বাংলাদেশ
গণভবনে কে বসবেন, সেই সিদ্ধান্ত দিল্লি থেকে আসবে না: হাসনাত
ভারতের দাদাগিরি বাংলাদেশে আর চলবে না বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘গণভবনে কে বসবেন, সেই সিদ্ধান্ত আর দিল্লি থেকে আসবে না। বাংলাদেশ প্রশ্নে আমরা আপসহীন।’
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর দিকে চাষাড়া শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে পথসভা ও গণসংযোগে তিনি এ কথা বলেন।
‘ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মিডিয়া কথা বলবে, সেসব মিডিয়ার বিপক্ষে অবস্থান অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগ প্রশ্নে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসবে সেটা হচ্ছে, তাদের আগে বিচার হতে হবে,’ বলেন এই ছাত্রনেতা।
এ সময়ে ফ্যাসিবাদের পক্ষে লিখলে কলম ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন হাসনাত। তিনি বলেন, ‘যেসব টকশোজীবী ও বুদ্ধিজীবী এখন আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য সরব হয়েছেন, আপনারাই এতদিন ফ্যাসিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন। এছাড়া ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মিডিয়া, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী কথা বলবে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেব।’
আরও পড়ুন: ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দিতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
তিনি বলেন, ‘আমরা বারবার বলছি—আপনারা যদি তরুণ প্রজন্মের কথা বুঝতে ব্যর্থ হন, তাহলে আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে, পরবর্তী সময়ে যারাই নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আসবে তাদের পরিণতিও একই হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই আহ্বায়ক বলেন, ‘আজকে তরুণ প্রজন্মকে রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে। আমাদের রক্ত দিতে হয়েছে। ভয়কে জয় করতে হয়েছে। কারণ, আমাদের দুর্বৃত্তায়ন ও প্রতিহিংসার রাজনীতির সংস্কৃতি আশাহত করেছে। আমরা জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র করতে পারিনি।’
‘আপনারা যদি কোনো কারণে মনে করেন প্রোক্লেমেশন দিতে ও জন আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে আপনাদের রাষ্ট্রীয় কোনো বাধা রয়েছে সেটি আপনারা জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। আমরা যেভাবে আগস্ট মাসে রাস্তায় নেমেছেন একইভাবে আবার রাস্তায় নেমে আসবেন। এই প্রোক্লেমেশন দিতে আপনাদের বাধা কোথায়? কারা বাধা দিচ্ছে সেগুলো আপনারা জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। যদি আপনারা ব্যর্থ হন তাহলে উপদেষ্টার কাতার থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসুন। আমরা একসঙ্গে মিলে যেভাবে হাসিনার পতন ঘটিয়েছি, প্রয়োজন হলে সেভাবে আবার আমাদের প্রোক্লেমেশন আদায় করে নেব।’
আরও পড়ুন: শিক্ষকদের সর্বোচ্চ মর্যাদায় ভূষিত করতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, মুখপাত্র আরেফীন মুহাম্মাদ হিজবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী, তামিম আহমেদ প্রমুখ।
৭ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তান থেকে চাল আমদানি করবে বাংলাদেশ
পাকিস্তান থেকে জি টু জি-ভিত্তিতে আতপ চাল আমদানি করবে সরকার। এ লক্ষ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তান ও খাদ্য অধিদপ্তরের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ চুক্তি সই হয়।
ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তানের চেয়ারম্যান সৈয়দ রাফিও বশির শাহ এবং খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুল খালেক সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
দেশের চালের বাজার স্থিতিশীল, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য-সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং শক্তিশালী করতে এই সমঝোতা স্মারক এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এ সময় খাদ্য সচিব মো. মাসুদুল হাসান, পাকিস্তানের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সচিব শাকিল আহমেদ, হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফসহ উভয় পক্ষের সংশ্লিষ্ট ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১০ ঘণ্টা আগে
দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি শনাক্ত
চীনে আতঙ্ক ছড়ানো হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) জাপান, মালয়েশিয়া ও ভারতে ছড়িয়ে পড়ার পর এবার বাংলাদেশেও একজনের দেহে শনাক্ত হয়েছে।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ভাইরাসটিতে একজন নারী আক্রান্ত হয়েছেন, যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায় বলে জানা গেছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: এইচএমপিভি ভাইরাস: কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
গত ৮ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, কোভিড-১৯ মহামারির পর চীনে বাড়ছে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর সংক্রমণ, যা আরেক স্বাস্থ্য সংকটের উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসটি নতুন কোনো ভাইরাস নয়। তবে এটা শুধু চীনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি আরও আগে থেকেই আমরা পেয়েছি। কাজেই এটা নতুন কোনো ভাইরাস নয়।’
২ দিন আগে
দেশে প্রথমবারের মতো ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত
দেশে প্রথমবারের মতো রিওভাইরাস শনাক্ত করেছে ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর)। ৫ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হলেও কারও অবস্থাই গুরুতর ছিল না।
২০২৪ সালে নিপা ভাইরাসের লক্ষ্মণ নিয়ে আসা রোগীদের পরীক্ষা করে ৫ জনের শরীরে এটি পাওয়া যায়।
তবে এ নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই জানিয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন ইউএনবিকে বলেন, ‘এটি আমরা ২০২৪ সালে পেয়েছি। আক্রান্তদের মধ্যে কেউই গুরুতর অসুস্থ হননি। চিকিৎসার পর সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।’
আরও পড়ুন: এইচএমপিভি ভাইরাস: কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
তিনি বলেন, শীতে খেজুরের কাঁচা রস পান করে প্রতি বছর অনেকেই নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হন। যে ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস পাওয়া গেছে তারা সবাই নিপা ভাইরাস নেগেটিভ ছিলেন। এই রোগটি তেমন বিস্তার লাভ করেনি। দেশে ওই ৫ জনই প্রথম এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় আইইডিসিআরের নিয়মিত গবেষণার মাধ্যমে ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়।
৪ দিন আগে
তুরস্ককে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান ড. ইউনূসের
তুরস্ককে তাদের প্রযুক্তি বাংলাদেশে আনা, আরও বেশি বিনিয়োগ, কারখানা স্থানান্তর এবং বাংলাদেশের যুব শক্তিকে কাজে লাগাতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘আপনারা প্রযুক্তির নেতা, এখানে আপনাদের প্রতিরক্ষা শিল্প গড়ে তুলতে পারেন। আসুন শুরু করুন..।’
তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাতের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশকে বিশ্বের ৮ম জনবহুল দেশ উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের যুবকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করছে এবং এ ক্ষেত্রে তুরস্কের সহায়তা কামনা করেন।
তিনি বলেন, 'আমাদের তরুণদের সুযোগ দিতে হবে, তাই আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনাদের দেশের কাছে এটাই আমার আবেদন। আমাদের তরুণদের কাজে লাগিয়ে এখানে আপনাদের কারখানা চালু করুন। যাতে আপনারা এ অঞ্চলে আপনাদের পণ্য সরবরাহ করতে পারেন।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে একটি স্বপ্নের সম্পর্ক গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্ক খুবই উষ্ণ। আমরা সব খাতে এটি গড়ে তুলতে চাই।’
আরও পড়ুন: বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
তিনি বলেন, অনেক কিছু করার আছে, কিছু কিছু কাজ করার জন্য আমরা আপনাদের সমর্থন প্রয়োজন, আপনাদের প্রযুক্তি এবং আপনাদের বিনিয়োগ চাই।
তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ড. ওমর বোলাত বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্ক টেক্সটাইল শিল্পের বাইরেও তাদের সহযোগিতাকে বহুমুখী করতে পারে। বাংলাদেশ থেকে এটি তুরস্কের প্রধান আমদানি পণ্য।
তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা শিল্প, স্বাস্থ্য পরিচর্যা, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কৃষি যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সহযোগিতা হতে পারে। তিনি বলেন, 'আমরা বাংলাদেশের আমদানির ক্ষেত্রে ভারতসহ অন্যান্য বাজারকে প্রতিস্থাপন করতে পারি। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা থাকতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পারস্পরিক সহযোগিতা করতে পারে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে তুরস্কে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৫৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার এবং আমদানির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪২ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার।
বর্তমানে পোশাক ও টেক্সটাইল, এক্সেসরিজ, কেমিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং, নির্মাণ এবং জ্বালানি খাতে তুরস্কের প্রায় ২০টি বড় কোম্পানি বাংলাদেশে কাজ করছে।
বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী তুর্কি কোম্পানিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো তুর্কি এলপিজি কোম্পানি আয়গাজ, কোকা-কোলা আইসেক এবং রেফ্রিজারেটর ও এসি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান আর্কিলিক (যা সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডকে অধিগ্রহণ করেছে)।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা গত আগস্টে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে তার টেলিফোন আলাপের কথা স্মরণ করেন। এরপর অক্টোবরে তুরস্কের আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করেছেন।
এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন ও মাহফুজ আলম, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব লামিয়া মোর্শেদ, বিডার চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ের ঘোষণা ১৫ জানুয়ারি নাও হতে পারে: উপদেষ্টা মাহফুজ
৫ দিন আগে
তীব্র ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের অনেক অংশে মঙ্গলবার সকালে ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এটি দেশকে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশে কোনো হতাহতের খবর না পাওয়া গেলেও এটি ভবিষ্যতে সম্ভাব্য বিপর্যয়কর ভূমিকম্প মোকাবিলায় দেশের প্রস্তুতির দিকে নতুন করে মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: ভানুয়াতুতে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, সাম্প্রতিক নিদর্শনগুলো কেবল ২০২৪ সাল থেকে ৬০টিরও বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। এসব ঘটনা ব্যাপক দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতির জরুরি প্রয়োজনের প্রতিই ইঙ্গিত দেয়।
সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাপক ভূমিকম্পের ঝুঁকির মুখোমুখি। এখানকার ঘনবসতি, পুরোনো অবকাঠামো এবং বিল্ডিং কোডের দুর্বল প্রয়োগ এই বিপদগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অবিলম্বে পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ভবিষ্যতের জন্য একটি ভয়াবহ দৃশ্য অপেক্ষা করছে।
নেপাল, ভারত, ভুটান ও চীনেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, যা এই ধরনের দুর্যোগের আন্তঃদেশীয় মাত্রাকে তুলে ধরে।
ঝুঁকিতে দেশ
বেশ কয়েকটি সক্রিয় ফল্ট লাইনসহ টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষ অঞ্চলে বাংলাদেশের অবস্থান দেশটিকে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকিতে ফেলেছে। ঐতিহাসিকভাবে, এই অঞ্চলে বিধ্বংসী ভূমিকম্প হয়েছে, ১৮৬৯ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে পাঁচটি বড় ঘটনা রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক শূন্য এর উপরে নিবন্ধিত হয়েছে।
এরপর থেকে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প স্তিমিত হয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ভূমিকম্পের বিপর্যয়ের আগে এই নীরবতা থাকতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভূমিকম্পের আঘাত উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৪ সাল থেকে রেকর্ড করা ৬০টি ভূমিকম্পের মধ্যে তিনটি ৪ দশমিক শূন্য মাত্রার উপরে এবং ৩১টি ৩ দশমিক শূন্য থেকে ৪ দশমিক শূন্যের মধ্যে ছিল। এই ঊর্ধ্বগতি, শহর এলাকায় বিস্তৃতি এবং অপর্যাপ্ত অবকাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত জাতিকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে তুলে ধরে।
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
ঝুঁকিপূর্ণ শহর ঢাকা
ভূমিকম্পে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের তালিকায় ঢাকা অন্যতম। ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধসের ঘটনা ঘটে। এতে ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারায়। এই ঘটনাটি দুর্বলভাবে নির্মিত ভবনগুলোর সৃষ্ট বিপদের একটি ভয়াবহ উদাহরণকে তুলে ধরে।
২০১৮ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, রামপুরা, মতিঝিল ও খিলগাঁওয়ের মতো এলাকার অনেক স্থাপনা কাঠামোগত ও নকশার মান পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের জৈন্তাপুর চরম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় একটি উচ্চমাত্রার ভূমিকম্প ঢাকায় অকল্পনীয় মাত্রার বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
আন্তঃদেশীয় ভূমিকম্প ঝুঁকি মূল্যায়ন
২০২৪ সালের মার্চে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (এমওডিএমআর) বাংলাদেশে আন্তঃদেশীয় ভূমিকম্প ঝুঁকি মূল্যায়ন চালু করে। যা জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যালয় (ইউএনডিআরআর) এবং গ্লোবাল ভূমিকম্প মডেল (জিইএম) ফাউন্ডেশনের সহায়তায় একটি কার্যকর পদক্ষেপ।
এই উদ্যোগটি দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করতে এবং কার্যকরী কৌশলগুলোর সুপারিশ করার জন্য উন্নত সম্ভাব্য ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ ধরণ, ভবনের ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং ভঙ্গুরতার মূল্যায়নকে তুলে ধরে।
ঢাকায় চার দিনব্যাপী প্রচার অনুষ্ঠানে প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্যে গুরুতর দুর্বলতার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তা, মানবিক সহায়তা সংস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঐতিহাসিক ভূমিকম্প, কাল্পনিক পরিস্থিতি এবং অবকাঠামোগত দুর্বলতা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে ভূমিকম্পের ধরনের উপর কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যা পরবর্তী প্রজন্মকে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় প্রস্তুত করে।
দুর্বলতা প্রকাশ
মূল্যায়ন থেকে মূল অভ্যন্তরীণ উল্লেখযোগ্য ত্রুটিগুলো প্রকাশ করে-
ভঙ্গুর অবকাঠামো: হাসপাতাল, জরুরি প্রতিক্রিয়া কেন্দ্র এবং সরকাররি দপ্তরগুলো এমন কাঠামোর মধ্যে রয়েছে, যা ভূমিকম্পের ধাক্কা সহ্য করার জন্য জরুরি পুনর্নির্মাণের প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলাদেশের কিছু অংশ
নগর পরিকল্পনায় ঘাটতি: বিল্ডিং কোডের দুর্বল প্রয়োগ এবং দ্রুত অপরিকল্পিত নগরায়ণ ঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষ করে ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়।
জনসচেতনতার ঘাটতি: জরুরি প্রটোকলগুলোর বিষয়ে কম বোঝার কারণে অনেক নাগরিক ভূমিকম্প পরিস্থিতির জন্য অপ্রস্তুত থাকেন।
কার্যকর উদ্যোগের আহ্বান
আন্তঃদেশীয় মূল্যায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে চিহ্নিত হলেও বিশেষজ্ঞরা ঝুঁকি কমাতে একটি সমন্বিত, বহুমাত্রিক ক্ষেত্রভিত্তিক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। মূল সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে:
• শক্তিশালী বিল্ডিং কোড ও প্রয়োগ করা।
• ভূমিকম্প প্রস্তুতি সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো।
• গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের জন্য সম্পদ বরাদ্দ করা।
• দক্ষতার সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য বেসামরিক-সামরিক সমন্বয় বৃদ্ধি করা।
আন্তঃদেশীয় মূল্যায়নের সুপারিশগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার দুর্বলতাগুলোকে ভূমিকম্পের হুমকির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষায় রূপান্তর করতে পারে।
আরও পড়ুন: চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
১ সপ্তাহ আগে
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলাদেশের কিছু অংশ
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ৭ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টা ৫ মিনিটে ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিসমিক সেন্টার থেকে ৬১৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
১ সপ্তাহ আগে
পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি বাংলাদেশ ও অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ: বক্তারা
পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে স্থানীয় সম্প্রদায়, সরকার এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের প্রতি সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, এটি কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা এই আহ্বান জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সইয়ের ২৭ বছর পরও শান্তি অর্জিত হয়নি স্বীকার করে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আহ্বান জানান তারা।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো. নাসিমুল গণি রচিত 'আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি ১৯৯৭: বাংলাদেশের অসমাপ্ত শান্তি বিনির্মাণ মডেল' শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় ইন্টিগ্রেশন ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল হাফিজ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন লেখক ও বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান।
উপদেষ্টা হোসেন ছোট ছোট বিষয়কে বড় ধরনের সংঘাতে পরিণত হওয়া থেকে রোধ করতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মৌলিক শ্রদ্ধাবোধ ও বোঝাপড়া গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, আমরা যদি সেখানে মৌলিক শ্রদ্ধাবোধ ও বোঝাপড়া প্রতিষ্ঠা করতে পারি, আমি মনে করি, ছোট ছোট ইস্যুতে বড় সংঘাত থাকবে না।
এই ভূমিতে শান্তি ফিরে পেতে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে উপদেষ্টা বলেন, তাদের স্বতন্ত্র গোষ্ঠীকেও স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, সমান অধিকার এবং সমানভাবে সম্মান করতে হবে।
হোসেন অবশ্য মনে করেন, বিশেষ করে সন্দেহের মধ্যে এত বছর পাশাপাশি থাকার পর এর সমাধান (অবিশ্বাস) সহজ নয়।
তিনি বলেন, 'আমরা দীর্ঘদিন সন্দেহের মধ্যে পরস্পর পাশাপাশি বসবাস করেছি। প্রথম দিকে তা না থাকলেও দ্রুতই তা বেড়ে যায়।’
তিনি আরও বলেন, এ ভূখণ্ডে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ‘তাদের সংস্কৃতিকে আমাদের সম্মান করতে হবে। এটা আমাদের একটা বৈচিত্র্য। আমাদের এটা (এই বৈচিত্র্য) মেনে নিতে হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে যেখানে আমরা একে অপরকে সম্মান করি; আমরা একে অপরের খেয়াল রাখি। শাসক কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এটি নিশ্চিত করতে হবে।’
আবদুল হাফিজ বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে শান্তি ও স্থিতিশীলতার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে যাই ঘটুক না কেন, সীমান্তের ওপারে (ভারত ও মিয়ানমারে) বসবাসকারী একই সম্প্রদায়ের ওপর প্রভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের এই নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।
শান্তি এখনো অর্জিত হয়নি উল্লেখ করে আব্দুল হাফিজ বলেন, জনগণের অংশগ্রহণ ও পরামর্শ একই সঙ্গে চলতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শান্তি প্রক্রিয়ার সমর্থনে সক্রিয় ভূমিকা অব্যাহত রাখতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, তারা বইটিতে চিহ্নিত পরিবর্তনগুলে মোকাবিলা করতে এবং এই অঞ্চলে একটি টেকসই শান্তি প্রচারের জন্য সরকারি সংস্থা, সুরক্ষা বাহিনী এবং বেসামরিক সমাজের মধ্যে আরও আলোচনাকে উৎসাহিত করে।
বইটির লেখক নাসিমুল গণি শান্তিচুক্তি সইয়ের আগে ও পরে পার্বত্য চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালন করেন এবং চুক্তির শক্তিশালী ও দুর্বল উভয় দিক বিশ্লেষণ করেন।
হাফিজ বলেন, বইটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো যখন তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসরত মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি রাজনৈতিক মাত্রা রয়েছে, কারণ মানুষ রাজনৈতিক পরিচয় চায়।
হাফিজ বলেন, এর একটি অর্থনৈতিক মাত্রা রয়েছে এবং একটি জাতিগত-ধর্মীয় মাত্রাও রয়েছে। যখন সেখানে বিদ্রোহ ও পাল্টা বিদ্রোহ রয়েছে এবং জমির মালিকানা নিয়ে এর গভীর সমস্যা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘১৯৯৭ সালে সই করা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামে টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি শান্তি বয়ে আনবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে চুক্তি সইয়ের ২৭ বছর পরও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমরা স্থিতিশীলতা দেখতে পাচ্ছি না। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা দেখছি না।’
১ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা, চান সহায়ক পরিবেশ
দেশের বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের ব্যাবসায়ীরা। এজন্য তারা সহায়ক পরিবেশ চান। কারণ যেকোনো দেশে বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য ডুয়িং বিজনেস (সহজে ব্যবসা করার সূচক) রিপোর্টে উন্নতি, সুশাসন, মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়ন ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন জরুরি।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার সঙ্গে এক বৈঠককালে এসব দাবি করেছে ঢাকায় সফররত ব্রিটিশ ব্যাবসায়িক প্রতিনিধি দল।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রশংসাসহ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলেন তারা।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্যাবসায়ীদের সংগঠন ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) উদ্যোগে আয়োজিত সাত দিনব্যাপী এ সফরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ।
অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন— ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ড. রুপা হক, ইউকেবিসিসিআইয়ের সভাপতি এমজি মৌলা মিঞা, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বজলুর রশিদ, মিডল্যান্ড অঞ্চলের সভাপতি ইমাম উদ্দিন আহমেদ, সদস্য আবু সুফিয়ান রনি, ফখরুল ইসলাম চৌধুরী ও এম এ কাদির।
এ ছাড়াও রয়েছেন ব্যাংক অব এশিয়ার পরিচালক আশরাফুল হক চৌধুরী, সুরি ইউনির্ভাসিটির অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ওয়াইউ জিয়ং, স্পিনর টেক লিমিটেডের প্রধান কর্মকর্তা কেন সু ও পরিচালক ইভা ঝাং, ম্যাট ট্যাম, গিনি লন্ডনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রবিন্দ্র জাং লামিছানি প্রমুখ।
বিডার চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুনের সভাপতিত্বে সভায় বিডার পক্ষ থেকে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন ব্যাবস্থাপনা পরিচালক গাজী একেএম ফজলুল হক, সেক্রেটারি ড. দেওয়ান চৌধুরী প্রমুখ।
বৈঠক শেষে এক সংক্ষিপ্ত সংবা সম্মেলনে রুপা হক জানান, বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী। এজন্য তারা বিনিয়োগ-সহায়ক পরিবেশ চান।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি সুদৃঢ় অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। এক্ষেত্রে দুদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার অনেক ক্ষেত্র আছে। আমরা এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।
ব্রিটিশ সরকারের এই সংসদ সদস্য বলেন, বাংলাদেশে অনেক ব্রিটিশ কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা আরও বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
সংগঠনটির চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ জানান, এ সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে বৃটিশ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। এ সফরের মাধ্যমে আপতত কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যাল ও গার্মেন্টস সেক্টরে বিনিয়োগ আসবে।
সভাপতি এমজি মৌলা মিঞা জানান, এরপরে আরও বিনিয়োগ আসবে। এটি প্রাথমিক পর্যায়। তবে বিশ্বব্যাপী এআইয়ের ব্যাবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সেক্টরের দিকে বেশি আগ্রহ রয়েছে বৃটিশ ব্যাবসায়ীদের।
এ বছরের শেষ নাগাদ এ সফরের বিনিয়োগ অসতে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
ভবিষ্যতে ব্যবসা পরিচালনা করতে ইচ্ছুক ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানান এমজি মৌলা মিঞা।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বজলুর রশিদ জানান, এ সফরের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেতে পারে।
১ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় আরাকান আর্মির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির (এএ) ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জন্য একটি স্পষ্ট জাতীয় কৌশল প্রণয়নের ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা সতর্ক করেছেন, আরাকান আর্মির সঙ্গে সময়মতো যোগাযোগ স্থাপন না করলে ‘সুযোগ হারানোর’ আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষত যখন বহির্বিশ্ব নৌপথের মাধ্যমে রাখাইনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াচ্ছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস) আয়োজিত ‘মংডুর পতনের পর রাখাইন: বাংলাদেশের ও অঞ্চলের জন্য প্রভাব’ শীর্ষক এক নীতিনির্ধারণী আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে।
এতে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, সাবেক কূটনীতিক এবং শিক্ষাবিদরা রাখাইন রাজ্যের ক্রমবর্ধমান পরিবর্তন ও তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনাটি পরিচালনা করেন বিআইপিএসএস-এর প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এএনএম মুনিরুজ্জামান।
আলোচকদের মধ্যে ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) শাহিদুল হক, মিয়ানমারে বাংলাদেশের প্রাক্তন ডিফেন্স অ্যাটাশে এবং লিবিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি।
রাখাইনে আরাকান আর্মির আধিপত্য
আলোচনায় জানানো হয়, রাখাইন রাজ্যের ৮০ শতাংশেরও বেশি এলাকা এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে, যার মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তও অন্তর্ভুক্ত।
উদ্বোধনী বক্তব্যে বিআইপিএসএস-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাফকাত মুনির বলেন, পরিস্থিতি থেকে সুবিধা আদায়ের উপায় খুঁজে বের করার কৌশল নিতে হবে। আলোচকরা আরাকান আর্মির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
মুনিরুজ্জামান ভারত কীভাবে তার মিয়ানমার কৌশল পুনর্বিন্যাস করেছে তা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশেরও স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি রাখাইনের কৌশলগত গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এটি বঙ্গোপসাগরের নৌপথে প্রবেশাধিকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং অঞ্চলটি সম্পদসমৃদ্ধ ও বহু-জাতিগোষ্ঠী সমন্বিত।
চীনা এবং ভারতীয় স্বার্থ
তিনি আরও বলেন, রাখাইন রাজ্যের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব বাড়ছে, বিশেষ করে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এবং বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডোরের পরিপ্রেক্ষিতে। এছাড়া চীন-মিয়ানমার তেল ও গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প রাখাইনের সংযোগকেন্দ্র হিসাবে ভূমিকা তুলে ধরে।
সহকারী অধ্যাপক আব্বাসি বলেন, জটিল ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন একটি বাস্তবধর্মী কৌশল। সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব না হলে অনানুষ্ঠানিক উপায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
তিনি সতর্ক করেন, আরাকান আর্মির আধিপত্য বাড়লে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
আব্বাসি বলেন, রাখাইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের অংশগ্রহণহীনতা উল্লেখযোগ্য। তিনি মিয়ানমারকে একটি ‘ছায়াযুদ্ধের ক্ষেত্র’ হিসেবে অভিহিত করেন। এছাড়া রাখাইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে কূটনৈতিক অবস্থানের পরিবর্তনকে তিনি ভূরাজনৈতিক অগ্রসরতার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গা সংকট এবং আরাকান আর্মি
আব্বাসি আরও বলেন, আরাকান আর্মির ‘আরাকান স্বপ্ন’ রোহিঙ্গাদের কোনো স্থান দেয় না। তিনি সতর্ক করেন যে, আরাকান আর্মি পূর্ণ স্বাধীনতার পরিবর্তে কনফেডারেশন পদ্ধতির পক্ষে থাকলেও তাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে।
শাহিদুল হকের দৃষ্টিভঙ্গি
মেজর জেনারেল (অব.) শাহিদুল হক আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনকে ‘উইন-উইন’ পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এটি একদিকে বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং অন্যদিকে অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করবে। তবে তিনি সতর্ক করেন, আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদে মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
নীতি নির্ধারণী আলোচনার সমাপ্তি
আলোচনা শেষে অংশগ্রহণকারীরা নিরাপত্তা ঝুঁকি, অর্থনৈতিক সুযোগ এবং আঞ্চলিক ভূরাজনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে মতবিনিময় করেন। তারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পুনর্বাসন প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন। পাশাপাশি আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষায় টেকসই সমাধান খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
১ সপ্তাহ আগে