প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল বিশ্বব্যাংক: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাংক বুঝতে পেরেছে যে তারা পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল।
বুধবার জাতীয় সংসদে তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
ঢাকা থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক বুঝতে পেরেছে যে তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে তার সাম্প্রতিক সফর প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে এক আলোচনায় তিনি আবারও বিশ্বব্যাংকের উদ্দেশ্যমূলকভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনার বিষয়ে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমার বক্তব্যে আমি দৃঢ়ভাবে উল্লেখ করেছি যে, কখনই এমন কোনো অসৎ উদ্দেশ্যকে পৃষ্ঠপোষকতা দেবো না, যা বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করবে।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে বাইরের শক্তি ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে জানান, দেশে বর্তমানে (মে মাস পর্যন্ত) মজুদকৃত খাদ্যশস্যের পরিমাণ ১৬ লাখ ২৭ হাজার টন।
তিনি বলেন, ‘মোট খাদ্যশস্যের মধ্যে চালের পরিমাণ ১২ দশমিক ২৫ লাখ টন, গম ৩ দশমিক ৯৬ লাখ টন এবং ধান ৯ হাজার টন।’
সংসদ নেতা হাসিনা বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে খাদ্য মজুদ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ৪ লাখ টন চাল ও ১২ লাখ ৫০ হাজার টন চালসহ মোট ১৫ লাখ ১০ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুদ করা হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ টন দেশীয় গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে সর্বোচ্চ খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চলতি অর্থ বছরে এ পর্যন্ত (২৩ মে, ২০২৩ পর্যন্ত) ৬ দশমকি ৩৪ লাখ টন চাল ও ৬ দশমিক ৮০ লাখ টন গম আমদানি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আলী আজমের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের নতুন নতুন এলাকায় ‘জিওলজিক্যাল সার্ভে অ্যান্ড সিসমিক সার্ভে’ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির এমপি মশিউর রহমান রাঙ্গার এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নীত হওয়ার ফলে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর ভারতে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে না।
আরও পড়ুন: সংসদে দেশের সবচেয়ে বড় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ভারতে পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি বিবেচনায় নিয়ে, ভারতের সঙ্গে ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি (সিইপিএ) কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আশা করছেন, ‘এটি এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। সিইপিএ সই হলে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ১৯০ শতাংশ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এটি জিডিপির ১ দশমিক ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ১৭৪টি দেশে ১ কোটি ২০ লাখ প্রবাসী কর্মরত আছেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় সংসদে বিদায়ী অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাস
১০-১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের সমস্যা শেষ হবে: প্রধানমন্ত্রী
চলমান বিদ্যুত সংকট নিরসনে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে আরও বিদ্যুৎ যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা লোডশেডিং করতে বাধ্য হয়েছি….মানুষের দুর্ভোগ আমি উপলব্ধি করতে পারি। আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত যুক্ত হবে। এরপর ১০-১৫ দিনের মধ্যে আরও বিদ্যুত যোগ হবে। তাহলে আর কোনো কষ্ট থাকবে না।’
বুধবার ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এবার জনগণ অস্বাভাবিক উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করছে। ‘আমরা ভাবতে পারি না যে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রিতে উঠবে।’
তিনি বলেন, বৃষ্টির অভাবে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। ‘আমরা বারবার মিটিংয়ে বসে উপায় খুঁজে বের করছি এবং এই দুর্ভোগ কমানোর চেষ্টা করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একা এই সমস্যার মুখোমুখি নয়, বৈশ্বিক সমস্যার কারণে এটা ঘটছে।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে বাইরের শক্তি ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে: প্রধানমন্ত্রী
নানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে আগামী নির্বাচন একটা চ্যালেঞ্জ: আ.লীগ নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি শাসনামলের বিচারহীনতা থেকে আ. লীগ দেশকে মুক্ত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপিকে বাইরের শক্তি ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো বহিরাগত শক্তিই বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং তারা দলকে তার সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে।
বাংলাদেশের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির ঘোষণার পর বিএনপির উত্তেজনার একটি সমালোচনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা মনে করে যে কেউ, অন্য কোথাও থেকে এসে তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে এজন্য তারা এজন্য আনন্দিত, এমনটা কেউ করবে না। এটি (তাদের) ব্যবহার করবে, কিন্তু তাদের ক্ষমতা দেবে না।’
বুধবার ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষা করেছে এবং দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করেছে।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: বিএনপি শাসনামলের বিচারহীনতা থেকে আ. লীগ দেশকে মুক্ত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আজ আন্দোলন-সংগ্রাম হবে এবং আমরা ক্ষমতাচ্যুত হব। এক দৃষ্টিকোণ থেকে এটা ভালো যে তারা (বিএনপি) যদি অগ্নিসংযোগ সহিংসতা অবলম্বন করে এবং জনগণকে হত্যা করে তবে তারা মার্কিন ভিসা পাবে না।’
তিনি বলেন, যে শক্তির তালে বিএনপি নাচে তারা ধ্বংস করবে। ‘আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের ভাবার কিছু নেই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতোমধ্যে (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে) বলেছেন বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে। ‘তারা যে আন্দোলন করতে চায় তাই করুক।আমরা কিছু বলব না।’
তিনি অবশ্য কর্তৃপক্ষকে তাদের চোখ খোলা এবং ক্যামেরা সর্বদা চালু রাখতে বলেছেন যাতে বিএনপি ২০১৩,২০১৪ এবং ২০১৫ সালের মতো অগ্নিসংযোগ সহিংসতা, মানুষ পুড়িয়ে মারা এবং মানুষ হত্যার পুনরাবৃত্তি করতে না পারে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে গাছ লাগান: শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) উস্কানি দিয়ে ছবিগুলো দেশের বাইরে পাঠাতে পারে। তারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে এই দেশ আমাদের। আমরা কাউকে এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। যতই স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ আসুক না কেন, বাঙালিরা এর কাছে মাথা নত করে না।’
তার দল জনগণের ভোটাধিকার রক্ষা করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরাই এদেশে গণতন্ত্র এনেছি, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। যেহেতু গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রয়েছে, বাংলাদেশ আজ অগ্রগতি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নতির সাক্ষী হয়েছে।’
আলোচনায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান ও সিমিন হোসেন রিমি প্রমুখ।
১৯৬৬ সালের ৭ জুন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বাঙালিদের ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবির ভিত্তিতে পাকিস্তানিদের অপশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন।
আরও পড়ুন: নানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে আগামী নির্বাচন একটা চ্যালেঞ্জ: আ.লীগ নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
নানামুখী ষড়যন্ত্রের কারণে আগামী নির্বাচন একটা চ্যালেঞ্জ: আ.লীগ নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার বলেছেন, নির্বাচনের আগে নানামুখী ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে আগামী নির্বাচনটা হবে একটা চ্যালেঞ্জ।
প্রধানমন্ত্রী সোমবার (৫ জুন) তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: টোকিওতে জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, বাংলাদেশে চলতি বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী বছরের জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, দেশটির প্রধান বিরোধী দল বিএনপি, অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রশাসনের পক্ষে অবস্থান না নিলে নির্বাচন বয়কট করার অঙ্গীকার করেছে।
তবে সরকার এ দাবিকে অসাংবিধানিক বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যখনই দেশের মানুষের জীবনযাত্রার কিছুটা উন্নতি হয়, তখনই দেশে কিছু ‘কুলাঙ্গার’ আছে, যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলে এবং সর্বত্র মিথ্যাচার করে।
তিনি বলেন, কিছু লোক আন্তর্জাতিক অনুদান পাওয়ার জন্য বিদেশিদের সামনে বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা গল্প তুলে ধরে।
এসময় সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘যারা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাসই করে নাই, যারা গণহত্যা চালিয়েছে, লুটপাট করেছে, নারী ধর্ষণ, নির্যাতন করেছে তারা আছে, তাদের আওলাদ আছে তারা সারাক্ষণ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেই যাচ্ছে।’
ভোট কারচুপি বিএনপির অভ্যাস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে কারচুপি করা বিএনপির অভ্যাস। ভোট চুরি করা এটাই তাদের রেকর্ড। গণতন্ত্রহরণ করা এটাই তাদের রেকর্ড। তো ওদের মুখে এখন আবার আমরা গণতন্ত্র শুনি।”
তিনি বলেন, ‘যারা মিলিটারি ডিকটেটরের হাতে তৈরি দল তাদের কাছে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। তাদের কাছে ভোটের কথা শুনতে হয়। তো চুরি করা সবাই যাদের অভ্যস, তো চোরদের কাছে আমরা বাংলাদেশের জনগণ কি শুনবে, কি দেখবে।’
আ.লীগ সভানেত্রী তার দলের সদস্যদের দলকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আমাদের দল যথেষ্ট শক্তিশালী। আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে সংগঠনটি আরও শক্তিশালী হয়।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর তার দল টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকায় এবং দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার কারণে এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশকে বদলে দিতে চেয়েছিলাম। আজ আমরা সফলভাবে পরিবর্তন করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো- গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যের হার কমেছে। ঢাকা শহরে দারিদ্র্যের হার বেশি হলেও গ্রামাঞ্চলে কম। কেউ অতীতে এটি ভাবতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার রক্ষা করেছে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম, পরিবহন খরচ, গ্যাস, জ্বালানি ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বৈদেশিক ঋণের সুদের হার বাড়ানো হয়েছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তবে, এখনও একটি মজুদ রয়েছে যা পাঁচ মাসের জন্য খাদ্য সংগ্রহের জন্য যথেষ্ট।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় চাহিদা মেটাতে এবং রপ্তানি করার জন্য দেশে এক টুকরো জমিও অনাবাদি না রেখে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বলেন।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে এবং বাংলাদেশেও খাদ্যের দাম বেড়েছে। প্রকৃতপক্ষে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে জনগণ ভুগছে। কিন্তু পণ্য পাওয়া যাচ্ছে (বাজারে) এবং কোনো জিনিসেরই অভাব নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এবারও ধান ও অন্যান্য ফসলের ভালো ফলন হয়েছে।
তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়লেও সবজি, মাছ-মাংস সবকিছুই উৎপাদিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি তার সরকারের রেকর্ড সবচেয়ে বড় জাতীয় বাজেট হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এত বড় বাজেট অতীতে কেউ দিতে পারেনি।
এছাড়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই কঠিন সময়ে সরকার এমন বাজেট দিতে পেরেছে।
তিনি বলেন, বাজেটে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা এবং ভাতার আকার উভয়ই বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার একটি কার্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা করেছে যাতে নিম্নআয়ের লোকেরা তাদের ভোগান্তি লাঘব করতে ভর্তুকি মূল্যে চাল, ডাল ও ভোজ্যতেলসহ কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারে।
আরও পড়ুন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সুনাকের সঙ্গে শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
জলবায়ু পরিবর্তন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে গাছ লাগান: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে বৃক্ষরোপণের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে পরিবেশ বাঁচানোর জন্য আহ্বান জানাতে চাই, কারণ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা আমাদের কর্তব্য।’
সোমবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ উপলক্ষে গণভবন প্রাঙ্গণে তিনটি চারা রোপনের পর তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তিনি পরিবেশ মেলা-২০২৩, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং বৃক্ষমেলা- ২০২৩ -এরও উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, ‘আজ যেহেতু বিশ্ব পরিবেশ দিবস, তাই গাছ লাগিয়েছি। আমি আশা করি বাংলাদেশের সকল (জনগণ) এটি অনুসরণ করবে (গাছ লাগানো)।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আরও সুন্দর ও উন্নত করতে তারা ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ যেন কোনো ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। তাই, আমি সবাইকে গাছ লাগাতে বলি।’
বিশ্বব্যাপী পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে ফল, শাকসবজি এবং অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রতিটি খালি জায়গায় গাছ লাগাতে এবং প্রতিটি অঞ্চলকে উৎপাদনের আওতায় আনতে তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপি শাসনামলের বিচারহীনতা থেকে আ. লীগ দেশকে মুক্ত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
বৈশ্বিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অনেক উন্নত দেশও লড়াই করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার দেশের জনগণকে রক্ষা করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রত্যেক নাগরিককে তিনটি গাছ লাগাতে অনুরোধ করতে চাই এবং সম্ভব না হলে অন্তত একটি গাছ লাগান।’
তিনি শিক্ষার্থীদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে গাছ লাগাতে বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার দল-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৮৪ সালে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ১৯৮৫ সালে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করে। বাংলাদেশ কৃষক লীগও এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, আ.লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে অন্তত তিনটি কাঠ, ফল ও ভেষজ গাছ লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তার দল বিগত বছরের মতো এবারও আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরু করবে।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ও পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন শেরে বাংলা নগরে ৫ থেকে ১১ জুন পরিবেশ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বৃক্ষমেলা ২০২৩ ঈদুল আজহার কারণে ৪ দিনের বিরতি রেখে ৫ জুন থেকে ২৬ জুন এবং ১ জুলাই থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সারাবিশ্বে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধান’- থিম নিয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ পালিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি শাসনামলের বিচারহীনতা থেকে আ. লীগ দেশকে মুক্ত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির শাসনামলে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিল তার অবসান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত নেতারা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর ঘোষিত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিএনপি জোরপূর্বক গুম, হত্যা ও অনাচারের সংস্কৃতি চালু করেছিল।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর বিচার চাওয়ার ও পাওয়ার অধিকার ছিল না। ‘এটি ছিল মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আজ আমরা ন্যায়বিচার না পাওয়ার ঘটনা থেকে দেশকে মুক্ত করতে পেরেছি। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
আরও পড়ুন: অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করেছে, যাতে মানুষ ভোগান্তির সম্মুখীন না হয়ে স্বল্প সময়ে ন্যায়বিচার পেতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার করোনা মহামারির সময় ভার্চুয়ালি এটা (বিচার কার্যক্রম) করেছে, যাতে মানুষ ঘরে বসে স্বল্প সময়ে ন্যায়বিচার পেতে পারে।
চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে বিদ্যুতের কারণে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে গত সাড়ে ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার কারণে বাংলাদেশ চিত্তাকর্ষক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নিবেদিতপ্রাণ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
শান্তি বিঘ্নিত করতে অশুভ শক্তি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে: প্রধানমন্ত্রী
অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
বর্তমান অস্থির বিশ্ব পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশংকা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘...পৃথিবীর এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’
রবিবার সংসদে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য আফসারুল আমিনের প্রতি উত্থাপিত শোক প্রস্তাবে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, খাদ্য ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি, পরিচালন ও পরিবহন ব্যয় এবং বিদ্যুতের সংকট বিশ্বে সবার জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে।
সংসদ নেতা বলেন, সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের সংকট চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন কেনা খুব কঠিন। কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার কাতার ও ওমানের সঙ্গে জ্বালানি ক্রয়ের চুক্তি করেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার জলবিদ্যুৎ আমদানির ব্যবস্থাও নিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে কয়লা কেনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যাতে আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে যাওয়ায় স্বাধীনতার সুফল জনগণের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানি তেলের সংকট যার জন্য শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে জ্বালানির ঘাটতি রয়েছে। আছে লোডশেডিং বা বিদ্যুতের সীমিত ব্যবহার। খাবার থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বেড়েছে। এমনকি উন্নত দেশগুলোতেও অনেক মানুষ তাদের চাকরি হারাচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
তিনি আরও বলেন,‘আমি জানি না আগে কখনো এমন হয়েছে কিনা। সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।’
শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: শান্তি বিঘ্নিত করতে অশুভ শক্তি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে: প্রধানমন্ত্রী
এসময় তিনি বলেন, ‘আমাদেরও খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে। পৃথিবীর এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারছে না। তবে আমাদের দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সবকিছু করছি।’
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির ফলে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট, মূল্যস্ফীতি, পরিচালন ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি এবং তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ প্রতিটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের সেরাটা করছি।
আফসারুল আমিনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত।
প্রতিটি সংগ্রামে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তিনি একজন নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। দলের প্রতি তার নিষ্ঠা ও সততা ছিল অতুলনীয়।
তিনি মন্ত্রী হিসেবেও দারুণ সাফল্য দেখিয়েছেন।
শোক প্রস্তাবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী, ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ওয়াসেকা আয়েশা খান, মোতাহার হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, মুজিবুল হক চুন্নু ও মসিউর রহমান রাঙ্গা।
পরে, হাউসে সর্বসম্মতভাবে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি কামনা প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা-চিলাহাটি রুটে আন্তঃনগর ট্রেন 'চিলাহাটি এক্সপ্রেস' উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ জোরদার ও ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রবিবার ঢাকা-চিলাহাটি-ঢাকা রুটে 'চিলাহাটি এক্সপ্রেস' নামে একটি নতুন আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশনে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে চিলাহাটি এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন।
৮০০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চিলাহাটি এক্সপ্রেস সপ্তাহে ছয় দিন ঢাকা-চিলাহাটি-ঢাকা রুটে চলাচল করবে।
আরও পড়ুন: চিলাহাটি-মঙ্গলা রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে জুনে: রেলমন্ত্রী
বর্তমানে ঢাকা-চিলাহাটি রুটে মালবাহী ট্রেন ও আন্তঃসীমান্ত ট্রেন 'মিতালী এক্সপ্রেস' চলাচল করে।
নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং গণভবন থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন রেলওয়ে সচিব মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর।
আরও পড়ুন: ৫৬ বছর পর চালু হলো চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ
মুক্তিযুদ্ধে ফারুকের ভূমিকা অবিস্মরণীয়: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান, যিনি ফারুক নামে পরিচিত, তার ভূমিকা অবিস্মরণীয় কারণ তিনি প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে অসামান্য দৃঢ়তার সঙ্গে অবদান রেখেছিলেন।
সংসদে তিনি বলেন, ‘ফারুক একজন মুক্তিযোদ্ধা। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের পর থেকেই তিনি ছাত্রলীগের একজন প্রাণবন্ত কর্মী ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে তিনি অসামান্য সাহসিকতার সঙ্গে অবদান রেখেছিলেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা কখনোই ভোলার নয়।’
বুধবার ফারুকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে সংসদে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ফারুক শুধু একজন রাজনীতিবিদই ছিলেন না, তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও অবদান রেখেছিলেন। তার মৃত্যু আমাদের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মীরা আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়েছেন এবং নেতাকর্মীদের সাহস জুগিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ঘটনার পর যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হচ্ছিল এবং কেউ তার নাম উচ্চারণ করার সাহস করেনি, তখন সংস্কৃতিকর্মীরা এগিয়ে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (ফারুক) বঙ্গবন্ধুর নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠন এবং দেশাত্মবোধক গানকে সামনে নিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন। সুতরাং, তিনি এই দেশের জন্য একটি অবদান রেখেছেন।’
এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনের (বাজেট অধিবেশন) শুরুতে সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এ নিয়ে আলোচনা শেষে বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
আলোচনায় যোগ দেন- সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী (শেরপুর-২), আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু (ঝালোকাঠি-২), তোফায়েল আহমেদ (ভোলা-১), শেখ ফজলুল করিম সেলিম (গোপালগঞ্জ-২), আসাদুজ্জামান নূর (নীলফামারী-২), মেহের আফরোজ (গাজীপুর-৫) ও হাবিব হাসান (ঢাকা-১৮), বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ (ঢাকা-৬) ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
আকবর হোসেন পাঠান (ঢাকা-১৭), যিনি গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান।
এছাড়া সংসদ সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির সংসদ সদস্য কবির হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্য, প্রখ্যাত লেখক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকিয়া আফজাল রহমান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির মা রহিমা ওয়াদুদ ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় মোখায় হতাহত এবং দেশ-বিদেশে দুর্ঘটনায় সংসদ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
এক মিনিট নীরবতা পালন ও মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাফিজ রুহুল আমিন মাদানী (ময়মনসিংহ-৭)।
প্রথা অনুযায়ী, বর্তমান সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সংসদের দিনের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
আরও পড়ুন: আইসিটি, অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডেনের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: আরও ৩ দিনের রিমান্ডে বিএনপি নেতা চাঁদ
আইসিটি, অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডেনের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডিশ বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিশ্বখ্যাত পোশাক কোম্পানি এইচঅ্যান্ডএম-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও প্রেসিডেন্ট হেলেনা হেলমারসনের নেতৃত্বে একটি সুইডিশ প্রতিনিধিদল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে এবং এইচঅ্যান্ডএম-এর চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার অ্যাডাম কার্লসনও প্রতিনিধিদলে ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাক্ষাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক নীতি ও লক্ষ্যযুক্ত পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী কাতার: দেশটির প্রধানমন্ত্রী
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে রপ্তানি ঝুড়ি সম্প্রসারণ করতে চায়।
সাক্ষাৎকালে হেলেনা হেলমারসন গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইডেনের বিশেষ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা এগিয়ে নিতে চায়।
এইচঅ্যান্ডএম-এর সিইও ও প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং দেশে কোভিড-১৯ মহামারি সফলভাবে মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী সুইডিশ কোম্পানির প্রশংসা করেন, যেহেতু তারা মহামারির সময়েও তাদের অর্ডার বাতিল করেনি।
হেলেনা হেলমারসন জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার নিজস্ব অর্থায়নে প্রশমন কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন এবং এ বিষয়ে কাজ করছে।
শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতায় তার সরকারের অর্জনও তুলে ধরেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী