রাজশাহী
রাজশাহী হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৭ জনের মৃত্যু
গত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।এর মধ্যে আটজনের করোনা পজেটিভ ছিল। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী।
তিনি জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় মারা যাওয়াদের মধ্যে নয়জন রাজশাহীর। বাকিদের মধ্যে চাঁপাইনবাগঞ্জের চারজন, নাটোরের দুই ও নওগাঁর দুইজন।
আরও পড়ুনঃ করোনায় আবারও মৃত্যু একশ’ ছাড়াল
এ নিয়ে ১ জুন সকাল ৬টা থেকে ২৬ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ২৯১ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১৩৬ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০১ জন। এর আগে সবচেয়ে বেশি মারা যান ২৪ জুন ১৮ জন এবং সবচেয়ে কম ১২ জুন চারজন। চলতি মাসের ২৬ দিনেই মারা গেল ২৯১ জন।
শামীম ইয়াজদানী আরো জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫২ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩১ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৮, নাটোরের ছয়, নওগাঁর তিন ও পাবনার চারজন। সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩৪ জন।
আরও পড়ুনঃ করোনা: খুলনায় ২৪ ঘণ্টায় ৯ মৃত্যু
এদিকে হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৫৭ বেডের বিপরীতে মোট চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৪৩১ জন। যা আগের দিন ছিল ৪২৩। অতিরিক্ত রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের মধ্যে রাজশাহীর ২৯৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৬ জন, নাটোরের ৩৩ জন, নওগাঁর ৩৪ জন, পাবনার নয়জন, কুষ্টিয়ার তিনজন, চুয়াডাঙ্গার একজন, দিনাজপুরের একজন ও ঢাকার একজন। তাছাড় আইউসিইউতে ভর্তি আছেন ২০ জন।
রাজশাহীতে শিশু ধর্ষণ ও হত্যার আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে শিশু ধর্ষণ ও হত্যার মামলার আসামি নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ললিতনগর এলাকায় এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
নিহত যুবকের শামীম (২১) উপজেলার বাউটিয়া গ্রামের শফিকের ছেলে।
আরও পড়ুন: সাহিনুদ্দিন হত্যা: কথিত বন্দুকযুদ্ধে আসামি নিহত
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলমের ভাষ্য, বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ ললিতনগর এলাকায় টহলে ছিল। এসময় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী পুলিশের উপর হামলা চালালে পুলিশ গুলি চালায়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। শুক্রবার সকালে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়।
আরও পড়ুন: ঘুমধুম সীমান্তে বিজিবির সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রোহিঙ্গা নিহত
গত শনিবার গভীর রাতে ললিতনগরে শিশুটিক ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। নিহত শিশু সুমাইয়া ওই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে। সে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সুমাইয়া বাড়িতে টিভি দেখে। এরপর একাই ঘুমাতে যায়। রবিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে তার বাবা-মা মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে তারা বাড়ির পাশের একটি খড়ের পালার নিচে সুমাইয়ার লাশ দেখতে পান।
ইফতেখায়ের আলম বলেন, পুলিশ ঘটনার পর থেকে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সন্ধানে ছিল। শামীম ওই মামলার অজ্ঞাত আসামি ছিলেন।
মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের পর তারা নিশ্চিত হয়েছেন শিশু সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার সাতে শামীম জড়িত।
করোনা ও উপসর্গে রাজশাহীতে আরও ১৪ মৃত্যু
২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃতদের মধ্যে পাঁচ জনের করোনা পজেটিভ ছিল। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় করোনায় রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু ৮
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় মারা যাওয়া ছয় জন রাজশাহীর। বাকিদের মধ্যে চাঁপাইনবাগঞ্জের চার, নাটোরের এক ও নওগাঁর তিন জন রয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন আইসিইউতে মারা গেছেন। মৃতরা সাত জন পুরুষ ও সাত জন নারী।
এ নিয়ে চলতি মাসের গত ২৫ দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ২৫ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ২৭৪ জন মারা গেলেন।
শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৬৫ জন করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৩ জন। শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৫৭ বেডের বিপরীতে মোট চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৪২৩ জন। বাকিদের মেঝে ও বারান্দায় অতিরিক্ত বেডে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রামেকে করোনায় একদিনের রেকর্ড মৃত্যু ১৮
এর মধ্যে রাজশাহীর ২৮৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬৪, নাটোরের ৩১, নওগাঁর ২৯, পাবনার আট, কুষ্টিয়ার তিন, চুয়াডাঙ্গার দুই, দিনাজপুর ও ঢাকার একজন রয়েছেন। আইউসিইউতে ভর্তি আছেন ২০ জন।
পাবনায় প্রতিবন্ধী ভিক্ষুককে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ
পাবনার ঈশ্বরদীতে এক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুককে ছুরিকাঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মানিক সরদারের বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার রাতে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: আদালতে স্বীকারোক্তি: ‘স্বপ্ন দেখে’ স্ত্রী-সন্তানকে হত্যা করেন হিফজুর
নিহত ভিক্ষুকের চাপা হোসেন (৩২), বাড়ি পাবনার চাটমোহর এলাকায়।
আটক ছামেলা খাতুন (৪০) মানিক সরদারের পুত্রবধূ ও জাহিদুল সরদারের স্ত্রী। তবে ছামেলা খাতুনের বাবার বাড়িও চাটমোহরে।
এলাকাবাসী জানায়, চাপা নামে ওই প্রতিবন্ধী যুবক ভ্যানে করে ঈশ্বরদীতে ভিক্ষা করতেন। এলাকায় পরিচিত হিসেবে চাপা প্রায়ই সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া পশ্চিম পাড়া গ্রামের ছামেলা খাতুনের শ্বশুরবাড়িতে যাতায়াত করতেন। তার সাথে নিরঞ্জন (৩২) নামে এলাকার আরও এক প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক থাকতেন।
আরও পড়ুন: মাগুরায় মসজিদে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আটক ৩
স্থানীয়রা জানান, হয়তো টাকা-পয়সার কোনো বিষয় নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় চাপাকে পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গভীর রাতে লাশটি গুম করার চেষ্টা করা হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় কুলি ছাইদার হোসেন সাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার রহিদুল্লাহকে সাথে নিয়ে মানিক সরদারের বাড়িতে যান। এ সময় তাদেরকে বাড়ির ভেতরে যেতে বাধা দেয়া হয়। পরে তারা বিষয়টি ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে জানায়। ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশটি উদ্ধার করে। সে সময় অসংলগ্ন কথাবর্তা বলায় ছামেলা খাতুনকে আটক করে।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। লাশের শরীরে অসংখ্য ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আটক ছামেলা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে কি কারণে হত্যা করা হয়েছে এখনই সেটি বলা সম্ভব হচ্ছে না।
বগুড়ায় করোনায় রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু ৮
গত ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এটিই জেলায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
এ নিয়ে জেলায় ৯ দিনে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ার ১৪ জন, নওগাঁর ৭ জন, জয়পুরহাটের ১৩ জন এবং গাইবান্ধা ও নাটোর জেলায় একজন করে রয়েছে। একই সময় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৯৮ জনের।
আরও পড়ুন: সিলেটে করোনায় আরও ৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১২৫
করোনায় মৃত ব্যক্তিরা হলেন- বগুড়া সদরের সেতারা বেগম (৭৮) ও আবুল কালাম আজাদ (৭৪), জয়পুরহাটের হাসনা বেগম (৬৫), লুৎফর রহমান (৬৫) মামুন সরদার(৪৫) আহাদ আলী (৭৫) ও নূর জাহান (৩০) এবং নওগাঁর রিয়াজ উদ্দীন (৬০)।
এদের মধ্যে সেতারা, হাসনা ও লুৎফর রহমান টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, আবুল কালাম আজাদ, নূর জাহান ও রিয়াজউদ্দীন শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আহাদ আলী ও মামুন সরদার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৪ নমুনার ফলাফলে নতুন করে ৯৮ জন করোনায় শনাক্ত হয়েছেন। জেলায় আক্রান্তের হার ১৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ২৫ জন। নতুন আক্রান্ত ৯৮ জনের মধ্যে সদরের ৬০, আদমদীঘির সাত, গাবতলীর আট, সারিয়াকান্দি, কাহালু, ও শেরপুরে দুই জন করে, নন্দীগ্রামের পাঁচ, দুপচাঁচিয়ায় তিন, এবং ধুনটের একজন রয়েছেন।
আরও পড়ুন:রামেকে করোনায় একদিনের রেকর্ড মৃত্যু ১৮
তুহিন জানান, এর আগের দিন জেলায় ৩৮২ নমুনায় ৬২ জনের করোনায় শনাক্ত হয়েছিলেন। এই নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হলেন ১৩ হাজার ১৫২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ২৯৮ জন। এছাড়া নতুন করে আট জনের মৃত্যু হওয়ায় মোট মৃত্যু ৩৬৫ জন এবং বর্তমানে করোনায় চিকিৎসাধীন ৪৯১ জন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে হেরোইন উদ্ধার
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্ত এলাকা থেকে ৯৫০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বালাদেশ (বিজিবি)।
শিবগঞ্জ উপজেলার কিরোনগঞ্জ সীমান্ত এলাকা থেকে বুধবার রাতে এই ভারতীয় মাদক উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: দেড় কোটি টাকার হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার
বৃহস্পতিবার সকালে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিরোনগঞ্জ বিওপির নায়েব সুবেদার রেনু মিয়ার নেতৃত্বে বিজিবির একটি টহল দল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১টার দিকে সীমান্তের ১৭৮ নম্বর মেইন সীমান্ত পিলার হতে আনুমানিক ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি আম বাগান থেকে মালিকবিহীন ৯৫০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রামেকে করোনায় একদিনের রেকর্ড মৃত্যু ১৮
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রেকর্ড ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ পর্যন্ত এটাই এই হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর মধ্যে আট জনের করোনা পজেটিভ ছিল। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় মৃতদের ১০ জন পুরুষ ও আটজন নারী।
আরও পড়ুন: রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক দিনে ১৬ জনের মৃত্যু
এর মধ্যে রাজশাহীর ১৩, চাঁপাইনবাগঞ্জের এক ও নওগাঁর চারজন রয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন আইসিইউতে মারা যান।
এ নিয়ে চলতি মাসের গত ২৪ দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ২৪ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ২৬০ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১২১ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯৩ জন। এর আগে সবচেয়ে বেশি মারা যান গত ৪ জুন ও ২৩ জুন ১৬ জন এবং সবচেয়ে কম ১২ জুন চারজন।
আরও পড়ুন: রামেকের করোনা ইউনিটে আরও ১৩ মৃত্যু
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৪ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০, নাটোরের চার, নওগাঁর ছয় ও পাবনার একজন রয়েছেন। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৩ জন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৫৭ বেডের বিপরীতে মোট চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৪০৪ জন। বাকিদের মেঝে ও বারান্দায় অতিরিক্ত বেড তৈরি করে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজশাহীতে আরও এক সপ্তাহ বাড়ল লকডাউন
রাজশাহী মহানগরীতে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন। চলবে আগামী ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত। এ নিয়ে তৃতীয় দফা লকডাউন বাড়ানো হলো রাজশাহীতে।
বুধবার রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুনঃ সারাদেশে লকডাউনের বিষয়ে যা জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বিকেল সাড়ে ৩টায় এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, মঙ্গলবার সিটি মেয়রসহ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জরুরী বৈঠক করা হয়েছে। সেই বৈঠকে রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশন এলাকায় লকডাউনের পাশাপাশি উপজেলা এলাকায় বিধিনিষেধ বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয় যেন মানুষ অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া এলাকার বাইরে যেতে না পারে।
আরও পড়ুনঃ বেনাপোলে আজ থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন
জেলা প্রশাসক বলেন, লকডাউনে সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমহল, মার্কেট, দোকান, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। তবে ওষুধ, কাঁচাবাজার, চিকিৎসা সেবা লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়াও লকডাউনের সময় বাস, ট্রেনসহ কোন প্রকার যানবাহন রাজশাহী নগরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং রাজশাহী মহানগর থেকে বাইরে যেতে পারবে না। তবে আমসহ কৃষি ও খাদ্য সামগ্রীবাহী পরিবহন চলাচল করবে। জনসমাবেশ হয় এমন সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ঈদের পর থেকে রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকলে গত ১১ জুন সিটি করপোরেশন এলাকায় এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ১৬ জুন তা আরেক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২৪ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত করা হয়েছিল।
রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক দিনে ১৬ জনের মৃত্যু
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় তারা মারা যান। মৃতদের মধ্যে ৮ জনের করোনা পজেটিভ এবং বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর ৮ জন, চাঁপাইনবাগঞ্জের তিনজন, নাটোরের দুইজন, নওগাঁর দুইজন ও ঝিনাইদহের একজন রয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন মারা যান আইসিইউতে। মৃতদের মধ্যে আটজনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। বাকিদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিনজন এবং ৩১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে পাঁচজন।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে সিনোফার্মের টিকা দেয়া শুরু
তিনি আরও জানান, এ নিয়ে চলতি মাসের গত ২৩ দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ২৩ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ২৪৫ জন। এর আগে সবচেয়ে বেশী মারা যান গত ৪ জুন ১৬ জন এবং সবচেয়ে কম ১২ জুন চারজন।
আরও পড়ুন: ফাইজারের টিকাদান সোমবার থেকে শুরু
শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬০ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৪৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয়, নাটোরের দুই, নওগাঁর পাঁচ, পাবনার দুই ও ঝিনাইদহের একজন। সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪২ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে একদিনে আরও ৭৬ মৃত্যু, শনাক্ত ৪৮৪৬
তিনি বলেন, হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাসহ ৪৮ বেডের আরও একটি ওয়ার্ড মঙ্গলবার চালু করা হয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে বেডের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩৫৭টি। বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৫৭ বেডের বিপরীতে মোট চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৪১০ জন। বাকিদের মেঝে ও বারান্দায় অতিরিক্ত বেড তৈরী করে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৪১০ জন রোগীর মধ্যে রাজশাহীর ২৭৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৬০ জন, নাটোরের ২৬ জন, নওগাঁর ৩৪ জন, পাবনার নয়জন, কুষ্টিয়ার তিনজন এবং চুয়াডাঙ্গার দুইজন রয়েছেন। আইউসিইউতে ভর্তি আছেন ২০ জন।
এদিকে, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত্যু বাড়লেও রাজশাহীতে টানা চারদিন ধরে কমেছে করোনার সংক্রমণ। মঙ্গলবার দুইটি ল্যাবে রাজশাহীর ৪৫৭ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যা আগের দিনের চেয়ে দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ০৫ শতাংশ।
এর আগের দিন সোমবার ছিল ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। এছাড়াও গত রবিবার রাজশাহীতে করোনা শনাক্তের হার ছিল ৪৩ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং শনিবার ৪৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
শামীম ইয়াজদানী জানান, মঙ্গলবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ল্যাবে ৫৫৪ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ এসেছে ১৭৬ জনের।
রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ। এছাড়াও বিদেশগামী দুইজনের নমুনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ এসেছে।
রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় গত ১১ জুন থেকে সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রথমে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। পরে তা আরেক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২৪ জুন রাত ১২টায় করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার ১৬.৫৬ শতাংশ
চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের হার ১৬.৫৬ শতাংশ। একই সময়ে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের।
মঙ্গলবার স্বাস্থ বিভাগের সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় আরও ১১১ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ৬৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করে এই ফলাফল পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে সিনোফার্মের টিকা দেয়া শুরু
তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে আসা আরটি পিসিআর ল্যাবের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৯০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ২৫ জন। আর স্থানীয়ভাবে করা র্যাপিড এন্টিজেন টেষ্টে ৫৭২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ৮৬ জন। যার সংক্রমনের গড় হার ১৬.৫৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ফাইজারের টিকাদান সোমবার থেকে শুরু
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসেবে জেলায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৯১ জন। আর এ পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ৯৬ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১ হাজার ৩৪৯ জন। এর মধ্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ৭২ জন ও অন্যরা প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ কোটি ৮১ লাখের বেশি
এদিকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জেলায় দ্বিতীয় দফায় এক সপ্তাহের কঠোর বিধি নিষেধের শেষ দিন ছিল মঙ্গলবার।