শিক্ষা
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল চেয়ে নোটিশ
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ‘ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল’ বাতিল ও সংশোধনপূর্বক নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করে মেডিকেল কলেজগুলোয় ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার ২৪৮ জন পরীক্ষার্থীর পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে পাঠানো এ নোটিশে বলা হয়, গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর প্রকাশিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী, একজন পরীক্ষার্থী কোনও মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তবে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭.৫ নম্বর কর্তন করা হবে। আবার কোনও পরীক্ষার্থী যদি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে।
আরও পড়ুন: রবিবারের এমবিবিএসের চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষা স্থগিত
কিন্তু প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এ নিয়মটি মানা হয়নি। যেসব পরীক্ষার্থীদের ৭.৫ নম্বর কর্তন করার কথা সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কর্তন করা হয়েছে। ফলে ওইসব ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ২.৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আবার প্রথমবার পরীক্ষায় যেখানে কোনও নম্বর কাটার কথা নয় সেখানে অনেক পরীক্ষার্থীর ৫ নম্বর কেটে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দু’টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল দু’টি করে। সেই সঙ্গে অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না। সংরক্ষিত জেলা ও উপজাতি কোটার আসন পূরণেও ব্যাপক অসঙ্গতি রয়েছে।
ঢাকা জেলা কোটায় আবেদনকারী পরীক্ষার্থীকে দেখানো হয়েছে মেহেরপুর জেলার পরীক্ষার্থী হিসেবে।
উপজাতি কোটায় সংরক্ষিত আসনে অসংখ্য সাধারণ ছাত্র ছাত্রীকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে রিট খারিজ
এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি রেখে মেধা তালিকা প্রণয়ন করার ফলে হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোয় ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার পথে। তাই প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করে এবং এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি সংশোধন করে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করা হলেও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি মেনে এমবিবিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে: মন্ত্রী
ত্রুটিপূর্ণ মেধাতালিকার ভিত্তিতেই মেডিকেল কলেজগুলোয় ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে আগামী ২২ মে থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্ততর।
নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা এবং ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকা বাতিল করে ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণ পূর্বক নতুন মেধা তালিকা প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে।
জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেলেন ৩ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ
তিনজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদকে পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
আরও পড়ুন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলছে ২৩ মে
নিয়োগপ্রাপ্ত জাতীয় অধ্যাপক তিনজন হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এমিরেটাস এবং সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দিন, ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বারডেম) সভাপতি ও প্রফেসর ডা. একে আজাদ খান এবং বাংলাদেশ গ্যাস্ট্রোএনটারোলজি সোসাইটি এবং গ্যাস্ট্রোলিভার ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ডা. মাহমুদ হাসান।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে ২৩ মে
বাংলাদেশ জাতীয় অধ্যাপক (নিয়োগ, শর্তাবলী ও সুবিধাদি) সিদ্ধান্তমালা ১৯৮১ অনুযায়ী, উক্ত তিনজন পাচঁ বছরের জন্য জাতীয় অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করবেন এবং সে অনুযায়ী অন্যান্য সুবিধা ও সম্মানি গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে দ্বিধা বিভক্ত অভিভাবকরা
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলছে ২৩ মে
বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমিতি (এইউবি) জানিয়েছে, আগামী ১৭ মে (সোমবার) থেকে সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হলগুলো খুলে দেয়া হবে এবং ২৩ মে (রবিবার) থেকে ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে। এইউবি কর্তৃপক্ষ জানায়, সরকারের পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা কাজ করে যাচ্ছে।
এইউবি সভাপতি এবং চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্যের সভাপতিত্বে বুধবার (৫ মে) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এই সংগঠনের এক ভার্চুয়াল সভার পরই এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
তিনি বলেন, সরকার যেহেতু পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত বদলায়নি, তাই আমরা যথাসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার সকল প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে ২৩ মে
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে দ্বিধা বিভক্ত অভিভাবকরা
তবে এর আগে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছিলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল খোলার আগে অবশ্যই শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তাদের টিকাদান কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় সমন্বিত ভর্তির ব্যাপারেও আলোচনা হয়। এ ব্যাপারে চুয়েট উপাচার্য জানান, প্রশ্ন তৈরি এবং ছাপানোর জন্য সময় প্রয়োজন, যা শেষ হতে ১৯ জুন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তাই ঈদের পর সকল সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ট্রাকের ধাক্কায় শাবি শিক্ষার্থী নিহত, বিক্ষোভ
সিলেট নগরীর সুবিদবাজার পয়েন্টে ট্রাকের ধাক্কায় বুধবার রাতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
নিহত মো. সাব্বির বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সাত্তার জানান, রাত ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক জব্দ ও চালককে আটক করে। একই সাথে লাশ উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: শাবিতে সিলেটের প্রথম ট্রান্সজেনিক গ্রিনহাউস উদ্বোধন
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরসাইকেলযোগে সাব্বির সুবিদবাজার পয়েন্টে আসামাত্র পেছন থেকে একটি ট্রাক তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে সাব্বির মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে নিচে পড়ে যান। মাথায় গুরুতর আঘাতের ফলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
এসময় স্থানীয়রা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। প্রায় আধাঘণ্টা অবরোধের ফলে সড়কের দুপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: শাবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে আওয়ামীপন্থীদের দ্বিমুখী লড়াই
সার্বিক বিষয়ে শাবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আবু হেনা পহিল জানান, বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ আমাকে মর্মাহত করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাব্বিরের পরিবারের পাশে থাকবে।
সাব্বিরের মর্মান্তিক এই মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাব্বির প্রথম বর্ষ রসায়নের ছাত্র ছিল। আমরা তার অকাল মৃত্যুতে গভীরভাবে মর্মাহত এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাই। দোষীদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: নিরাপত্তার দাবিতে শাবি সাংস্কৃতিক জোটের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম
এদিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার সংবাদে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা।
রাবিতে ছাত্রলীগ-শিক্ষক ধাক্কাধাক্কি, সিন্ডিকেট সভা স্থগিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রগতিশীল সমাজের ‘দুর্নীতিবিরোধী’ শিক্ষকদের বাধার মুখে সিন্ডিকেট সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান মেয়াদের শেষ পর্যায়ে অবৈধভাবে গণনিয়োগ দিতে পারেন, এ আশঙ্কায় সভা বন্ধ দাবি করে আসছিলেন দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা।
মঙ্গলবার সোয়া ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সভা বন্ধ করার দাবিতে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেন প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা।
আরও পড়ুন: রাবিতে ভর্তি পরীক্ষার জন্য তিন লাখ আবেদন জমা
তবে তাদের আগেই উপাচার্যের বাসভবনের গেটে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক সদস্যরা। তাদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি প্রত্যাশী। সকাল ১০টার দিকে আন্দোলকারী শিক্ষকরা উপাচার্যের বাসভবনে ঢুকতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতারা তাদের বাধা দেন। শিক্ষকরা জোর করে ঢুকতে চাইলে ছাত্রলীগের নেতারা ধাক্কা ও দেন। এসময় আকাশ নামে ছাত্রলীগের এক বহিরাগত কর্মী শিক্ষকদের গুলি করে হত্যার হুমকি দেন। আকাশের বাড়ি মেহেরচন্ডী এলাকায় বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, আগামী বৃহস্পতিবার মেয়াদ শেষ হচ্ছে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের। উপাচার্যের শেষ সময়ে মঙ্গলবার সকালে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়। সভায় অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়া হবে এ আশঙ্কা থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের প্রতিনিধি ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী বলেন, আমরা উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছি। সাক্ষাৎ না হওয়া পর্যন্ত যাব না। তারা ভাড়াটিয়া নিয়ে এসেছে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করতে।
তবে ছাত্রলীগের হুমকির বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এদিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম জানান, শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে আজকের সিন্ডিকেট সভা স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০১৯ সালের গবেষণায় শীর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
এর আগে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানসহ বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ-বাণিজ্য, আর্থিক লেনদেনসহ ২৫টি অনিয়মের অভিযোগ দেন দুর্নীতিবিরোধী’শিক্ষকরা। ইউজিসি এ পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি উপাচার্যের বিরুদ্ধে ১৩টি অভিযোগের প্রমাণও পায়। নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ায় গত বছরের ডিসেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে রাবিতে সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত রাখাসহ ১২টি নির্দেশনা দেয়া হয়। এরপর থেকে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন।
এদিকে, দুপুর ১২টায় শহীদুল্লাহ্ একাডেমিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্যের অপসারণ দাবি করেন শিক্ষকরা।
রাবি উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে ছাত্রলীগের অবস্থান
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কমিটির নেতা-কর্মীরা।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপাচার্য ভবনে ফাইনান্স কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
জানা যায়, সভা শুরুর আগেই সকাল সাড়ে ৮টায় ভবনের মূল ফটকে তালা লাগায় আন্দোলনকারীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী। এর ফলে বন্ধ রয়েছে ফাইনান্স কমিটির সভা।
আরও পড়ুন: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান ইউএনবিকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে গত বছর ডিসেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়েছিল। এতে তার দুর্নীতির সাথে সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।’
তিনি আরও বলেন, উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান তার মেয়াদের শেষ সময়ে এসে আজকের সভায় আরও বড় ধরনের অনিয়ম করবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। এজন্য আমরা মিটিং স্থগিতের দাবিতে অবস্থান নিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান জানান, রবিবার ফাইনান্স কমিটির সভা ছিল, কিন্তু আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে কমিটির কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১১ জানুয়ারি চাকরির দাবিতে উপাচার্য ভবনে তালা লাগিয়েছিল ছাত্রলীগের কর্মীরা।
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পুন:নির্ধারণ করা হয়েছে।
পুন:নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ক- ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৬ আগস্ট শুক্রবার, খ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ৭ আগস্ট শনিবার, গ- ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৩ আগস্ট শুক্রবার, ঘ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১৪ আগস্ট শনিবার এবং চ- ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান) ৩১ জুলাই শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। চ - ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (অংকন)-এর তারিখ যথাসময়ে জানিয়ে দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভর্তি কমিটির এক জরুরি ভার্চুয়াল সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ওয়েবসাইট ডাউন: ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন স্থগিত
ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, প্রক্টর এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ সংযুক্ত ছিলেন।
পুন:নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী সকল ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র আগামী ১০ জুলাই ২০২১ তারিখ হতে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত ডাউনলোড করা যাবে।
উল্লেখ্য, ভর্তি পরীক্ষার অন্যান্য নির্দেশনা ও শর্তাবলী অপরিবর্তিত থাকবে।
বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা: ৩ মে পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা বাড়ল
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ২০২০-২১ স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদনের শেষ সময়সীমা ২৪ এপ্রিলের পরিবর্তে ৩ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
এখন, প্রার্থীরা বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার জন্য ৩ মে বেলা ৩টা পর্যন্ত আবেদন জমা দিতে পারবেন।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়ির কাজ স্থগিত
শনিবার ভর্তি কমিটির জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কমিটির চেয়ারম্যান এবং আর্কিটেকচার অ্যান্ড প্ল্যানিং ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক ড.খন্দকার সাব্বির আহমেদ ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে, বুয়েট জানায়, ভর্তি প্রার্থীদের প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষার জন্য বসতে হবে। এরপর সেখান থেকে নির্বাচিত প্রার্থীরা ১০ জুন চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য মনোনীত হবেন।
আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে হলে ফিরতে চায় খুবি শিক্ষার্থীরা
৩১ মে এবং ১ জুন অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যদের তালিকা প্রকাশিত হবে ৫ মে। চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য ৫ জুন একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়ির কাজ স্থগিত
সরকার দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি অবনতির কথা মাথায় রেখে দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল স্কুলগুলোতে ষষ্ঠ হতে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ির কাজ দেয়া স্থগিত করেছে।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) মাধ্যামিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বাড়ির কাজ দেয়ার ওপর স্কুলগুলোকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরবর্তী নির্দেশের আগ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
করোনা মহামারির কারণে প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর এবছর ৩০ মার্চ হতে স্কুল এবং কলেজগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিল সরকার। কিন্তু আবারও করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জানানো এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে সরকার।
পরবর্তীতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ২৫ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আগামী ঈদুল ফিতরের ছুটি পর্যন্ত সারাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
ইউজিসির নির্দেশনা
এদিকে গতবছরের ৭ মে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম, ক্লাস পরিচালনা, পরীক্ষা গ্রহণ, নম্বর ব্যবস্থাপনা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি সম্পর্কে নির্দেশনা জারি করে।
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যমতে, শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোন আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ৮৮ জন এবং নতুন করে শনাক্ত হয় ৩ হাজার ৬২৯ জন। বর্তমানে বাংলাদেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০ হাজার ৮৬৯ জনে।
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে হলে ফিরতে চায় খুবি শিক্ষার্থীরা
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে হলে ফিরতে চায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সকল শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সসহ সব বর্ষের চলমান ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনের পর চলমান পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের দাবিতে ‘একাত্মতা’: খুবির এক শিক্ষক বরখাস্ত ও দুজন অপসারণ
করোনাকালীন সময়ে সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে গত বছরের গত জুলাই থেকে অনলাইনে ক্লাস নেয়া শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহাদ বলেন, আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রাণের ক্যাম্পাসে ফিরতে চাই। এছাড়া করোনার টিকা যেহেতু চল্লিশ বছরের নিচে কেউ নিতে পারবে না বলে নীতিমালা করেছে সরকার সেই ক্ষেত্রে আমাদের বিকল্প কোন ব্যবস্থা ও করতে হবে।প্রয়োজনে সকল শিক্ষার্থীরা করোনা টিকা নিব। তাছাড়া করোনা সঙ্কটের পর দীর্ঘদিন পড়াশুনার যে শূন্যতা রয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে চাই।
আরও পড়ুন: গলায় ফাঁস দিয়ে খুবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
আরেক শিক্ষার্থী আশিক বলেন, আর মাত্র একটা পরীক্ষা হলে আমাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত। কিন্তু সেই পরীক্ষাও স্থগিত রেখেছে। এতে করে আমাদের পড়াশানার যে উৎসাহ বা যে ধারাবাহিকতা রয়েছে তা হারিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া আমাদের মোট ৫টি আবাসিক হল রয়েছে। যার মধ্যে ছাত্রদের তিনটি এবং ছাত্রীদের জন্য দুটি। এই আবাসিক হলে প্রায় ৫ হাজার আবাসিক শিক্ষার্থীরা আছে। তবে এই করোনা সঙ্কটের পর থেকে সব আবাসিক হলগুলো বন্ধ রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে এখন তারা বাহিরে মেসে থাকছে। এতে করে তাদের নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে ও মাসিক অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের করোনা টিকা দিতে চায়, আমরা অবশ্যই নিব। কিন্তু দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে প্রবেশ করতে চাই।
আরও পড়ুন: আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোসাম্মাদ হোসনে আরা বলেন, সরকারিভাবে এখনও আবাসিক হল খোলার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তাছাড়া যেহেতু শিক্ষার্থীদের বয়সের একটি সীমা রেখা রয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দ্রুত একটি ব্যবস্থা নিবে। যেন শিক্ষার্থীরা দ্রুত আবাসিক হলে প্রবেশ করতে পারে।