বিজয়
তাজিংডং ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় ও খরচ
সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে শূন্যের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করা আর প্রকৃতির অপার বিস্ময়ের কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়া যেন একই সুরের ঐকতান। আর সেই সংগীত যেন অনুনাদে বাজতে থাকে শীতের শুরুতে। শীতে নেই অল্পতেই দম ফুরিয়ে যাওয়ার চিন্তা। বরং আকাশ আর পাহাড়ের মাঝে মেঘ আর কুয়াশার প্রতিযোগিতা অ্যাড্রেনালিন বাড়িয়ে দেয় মাঝপথে থেমে যাওয়া কোনো পর্বতারোহীর। ট্রেকার আর রোমাঞ্চপ্রেমীরা এই কারণেই শিশির মাখা ঋতুকে বেছে নেন তাদের দুর্গমপ্রিয় উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙানোর জন্য। দেশে ট্রেকিংয়ের জন্য অন্যতম সেরা গন্তব্যের নাম তাজিংডং। বিপজ্জনক ঝিরিপথ সমৃদ্ধ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া নিয়েই আজকের নিবন্ধ। চলুন, দুর্গম চূড়াটির অভিমুখে রওনা হওয়ার পূর্বে পুরো যাত্রার ব্যাপারে সম্যক ধারণা নেয়া যাক।
তাজিংডংয়ের অবস্থান ও বিশেষত্ব
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বের পাহাড়ী অঞ্চল বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন রেমাক্রী পাংশা। এই ইউনিয়নের সাইচল নামের পর্বতসারির অংশ তাজিংডং। উপজেলা সদর থেকে জায়গাটির দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার।
প্রকৃত উচ্চতা ৭৮৯ মিটার (2,৫৮৯ ফুট) হলেও সরকারি হিসাব মতে ১ হাজার ২৮০ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এই প্রাকৃতিক বিস্ময়টি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। এর আগে দেশের চূড়াগুলোর মধ্যে উচ্চতার দিক থেকে শীর্ষস্থানে ছিল কেওক্রাডং।
অবশ্য বেসরকারি গবেষণায় এই খেতাবের দাবিদার সাকা হাফং চূড়া , যা এখনও সরকারিভাবে স্বীকৃতি পায়নি।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের তিনাপ সাইতার জলপ্রপাত ভ্রমণের উপায় ও খরচ
তাজিংডং নামের উৎপত্তি
তাজিংডং সংলগ্ন রেমাক্রী অঞ্চলে বসবাসরত উপজাতীদের ভাষায় খুব বড় কোনো কিছু বোঝাতে ‘তাজিং’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। আর ‘ডং’ শব্দ দিয়ে বোঝানো হয় পাহাড়কে। এভাবে ‘তাজিং’ ও ‘ডং’ শব্দ দুটি একত্রিত করে বিরাটকায় কোনো পাহাড় বোঝাতে ‘তাজিংডং’ নামের প্রচলন ঘটে। সরকারিভাবে এটি বিজয় নামেও পরিচিত।
বিজয় বা তাজিংডং ভ্রমণের সেরা সময়
বর্ষাকালে অন্য সব পাহাড়ি পথের মতো তাজিংডংও পরিণত হয় মৃত্যুকূপে। এছাড়া শুধু শুষ্ক মৌসুমগুলোতেই চাঁন্দের গাড়ি করে পাহাড়ের কাছাকাছি পৌঁছা যায়।
আর গরমের সময়গুলোতে এমন দুর্গম গিরিপথ বেয়ে ওঠা ঘর্মাক্ত কলেবরে কুলিয়ে ওঠা যায় না। তাই তাজিংডং আরোহণের সেরা সময় শীতের একদম শুরুর দিকে, যখন কুয়াশার চাদরে ঝিরিপথ অন্ধকার হয়ে যায় না। সেই সঙ্গে যদি পূর্ণিমা থাকে, তাহলে ভ্রমণ উচ্ছ্বাসের ষোলো আনাই পূরণ হয়।
আরও পড়ুন: মনপুরা দ্বীপ ভ্রমণ গাইড: যাওয়ার উপায় এবং আনুষঙ্গিক খরচ
ঢাকা থেকে তাজিংডং পৌঁছার উপায়
ঢাকাবাসীদের জন্য বান্দরবান যাওয়ার সেরা উপায় হলো বাসরুট। কেননা, এই পথে একমাত্র বাসেই রয়েছে সরাসরি বান্দরবান সদর পর্যন্ত যাওয়ার উপায়। বাস গাবতলী, কল্যাণপুর, কলাবাগান, মহাখালী, ফকিরাপুল বা যাত্রাবাড়ীর যে কোনো বাসস্ট্যান্ড থেকে বান্দরবানের বাস পাওয়া যায়।
বাস কোম্পানি এবং এসি ও ননএসি ভেদে এগুলোতে ভাড়া পড়তে পারে জনপ্রতি ৮৫০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা।
ট্রেনে ভ্রমণ করতে হলে ঢাকা থেকে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম, তারপর চট্টগ্রাম থেকে লোকাল বাসে বান্দরবান। কমলাপুর কিংবা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সারা দিন বিভিন্ন সময়ে চট্টগ্রামের ট্রেন পাওয়া যায়। এগুলোতে শ্রেণীভেদে ভাড়া পড়তে পারে মাথাপিছু ২৮৫ থেকে ৭৮৮ টাকা।
যাতায়াতের সময় বাঁচিয়ে আরও কম সময়ে যেতে চাইলে রয়েছে উড়োজাহাজে করে যাওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রেও ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথমে চট্টগ্রামেই নামতে হবে। আর এখানে সময় লাগবে মাত্র ১ ঘণ্টা। চট্টগ্রামগামী বিমানগুলোর টিকিট মূল্য পড়তে পারে জনপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ থেকে ১১ হাজার ১৭৫ টাকা পর্যন্ত। কমপক্ষে ১ মাস আগে থেকে টিকিট কাটলে খরচ আরও কমিয়ে আনা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: শীতকালে বাংলাদেশে ভ্রমণের জনপ্রিয় ১০ স্থান
চট্টগ্রামে পৌঁছে এখানকার বিআরটিসি টার্মিনাল বা দামপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়ায় পাওয়া যাবে বান্দরবানের বাস।
বান্দরবান জেলা শহর থেকে প্রায় ৭৯ কিলোমিটার দূরত্বে থানচি উপজেলার অবস্থান। বান্দরবান থেকে বাসে কিংবা রিজার্ভ জিপ বা চাঁন্দের গাড়িতে করে থানচি যাওয়া যায়। বান্দরবানের থানচি বাসস্ট্যান্ডে প্রতি ঘণ্টায় পাওয়া যাবে থানচির লোকাল বাস। জনপ্রতি ২০০ টাকা ভাড়ায় এগুলো থানচি পৌঁছে দেয় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টায়। চাঁন্দের গাড়িতে ১২ থেকে ১৪ জনের গ্রুপের জন্য খরচ পড়তে পারে ৫ হাজার ৫০০ থেকে ৬ হাজার টাকা। এই যাত্রাটা বেশ আনন্দের; তাছাড়া এভাবে যেতে সময়ও লাগে অনেক কম; প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা।
থানচি থেকেই শুরু হয় পায়ে হাটা যাত্রা। আগে অনেকে রুমা হয়ে তাজিংডং যেতো কিন্তু বর্তমানে রুমা থেকে শুধুমাত্র কেওক্রাডং পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। এছাড়া কোনোভাবে যেতে পারলেও জাদিপাই পর্যন্ত যাওয়া যাবে। তাই এখন তাজিংডং চূড়ায় ওঠার একমাত্র উপায় থানচি হয়ে যাওয়া। এ রুটে হেডম্যানপাড়া হয়ে শেরকরপাড়া দিয়ে তাজিংডং পৌঁছাতে হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটের জাফলং ভ্রমণ: যাওয়ার উপায় ও যাবতীয় খরচ
১০ মাস আগে
প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব
নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কেসি।
তিনি বলেন, 'নির্বাচনে বিজয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমার অভিনন্দন।
আরও পড়ুন: বিএমসিসিআইয়ের সভাপতি সাব্বির খান, মহাসচিব মোতাহার খান
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) এক অভিনন্দন বার্তায় বলা হয়, কমনওয়েলথ সচিবালয় জাতীয় অগ্রাধিকার অর্জনে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের জনগণ এবং কমনওয়েলথ পরিবারের সকল সদস্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: জাতীয় পার্টির এমপিরা পরে শপথ নেবেন: জাপা মহাসচিব
১০ মাস আগে
আমাদের বিজয়ের মহানায়কের নাম শেখ মুজিবুর রহমান: নৌপ্রতিমন্ত্রী
নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমাদের বিজয়ের মহানায়কের নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা ও বিজয়ের শক্তি এবং সাহসের নাম। বঙ্গবন্ধু ছাড়া আমরা স্বাধীনতা ও বিজয় পেতাম না।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ভবনে মহান বিজয় দিবস- ২০২৩ উপলক্ষে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার এবং বিজয় দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সীমান্তে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুখ দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ শুরু করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে তিনি দারিদ্র্যপীড়িত দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেছিলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতা ও বিজয়কে অন্ধকারে পাঠিয়ে দিয়েছিল। জেনারেলদের শাসন চলছিল। আমরা স্বাধীনতার স্বাদ পাইনি। স্বাধীনতা ও বিজয়কে মূল্যহীন করে রেখেছিল।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন অহংকার করে বলতে পারি, আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতা ও বিজয়ের স্বাদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা মুক্তি পাইনি। শেখ হাসিনা আমাদের মুক্ত করেছেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা যদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এভাবে থাকতে পারি, তাহলে আমরা পথ হারাব না। শিক্ষার আলো দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশকে একটি মর্যাদায় নিয়ে গেছেন। সেই মান-মর্যাদা নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে আরও এগিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, ‘৭১ সালে সাম্রাজ্যবাদীরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়েছিল। এখন উন্নয়নের বিরুদ্ধেও তারা বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছে। আমরা বিজয়ী জাতি। আমরা কারো মুখাপেক্ষী থাকতে পারি না। যখন আমরা মুখাপেক্ষী ছিলাম, তখন আমরা এগোতে পারিনি। ইউএসএ, জাতিসংঘ, পশ্চিমারা আমাদের বাংলাদেশকে নিয়ে বিবৃতি দিচ্ছে- এটা ভালো লাগে, গর্ব করার বিষয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন মুখ্য সচিব কবি ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এ কে এম মতিউর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম, বিআইডব্লিউটিএ'র চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
আরও পড়ুন: মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের আবিষ্কারক প্রধানমন্ত্রী: নৌপ্রতিমন্ত্রী
গ্লোবাল মেরিটাইম ইন্ডিয়া সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৌপ্রতিমন্ত্রী
১১ মাস আগে
সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত: নজরুল ইসলাম খান
সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, তাদের চলমান আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত, কারণ সরকার দমনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিরোধী দলকে দমন করতে পারবে না।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে, তাদের এখন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমাদের নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ সবাইকে শুধু রাজপথে নামার জন্য কারাগারে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারির তফসিল বাতিলের দাবি বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) শ্রমিকদের সমাবেশে কাল্পনিক মামলা দায়ের এবং বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের পাইকারি গ্রেপ্তার বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মুক্তি দিতে এবং আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বলপ্রয়োগ ও দমন-পীড়নের মাধ্যমে আন্দোলন দমন করা যাবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের কোনো স্বৈরাচারী সরকার দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণের মন জয় করতে পারে না। এই সরকারও তা করতে পারবে না। আমাদের সংগ্রাম গণতন্ত্রের জন্য এবং জনগণের ভোটাধিকারের জন্য। আমরা অবশ্যই এই লড়াইয়ে জয়ী হব।’
গার্মেন্টস শ্রমিক হত্যার বিচার, আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও সুচিকিৎসা এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদ।
গ্রেপ্তার হওয়া শ্রমিকদের মুক্তি, চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল এবং পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার জন্য সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর লক্ষ্যেও এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মান্না বলেন, সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিরোধী দলগুলোর চলমান আন্দোলন বন্ধ করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি মানুষ ভোট দিতে যাবে না। কিন্তু তারা (সরকার) নাটকের মতো মঞ্চে অনেক কেন্দ্র প্রস্তুত করবে। পরে সন্ধ্যায় তারা ঘোষণা করার চেষ্টা করবে যে আমরা নির্বাচনে জয়ী হয়েছি।’
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানিতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে এমন জল্পনা-কল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, জাতীয় নির্বাচনের নামে কীভাবে নাটক করা যায় তা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সরকার এ ধরনের গুরুতর বিষয় নিয়ে ভাবছে না।
তিনি দাবি আদায়ের পাশাপাশি জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন অব্যাহত রাখার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, সরকার জনগণ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের মতামত উপেক্ষা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও অন্যান্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখলের ‘প্রহসনের’ নির্বাচন করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র শ্রম অধিকার নিয়ে একটি নতুন নীতি ঘোষণা করেছে।’
তারা বলেন, ‘এ ধরনের একতরফা নির্বাচন হলে এবং শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তারা আমাদের পোশাক খাতের উপর নতুন বিধিনিষেধ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে।’
সাকি অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন ছাড়াই শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশের তৈরি পোশাক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে যাচ্ছে। সরকারের এই প্রচেষ্টা কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া যাবে না।’
একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানেসরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য তিনি শ্রমিকসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: শাহজাহান ওমরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ঝালকাঠি জেলা বিএনপি
৭ জানুয়ারি নির্বাচন: তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১৫ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি
১১ মাস আগে
বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলেও ‘বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত’ সরকারের পতনের জন্য বিএনপির এক দফা আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। রবিবার সকাল থেকে আমাদের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে।’
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এ কথা বলেন।
এদিকে অবরোধ পালনের সময় সরকারের কোনো প্ররোচনায় সাড়া না দিতে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জন গ্রেপ্তার: রিজভী
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য তারা আন্দোলন করছেন, যাতে তারা নির্ভয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারেন।
তিনি বলেন, জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের জন্য এটি একটি আদর্শ আন্দোলন। যারা গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে এবং স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে, তারা সবাই এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করবে এবং এর সঙ্গে থাকবে।
রিজভী বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে গভীর রাতে ভোট কারচুপির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সংসদের সংসদ সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, ‘তারা সাধারণ মানুষের জন্য ভালো কিছু করেনি।’
তিনি বলেন, ‘২৭২ কার্যদিবসের এই সংসদ আওয়ামী লীগের গুঞ্জনের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এই অবৈধ পার্লামেন্টে প্রায় ১৬৫টি বিল পাস হয়েছে এবং এর প্রায় সবগুলোই গণবিরোধী। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে এই অবৈধ সংসদে গৃহীত অবৈধ আইনগুলো বুড়িগঙ্গা নদীতে নিক্ষেপ করা হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও প্রশাসন তাদের সব শক্তি নিয়ে মাঠে রয়েছে। আমরা সারা দেশ থেকে খবর পাচ্ছি যে, শেখ হাসিনা ও তার সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নতুন নোংরা মিশন শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ২ কোটি সুবিধাভোগী ও কার্ডধারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতারা প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি উপজেলায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ থেকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধাপ্রাপ্তদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। ডিসি, এসপি, ইউএনও ও ওসিরা বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করাই এসব সমাবেশের উদ্দেশ্য।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা।
রিজভী বলেন, জনগণকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে, আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে না গেলে এই সুবিধা গ্রহণের জন্য তারা যে কার্ড ব্যবহার করেন তা বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে বিদেশিদের সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি দেখানোর জন্য শেখ হাসিনা এই ভয়ানক কৌশল নিয়েছেন।’
রিজভী বলেন, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মাত্র ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ২৯২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের কোনো কৌশলই বিএনপির আন্দোলন দমন করতে পারবে না: রিজভী
বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
১ বছর আগে