এছাড়া, এ সময়ে নির্যাতনের শিকার হন ৫৯৬ শ্রমিক। যার মধ্যে কর্মক্ষেত্রে ২৩২ এবং কর্মক্ষেত্রের বাইরে ৩৬৪ জন নির্যাতিত হন।
বিভিন্ন খাতে গত বছর মোট ৫৯৩টি শ্রমিক আন্দোলনের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে সর্বোচ্চ ২৬৪টি আন্দোলন হয় তৈরি পোশাক খাতে।
শনিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি বিষয়ে সংবাদপত্র ভিত্তিক বিলস জরিপ-২০২০’ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হবে ১১১ দফা সুপারিশ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সভায় বিলস ভাইস চেয়ারম্যান শিরীন আখতারের সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী পরিষদ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন ও আমিরুল হক আমিন, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য নইমুল আহসান জুয়েল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাকিল আখতার চৌধুরী, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, বিলস পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ ও নাজমা ইয়াসমীন।
জরিপের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিলস উপপরিচালক মো. ইউসুফ আল মামুন।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকের মধ্যে ৭২৩ জন পুরুষ এবং ৬ জন নারী। খাত অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ৩৪৮ শ্রমিকের মৃত্যু হয় পরিবহন খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৪ জন নির্মাণ খাতে এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬৭ জন কৃষি খাতে মারা যান।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে দেয়াল ধসে ২ শিশুপুত্রসহ দম্পতির মৃত্যু
আগের বছর ২০১৯ সালে বিভিন্ন খাতে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১২০০ শ্রমিকের মৃত্যু হয় এবং তখন নির্যাতনে ১২৯২ শ্রমিক হতাহত হন।
২০২০ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৪৩৩ শ্রমিক আহত হন, এর মধ্যে ৩৮৭ জন পুরুষ এবং ৪৬ জন নারী। মৎস্য খাতে সর্বোচ্চ ৬৮ শ্রমিক আহত হন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৯ জন আহত হন নির্মাণ খাতে।
সংবাদপত্র জরিপে ৫৯৬ শ্রমিকের নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঘটনা উঠে এসেছে, এর মধ্যে ৩১৬ জন নিহত, ২২৯ জন আহত, ৮ জন নিখোঁজ, ২৪ জন আত্মহত্যা, অপহৃত ১৪ জনকে উদ্ধার এবং ৫ জনের নির্যাতনের ধরণ উল্লেখ করা হয়নি। নির্যাতিতদের মধ্যে ৪৫৪ জন পুরুষ এবং ১৪২ জন নারী শ্রমিক রয়েছেন। তাদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে ২৩২ ও কর্মক্ষেত্রের বাইরে ৩৬৪ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর নির্যাতনে পরিবহন খাতে সবচেয়ে বেশি ১০৯ জন শ্রমিক হতাহত হন। তারপরে ৭৮ জন তৈরি পোশাক শিল্পে, অভিবাসী খাতে ৬৫, নির্মাণ খাতে ৬৩, কৃষি খাতে ৫৮ এবং গৃহশ্রমিক খাতে ৪৪ জন হতাহত হন।
গত বছর বিভিন্ন খাত সবমিলিয়ে ৫৯৩টি শ্রমিক আন্দোলনের ঘটনা ঘটে। সবচেয়ে বেশি ২৬৪টি শ্রমিক আন্দোলনের ঘটনা ঘটে তৈরি পোশাক খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৯টি শ্রমিক আন্দোলন হয় পাট শিল্পে। আন্দোলন করতে গিয়ে এ সময় ৯৯ শ্রমিক আহত হন।
জরিপ অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ১৭৬টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে বকেয়া বেতনের দাবিতে। এছাড়া, দাবি আদায়ে ১৩৮, অধিকার আদায়ে ১১৫, বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে ৪৫, বোনাসের দাবিতে ৩৪, লে-অফের কারণে ৩০, ভাতার দাবিতে ২৯ এবং অন্যান্য দাবিতে ২৬টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে।