������������������������������
দ্রুত সাগর-রুনি হত্যার রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে র্যাবকে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দ্রুত রিপোর্ট দিতে র্যাবকে নির্দেশনা দেয়ার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রীর কক্ষে সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার দ্রুত বিচার দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ)।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ডিআরইউ আমাকে স্মারকলিপি দিয়েছে। বিচার তো আমরা করতে পারব না, আমরা তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারব। আমরা চেষ্টা করছি, অনেক বছর হয়ে গেছে। আমরাও চাই এ রহস্য উন্মোচিত হোক। উদীয়মান এই দুই সাংবাদিক, যাদের অনেক প্রতিভা ছিলো তারা দেশকে অনেক কিছু দিতে পারত। তারা আমাদের মধ্য থেকে চলে গেছেন। আমরাও চাই কেন এই হত্যকাণ্ড হয়েছে, সেটি উদঘাটনের।
মন্ত্রী বলেন, ডিআরইউ’র স্মারকলিপি আমি র্যাবের ডিজিকে এখনই পাঠিয়ে দিচ্ছি। তাড়াতাড়ি একটা কিছু জানায় সেই নির্দেশনা তাদেরকে দেবো। আমরা চেষ্টা করছি রহস্য উদঘাটনের। সাংবাদিক নেতাদেরও বলেছি আপনাদের কাছেও যদি কোন তথ্য থাকে সেগুলো আমাদের জানালে আমরা সেটিও দেখব।
আরও পড়ুন: আন্দোলনের নামে ঢাকার রাজপথ দখলের চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ডিআরইউ’র স্মারকলিপিতে বলা হয়, ক্ষোভ ও দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, ডিআরইউ সদস্য মাছরাঙা টেলিভিশনের সাবেক বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের এক দশক পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারীদের এখনও শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়নি। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর পশ্চিম রাজা বাজারে নিজ বাসায় তাদের শিশুপুত্রের সামনে নির্মমভাবে খুন হন এই সাংবাদিক দম্পতি।
তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ ১১ বছর পেরিয়ে গেছে; তদন্তের কোন ধরনের অগ্রগতি নেই। এমনকি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত থেকে ৯৫ বার সময় নেয়া হয়েছে।
বিচার না পেয়ে সাগর-রুনীর পরিবারে ও গোটা সাংবাদিক সমাজে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ ও হতাশা। কিছুদিন আগে পরলোকগমন করেছেন মেহেরুন রুনির মা নুরুন্নাহার মির্জা। এখনো বিচারের আশা ছাড়েননি সাগর সারওয়ারের বয়োবৃদ্ধ মা সালেহা মুনির ও সাগর-রুনীর একমাত্র পুত্র মাহীর সারওয়ার মেঘ।
যে কোন হত্যার বিচার পাওয়া নাগরিকের অধিকার। আর রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকের সেই অধিকার নিশ্চিত করা। আমরা দেখেছি, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বড় বড় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে; অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। সাগর-রুনি হত্যার কোন কুলকিনারা তারা করতে পারবে না এটা আমরা বিশ্বাস করি না। তাই আর কালক্ষেপণ না করে দ্রুততম সময়ে সাগর-রুনি হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত খুনিদের মুখোশ উন্মোচনের জন্য ডিআরইউ’র পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা আবারও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। এই হত্যার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ডিআরইউ এ দাবি থেকে সরে যাবে না।
এসময় ডিআরইউ'র সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, দপ্তর সম্পাদক কাওসার আজম ও কার্যনির্বাহী সদস্য ইসমাইল হোসাইন রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
র্যাবের ওপরের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা খুব শিগগিরই উঠে যেতে পারে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
চসিক কার্যালয়ে দুদকের অভিযান, মশার ওষুধ কেনায় অনিয়ম
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় ৮ জনের একটি টিম চসিক কার্যালয়ে প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল, নথি তল্লাশি করেন। এসময় মশা মারার ওষুধ কেনায় অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুদক টিম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বেলা ১টার দিকে অভিযান শুরু করেন দুদক কর্মকর্তারা। এসময় সংস্থাটির বিভিন্ন বিভাগের নথিপত্র তল্লাশি করেন তারা। অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা বেশ কিছু নথি নিজেদের জিম্মায় নিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
এর আগে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর কক্ষে দীর্ঘসময় সময় অবস্থান করেন এবং মেয়রের সঙ্গে এসব ইস্যুতে কথা বলেন দুদক কর্মকর্তারা।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, দুদক কর্মকর্তারা নগরীর টাইগার পাসস্থ নগর ভবনেই অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন: চসিকের সার্ভার হ্যাক করে জন্মনিবন্ধন সনদ উত্তোলন, আটক ৪
এবিষয়ে চসিকের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ১২টার দিকে দুদক কর্মকর্তারা নগর ভবনে এসেছেন। মেয়রের সঙ্গেও ঘণ্টাখানেক কথা বলেছেন তারা। পরে তারা কিছু ফাইল তল্লাশি করেন এবং নিজেদের জিম্মায় নেন।
তবে সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের আকস্মিক এই অভিযান, তা জানেন না বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা।
অভিযানের বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক এমরান হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটা অভিযোগ ছিল, চসিকে মশার ওষুধ কেনায় দুর্নীতি হয়। ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত একটা নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার কার্যাদেশ দেওয়া হচ্ছে। মেসার্স বেঙ্গল মার্ক ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ডিসেম্বর ২১ থেকে অক্টোবর ২২ পর্যন্ত ৭৭ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ৫ লাখ টাকার বেশি কেনাকাটা করতে হলে দরপত্র আহ্বান করতে হয়। কিন্তু একই ব্যক্তিকে কাজ পাইয়ে দিতে ৫ লাখ টাকার নিচে রাখতে ১৬ লটে ভাগ করে ওষুধ কেনা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন,‘কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিকভাবে আমরা অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। বাকিটা তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হবে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
অভিযোগ রয়েছে, দরপত্র ছাড়াই চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক অরভিন সাকিব ওরফে ইভান নামের এক নেতার কাছ থেকে কেনা হয় এসব মশার ওষুধ।
আরও পড়ুন: নির্মাণে ত্রুটির কারণেই ফ্লাইওভারে ফাটল: চসিক মেয়র
চসিকের প্যানেল মেয়র নির্বাচিত হলেন তিন কাউন্সিলর
আন্দোলনের নামে ঢাকার রাজপথ দখলের চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্দোলনের নামে ঢাকার রাস্তা দখলের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
তিনি বলেন, ‘কেউ রাস্তা অবরোধ করার চেষ্টা করলে এবং আন্দোলনের নামে আবারও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যা যা প্রয়োজন তা করবে। তারা যদি স্বল্প সময়ের জন্য তাদের কর্মসূচি পালন করে তাহলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’
বৃহস্পতিবার অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদর দপ্তরে ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও আর্থিক অপরাধ তদন্ত’ শীর্ষক সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে সমাহিত শহীদদের মরদেহ দেশে আনার ইচ্ছা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে তারা অনেক বিষয়ে কথা বলবে এটাই স্বাভাবিক। পাশাপাশি, অন্যান্য দল রয়েছে যারা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারে এবং এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।’
তিনি সব রাজনৈতিক দলকে রাস্তা অবরোধ করে জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে ডিসিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
এরফান সেলিমের জামিন বাতিল, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
নৌ-বাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিমের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুজ্জামান নূরের আদালত এই আদেশ দেন।
এ দিন মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য থাকলেও ইরফান সেলিম আদালতে উপস্থিত না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে সময় আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১১ মামলা: হাজিরার জন্য ১৫ মে দিন ধার্য আদালতের
আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে ইরফান সেলিমসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এছাড়া আগামী ৬ মার্চ সাক্ষগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন আদালত।
এদিকে তার আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় চার্জ শুনানি পেছানোর আবেদন করেন।
অপর চার আসামি হলেন- এরফান সেলিমের দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লা, গাড়িচালক মিজানুর রহমান, মদিনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এ বি সিদ্দিক দীপুও সহযোগী কাজী রিপন।
এদের মধ্যে জাহিদুল বর্তমানে কারাগারে আছেন। মিজানুর ও দীপু জামিনে আছেন এবং কাজী রিপন পলাতক।
জানা যায়, ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর নৌ বাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খান মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। এ সময় এমপি হাজী সেলিমের ছেলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরফান সেলিমের গাড়িটি তাকে ধাক্কা দেয়।
এরপর তিনি সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন।
তখন গাড়ি থেকে এরফানের সঙ্গে থাকা অন্যরা একসঙ্গে তাকে কিল-ঘুষি মারেন এবং মেরে ফেলার হুমকি দেন।
তার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ ঘটনায় নৌ-কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমদ খান বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন।
আরও পড়ুন: নীরব হত্যা: ৫ শিক্ষার্থীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
স্ত্রীর মামলায় ক্রিকেটার আল আমিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র
দুর্নীতি: বিমানের ১৭ কর্মকর্তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিমানের সাবেক ও বর্তমান ১৭ কর্মকর্তাকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ওই ১৭ জন কর্মকর্তা হাজির হয়ে আগাম জামিন আবেদনের পর বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও আসিফ হাসান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এআরএম হাসানুজ্জামান।
আরও পড়ুন: টিপু-প্রীতি হত্যা: বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন—বিমানের ফ্লাইট অপারেশন্সের পরিচালক ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, ডেপুটি ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিকুল আলম সিদ্দিক, মহাব্যবস্থাপক মো. আব্দুর রহমান ফুকই, সাবেক মুখ্য প্রকৌশলী শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফি, সাবেক মুখ্য প্রকৌশলী দেবেশ চৌধুরী, এয়ারওরথিনেস কনসালটেন্ট (সিএএবি) গোলাম সারওয়ার, প্রকৌশলী মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঞা, ডিজিএম কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী এ আর এম কায়সার জামান, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার শরীফ রুহুল কুদ্দুস, ক্যাপ্টেন মো. নজরুল ইসলাম শামীম, জিয়া আহমেদ, চিফ পার্সার কাজী মোসাদ্দেক আলী, ফ্লাইট পার্সার মো. শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আজাদ রহমান, ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাদির, উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, ইঞ্জিনিয়ার অফিসার মো. জাহিদ হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক বসুনিয়া, ব্যবস্থাপক মো. আতাউর রহমান, চিফ পার্সার মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল হক, ফ্লাইট পার্সার শাহনাজ বেগম ঝর্ণা, চিফ ইঞ্জিনিয়ার গাজী মাহমুদ ইকবাল।
অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে আগে নিজেরা লাভবান হয়ে ও পরে অপরকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটি প্লেন লিজ নেন। পরে রি-ডেলিভারি পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের এক হাজার ১৬১ কোটি টাকার ক্ষতি ও অর্থ আত্মসাৎ করে দণ্ডবিধির ১০৯/৪০৯/৪২০ ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।’
আরও পড়ুন: শর্ত সাপেক্ষে আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে মিসরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর মডেলের উড়োজাহাজ দুটি লিজ নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। প্রথম বছর শেষেই দুটি এয়ারক্রাফটেরই ইঞ্জিন বিকল হয়। ইঞ্জিনগুলো প্রায় ১২-১৫ বছরের পুরোনো এবং এর উড্ডয়ন যোগ্যতার মেয়াদকাল কম থাকায় পুরোপুরি বিকল হয়ে যায়। প্লেন সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় সেটিও। এতে পাঁচ বছরে দেশের ক্ষতি হয়েছে ১১০০ কোটি টাকা। যা একাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তদন্তে উঠে এসেছে।
এর আগে ২০২২ সালের ২৮ মে তারিখ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও বরাবর চিঠি দিয়ে লিজ সংক্রান্ত নথি তলব করে দুদক। ইতোমধ্যে এয়ারক্রাফট লিজ নেয়ার প্রক্রিয়ায় সংঘটিত অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগটি গভীরভাবে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদক উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ও সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তারের সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১ নম্বর সাব-কমিটির দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে মিসরীয় প্লেন লিজ নেয়ার ক্ষেত্রে গুরুতর অনিয়মের এই অনুসন্ধান দুদক শুরু করে।
সংসদীয় কমিটি মনে করে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের এয়ারক্রাফট বহর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০১৪ সালে মিসরীয় দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর এয়ারক্রাফট লিজ নেওয়ার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।
দুদক জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি প্রাথমিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়।
প্রতিবেদনে উল্লিখিত অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয় আরও গভীরভাবে তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠায়।
আরও পড়ুন: রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলো থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে দেয়াল লিখন ও পোস্টার অপসারণের নির্দেশ হাইকোর্টের
সালাম মুর্শেদীর সেই বাড়ির মূল নকশা ৭ দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ
রাজধানীর গুলশানে সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদীর সেই বাড়ির মূল লে আউট প্ল্যান (নকশা) সাত দিনের মধ্যে দাখিল করতে রাজউককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা না চালাতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এছাড়াও রুল শুনানির জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছেন আদালত।
আরও পড়ুন: খুলনা-৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী সালাম মুর্শেদী
আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
গত ৩০ অক্টোবর গণপূর্তের বাড়ি দখলে রাখায় সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন ব্যারিস্টার সুমন।
রিটে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২’র ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭-এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত।
আরও পড়ুন: সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা বাড়ির নথি ও তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ
কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।
রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও চলতি বছরের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেয়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন, রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেয়ায় ফের ৪ জুলাই চিঠি দেয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেয়া হলো, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সালাম মুর্শেদীর বাড়ি: দুটি ভিডিও সরাতে ব্যারিস্টার সুমনকে নির্দেশ
এ রিটের শুনানি নিয়ে গত ১ নভেম্বর সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এছাড়া এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র আদালতে দাখিল করতে রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেন আদালত।
ডিএজি আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আব্দুস সালাম মুর্শেদীর পক্ষে তার আইনজীবী হলফনামা দাখিল করেছেন।
আর রাজউক, গণপূর্ত ও দুদকের পক্ষেও প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
পল্টন থানার মামলায় স্থায়ী জামিন পেয়েছেন ফখরুল ও আব্বাস
রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় স্থায়ী জামিন পেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বিএনপির এই দুই নেতার জামিন প্রশ্নে রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেন।
মামলাটিতে এক মাস কারাভোগের পর গত ৯ জানুয়ারি অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তি পান মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস।
বুধবার আদালতে বিএনপির দুই নেতার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও সগীর হোসেন।
আরও পড়ুন: তৃতীয় দফায় ফখরুল ও আব্বাসের জামিন নামঞ্জুর
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম গোলাম মোস্তফা।
পরে আইনজীবী সগীর হোসেন বলেন, মামলাটিতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়ে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস আগে কারামুক্তি পান।
বুধবার হাইকোর্ট রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করেছেন। ফলে এই মামলায় দুজন স্থায়ী জামিন পেলেন।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর বলেন, আলোচনা করে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
৭ ডিসেম্বরে নয়াপল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরদিন ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে বাসা থেকে আটক করে পুলিশ।
পরে তাঁদের সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের কারাগারে রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সেই থেকে তারা কারাগারে রয়েছেন। বিচারিক আদালতে চতুর্থ দফায় তাদের জামিন না-মঞ্জুর হওয়ার পর গত ২ জানুয়ারি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাস।
গত ৩ জানুয়ারি তারা হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন পান। একই সঙ্গে এ মামলায় তাদেরকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেন।
হাইকোর্টের এই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে ৪ জানুয়ারি সকালে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। যে আবেদনের শুনানি করে আপিল বিভাগ গত ৮ জানুয়ারি হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রাখেন।
এরপর তারা কারামুক্তি পান। বুধবার হাইকোর্টের জারি করা রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল মঞ্জুর করে রায় দেন।
আরও পড়ুন: ফখরুল ও আব্বাসের হাইকোর্টের দেয়া জামিনের আপিল শুনানি রবিবার
মির্জা ফখরুল ও আব্বাসের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন
শর্ত সাপেক্ষে আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
বাংলা একাডেমির আপত্তি জানানো তিনটি বই স্টলে না রাখার শর্তে অমর একুশে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মো. মাহাবুবুর রহমানের করা রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: বায়ু দূষণ থেকে মানুষকে বাঁচান: পরিবেশ অধিদপ্তরকে হাইকোর্ট
বাংলা একাডেমির আপত্তি জানানো ওই তিনটি বই হচ্ছে, ফাহাম আব্দুস সালামের লেখা ‘মিডিয়োক্রিটির সন্ধানে।’ লেখক জিয়া হাসানের ‘উন্নয়ন বিভ্রম’ এবং লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এর ‘অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবনীয় কথামালা।’
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক। রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
শুনানিতে ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, ‘একটি বইকে কেন্দ্র করে বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীর অংশগ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অথচ বইটি কালো তালিকাভুক্ত বা নিষিদ্ধ নয়। আর এই প্রকাশনীর আরও ৬০০ বই রয়েছে। স্টল বরাদ্দ না দিলে এসব বইয়ের লেখকেরা বঞ্চিত হবেন। তাই যদি কোন বইতে বাংলা একাডেমির আপত্তি করে সেটা আমরা না হয় স্টলে রাখবো না।’
বই মেলার পরিচালনা পর্ষদ (বাংলা একাডেমি) গত ১২ জানুয়ারি স্টল বরাদ্দের যে তালিকা প্রকাশ করে যেখানে আদর্শ প্রকাশনীর নাম না থাকায় গত সোমবার হাইকোর্টে রিট করেন আদর্শ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মো. মাহাবুবুর রহমান। রিটে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়।
আরও পড়ুন: টিপু-প্রীতি হত্যা: বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলো থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে দেয়াল লিখন ও পোস্টার অপসারণের নির্দেশ হাইকোর্টের
ঢাকার দুই মেয়র ও রাজউক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রুল
সড়কের পাশে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা থেকে অননুমোদিত স্থাপনা অপসারণের নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও রাজউক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির লিটনের বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজউকের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
আরও পড়ুন: মেয়র তাপসকে নিয়ে বক্তব্য: সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে ২ মামলা
আইনজীবী মনজিল মোরেসদ জানান, ঢাকার রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও গাড়ি পার্কিং বন্ধে পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)-এর পক্ষে ২০১৫ সালে একটি রিট করা হয়। সে রিটের প্রাথমিক শুনানির পর আদালত রুল দেন।
রুলে অনুমোদনহীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, অবৈধ স্থাপনা অপসারণের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে কোন কোন ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় নকশাবহির্ভূত স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে, রাজউক চেয়ারম্যানকে ৬০ দিনের সে তালিকা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
পরবর্তীকালে রাজউক গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার কয়েকশ’ ভবনের তালিকা আদালতে দাখিল করে।
এরপর বিভিন্ন সময় রাজউক প্রতিবেদন দিয়ে আদালতকে জানায়, ২০১৬ সাল থেকে তারা এসব অবৈধ স্থাপনা অপসারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। একপর্যায়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানি করে ২০১৯ সালের ৩ জুলাই রায় দেন হাইকোর্ট।
সে রায়ে রাজধানীতে সড়কের পাশে যেসব ভবনে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় নকশাবহির্ভূতভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকান তৈরি করা হয়েছে সেগুলো এক মাসের মধ্যে ভেঙে ফেলতে ভবন মালিকদের নির্দেশ দেয়া হয়।
আর ভবন মালিকরা তা না করলে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে তা করতে রাজউককে নির্দেশ দেয়া হয়।
এক্ষেত্রে ভাঙার খরচ ভবন মালিকের কাছ থেকে আদায় করতে বলা হয়।
এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা থেকে অননুমোদিত পার্কিং সরাতে আইনগত পদক্ষেপ নিতে সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু এই রায় বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় এবং রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আদালতে প্রতিবেদন না দেয়ায় গত বছর দুই মেয়র ও রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে অনুরোধ করা হয়।
সে নোটিশের পরও পদক্ষেপ না নেয়ায় আদালত অবমাননার অভিযোগ আনতে আবেদন করা হলে মঙ্গলবার আবেদনের শুনানির নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকেই দায়িত্ব নিতে হবে: মেয়র আতিক
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
টিপু-প্রীতি হত্যা: বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
রাজধানীর শাজাহানপুরে এলোপাতাড়ি গুলিতে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় আসামি তৌফিক হাসান বাবু ওরফে বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বাবুর জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যের ডিজিকে সেবা নিশ্চিত করতে বললেন হাইকোর্ট
শুনানিতে আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমদ ভূঁইয়া।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমদ ভূঁইয়া বলেন, আসামি তৌফিক হাসান ওরফে বাবু ওরফে বিডি বাবুর দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
সুতরাং সে জামিন পেতে পারে না। আর মামলাটি এখনও তদন্তাধীন। আদালত তাকে জামিন না দিয়ে আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন।
গত বছরের ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজার সংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে সঙ্গীদের নিয়ে মাইক্রোবাসে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর আমতলা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম টিপু।
এসময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
গুলিবিদ্ধ হন টিপুর গাড়িচালক মুন্নাও।
এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময় আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
টিপু ও প্রীতি হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসার নাম আসে।
পরে জানা যায়, মুসা ঘটনার আগেই গত বছরের ১২ মার্চ দেশ ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে যান।
পুলিশ সদর দপ্তর ৮ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে।
আরও পড়ুন: রাজধানীর ফ্লাইওভারগুলো থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে দেয়াল লিখন ও পোস্টার অপসারণের নির্দেশ হাইকোর্টের
৮ মে জানা যায়, মুসা দুবাই থেকে ওমানে প্রবেশ করেছেন। এরপর ইন্টারপোলের ওমান পুলিশ এনসিবির সহযোগিতায় গত ১২ মে মুসাকে গ্রেপ্তার করে।
পরে গত ৯ জুন বাংলাদেশ পুলিশের একটি টিম ওমানে গিয়ে মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনে।
১০ জুন মুসার ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ইন্টারপোলের মাধ্যমে মুসাকে দেশে ফেরানোর পর একাধিক দফায় হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন মুসা। কিলিং মিশনে কার কী ভূমিকা ছিল সেটি তার বক্তব্যে উঠে আসে।
মুসার তথ্য যাচাই করতে বিভিন্ন সময় আরও কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। এর মধ্যে টিপু হত্যা পরিকল্পনায় টিটু, রবিন ও সোহেল সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলে।
চারজনের মধ্যে টিটু সবচেয়ে দুর্ধর্ষ। আসামিদের সঙ্গে অপরাধ জগতের যোগসূত্র দীর্ঘদিনের। যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কির সঙ্গে এক সময় তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
নিহত টিপু সরকারি নানা দপ্তরের ঠিকাদারি করতেন। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন।
ওমর ফারুক যে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, সেই এলাকায় একটি রেস্তোরাঁর মালিক ছিলেন টিপু, যেখানে তিনি নিয়মিত বসতেন।
গত বছরের ১৬ আগস্ট দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ সংবাদ সম্মেলনে মোটরসাইকেল চালক শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীম (৩৫), তৌফিক হাসান ওরফে বাবু (৩৪), সুমন হোসেন (৩৫), এহতেশাম উদ্দিন চৌধুরী অপু (৩৭) ও শরিফুল ইসলাম হৃদয়কে (২৭) গ্রেপ্তারের কথা জানান।
এরপর গত বছরের ২৮ নভেম্বর মহানগর দায়রা জজ আদালত বাবুর জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
আরও পড়ুন: বায়ু দূষণ থেকে মানুষকে বাঁচান: পরিবেশ অধিদপ্তরকে হাইকোর্ট