বৈদেশিক-সম্পর্ক
আগামীকাল কুয়েত যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কুয়েতের আমিরের মৃত্যুতে সমবেদনা জানাতে এবং সেখানে প্রাসঙ্গিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) কুয়েত যাচ্ছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
কুয়েতের আমির শেখ নাওয়াফ আল আহমেদ আল সাবাহ ৩ বছরের রাজত্বের পর শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, বোয়িং কেনার মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এদিকে, কুয়েতের মন্ত্রিসভা শনিবার কুয়েতের সংবিধানের বিধান অনুযায়ী শেখ মিশাল আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহকে আমির হিসেবে মনোনীত করেছে।
কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ আহমেদ নাওয়াফ আল-আহমাদ আল-সাবাহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এক বিশেষ বৈঠকের পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সরকার রাজনৈতিক কারণে কাউকে হয়রানি করছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ এখন ভীতু দেশ নয়: এম জে আকবর
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর রবিবার বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা বাংলাদেশকে ভয় দেখাচ্ছে তারা ভুলে যাচ্ছে- বাংলাদেশ এখন ভীতু দেশ নয়।
নির্বাচনের আগে যে সব নিষেধাজ্ঞা বা অন্যান্য পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভয় দেখালেই যে আমি (বাংলাদেশ) ভয় পাব, তা ভাবা ঠিক হবে না।’
বিশিষ্ট এই লেখক-সাংবাদিক ও পরবর্তীতে রাজনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশের প্রতি কিছু মনোযোগের কারণ হলো দেশটির প্রাসঙ্গিকতা।
ভারতের এই সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সম্ভাবনাময় দেশে পরিণত হয়েছে।
অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এশিয়ার উদীয়মান শক্তি।’
এম জে আকবর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার থেকে 'জাতির দ্বিতীয় মুক্তির নেতা ও বিজয়ী' হিসেবে সম্মানিত করা এবং তা উদযাপন করা উচিৎ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন আর বহিরাগত শক্তিকে ভয় পাওয়ার মতো অবস্থায় নেই। বিষয়টি এখন আর কাজ করে না।
আরও পড়ুন: ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড পেলেন শেখ হাসিনা
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে '৫২ বছরে বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামী দশকগুলোতে এ অঞ্চল ও বাইরে এর অবস্থান' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মূল বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, বরং সম্ভাবনাময় দেশ।
মোমেন বাংলাদেশ অর্জিত উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ গণতন্ত্র অনুসরণ করছে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর মাশফি বিনতে শামস অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আকবর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে শুধু উন্নয়নের দিকেই নয়, আধুনিকতার দিকে নিয়ে গেছেন, যার ৪টি মাত্রা রয়েছে। তিনি চারটি মাত্রাতেই কাজ করেছেন।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ও সকল বিশ্বাসের স্বাধীনতা ছাড়া কোনো দেশই আধুনিক জাতি হতে পারে না। প্রতিটি বিশ্বাসের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হলো অন্তর্ভুক্ত জাতীয়তাবাদ।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কাগজে-কলমের অধিকারকে বাস্তবতায় পরিণত করেছেন। তিনি লিঙ্গ সমতা ও দারিদ্র্য বিমোচনে তার প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি সমালোচনামূলক। দারিদ্র্য দূরীকরণ ছাড়া আধুনিক জাতি হতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের ৪৬তম ক্ষমতাধর নারী: ফোর্বস
আকবর বলেন, ‘বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিয়ে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই জনগণ তাকে বার বার নির্বাচিত করেছে।’
তিনি গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরেন এবং স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টাকারী শক্তির কথাও উল্লেখ করেন।
আকবর বলেন, স্বাধীনতা বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি, বরং বাংলাদেশ তা অর্জন করেছে।
ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘তাদের দুই প্রধানমন্ত্রীর প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানানো উচিৎ। যা সমগ্র বিশ্বের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হতে পারে।’
আকবর বলেন, বাংলাদেশের উচিৎ নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিজের পক্ষ নেওয়া।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: কাদের
বাঙালি জাতিসত্তাকে পূর্ণতা দেন বঙ্গবন্ধু: হাইকমিশনার আল্লামা সিদ্দিকী
অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী বলেছেন, হাজার বছরে সৃষ্টি হওয়া বাঙালি জাতিসত্তাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ঐন্দ্রজালিক ক্ষমতার মাধ্যমে পূর্ণতা দেন।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের চূড়ান্ত প্রকাশ ঘটে বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ নেতৃত্বের মাধ্যমে।’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে তিনি জনযুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করে এ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকলের অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় আল্লামা সিদ্দিকী এসব কথা বলেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলার সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের সকল পর্যায় সম্পর্কে জানার আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিজয় দিবস উদযাপিত
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ব্রাজিলে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিজয় দিবস উদযাপিত
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়াতে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় বর্ণিল পরিবেশে মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উদযাপিত হয়েছে।
জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সূচিত হয় মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে দূতাবাসের আয়োজন।
এ সময় দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সপরিবারে ও সবান্ধব উপস্থিত ছিলেন।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রদূত সাদিয়া।
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বিশেষ বাণী পাঠ করেন রাষ্ট্রদূত এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন দূতালয় প্রধান।
আরও পড়ুন: ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপন
বিজয় দিবসের তাৎপর্যকে প্রতিপাদ্য করে সাদিয়া ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী ত্রিশ লাখ শহীদ এবং ৭১-এ দেশজুড়ে নির্বিচারে গণহত্যা ও পাশবিক নির্যাতনের বেদনাময় ঘটনাপ্রবাহ স্মরণ করেন। পাশাপাশি বিশ্বসভায় বাংলাদেশের এই রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধুর অবিস্মরনীয় অবদানের ওপর আলোকপাত করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ নামের স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দেবার জন্য বঙ্গবন্ধুকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে স্বাধীনতার অব্যাহতি পরেই কূটনৈতিক অঙ্গনে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গৃহীত নানা পদক্ষপের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বঙ্গবন্ধুর জীবন, স্বাধীনতা অর্জনে তার অসামান্য ভূমিকা এবং যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু গৃহীত নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে সঠিক পথে এগুচ্ছে: ইয়াঙ্গুনে রাষ্ট্রদূত
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রোল মডেল। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার মতো বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ আজ নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে আসীন।
রাষ্ট্রদূত নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ ও বলীয়ান হয়ে ২০৪১ সালের মাঝে জ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে নিবেদিত হওয়ার আহ্বান জানান।
দূতাবাস পরিবারের শিশুরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত কবিতা আবৃত্তি, গল্প বলা ও নৃত্য পরিবেশন করে। এছাড়াও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যেকের অংশগ্রহণে একাত্তরের কালজয়ী ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘নোঙ্গর তোলো তোলো’ সমবেত সংগীত পরিবেশিত হয়।
ভাষা আন্দোলনসহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আত্মত্যাগকারী, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ এবং বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপিত
বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে সঠিক পথে এগুচ্ছে: ইয়াঙ্গুনে রাষ্ট্রদূত
যথাযথ মর্যাদা ও আনন্দঘন পরিবেশে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে।
দিনব্যাপী কর্মসূচির প্রথম পর্বে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন; জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ; রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং আলোচনা সভা।
বিকালে অনুষ্ঠিত হয় কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জন্য সংবর্ধনা। সন্ধ্যার পরে ছিল বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সবশেষে আগত অতিথিবৃন্দের জন্য নৈশভোজ।
আলোচনা পর্বে রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা যুদ্ধে নির্যাতিত নারীদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান।
আরও পড়ুন: শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে বিজয় দিবস
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে অর্জিত মহান বিজয় বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম আর এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এই স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, জাতির পিতার নির্দেশিত পররাষ্ট্রনীতি অনুসারে বাংলাদেশ সকলের সঙ্গে বন্ধুসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখছে।
তিনি তার বক্তব্যে বর্তমান বাংলাদেশের ৩টি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য- জনকল্যাণমূলক গণতন্ত্র, চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এবং জাতি গঠনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে সঠিক পথে এগুচ্ছে, যা বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করবে।
বিকালে ইয়াঙ্গুনস্থ কূটনৈতিক মিশনের প্রধানগণ, অন্যান্য কূটনীতিকবৃন্দ, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিগণ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা, মিয়ানমারের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং ইয়াঙ্গুনস্থ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে একটি সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপিত
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আর্ট অ্যান্ড কালচারের শিক্ষার্থীরা এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাদের শিশুরা দেশাত্মবোধক বাংলা গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন।
দূতাবাসপ্রাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন পর্যায় তুলে ধরে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। আমন্ত্রিত বিশিষ্ট এ অতিথিদের জন্য বাংলাদেশি খাবারের আয়োজন করা হয়।
সন্ধ্যায় দূতাবাসের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আগত অতিথিদের মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানে মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যগণ, দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের পরিবারের সদস্যসহ উপস্থিত ছিলেন।
সবশেষে অতিথিদের নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে দূতাবাস প্রাঙ্গণ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপন
ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপন
যথাযথ মর্যাদা, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দ-মুখর পরিবেশে পাকিস্তানের ইসলামাবাদের বাংলাদেশ হাইকমিশন মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে।
এ উপলক্ষে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) হাইকমিশন প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করা হয়।
এছাড়া হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এতে অংশ নেন।
দূতাবাস প্রাঙ্গণ বিজয় দিবসের ব্যানার, পোস্টার ও রঙিন বেলুন দিয়ে সজ্জিত করা হয়।
শনিবার সকালে হাইকমিশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে হাইকমিশনার রুহুল আলম সিদ্দিকী আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ব্যাংককে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিজয় দিবস উদযাপিত
পরে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা পর্ব শুরু হয়।
৫২তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
আলোচনা পর্বে হাইকমিশনের কর্মকর্তারা তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও এর তাৎপর্য তুলে ধরেন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষে ড. জয়নুল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের সম্মান বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি গৌরবান্বিত বোধ করেন। পাকিস্তানে কর্মকালীনও তিনি বাংলাদেশি হিসেবে অনুরূপ সম্মান পাচ্ছেন।
সমাপনী বক্তব্যে হাইকমিশনার আলম সিদ্দিকী বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির এক গৌরবোজ্জ্বল দিন। গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির মুক্তির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের। বিশেষভাবে স্মরণ করছি দুই লাখ মা-বোনদের, যারা মুক্তিযুদ্ধকালে সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন বা নির্যাতিত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে বিজয় দিবস উদযাপিত
হাইকমিশনার গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের বিদেশি বন্ধু, শহিদ পরিবারের সদস্য ও সব স্তরের জনগণকে, যারা এ বিজয় অর্জনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন।
হাইকমিশনার বলেন, ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছিল। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্যমে তা পূর্ণতা পায়। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এ দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি। পৃথিবীর বুকে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্রের।
হাইকমিশনার আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ক্ষুধা, দারিদ্র ও শোষণমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে সারাজীবন উৎসর্গ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বনির্ভর, উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
বিজয়ের মাহেন্দ্রক্ষণে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে সকলকে যার যার অবস্থানে থেকে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়ে হাইকমিশনার তার বক্তব্য শেষ করেন।
পরিশেষে, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে বিভিন্ন আনন্দ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আকর্ষণীয় পুরস্কার বিতরণ এবং অতিথিদের মাঝে দেশীয় খাবার পরিবেশন করা হয়।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
৫২তম বিজয় দিবসে বাংলাদেশিদের শুভেচ্ছা ভারতের
বাংলাদেশের বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশের জনগণকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়েছে ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর এক বার্তায় বলেছেন, ‘৫২তম বিজয় দিবসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে উষ্ণ শুভেচ্ছা!’
তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী (বন্ধুত্ব) কেবল তার জনগণের স্বার্থেই কাজ করেনি, একটি দৃষ্টান্তও তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।
দূতাবাসের এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘শুভ বিজয় দিবস, বাংলাদেশ।’
মার্কিন দূতাবাস বলেছে, তারা স্বাধীনতা আদায়ের লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণের ‘সাহস ও আত্মত্যাগ’কে অভিবাদন জানায়।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘এই দিনটি ঐক্য, শান্তি ও সমৃদ্ধির অনুপ্রেরণা অব্যাহত রাখুক।’
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
ঢাকা-লন্ডন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব অব্যাহত রয়েছে: সারাহ কুক
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত এ মাটির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত হয়েছে।
দূতাবাসের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক বঙ্গবন্ধু কর্নারে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মো. রাশেদুজ্জামান।
এরপর দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞকে মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন এবং এই দিনটি আরো বৃহৎ পরিসরে পালনের মাধ্যমে এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, ‘এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ছিল জাতির জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি।’
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ জানান ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেন ১৪ ডিসেম্বরকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক দিন হিসেবে বর্ণনা করেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা এই দিনে দেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল।’
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের শাস্তি এড়াতে কিছু যুদ্ধাপরাধী বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন এবং খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করতে অবিলম্বে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
শহীদ বুদ্ধিজীবী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়।
কর্মসূচি পরিচালনা করেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।
আরও পড়ুন: মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
ঢাকা-লন্ডন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব অব্যাহত রয়েছে: সারাহ কুক
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের (ইউকে) মধ্যে আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের বিজয় দিবসের আগে এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে পেরে আনন্দিত।
হাইকমিশনার বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দুই দেশের ইতিহাস ও জনগণের সঙ্গে গভীর সম্পর্কের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল যুক্তরাজ্য।
ব্রিটিশ সরকারের মতে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ একটি আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্বে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে। যা জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলার মতো বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকারগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
পাটকে ‘ভবিষ্যতের আঁশ’ হিসেবে তুলে ধরার সুযোগ নিন: শাহরিয়ার আলম
বিশ্ব যে সবুজ প্রবৃদ্ধি কৌশল অনুসরণ করছে তার অংশ হিসেবে পাটকে ‘ভবিষ্যতের আঁশ’ হিসেবে তুলে ধরার এই মুহূর্তে যে সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে... পাটকে তার সঠিক নামে স্বীকৃতি দিতে এবং সঠিক অবস্থানে পৌঁছাতে সহায়তা করতে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থায়িত্ব ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য বিপুল চাপকে কাজে লাগানোর সময় এসেছে।’
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রজেক্টিং জুট অ্যাজ দ্য ফাইবার অব দ্য ফিউচার’- শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আবদুর রউফ, বুয়েটের উপউপাচার্য আব্দুল জব্বার খান ও বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বক্তব্য রাখেন।
শাহরিয়ার বলেন, এটা উদ্বেগজনক যে লাখ লাখ টন পচনশীল নয় এমন পদার্থ আমাদের মাটি ও পানিতে প্রবেশ করছে, যেগুলো আমাদের গ্রহের স্বাস্থ্য ও বাস্তুতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।
আলম বলেন, বিপরীতে পাট ও অন্যান্য প্রাকৃতিক তন্তুগুলো এই ধরনের কিছু সমস্যার সমাধান করতে পারে।
তিনি বলেন, পাটের ক্ষেত্রে মোটা প্যাকেজিং উপাদানের ঐতিহ্যগত মূল্য ছাড়াও এর অভিযোজনযোগ্যতা ও বহুমুখিতা তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ।
আলম বলেন, ‘আমরা এখন জানি দামি অ্যাক্টিভেটেড চারকোল থেকে জিও-টেক্সটাইলের মতো হাইটেক অ্যাপ্লিকেশনের মতো বিভিন্ন উপাদান পাট থেকে পাওয়া যেতে পারে। এই তথ্য আরও ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, প্রতি দুই বছর পর পর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত পাট ও অন্যান্য প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের বিষয়ে একটি রেজুলেশন পাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমরা ইউএনজিএ রেজিউলোশনের চেতনায় পাটের উপর একটি কৌশলগত প্রচার চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনদের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে প্রস্তুত।’
আলম বলেন, তারা টেকসই উন্নয়ন, ন্যায্য বাণিজ্য ও জলবায়ু কর্মকাণ্ডের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে পাটকে ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’-এর মূল উপাদান হিসেবে দেখতে চান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই উদ্যোগে আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আমন্ত্রণ জানাতে চাই।’
প্রতিমন্ত্রী পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্বাস করা হচ্ছে এই পরামর্শগুলো পারস্পরিক লাভজনক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারে:
প্রথমত, প্রকৃতির জন্য উপকারী বিশ্ব গঠনের প্রতি আমাদের পারস্পরিক অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে পাটকে পচনশীল নয় এমন উপকরণের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে প্রচার করুন।
দ্বিতীয়ত, পাট ও পাটজাত দ্রব্যের অবাধ ও ন্যায্য বাণিজ্যকে সমর্থন করার উপায় হিসেবে পাট চাষি এবং উদ্যোক্তাদের সমর্থন করা- তারা এই অনন্য প্রাকৃতিক সম্পদের প্রকৃত অভিভাবক।
তৃতীয়ত, পাটের সর্বোত্তম সম্ভাবনা অন্বেষণের জন্য চাপ-প্রতিরোধী পাটের জাত ও উচ্চ মূল্যসম্পন্ন পাটজাত পণ্যের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করুন।
চতুর্থত, গুণমান উন্নত করা এবং অপচয় বা দূষণ রোধ করার লক্ষ্যে কাঁচা পাট আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণসহ দক্ষ পণ্যের নকশা ও উন্নয়নকে সমর্থন করা।
পঞ্চম, সবশেষে টেকসই টেক্সটাইল, প্যাকেজিং, আসবাবপত্র বা কাগজ উদ্ভাবনে বিশ্বজুড়ে তরুণদের জন্য সম্ভাব্য জীবনধারা পছন্দ হিসেবে পাটের কথা ছড়িয়ে দিন।
তিনি বলেন, ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার ২০২৩’ উদযাপন এবং আগামী বছরগুলোতে পাটের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য কৌশল নির্ধারণ করুন।
প্রতিমন্ত্রী পাটের বাজারের দৃশ্যমানতা বাড়াতে, এটিকে বৈশ্বিক স্থায়ীত্বের প্রবণতার সঙ্গে সারিবদ্ধ করতে এবং জলবায়ু-নিরপেক্ষ ভবিষ্যতের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সবুজ বৃদ্ধির জন্য সব ইচ্ছুক অংশীদারদের সঙ্গে হাত মেলাবেন বলে আশা করেন।
আফসোস করে আলম বলেন, প্লাস্টিকের মতো কৃত্রিম পণ্যের বিশ্বব্যাপী বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্যাকেজিং ও কার্পেট শিল্পে পাট তার প্রাধান্য হারাতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক সরকারও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বহু পাট কারখানা ক্রমান্বয়ে হ্রাস ও বন্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। অথচ পাটভিত্তিক পণ্যের বৈচিত্র্যকরণে খুব কমই কোনো প্রচেষ্টা করা হয়েছে।
আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই ধারাবাহিক নীতি ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে পাট শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘকাল ধরে অদক্ষতা ও লোকসান কাজটিকে কঠিন করে তুলেছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে পাটখাত ফের ক্রমবর্ধমান অনুকূল বৈশ্বিক ও স্থানীয় পরিবেশে গুণগত পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে।