সিলেট
সিলেটে নতুন ১২ জনসহ করোনায় ৯৯৬ মৃত্যু
সিলেট বিভাগে করোনা সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১০ জন ও সুনামগঞ্জে ২ জনের মৃত্যু হয়। এনিয়ে বিভাগে এখন করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৯৬ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলাতেই মারা গেছেন ৮১১ জন।
সোমবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনায় মৃত্যু ৬
তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে ২১৫ জন করোনা রোগীকে শনাক্ত হয়েছে। এক হাজার ৪০৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় তাদের করোনা ধরে পড়ে। শনাক্তদের মধ্যে সিলেটের ১০৫ জন, সুনামগঞ্জের ২৫, মৌলভীবাজারের ৫২ ও হবিগঞ্জের ৩৩ জন রয়েছেন। শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ২৯ শতাংশ।
এদিকে, বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৫১ হাজার ৪২১ জনে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনায় মারা গেলেন বিএনপি নেতা মাওলানা রশিদ
সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, সিলেটে নতুন করে ৩৭৫ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। সুস্থ হওয়াদের মোট সংখ্যা এখন ৪০ হাজার ৭৬০ জন। এছাড়া ৪০৮ জন করোনা রোগী বর্তমানে সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
করোনায় মারা গেলেন বিএনপি নেতা মাওলানা রশিদ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি মাওলানা রশিদ আহমদ মারা গেছেন।
সোমবার বেলা ১১টার দিকে সিলেট নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: করোনায় মারা গেলেন চবির সাবেক ডিন গাজী সালাহ উদ্দীন
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সিলেট নগরীর উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন অ্যাডভোকেট মাওলানা রশিদ আহমদ। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল।
সিলেট জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি জুনেদ আহমদ চৌধুরী জানান, তার জানাজার নামাজের সময় এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
রশিদ আহমদের বাড়ি গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। তিনি গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার সংবাদের সম্পাদক ও প্রকাশক ছিলেন।
আরও পড়ুন: করোনায় মারা গেলেন সাবেক এমপি খুররাম খান
এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দুবার চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে সিলেটে সমাবেশ
বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে সিলেটে সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট সিলেট জেলা।
রবিবার বিকালে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত দেড় বছর ধরে করোনার কারণে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের জীবন থমকে আছে। অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। তবে এখন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার কোনও রোডম্যাপ সরকারের নেই। শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায়ও আনতে পারেনি সরকার। এই অবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা।
আরও পড়ুন: যাত্রীবাহী লঞ্চ চালুর দাবিতে নৌযান শ্রমিক ইউনিয়নের বিক্ষোভ সমাবেশ
তারা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছে বেতন-ফি আদায় করা হচ্ছে। যা অযৌক্তিক ও অমানবিক। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে।
করোনা প্রতিরোধে, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিতে এবং টিকা সংগ্রহ, উৎপাদন ও প্রদানে সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে বক্তারা দেশের সব নাগরিককে দ্রুত টিকা দেওয়ার আহবান জানান।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিক্ষোভ সমাবেশ
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদিয়া নওশীন তাসনিমের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট মহানগরের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক নাহিদ হাসান প্রান্তিকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. নাবিল এইচ, ছাত্র ফ্রন্ট নেতা নিশাত সানি প্রমুখ।
অ্যাম্বুলেন্সে অন্তঃসত্ত্বা নারীর লাশ, গ্রেপ্তার ২
সিলেটের বিশ্বনাথে ধর্ষণের শিকার এক নারীর লাশ নিয়ে রাতভর ঘোরাঘুরির সময় লাশসহ অ্যাম্বুলেন্সটি আটক করে পুলিশে দিয়েছে জনতা। রবিবার সকালে বিশ্বনাথের লামাকাজি এলাকা থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় জব্দ করা হয় অ্যাম্বুলেন্সটিও। আর ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় আটক ২ বৃদ্ধকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাতে মারা যান মখলিছুন বেগম (৩২) নামের ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী। তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মির্জারগাঁও গ্রামের আবদুস সালামের মেয়ে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার উপপরিদর্শক(এসআই) অলক বলেন, রবিবার সকালে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মখলিছুন বেগম স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে দুই সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করছিলেন। বাবা দরিদ্র হওয়ায় মখলিছুন লামাকাজি বাজারের নৈশপ্রহরী মির্জারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কমলা মিয়ার বাসায় বেশ কিছুদিন ধরে ঝিয়ের কাজ করেন। এই সুবাদে কমলা মিয়া তার সত্তরোর্ধ্ব বিয়াই উপজেলার সত্তিশ গ্রামের রইছ আলীর সাথে তাকে (মখলিছুন) বিয়ে দেয়ার ফন্দি আটেন।
নানা প্রলোভন দেখিয়ে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ রইছ আলীর সাথে বিয়ে দেয়া হয় মখলিছুনকে। বিয়ের চার দিনের মাথায় রইছ আলী জানতে পারেন, তার নব-বিবাহিতা স্ত্রী মখলিছুন বেগম পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে দুই বিয়াই মিলে মখলিছুনকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে গর্ভপাত করাতে নিয়ে যান।
শুক্রবার বিকেলে হাসপাতাল থেকে ফেরার পর রইছ আলী মখলিছুন বেগমকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর তাকে বাবার বাড়িতে রেখে যান দুই বিয়াই।
সন্ধ্যায় মখলিছুন বেগমের শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় ফের হাসপাতালে পাঠান তার বাবা। ওইদিন রাতেই কমলা মিয়া ও তার বিয়াই রইছ আলীকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
শনিবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মখলিছুন বেগম। তখন তার বাবা আব্দুস সালাম স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালামকে সাথে নিয়ে মামলা দায়ের করতে বিশ্বনাথ থানায় অবস্থান করছিলেন। এই সুযোগে একজন অজ্ঞাতনামা নারী অভিভাবক পরিচয় দিয়ে হাসপাতাল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স করে লাশ নিয়ে লামাকাজীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন এবং পথে মদিনা মার্কেট এলাকায় ওই অজ্ঞাতনামা নারী অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে যান।
আরও পড়ুন: সিলেটে তরুণীকে ধর্ষণ, যুবক আটক
এরপর রাত ১২টার দিকে আব্দুস সালাম ও আবুল কালাম থানায় অবস্থানকালে হঠাৎ খবর পান- লামাকাজীতে একজন নারীর লাশ নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স অনেকক্ষণ ধরে ঘোরাঘুরি করছে। পরে সেটি স্থানীয় জনতা আটক করে রাখে।
খবর পেয়ে আব্দুস সালাম ও আবুল কালাম লামাকাজীতে গিয়ে মখলিছুনের লাশ শনাক্ত করেন। পরে রবিবার (২২ আগস্ট) সকালে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ মর্গে পাঠিয়েছে। মখলিছুনের বাবা জানান, তার মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক রইছ আলী জানান, মখলিছুনকে দেড় মাস আগে তিনি বিয়ে করেছেন। তবে মখিলছুন বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কীভাবে হলো সেটি তিনি জানেন না।
আরও পড়ুন: প্রবাসীর স্ত্রীর ঘর থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার
বিশ্বনাথ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অলক বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। ওসমানী হাসপাতাল থেকে ওই নারীর লাশ এখানে কীভাবে এলো, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত বলতে পারছি না। এ নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় রইছ আলী ও কমলা মিয়া নামের দুজনকে শুক্রবার রাতেই আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে রইছ আলী নিজেকে ওই নারীর স্বামী দাবি করছে।
এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মখলিছুনকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি-না বা তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।
তবে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ওই নারীর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে ৪ তরুণীর আত্মহত্যার চেষ্টা
করোনা: সিলেট বিভাগে আরও ১২ জনের মৃত্যু
মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। তাদের মধ্যে সিলেট জেলার আট জন, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের একজন করে এবং ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২১ আগস্ট) সকালে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনায় ৮ মৃত্যু
একই সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২০০ জনের। নতুন শনাক্তদের মধ্যে সিলেট জেলায় ১০৬ জন, সুনামগঞ্জে ২২ জন, হবিগঞ্জে ১৮ জন ও মৌলভীবাজারে ৪৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এছাড়াও ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এনিয়ে সিলেট বিভাগে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ৪১ জন। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সিলেট জেলায় ২৭ হাজার ২৫৫ জন, সুনামগঞ্জে ৫ হাজার ৯০০ জন, হবিগঞ্জে ৬ হাজার ১৩১ জন, মৌলভীবাজারে ৭ হাজার ৪৪৪ জন। আর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ৪ হাজার ৩১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২১ কোটি ছাড়াল
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের দেয়া তথ্যমতে, সিলেটে মোট প্রাণহানি হয়েছে ৯৭২ জনের। যার সর্বোচ্চ সিলেট জেলায় ৭০৮ জন, সুনামগঞ্জে ৬৫ জন, হবিগঞ্জে ৪৬ জন, মৌলভীবাজারে ৭০ জন এবং সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোট ৮৩ জনের মৃত্যু হয় করোনায়।
অপরদিকে শেষ ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে নতুন করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৪২ জন। আর নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৯ জন।
প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রে ৪ তরুণীর আত্মহত্যার চেষ্টা
সিলেটে সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে চার তরুণীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ ঘটনায় চার তরুণী নিজেদের হাত কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে জানা যায়। পরে তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে সিলেটের সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্র খাদিমনগরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করলে রক্তাক্ত অবস্থায় কর্তৃপক্ষ তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
তাদের অভিযোগ, ‘প্রশিক্ষক ও স্টোরের দায়িত্বে থাকা দেলওয়ার হোসেন ও অফিস সহকারী আনোয়ারা বেগম তাদের ওপর নির্যাতন করেন। এমনকি ঘটনার দিন সকাল ১১টার দিকে প্রশিক্ষক দেলওয়ার হোসেন তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। দীর্ঘদিনের নির্যাতন-অপমান সহ্য করতে না পেরে তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।’
আরও পড়ুন: বরিশালে ২ মামলা, প্রধান আসামি মেয়র
বর্তমানে ওই চার তরুণী ওসমানী হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসাধীন কলি বেগম অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন থেকে তাদেরকে শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন করা হয়। দেলওয়ার এবং আনোয়ারা মিলে নির্যাতন করেন। মাঝে মাঝে অফিস সহকারী আনোয়ারা তাদেরকে জুতাপেটাও করেন। এদিন সকালে খাবার নিয়ে প্রশিক্ষক দেলওয়ার তাদেরকে খারাপ কথাবার্তা বললে তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
চার তরুণী আরও জানান, মোট ৩৮ তরুণী ও ২ শিশু মিলে সামাজিক প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের মোট বাসিন্দা ৪০ জন। এদের মধ্যে কিছুদিন আগে তাদের সাথের এক তরুণী বিষপান করে আত্মহত্যা করেন। ওই তরুণীর শিরনী হবে শুক্রবার। মূলত এ শিরনী নিয়েই বকাঝকা করেন দেলওয়ার।
তবে অভিযুক্ত প্রশিক্ষক ও স্টোরের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা দেলওয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই প্রশিক্ষণার্থীরা সামান্য কিছু হলেই হাত কেটে ফেলেন। এর আগেও একাধিকবার তারা নিজেরাই হাত কেটে ফেলে। আমি মাত্র পাঁচ দিন ধরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে স্টোরের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। এর আগে আনোয়ারা বেগম অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতেন।’ দেলওয়ার আরও বলেন, ‘প্রশিক্ষণার্থীদের বুঝিয়ে বলা হয়েছিল শিরনির জন্য অতিরিক্ত কোনো বরাদ্দ নেই স্টোরে যা বরাদ্দ সেগুলো দিয়েই রান্না করা হবে। কিন্তু তারা সেগুলো শুনতে চায়নি। তাই তারা কোনও কারণ ছাড়াই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।’
আরও পড়ুন: সরকার সন্ত্রাসের রাজত্ব চালু করেছে: ফখরুল
অপরদিকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অফিস সহকারী আনোয়ারা বেগম ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহকারী ব্যস্থাপক লুৎফর রহমানের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য গত ২২ জুলাই সিলেটের সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোটমণি নিবাসে দুই মাসের এক শিশু হত্যার ঘটনায় এখনও সিলেটের মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর মাঝেই এই চার তরুণীর আত্নহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটলো।
বিশ্বনাথে কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা
সিলেটের বিশ্বনাথে প্রিয়াংকা রানী নাথ ওরফে সঙ্গী (২২) নামে এক কলেজছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের রামাইচক রহিমপুর গ্রামে নিজের বড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
প্রিয়াংকা ওই গ্রামের নরউত্তম দেবনাথের মেয়ে ও সিলেট মদন মোহন কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে নিজের শোবার ঘরের ছাদে ব্যবহৃত বাঁশের সাথে ওড়না ও দরজার পর্দা দিয়ে ফাঁস নেন। একপর্যায়ে তার পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করেন। ততক্ষণে নিষ্প্রাণ হয়ে যায় প্রিয়াংকার দেহ। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় তার ভাই সুজন দেবনাথ ওইদিন রাতেই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দেন। তবে কেন, কী কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন প্রিয়াংকা? এর সঠিক জবাব জানাতে পারেনি কেউ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পড়ালেখার পাশাপাশি চাকরির মাধ্যমে সংসার চালাতো প্রিয়াংকা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিতা ছিলেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মো. সজ্জাদ আলী জানান, এনজিও সংস্থার মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী মিরগাঁও গ্রামের আবদুল আজিজের বাড়িতে শিক্ষকতা করতেন প্রিয়াংকা। প্রতিদিনের মতো বুধবার বিকেল ৪টায় বাড়িতে যান। বৃদ্ধ বাবা পাশের ঘরে থাকলেও মা পাশের বাড়িতে কীর্তনে ছিলেন।
আত্মহত্যার বিষয়ে জানতে প্রিয়াংকার ভাই সুজন দেবনাথের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান জানান, সুরতহাল রিপোর্ট শেষে লাশ ওসমানী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গলায় ফাঁস দিয়ে ইবি ছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’
ফুলবাড়ীতে চিরকুট লিখে স্কুল শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’
জকিগঞ্জে মাইক্রোবাস খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩
সিলেটের জকিগঞ্জে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মাইক্রোবাস সড়কের পাশের খাদে ছিটকে পড়ে পানিতে ডুবে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বর্তমানে মোট মৃত্যু সংখ্যা তিনজন। এ সময় চারজনকে আহতাবস্থায় মাইক্রোবাসের ভিতর থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের বারহাল ইউনিয়নের শাহবাগের নিজগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: এক অসহায় বৃদ্ধ বাবার সংবাদ সম্মেলন!
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, দূর্ঘটনায় সুলতানপুর ইউনিয়নের গণিপুর গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে মো. সামেল মিয়া (৩০), বারঠাকুরী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের আব্দুল মানিকের ছেলে জুনেদ আহমদ (৩৩), একই ইউপির ছয়ঘরী গ্রামের অরুন বিশ্বাসের ছেলে শিপন বিশ্বাস (৩৬) নিহত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সিলেট থেকে জকিগঞ্জগামী মাইক্রোবাসটি (সিলেট-ট- ১১-০৫২২) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে ছিটকে পড়ে পানিতে ডুবে যায়। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিক উদ্ধার কাজ শুরু করে ৭ জনকে উদ্ধার করেন। এরমধ্যে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু ঘটে। পরে সিলেট নেবার পথে আরও দুই জন মারা যান।
আরও পড়ুন: শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি বন্ধ
খবর পেয়ে জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাসেম ও জকিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে যান।
জকিগঞ্জ থানার ওসি আবুল কাসেম জানিয়েছেন, দূর্ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের লাশ ও গাড়ি উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে। তবে গাড়িতে মোট কয়জন ছিলেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিলেটে মাইক্রোবাস খাদে, নিহত ২
সিলেটের জকিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। তিনজন আহত হয়েছেন। আরও দুই জন নিখোঁজ রয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পরচক ও শাহবাগের মাঝামাঝি নিজগ্রাম এলাকায় সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে একটি মাইক্রোবাস খাদে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, জকিগঞ্জের গণিপুর গ্রামের মৃত মতু মিয়ার ছেলে মাহেল চৌধুরী ও বারঠাকুরী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের জুনেদ আহমদ।
আরও পড়ুনঃ সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ সেনা সদস্য নিহতস্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের শাহবাগের নিজগ্রাম নামক স্থানে একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খালের পানিতে ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই ওই দু'জনের মৃত্যু হয়।স্থানীয় ইউপি সদস্য সুমন আহমদ চৌধুরী বলেন, ওই মাইক্রোবাসে ৭ জন যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর আমরা ২ জনের লাশ উদ্ধার করেছি। আর আহত তিন জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে দুই জনের খোঁজ এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। এখনও উদ্ধার কাজ চলছে।
আরও পড়ুনঃ সড়ক দুর্ঘটনায় দুই চীনা নাগরিকসহ নিহত ৩
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কাশেম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুর্ঘটনায় দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরো দু-একজনের মৃত্যুর খবর শোনা যাচ্ছে। উদ্ধার কাজ শেষ হলে নিহতের সঠিক সংখ্যা জানা যাবে।এদিকে রাত সোয়া ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলছে বলে জানান ওসি মো. আবুল কাশেম।
আরও পড়ুনঃ দুবাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি নিহত
ধলাই নদীতে বালু উত্তোলন নিয়ে সংঘর্ষ : আহত যুবকের মৃত্যু
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদীর ঢালার মুখ নামক স্থানে ইজারা বহির্ভূত জায়গা থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মৃত আসাদুজ্জামান আসাদ (২০) উপজেলার নতুন বস্তি এলাকার কফিল উদ্দিনের ছেলে।
আরও পড়ুনঃ সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আনসার সদস্য নিহত
স্থানীয়দের বরাতে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ দিন থেকে ধলাই নদীর ঢালার মুখ নামক স্থান থেকে চলছে ইজারা বহির্ভুত বালু উত্তোলন। গত ১৬ আগস্ট এ জায়গা থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে রাজনগর নতুন বস্তির বেপারি গ্রুপ ও ঢালার পাড় শাহীন, মানিক, নূর আলম গ্রুপের মধ্যে বালু উত্তোলন নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এসময় ব্যাপারী গ্রুপের আসাদ গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তিনি মার যান।
আরও পড়ুনঃ ঝিনাইদহে দু’পক্ষের সংঘর্ষে কৃষক নিহত
ওসি জানান, এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।