কৃষি
ঘেরের পাড়ে সবজি চাষে স্বাবলম্বী তেরখাদার চাষিরা
খুলনার তেরখাদা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের তিন সহস্রাধিক ঘেরের পাড়ে সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন চাষিরা।
চাষ করা সবজির মধ্যে লাউ, শসা, করলা, চিচিঙ্গা, টমেটো, চাল কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, এমনকি তরমুজও রয়েছে।
আরও পড়ুন: শীতের প্রথম বাজার ধরতে ব্যস্ত যশোরের সবজি চাষিরা
জানা গেছে, ঘেরের পানিতে মাছ চাষ আর পাড়ে সবজি চাষ করে এসব এলাকার কৃষকেরা এখন স্বাবলম্বী। যদিও চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে যেমন মৎস্য চাষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, তেমনি ঘেরের বেড়িতে শাক সবজির চাষও ব্যাহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাড়ছে খুলনার চুইঝালের কদর, যাচ্ছে থাইল্যান্ডে
আজগড়া এলাকার আলী গাজী জানান, সবজি চাষ করে এলাকার কৃষকেরা ভালোই আছেন। সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এসেছে।
আজগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কৃষ্ণ মেনন রায় বলেন, ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোতে শুধু ঘের আর ঘের। বিশেষ করে আমার ইউনিয়নের ১০ হাজার লোকের বসবাস। এর মধ্যে ৮০ ভাগ মানুষই ঘেরে মাছ ও সবজি চাষ করে থাকেন।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা
এ ব্যাপারে তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘের পাড়ে উৎপাদিত লাউ, করলা ও টমেটো ইতোমধ্যে উপজলার চাহিদা মিটিয়ে বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করা হচ্ছে। কৃষকেরা দামও ভালো পাচ্ছেন। এসব নিম্নাঞ্চলের মানুষের আয়ের একটা বিশাল অংশই সবজি চাষ থেকে আসে। তাছাড়া এই এলাকার সবজি জেলা শহরের সবজির চাহিদাও মিটিয়ে থাকে।
আমনে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে আমন আবাদে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তাকে পিছনে ফেলে চলমান আমন মৌসুমে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জিত হয়েছে।
শনিবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা হলো ৫৯ লাখ হেক্টর। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ মেট্রিক টন চাল। ২০২০-২১ সালে আমন মোট আবাদ হয়েছিল ৫৬ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন হয়েছিল এক কোটি ৪৫ লাখ টন। গতবছর ২০২১-২২ সালে আবাদ হয়েছিল ৫৭ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে এবংআর উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৫০ লাখ টন চাল।
এতে আরও বলা হয়েছে, খরা আর কম বৃষ্টিপাতের কারণে আমনে প্রায় ১৫ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ দিতে হয়েছে। সেচকাজে প্রায় ছয় লাখ ৭৪ হাজার গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, এলএলপিসহ বিভিন্ন সেচযন্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে। দেশে মোট সেচযন্ত্রের পরিমাণ ১৪ লাখেরও বেশি।সম্প্রতি ময়মনসিংহে এক কর্মসূচিতে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমন উৎপাদনে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমনে উৎপাদন গতবছরের তুলনায় বেশিও হতে পারে।
আরও পড়ুন: খরা-অনাবৃষ্টি: অবশেষে আমন আবাদে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রার অর্জন
ফসলি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃষকদের খোলা চিঠি
জামানাত ছাড়াই কৃষককে ঋণ দেয়া যায়: কৃষিমন্ত্রী
ফসলি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃষকদের খোলা চিঠি
খুলনার দাকোপ উপজেলার বাণীশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর তিন ফসলি কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছে এক হাজার কৃষক পরিবার।
সম্প্রতি বাণীশান্তা-ভোজনখালী সংযোগ সড়কে এ উপলক্ষে চিঠি লেখা কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এবং বাণীশান্তা কৃষিজমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিহীন, তীব্র তাপদাহে রোপা আমন ও সবজি নিয়ে বিপাকে নওগাঁর কৃষকরা
পোস্টকার্ডের মাধ্যমে লেখা ওই চিঠিতে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পশুর নদ খননের বালু কৃষিজমিতে না ফেলে বিকল্প জায়গায় ফেলার দাবি জানান কৃষকরা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পশুর নদীর ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার ভুল সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে কৃষকদের বিকল্প প্রস্তাব বিবেচনায় নেবেন। কিন্তু তারা তা না করে বিভিন্ন মহলকে উসকানি ও সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন। এ অবস্থায় বাণীশান্তার ৩০০ একর তিন ফসলি উর্বর কৃষিজমি রক্ষায় ১২০০ কৃষক পরিবারের পাঁচ হাজার মানুষের পক্ষ থেকে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে অনাবৃষ্টিতে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় কৃষক
তারা বলেন, উন্নয়ন করতে গিয়ে কৃষিজমি নষ্ট করা যাবে না, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি ফেলে রাখা যাবে না প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা জীবন দেবো, তবুও বাণীশান্তার তিন ফসলি কৃষিজমিতে বালু ফেলতে দেবো না।
সভাপতির বক্তব্যে ইউপি সদস্য কৃষক পাপিয়া মিস্ত্রি বলেন, মোংলা বন্দর কর্তৃক বাণীশান্তার কৃষিজমিতে বালু ফেলার বিরুদ্ধে দাকোপের জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দারা ঐক্যবদ্ধ।
আরও পড়ুন: তলিয়ে যাওয়া ফসল নিয়ে হাওরের কৃষকের হাহাকার
আমাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি হস্তক্ষেপে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বিকল্প জায়গায় বালু ফেলে বাণীশান্তার উর্বর কৃষিজমি রক্ষায় উদ্যোগী হবে।
জামানাত ছাড়াই কৃষককে ঋণ দেয়া যায়: কৃষিমন্ত্রী
জামানাত ছাড়াই কৃষককে ঋণ দেয়া যায় বলে জনিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, সরকার কৃষিখাতে চার শতাংশ স্বল্প সুদে কৃষকদেরকে ঋণ দিচ্ছে। কিন্তু এ ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান কঠিন শর্ত অনেক সময়ই কৃষক পূরণ করতে পারে না। সেজন্য ঋণ দেয়ার পদ্ধতি আরও সহজ করতে হবে।
রবিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে প্রাণিসম্পদ খাতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে আমাদের অবস্থান ও করণীয় শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। আদর্শ প্রাণিসেবা লিমিটেড এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: ১৩ বছরে একটি মানুষও না খেয়ে কষ্ট করেনি: কৃষিমন্ত্রী
প্রাণিসম্পদে অবশ্যই বীমা প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে একটি গাভির দাম ৫-১০ লাখ টাকা। সেজন্য প্রাণিসম্পদে অবশ্যই বীমা হওয়া উচিত।
তবে বীমা কোম্পানির ওপর দেশের মানুষের বিশ্বাস নেই। তারা গ্রাহককে ব্যাপকভাবে হয়রানি ও প্রতারণা করে। এই হয়রানি ও প্রতারণা বন্ধ করে বীমাকে গ্রাহকবান্ধব করতে হবে। বীমাতে মানুষের আস্থা বৃদ্ধি করতে হবে।
ডিমের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে এটি সাময়িক; এবং শিগগিরই দাম কমে আসবে বলেও মন্ত্রী জানান।
ভোজ্যতেলের উৎপাদন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের চাহিদা শতকরা ৪০ ভাগ দেশে উৎপাদনের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে।
সেমিনারে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন, কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল্লাহ হারুন পাশা, কৃষিবিদ আওলাদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংককিং ও বীমা বিভাগের অধ্যাপক হাসিনা শেখ, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কায়সার হামিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ৫০ লাখ মানুষকে ১৫ টাকা কেজিতে চাল দিচ্ছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী
বোরোতে ডিজেলে ভর্তুকি দেয়ার বিবেচনা করছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী
খুলনায় পাটের বাম্পার ফলন, দামেও খুশি চাষিরা
গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার খুলনাঞ্চলে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে পাটের চাহিদা থাকায় এবং দাম ভালো হওয়ায় খুশি চাষিরা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি মৌসুমে ডুমুরিয়া উপজেলায় ৭৫৫ হেক্টর জমিতে তোশা ও দেশি জাতের পাট চাষ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার মাগুরাঘোনা ও আটলিয়া ইউনিয়নে বেশি পাট আবাদ হয়েছে। এপ্রিল থেকে মে মাসের মাঝামাঝি বীজ বপন সময় প্রচণ্ড খরার কারণে কিছু বীজ নষ্ট হলেও শেষ দিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের ফলন খুব ভালো হয়। উপজেলাতে ভারতীয় বঙ্কিম জাতের বীজ বেশি চাষ হয়েছে। বর্তমানে পাট কাটা, পাট জাগ দেয়া, আশ সংগ্রহ, পাটখড়ি শুকানোসহ বিভিন্ন পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
আরও পড়ুন: অল্প বৃষ্টিতে উদ্বিগ্ন ঠাকুরগাঁওয়ের পাট ও আমন চাষিরা
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গত বছর ডুমুরিয়া উপজেলায় ৮৯৯ মেট্রিক টন পাট উৎপাদন হয়েছিল। ফলন হয়েছিল হেক্টরে ২ মেট্রিক টন। চলতি বছর হেক্টর প্রতি দুই দশমিক দুই মেট্রিক টন ফলন হয়েছে। প্রায় তিন হাজার পাট চাষি পাটের আবাদ করেছেন। গত বছর প্রতি মণ পাটের দাম ছিল এক হাজার ৮০০ টাকা থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু এ বছর শুরু থেকেই বাজারে পাট বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকায়। প্রতি বিঘায় কৃষক পাট বিক্রি করে লাভ পাচ্ছেন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে পাটখড়ির দাম যোগ করে বিঘা প্রতি লাভ হচ্ছে প্রায় ২০ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: পণ্য রপ্তানি শুরুর মাধ্যমে পাটখাত পুনরুজ্জীবিত হয়েছে: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী
খর্ণিয়ার আঙ্গারদহ এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসেন জানান, অনাবৃষ্টির কারণে খাল ও বিলে পানি না থাকায় সময়মত পাট জাগ দিতে না পারলেও ভালো ফলন ও বাজারে ভালো দামে পাট বিক্রি হচ্ছে। এতে তার মতো সকল চাষিরা অনেক খুশি।
মান পাল্টে ঢাকার বাতাস ‘মধ্যম’ পর্যায়ে
টানা চারদিন দূষিত থাকার পর বুধবার ঢাকার বাতাসের মান ‘মধ্যম’ অবস্থায় আছে। সকাল সোয় ৯টার দিকে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ৮৪ নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা ১৮তম স্থানে রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও পাকিস্তানের লাহোর, ভিয়েতনামের হ্যানয় ও ব্রাজিলের সাও পাওলো যথাক্রমে একিউআই ১৮১, ১৭৯, ১৬৩ ও ১৪৪ স্কোর নিয়ে প্রথম চারটি স্থান দখল করেছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির দিনেও ঢাকার বাতাস দূষিত
৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘স্বাভাবিক’ বলা হয়, তবে কিছু মানুষের জন্য 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়, বিশেষ করে যারা বায়ু দূষণের প্রতি অস্বাভাবিকভাবে সংবেদনশীল।
বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘খারাপ’বলে মনে করা হয়।
একইভাবে, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘খারাপ’ বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর’
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস দূষিত: একিউআই
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
বোরোতে ডিজেলে ভর্তুকি দেয়ার বিবেচনা করছে সরকার: কৃষিমন্ত্রী
বোরো মৌসুমে ডিজেলে কৃষকদের ভর্তুকি দেয়ার বিষয়টি সরকার গভীরভাবে বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না হলে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের দাম না কমলে ডিজেলেও আমাদের কিছু একটা করতে হবে, যাতে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমে। বর্তমানে ডিজেলের দাম অনেক বেশি। এতে বোরো মৌসুমে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। আমরা সারে যেমন ভর্তুকি দেই, তেমনি বোরোতে প্রয়োজনে ডিজেলে ভর্তুকি দেয়া হবে। সরকার গভীরভাবে এ বিষয়টি বিবেচনা করছে।’
আরও পড়ুন: সারের দাম বেশি নিলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টার সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে 'খাদ্য নিরাপত্তায় ভূগর্ভস্থ পানির টেকসই ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক গবেষণা প্রকল্পের উপর কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশন এর সহযোগিতায় ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং এ কর্মশালার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, অনাবৃষ্টির জন্য আমন রোপণ ব্যাহত হচ্ছে। এখন বৃষ্টির মৌসুম, সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী বৃষ্টি হওয়ার কথা, কিন্তু হচ্ছে না, এটাই আমাদের জন্যে কনসার্ন। প্রত্যেক দিনই আমরা ভাবছি বৃষ্টি হবে, কিন্তু হচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে হয়তো আমনের উৎপাদন কম হবে। অন্যদিকে আমনের টাকা দিয়ে কৃষকেরা অনেক সময় বোরোতে বিনিয়োগ করে। সার, ডিজেল কিনে ও সেচ খরচসহ অন্যান্য খরচ মেটায়। কাজেই, বৃষ্টি না হওয়ার জন্য আমন উৎপাদন ব্যাহত হলে কৃষকের ওপর এর প্রভাব পড়বে।
আরও পড়ুন: আমাদের প্রশাসনের ব্যর্থতা নিশ্চয়ই আছে: কৃষিমন্ত্রী
খাদ্য নিরাপত্তায় ‘টেকসই সেচ ব্যবস্থাপনা’ গড়ে তুলতে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা ভূগর্ভস্থ ও ভূউপরিস্থ পানির টেকসই ব্যবস্থাপনায় কাজ করে যাচ্ছি। একদিকে সেচকাজে ভূউপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে কাজ চলছে, অন্যদিকে বারিড পাইপ (ভূগর্ভস্থ পাইপ) ব্যবহার করে সেচদক্ষতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার নাদরিয়া সিম্পসন। গবেষণার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন সিএসআইআরও বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন আইডব্লিউএমের নির্বাহী পরিচালক আবু সালেহ খান। এসময় ইমেরিটাস অধ্যাপক সাত্তার মণ্ডল, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রশিদসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: জিয়া দেশকে পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিল: কৃষিমন্ত্রী
নকল সন্দেহে বগুড়ায় ৭ ট্রাক টিএসপি সার জব্দ
গুদামজাত করার আগে নকল সন্দেহে বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) সাত ট্রাক সার জব্দ করেছে বগুড়া বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) কর্তৃপক্ষ। ট্রাকগুলোতে ৯৮ হাজার কেজি সার রয়েছে বলে জানা গেছে।
বগুড়া বাফার গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল জানান, সোমবার কয়েক বস্তা সারের মান পরীক্ষার পর সন্দেহ হলে সার খালাস না করে সার ভর্তি ট্রাকগুলো জব্দ করা হয়।
বাফা জানায়, গত রবিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার টিএসপি সার কারখানা থেকে সাতটি ট্রাক বগুড়ায় পৌঁছায়। প্রতিটি ট্রাকে ২৮০ বস্তা সার রয়েছে। পরে সোমবার সকালে ২৪ বস্তা সার পরীক্ষা করে নকল ও ভেজাল বলে মনে হয় কর্তৃপক্ষ ট্রাকগুলো জব্দ করে।
আরও পড়ুন: ৯৯৯-এ কল, বিপুল পরিমাণ নকল সারসহ কারখানার সন্ধান
মোস্তফা কামাল বলেন, বিষয়টি চট্টগ্রাম টিএসপি সার কারখানা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। মঙ্গলবার সারগুলো ভালোভাবে পরীক্ষার জন্য একটি টিম আসবে। সারগুলোর পরিবহন করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএইচআর করপোরেশন।
ট্রাকচালক আব্দুল আউয়াল বলেন, শনিবার পতেঙ্গার টিএসপি সার কারখানা থেকে সাতটি ট্রাকে সার লোড করে রবিবার রাত ৩টার দিকে বগুড়া বাফার গুদামে পৌঁছাই। সকালে কর্মকর্তারা নকল সন্দেহে ট্রাকগুলো জব্দ করে।
আরও পড়ুন: ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বাড়ল: কৃষি মন্ত্রণালয়
দেশে কৃষকদের জন্য সার উৎপাদনের পাশাপাশি ঘাটতি পূরণে সার আমদানি করে থাকে বিসিআইসি। দেশের ২৪টি বাফার গুদামের একটি বগুড়ার পুরান বগুড়া তিনমাথা এলাকায় অবস্থিত। বিদেশ থেকে আমদানি করা সার এখানে সংরক্ষণ করা হয়। বগুড়ার সার আসে সাধারণত সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি, খুলনা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন নৌ-বন্দর থেকে। বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সার পরিবহন করা হয়। নিয়ম অনুয়ায়ী, পরিবহন ঠিকাদারের মাধ্যমে গুদামে আসা সার সম্পূর্ণ বুঝিয়ে দিলে গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাদের (ঠিকাদার) ম্যাটেরিয়াল রিসিভ রিপোর্ট দেন। সেই রিপোর্ট দেখিয়ে পরিবহন ঠিকাদাররা তাদের প্রাপ্ত টাকা বুঝে নেন। এরপর বগুড়া গুদাম থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সার সরবরাহ করা হয়।
বৃষ্টি অভাবে খুলনায় ফসল আবাদে নদীর পানি ব্যবহার
বর্ষার মৌসুমে এবার বৃষ্টির দেখা নেই। তাই খুলনায় বীজতলা কৃষি জমিতে নদীর পানি ব্যবহার করার কথা জানিয়েছেন খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই মাসের শেষ দিকে হতে থেমে থেমে মাঝারী বা ছিটে ফোটা বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম বা মাঝামাঝি সময়ে নিম্নচাপ হতে পারে, সেই সময়ে ভারী বৃষ্টি হতে পারে এমনটি আশা করছেন আবহাওয়া অফিস।
তবে ভরা মৌসুমে কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা না পেয়ে হতাশায় কৃষকসহ মৎস চাষিরা। সেই সঙ্গে গরমে ভোগান্তি পড়েছে সাধারণ মানুষ। তবে সব থেকে বেশি বিপাকে রয়েছে পাট চাষি, তারা পাট জাক দিতে পারছে না।
মৎস ঘেরে পানির অভাবে মাছ বড় হচ্ছে না। নিয়মিত খাবার পেলেও বর্ষার পানির সঙ্গে মাছের বড় হওয়ার একটি যোগ আছে বলে জানান মৎস চাষিরা।
তাছাড়া নলকূপ থেকে পানি উঠিয়ে মৎস খামারে দিতে হচ্ছে। এতে করে তাদের মাছ চাষের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিহীন, তীব্র তাপদাহে রোপা আমন ও সবজি নিয়ে বিপাকে নওগাঁর কৃষকরা
তাছাড়া জেলার আমন চাষসহ অন্যান্য ফসলি জমি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরা। তবে একেবারে আশা না ছেড়ে বৃষ্টি অপেক্ষার প্রহর গুণছেন কৃষকেরা।
এদিকে, কৃষি কর্মকর্তারা আশাঙ্কা করছেন যে এমন উষ্ণ আবহাওয়া যদি চলমান থাকে আর ছিটে ফোঁটা বৃষ্টি হয়। তাহলে কৃষি উৎপাদন মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর বৃষ্টির দেখা নেই এটা এখন বৈশ্বিক সমস্যা। জুলাই-আগস্ট মাসে মোট ৬শ’মিলিমিটারের মত বৃষ্টিপাত হয়েছে। যে কারণে আমরা ফসলের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কিত আছি। তবে এর বিকল্প হিসেবে আমরা নদীর পানি ব্যবহার করবো। ইতোমধ্যে আমরা পানি পরীক্ষা করেছি। খুলনা কয়রা ও দাকোপ উপজেলা ছাড়া অন্যান্য নদীর পানি ব্যবহার উপযোগী।
তিনি বলেন, এ অঞ্চলের নদীর পানি ২ ডিএস এর নিচে আছে তবে ৪ ডিএস ওপরে থাকলে অতিরিক্ত পানি লবণাক্ত থাকে। যে কারণে আমরা বিকল্প নদীর পানি ব্যবহার শুরু করেছি। লক্ষ্য হিসেবে পাঁচ হাজার হেক্টর বীজতলার ফসলী আবাদের জমিতে পানি দেয়া হবে। এর মধ্যে ১০৯ হেক্টর জমিতে নদীর পানি সুইচ গেটের মাধ্যমে খালে ও বিলে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এভাবে পানির সঙ্কট মোকাবিলা করতে হবে। তবে কয়রা ও দাকোপে খাল ও বিলের পানি ব্যবহার ছাড়া কোন উপায় দেখছি না। এছাড়া মাটির তলোদেশের পানি বেশি লবণাক্তের কারণে এই বিকল্প উপায় ব্যবহার করছি। তবে আমরা আশাবাদী লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবো।
আরও পড়ুন: বিজয়নগরে বছরে ৫০ কোটি টাকার ফল বিক্রি
এ ব্যাপারে খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের আঞ্চলিক আবহাওয়া কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ মাসে শেষের দিকে বৃষ্টির সম্ভবনা আছে। এছাড়া ছিটে ফোটা দুই এক পশলা বৃষ্টি হতে পারে। তবে আকাশ এখন মেঘমুক্ত। সেপ্টেম্বর মাসে নিম্নচাপ হলে মাঝারী বা ভারী বৃষ্টি হওয়ার আশাঙ্কা আছে। মূলত মৌসুমী বায়ু এখনও সক্রিয় নেই যে কারণে বৃষ্টি হচ্ছে না।
উপকূলীয় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে
উপকূলীয় জেলার বেশ কয়েকটি নিচু এলাকা ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার।
শনিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ু চাপের পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: উপকূলীয় ১৫ জেলার নিম্নাঞ্চল বন্যার ঝুঁকিতে
সমুদ্র বন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা, পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।