এশিয়ার প্রধান ২ অর্থনৈতিক পরাশক্তি ভারত ও চীনের সঙ্গে বড় পরিসরে সম্পৃক্ত হওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৩ মাসের মধ্যে নয়া দিল্লি ও বেইজিংয়ে দ্বিপক্ষীয় সফরে যেতে পারেন।
৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে জয় নিশিচত করে নতুন সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী ফেব্রুয়ারিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মানি সফর করেন।
একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, প্রতিবেশী দেশ জুনের প্রথম সপ্তাহে নতুন সরকার নির্বাচন করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সফর শুরু করবেন।
ভারতে ৫ বছরের জন্য সরকার নির্বাচনের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক নির্বাচন ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুনের মধ্যে ৭ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এবং ভোট গণনা করা হবে ৪ জুন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন জোট পার্লামেন্টের নির্বাচনে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আসনে জয়লাভ করতে পারে বলে এক জরিপে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: ৩ দিনের সফর শেষে মিউনিখ থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ৭৩ বছর বয়সী মোদি ২০১৪ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন এবং পুনরায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) ভারত সফর অবশ্যই হবে। তবে তা হবে ভারতের নির্বাচনের পর।’
তিনি বলেন, সফরটি ঠিক কবে হবে তা নিয়ে সরকারি পর্যায়ে এখনও আলোচনা হয়নি।
জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
৮ জানুয়ারি পাঠানো অভিনন্দনপত্রে নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা চতুর্থ মেয়াদে তার দেশকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তাদের অপরিবর্তনীয় অংশীদারত্বের সব ক্ষেত্রে গভীরতর হতে থাকবে।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা ও প্রবৃদ্ধিতে সমর্থন অব্যাহত রাখবে ভারত।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে সফরের আমন্ত্রণ চীনের
ওই বার্তায় বাংলাদেশের জনগণের অব্যাহত অগ্রগতি, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ৯-১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে জি-২০ লিডারস সামিটে অংশ নিতে অতিথি হিসেবে ভারত সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
এদিকে, একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, পুনর্নির্বাচিত হলে মোদি তার শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দক্ষিণ এশিয়া ও বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর সরকার প্রধানদের আমন্ত্রণ জানাতে পারেন।
বুধবার ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে চীনা কোম্পানিগুলোর বৃহত্তর বিনিয়োগ এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগের ক্ষেত্রে উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। পাশাপাশি জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফর এই বিষয়গুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনায় রাষ্ট্রদূত ইয়াও জনগণ থেকে জনগণে আদানপ্রদান জোরদারে এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততাকে সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
চীনের একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এই সহায়তার লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের 'রূপকল্প ২০৪১' বাস্তবায়ন এবং 'স্মার্ট বাংলাদেশ' অর্জনের অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করা।
আরও পড়ুন: নির্বাচন পরবর্তী প্রথম সরকারি সফর হিসেবে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী