ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের কূটনীতিক গুইলাম অড্রেন ডি কেরড্রেল বলেছেন, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পরিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিধার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে আগ্রহী ফ্রান্স।
তিনি বলেন,‘পারস্পরিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিধাগুলোকে একত্র করার জন্য এবং সামনের অসংখ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের শক্তিকে সমন্বিত করার জন্য আমাদের এখন একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।’
১৪ জুলাই ফ্রান্সের জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার দেয়া এক বার্তায় এসব কথা বলেন ঢাকায় ফরাসি দূতাবাসের চার্জ ডি'অ্যাফেয়ার্স গুইলাম অড্রেন ডি কেরড্রেল কেরড্রেল।
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে ফরাসি দূতাবাস সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।
তিনি জানান, বাংলাদেশ এখনও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। তাই জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ফোরামে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার প্রশংসা করেছে ফ্রান্স।
তিনি বলেন, এই বছরটি একটি মহান ও বিশেষ বছর। কারণ ফ্রান্স ও বাংলাদেশ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে।
কূটনীতিকেরা ২০২২ সালকে ফ্রাঙ্কো-বাংলাদেশ সহযোগিতার জন্য অনেক ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। কারণ দুই দেশ প্রত্নতাত্ত্বিক সহযোগিতার ৩০ বছর উদযাপন করছে এবং বগুড়ার মহাস্থানগড়ের বিশাল এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন: ৪-১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন ইয়ান ফ্রাই
তিনি বলে, ‘এই প্রত্নতাত্ত্বিক সহযোগিতাটি আমাদের দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সহযোগিতা। ফরাসি ও বাংলাদেশি প্রত্নতাত্ত্বিকেরা যৌথভাবে খনন কাজ পরিচালনা করছেন। এই কাজটি অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে আমাদের দুই দেশের জ্ঞান ও সম্পদের সমন্বয়ের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করার একটি নিখুঁত প্রতীক।’
ফরাসি কূটনীতিক বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় তার দেশ ভ্যাকসিন সংহতি প্রদর্শন করেছে।
২০১২ সালে ফরাসি ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি ঢাকায় অফিস খোলে। এরপর থেকে জ্বালানি, পানি, পরিবহন, স্বাস্থ্য ও অর্থের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হয়ে উঠেছে তারা।
২০২২ সালের ১২ মে বাংলাদেশের একটি উন্নয়ন অংশীদার হিসাবে এএফডি-এর প্রতিষ্ঠাকে আইনত সুবিধা দেয়া্র জন্য ফ্রান্স সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই উপলক্ষে এএফডি বাংলাদেশে সবুজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি সমর্থনে তার প্রতিশ্রুতি নবায়ন করেছে।
শুরু থেকেই ফ্রান্স বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্কের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অংশীদার।
ফরাসি কূটনীতিক বলেন, ‘আমাদের দেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠস্বর শুনেছে: ১৯৭১ সালে আন্দ্রে মালরাক্স স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছিলেন।’
দুই বছর পর ঢাকায় রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান তাকে সম্মানের সঙ্গে বরণ করেন।
ফরাসি দূত জানান, ২০২১ সালে ৯ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফর, আমাদের দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধন ও বন্ধুত্বকে প্রতিফলিত করেছে।
ফ্রান্স ও বাংলাদেশ আবারো বিশেষ করে ব্লু ইকোনমি, প্রতিরক্ষা ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব জোরদার করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে শিনজো আবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী