������������������������
বোরকা পরে শ্বশুরবাড়িতে হামলা, স্ত্রীসহ নিহত ৩
শেরপুরের শ্রীবরদীতে বৃহস্পতিবার বোরকা পরা এক ব্যক্তির শ্বশুড় বাড়িতে হামলা চালালে তিন জন নিহত এবং তিন জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর পুতল গ্রামের একটি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- একই গ্রামে মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগম (৪০), স্ত্রী শেফালী বেগম (৬০) এবং মৃত নুর জামালের ছেলে মাহমুদ হাজী (৬৫)।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত আ’লীগ নেতার মৃত্যু
শেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হাসান নাহিদ চৌধুরী জানান, স্ত্রী মনিরা বেগমের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বোরকা পরে মিন্টু মিয়া শ্বশুরবাড়িতে হামলা চালায়। এই সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিন জনকে গলা কেটে এবং আরও তিন জনকে এলোপাথারী কুপিয়ে জখম করে মিন্টু মিয়া পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তিন জনকে মৃত ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে র্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ১৩
গুরুতর আহত অপর তিন জনকে বকশীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এখনও অভিযুক্তকে আটক করতে পারেনি পুলিশ তবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এসপি নাহিদ।
বন্যা: কিশোরগঞ্জে পানিবন্দি লাখো মানুষের দুর্ভোগ চরমে
কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলসহ সকল নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। মঙ্গলবার জেলার ১৩ উপজেলার মধ্যে ৯টি উপজেলার ৬২ ইউনিয়নের ৪৭৩টি গ্রাম প্লাবিত। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজার ৭৪৮ পরিবার।
বন্যার পানি ঢুকছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন ইটনা, অষ্টগ্রাম, তাড়াইল, নিকলী, ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, করিমগঞ্জ, বাজিতপুর ও ভৈরব উপজেলার মানুষ।
অষ্টগ্রামের আটটি, মিঠামইনের সাতটি, করিমগঞ্জের আটটি, নিকলীর ছয়টি, কটিয়াদীর চারটি, বাজিতপুরের আটটি ও ভৈরবের পাঁচটি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। স্কুল কলেজ, বসতবাড়ি, উপাসনালয় ও হাট-বাজার প্লাবিত। তিন উপজেলার ২০টি গ্রামে নিরাপত্তার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
বাড়িঘর ছেড়ে অনেক পরিবার নৌকা ও উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। বসতবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। নদ-নদীতে প্রবল বেগে পানি এখনও বাড়ছে। এ অবস্থায় মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে যাচ্ছেন। পানি না কমলে নতুন করে আরও ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু খাদ্য ও আশ্রয় সংকটে রয়েছে। দুর্গত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি দুর্গতদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা প্লাবিত গ্রামে চাল বরাদ্দ করে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে বানভাসি মানুষের ঘরবাড়ি বিলীন, বাড়ছে দুর্ভোগ
পাউবো সুত্র জানায়, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১১.৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বিশেষ করে মেঘনা নদীর পানি ভৈরবে বিপদ সীমার ৫.৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন, হাওরের পানি কালনী ঘোড়াউত্রা হয়ে মেঘনা নদীতে ভৈরব সেতু দিয়ে নেমে যাবার কথা। মেঘনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বিপরীতমুখী প্রচন্ড স্রোতের কারণে পানি নামতে না পেরে কিশোরগঞ্জের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বন্যার সার্বিক অবস্থা আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় বন্যায় এক হাজার ৫০৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৬২ ইউনিয়নে মোট ১৫৪ আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। মোট ১২ হাজার ৭৪৮ জন মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। দুই হাজার ৪৭ গবাদি পশুকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে।
ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা আক্তার বলেন, উপজেলার সিংহভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের খাদ্য সংকট ও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব রয়েছে।
বানভাসি মানুষের জন্য ইতোমধ্যে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত বরাদ্দ দেয়া হয়েছে দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, ১৪৪ মেট্রিক টন চাল ও নগদ চার লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
নিকলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু হাসান জানান, ইতোমধ্যে নতুন করে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছাতিরচর, সিংপুর, দামপাড়া ইউনিয়ন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
তিনি আরও বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ গোটা হাওরে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে এভাবে বৃষ্টি হলে নিকলী উপজেলার অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যাবে।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান জানান, কিশোরগঞ্জ হাওরের ওপর প্রবাহিত বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় এক ফুট বেড়েছে। বিশেষ করে কালনী-কুশিয়ারার পানি অপরিবর্তিত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করতে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে হাওর অঞ্চল ঘুরে দেখেছি।
তিনি বলেন, অনেক এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। সেখানকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। অবস্থা বুঝে এবং গুরুত্ব বিবেচনা করে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগে বন্যায় ৭ দিনে ২২ জনের মৃত্যু: বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক
শিশু কন্যাকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে ডুবে মায়ের মৃত্যু
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় বন্যার পানিতে ডিঙ্গি নৌকাডুবির ঘটনায় শিশু কন্যাকে বাঁচাতে গিয়ে মায়ের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার জুড়াইল হাওরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জুলেখা বেগম (৩২) একই এলাকার হারেছ মিয়ার স্ত্রী।
কেন্দুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মীর মাহবুবুর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকালে বন্যার পানি দেখতে জুলেখা বেগম তার জা’ নাজমুন্নাহার ও সন্তানদের নিয়ে ডিঙ্গি নৌকায় করে জুড়াইল হাওরে যান। এ সময় জুলেখা বেগমের মেয়ে তানজিনা (৭) নৌকা থেকে পানিতে পড়ে যায় এবং মেয়েকে বাঁচাতে জুলেখা লাফ দিলে নৌকাটি ডুবে যায়।
আরও পড়ুন: খুলনায় শিশু হত্যা মামলায় সৎ মায়ের মৃত্যুদণ্ড
তবে সন্তানকে বাঁচাতে পারলেও পানিতে ডুবে জুলেখা মারা যান। পরে তার লাশ উদ্ধার করেন স্বজনরা।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি, কিশোরগঞ্জের ১৫ গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
কিশোরগঞ্জের হাওরে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও নিকলী উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এইসব এলাকায় তলিয়ে গেছে মাছের ঘের। তাছাড়াও হাওরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়ায় বাড়িঘরসহ পানির ঢেউয়ে রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ফলে সড়কে পানি উঠায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। তাছাড়াও পানি বৃদ্ধির কারণে করিমগঞ্জ ও ইটনা উপজেলায় ১৫টি গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ঝড়ো হাওয়ার কারণে এই ১৫টি গ্রামের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এতে করে ১০ হাজার গ্রাহক অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে পানি ও ঝড়ো হাওয়া কমে গেলে উক্ত গ্রামগুলোর বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: কিশোরগঞ্জের হাওরে নিখোঁজের ৩৪ ঘন্টা পর ছাত্রলীগ নেতার লাশ উদ্ধার
কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির একটি সূত্র জানায়, হাওর অধ্যুষিত করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর এবং ইটনা উপজেলার চৌগাঙ্গা অফিসের আওতাধীন শান্তিপুর, চারিতলা, বালিয়াপাড়া, খাকশ্রী, সুতারপাড়া, বালিখলা, পাঁচকাহনিয়া, এলংজুরির বড়িবাড়ি, এন সহিলা, দিয়াকান্দি, বাদলা, কুর্শি, শিমুলবাক, টিয়ারকোনা ও চং নোয়াগাঁও এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন ঝড়ো হাওয়ার কারণে ও নিরাপত্তার স্বার্থে শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বন্যার্তদের জন্য ১২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। গত শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র খোলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম প্রায় পুরোপুরি বন্যা কবলিত হয়েছে। এছাড়াও তাড়াইল, করিমগঞ্জ, নিকলী, বাজিতপুর ও ভৈরবের আংশিক এলাকা বন্যা কবলিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, ইতোমধ্যেই কিশোরগঞ্জ জেলায় বন্যার্তদের জন্য ১৪০ টন চাল, আড়াই লাখ টাকা ও দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না কিশোরগঞ্জের হাওরের ধানচাষিরা
কিশোরগঞ্জে বজ্রপাতে মা ও মেয়ের মৃত্যু
বন্যায় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে নেত্রকোনার রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
বন্যায় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে একটি রেলসেতু ভেঙে পড়ায় শনিবার সকাল থেকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে নেত্রকোনা জেলার রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
বারোহাট্টা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম রাব্বানী জানান, বন্যার পানিতে শুক্রবার রাতে মোহনগঞ্জ ও অতীতপুর রেলস্টেশনের মাঝামাঝি ২৩ নম্বর রেলব্রিজ ভেঙে পড়েছে। এতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে নেত্রকোনার রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, আন্তনগর ট্রেন ‘হাওর এক্সপ্রেস’ মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি। এদিকে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা ২৬২ নম্বর লোকাল ট্রেন আটকা পড়েছে বারহাট্টা স্টেশনে। এতে যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছে।
এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ স্টেশনের জিআরপি ফাঁড়ির ইনচার্জ জানান, হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেনটি মোহনগঞ্জে আটকা পড়েছে। রেলব্রিজটির নিচে পানির তীব্র স্রোত থাকায় ব্রিজটি মেরামত করতে সময় লাগবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মোহনগঞ্জের সঙ্গে ময়মনসিংহ ও ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকবে বলে রেল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
নেত্রকোনা জেলার ছয়টি উপজেলার ৩৯ টি ইউনিয়ন পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে বন্যা কবলিত হয়েছে। সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ৩৬ সেমি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, এক লাখ মানুষ পানিবন্দি
বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ: সিলেট ও সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন
ময়মনসিংহে পৃথক বজ্রপাতে ৬ জনের মৃত্যু
ময়মনসিংহে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, এদিন দুপুরে ময়মনসিংহের নান্দাইলের গাংগাইল ইউনিয়নের কংকরহাটি গ্রামের মাঠে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মারা যায় শহীদুল্লাহর ছেলে সাঈদ মিয়াঁ (১২), হাদিস মিয়ার ছেলে স্বাধীন (১১) ও বিল্লাল হোসেনের ছেলে শাওন (৮)।
তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালিয়াজুরীতে বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ দুই জনের মৃত্যু
অন্যদিকে, দুপুরে ময়মনসিংহ সদরের দড়ি কুষ্টিয়া বালাপাড়া এলাকায় বিলে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে মারা যান হাসেন আলীর ছেলে আবু বক্কার (৪০) ও পচা মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩২)।
দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, বিল থেকে লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
এছাড়া একই দিনে সকালে ধোবাউড়া উপজেলার চরমোহিনী গ্রামে বজ্রপাতে আরেকজনের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টিপু সুলতান জানান, মুষলধারে বৃষ্টির সময় চরমোহিনী গ্রামের ঘোগরা বিলে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে আহত হয় গফুর মিয়ার ছেলে আবু সাঈদ (৩০)। তাকে উদ্ধার করে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ৩
রাজধানীতে বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু
জামালপুরে খালের পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে খালের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের নয়াগ্রামে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মৃত মিথিলা আক্তার বৃষ্টি (১২) চর ডাকাতিয়া গ্রামের মোজাফফর হোসেনের মেয়ে এবং আসমানি আক্তার আসমা (১১) একই এলাকার আছর উদ্দিনের মেয়ে।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহব্বত কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির পাশের খাল পার হয়ে ছাগলের জন্য পাট পাতা সংগ্রহ করতে গিয়ে শিশু বৃষ্টি ও আসমা খালের পানিতে ডুবে যায়। স্থানীয় লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে খালের পানিতে তাদের লাশ ভাসতে দেখে স্বজনরা লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে স্কুলে যাওয়ার পথে নৌকাডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু
যশোরে পুকুরে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু
৪ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক
গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে বৃহস্পতিবার সকালে ভাওয়াল এক্সপ্রেসের একটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন স্টেশন মাস্টার রেজাউল ইসলাম জানান, ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ভাওয়াল এক্সপ্রেস রাজেন্দ্রপুর স্টেশন ছাড়ার পরপরই সকাল ১০টার দিকে একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এরপরে ওই রুটে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। এ কারণে দুইদিকে জামালপুর কমিউটার ও মহুয়া এক্সপ্রেসসহ কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার প্রক্রিয়া চালিয়ে কাজ শেষ করলে দুপুর ২টার দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় কলেজছাত্র নিহত
শেরপুর সদর উপজেলায় আমবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে মোটরসাইলেকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে শেরপুর-ঝিনাইগাতী সড়কের সদর উপজেলার মির্জাপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মাসুদুর রহমান মাসুদ (১৮) সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের তেঘরিয়া গ্রামের মুদি দোকানি মতিউর রহমান মতি মিয়ার ছেলে। তিনি তাতালপুর বি এম টেকনিক্যাল মডেল কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রি-টেস্ট পরীক্ষা দেয়ার জন্য মাসুদ সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে কলেজের উদ্দেশে রওনা দেন। পথিমধ্যে মির্জাপুর এলাকায় একটি সিএনজি চালিত অটোরিশকাকে ওভারটেক করতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা আমবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এছাড়া এ সময় ট্রাকটির চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকটিও রাস্তার ওপর উল্টে পড়ে যায়।
শেরপুর সদর থানার ওসি (তদন্ত) বন্দে আলী মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তবে এ ঘটনার পরপরই ট্রাক চালক পালিয়ে গেছেন বলেও জানান তিনি।
ভোগাই নদী থেকে নারীর লাশ উদ্ধার, অভিযুক্ত ছেলে আটক
শেরপুরে নালিতাবাড়ীতে এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মাকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ঘের ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার আড়াইআনি বাজারের জেলখানা এলাকায় ভোগাই নদী থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত নূরভানু (৫৫) নালিতাবাড়ী শহরের নিজপাড়া এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী এবং পেশায় দিনমজুর।
আটক ফারুক আহমদকে (৩৫) অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধার
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে পুলিশ নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করে। নিহত নারীর শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছেলে ফারুক আহমদকে আটক করা হয়েছে।