বিএনপি
সিলেটে কামাল হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুলের বিবৃতি
সিলেটে সাবেক ছাত্রদল নেতা আ ফ ম কামাল হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার গণমাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দেন তিনি।
বিবৃতিতে ফখরুল বলেন, সিলেটের গোয়াইন পাড়ার আম্বরখানায় তাকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়। সারাদেশে বর্তমান নিষ্ঠুর সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের ঝনঝনানীতে দেশে সীমাহীন অরাজকতা বিরাজ করছে। শহর থেকে গ্রামে প্রতিদিনই রক্ত ঝরছে, মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া হচ্ছে। বর্তমান সরকারের আমলে দেশের মানুষ প্রাণ হারানোর আতঙ্ক নিয়ে এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে প্রতিটি মূহুর্ত অতিবাহিত করছে। এই সরকারের শাসনকালে মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা নেই। এই অবৈধ সরকারের আমলে মানুষের জানমাল নিয়ে বেঁচে থাকা যেন অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, হত্যা, খুন, জখমকে সরকার রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে বেছে নিয়েছে। দুঃশাসন জারি থাকার কারণেই গতরাতে সিলেট জেলা বিএনপি’র সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল পৈশাচিকভাবে হত্যার শিকার হয়েছে। সবদিক থেকে ব্যর্থ হয়ে সরকার এখন রক্ত ঝরানোর নীতি অবলম্বন করেছে।
বিবৃতিতে বিএনপি নেতা আরও বলেন, ন্যায়বিচার ও সুশাসনের অভাবের কারণেই দেশে ধারাবাহিকভাবে হত্যার ঘটনা ঘটছে। বর্তমান সমাজে দুস্কৃতিকারীদের দাপট ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকার তাদের রাজনৈতিক স্বার্থেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে অবৈধ ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করার জন্য। আ ফ ম কামালকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি।
বিএনপি মহাসচিব শোক বিবৃতিতে আ ফ ম কামাল এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
রবিবার (৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে সিলেট নগরের খাসদবির সংলগ্ন বড়বাজার এলাকায় কামালকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক ছিলেন।
জনগণ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দানবীয় শাসনের পতন ঘটাতে জনগণ মরিয়া হয়ে সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
রবিবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। বিভাগীয় সমাবেশ দেখে আমার মনে হয়েছে জনগণ আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে।
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, বরিশাল, খুলনা ও ময়মনসিংহে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে জনগণ সমাবেশে যোগ দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সমাবেশকে সামনে রেখে বরিশালে যখন প্রতিটি যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল, তখন মানুষ সাঁতার কেটে নদী পার হয়ে সমাবেশে যোগ দিতে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন।
ফখরুল বলেন, এটা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে এবং আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছি যে মানুষ পরিবর্তন চায়।
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দিয়ে আন্দোলন দমনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
তিনি বলেন, নগরী থেকে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদকে র্যাব আটক করেছে এবং বরিশালে বিএনপির পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনসহ ১১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এছাড়া ভোলার বিএনপি সভাপতি গোলাম নবী আলমগীরের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ফখরুল বলেন, বিএনপি দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যদি আমরা এই ভয়ঙ্কর দানবকে উৎখাত করতে এবং জনগণের সরকার গঠন করতে চাই তবে আন্দোলন আরও শক্তিশালী হবে। এছাড়া এর জন্য জোট গঠনের প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে নাকি নির্বাচনকালীন সরকার হবে তা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।
আন্দোলনের পর নির্বাচনের মাধ্যমে যারাই আসুক সব দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব করেন তিনি।
এরপর রবিবার তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতিবাদে নয়াপল্টন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত আরেকটি সমাবেশে বক্তব্য দেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কর্মকর্তাদের অপসারণ করছে সরকার: মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে: চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল
সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশ একদিন এগিয়ে ১৯ নভেম্বর
সারাদেশে বিভাগীয় শহরে বিএনপির গণসমাবেশ সমাবেশের অংশ নিসেবে আগামী ২০ নভেম্বর সিলেটে গণসমাবেশের নির্ধারিত তারিখ একদিন এগিয়ে ১৯ নভেম্বর করা হয়েছে। নগরের আলীয়া মাদরাসা মাঠে ২০ নভেম্বর এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। তবে চলমান এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার জন্য সমাবেশের তারিখ পরিবর্তন করেছে দলটি।
রবিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর একটি হোটেলে আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বিষয়টি জানিয়েছেন। মতবিনিময় সভাটি পরিচালনা করেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।
আরও পড়ুন: বিএনপির গণসমাবেশে লিফলেট বিতরণকালে হামলা, আহত ৫
এদিকে এইচএসসি পরীক্ষার কারণে রবিবার থেকে আলীয়া মাদরাসা এলাকায় সব ধরনের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে সিলেট মহানগর পুলিশ।
পুলিশের এই বিজ্ঞপ্তির পর সমাবেশের স্থান নিয়ে শংকা দেখা দেয়। এরমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে সমাবেশ একদিন এগিয়ে আনার ঘোষণা দেয়া হলো। ১৯ নভেম্বর শনিবার এইচএসসির কোন পরীক্ষা নেই।
রবিবার সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির সমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের তথ্য জানিয়ে বলেন, দেশের অন্যান্য বিভাগের মত সকল বাধা উপেক্ষা করে সিলেটের বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে সাড়ে চার লাখের বেশি মানুষ উপস্থিত থাকবেন বলে আমরা আশা করছি।
তিনি বলেন, ২০ নভেম্বর সমাবেশ হবার কথা থাকলেও পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে ভেবে তারিখ পরিবর্তন করে ১৯ নভেম্বর শনিবার এটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে বলেও জানান নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার এবং চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশের সারাদেশের ন্যায় সিলেটে নগরীর সরকারী আলিয়া মাদরাসা মাঠে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে সমাবেশের অনুমতির জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও সিলেট সিটি করপোরেশনের অনুমতি চেয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে অবহিতকরণ চিঠিও দেয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা জানান, আজ থেকে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আলিয়া মাদরাসায় পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে। তাই পরীক্ষর্থীদের কথা বিবেচনা করে সমাবেশ একদিন এগিয়ে আনা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সারা দেশের সাথে সিলেটের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভিন্ন। এখানে রাজনৈতিক সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে। সিলেটবাসী সব সময় সহনশীল। তার পরও আমাদের দলের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
সারাদেশের ন্যায় সমাবেশকে ঘীরে সিলেটেও গণপরিবহন ধর্মঘট হলে বিএনপির করণীয় কি হতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা বিএনপির সভাপতি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সিলেটের পরিবহন শ্রমিক ভাইয়েরা এমনটি করবেন না। কারন আমাদের সমাবেশের দাবী শুধু বিএনপির নয়, এই দাবী সকলের। তাই আমরা আশা করছি পরিবহন শ্রমিকরা জনতার দাবীর প্রতি একাত্মতা পোষণ করবেন।
সমাবেশ সফল করতে সিলেটে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক, প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, সুশিল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ সহ দেশের কল্যাণে বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান বিএনপি নেতারা।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাছিম হোসেইন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজজামান সেলিম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে র্যালি ও গণসমাবেশ
গৌরনদীতে বিএনপি নেতাদের গাড়িবহরে ফের হামলার অভিযোগ
বরিশালের গৌরনদীতে বিএনপি নেতা ইশরাকের গাড়িবহরে হামলার পরে একই স্থানে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুলের গাড়িবহরে হামলা ও বাধার ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেত্রী সেলিনা সুলতানা নিশিতাকে বহনকারী গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এতে গাড়িবহরে থাকা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তারা সবাই বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশে যাচ্ছিলেন। শনিবার সকাল ৮টার দিকে গৌরনদীর মাহিলাড়া বাজারের কাছে এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল থেকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুলের গাড়িতে ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি। এ হামলা ও বাধার সময় ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজুসহ নেতারা তাদের পেশাগত পরিচয়পত্র দেখানোর পরও দুর্বৃত্তরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাদের মারতে উদ্ধত হন। এক পর্যায়ে তারা গাড়িবহর ঘুরিয়ে দেন।
এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার্স পেন-এর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামীম রাব্বি সঞ্চয়কে বহনকারী গাড়িতেও হামলা করে দুর্বৃত্তরা।
এদিকে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেত্রী সেলিনা সুলতানা নিশিতা, রওনক জাহান শাহীন, কোহিনূর ফারজানা আরজুর বহনকারী গাড়িতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় গাড়িতে থাকা তিনজনই আহত হন। পাশাপাশি অকথ্য ভাষায় তাদের গালিগালাজ করেন হামলাকারীরা। এক পর্যায়ে কোনো রকমে গাড়ি ঢাকা অভিমুখে ঘুরিয়ে প্রাণে বেঁচে যান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় এ তিন নেত্রী।
বরিশালে বিএনপির সমাবেশ শুরু
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে বরিশাল নগরীতে বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বিএনপির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী। শনিবার সকাল ১১টার দিকে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে সমাবেশ শুরু হয় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে যোগ দেবেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সমাবেশস্থল থেকে দেড় কিলেমিটার রাস্তা জুড়ে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে।
যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে মানুষ সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও ইউনিট থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা পায়ে হেঁটে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন।
আরও পড়ুন: বরিশালের পথে ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলা
বরিশালের বঙ্গবন্ধু পার্কে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঢল
বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার (৫ নভেম্বর)। সমাবেশকে ঘিরে দুইদিন আগেই আসা নেতাকর্মীরা পৌর শহরের বঙ্গবন্ধু উদ্যান (বেলস পার্ক) মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজ শেষে বঙ্গবন্ধু উদ্যানের প্রায় প্রতিটি স্থানেই দেখা গেছে চাল-ডাল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে তার পাশে প্যান্ডেলে বসেই খাওয়া সারছেন। পুরো মাঠ ঘুরেই দেখা গেছে জায়গায় জায়গায় চলছে খিচুড়ির আয়োজন।
বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরা সঙ্গে করে রান্নার সরঞ্জাম ও বাবুর্চি নিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছে অনেকে।
আবার কেউ কেউ বেইরে থেকে অর্ডার দিয়ে খাবার তৈরি করে এনেছেন।
বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, আমাদের উপজেলা থেকে ৫শ' নেতাকর্মী এসেছি। তাদের সবার জন্যই দুপুরে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দুই দিনের রান্না করার সকল প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি।
হুমকি দিয়ে গণআন্দোলন বন্ধ করা যাবে না: প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা ফখরুলের
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে কারাগারে ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়ে চলমান আন্দোলনকে দমন করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ‘বিএনপি আন্দোলনের নামে বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে আবারও কারাগারে পাঠানো হবে’- বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন,‘দেশ যখন চরম অব্যবস্থাপনা, চরম অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এমন হুমকি দিচ্ছেন। তিনি যদি মনে করেন এটা গণতন্ত্রের আন্দোলনকে ব্যাহত বা দমন করবে, তাহলে তিনি ঠিক ভাবছেন না।’
তিনি বলেন, জনগণের এই আন্দোলনকে কেউ দমাতে পারবে না। মানুষ তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের হুমকি এই আন্দোলনের কিছুই করতে পারবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তার (প্রধানমন্ত্রী) বক্তব্য প্রমাণ করেছে যে তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং তারা গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না।’
তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ অবস্থায় এমন বক্তব্য দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
সরকার সীমা লঙ্ঘন করছে
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই তাদের সীমা লঙ্ঘন করছে। ‘তারা আজকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এবং তারা তাদের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে আমাদের সমাবেশে বাধা দিচ্ছে, যা কিনা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।’
ফখরুল বলেন, ‘আপনারা কি কোনও সভ্য দেশে দেখেছেন যে সরকার ধর্মঘট করে?’ বরিশালে আমাদের সমাবেশের পাঁচ দিন আগে থেকেই পরিবহন চলাচল বন্ধ করেছে।
তিনি প্রশ্ন করে বলেন, পটুয়াখালী থেকে বরিশাল পর্যন্ত লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। ‘আপনি এটিকে কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?’
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আবারও ভুয়া নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'জনগণ এখন জেগে উঠেছে, জনগণ এসব প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড হতে দেবে না। তারা যেকোনও মূল্যে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর।’
ফখরুল বলেন, জনগণ আসলে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে তাদের সরকার ও সংসদ গঠন করবে। এর জন্য আমরা প্রথম শর্ত দিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে তার সরকারের সঙ্গে পদত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘সরকার জনগণকে ভয় পায়। জনগণ জেগে উঠলে গণআন্দোলন হবে। আমি বিশ্বাস করি, গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাদের (আওয়ামী লীগ) সরে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশে বিপুল জনসমাগম মানেই তারা গণতন্ত্র ফিরে চায়: ফখরুল
রেমিটেন্স পাচারের অভিযোগ
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা সম্পূর্ণ তাদের (আ.লীগ) দুর্নীতির ফল।
‘আজও পত্রিকায় বেরিয়েছে, গত ১০ বছরে যারা কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন তাদের এক-তৃতীয়াংশই বাংলাদেশি। রেমিটেন্সের পতনের মতো আপনি এর প্রমাণ পাবেন।’
তিনি আরও বলেন, রেমিটেন্স কমছে কিন্তু অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা আবার বেড়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘তাহলে রেমিটেন্স কোথায় যাচ্ছে? এর আগে একদিন আমি বলেছিলাম,এসব রেমিটেন্স দেশ থেকে আরেক দেশে পাচার হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যারা জড়িত তারাই পাচার করছে। এ কারণে দেশে সংকট তৈরি হয়েছে।’
আরও পড়ুন: আ.লীগ নেতারা ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী হয়েছে: ফখরুল
সর্বশেষ বিভাগীয় সমাবেশ হবে ঢাকায়
মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় শেষ বিভাগীয় সমাবেশ হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঘোষণা দিয়েছি প্রতিটি বিভাগে সমাবেশ করব। এরপর তারা কী করবে, কী করবে না তার দায় সরকারের ওপর।’
ফখরুল বলেন,গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যে কোনও মূল্যে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
বিএনপি তার চলমান আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা,ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের দ্বারা তাদের দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
কোনও রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচন হওয়ার দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছে বিএনপি। সরকার এ দাবিকে অসাংবিধানিক বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরে চারটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর শনিবার বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির ৫ম সমাবেশ হবে বরিশালে।
আরও পড়ুন: পায়রা সমুদ্রবন্দরে রিজার্ভের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ব্যাখ্যা করুন: সরকারের উদ্দেশে ফখরুল
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারেক ও জুবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ।
মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বিরোধী দলকে দমন ও দেশে রাজনৈতিককরণের ক্ষেত্র তৈরি করতে সরকার ‘মিথ্যা’ মামলাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, তার কোনো ভিত্তি নেই। আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাদের বাংলাদেশ ও রাজনীতি থেকে দূরে রাখার প্রয়াস হিসেবে এই মামলা করেছে।’
তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে পরোয়ানা ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় তারেক ও জুবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকার একটি আদালত।
আরও পড়ুন: বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আসাদুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।
শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিএনপি চেয়ারপারসনকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে সরকার ইতোমধ্যে গৃহবন্দি করে রেখেছে বলে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তার সহধর্মীনি যিনি রাজনীতির সঙ্গে একেবারে জড়িত নন, তিনি একজন পেশাজীবী মেধাবী চিকিৎসক। শুধু এই পরিবারের পুত্রবধূ হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা নিয়ে আসা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুবাইদা একজন অরাজনৈতিক পেশাজীবী হলেও, জিয়া পরিবারকে সরকার ভয় পাওয়ায় তার (জুবাইদা) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, সরকার ১৪ বছর ধরে বিভিন্ন দমন-পীড়নমূলক কর্মকাণ্ড, আইন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে বিএনপি ও জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে।
তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশের জনগণ দলের সঙ্গে থাকায় বিএনপিকে দুর্বল করার সব প্রচেষ্টাই বৃথা যাবে। এত নির্যাতনের পরও বিএনপি ফিনিক্সের মতো জেগে উঠেছে। জনগণের দল হওয়ায় বিএনপির উত্থান ঠেকানোর কোনো উপায় নেই।
জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য কোন খাদ্য মজুদ নেই
ফখরুল বলেন, সোমবার তাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আগামী বছরের সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ‘আমাদের বৈঠকে মনে হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছে যে সরকার জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য খাদ্য মজুদ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি বলেন, গত চার মাসে খাদ্যশস্য আমদানি প্রায় ৩৭ শতাংশ কমে যাওয়ায় বিএনপির নীতিনির্ধারকরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয় ও সরকারের খাদ্য অধিদপ্তরের নজিরবিহীন দুর্নীতি, উদাসীনতা ও অযোগ্যতার কারণে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা এখন চরম হুমকির মুখে। একইসঙ্গে দুর্নীতি, বিভিন্ন প্রকল্পে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এবং ডলারের ঘাটতির কারণে আমদানি ব্যাহত হচ্ছে।’
রিজার্ভ থেকে অনৈতিকভাবে ডলার প্রত্যাহার এবং হুন্ডির মতো অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে প্রতি বছর ৭/৮ বিলিয়ন ডলার পাচারের কারণে দেশের অর্থনৈতিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে বলেও তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
সারাদেশে সার, বীজের মূল্যবৃদ্ধি ও সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া এবং বিদ্যুৎ ও ডিজেলের অভাবে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশে বিপুল জনসমাগম মানেই তারা গণতন্ত্র ফিরে চায়: ফখরুল
আ.লীগ নেতারা ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী হয়েছে: ফখরুল
বাকেরগঞ্জে বিএনপির জনসংযোগে পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ, আহত ১০
বরিশালের বাকেরগঞ্জের কলসকাঠি ইউনিয়নে মঙ্গলবার বিএনপির জনসংযোগ,লিফলেট বিতরণ ও পথসভায় পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ জন আহত হওয়ার অভিযোগ করেছে বিএনপি।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা জানান,৫ নভেম্বর বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ সফল করার লক্ষে মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ আবুল হোসেন খানের নেতৃত্বে কলসকাঠি বাজারে লিফলেট বিতরণ,পথসভা ও জনসংযোগ করা হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশে বিপুল জনসমাগম মানেই তারা গণতন্ত্র ফিরে চায়: ফখরুল
এসময়, বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)আলাউদ্দীন মিলনের নেতৃত্বে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে বাকেরগঞ্জের সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদ জোমাদ্দার ও কলসকাঠি ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আল আমিনসহ ১০ জন আহত হয়।
সাবেক সাংসদ আবুল হোসেন খান বলেন,আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়েছে,হামলায় প্রায় ১০ জন আহত হয়েছে।
লাঠিচার্জের ব্যাপারে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দীন মিলন জানান, কলসকাঠিতে বিএনপির আবুল হোসেন খান গ্রুপ ও হারুন শিকদার গ্রুপ একই স্থানে সভা করলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা থাকায় পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: আ.লীগ নেতারা ছিন্নমূল থেকে বিত্তশালী হয়েছে: ফখরুল
৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
বিএনপির সমাবেশে বিপুল জনসমাগম মানেই তারা গণতন্ত্র ফিরে চায়: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র ও তাদের হারানো অধিকার ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় তাদের দলের বিভাগীয় সমাবেশে কয়েক লাখ মানুষ যোগ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, গণতন্ত্র না থাকলে কারও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।
সোমবার এই বিএনপি নেতা বলেন, দেশে গণতন্ত্রের অভাবে জাতি ভয়াবহ সংকটে পড়েছে। ‘আমাদের অবশ্যই এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে ছিলাম এবং কয়েক লাখ সাধারণ মানুষ এতে অংশ নিচ্ছে। কারণ তারা সবাই চায় দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষিত হোক।’
আরও পড়ুন: জন্মদিনে মির্জা ফখরুল বললেন ‘জীবন সুন্দর’
দুর্গাপূজা উদযাপন শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতন্ত্র, জনগণের সমঅধিকার, ন্যায়বিচার ও ন্যায়পরায়ণতার চেতনায় একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার প্রথমে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠায়। ‘তাকে এখন গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুক্তিযুদ্ধের সময়ের মতো জেগে উঠবে এবং শয়তান শাসককে পরাজিত করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার পথ প্রশস্ত করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান নেতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, ডা. সুকোমল বড়ুয়া, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল কি জিয়ার লাশ দেখেছেন: তথ্যমন্ত্রী