কেয়ার স্টারমার
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন কেয়ার স্টারমার। শুক্রবার(৫ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ নেন তিনি।
এর আগে 'হাতে চুম্বন' অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সরকার গঠনের জন্য রাজা তৃতীয় চার্লসের আশীর্বাদ পান স্টারমার।
এর আগে শুক্রবার ঋষি সুনাক রাজার কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ ভাষণ দিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ত্যাগ করেন সুনাক।
১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে দেওয়া শেষ ভাষণে সুনাক বলেন, 'এটি একটি কঠিন দিন। বিশ্বের সেরা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আমি সম্মানিত হয়েছি এবং এখন আমি এই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছি।’
সুনাক বলেন, তিনি তার সর্বোচ্চটুকু উজাড় করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ব্রাসেলসে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২, আহত ৩
ভোট গণনা নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুনাক সকালে পরাজয় স্বীকার করে নেন। তবে লেবার পার্টির কাছে তার কনজারভেটিভ দলের চরম পরাজয়ের পূর্বাভাস ছিল।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বসতে যাওয়া ৬৫০ জন আইনপ্রণেতাকে বেছে নিতে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা।
পাঁচজন ভিন্ন ভিন্ন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এক দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পর সুনাকের কনজারভেটিভরা বড় ধরনের পরাজয় বরণ করেছে।
রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন সুনাক। সুনাককে একজন চালক মন্ত্রীর গাড়িতে করে প্রাসাদে নিয়ে যান। পরে তিনি একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বেরিয়ে যান।
রাজার সঙ্গে স্টারমারের সাক্ষাৎ
লেবার পার্টির বিপুল বিজয়ের পর রাজা তৃতীয় চার্লসের সরকার গঠনের অনুরোধ গ্রহণ করতে বাকিংহাম প্যালেসে পৌঁছান লেবার নেতা কেয়ার স্টারমার।
'হাতে চুম্বন' অনুষ্ঠানে স্টারমার আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর তিনি ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে তার সরকারি বাসভবনে যাবেন।
প্রাসাদে স্টারমারের আগমন সরকার পরিবর্তনের পটভূমির অংশ। এটি এমন এক সময়ে ঘটে, যখন রাজা সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন এবং তার সরকার পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে বেছে নেন।
আধুনিক সময়ের সাংবিধানিক রাজতন্ত্র এই ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। রাজা আনুষ্ঠানিকভাবে হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে এই পদ গ্রহণের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনের পার্লামেন্টে লেবার পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা, নতুন প্রধানমন্ত্রী স্টারমার
স্টারমারকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতাদের অভিনন্দন
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের নেতারা নির্বাচনে জয়ের জন্য লেবার পার্টির নেতা কেয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, তিনি নতুন ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে 'গঠনমূলকভাবে কাজ করার' অপেক্ষায়।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সন স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন, 'নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং একসঙ্গে আরও অনেক কিছু করতে পারে।’
সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাককে উদ্দেশ্য করে লুক্সন বলেন, 'আপনার জাতির প্রতি আপনার সেবা এবং নিউজিল্যান্ডের প্রতি বন্ধুত্বের জন্য ধন্যবাদ।’
বুথের গণনা অনুযায়ী, কনজারভেটিভরা ২০০টিরও বেশি আসন হারাতে যাচ্ছে এবং ১৯০৬ সালের পর সবচেয়ে খারাপ ফলাফল দেখতে যাচ্ছে।
কনজারভেটিভদের ১৪ বছরের ক্ষমতার অবসানে ভোটাভুটি শুরু
পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য বৃহস্পতিবার(৪ জুলাই) সকাল ৭টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ব্রিটিশ ভোটাররা নতুন সরকার হিসেবে বিরোধী দল লেবার পার্টিকে তুলে আনতে ভোট দিয়েছেন।
অর্থনৈতিক দূরাবস্থা, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাস এবং ভঙ্গুর সামাজিক কাঠামোর প্রেক্ষাপটে ২০১০ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির বিরুদ্ধে ভোটাররা তাদের রায় দিচ্ছেন।
কেয়ার স্টারমারের নেতৃত্বাধীন মধ্য-বাম লেবার পার্টি কয়েক মাস ধরে জনমত জরিপে স্থির এবং উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল। তবে লেবার নেতারা নির্বাচনের ফলাফলকে হালকাভাবে নেওয়ার বিষয়ে সতর্ক ছিলেন। কারণ তাদের সমর্থকরা বের হবেন না বলে উদ্বিগ্ন ছিলেন তারা।
অন্যদিকে সুনাক তার সমর্থকদের সংঘবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন। তিনি রবিবার বলেছেন, তিনি এখনও মনে করেন কনজারভেটিভরা জিততে পারে এবং অর্থনীতিতে তাদের অবদান অটুট রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: পরাজয় মেনে প্রধানমন্ত্রীর শেষ ভাষণ দিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিট ছেড়েছেন সুনাক
৪ মাস আগে