলেন, মুফতি হারুন ইজহারকে হাটহাজারী থানার এক মামলায় ৭ দিন করে ৩ মামলায় মোট ২১ দিনের রিমান্ডে নিতে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে এক মামলায় ৩ দিন করে মোট ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: মামুনুল ৭ দিনের রিমান্ডে
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে নগরীর লালখান বাজার জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার বাসা থেকে মুফতি হারুন ইজহারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭। বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আঞ্জুমান আরার ভার্চুয়াল আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৭ জনের মৃত্যু
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ৬৮৪টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা রোগে আক্রান্ত হয়েছে আরও ১০৬ জন যাদের মধ্যে নগরীতে ৮৭ জন এবং উপজেলার ১৯ জন।
সোমবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনার দুর্দিনে জনগণের পাশেই আছেন প্রধানমন্ত্রী
চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ২৮০ জনে। করোনায় মারা যাওয়া ৭ জনের মধ্যে নগরীতে ৫ জন এবং উপজেলার ২ জন। চট্টগ্রামে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩৫ জনে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি পালনে উদাসীন হলে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা মন্ত্রীর
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮টি ল্যাবে ৬৮৪টি নমুনা পরীক্ষায় ১০৬ জন করোনা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এতে চট্টগ্রামে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ২৮০ জনে। যাদের মধ্যে নগরে ৪০ হাজার ২৯৯ জন এবং উপজেলার ৯ হাজার ৯৮১ জন। এসময় করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩৫ জনে। মৃতদের মধ্যে নগরে ৩৯৬ জন এবং উপজেলার ১৩৯ জন।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্ত ১৫ কোটি ২৮ লাখ ছাড়িয়েছে
চট্টগ্রাম কারাগারে হাসিনার সাজা ভোগ করছেন হাছিনা
নামের একাংশ মিল থাকায় প্রকৃত আসামি হাসিনার পরিবর্তে দেড় বছর ধরে সাজা ভোগ করছেন নিরাপরাধ এক হাছিনা।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার একটি মাদক মামলায় ৬ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ হয়েছিল টেকনাফের হাসিনা আক্তারের। নামের একাংশের সাথে মিল থাকায় তার জায়গায় প্রায় দেড় বছর ধরে সেই সাজা খাটছেন হাছিনা বেগম।
আদালতের নির্দেশে পুলিশের অনুসন্ধান প্রতিবেদনেও এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।
বিষয়টি রবিবার (২ মে) চট্টগ্রাম ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালতের নজরে আনেন তরুণ আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নৌকা ডুবির ঘটনায় ৪ জনের লাশ উদ্ধার
এই অসংগতি ধরা পড়লে আদালত আগামীকাল ৪ মে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা রেজিস্টারে মূল আসামির সাথে সাজা ভোগকারীর ছবি মিল-অমিল তুলে ধরে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন কারা কর্তৃপক্ষকে।
আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, কারাগারে থাকা হাছিনা বেগমের অপরাধীর তালিকায় নাম নেই। অতীতে অপরাধের সাথেও কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। তবুও তিনি জেল খাটছেন। অপরাধ একটাই, সাজাপ্রাপ্ত আসামির নামের প্রথম অংশ ও স্বামীর নামের একাংশের সাথে মিল রয়েছে।
তবে অপরাধীর নামের সাথে মিল থাকলেও বাবা-মায়ের নামের সাথে অমিল রয়েছে। কারাগারে থাকা হাছিনা বেগমের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়ার হোসন বর বাড়ি। তিনি হামিদ হোছনের স্ত্রী।
আর সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাসিনা আক্তার একই এলাকার ইসমাইল হাজি বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেকে ২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা ও পরবর্তীতে দায়রা মামলা দায়ের হয়। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাসিনা আক্তার ২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে কারাগারে যান। একই বছর ২৭ নভেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে জামিনে বেরিয়ে পলাতক হন।
২০১৯ সালের ১ জুলাই পলাতক থাকা আসামিদের অনুপস্থিতিতে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মহানগর ৫ম আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী এক রায়ে হাসিনা আক্তারকে ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
পরবর্তীতে টেকনাফ থানা পুলিশ ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর টেকনাফের চৌধুরী পাড়ার হোসেন বর বাড়ি থেকে নামের সাথে সাজাপ্রাপ্ত আসামির নামের একাংশের মিল থাকায় হাছিনা বেগমকে গ্রেফতার করে। এরপর থেকে কারাগারে হাসিনা আক্তারের সাজা ভোগ করছেন নিরীহ হাছিনা বেগম।
বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে আদালত টেকনাফ থানাকে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। আদালতের চাহিত সেই অনুসন্ধান প্রতিবেদন রবিবার আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
আদালতে হাছিনা বেগমের প্রতিবেদন দেয়া টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো: খোরশেদ আলম জানান, বর্তমানে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে থাকা হাছিনা বেগম পূর্বে গ্রেফতার হওয়া হাসিনা আক্তার এক নয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু বর্তমান কারাগারে থাকা হাছিনা বেগমের স্বামী পালাতক থাকায় পূর্ণাঙ্গভাবে তদন্ত করা যায়নি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ৫ মে থেকে গণপরিবহন চলাচলের ঘোষণা
এদিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, প্রকৃত আসামি হাসিনা আক্তার মামলার সাজা হওয়ার আগে ২০১৭ থেকে প্রায় ৯ মাস কারাগারে ছিলেন। সাজা হওয়ার পর ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে হাছিনা বেগম কারাগারে আসেন। কারা রেজিস্ট্রারে থাকা দুজনের ছবির মিল নেই। মূল আসামি হাসিনা আক্তারের ছোট একটা ছেলে ও একটা মেয়ে ছিল কারাগারে থাকার সময়।
হাছিনা বেগমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, হাছিনা বেগম মামলার প্রকৃত সাজাপ্রাপ্ত আসামি নয় বলে টেকনাফ থানার প্রতিবেদন দিয়েছে। হাছিনা বেগমকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দেয়ার আবেদন করা হয়েছে। আদালত প্রতিবেদনটি আমলে নিয়েছেন এবং আগামী ৪ মের মধ্যে কারা রেজিস্টার পরীক্ষা করে হাছিনা বেগমের বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য জেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
চমেক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বিরোধের জেরে কর্মবিরতির চারদিন পর ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় চমেক হাসপাতাল পরিচালকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চমেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবির বলেন, চমেক হাসাপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে চলমান এই কর্মবিরতি তুলে নেয়া হয়েছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সব দাবি মেনে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চমেকে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ: ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত
তিনি জানান, তাদের অনেকগুলো দাবির মধ্যে একটি দাবি ছিল- বহিরাগতদের গ্রেপ্তার করতে হবে। এজন্য তারা তিন দিনের সময় দিয়েছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে, আশা করা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুতই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনবেন।
ইন্টার্ন ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব ডা. তাজওয়ার রহমান বলেন, ‘আমরা আপাতত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। তিন দিনের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে পুনরায় কর্মবিরতিতে যাব।’
এ সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শাহানা আখতার, পুলিশের ৫ কর্মকর্তা, চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাতে চমেক ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের জেরে দুজন ইন্টার্ন ডাক্তারসহ পাঁচজন আহত হন। এরমধ্যে চমেকের ৫৭তম ব্যাচের ইন্টার্ন ডাক্তার ও বর্তমান সভাপতি হাবিবুর রহমানও ছিলেন। এর জের ধরে গত বুধবার থেকে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
চট্টগ্রামে ৫ মে থেকে গণপরিবহন চলাচলের ঘোষণা
আগামী ৪ মে এর মধ্যে সরকারি সিদ্ধান্ত না এলেও ৫ মে থেকে গণপরিবহন চলাচল করা হবে বলে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা।
রবিবার দুপুরে চট্টগ্রামের স্টেশন রোডে বিআরটিসি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান সড়ক পরিবাহন নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে গণপরিবহন চালুর অনুমতি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিবহন মালিকদের ব্যাংক ও কিস্তির সুদ মওকুফসহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ।
আরও পড়ুন: লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাস চালুর দাবি পরিবহন মালিক সমিতির
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহনে বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরে গত এক বছরের ব্যাংকের ঋণ কিস্তির সুদের টাকা মওকুফসহ হয়রানি ও পুলিশের মামলা বন্ধ, গাড়ির ডকুমেন্ট হালনাগাদের সময় বৃদ্ধির দাবি করা হয়।
পরিবহন নেতারা অভিযোগ করেন, লকডাউনে শুধু গণপরিবহন বন্ধ রেখে কলকারখানা, শপিংমলসহ সব প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গণপরিবহন বন্ধ রেখে মোটরসাইকেল, ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সে পুলিশের সামনে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সরকার গণপরিবহন চালুর চিন্তা ভাবনা করছে: কাদের
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গণপরিবহন রাস্তায় নামলে সরকারকে বছরে ২৩ হাজার ১০০ টাকা অগ্রিম ট্যাক্স দিতে হয়। বর্তমানে লক্ষাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। দৈনিক ৫ কোটি টাকার আয় থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: লকডাউনে খাদ্যসামগ্রী পেল কর্মহীন ১২০০ পরিবহন শ্রমিক
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. মূছা, সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া হেফাজতের বিরুদ্ধে সাংসদ মোকতাদিরের মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোবারক উল্লাহসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দেড়শ জনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি জমা দেন।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭ জন গ্রেপ্তার
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর পক্ষে তার আইনজীবী ও শহর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মো. মামুন মামলাটি সদর থানায় দাখিল করেন।
মামলার উল্লেখিত প্রধান দুই আসামি ছাড়াও ১২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন মাওলানা আশরাফুল হোসেন তপু, বোরহান উদ্দিন কাসেমী, মাওলানা আলী আজম, মাওলানা এরশাদ উল্লাহ, মাওলানা জুনায়েদ কাসেমী, মাওলানা নোমান আল হাবিব, মমিনুল হাসান তাজ, সুলেমান মোল্লা, মাওলানা এনামুল হক, মাওলানা আব্দুল হাকিম, মাওলানা মনজুরুল হক ও খালেদ মোশাররফ। এছাড়া আরও অজ্ঞাত এক থেকে দেড়শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনসহ গ্রেপ্তার ৩১০
মামলার বিবরণীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে আগমনকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নারকীয় তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার নেতাকর্মীরা। তারা তাণ্ডব চালিয়ে বৈধ সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা করে। এরই অংশ হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গান পাউডার ও বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করেন। এর আগে হেফাজতে ইসলামের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোবারক উল্লাহ সহ অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে বিভিন্ন ফেসবুক পেজ, আইডি ও নিউজ পোর্টালে সাইবার সন্ত্রাস সংগঠিত করে রাষ্ট্রদ্রোহীতামূলক বিদ্বেষ ও ঘৃনামূলক স্ট্যাটাস প্রদান করে জনসাধারনের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এর মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইন শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি ঘটে।
আরও পড়ুন: হেফাজতের তাণ্ডব: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আরও গ্রেপ্তার ১১
শুধু তাই নয়, মামলার এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা উপস্থিত থেকে ইলেকট্রনিক্স বিন্যাসের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা তথ্য সংগ্রহ করে তাদের বক্তব্য জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার নিজস্ব ফেসবুক পেজে প্রচার করে। এরই এক পর্যায়ে গত ৩১ মার্চ আসামিরা তাদের ব্যবহৃত ফেসবুক পেজ জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া এর মাধ্যমে লিখিত বক্তব্য প্রদান করে বাদী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে ঘটনাকে ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি ঘটনার দায়ভার তার উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন।
আসামিদের এরূপ বক্তব্য তাদের ডিজিটাল বিন্যাসের মাধ্যমে জাতীয় ও স্থানীয় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া প্রকাশ ও প্রচার করেন তারা। ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুসলিম জনসাধারণের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টি করে। এতে আইনশৃংখলার চরম অবনতি হয়। পাশাপাশি সমগ্র দেশে ও বহির্বিশ্বে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে আমি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও প্রপাগান্ডা চালায়। যাহা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এর ধারায় অপরাধ সংগঠিত করে। বিষয়টি আমাকে সাক্ষিরা অবগত করলে ঘটনার দ্বিতীয় দিন ২৭ মার্চ ঘটনাস্থলে আমি উক্ত বক্তব্য দেখে স্ক্রিনশট নিয়ে হার্ডকপি সংগ্রহ করি। এসব স্ক্রিনশট মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘মামলাটি জমা নেয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’