মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশ সেরা শারদীয় দুর্গোৎসব এ বছরও বড়পরিসরে আয়োজন করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে বাগেরহাটের শিকদারবাড়ি কর্তৃপক্ষ। তবে ধর্মীয় রীতি রক্ষার্থে স্বল্প পরিসরে (ছোট করে) পূজার আয়োজন করা হবে।
বেশ কয়েক বছর ধরে শিকদারবাড়ির দুর্গোৎসব দেশ-বিদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এই পূজামণ্ডপে এসে দেব-দেবীর প্রতিমায় নানা বৈচিত্র্য আর প্রাণবন্ত আয়োজন দেখে লাখ লাখ দর্শনার্থী অভিভূত হতেন।
আরও পড়ুন: এ বছর হচ্ছে না দেশ সেরা শিকদারবাড়ির দুর্গোৎসব, পূজা হবে ঘটে
জানা গেছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার হাকিমপুর গ্রামের ডাক্তার দুলাল শিকদার সনাতনধর্ম সম্পর্কে সমাজকে জাগ্রত করতে এবং গোটা বিশ্বকে সনাতন ধর্মের দেব-দেবীর পূজার মহত্ব জানানোর জন্য ২০১১ সাল থেকে নিজ বাড়িতে বিশাল পরিসরে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু করেন।প্রথম বছর ওই পূজাপ্যান্ডেলে বিভিন্ন দেব-দেবীর ২৫১টি প্রতিমা সাজানো হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর সেখানে দেব-দেবীর প্রতিমার সংখ্যা বেড়ে চলছিল। ২০১৯ সালে শিকদারবাড়ি পূজামণ্ডবে ৮০১টি দেব-দেবীর প্রতিমা সাজিয়ে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়। কিন্তু গত দুই বছরের ন্যায় এ বছরও শিকদারবাড়ির দুর্গোৎসব বড় পরিসরে হচ্ছে না।
শিকাদারবাড়ি দুর্গোৎসবের আয়োজক পরিবারের সদস্য শিশির শিকদার জানান, দেশে এখনো করোনার প্রভাব থাকায় তারা রীতি রক্ষায় স্বল্প পরিসরে শুমাত্র দুর্গাপূজার আয়োজন করেছে। বড় পরিসরে দুর্গোৎসবের আয়োজন না করায় দর্শনার্থীদের মতো তারাও মনোকষ্ট রয়েছে। আগামীতে করোনার প্রভাব না থাকলে পূর্বের ন্যায় বড় পরিসরে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হবে।
আরও পড়ুন: দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি চলছে মাগুরায়
বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অমিত রায় জানান, বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দেশ থেকে অসংখ্য দর্শনার্থীরা শিকদারবাড়ি দুর্গোৎসবে এসেছেন। এই তিনবছর দর্শনার্থীরা দুর্গোৎসবে আসতে পারছে না। শিকদারবাড়ির এই দুর্গোৎসব এশিয়ার বৃহৎ পূজার আয়োজন ছিল বলে তিনি মনে করেন।
আগামীতে শিকদারবাড়িতে বড় পরিসরে দুর্গোৎসবের আয়োজন হবে এমন প্রত্যাশা রাখেন তিনি।
সরকারি কলেজ শিক্ষক যুযোশ কান্তি মন্ডল বলেন, আমাদের এই প্রজন্ম শিকদারবাড়ি দুর্গোৎসবে গিয়ে বিগত দিনে পৌরানিক অনেক ধারণা পেয়েছে। সেখানে বড় পরিসরে দুর্গোৎসব না হওয়ায় সে ক্ষেত্রে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি সামাজিক মেলবন্ধনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখের মতো দুর্গাপূজাও সবার উৎসব: শিক্ষামন্ত্রী
আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে দেবী দুর্গা হাতিতে (গজে) চড়ে স্বর্গ থেকে মত্তলোকে আসবেন। মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী এবং ৫ অক্টোবর দশমীতে দর্পণ বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে নৌকায় চড়ে মা দুর্গা স্বর্গ লোকে ফিরে যাবেন।