আইনশৃঙ্খলা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনাগুলো বিবেচনা করা হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সরকার প্রয়োজনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) হালনাগাদ করার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
তিনি বলেন, ‘এ আইনের প্রয়োজনীয়তার কথা সবাই বলেছেন। এটিকে যদি ভালো করা যায় তবে সেটাই করা হবে। এ আইন নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে আমরা সেগুলোকে বিবেচনায় নিচ্ছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনটি প্রণীত হয়েছে, আমরা এই লক্ষ্য ধরে রাখব।’
আরও পড়ুন: বাক স্বাধীনতা কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য আইসিটি আইন করা হয়নি: আইনমন্ত্রী
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলোচনা হচ্ছে। আমি একটি জিনিস বলতে পারি, আমরা চেষ্টা করছি সব পক্ষের কথা শোনার। সবকিছু যাচাই-বাছাইয়ের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত আসবে।
তিনি বলেন, আজকে দুটি আইন নিয়ে আলোচনার কথা ছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও উপাত্ত সুরক্ষা আইন। উপাত্ত সুরক্ষা আইনের একটি নতুন খসড়া ওয়েব সাইটে আজ আপলোড করা হয়েছে। আমরা পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে এ বিষয়ে আগামী ৬ এপ্রিল আবার বসবো। সেখানে সেটা নিয়ে আলোচনা করবো।
মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রথম বৈঠকের পরে যেসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে, সেগুলো বিবেচনা করা হয়েছে। আইনটিতে যেসব সমস্যার কথা বলা হয়েছে, তা অনেকটা দূর করা হয়েছে।
সভায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আজ দুটি আইন নিয়ে কথা হয়েছে। একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সেটি এরইমধ্যে বলবৎ আছে। এ আইনটির যেসব উদ্বেগের জায়গা নিয়ে কথা বলার ছিল, সেটি আমরা করেছি। দ্বিতীয়টি হচ্ছে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া। এটি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে আমরা আলোচনা করতে পারিনি।
তিনি জানান, উপাত্ত সুরক্ষা আইনের নতুন একটি খসড়া হয়েছে। যেটি আজকে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে সরকারের উদ্যোগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান খসড়াটি হয়েছে। খসড়াটি যেহেতু আজ প্রকাশিত হয়েছে, তাই আমরা আগে এটি দেখতে পারিনি।
তিনি বলেন, আমাদের হাতে একটি কপি এসেছে। আমরা আইনমন্ত্রী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর (জুনাইদ আহমেদ পলক) সঙ্গে একমত হয়েছি যে আগামী ৬ এপ্রিল এ আইন নিয়ে আমরা আলোচনা করবো। কারণ খসড়াটি নিয়ে নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন অংশীজনের কাছ থেকে পরামর্শ এসেছে।
তিনি বলেন, নতুন খসড়াটি আমরা ইতিবাচকভাবে দেখতে চাই। খসড়াটি পর্যালোচনা করার সুযোগ সরকার আমাদের দিয়েছে। আমরা আশাবাদী, আমাদের মন্তব্য ও পরামর্শ তারা বিবেচনা করবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে গণমাধ্যমসহ জনগণের একটি বড় অংশের উদ্বেগ রয়েছে জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মন্ত্রীও আলোচনা প্রসঙ্গে এ আইনের অপব্যবহার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। সরকার এ বিষয়ে অবহিত আছে। আমরা মনে করি সার্বিকভাবে নাগরিক সমাজের অবস্থান হলো এ আইনটি বাতিল করা দরকার। এছাড়া অন্য কোনও বিকল্প নেই। কারণ এখানে মৌলিক যে বিচ্যুতি, উদ্বেগ ও পাশাপাশি আইনটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপব্যবহারের যে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে, আমরা মনে করি আইনটি ঢেলে সাজানো হলেও তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। জনকল্যাণমুখী হবে না। তাই আমরা আইনটি বাতিল করা দরকার বলে মনে করি।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, ড. সি আর আবরার, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, রেজাউর রহমান লেনিন, সাইমুম রেজা তালুকদার, শারমিন খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ছে: আইনমন্ত্রী
নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের চাপ নেই: আইনমন্ত্রী
পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ও গ্যাস লাইন পর্যবেক্ষণে প্রতি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের
ঢাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ জীবনযাপনের স্বার্থে ঢাকায় সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব ওয়ার্ডে স্থাপনা ও ভবনের পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ও গ্যাস লাইন নিয়মিত পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) এ সংক্রান্ত একটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
মঙ্গলবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের বাড়ি: দুদককে অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
সম্প্রতি রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব ও গুলিস্তানের সিদ্দকবাজারে ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনার প্রেক্ষাপটে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত রবিবার (১২ মার্চ) এ বিষয়ে একটি রিট আবেদন করে পরিবেশ ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।
নাগরিকদের নিরাপদ জীবন-যাপনের স্বার্থে ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক ওয়ার্ডের স্থাপনা ও ভবনের সুয়ারেজ (পয়ঃনিষ্কাশন) লাইন ও গ্যাসলাইন নিয়মিত পর্যবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সাত দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ কমিটি করতে বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের পর পর্যবেক্ষণে যদি পয়ঃনিষ্কাশন লাইন ও গ্যাস লাইনের কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়লে তা মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া কমিটিকে প্রতি আট সপ্তাহ পর পর এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ঢাকা সিটিতে অবস্থিত ভবন-স্থাপনাগুলো নিয়মিত তদারকি ও সিটিতে বসবাসকারীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
গণপূর্তসচিব, বিদ্যুৎসচিব, স্থানীয় সরকারসচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাস ও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনার প্রধান কারণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর অবহেলা। ঢাকা শহরে থাকা হাজার হাজার স্থাপনা বা ভবনের পয়নিষ্কাশন ও গ্যাসের লাইন তদারকি, রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো এ বিষয়ে সক্রিয় নয়। যে কারণে রিটটি করা হয়।
দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডের গ্যাস ও পয়নিষ্কাশন লাইন তদারকির জন্য সাত সদস্যের একটি করে কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি থাকবে। আট সপ্তাহ পর অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে চার খুন: ২৩ ফাঁসির আসামির ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় ৪ এপ্রিল
নতুন রাষ্ট্রপতির নিয়োগ চ্যালেঞ্জের রিট শুনতে বিব্রত হাইকোর্ট
১১ কোটি টাকা ডাকাতি: ৫৮ লাখ টাকা উদ্ধার, মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৩
রাজধানীর উত্তরার তুরাগ এলাকায় একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার গাড়ি থেকে ব্যাংকের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ঢাকা ও নেত্রকোনা জেলা থেকে মূলহোতাসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) একটি গোয়েন্দা দল।
তাদের কাছ থেকে ৫৮ লাখ ৭০ হাজার লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফপ্তার হওয়া ডাকাতরা হলেন- মোহাম্মদ হৃদয় (২১), মোহাম্মদ মিলন মিয়া (২৯) ও ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী আকাশ।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া ও জনসংযোগ) ফারুক হোসেন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিএমপির একটি গোয়েন্দা দল রাজধানীর বনানী এলাকার কড়াইল বস্তিতে এবং নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।
এ নিয়ে এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার ও ৭ কোটি ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডাকাতদের মধ্যে আকাশ ও সোহেল রানা ডাকাতির ছক কষে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে।
বর্তমানে পলাতক সোহেল রানা একটি প্রাইভেট সিকিউরিটি এজেন্সি মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেডের চালক ছিলেন এবং গাড়ির গতিবিধি সম্পর্কে তিনি ভালোভাবে জানতেন।
আরও পড়ুন: না.গঞ্জে পাওয়ার প্লান্টের চীনা কর্মীদের আবাসস্থলে হামলা ও ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৫
ডাকাত দল ওই দিন কোনো বাধা ছাড়াই গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় বলেও জানানো হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনা, গোপালগঞ্জ ও বরিশাল থেকে এই চক্রের সদস্যরা সংগ্রহ করেছে। ডাকাতির পর তারা তাদের অংশ নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
আকাশ ও সোহেল টাকার সিংহভাগ নেন।
রাজধানীর উত্তরার তুরাগ এলাকায় সাভারে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএমে টাকা ভরতে গিয়ে মানি প্ল্যান্ট লিমিটেডের গাড়ি থেকে ১১ কোটি টাকার নগদ টাকা লুট করেছে ডাকাতরা।
এর আগে, বৃহস্পতিবার গোয়েন্দা দলগুলো ঢাকা, এর আশপাশের এলাকা ও সুনামগঞ্জ থেকে আড়াই কোটি ৫৩ লাখ টাকার বেশি উদ্ধার করে এবং আটজনকে গ্রেপ্তার করে।
ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কারও জব্দ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার উত্তরায় গাড়ি থেকে সোয়া ১১ কোটি টাকা ডাকাতি
চট্টগ্রামে মিতু হত্যা: সাবেক এসপি বাবুলসহ ৭ জনের বিচার কাজ শুরু
চট্টগ্রামে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় প্রধান আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ ৭জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৩ মার্চ) বিকালে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন। আগামী ৯ এপ্রিল আদালত এই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রেখেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. আব্দুর রশিদ।
এর আগে দুপুরে একই আদালতে অভিযোগ গঠন বিষয়ে উভয় পক্ষের শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিকাল চারটায় আদেশের জন্য রেখেছিলেন।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের অভিযোগপত্র গ্রহণ
এসময় বাবুল আক্তার, আনোয়ার হোসেন, শাহজাহান মিয়া ও মোতালেব মিয়া প্রকাশ ওয়াসিমকে আদালতে হাজির করা হয়। এ মামলার আসামিদের মধ্যে জামিনে থাকা এহতেশামুল হক ভোলা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) প্রশিকিউসনের রুমে বিকালে সাড়ে চার থেকে বিকালে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এক ঘণ্টা আইনজীবীদের সঙ্গে বাবুল আক্তারের বৈঠকের সুযোগ দিয়েছেন আদালত।
জানতে চাইলে পিপি আবদুর রশিদ জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বাবুলসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করা হয়। অপর দিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আসামিদের নির্দোষ দাবি করে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে অভিযোগপত্রভুক্ত সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়ে আগামী ৯ এপ্রিল সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য্য করেছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পরিকল্পনা করে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে আসামি বাবুল আক্তার হত্যা করা হয়। বাবুল আক্তার যখন ঢাকায় ছিলেন তখন সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে ৩০২, ২০১ এবং ১০৯ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
শুনানীকালে বাদীর আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, মিতুকে হত্যা করার জন্য কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা ও মোতালেব মিয়া ওয়াসিম বিভিন্ন সময় বৈঠক করে। মিতুকে হত্যা করার জন্য কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা, এহতেশামুল হক ভোলা ও মোতালেব মিয়া ওয়াসিম পূর্ব থেকে ভাড়া করে ও অস্ত্র সংগ্রহ করে হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়ন করেন প্রধান আসামি বাবুল। পরে মিতু হত্যা ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তড়িঘড়ি করতে বাবুল আক্তার মামলা করেছিল।
বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, আমরা এই মামলার অভিযোগ থেকে বাবুল আক্তারের ডিসচার্জ (অব্যাহতি) চেয়ে আবেদন করেছি। এর পক্ষে আমরা যুক্তি উপস্থাপন করেছি। আদালত বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন। অভিযোগ গঠনের বিষয়ে বাবুল আক্তারের সঙ্গে কথা বলে উচ্চ আদালতে যাব কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বাবুল আক্তারকে ফেনী কারাগারে রাখার একটি আবেদন করা হয়েছিল, আদালত আদেশে বিচারের সুবিধার জন্য চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছেন। জেল কোড অনুযায়ী চিকিৎসাসহ সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন (৬ জুন) বাবুল আক্তার প্রথমে বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একই দিন বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পিবিআই।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা
মিতু হত্যা: বাবুলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারকে ২৭ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার নির্দেশ আদালতের
ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক স্পিকার জমির উদ্দিন সরকারকে চিকিৎসা ভাতা হিসেবে নেয়া ২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গত ৬ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায় আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে টাকা জমা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কাগজ আদালতে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন।
গত বছর ২৫ আগস্ট প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ দুর্নীতির পাঁচটি মামলা বাতিল করে রায় দেন।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, চিকিৎসা ভাতা হিসেবে উত্তোলন করা এই টাকা (২৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩৬৪ টাকা) রায়ের কপি বিচারিক আদালত গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
সেই রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতে গত ৬ মার্চ পৌঁছায়। এখন সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে তার চালান কপি আদালতে দাখিল করা হবে বলে সোমবার (১৩ মার্চ) জানান তার অন্যতম আইনজীবী মোহাম্মদ হান্নান ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়ে আদালতের নিরাপত্তায় ১১ দফা নির্দেশনা প্রধান বিচারপতির
বিদেশে চিকিৎসার জন্য অবৈধ উপায়ে সরকারি অর্থ অনুমোদন এবং তা নগদে তুলে আত্মসাৎ, সরকারি বাসভবনের আসবাব কেনা ও তা আত্মসাৎ এবং অতিরিক্ত অর্থ তোলার অভিযোগে দুদক এ পাঁচটি মামলা দায়ের করে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান খান ও উপ-সহকারী পরিচালক এসএম খবীরউদ্দিন বাদী হয়ে ২০১০ সালের ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাগুলো দায়ের করেন।
পরবর্তীতে এই পাঁচ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নেন।
এ অবস্থায় পাঁচ মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জমির উদ্দিন সরকার। হাইকোর্ট মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছিলেন।
শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ১৯ মে হাইকোর্ট বিভক্ত আদেশ দেন। পরবর্তীতে তৃতীয় বেঞ্চ রুল খারিজ করে দেন। এরপর তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: বিচারপ্রার্থীদের আদালতের বারান্দা থেকে দ্রুত বাড়ি ফেরানোর নির্দেশ প্রধান বিচারপতির
আদালতের অনুমতি ছাড়া বিদেশ যেতে পারবেন না বিডিনিউজের সম্পাদক
পঞ্চগড়ে ৬ মাসের মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
পঞ্চগড়ে ৬ মাসের মেয়েশিশুকে হত্যার দায়ে বাবাকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে নাজিমুল হকের উপস্থিতিতে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ২০১৯ সালের একটি হত্যা মামলায় এই আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নাজিমুল হক (৩৪) পঞ্চগড় সদর উপজেলার সিংরোড জয়দরভাঙ্গা গ্রামের জয়নুল হকের ছেলে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে মা-মেয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
২০১৯ সালের ১ এপ্রিল সকালে সদর উপজেলার জয়দরভাঙ্গা গ্রামে তার বাড়িতেই স্ত্রী ও দুই মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করে পালিয়ে যান। তার ধারালো অস্ত্রের আঘাতে স্ত্রী রাশিদা বেগম এবং তিন মেয়ে নাজিরা (৮), রিয়ামনি (৭) ও রত্না (৬ মাস) গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ছোট মেয়ে।
এ সময় প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় রাশিদার বাবা রশিদুল ইসলাম মৃত অবস্থায় রত্নাকে এবং গুরুতর আহত অবস্থায় দুই মেয়ে এবং রাশিদাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
পরে ওই দিন সন্ধ্যায় রশিদুল ইসলাম বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় নাজিমুল ও তার মা নাসিমা এবং বাবা জয়নুল হককে অসামি করে মামলা করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় ১৯ জন সাক্ষীর জেরা শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব ন্যায়বিচার না পাওয়ার অভিযোগ করে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
বগুড়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে ১ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২ জনের যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জে চার খুন: ২৩ ফাঁসির আসামির ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় ৪ এপ্রিল
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ২০০২ সালে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর চার খুনের মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ২৩ আসামির আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ৪ এপ্রিল রায় দেবেন হাইকোর্ট।
রবিবার বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ।
এর আগে ২০১৭ সালের ৪ মে চাঞ্চল্যকর এই চার খুন মামলায় ২৩ আসামির ফাঁসির রায় দেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-আবুল বাশার কাশু, ডালিম, ইয়াকুব আলী, রফিক, হালিম, রুহেল, শাহাবুদ্দিন, লিয়াকত আলী মাস্টার, সিরাজ উদ্দিন, ইদ্রিস আলী, মোহাম্মদ হোসেন, আবু কালাম, আহাদ আলী, ইউনুছ আলী, জহির উদ্দিন, ফারুক হোসেন, গোলাম আযম, আব্দুল হাই, খোকন, আল-আমিন, রুহুল আমিন, তাজুল ইসলাম ও হারুন।
আরও পড়ুন: নতুন রাষ্ট্রপতির নিয়োগ চ্যালেঞ্জের রিট শুনতে বিব্রত হাইকোর্ট
রায় ঘোষণার দিন মে এ মামলার প্রধান আসামি আবুল বাশার কাশুসহ ১৯ জনকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন আদালত।
বাকি চার পলাতক আসামি হলেন-আল-আমিন, রুহুল আমিন, তাজুল ইসলাম ও হারুন।
নিম্ন আদালতের রায়ের পর মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে আসামিরা খালাস চেয়ে আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর সোমবার শুনানি শেষ হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালের ১২ মার্চ বিলুপ্ত সদাসদি ইউনিয়নের (বর্তমান গোপালদী পৌরসভা) তৎকালীন চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল বাশার কাশুর নির্দেশে আড়াইহাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই আ. বারেক, তার ফুফাতো ভাই বাদল, আওয়ামী লীগ কর্মী ফারুক ও কবির হোসেনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় নিহত আ. বারেকের বাবা আজগর আলী মেম্বার বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। পরে ২১ জনকে সাক্ষী এবং ২৩ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। পরে বিচার শেষে ২০১৭ সালের ৪ মে রায় দেন নিম্ন আদালত।
চার খুনের মামলার প্রধান আসামি সদাসদি ইউনিয়নের (বর্তমান গোপালদী পৌরসভা) তৎকালীন চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল বাশার কাশুসহ মোট ১৯ জন কারাগারে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ই-অরেঞ্জ থেকে রাজস্ব আদায় না করায় হাইকোর্টের উষ্মা প্রকাশ
ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকিকে দুদকের মামলায় জামিন দেননি হাইকোর্ট
নোয়াখালীতে ৪ লাখ টাকা চুক্তিতে সিএনজি চালককে হত্যা: গ্রেপ্তার ৮
নোয়াখালী সদর উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিমকে (৩৫) গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুর সংবাদ সম্মেলনে এ
তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বরিশালে নৌ-পুলিশের ওপর হামলা: অর্ধশত জেলের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৮
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- সদর উপজলার পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মো. মমিন উল্যার ছেলে মো. মহিন (২৭), পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের রেজিয়াগো বাড়ির মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো. কামাল ওরফে কামাল ডাকাত (৩৮), হারুন মোল্লা বাড়ির আনোয়ারুল হক নশুর ছেলে মো. আজাদ হোসেন (৩২), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের অজি উল্যাহ পাটোয়ারী বাড়ির শাহজাহানের ছেলে রিপু মিয়া (২১), আক্কাস সওদাগর বাড়ির আক্কাস সওদাগরের ছেলে জাহিদ হাসান (২৮), পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের মাহফুজের বাপের বাড়ির মো. সেলিমের ছেলে সোহেল হোসেন ওরফে শাকিল (২৪), একই গ্রামের দোকান বাড়ির মকবুল আহমেদের ছেলে মমিন উল্যাহ (৩৭) এবং পাটোয়ারী বাড়ির অজি উল্যার ছেলে নূর আলম মিস্ত্রি (৫৫)।
পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারীর সঙ্গে নিহত সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আব্দুল হাকিমের শক্রতা ছিল। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি মামলা চলমান রয়েছে। পরিকল্পনাকারী শক্রতার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য আব্দুল হাকিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অর্থের লোভ দেখিয়ে আব্দুল হাকিমের সিএনজি অটোরিকশার মালিক মহিনকে ব্যবহার করা হয়।
ঘটনার দিন রবিববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পরিকল্পনা হিসেবে মহিম তার বাড়িতে কামাল, রিপু, মোমেন, নূর আলমসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে অবস্থান করে। মহিন আব্দুল হাকিমকে অটোরিকশা রাখার কথা বলে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নেয়।
তিনি আরও জানান, এরপর হাকিম অটোরিকশা জমা দেয়ার সময় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও অজ্ঞাতনামা আরও চার থেকে পাঁচজন মিলে তার মুখ বেঁধে ফেলে।
পরবর্তীতে সব আসামিরা হাকিমকে উপজেলার পূর্ব চরমটুয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চরমটুয়া গ্রামের সফিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ রাস্তার পূর্ব পাশে ইদ্রিস মিয়ার বাড়ির পেছনের ডগির ভেতরে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিতের পর সব আসামিরা মিলে হাকিমের লাশ বস্তার ভেতর ঢুকিয়ে মাটি চাপা দেয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, তদন্তকালে আসামি সোহেলের ভাষ্যমতে আসামি রিপুর বাড়ি থেকে হত্যঅয় ব্যবহৃত শাবল ও কোদাল উদ্ধার করা হয়। মূল পরিকল্পনাকারী হত্যাকাণ্ডের জন্য আসামি মহিমের সঙ্গে চার লাখ টাকা চুক্তি করেছিলেন।
এছাড়া তিনি জানান, আসামি রিপু ও সোহেল ওরফে শাকিল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। শনিবার ও রবিবার বিকালে তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: সিলেটে মাদরাসা ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১
কলাপাড়ায় ১০ বছরের শিশুকে যৌন হয়রানি, গ্রেপ্তার ১
বান্দরবানে কুকি-চিন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলিতে সেনা ওয়ারেন্ট অফিসার নিহত
বান্দরবানের থানচিতে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সদস্যরা রবিবার একটি টহল দলের ওপর গুলি চালালে একজন সিনিয়র সেনা ওয়ারেন্ট অফিসার নিহত এবং অপর দুই সেনা আহত হয়।
নিহত মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন রংপুর সদর উপজেলার ঘাঘটপাড়া গ্রামের মৃত শমসের আলীর ছেলে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, আহত সেনা সদস্যদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
জাতীয় শিশু দিবস-২০২৩ ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে টহল দল রবিবার দুপুরে মা ও শিশুদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দিতে যাওয়া একটি দলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যায়।
আইএসপিআর জানায়, দুপুর ১টার দিকে সশস্ত্র কেএনএ সদস্যরা অতর্কিতভাবে একটি অ্যামবুশ ভ্যানটেজ পয়েন্ট থেকে টহল দলের ওপর গুলি চালায়, এতে ওয়ারেন্ট অফিসার ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং আরও দুজন আহত হন।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কুকি চিনের সংঘর্ষ, নিহত ১
আইএসপিআর জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদী কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তারা অর্থের জন্য বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকায় ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ নামক নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে থানচিতে চলমান সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধের চেষ্টা করে এই সন্ত্রাসী গ্রুপ। ব্যর্থ হয়ে তারা ২০২৩ সালের ১১ মার্চ ১২জন শ্রমিককে অপহরণ করে।
তাদের মধ্যে একজন শ্রমিক বুলেটে আহত হয়েছেন এবং চারজন শ্রমিক এখনও কেএনএ-র হাতে জিম্মি রয়েছে।
বাকি সাত শ্রমিককে মুক্তিপণের জন্য ছেড়ে দেয়া হলেও তারা রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে কাজ না করার হুমকি দেয়।
এর আগে ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কেএনএ বান্দরবানের তিনটি উপজেলায় যানবাহন চলাচল বন্ধের হুমকি দিয়ে পরিবহন মালিক সমিতিকে একটি নোটিশ পাঠায়।
কেএনএ সদস্যদের বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে জেলা প্রশাসন ১২ মার্চ (রবিবার), ২০২৩ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ওই এলাকায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
আরও পড়ুন: আটক জঙ্গি ও কুকি-চিনের ১০ সদস্যকে জেল হাজতে পাঠাল আদালত
খুলনায় বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ, আদালতে অভিযুক্তের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে
খুলনায় আদালতের এজলাসে বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে ভুক্তভোগীকে বিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আব্দুস ছালাম খান বিয়ের আদেশ দিলে কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন, ২০২০ সালে ভুক্তভোগীর সঙ্গে রাজু শেখের পরিচয়ের পর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর ভুক্তভোগীর আগের ঘরের ছেলেসহ তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বিয়ের আশ্বাসে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার কিশোরী, গ্রেপ্তার ৫
এসময় বিয়ের আশ্বাসে ধর্ষণ করায় ভুক্তভোগী অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। অভিযুক্ত রাজু তাকে সন্তান নষ্ট করতে বলে এবং এরপর থেকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে ভুক্তভোগী জানতে পারে ২০২১ সালের ১৬ জুন রাজু অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। ভুক্তভোগী রাজুকে ফোন দিলে রিসিভ করতো না। একবার শুধু ফোন রিসিভ করে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলতে বলে।
এরপর ২০২১ সালের ২০ জুন ভুক্তভোগী লবণচরা থানায় মামলা করে।
সেই মামলায় আজ বিচারক ভুক্তভোগীর সঙ্গে রাজুর বিয়ের আদেশ দেন এবং কাজীর মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন করা হয়।
আরও পড়ুন: বিয়ের আশ্বাসে রোগীকে ধর্ষণের অভিযোগে চিকিৎসক গ্রেপ্তার