������������������
৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ পালন উপলক্ষে রবিবার নানা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর সকালে সারাদেশে দলের সকল কার্যালয়ে তাদের দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বেলা ১১টায় বিএনপির জ্যৈষ্ঠ নেতারা পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন।
একই দিন দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করবে দলটি।
এছাড়া দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ও সকল ইউনিট সারাদেশে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সংবাদপত্রে সম্পূরক প্রকাশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
আরও পড়ুন: পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা, রংপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু
রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সামরিক ও বেসামরিক জনগণ যৌথভাবে তৎকালীন সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে ঢাকা সেনানিবাসের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে। যা জিয়ার ক্ষমতায় আসার পথ প্রশস্ত করেছিল।
বিএনপি ও তার জোটের শরিকরা ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসেবে উদযাপন করলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর ফ্রন্ট সংগঠনগুলো একে ‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ হিসেবে বিবেচনা করে।
আরও পড়ুন: বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, দেশের এই কঠিন পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৭ নভেম্বরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত দুঃশাসন থেকে মুক্ত করে আবারও বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে।
তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই স্বৈরাচারী শাসনকে পরাজিত করতে হবে।’
বিএনপির এমপিরা পদত্যাগ করতে প্রস্তুত; বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার দলের এমপিরা বর্তমান সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। কেননা তাদের মূল লক্ষ্য আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সরাসরি বলতে চাই, শেখ হাসিনার অধীনে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আমাদের একমাত্র দাবি এই সরকারের পদত্যাগ।’
শনিবার রংপুরে সরকারবিরোধী এক বিশাল সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীর জলাবদ্ধতা সরকারের অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্পের ফল: ফখরুল
এসময় বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, সরকারকে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। ‘আমাদের সংসদ সদস্য হারুন, রুমিন ও জাহিদ দলের নির্দেশে (সংসদ থেকে) পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। সরকারকে অবশ্যই একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে যা একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং এর অধীনে একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের দ্বারা ধ্বংস হওয়া রাষ্ট্র, অর্থনীতি ও রাজনীতি মেরামতের জন্য বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পর একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।
বিভাগীয় পর্যায়ে দলের পরিকল্পিত সমাবেশের অংশ হিসেবে রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে এ কর্মসূচির আয়োজন করে রংপুর মহানগর বিএনপি।
পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে সমাবেশে যোগ দেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী।
যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের আশপাশে এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পূর্বে পুলিশের অভিযানে পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের কারণে প্রতিবন্ধকতার মুখে তিন দিন অক্লান্ত কষ্ট সহ্য করে এবং কঠোর পরিশ্রম করে সমাবেশ সফল করায় শনিবার ফখরুল রংপুরবাসীকে অভিনন্দন জানান।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিএনপিকে ভয় না পেলে সরকার কেন বিএনপির জনসভায় বাধা দেয়ার চেষ্টা করে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করে হামলা চালায়?
আরও পড়ুন: পায়রা সমুদ্রবন্দরে রিজার্ভের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ব্যাখ্যা করুন: সরকারের উদ্দেশে ফখরুল
ফখরুল বলেন, ‘একটি দল এবং একজন ব্যক্তি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) গত ১৫ বছর ধরে গোটা দেশকে ধ্বংস করেছে এবং আমাদের দমন-পীড়ন করেছে… তারা অর্থনীতিকে চিবিয়ে খেয়ে ধ্বংস করেছে। তারা এখন পুরো বাংলাদেশকে খেয়ে ফেলতে চাইছে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগই তাদের একমাত্র দাবি, কারণ এটি দেশের সব অর্জনকে ধ্বংস করেছে। ‘আপনারা যেদিকেই তাকাবেন, তাদের চুরি দেখতে পাবেন। তারা রাস্তা ও সেতু নির্মাণের কাজ থেকে, এমনকি আমাদের দরিদ্র মানুষের জন্য ঘর তৈরির কাজ থেকেও চুরি করছে। তারা সবকিছু খেয়ে ফেলছে, কিছুই ছাড়ছে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হোক; সংবিধান অনুযায়ী তা করা সম্ভব নয় বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
শুক্রবার বিকাল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকে এবং তাদের অনেকেই সেখানে রাত কাটান।
শনিবারের সমাবেশটি বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ। এর আগে প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি খুলনায় অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশকে সফল করতে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ট্রেন, মোটরবাইক, অটোরিকশা, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্নভাবে রংপুরে আসেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ অঞ্চলে ধর্মঘট পালন করছে।
তবে রংপুরের ক্ষমতাসীন দল পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।
মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
আরও পড়ুন: সরকার বৈদেশিক রিজার্ভ গিলে ফেলেছে: ফখরুল
পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা, রংপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু
পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে রংপুরে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী দলটির বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
শনিবার রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে রংপুর মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশটি নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা আগে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের আশপাশে এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের অভিযানে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় নির্ধারিত সময়ের আগেই বিএনপির সমাবেশ শুরু
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনও রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে।যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী সেটির সুযোগ নেই বলে তা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন।
শুক্রবার বিকেল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকে এবং তাদের অনেকেই সেখানে রাত কাটায়।
আজকের সমাবেশটি বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ, প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি হয়েছে খুলনায়।
আগামী বছরের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরবর্তী নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাতে অন্যান্য বিভাগীয় সদর শহরেও অনুরূপ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে দলটি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে রংপুর শহর কার্যত মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়।
সকাল থেকেই বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন এবং কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী সেখানে রাত কাটান।
শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর ও সারাদেশের মধ্যে ট্রেন ছাড়া যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ থাকলেও বিভাগের আট জেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা বাধা অতিক্রম করে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, শনিবার তাদের ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য বাধা ও হয়রানি এড়াতে তারা সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছেন।
সমাবেশকে সফল করতে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ট্রেন, মোটরবাইক, অটোরিকশা, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্নভাবে রংপুরে আসেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ অঞ্চলে ধর্মঘট পালন করছে।
তবে রংপুরের ক্ষমতাসীন দল পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।
মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেন, তাদের দলের সমাবেশে লোকজন যাতে না আসে সেজন্যই এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
গত সপ্তাহে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। তবে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বাধা অতিক্রম করে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ: জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী
রংপুরে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার
রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ: জড়ো হচ্ছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ব্যবহার করে ধর্মঘট কার্যকর করার অভিযোগের মধ্যে শনিবার হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী রংপুর শহরে সরকারবিরোধী সমাবেশে যোগ দিতে জড়ো হয়েছেন।
শুক্রবার সকাল থেকে ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট শুরু হলেও বিরোধী দল রংপুরে চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ করতে প্রস্তুত। তবে ক্ষমতাসীন দল রংপুরে পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।
শনিবার দুপুর ২টায় রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে মঞ্চ তৈরি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার করে শুক্রবার বিকাল থেকে এ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে শুরু করেন।
সমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর ও সারাদেশের মধ্যে বাস যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও আশেপাশের ৮টি জেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মাইক্রো বাস, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনে করে নগর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় আসতে দেখা গেছে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, শনিবার তাদের ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য বাধা ও হয়রানি এড়াতে তারা রংপুর শহর ও এর আশপাশের এলাকায় আগাম অবস্থান নিয়েছেন।
শুক্রবার ঢাকা থেকে মাত্র কয়েকটি বাস রংপুরে আসলেও সকাল থেকে কোনও বাস রংপুর বাস টার্মিনাল থেকে কোনও গন্তব্যে ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ধর্মঘটের কারণে রংপুরগামী আন্তঃজেলা বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে অন্য জেলার বাসগুলো রংপুরে প্রবেশ করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: রংপুরে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার
মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেছেন, তাদের দলীয় সমাবেশে লোকজন যাতে আসতে না পারে সেজন্যই এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, পরিবহন ধর্মঘট ও ক্ষমতাসীন দলের তৈরি করা অন্য সব বাধা উপেক্ষা করে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার লাখ লাখ মানুষ শনিবার তাদের কর্মসূচিতে অংশ নেবে।
গত সপ্তাহে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের হরতাল কার্যকর করা হয়েছিল, তবে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বাধা অতিক্রম করে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বিএনপি তার চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করে।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের দ্বারা পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনও রাজনৈতিক সরকারের অধীনে হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনরা বর্তমান সংবিধানে সে সুযোগ নেই বলে প্রত্যাখান করে আসছে।
শনিবারের সমাবেশটি হবে বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ। এরআগে প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি খুলনায় করেছে দলটি।
২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরবর্তী নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাতে অন্যান্য বিভাগীয় শহরেও অনুরূপ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে বিএনপি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারে লিপ্ত: ওবায়দুল কাদের
মামলা পুনরুজ্জীবিত: সরকারবিরোধী আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা
পায়রা সমুদ্রবন্দরে রিজার্ভের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে ব্যাখ্যা করুন: সরকারের উদ্দেশে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের কাছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অর্থ পায়রা সমুদ্রবন্দরে কীভাবে ব্যয় হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন।
এক আলোচনা সভায় তিনি আরও অভিযোগ করেন, সরকার লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) জোর দিয়ে বলেছেন যে রিজার্ভ থেকে অর্থ পায়রা সমুদ্রবন্দরে ব্যয় করা হয়েছিল। আমরা জানতে চাই কিভাবে টাকা খরচ হয়েছে, কার দ্বারা খরচ হয়েছে এবং রিজার্ভের টাকা কোথায় গেছে।’
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আগামী নির্বাচন তদারকিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরে ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: রাজধানীর জলাবদ্ধতা সরকারের অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্পের ফল: ফখরুল
অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল। রিজার্ভের টাকা গেছে পায়রা বন্দরে। রিজার্ভের টাকা গেছে দেশের জনগণের জন্য খাদ্য ও সার কিনতে। রিজার্ভের টাকা জনগণের কল্যাণে ও আমদানিতে ব্যয় হয়েছে। কেউ এই অর্থ আত্মসাৎ বা অপব্যবহার করেনি।’
রিজার্ভের টাকা পায়রা সমুদ্রবন্দরে যায় এমন মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, মজুদের টাকা বন্দর নির্মাণের জন্য নয়।
তিনি বলেন, রিজার্ভের অর্থ আমদানিকৃত পণ্যের বিল পরিশোধ এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করার কথা।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার ৪২ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ নিয়ে বড়াই করত। তাহলে রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়?’
তিনি প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের বিরোধিতা করে (রিজার্ভ থেকে টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি) বলেন, ‘আপনারা রিজার্ভ চিবিয়ে খাননি, কিন্তু গিলেছেন। আপনারা বাংলাদেশের পুরো অর্থনীতি গিলে ফেলেছেন।’
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের একমাত্র কাজ জনগণের টাকা লুটপাট করা। ‘তারা প্রতিটি সেক্টরে সবকিছু খেয়ে ফেলছে। তারা (সরকার) বাংলাদেশকে ধ্বংস করেছে। আওয়ামী লীগের হাত থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে না পারলে অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন: দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে আ.লীগ: ফখরুল
বিশেষজ্ঞদের মতামত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পায়রা সমুদ্রবন্দর বন্দরে জাহাজ আসার প্রয়োজনীয় নাব্যতা না থাকায় অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে না। ‘তারা এখন আরও অর্থ লুট করার জন্য মূলধন ড্রেজিংয়ের একটি প্রকল্প নিয়েছে। তারা এভাবে দেশের সম্পদ নষ্ট করছে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে আন্দোলন করার জন্য তাদের দলের কোনো বিকল্প নেই।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করার আহ্বান জানান ফখরুল।
অন্যথায় গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশের জনগণ সরকারের পতন নিশ্চিত করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতা।
রংপুরে বিএনপির চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ শনিবার
রাত পেরুলেই রংপুরে চতুর্থ বিভাগীয় সমাবেশ করবে বিএনপি। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া ৩৬ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যে সব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে সমাবেশ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
শনিবার রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে মঞ্চ তৈরি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ইতোমধ্যেই নগরীতে পৌঁছেছেন।
সমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর ও সারাদেশের মধ্যে বাস যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও আশেপাশের ৮টি জেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মাইক্রো বাস, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনে করে নগর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় আসতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপি কর্মীদের বহনকারী ট্রলারে আ.লীগের হামলা
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, শনিবার তাদের ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য বাধা ও হয়রানি এড়াতে তারা রংপুর শহর ও এর আশপাশের এলাকায় আগাম অবস্থান নিয়েছেন।
শুক্রবার ঢাকা থেকে মাত্র কয়েকটি বাস রংপুরে আসলেও সকাল থেকে কোনও বাস রংপুর বাস টার্মিনাল থেকে কোনও গন্তব্যে ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ধর্মঘটের কারণে রংপুরগামী আন্তঃজেলা বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে অন্য জেলার বাসগুলো রংপুরে প্রবেশ করতে পারেনি।
মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেছেন, তাদের দলীয় সমাবেশে লোকজন যাতে আসতে না পারে সেজন্যই এই ধর্মঘট জারি করা হয়েছে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, পরিবহন ধর্মঘট ও ক্ষমতাসীন দলের তৈরি করা অন্য সব বাধা উপেক্ষা করে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার লাখ লাখ মানুষ শনিবার তাদের কর্মসূচিতে অংশ নেবে।
গত সপ্তাহে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের হরতাল কার্যকর করা হয়েছিল, তবে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বাধা অতিক্রম করে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
বিএনপি তার চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: মামলা পুনরুজ্জীবিত: সরকারবিরোধী আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের দ্বারা পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।
বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনও রাজনৈতিক সরকারের অধীনে হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনরা বর্তমান সংবিধানে সে সুযোগ নেই বলে প্রত্যাখান করে আসছে।
শনিবারের সমাবেশটি হবে বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ। এরআগে প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি খুলনায় করেছে দলটি।
২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরবর্তী নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাতে অন্যান্য বিভাগীয় শহরেও অনুরূপ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে বিএনপি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
আরও পড়ুন: খুলনা রেলস্টেশনে ভাঙচুর: বিএনপির ১৭০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
সরকার বৈদেশিক রিজার্ভ গিলে ফেলেছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি করা এই সরকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গিলে ফেলেছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন ফখরুল।
এসময় তিনি পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণে বৈদেশিক রিজার্ভ থেকে অর্থ ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
ফখরুল বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক মন্দার মূল কারণ সরকারের দুর্নীতি। গত ১৪ বছরে প্রতিটি খাতে চুরি করে অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা কোথায় গেল তা সরকারের কাছে জানতে চাওয়ার অধিকার বিএনপির আছে। ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রিজার্ভের টাকা কেউ চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারবে না। আপনারা (সরকার) রিজার্ভ চিবিয়ে খাননি, গিলে ফেলেছেন।’
রিজার্ভের টাকা পায়রা সমুদ্রবন্দরে যায় এমন মন্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিন্দা জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, রিজার্ভের টাকা বন্দর নির্মাণের জন্য নয়।
তিনি বলেন, ‘রিজার্ভের অর্থ ডলারে আমদানিকৃত পণ্যের বিল পরিশোধের জন্য ব্যবহার করার কথা। দেশে যখন অর্থনৈতিক সংকট থাকে তখন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্যও মজুদ অর্থ ব্যবহার করা হয়।’
অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে ফখরুল বলেন, পায়রা সমুদ্রবন্দর বন্দরে জাহাজ আসার প্রয়োজনীয় নাব্যতা না থাকায় এটি উৎপাদনশীল ও কার্যকর হবে না। ‘তারা এখন ছয় হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে নাব্যতার জন্য সুপার ড্রেজার ব্যবহার করছে। আপনি সেখানে সুপার ড্রেজার বসিয়ে চুরির আরও সুযোগ তৈরি করেছেন।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি বহন করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন।
আগের দিন, প্রধানমন্ত্রী কার্যত পায়রাতে মূলধন ড্রেজিংসহ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যত উদ্বোধন করেছিলেন, এটিকে মসৃণ অপারেশনের জন্য আরও ভাল সুবিধা দিয়ে সজ্জিত করার লক্ষ্যে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই হয়তো ভাবছেন রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে অর্থ পায়রা বন্দরে যায়, মানুষের জন্য খাদ্য সংগ্রহ, সার এবং মানুষের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানো… কেউ এই টাকা চিবাতে পারে না। সেটা হল (ফরেক্স রিজার্ভ) মানুষের জন্য। আমরা এটি আমদানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছি।’
ফখরুল বলেন, বিএনপির সাম্প্রতিক তিন বিভাগীয় সমাবেশে জনতার ঢেউ দেখে সরকার অস্থির হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপির জনসভা ক্ষমতাসীন দলকে এতটাই নার্ভাস করেছে যে তারা এখন পরিবহন মালিকদের ব্যবহার করে বাস-পরিবহন ধর্মঘট চালিয়ে বিরোধী দলের কর্মসূচি ঠেকানোর চেষ্টা করছে। ‘আপনাদের কি লজ্জা হয় না? আপনারা কি কাপুরুষ! আপনারা পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ইউনিয়ন ব্যবহার করে বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বন্ধ করতে ধর্মঘট ডাকছেন।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, সরকার পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট করে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও খুলনায় বিএনপির সমাবেশে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলেও বিএনপির কর্মসূচিতে জনগণকে যোগদানে বাধা দিতে পারেনি।
দুই বিভাগে বিএনপির পরিকল্পিত সমাবেশ বানচাল করতে রংপুর ও বরিশালে আগাম পরিবহন ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়েছে বলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
ফখরুল পরিবহন মালিকদের জনগণের পাশে থাকার এবং জনগণের অধিকার হরণকারী ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারকে সহায়তা করার জন্য ধর্মঘট চালিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার আহ্বান জানান।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার গুলি ও দমন-পীড়ন চালিয়ে আন্দোলনকে দমন করতে চায়। কিন্তু দেশের জনগণ ও তরুণরা তা হতে দেবে না।
সরকারের বিরুদ্ধে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংসের অভিযোগও তোলেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘একটা (সরকার) নির্বাচন কমিশন করেছে, যাকে ডিসি-এসপিরাই পাত্তা দেয় না এবং তারা নির্বাচন করতে পারে না।’
তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান ফখরুল।
মামলা পুনরুজ্জীবিত: সরকারবিরোধী আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার কৌশল হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা
বিএনপির সাম্প্রতিক সময়ের সব ধরনের বাধা উপেক্ষা করে সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রস্তুতিকালে দলের নেতারা বলছেন, আন্দোলনকে লাইনচ্যুত করার উদ্দেশ্যে সরকার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু বিচারাধীন মামলা পুনরুজ্জীবিত করছে।
কিছু বিএনপি নেতা ও আইনজীবী বলছেন, সরকার বিরোধী দলকে একটি বার্তা দিতে কিছু দলের নেতাদের কারাগারে পাঠাতে পারে যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
কিন্তু সরকার অতীতে বারবার বিএনপির এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা আদালতকে প্রভাবিত করে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইউএনবিকে বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ থাকলেও সরকার সামগ্রিক সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খুব ‘নার্ভাস’ হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে সতর্ক সুসংঘবদ্ধ বাধা সত্ত্বেও সরকার আমাদের সমাবেশে জনগণের অংশগ্রহণ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই, সরকার আমাদের দমন করতে তাদের দমনমূলক কর্মকাণ্ডকে আরও জোরদার করতে মরিয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমাদের সাম্প্রতিক সফল সমাবেশ থেকে এটা স্পষ্ট যে এই ধরনের রাজনৈতিক কৌশল কাজ করবে না।’
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে নিম্ন আদালতের বিচার চালিয়ে যাওয়ার পথ পরিষ্কার করে দিয়েছে। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০০১-২০০৬ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে ২০১৪ সালে মামলাটি করে দুদক।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ আরও নয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলছেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক মামলার বিচার ঢাকাসহ অন্যত্র নিম্ন আদালতে চলছে।
আরও পড়ুন: খুলনার সমাবেশে খারাপ কিছু হলে সরকার দায়ী থাকবে: ফখরুল
বিএনপি বলছে, বর্তমানে প্রায় ৩৬ লাখ বিএনপি নেতাকর্মী এক লাখের বেশি মামলার মুখোমুখি। তারা বলছেন, এই অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার প্রায় ১৪ বছর ধরে হত্যা, গুম, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলাসহ বিভিন্ন দমনমূলক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিয়ে বিএনপিকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের নেতাদের মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা করতে পারে এবং আমাদের কর্মীদের নিরাশ করার জন্য বারবার আমাদের আক্রমণ করতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পাল্টে যাবে।’
মোশাররফ সতর্ক করে বলেন, ‘এটা হলে আমাদের নেতারা সরকার উৎখাতের আন্দোলন জোরদার করতে আরও উৎসাহিত হবেন। এটি সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করবে এবং দেশে ও বিদেশে শাসনের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে সাহায্য করবে যা এর ক্ষমতাচ্যুতকে ত্বরান্বিত করবে।’
এই নেতা বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীরা এখন বাঁচা-মরার আন্দোলনে থাকায় জেলে যেতে ভয় পান না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দলের চেয়ারপার্সন চার বছর আগে জেলে গেলেও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে অবস্থান করছেন। তা সত্ত্বেও আমাদের দল ঐক্যবদ্ধ এবং আমাদের সাংগঠনিক সক্ষমতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে তারা যখন বিএনপির ক্ষতি করতে ব্যর্থ হয়েছে, তখন দলের আরও কয়েকজন নেতাকে কারাগারে রেখে তারা দলকে দুর্বল করতে পারবে না।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের কাঠামো দুর্বল নয় এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে সরকারবিরোধী আন্দোলন চালানোর জন্য দলটির অনেক ‘বিকল্প নেতা’ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘তাই সরকারের কৌশল হিসেবে কিছু নেতা বা কর্মীদের জেল দিয়ে কোনো লাভ হবে না।’
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা
রাজধানীর জলাবদ্ধতা সরকারের অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্পের ফল: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন যে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর কারণে সৃষ্ট ভারি বর্ষণে রাজধানীর বিভিন্ন অংশ এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জলাবদ্ধতার জন্য সরকারের অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্প দায়ী।
তিনি বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) উত্তরা সড়ক বন্ধ থাকায় অনেক অসুবিধার মধ্যে এখানে এসেছি। ডিএমপি কমিশনার এই সড়ক ব্যবহার না করার জন্য সার্কুলার জারি করেছেন।’
মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে দৈনিক নয়াদিগন্তের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে সৃষ্ট বৃষ্টিতে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী। ‘এটি অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্প এবং মেগা উন্নয়নের ফল। তাদের (সরকার) মেগা প্রকল্পের কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।’
সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ১০ বছর ধরে চলমান বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণের কাজের পয়েন্টগুলোতে জলাবদ্ধতায় দীর্ঘ যানজটের কারণে খিলক্ষেত থেকে উত্তরা হয়ে গাজীপুর পর্যন্ত রুট এড়াতে যাত্রীদের অনুরোধ করেছিল।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা ট্রাফিক বিভাগ সতর্কতা জারি করে বলেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর কারণে সৃষ্ট ভারী বর্ষণে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের গাজীপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ফখরুল বলেন, সরকার জনগণের ভোট ও অন্যান্য সকল অধিকার হরণ করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়ায় জাতি এক ভয়াবহ সময় পার করছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপি কর্মীদের বহনকারী ট্রলারে আ.লীগের হামলা
তিনি বলেন, জনগণের সর্বাত্মক অধিকার নিশ্চিত করে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে তারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
বিএনপি নেতা আক্ষেপ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রথমে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে এবং ১৯৭৫ সালে সংবাদপত্র বন্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছে। আমাদের এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে হবে অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে, বড় সাহসের সঙ্গে এবং আমাদের জিততে হবে।’
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আশা, স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বর্তমান সংবিধান আরও সংশোধন করতে হবে।
বিএনপি নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দল সংবিধান সংশোধন করে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের পথ নিশ্চিত করতে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান চালু করা হয়েছিল তা বাতিল করেছে। তাই সংবিধান সংশোধন করে এই ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা
ফখরুল বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচনে জিততে পারলে আমরা একটি সাংবিধানিক কমিশন গঠন করব। সংবিধানে যে সব অগণতান্ত্রিক ও গণবিরোধী জিনিস অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, আমরা তা বাতিল করে দেব... আমরা সত্যিকারের সময় নিয়ে আসার চেষ্টা করব। ‘জনগণের যা প্রয়োজন তার ভিত্তিতে উপযুক্ত সংবিধান।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, তিনি মনে করেন দেশের বর্তমান সংবিধান জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ‘দেশের জনগণ যা চায় তার ওপর ভিত্তি করে সংবিধান হওয়া উচিত।
বাংলাদেশকে একটি প্রগতিশীল দেশে পরিণত করতে বাক স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তার পরিবেশ সৃষ্টি এবং প্রকৃত অর্থে সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সাংবাদিকদের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান ফখরুল। বাংলাদেশকে ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে অতীতে আপনারা যে ভূমিকা রেখেছেন তা অব্যাহত রাখুন।
আরও পড়ুন: দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে আ.লীগ: ফখরুল
দেশের রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে আ.লীগ: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেশের রাজনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, ‘ আমরা ১৯৯১ সালে অনেক আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলেছিলাম তা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। সেই রাজনৈতিক কাঠামো অনুযায়ী গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও সরকার গঠন করা হবে।
সোমবার ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-এ জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘জামায়াত ও জাতীয় পার্টিকে সঙ্গে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তনের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল করেছে আওয়ামী লীগ।’
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করে এবং এর অধীনে চারটি বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ‘কিন্তু যখন তারা (আ.লীগ) বুঝতে পারে যে ২০০৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তাদের অপকর্মের জন্য জনগণ তাদের ভোট দেবে না, তখন তারা বিচারপতি খায়রুল হকের সহায়তায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়।’
পরে তিনি বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে রাজনীতিকরণ করেছে, ফলে দেশের রাজনৈতিক কাঠামো কেমন হবে তা এখন নির্দেশ করে। ‘এভাবে তারা আমাদের রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে।’
আরও পড়ুন: পুলিশ ‘অবৈধভাবে’ বিরোধীদের তথ্য সংগ্রহ করছে: মির্জা ফখরুল
টাকা কোথায় গেছে
ফখরুল বলেন, সরকার ব্যাপক লুটপাট ও চুরির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকেও ধ্বংস করেছে। ‘এখানে চুরি ছাড়া কিছুই হচ্ছে না। সব মেগা প্রকল্পের পিছনে মূল উদ্দেশ্য চুরি। এভাবে তারা পুরো বাংলাদেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। ‘আমাদের অবশ্যই বাংলাদেশকে আবারও দুঃশাসন থেকে মুক্ত করতে হবে এবং জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল দীর্ঘদিন ধরে গর্ব করে আসছিল যে দেশ প্রায় ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতায় বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
‘কিন্তু আমরা এখন লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হচ্ছি। তাদের জ্বালানি উপদেষ্টা ও আমার শিক্ষক ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, টাকা না থাকায় আমরা কীভাবে বিদ্যুৎ দেব? কিন্তু তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিল যে ৪২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ নিয়ে অর্থের কোনও সংকট নেই। কোথায় গেল সেই টাকা?
বিএনপি নেতা বলেন, তৌফিক-ই-এলাহী ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানে অসহায়ভাবে স্বীকার করেছেন যে, তারা দিনে বিদ্যুৎ দিতে পারবেন না, রাতে দেয়া হবে। ‘এটি তাদের উন্নয়নের একটি উদাহরণ এবং এভাবেই বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে হবে ঐক্য
ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ বারবার বাংলাদেশের ক্ষতি করেছে এবং তারা আবারও গণতন্ত্র হরণ ও জনগণের অধিকার হরণ করে দেশকে ধ্বংস করছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও অন্যান্য দমনমূলক আইনের কারণে মানুষ এখন স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে না। ‘এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। আমরা আমাদের গণতন্ত্র, ভোটদান এবং অন্যান্য অধিকার পুনরুদ্ধার করতে চাই। আমরা আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে চাই। আমরাও চাই সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার হোক।
দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবে রূপ দিতে তরুণসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ লুণ্ঠন-দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়ে জাতির সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে ভেস্তে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে জাতি যা হারিয়েছে তা ফিরে পেতে তাদের দল আরেকটি যুদ্ধ শুরু করেছে। ‘আমরা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ ফিরে পেতে
চাই। যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ জনগণের সকল অধিকার নিশ্চিত করা হবে এবং তাদের জান-মাল সুরক্ষিত থাকবে।’
ফখরুল বলেন, তারা ক্ষমতায় গেলে প্রথমেই সততা ও সুশাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত করার পদক্ষেপ নেবেন।
আরও পড়ুন: ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কর্মকর্তাদের অপসারণ করছে সরকার: মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশকে তারা শ্মশান করে দিয়েছে: চট্টগ্রামে মির্জা ফখরুল