রবিউল ইসলাম
পাওনা টাকার জন্য পিটিয়ে কুকুরের সঙ্গে বেঁধে রাখা হলো রিকশাচালককে
সাভারে পাওনা টাকার জন্য রবিউল ইসলাম নামে এক রিকশাচালককে মারধরের পর কুকুরের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার সাভারের তেঁতুলঝড়া ইউনিয়নের ভরালি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে কয়েক ঘণ্টা পর পুলিশ নির্যাতনের শিকার ওই রিকশাচালককে উদ্ধার করে। তবে ব্যবসায়ী পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ: পিপির আইন পেশা পরিচালনার উপর এক মাসের নিষেধাজ্ঞা
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রবিউল ইসলাম স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে তেঁতুলঝোড়ার ঋষিপাড়া এলাকায় বসবাস করে এবং রাজধানীতে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এক সময় তিনি রিকশায় করে ভরালি এলাকার ভাঙ্গারির ব্যবসায়ী মামুন মিয়ার মালামাল আনা-নেওয়া করতেন। ওই সময় মামুন মিয়ার কাছ থেকে রবিউল ৮০০ টাকা ধার নিয়েছিলেন। যা পরিশোধ না করেই জীবিকার তাগিদে তিনি রাজধানীতে চলে যান। সেই টাকার জন্যই মামুন রবিউলকে ধরে কুকুরের সঙ্গে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখেন।
রবিউল ইসলাম বলেন, আমি মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে তেঁতুলঝোড়ার কাঁঠালতলা এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলাম। মামুন সেখান থেকে আমারে ভরালি এলাকায় তার দোকানে নিয়ে যায়। এরপর মাইরধর কইরা আমারে কুকুরের সঙ্গে শিকল দিয়া বাইন্দা (বেধে) রাখে। বেলা ১টার দিকে পুলিশ আমারে উদ্ধার করে।
সাভারের চামড়া শিল্প নগরী পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (পরিদর্শক) রাসেল মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে রবিউলকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। কিন্তু ব্যবসায়ী মামুন গাঁ ঢাকা দেওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
আরও পড়ুন: উপজেলা নির্বাচন: ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান বিএনপির
গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি কেন নয়: হাইকোর্ট
৬ মাস আগে
আরাভ খানের বিরুদ্ধে ৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ
রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে নিহত ইন্সপেক্টর মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রবিবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল বিন আতিকের আদালতে নিহতের বোন রওশন আক্তার, দুলাভাই মোশারফ হোসেন খান, মামুন এমরানকে যে বাসায় খুন করা হয় ওই বাসার কেয়ারটেকার মিরাজুল ইসলাম ও সিকিউরিটিগার্ড মানিক সাক্ষ্য দেন।
এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন।
জেরা শেষে আগামী ২ মে সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।
মামলাটিতে ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্যে পাঁচ জনের সাক্ষ্য শেষ হলো।
আরও পড়ুন: আরাভ খানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ
এদিন কারাগারে আটক ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের উপস্থিতিতে বাদীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
এ মামলার আসামিদের মধ্যে রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া পলাতক রয়েছেন।
অন্য আসামিরা হলেন-রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হাসান ও দিদার পাঠান।
২০১৮ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর বনানীতে খুন হন পুলিশ পরিদর্শক মামুন। ঘটনার তিন দিন পর তার ভাই জাহাঙ্গীর বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন বনানী থানায়।
তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় রহমত উল্লাহ, রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয় ওরফে হৃদিসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর আদালত এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, বনানীর ২ নম্বর সড়কের ৫ নম্বরের ওই বাসায় নিয়ে আসামি দিদার, স্বপন, রহমত উল্লাহ পুলিশ কর্মকর্তা মামুনের হাত-পা বেঁধে ফেলেন।
পরে ওই তিন আসামির সঙ্গে মিজান, আতিক ও সারোয়ার যুক্ত হয়ে মামুনকে নির্দয়ভাবে মারতে থাকেন। এতে মামুন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। রাত ১০টার দিকে আসামি কেয়া (রবিউলের স্ত্রী) বাসা থেকে চলে যান। রাতের কোনো একসময় সেখান থেকে রবিউলও চলে যান।
আরও পড়ুন: আরাভ খানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি
গভীর রাতে আসামি আতিক আসামি স্বপনকে ডেকে বলেন, ‘দাদা, দেখেন তো পুলিশ কর্মকর্তার হাত-পা কেমন শক্ত মনে হচ্ছে।’ ভোরবেলায় তারা নিশ্চিত হন যে মামুন মারা গেছেন। মামুন মারা যাওয়ার পর রহমত উল্লাহ সবাইকে বলেন, লাশ গুম না করলে তারা সবাই বিপদে পড়ে যাবেন। কারণ, মামুন তার বন্ধু। তিনি মামুনকে ফোন করে ডেকে এনেছেন। রহমত উল্লাহর মুঠোফোনের শেষ কলটিও তার (মামুনের)। তখন স্বপন মুঠোফোনে রবিউলকে মামুনের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। স্বপন বলেন যে ‘এখন আমরা কী করবো? আপনি সকালে এখানে আসেন।’
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, দুটি বস্তা ও একটি সাদা কাপড় নিয়ে বাসার নিচে আসেন রবিউল। তার কাছ থেকে বস্তা নিয়ে বাসার ওপরে যান দিদার। এসময় রহমত উল্লাহ, আতিক ও মিজানকে সঙ্গে নিয়ে বাসার নিচে গিয়ে তার ব্যবহৃত প্রাইভেটকারটি লিফটের দরজার কাছে নিয়ে রাখেন।
সকাল সাতটার দিকে স্বপন, দিদার ও আতিক মিলে মামুনের লাশ লিফটে করে নিচে নামান। সবাই মিলে গাড়ির পেছনের অংশে লাশ তোলেন। পরে রহমত উল্লাহ ওই গাড়ি চালিয়ে বনানীর রাস্তায় যান। গাড়িতে ছিলেন দিদার, স্বপন ও আতিক। সেখানে রবিউল তার স্ত্রী কেয়াকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলসহ অপেক্ষায় ছিলেন। পরে সেখান থেকে রবিউলের মোটরসাইকেল অনুসরণ করে রহমত উল্লাহ গাড়ি চালাতে থাকেন।
খিলক্ষেতের একটি পাম্পে গিয়ে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে রবিউল ফিরে আসেন। আর গাড়ি নিয়ে রহমত উল্লাহ যান গাজীপুরের দিকে। এ সময় রবিউলের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা বলেন দিদার ও স্বপন। গাজীপুরের শিমুলতলীতে দিদার, স্বপন ও আতিক একটি দোকান থেকে সাত লিটার পেট্রোল কেনেন। রবিউল আসামি স্বপনের মুঠোফোনে টাকা পাঠান।
পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে উলুখোলা থেকে আবদুল্লাহপুর যাওয়ার পথে একটি বাঁশবাগানে পেট্রোল ঢেলে মামুনের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর গাড়ি নিয়ে সবাই ঢাকায় ফিরে আসেন।
ঘটনার তিন দিন পর ১০ জুলাই গাজীপুরের একটি জঙ্গলে পুলিশ পরিদর্শক মামুনের লাশের হদিস মেলে।
আরও পড়ুন: আরাভ খানের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ
১ বছর আগে
অবশেষে পুলিশ ট্রেনিংয়ের জন্য ডাকা হলো মিমকে
সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় প্রথম হয়েও জমি না থাকায় পুলিশে চাকরি পাচ্ছিলেন না খুলনার মিম আক্তার। তবে সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে অবশেষে পুলিশ কনস্টেবল পদে ট্রেনিংয়ের জন্য ডাকা হয়েছে মিমকে।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর খুলনা টেক্সটাইল মিল পুলিশ ফাঁড়ি থেকে উপপরিদর্শক (এসআই) মিকাইল প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের নোটিশপত্রটি মিমের হাতে তুলে দেন।
এর আগে ১১ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে মিমকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল, পুলিশ ভেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় মেধা তালিকায় প্রথম হলেও চাকরিটা তাকে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল মিমের পরিবার।
ঘটনাটি নিয়ে ওইদিনই সংবাদ প্রকাশ করে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া। দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন মিম। মিমকে নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে শুরু করে পুলিশ বিভাগ। পাশে দাঁড়ান খুলনা জেলা প্রশাসকও।
খুলনা জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহম্মেদ জানান, পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধা তালিকায় প্রথম হয় মিম আক্তার। তবে পুলিশ ফেরিফিকেশনে স্থায়ী ঠিকানা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। আমরা ঘটনাটি পুলিশ হেড কোয়ার্টারকে জানাই। অবশেষে পুলিশ হেড কোয়ার্টারের নির্দেশনায় মিমের আবেদন আমরা গ্রহণ করেছি। ট্রেনিংয়ের জন্য মিমকে ডাকা হয়েছে। ট্রেনিং শেষে মিম চূড়ান্ত নিয়োগপত্র পাবেন।
মিমের বাবা মো. রবিউল ইসলাম জানান, দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে খুলনাতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করছি। মিমের জন্মও খুলনাতে। জন্ম সনদে ঠিকানা দেয়া হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নাম। এখানে আমাদের কোনো জমি নেই। স্থায়ী জমি না থাকায় মিমের চাকরিটা হচ্ছিল না। তবে সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতায় সবার মুখে মুখে আলোচনা হওয়ার পর চাকরিটা পেয়েছে মিম।
তিনি বলেন, আমি খুব গরিব মানুষ। যারা সহযোগিতা করেছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ১৩০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন ৪৩ জন
মিম আক্তার চাকরিটা ফিরে পেয়ে আনন্দে আপ্লুত।
‘চাকরি ফিরে পেয়ে আমার ভালো লাগছে। আমি বুঝেছি গরিবের কষ্টটা কেমন? পুলিশের দায়িত্ব পালনকালে যদি কখনও অসহায় মানুষ সামনে আসে তবে তার প্রতি আমার সহমর্মিতা অবশ্যই থাকবে। তাদের পাশে দাঁড়াব। যারা আমার বিপদের দিনে পাশে দাঁড়িয়েছেন সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি,’ বলেন মিম।
উল্লেখ্য, মিমের বাবা রবিউল ইসলামের পৈতৃক বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার বড়বাড়িয়া গ্রামে। বাবা আব্দুল লতিফ শেখ এখনও জীবিত রয়েছেন। ভিটেবাড়ির জমিটুকুও মিমের দাদা আব্দুল লতিফের নামে রয়েছে।
মিমকে দেয়া নোটিশে দেখা যায়, মিমকে আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় খুলনার পুরাতন পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ অফিস এবং পরের দিন (৩০ ডিসেম্বর) রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
পড়ুন: একশ টাকায় পুলিশের চাকরি পেয়ে বিস্মিত কেয়া
২ বছর আগে
ইউএনও’র ওপর হামলা: বরখাস্ত হওয়া সরকারি কর্মচারী আটক
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এক সরকারি কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ।
৪ বছর আগে