������������
কৃষিকে বাদ দিয়ে এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে মিশে আছে কৃষি। কৃষিকে বাদ দিয়ে এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। কৃষির উন্নয়ন দেশকে উন্নয়নশীল দেশে রুপান্তরিত করবে।
রবিবার বেলা ১১টায় নওগাঁর সাপাহার উপজেলার শিরন্টি ইউনিয়নের ফুটকইল থেকে খেড়ন্দা পর্যন্ত এইচবিবি রাস্তার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মাটি সোনার চেয়েও খাঁটি। এ দেশের মাটিতে যখন যেটা ফলানো হয় তখন সেটা হয়। আর এর কারিগর কৃষক ভাইয়েরা। এই জন্য সরকার কৃষিকে গুরুত্ব দিয়েছে। বিনামূল্যে প্রতিবছর সার, বীজসহ কৃষি প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে ভূমিকা রাখতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
সাধন চন্দ্র মজুমদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বা সামাজিক উন্নয়ন যে কোনো সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি অভূতপূর্ব। সামাজিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন, দারিদ্র্যতা হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি সব ক্ষেত্রই বিশ্বে বাংলাদেশ এক বিস্ময়ের নাম।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান হোসেন মন্ডল,উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ প্রশাসন অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রমজানে ১ কোটি পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার: খাদ্যমন্ত্রী
রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান
বসন্ত এলেই রক্তিম আভায় ফুলে ফুলে ভরে ওঠে দেশের সবচেয়ে বড় সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের শিমুল বাগান। শিমুল বাগানের এ সৌন্দর্য দেখতে ফাগুনের শুরুতেই ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা।
ঋতুরাজ মানে শুকনো ঝরা পাতার খেলা আর ফুটন্ত ফুলের মেলা। পঞ্জিকার পাতায় এখনো শীতের কয়েকটা দিন থাকলেও প্রকৃতি গাইছে অন্য সুর।
এছাড়া বসন্তের ফাগুনের রাঙা রঙে প্রকৃতি তার মনের মাধুরী মিশিয়ে শিমুল ফুলের লাল রঙে আপন মহিমায় সেজেছে শিমুল বাগান।
মাঘের শেষ দিকে ও ফাল্গুনের শুরুর দিকে ফুটতে থাকে শিমুল ফুল। এদিকে ফাগুনের রাঙা রঙে লাল হয়ে আছে বাগান।
যে দিকে চোখ যায় সে দিকেই লাল শিমুল ফুল। দেশের সবচেয়ে বড় এই শিমুল বাগান ইতোমধ্যে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশি পর্যটকদেরও নজর কেড়েছে।
বিশেষ করে বাঙালি প্রবাসীরা এই শিমুল বাগানের চিত্র দেখে মুগ্ধ হয়ে দেশে আসলেই ঘুরতে যাচ্ছেন শিমুল বাগানে।
এদিকে রাঙিয়ে তুলেছে শাখা-প্রশাখা। এছাড়া ফাগুনের হাতছানিতে রাঙা রঙে লাল হয়ে আছে বাগান।
ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, মাঝে সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ যাদুকাটা নদী আর এপারে শিমুল বাগান। সব মিলেমিশে গড়ে তুলেছে প্রকৃতির এক অনবদ্য কাব্য। লাল পাপড়ি মেলে থাকা রক্তিম আভায় যেন পর্যটকদের মনে আলাদাভাবে স্থান করে নিয়েছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মানিগাঁও এ ২০০০ সালে ১০০ বিঘা জমির মধ্যে তিন হাজার শিমুল গাছ লাগিয়ে এ বাগানটি গড়ে তুলেন বাধাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন।
বর্তমানে তার ছেলে-মেয়েরা এই বাগানটির দেখাশুনা করছেন।
দেশি বিদেশি পর্যটক মিলে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার লোকের সমাগম হয় বাগানে। জনপ্রতি ২০ টাকা করে টিকেট কেটে বাগানে প্রবেশ করতে হয়। দলে দলে পর্যটকরা আসছেন বসন্তের শিমুল রঙে মনকে রাঙিয়ে নিতে।
কেউ আসছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কেউবা আসছেন বন্ধু বান্ধব বা প্রিয় মানুষকে নিয়ে।
সাম্প্রতিক সময়ে এখানে নতুন করে আরও এক হাজার ৫০০ চারা রোপণ করেছেন তারা। এছাড়া সময়ের পরিক্রমায় এটি আজ দেশের সবচেয়ে বড় এবং দৃষ্টিনন্দন শিমুল বাগানে পরিণত হয়েছে।
বিশেষ করে ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবস ও বসন্ত উদযাপনের জন্য দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ুসহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
জলবায়ুসহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, জমি হ্রাস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভবিষ্যতে কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করতে হলে জলবায়ুসহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল ফসলের জাত ও আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি উদ্ভাবন করে কৃষকদের মাঝে তা দ্রুত ছড়িয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, একইসঙ্গে কৃষিতে রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্টারনেট অব থিংস, ড্রোন প্রভৃতির ব্যবহার এবং প্রিসিসন ও ভার্টিকাল এগ্রিকালচারে দক্ষতা বাড়াতে হবে। এছাড়া, দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের গ্রাজুয়েটদেরকে এসব বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে।
রবিবার সকালে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অষ্টম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আগামীতে টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কৃষি গ্র্যাজুয়েটদের প্রস্তুত করতে দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। সেজন্য, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের কারিকুলামকেও উন্নত ও আধুনিক করতে হবে।
এছাড়া নবীন কৃষিবিদদের সেভাবে যোগ্য করে গড়ে তুলতে শিক্ষকমণ্ডলীদের এগিয়ে আসতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের কৃষি ও কৃষকবান্ধবনীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে চাল, গম, ভুট্টা, ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। এখন অনেক ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় এক থেকে দশের মধ্যে আছে।
তিনি জানান, বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে চালের উৎপাদন চার কোটি চার লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে, যা সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করেছে।
আরও পড়ুন: জনগণই আওয়ামী লীগের পাহারাদার: কৃষিমন্ত্রী
এছাড়া বিগত ১৪ বছরে চালের উৎপাদন ২৯ শতাংশ, গম ৩৭ শতাংশ, ভুট্টা শতাংশ, আলু ১১০ শতাংশ, ডাল ৩২৮ শতাংশ, সবজি ৬৪৫ শতাংশ, পেঁয়াজ ৩৯৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কৃষি উৎপাদনে অর্জিত বিস্ময়কর সাফল্যের ফলেই দেশের মানুষ এখন পেট ভরে খেতে পায়। করোনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধসহ শত দুর্যোগের মাঝেও কেউ না খেয়ে থাকে না।
এছাড়া বিগত ১৪ বছরে কোন খাদ্য সংকট হয় নি।
ড. রাজ্জাক বলেন, কৃষিখাতে আজ যে অভাবনীয় সাফল্য দৃশ্যমান, এর পেছনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের গ্র্যাজুয়েটরা।
এর আগে কৃষিমন্ত্রী চ্যান্সেলরের পক্ষে সমাবর্তন শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন এবং সমাবর্তনের উদ্বোধন করেন।
সমাবর্তনে জুলাই ২০১৪ থেকে ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্নকারী ছয় হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
এদের মধ্যে ২২৪ জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপতি এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদের পক্ষে কৃষিমন্ত্রী এই সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন ও ডিগ্রি প্রদান করেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান।
আরও পড়ুন: কানাডা পটাশিয়াম সার বিক্রি অব্যাহত রাখবে: কৃষিমন্ত্রী
সার ও বীজের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
সার ও বীজের দাম বাড়বে না: কৃষিমন্ত্রী
কৃষি উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখা ও টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশে সার, বীজসহ কৃষি উপকরণের কোনরকম দাম বাড়ান হবে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পলিসি হলো যেকোন মূল্যে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা ও খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করা। সেজন্য, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার এই সময়ে যত কষ্টই হোক সরকার বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণের দাম বাড়াবে না। অন্যান্য খাতে যে পলিসিই নেয়া হোক না কেন, কৃষিখাতে বিশাল ভর্তুকি প্রদানসহ সকল সহযোগিতামূলক নীতি অব্যাহত থাকবে। কৃষি উৎপাদন টেকসই করতে যা যা করা দরকার, তা অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার অদূরে সাভারের ব্র্যাক সিডিএম মিলনায়তনে সার্কভুক্ত দেশসমূহে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন নেটওয়ার্ক (বায়েন) ও ভারতের পার্টিসিপেটরি রুরাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ সোসাইটি (প্রাডিস) যৌথভাবে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ খাদ্য মজুত আছে। দেশে দুর্ভিক্ষ হবে না, ইনশাল্লাহ এ গ্যারান্টি দিতে পারি।
ফসলের গবেষণা ও সম্প্রসারণের মধ্যে বিরাট গ্যাপ রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গবেষক/বিজ্ঞানীর উদ্ভাবিত জাত যেটি গবেষণা পর্যায়ে বিঘাতে ৮ মণ উৎপাদন হয়, সেটি সম্প্রসারণের পর কৃষক পর্যায়ে দেখা যায় উৎপাদন হয় বিঘাতে ৩-৪ মণ। এটি কেন হবে, এই বিশাল গ্যাপ কমিয়ে আনতে হবে।
আরও পড়ুন: উন্নত দেশগুলোর প্রতি খাদ্যকে যুদ্ধ ও অবরোধের বাইরে রাখার আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ফসলের উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি খুবই ধীরে সম্প্রসারণ বা কৃষকের নিকট পৌঁছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি ধান, সরিষাসহ অনেক ফসলের কতগুলো উন্নত উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছেন। এদের মধ্যে লবণসহিষ্ণু জাতও রয়েছে। কিন্তু এগুলো মাঠে কৃষকের নিকট যাচ্ছে খুবই দেরিতে। এতো দেরিতে মাঠে যাওয়ার কারণ কি, তা সম্প্রসারণকর্মীদের খুঁজে বের করতে হবে। সম্প্রসারণকর্মীদেরকে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রাডিসের সিনিয়র এডভাইজর ভিভি সাডামাতে, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি দানিয়েল গুস্তাফসন, বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন, বায়েনের সভাপতি হামিদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সেকান্দর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন ভূইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কৃষি সম্প্রসারণকর্মীদের তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের ৩৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেছেন।
আরও পড়ুন: সরিষা চাষে বিপ্লব ঘটছে, বছরে সাশ্রয় হবে ১০ হাজার কোটি টাকা: কৃষিমন্ত্রী
সুগারমিলের পতিত জমি চাষের আওতায় আনা হবে: কৃষিমন্ত্রী
বরগুনায় বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা
বরগুনায় বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। মৃদু শীতে বেড়েছে কৃষকদের কর্মব্যস্ততা। জমি তৈরি, হালচাষ, চারার বীজতলা থেকে উঠানো ইত্যাদি। এসব শেষে এবার চারা জমিতে রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বোরো ধান আবাদে তেমন সমস্যা হবে না বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার বেশিরভাগ ফসলি জমিতে কেউ কেউ ট্রাক্টর আবার কেউ কেউ পাওয়ার টিলার দিয়ে হাল চাষ করছেন। কেউ কেউ স্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছেন, আবার কেউ বা ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠাচ্ছেন। বেশকিছু জমিতে আবার অনেকে চারা রোপণ করেছেন।
আরও পড়ুন: ফটিকছড়িতে চাষ হচ্ছে বিশাল আকৃতির জাপানি মুলা
কৃষক বারেক মিয়া জানান, তিনি তিন একর জমিতে চারা রোপণ করেছেন। নিজেই ধানের চারা বীজতলা থেকে উঠিয়েছেন।
আরেক কৃষক আ. খালেক দুই একর জমিতে চারা রোপণ করেছেন। বীজতলা থেকে চারা উঠানোসহ তিনি শ্রমিকদের দিয়েছেন তিন হাজার হাজার টাকা।
উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের কৃষক কুদ্দুস আকন বলেন, আমরা পাঁচজন করে দলবদ্ধ হয়ে ভাটিয়ালি গান গাইতে গাইতে চারা রোপণ করি। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই একর জমিতে চারা রোপণ করতে পারি, এতে আমাদের ৪০০-৫০০ টাকার মতো ইনকাম করতে পারি। আবার অনেক দিন কাজ থাকেও না। সর্বশেষ মৌসুমে ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকরা বেশ লাভের মুখ দেখেছেন, সেজন্য এবার বোরো ধানের চাষাবাদ বেশি হবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বরগুনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, এবার তুলনামূলক বেশি জমিতে বোরো ধান চাষ করা হচ্ছে। এ বছর বরগুনা বোরো ধানের চাষাবাদ লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার হেক্টর। এখন পর্যন্ত ৫০০ হেক্টর রোপণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল চাষ
ফটিকছড়িতে চাষ হচ্ছে বিশাল আকৃতির জাপানি মুলা
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে হালদা নদীর চরের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে চাষ হয়েছে বড় বড় জাপানি মুলার। বিশাল আকৃতির এ মুলা দেখতে যেমন চমৎকার তেমনি খেতেও অন্যরকম স্বাদ।
এবার ফটিকছড়ি বারৈয়ারহাটের পশ্চিম পাশে হালদা নদীর চরে হাজার হাজার মুলা চাষ করে সফল হয়েছেন চাষি আব্দুর রহিম।
তার দাবি দেশের সবচেয়ে বড় মুলা উৎপাদিত হয় ফটিকছড়িতে।
ফটিকছড়ি মাইজভান্ডার দরবার শরীফের ওরশ উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় বিক্রি হচ্ছে এসব বিশাল আকৃতির জাপানি মুলা। হালদা নদীর কূল ঘেঁষেই বিস্তীর্ণ মাট জুড়ে মুলা চাষ হয়েছে। একেকটি মুলার ওজন ৪-১৫ কেজি এবং এসব মুলার মূল্য ৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় চিংড়ির চাহিদায় রদবদল, জনপ্রিয় হচ্ছে ভেনামি চিংড়ি
মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড় বিলুপ্তির পথে
মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড় ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। জ্বালানি সংকট, গাছির অভাব ও নির্বিচারে গাছ নিধনই এর মূল কারণ বলে জানা গেছে।
এক বেসরকারি পরিসংখ্যানে জানা যায়, ৯০’র দশকে মাদারীপুর জেলায় সাড়ে ৮ লাখ খেজুর গাছ ছিলো। তখন মৌসুমে ৭ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হতো।
এসময় খেজুরের রস ও গুড় তৈরির সঙ্গে প্রায় ১০ হাজার পরিবার জড়িত ছিলো। এখানকার খেজুরের গুড় ঢাকা চট্রগ্রামসহ সুদূর কলকাতা পর্যন্ত রপ্তানি হতো।
কালের বিবর্তনে মাদারীপুরের ঐতিহ্য খেজুর গুড়ের সুনাম ও খ্যাতি আজ বিলুপ্তির পথে এসে দাঁড়িয়েছে।
মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের লক্ষীগঞ্জ গ্রামের খেজুর গাছ কাটা গাছি জেলাল মৃধা (৪৫) ও হালিম মিয়ার (৬০) সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আগে জ্বালানি হিসেবে ধানের নাড়া জ্বালিয়ে রস থেকে গুড় তৈরি করা হতো। এখন নাড়া সংকটের কারণে রস থেকে গুড় বানানো যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, অভাবের কারণে অনেকে ইটভাটায় খেজুর গাছ বিক্রি করে দিচ্ছে। এছাড়া বর্ষা, বন্যা ও পোকার আক্রমনে প্রতিবছর অসংখ্য খেজুর গাছ মারা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল চাষ
ফরিদপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল চাষ
সূর্যমুখীর তেল অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় ফরিদপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সূর্যমুখী ফুল চাষ। অন্য ফসলের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় সূর্যমুখী আবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। এছাড়া বৈচিত্র্যময় কৃষির জেলা ফরিদপুরে প্রায় সবধরণের ফসলই উৎপন্ন হয়ে থাকে।
এদিকে গত কয়েক বছর ধরে এখানে বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ। এছাড়া ফরিদপুরের ৯টি উপজেলায় হচ্ছে এর আবাদ। আর স্বল্প খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে চাষবাদ।
ফরিদপুর বিএডিসির উৎপাদিত বীজ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। ফরিদপুর বিএডিসির উৎপাদিত বীজ স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
আরও পড়ুন: সূর্যমুখীর হাসিতে স্বপ্ন দেখছেন খুলনার কৃষকরা
এদিকে সূর্যমুখী ফুল চাষে সবধরনের সহযোগিতা করার কথা জানালেন বিএডিসি’র কর্মকর্তা।
ফরিদপুরের গঙ্গাবদ্দি এলাকার চাষী হারিজুর রহমান বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম, অধিক লাভ হওয়ার কারণে এই ফুলের চাষ করেছি।
আর ফুল দেখতে আসা দর্শনার্থীরা আগামীতে সূর্যমুখী ফুল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন জানান, নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সারিবদ্ধভাবে বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ও দু’বার সেচ দিতে হয় এ ফসলে। প্রতি একর জমিতে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর এক একর জমির উৎপাদিত বীজ থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব।
এছাড়া সূর্যমুখী গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
ফরিদপুর ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদন খামার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মাহমুদুল ইসলাম খান জিয়া জানান, দিন দিন চাষীরা সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদের দিকে ঝুকছে। এই তেলে কোনো কোলেস্টোরেল নেই, যে কারণে চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এটা অন্য ফসলের চেয়ে স্বল্প জীবনকাল ও লাভজনক। সে কারণেই সূর্যমুখী ফুল চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন।
বৈচিত্র্যময় কৃষির জেলা ফরিদপুর। এ জেলায় প্রায় সবধরণের ফসল উৎপন্ন হয়ে থাকে। সে কারণেই ফরিদপুরে শুরু হয়েছে অধিক পুষ্টিগুণসম্পন্ন সূর্যমুখী ফুলের চাষ।
সূর্যমুখীর তেল কোলেস্টেরলমুক্ত ও প্রচুর পরিমাণে প্রাণশক্তি থাকায় সূর্যমুখী তেল আমাদের শরীরের দুর্বলতা কমিয়ে কার্যক্ষমতা বাড়াতে অনন্য ভূমিকা রাখে।
যে কোনো তেলের চাইতে সূর্যমুখী তেল দশগুণ বেশী পুষ্টি সমৃদ্ধ। আর সে কারণেই ফরিদপুরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ
মাগুরায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের মুখে হাসি
সিরাজগঞ্জে চাষ হচ্ছে ওষুধি ও পুষ্টিগুণের বিদেশি ফসল চিয়া সিড
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ব্যাপকভাবে চাষ করা হচ্ছে মানবদেহের জন্য কার্যকরী মহৌষধ সুপার ফুড খ্যাত ওষুধি ও পুষ্টিগুণে ভরা ফসল মেক্সিকোর চিয়া সিড।
জানা গেছে, মানবদেহের বিভিন্ন রোগের জন্য মহৌষধ হিসেবে কাজ করায় অন্য ফসলের চেয়ে লাভজনক দানাদার এই ফসল চাষাবাদে অনেক কৃষক এখন ঝুঁকে পড়েছে। একজন ফার্মাসিস্ট এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন।
উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া সরাতলা গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে ফার্মাসিস্ট মো. গোলাম হোসেন এই চিয়া সীডের চাষাবাদ করছেন।
তিনি জানান, শখের বসে তিনি গত বছর ২৫ শতক জমিতে ম্যাস্টো কোম্পানির চিয়া সীডের চাষাবাদ শুরু করেন এবং প্রথম বছরেই প্রায় ১৩৫ কেজি বীজ পেয়েছিলেন। এ বীজ থেকে ৪০ কেজি তিনি চাষাবাদের জন্য রেখে বাকি বীজ বিক্রি করে দেন। কিন্তু রেখে দেয়া সেই বীজ চাষ করে ফলন ভালো না হওয়ায় চলতি বছর তিনি বিদেশ থেকে চাষাবাদের জন্য ৯০ কেজি মেক্সিক্যান হাইব্রিড চিয়া সিড বীজ আমদানি করেন। এই বীজ তিনি উল্লাপাড়া, ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ, রংপুর জেলা সদরে, শরিয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার কৃষকের মাধ্যমে ১৭০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করিয়েছেন। তিনি উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া সরাতলা, রতদিয়ার, হরিশপুর গ্রামের মাঠে এই চাষাবাদের উদ্যোক্তা গোলাম হোসেন ২১ বিঘা, সাবেক ইউপি সদস্য ঠান্ডু মিয়া তার ২৯ বিঘা, হেলাল উদ্দিন তিন বিঘা জমিতে চিয়া সিড চাষাবাদ করেছেন। ইতোমধ্যে এসব জমিতে চিয়া সিডের গাছগুলো বড় হয়ে প্রতিটি গাছে অসংখ্য ফুল ও ফল ধরেছে। কৃষি সংশ্লিষ্ট অনেকেই ধারণা করছেন, এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া চিয়া চাষের উপযোগী হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরিষা ফুলের হলুদ হাসিতে রঙিন যশোরে দিগন্তজোড়া মাঠ
তিনি আরও বলেন, এই বীজ এবার সিরাজগঞ্জ ছাড়াও বাইরের জেলার উল্লেখিত স্থানে চাষাবাদ করেছি। আশা করছি এবার ভালো ফলন পাওয়া যাবে। তবে এটা এখন অনেকটা পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। আগামীতে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান তিনি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরু অঞ্চলগুলিতে চিয়া সিডের ব্যাপক চাষাবাদ হয়ে থাকে। চিয়া সিডে ওমেগা-৩, ফাইবার, ম্যাংগানিজ, ফসফরাস, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেটসহ পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন-বি, থায়ামিন, নিয়াসিন, আয়রণ, দস্তা, ফ্যাটিক এসিড ও ম্যাগনেসিয়াম। বিভিন্ন ভাবে এ বীজ খেয়ে মানুষের শরীরের অনেক রোগ দূর হয়। প্রচার-প্রচারণার ফলে চাহিদা বৃদ্ধির কারণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বাজারে প্রকারভেদে ১৩শ’ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরে চিয়া সিড বিক্রি হচ্ছে। যা বিদেশ থেকে আমাদানি করা হচ্ছে। সম্ভাবনাময়ী এ চাষাবাদ দেশে ছড়িয়ে দেয়া গেলে আমদানি ব্যয় কমানোর পাশাপাশি কৃষকরা বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলা কৃষি কর্মকতা সুর্বণা ইয়াসমিন সুমি বলেন, উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নে প্রায় ৭০ হেক্টর জমিতে চিয়া সিড চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে এই চাষাবাদে সার্বক্ষণিক মনিটরিংসহ কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। এ চিয়া সিড বীজের দামও অনেক। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাঠে গাছের ফুল ও ফল এখন পর্যন্ত ভালোই দেখা যাচ্ছে। চিয়া সিড চাষাবাদে কৃষকরা অধিক লাভবান হওয়ার আশা করছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ সুরমায় সাম্মাম ফসল কর্তন কর্মসূচির উদ্বোধন
উন্নত দেশগুলোর প্রতি খাদ্যকে যুদ্ধ ও অবরোধের বাইরে রাখার আহ্বান কৃষিমন্ত্রীর
বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নত দেশগুলোকে দায়িত্বশীল ও আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, খাদ্য ও কৃষি উপকরণকে যুদ্ধ ও অবরোধের বাইরে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) জার্মানির বার্লিনে ‘১৫তম বার্লিন কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে’- মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি অব ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (বিএমইএল) আয়োজনে চার দিনব্যাপী (১৮-২১ জানুয়ারি) ১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারের (জিএফএফএ) শেষ দিনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশের কৃষিমন্ত্রী ও ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নির্দোষ ভুক্তভোগী বাংলাদেশ। এ যুদ্ধের ফলে সারের দাম চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, খাদ্যশস্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলেছে। এ নেতিবাচক প্রভাব নিরসনের জন্য আমি উন্নত বিশ্বকে নমনীয়, সহজ ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: নির্বাচন পর্যন্ত বিএনপি’র ‘আন্দোলন-আন্দোলন খেলা’ চলতে থাকবে: কৃষিমন্ত্রী
আগামীতে খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরে ড. রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার একটি উন্নত, টেকসই ও জলবায়ুসহনশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কাজ করছেন। যার মাধ্যমে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই হবে, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত হবে এবং কৃষকেরা উন্নত জীবন পাবেন। কিন্তু জমি হ্রাস, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, কোভিড-১৯ ও চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কপ২৬, কপ২৭ ও অন্যান্য বৈশ্বিক ফোরামে দেয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য উন্নত দেশগুলোকে আমি অনুরোধ করছি।
সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার ও বার্লিনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার মো. সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
১৫তম গ্লোবাল ফোরাম ফর ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার ও কৃষিমন্ত্রীদের সম্মেলনে জানানো হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অনুযায়ী বৈশ্বিক ক্ষুধা নিরসন (জিরো হাঙ্গার) করার কথা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ক্ষুধায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১ সালে ৭০ কোটি ২০ লাখ থেকে ৮২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ক্ষুধায় আক্রান্ত হয়েছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় চার কোটি ৬০ লাখ এবং ২০১৯ সালের তুলনায় ১৫ কোটি বেশি। বর্তমানে বিশ্ব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে খারাপ খাদ্য সংকট পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। প্রজাতি বিলুপ্তি, কোভিড ১৯, আর যুদ্ধ; খাদ্যসংকটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখে কীভাবে ক্রাইসিস-প্রুফ খাদ্য ব্যবস্থা, জলবায়ুসহনশীল খাদ্য ব্যবস্থা, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং টেকসই বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহযোগিতা বাড়ান যায়- এই চারটি বিষয়কে সম্মেলনে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। 'ফুড সিস্টেম ট্রান্সফর্মেশন: এ ওয়ার্ল্ডওয়াইড রেসপন্স টু মাল্টিপল ক্রাইসেস' শিরোনামে এ সম্মেলনে বিগত চার দিনে অংশগ্রহণকারী দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ও কৃষিমন্ত্রীরা আলোচনা করে একটি ‘যৌথ ইশতেহার’ (কমিউনিক) ঘোষণা করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কৃষি উন্নত ও আধুনিক হচ্ছে: বার্লিনে কৃষিমন্ত্রী
বার্লিনে জার্মান ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে কৃষিমন্ত্রীর বৈঠক