বিএনপি
দেশব্যাপী ১৯, ২০, ২৬ ও ২৭ মে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ে বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা বিরোধী দলগুলো ১৯, ২০, ২৬ ও ২৭ মে দেশব্যাপী সমাবেশ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের সমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা নেই: মির্জা ফখরুল
ফখরুল বলেন, আগামী ১৯ মে ঢাকা মহানগর উত্তর, ২৮টি সাংগঠনিক জেলা ও মহানগর, ২০ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ, ২১টি সাংগঠনিক জেলা ও মহানগরীতে কর্মসূচি পালন করা হবে।
এছাড়া ২৬ মে ঢাকা মহানগর উত্তর, ১৯টি সাংগঠনিক জেলা ও মহানগর এবং ২৭ মে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ১৫টি সাংগঠনিক জেলায় কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী মাঠ শূন্য করতে আবারো ‘পুরনো খেলা’ শুরু করেছে সরকার: ফখরুল
শনিবার ঢাকায় ‘বড় শোডাউন’ করবে বিএনপি
দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে শনিবার রাজধানীতে জনসভার মাধ্যমে ‘বিরাট শোডাউন’ করার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি।
দুপুর আড়াইটায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করবে দলটির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখা।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং কোনো শর্ত ছাড়াই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করাসহ দলের ১০ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর জন্যও এই সমাবেশ।
ঈদুল ফিতরের পর এটি তাদের চলমান আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হওয়ায় সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে দলটি।
সমাবেশকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখা এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যৌথ বৈঠক করেন এবং সমাবেশে রাজধানীর ওয়ার্ডগুলো থেকে সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন।
দলীয় নেতারা জানান, শনিবারের সমাবেশের মধ্য দিয়ে তাদের দল চূড়ান্ত সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রথম ধাপের সূচনা করতে যাচ্ছে।
সমাবেশ থেকে মির্জা ফখরুল দলের তৃণমূলকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে সারাদেশে দলের ৮২টি সাংগঠনিক জেলায় বিভিন্ন দফায় সমাবেশের ঘোষণা দেবেন।
মঙ্গলবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠকে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে দলের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেন।
দলের ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার নয়াপল্টনে ব্যাপক জনসমাবেশ নিশ্চিত করতে বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর ইউনিট ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা নেই: মির্জা ফখরুল
ঢাকা মহানগরের আশপাশের বিএনপি নেতাদেরও সংলগ্ন জেলার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও ভুল বোঝাবুঝি দূর করে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
যোগাযোগ করা হলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, শনিবারের সমাবেশ সফল করতে তারা সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের চূড়ান্ত আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা রাজপথে নামব। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনী মাঠ শূন্য করতে আবারো ‘পুরনো খেলা’ শুরু করেছে সরকার: ফখরুল
নির্বাচনী মাঠ শূন্য করতে আবারো ‘পুরনো খেলা’ শুরু করেছে সরকার: ফখরুল
নির্বাচনী মাঠ শূন্য করতে সরকার আবারও ‘পুরনো খেলা’ শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচিত নয়, যাদের কোনো জনগণের ম্যান্ডেট নেই। আগামী ২৩ ডিসেম্বর অথবা ২৪ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা, সেই নির্বাচন নিয়ে আবারও সেই আগের খেলাতে মেতে উঠেছে তারা।
আরও পড়ুন: নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে বিএনপির কোনো প্রত্যাশা নেই: ফখরুল
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, তারা যেভাবে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে সম্পূর্ণভাবে তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফলাফলটাকে তাদের পক্ষে নিয়েছিল, ঠিক একই কায়দায় আজকে এখন থেকে বিরোধী দলকে সম্পূর্ণভাবে মাঠ থেকে সরে যাওয়ার জন্য তারা (নির্বাচন নিয়ে যেটা আমরা বলি) ‘রিগিং প্রসেস দে স্টার্ট’ সেটা তারা শুরু করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে যে, তফসিল ঘোষণার সময় থেকে তারা শুরু করেছিল। এবার তারা অনেক আগে থেকে শুরু করেছে যে, মামলা-মোকদ্দমা, সন্ত্রাস-ত্রাস, বিভিন্ন আইনের মধ্য দিয়ে মিথ্যা মামলা ও গায়েবি মামলা করে আবারও নেতা-কর্মীদেরকে মাঠ থেকে পুরোপুরিভাবে সরিয়ে দেয়ার সেই কাজটি তারা শুরু করে দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের (সরকার) লক্ষ্য হচ্ছে একটা নীলনকশার নির্বাচন করা। বিরোধী দলকে পুরো মাঠ থেকে বের করে দেয়া এবং এরপর সেই নীলনকশার নির্বাচন করে আবার ক্ষমতায় আসা-এটাই হচ্ছে মূল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই তারা কাজ করছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা নেই: মির্জা ফখরুল
এবার কি পারবে?
জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একেবারেই পারবে না। কারণ এবার জনগণ ইতোমধ্যে রাস্তায় নেমেছে, জনগণ আন্দোলন শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আপনারা জানেন যে, আমাদের ১৭ জন মানুষ এই আন্দোলনে রাজপথে প্রাণ হারিয়েছে, আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে।
এছাড়া আন্দোলন চলমান আছে, এই আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলন আরও বেগবান হবে, আরও তীব্র হবে। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকার বাধ্য হবে জনগণের দাবি মেনে নিতে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন ও নদী রক্ষায় নিষ্ক্রিয়তার জন্য সরকারের সমালোচনা ফখরুলের
খুব শিগগিরই নতুন কর্মসূচি
মির্জা ফখরুল বলেন, আন্দোলন একটা ওয়েভের মতো। এটা কখনো ওঠে, কখনো নামে। সেটা জনগণের সব পরিপ্রেক্ষিত বুঝে নিয়ে আমাদেরকে আন্দোলনটা করতে হয়।
যেমন রোজার মাস, রোজার মাসে তো স্বাভাবিকভাবে তো যারা রোজা রাখেন সেটাতে খেয়াল রাখতে হয়। তখনও আমরা কর্মসূচি দিয়েছি এবং আপনারা দেখেছেন ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন হয়েছে, আমাদের পদযাত্রা হয়েছে, আমাদের সমাবেশ হয়েছে।
এখন যারা আন্দোলনের অংশীদার আছেন, শরিক দলগুলো আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা চূড়ান্ত আলোচনার পর্যায় এসছি। খুব শিগগিরই নতুন করে কর্মসূচি জানতে পারবেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী বলে আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না: ফখরুল
পুরনো মামলার চূড়ান্ত রায় দিতে তালিকা
মির্জা ফখরুল বলেন, শুধুমাত্র বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে তাই না। তারা যে সমস্ত মিথ্যা মামলা অতীতে তারা দিয়েছিলো সেই মিথ্যা মামলাগুলোর চূড়ান্তভাবে রায় দেয়ার জন্যে তারা খুব দ্রুততার সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটা তালিকা প্রস্তুত করে সেই তালিকা অনুযায়ী বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে তারা সেটাকে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নিচ্ছে।
এছাড়া গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রকে তারা (সরকার) এখন ব্যবহার করতে শুরু করেছে। ইনক্লুডিং জুডিশিয়ারি এন্ড এডমিনিস্ট্রেশন যে কিভাবে বিরোধী দলের সিনিয়ন নেতৃবৃন্দ এবং যারা এই চলমান আন্দোলনে নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করছেন তাদেরকে কিভাবে মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়া যায় সেজন্য তারা কাজ করছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নামে এক লাখ ১১ হাজার ৫৪৩টির অধিক মামলা দায়ের করেছে এই অবৈধ সরকার।
আসামির সংখ্যা প্রায় ৩৯ লাখ ৭৮ হাজার ৪৮১ অধিক। তার মধ্যে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে দুই হাজার ৮৩০ এর অধিক মামলা রয়েছে।
ঢাকাতেই আছে এক হাজার ৫০০ মামলা। বিরোধী মত ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মুক্ত মত প্রকাশের বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়।
আরও পড়ুন: সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
ওদের অধীনে নির্বাচনকালীন সরকার: প্রশ্নই উঠে না
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্বাচনকালীন সরকারের বিএনপিকেও আমন্ত্রণ জানানোর ইঙ্গিতের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা (সাংবাদিকরা) কি বিশ্বাস করেন?
২০১৮ সালে প্রধান যিনি এই বাড়িতে (গণভবনে) আছেন শেখ হাসিনাকে বিশ্বাস করে আমরা তার সঙ্গে সংলাপে বসেছিলাম। সেই সংলাপে যে সমস্ত কথা তিনি দিয়েছিলেন সেগুলোর একটাও তারা রক্ষা করেননি।
সুতরাং ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় আস্থা রাখা, বিশ্বাস করা-এটার প্রশ্নই উঠতে পারে না।
এগুলোকে আমি মনে করি, এটা আরেকটি চক্রান্ত জনগণকে বিভ্রান্ত করবার। তারা বলবে যে এই তো আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, ওরা শুনছে না, যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমাদের কথা খুব পরিস্কার-আমরা বিএনপিকে ক্ষমতায় নেয়া বা বিরোধী দলকে ক্ষমতায় নেয়া এজন্য আমরা আন্দোলন করছি না। আমাদের জনগণের যে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, মানুষ যেন ভোট দিতে পারে।
গত দুইটি নির্বাচনে মানুষ ভোটই দিতে পারেনি এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতেও তারা ভোট দিতে পারেনা।
কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামে একটা উপনির্বাচন হয়েছে নির্বাচন কমিশন বলছে যে, মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে। তাহলে নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে কোন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে?
যেখানে ভোটে মানুষ উৎসব করত সেই জায়গায় ১৪ জন লোক ভোট দিতে যায়। ভোটে মানুষের টোটাল যে একটা আগ্রহ সেটাকে হারিয়ে ফেলেছে।
কারণ তারা ইচ্ছাকৃতভাবে পরিকল্পিতভাবে জনগণের সেই আগ্রহটাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে, যাতে করে তারা নিজের মতো করে ব্যালট ভোট বাক্সে ভরতে পারে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
স্থানীয় সরকার নির্বাচন
মির্জা ফখরুল বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আমরা না করলেও আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন, বাড়ি-বাড়ি তল্লাশি অব্যাহত রেখেছে তারা। গাজীপুরে একটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। একতরফা বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন করছে।
সিলেটে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার ও বাসায় বাসায় তল্লাশি করছে। এই বিষয়টি সিলেটের নেতারা সেখানকার পুলিশ কমিশনারকে অবহিত করেছে।
এই অবৈধ সরকারের অধীনের কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না এবং জনগণ স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না। সেজন্য এই সংসদ ভেঙে দিয়ে এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি আজ গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।
তাই জনগণের মনোভাব বুঝে বিএনপির ঘোষিত ১০ দফা মেনে সরকারকে পদত্যাগের আহ্ববান জানাচ্ছি। অন্যথায় রাজপথে এই দাবির ফয়সালা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি মহাসচিব।
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
আমরা কাউকে নালিশ করি না
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সঙ্গে সোমবার বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা কাউকে কোনো নালিশ করি না, আমরা কাউকে কিছু বলতে যাই না। এটা মনে রাখতে হবে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এখানে বিদেশি যে সমস্ত মিশন আছে অথবা যারা কাজ করছেন তাদের সঙ্গে রুটিন আলোচনা হয়, সেই আলোচনা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে গুলশানে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের বাসভবনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেখা করতে যান।
এই সময়ে মহাসচিবের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ ছিলেন।
আরও পড়ুন: ৫ সিটি নির্বাচনে বিএনপি কোনোভাবেই অংশ নেবে না: ফখরুল
নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতা নেই: মির্জা ফখরুল
নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষমতাই নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন কমিশনকে যত সুন্দরভাবেই সাজানোর চেষ্টা করুক, লাভ নেই। বিগত সময়ে এ সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশনকে দেখেছে দেশের জনগণ। নির্বাচন কমিশনকে তারা গৃহপালিত করে রেখেছে। তাই নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠ নির্বাচনের কোনো ক্ষমতাই নেই।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিবের ত্রাণ বিতরণ
রবিবার (৭ মে) দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের মির্জা রুহুল আমিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ফখরুল বলেন, দেশে আজ যে অরাজকতার পরিবেশ বিরাজ করছে তাতে দেশ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের জনগণ জানেনা দেশের ভবিষ্যৎ কি, কি হতে যাচ্ছে তাদের ভবিষ্যৎ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে, তার আগে তারা আন্দোলন সংগ্রাম করে। তাদের সে আন্দোলনে তাদের নেতৃত্বে কেয়ারটেকার সরকারের জন্য ১৭৬ টি হরতাল তারা দিয়েছিলো। তখন অনেক লোক আহত ও হত্যার শিকার হয়। দেশটা অচল করে দিয়েছিলো তারা। আমাদের নেত্রী তাদের সে দাবি মেনে নিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন দিয়েছিলো বলেই তারা ক্ষমতায় আসতে পেরেছিলো। অথচ পরবর্তীতে তারাই তাদের নীতিগত দিক ভুলে নির্দলীয় সরকারের প্রথাটাই বন্ধ করে রেখেছে। তারা জানে যে দেশের জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। তাই তাদের এত ভয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য ‘দায়িত্বহীন’: হাছান মাহমুদ
জলবায়ু পরিবর্তন ও নদী রক্ষায় নিষ্ক্রিয়তার জন্য সরকারের সমালোচনা ফখরুলের
বৈশ্বির্ক জলবায়ু পরিবর্তনে বিরুপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার বিএনপি আয়োজিত 'জলবায়ু পরিবর্তন: বাংলাদেশ ও নদী'- শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণ ইস্যুতে সরকারের অবহেলার কারণে ঢাকা দেশের অন্যতম দূষিত শহরে পরিণত হয়েছে।
এসব সমস্যা সমাধানে এবং মানুষের ভবিষ্যৎ বা জীবন-জীবিকার উন্নয়নে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘সাভার-ধামরাইতে ছোট ছোট যে নদীগুলো ছিলো সেগু্লো প্রায় মরে গেছে। আপনারা দেখেছেন যে, তুরাগ নদীর পাশে সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সযোগিতায় ও তাদের সমর্থনের ফলোশ্রুতিতে বিভিন্ন ক্লাব গড়ে উঠেছে। সেই ক্লাবগুলো একেবারেই নদীর ওপরে নদী ভরাট করে গড়ে উঠেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পানি কমে যাচ্ছে, নদী দখল করা হচ্ছে-এটার বিষয়ে যা কিছু খবর নেবেন-এই সরকারের সঙ্গে যারা জড়িত তারাই এই কাজগুলো করছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না।’
তিনি পরিবেশ রক্ষায় জনমুখী সরকারের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী বলে আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না: ফখরুল
পরিবেশ রক্ষায় বিএনপির শাসনামলে প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ, খাল খনন কর্মসূচি এবং বেবি ট্যাক্সি নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন ফখরুল।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, পরিবেশ রক্ষার জন্য একটি জনমুখী সরকার প্রয়োজন এবং জবাবদিহিতার জন্য গণতন্ত্র প্রয়োজন।
ভারতের উজানে বাঁধ নির্মাণের ক্ষতিকর দিক এবং প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি নিয়েও এসময় আলোচনা করা হয়।
অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, যিনি সরকারের ফারাক্কা চুক্তি চুক্তি এবং গ্যারান্টি ক্লজ না রাখার সমালোচনা করেন।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও সেভ দ্য সুন্দর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
৫ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঁচদিন পরীক্ষা ও চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার গুলশানের বাসভবন 'ফিরোজা'তে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাডামকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা পর্যালোচনা করে বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন তাকে বাড়িতেই চিকিৎসা দেওয়া হবে।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, খালেদা জিয়া বিকাল সাড়ে ৪টায় হাসপাতাল ত্যাগ করেন এবং সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে বাসায় পৌঁছান।
হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি।
অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘তার কিছু অসুখ ও কিছু উপসর্গ ছিল। এজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ভর্তির পর চিকিৎসকদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে দেওয়া চিকিৎসায় তিনি মোটামুটি ভালো সাড়া দিয়েছেন।’
কিছু মেডিকেল টেস্ট ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য গত শনিবার রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনকে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে একটি কেবিনে রাখা হয়েছিল এবং তার মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ায় তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
৭৭ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকেই বিএনপি চেয়ারপার্সন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি একই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যান। ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে খালেদা ছয়বার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হন।
গত ১০ জুন তার বাম ধমনীতে ৯৫ শতাংশ ব্লক থাকায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং পরদিন একই হাসপাতালে ওই ব্লক অপসারণ করে সেখানে স্টেন্ট বসানো হয়।
ডাক্তাররা তার রক্তনালীতে আরও দুটি ব্লক খুঁজে পেয়েছেন, কিন্তু তার স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে তারা সেগুরো অপসারণ করতে পারেনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের 8 ফেব্রুয়ারি একটি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদাকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ২০২০ সালের ২৫মার্চ সরকার তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়, এই শর্তে যে তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না।
স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী বলে আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না: ফখরুল
বর্তমান সরকার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেরকে কোনোমতেই ক্ষমতায় আর আসতে দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে ও অত্যন্ত লজ্জাজনকভাবে আওয়ামী লীগ আজকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। কারণ স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যে লক্ষ্য ছিলো-আশা ছিলো, আকাঙ্খা ছিলো-একটা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, একটা বহুদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা; সেটাকে সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দিয়ে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেই পুরনো কায়দায়।’
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে ফখরুল বলেন, এখন তাদের অবস্থান স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে এবং দেশের মানুষের বিরুদ্ধে।
প্রাক্তন মন্ত্রী সুনীল কুমার গুপ্তের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী ওনুসারী পরিষদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্নিসংযোগকারী সন্ত্রাসী বিএনপি-জামায়াত জোট, খুনি, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও যুদ্ধাপরাধীরা এ দেশে (বাংলাদেশ) আর ক্ষমতায় আসবে না বলে মন্তব্য করার একদিন পর ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
বুধবার ওয়াশিংটনে রিজ কার্লটন হোটেলে বাংলাদেশি প্রবাসীদের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল না করার জন্য সরকারের অবস্থানেরও সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘যখন সবাই আইনটি বাতিলের দাবি করছে, তখন আপনি দাম্ভিকতা করছেন যে এটি বাতিল হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেন এটা বাতিল করা উচিত নয়? আপনি এটি (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন, তাই আপনি এই অস্ত্র হারাতে চান না।’
ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু আপনাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, দেশের মানুষ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেও স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করেছিল। এখন দেশের মানুষ আন্দোলন শুরু করেছে এবং এই আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের জয় হবে। ’
তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি আবার ক্ষমতায় এলে তাদের দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
ফখরুল বলেন, ‘এ কারণে আমরা দেশকে ভালোবাসে এমন সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একযোগে আন্দোলন শুরু করেছি। আমরা সারা দেশের মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছি। এই আশা নিয়েই আমাদের দেশকে মুক্ত করতে হবে, স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে এবং জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাষানী ওনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম।
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা থাকলেও পরে অনুমতি বাতিল করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিজন কান্তি সরকার প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
হাসপাতাল থেকে ৫ দিন পর বৃহস্পতিবার বিকালে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া পাঁচ দিনের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে নিজ বাসভবনে ফিরবেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান ইউএনবিকে বলেন, ‘আজ বিকাল ৩টার পর গুলশানের বাসভবনের উদ্দেশে হাসপাতাল ছাড়বেন খালেদা জিয়া।’
কিছু মেডিকেল পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য শনিবার রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
তার মেডিকেল টিমের সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কেবিনে রাখা হয়েছে এবং মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়ায় তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে সরকার: খসরু
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
এর আগে ৬ এপ্রিল তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একই হাসপাতালে যান।
সর্বশেষ গত বছরের ১৩ নভেম্বর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি, যেখানে তার লিভার সিরোসিস রোগ ধরা পড়ে।
লিভার সিরোসিসের কারণে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের কারণে ৮১ দিন হাসপাতালে থাকার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা চায় না খালেদা জিয়া মুক্তি পাক: তথ্যমন্ত্রী
সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা বরাবরই বলে আসছি সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
যেহেতু তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই, তাই এ ধরনের মিথ্যা গোয়েবলসি প্রচার করে প্রচার করতে চায় তারা সফল।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরের অনুষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শীর্ষ প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সফরে অর্জন শূন্য’।
বুধবার দুপুরে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান অলি আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফকে তারা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে কাগজপত্র দেখেছি। তারা ইতোমধ্যে একটা স্টেটমেন্ট পর্যন্ত দিয়েছে যে আমরা (আইএমএফ) এই কথা বলিনি, কেবল তার সঙ্গে মিটিংয়ের কথা বলেছি। এককভাবেই বিশ্বব্যাংকের ঋণ পূর্বনির্ধারিত। আগেই কথা হয়েছে যে তারা এই ঋণ দেবে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে এচিভমেন্ট ইজ জিরো।
ফখরুল বলেন, মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বেশি দিন বোকা বানিয়ে রাখা যায় না। আওয়ামী লীগ সেই কাজটাই করে যাচ্ছে। কিন্তু এবার তারা ব্যর্থ হবে। কারণ জনগণ তাদের মিথ্যাচার বুঝে গেছে। জনগণ তাদের সরিয়ে জনগণের একটা শাসন প্রতিষ্ঠা করবে।
দেশের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী তিন দেশ সফরকে কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো বা পুরো বিষয়টা হচ্ছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই সমস্ত সফর। এসব করে কোনো লাভ হবে না। জনগণের নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আইনের শাসনকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এছাড়া জনগণ যেন সত্যিকার অর্থেই একটা গণতান্ত্রিক সমাজে বাস করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয়েস অব আমেরিকা’য় এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সঙ্গে সংলাপ করতে চান না বলে যে মন্তব্য করেছে তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তো তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইনি।
তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার যুক্তি থাকতে পারে না এ জন্য যে, তারা পুরোপুরিভাবে মিথ্যা কথা বলে এবং তারা জাতির সঙ্গে বিট্রে করে, বিশ্বাসঘাতকতা করে। সেই কারণে জনগনের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই জনগন রাজপথে ফয়সালা করে নেবে।
বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস করে-যুক্তরাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ রকম বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের ধারক-বাহক আওয়ামী লীগই। তারাই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে, তারাই এটা কন্টিনিউ করে, নিজেরা করে উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপায়।
এখানে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে জন্ম এবং সন্ত্রাস করেই তারা টিকে থাকে। তাদের বডি কেমেস্ট্রিতে দুই জিনিস আছে। একটা সন্ত্রাস আরেকটা দুর্নীতি। এই দুইটা ছেড়ে তারা থাকতে পারে না।
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র সম্পূর্ণ অনুপস্থিত: মির্জা ফখরুল
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্পাদকসহ ৬ নেতা কারাগারে
সিরাজগঞ্জ জেলা বিনএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৬ নেতাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ মে) সকালে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে স্থায়ী জামিন আবেদন করলে বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তারেরা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান মুরাদ, সদর উপজেলা যুবদলের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বরাত, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াদ আহমেদ নির্লোভ, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সোহেল ও নোমান।
সিরাজগঞ্জ জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি চলাকালে মোটরসাইকেল পোড়ানোসহ নাশকতার মামলায় ৪৬ আসামি মঙ্গলবার আদালতে জামিন আবেদন করেন। এর মধ্যে বিচারক ৬ জনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ও বাকিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় নাশকতা মামলায় বিএনপির ৮ নেতাকর্মী কারাগারে
তিনি আরও বলেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের পাইকপাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পোড়ানো হয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে একটি ও পুলিশ বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। প্রতিটি মামলায় বিএনপির ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩’শ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
দায়ের করা ওই মামলায় মঙ্গলবার বিএনপি নেতাদের কারাগারে পাঠানো হলো। এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৬ নেতাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ খান হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিএনপি ও এলডিপির ২৬ নেতাকর্মী কারাগারে
চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী কারাগারে