বাংলাদেশ
কপ২৯: স্বল্পোন্নত-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে ২০০ মিলিয়ন বরাদ্দ দিতে ইইউ’র সমর্থন চাইল বাংলাদেশ
জলবায়ু সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বাকুতে কপ২৯-এর চূড়ান্ত ফলাফলের বিষয়ে এলডিসি এবং ইইউ মন্ত্রীদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়।
বৈঠকে অবশিষ্ট সমস্যাগুলোর সমাধানে উভয় পক্ষের সহযোগিতায় একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সমতাভিত্তিক চুক্তি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি বলেন, ‘অনেক সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়েছে।’
আরও পড়ুন: কপ২৯: আজারবাইজান পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস
এছাড়া উভয় পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে কপ২৯ -এ একটি অর্থবহ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক চুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
বৈঠকে এলডিসি মন্ত্রীরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং তাদের মূল অবস্থান তুলে ধরেন। এছাড়া ইইউ মন্ত্রীরা এলডিসি দেশগুলোর উদ্বেগের বিষয়গুলো স্বীকার করেন এবং জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে জলবায়ু অর্থায়ন, অভিযোজন, নির্গমন হ্রাস এবং গ্লোবাল স্টকটেক প্রক্রিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ বৈঠক, কপ২৯-এর চূড়ান্ত আলোচনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কপ২৯: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
১৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের সমৃদ্ধ-বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ২০-২৩ নভেম্বর রিয়াদে প্রদর্শিত হবে
বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও জীবনধারাকে তুলে ধরতে বুধবার বিকাল ৪টায় শুরু হচ্ছে 'রিয়াদ সিজন'-এর 'বাংলাদেশ কালচার' পরিবেশনা।
এই উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্টটি সৌদি আরবের প্রবাসীদের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরবে এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্য, শিল্প এবং রীতিনীতি সম্পর্কে একটি প্রাণবন্ত আভাস দেবে।
আল সুয়াইদি পার্কে চার দিনব্যাপী এই উদযাপনের সময় বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পী, সেলিব্রিটি এবং প্রভাবশালীদের একটি লাইনআপ দেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য প্রদর্শন করবে।
প্রাণবন্ত পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী সংগীত, নৃত্য এবং সুস্বাদু বাংলাদেশি খাবারে ভরা এই অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের ঐতিহ্যের একটি দর্শনীয় প্রদর্শনের প্রতিশ্রুতি দেয়।
তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি রক লিজেন্ড নগর বাউল জেমস, ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ডিজে সনিকা এবং জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী পড়শী ও বিউটি খান।
রিয়াদে ২২ নভেম্বরের অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ হবে জেমসের বহুল প্রতীক্ষিত প্রথম পরিবেশনা।
একজন বাংলাদেশি প্রবাসী ইউএনবিকে বলেন, ‘এটা সত্যিই আনন্দের খবর যে জেমস পরিবেশনা করবে! রিয়াদে তার প্রথম পরিবশেনা অবশ্যই একটি স্মরণীয় ঘটনা হবে। আমার বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেওয়া এবং শোটি উপভোগ করা একটি দুর্দান্ত পরিকল্পনা বলে মনে হচ্ছে। এমন একজন সেরা শিল্পীকে সরাসরি দেখার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত সুযোগ হবে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসসা আল দুহাইলান সম্প্রতি বলেছেন, ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভিসা ইস্যু করছে। সৌদি আরবে ইতোমধ্যে ৩০ লাখ কর্মী কাজ করছেন।
তিনি “গ্রিন সৌদি ইনিশিয়েটিভ' এর মতো উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ এবং কিংডম ভিশন ২০৩০ এর অধীনে মেগা প্রকল্পগুলোতে কাজে নিয়োগ করার জন্য আরও কর্মী, বিশেষত দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।”
রাষ্ট্রদূত সৌদি অর্থনীতি ও সমাজে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অমূল্য অবদানের কথা স্মরণ করেন এবং নিরলস পরিশ্রমী হিসেবে তাদের প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-রিয়াদ রাজনৈতিক বৈঠক: প্রাধান্য পাবে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও ক্রাউন প্রিন্সের সফর
তারাও বছরে বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে।
২০২৩ সালে প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশি ওমরাহ ও হজ পালনের জন্য সৌদি আরব ভ্রমণ করেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেশি।
সৌদি আরব সম্প্রতি তার দেশে বসবাসকারী বিশাল প্রবাসী সম্প্রদায়ের সঙ্গে তার সংযোগ জোরদার করার লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ চালু করেছে।
সৌদি সরকারের একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, 'গ্লোবাল হারমনি' নামের এই উদ্যোগটি দেশে প্রবাসীদের জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার চেষ্টা করে, যার মধ্যে তাদের ক্যারিয়ার, পারিবারিক গতিশীলতা, সামাজিক ও বিনোদনমূলক ক্রিয়াকলাপ, সৌদি অর্থনীতিতে অবদান এবং অনুপ্রেরণামূলক সাফল্যের গল্প রয়েছে।
গ্লোবাল হারমনি ইনিশিয়েটিভ, রিয়াদ সিজন ২০২৪-এর অংশ, বাংলাদেশি প্রবাসীসহ সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সম্প্রীতি প্রচারের জন্য সাজানো হয়েছে।
এই উদ্যোগটি সৌদি ভিশন ২০৩০ এর অধীনে একটি সহযোগী প্রচেষ্টা, যা সাধারণত বিনোদন কর্তৃপক্ষ, গণমাধ্যম মন্ত্রণালয় এবং জীবনযাত্রার মান নিয়ে কাজ করে।
সৌদি আরবের গণমাধ্যম মন্ত্রণালয় আয়োজিত এবারের 'রিয়াদ সিজন'-এ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানসহ ৯টি দেশের শিল্পীরা অংশ নিয়েছেন।
১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ৪৫ দিনব্যাপী এ উৎসব চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
সাংস্কৃতিক বিনিময়কে সামনে রেখে ইভেন্টটির লক্ষ্য সৌদি আরব এবং অংশগ্রহণকারী দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা। উৎসবটিকে বিশ্বব্যাপী মঞ্চে একটি প্রধান শীতকালীন বিনোদন আকর্ষণ হিসাবে স্থান দেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগটি সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার কেন্দ্র হিসাবে তার ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বব্যাপী সংযুক্ত সমাজকে উৎসাহিত করার সৌদি আরবের বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের নেতৃত্বে সৌদি আরবের গৃহীত উচ্চাভিলাষী রূপান্তরমূলক যাত্রার মূলে সংস্কৃতি রয়েছে।
সৌদি ভিশন ২০৩০ এ বলা হয়েছে যে সংস্কৃতি ‘আমাদের জীবনযাত্রার মানের জন্য অপরিহার্য’ এবং দেশের সাংস্কৃতিক বিকাশ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়।
আরও পড়ুন: সম্ভাব্য সব ক্ষেত্রে ঢাকার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াবে রিয়াদ: সৌদি ক্রাউন প্রিন্স
২ দিন আগে
বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের পতন ভারতের জন্য বড় কূটনৈতিক ধাক্কা: টিআইবি
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলেছে, 'নতুন বাংলাদেশ' সম্পর্কে ভারতের নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। স্বৈরাচারী সরকারের পতন ইতিহাসে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও কৌশলগত পরাজয় বলেও উল্লেখ করে সংস্থাটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভারত তার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও কৌশলগত পরাজয় মেনে নিতে পারবে না। এটা স্বীকার করার সাহস তাদের নেই।'
স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর নতুন বাংলাদেশের প্রথম ১০০ দিন নিয়ে টিআইবির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সংগঠনটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহায়তা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা আশা করছি ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে।’
আরও পড়ুন: হাসিনার স্বৈরতন্ত্রকে সহজতর করেছে বিচার বিভাগ: টিআইবির নির্বাহী পরিচালক
তিনি বলেন, বাংলাদেশের 'ইতিবাচক পরিবর্তনের' পর ভারত প্রত্যাশিত 'ইতিবাচক ভূমিকা' পালন করতে বা 'ইতিবাচক মনোভাব' দেখাতে পারছে না, কারণ ভারত ইতিহাসে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও কৌশলগতভাবে সবচেয়ে বড় পরাজয় মেনে নিতে পারছে না।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'তারা (ভারত) এখনো বাংলাদেশকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে, যা বাংলাদেশের এই স্বৈরতন্ত্রকে সমর্থন করে।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সম্ভাব্য অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির কিছু ক্ষেত্রে (ভারতের পক্ষ থেকে) ভারতের গণমাধ্যম অনুঘটকের ভূমিকা পালনের জন্য এটি বিশাল ঝুঁকি তৈরি করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অনেকের ধারণা ছিল ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন, জনগণ ও গণমাধ্যমে 'উদার চিন্তার' প্রচার হয়। ‘আমরা মনে করি, ভারত (সেই উদার চিন্তাভাবনা থেকে) বদলে গেছে।’
তিনি বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশকে যেভাবে তুলে ধরছে তা অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ এবং অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য 'বিরক্তির কারণ'। এটা আমাদের (বাংলাদেশ) জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তবে আমরা এটাও মনে করি যে এটি ভারতের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর এবং লজ্জাজনক। তাই ভারতকে এ পথ থেকে সরে আসতে হবে।
তিনি ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তারা সব সময় দরজা উন্মুক্ত রাখার পক্ষে। ‘আমরা সবসময় দরজা উন্মুক্ত রাখার কথা বলি। ভারত আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী। আমরা ভারতের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। এক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: বছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়: টিআইবি
বাংলাদেশের ক্রান্তিকালে ঝুঁকি রয়েছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ভারতের ভূমিকা ইতিবাচক এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে খুবই নেতিবাচক হতে পারে। তিনি বলেন, 'এই ঝুঁকির কথা মাথায় রাখতে হবে।’
এর আগে অনুষ্ঠানে 'স্বৈরশাসনের পতনের পর প্রথম ১০০ দিনে নতুন বাংলাদেশ পর্যবেক্ষণ' শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাহজাদা এম আকরাম।
প্রতিবেদনে আকরাম বলেন, কর্তৃত্ববাদের পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে এবং নিজেদের ভুল স্বীকার করতে ভারতের ব্যর্থতা এবং ভারতে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং সর্বোপরি ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন সরকার ও বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক হতে পারে।
তিনি বলেন, ভারত সরকার, রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যম গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের বাস্তবতা মেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক ভুল তথ্য ও গুজব ছড়াচ্ছে।
বাংলাদেশে জোরালো প্রতিবাদ সত্ত্বেও 'সীমান্ত হত্যা' অব্যাহত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন টিআইবির এই কর্মকর্তা।
প্রতিবেদনে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোভাব ইতিবাচক।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, রাশিয়া, চীন, ইরান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে।’
তিনি বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ডিরেক্টর মুহাম্মদ বদিউজ্জামান ও টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ডিরেক্টর মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ-সম্পদ অবিলম্বে ফ্রিজ করুন: টিআইবি
৪ দিন আগে
বাংলাদেশকে আরও জলবিদ্যুৎ দিতে আগ্রহী নেপাল
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশকে আরও জলবিদ্যুৎ দিতে আগ্রহী নেপাল।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নেপালের পরিবেশমন্ত্রী আই বাহাদুর শাহী ঠাকুরি এই আগ্রহের কথা জানান।
বাকুতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বৈঠক শেষে এই তথ্য জানান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ভুটান, নেপাল ও ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে। এছাড়া জানুয়ারিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা নিয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার বন্ধ করতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে অংশ নেবে নেপাল, ভূটান ও বাংলাদেশ। এটি কোথায় হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। এছাড়া ওই বৈঠকে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলার প্রশমন, অভিযোজন ও লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান পরিবেশ উপদেষ্টা।
লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে এক হয়ে কাজ করার ওপর জোর দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বড় দেশগুলোর চেয়ে ছোট দেশগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা সক্ষমতা অনেক কম।
নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রায় একই। জলবায়ু পরিবর্তন কোনো সীমানা মানে না। এর প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে একই কাজ করতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: নদী-খাল দখলদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের এখনই সময়: পরিবেশ উপদেষ্টা
আগামী প্রজন্মকে দূষণমুক্ত নদী-খাল দেখাতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
৪ দিন আগে
বাংলাদেশে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় পুঁজিবাজারে তেজিভাব
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ফিরে আসায় গত কয়েক সপ্তাহে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় পুঁজিবাজারের লেনদেন হতে দেখা গেছে।
সম্প্রতি বন্ধ হওয়া প্রান্তিকে অনুকূল আয়সহ শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারণে পুঁজিবাজারের বেঞ্চমার্ক সূচক টানা তিন সপ্তাহ ধরে তার লাভের ধারা বাড়িয়েছে।
স্থিতিশীলতায় সামষ্টিক পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখিয়ে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এই সপ্তাহে ৮৯.৪৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৫৫ স্তরে পৌঁছেছে।
বিস্তৃত সূচকে শতকরা পরিবর্তন ছিল ১.৭০ শতাংশ। বাজারের অংশগ্রহণ ছিল ৮.৫৫ শতাংশ। বাজারটিতে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫৫৪ কোটি টাকা।
ক্রমবর্ধমান খাদ্য মূল্যস্ফীতির প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পণ্য আমদানি সহজীকরণ এবং প্রধান খাদ্য বরাদ্দ জোরদার করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ভোজ্য তেল, চিনি এবং ছোলার মতো প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে অস্থায়ীভাবে ঋণপত্র (এলসি) মার্জিন সরিয়েছে। দাম স্থিতিশীল রাখতে রমজান পর্যন্ত পণ্য আমদানিকারকদের ২৫ শতাংশ একক ঋণগ্রহীতার আবেদনের সীমা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ব্যয়বহুল ও পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকর এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আর ৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের এই প্রকল্পটি জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকিও তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে চায় সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
এদিকে, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর ওপর চাপ কমাতে জানুয়ারি মাস থেকে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য বিক্রির পরিকল্পনা করছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)।
উল্লেখযোগ্য রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংক্ষিপ্তভাবে ২০ বিলিয়ন ডলারের সীমা অতিক্রম করেছিল। তবে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে ১.৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধের পরে এই প্রান্তিকে রিজার্ভ কমে গেছে।
চলমান শ্রমিক অসন্তোষ সত্ত্বেও তৈরি পোশাক খাতের অক্টোবরের রপ্তানি আয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ২০ দশমিক ৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ইতোমধ্যে সৌদি আরব বাংলাদেশি নার্স নিয়োগ শুরু করেছে। যা আরও দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানির দিকে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
তবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটি ছোট করেছে। পরিবর্তে কাজ শেষ করার জন্য সুস্পষ্ট সময়সীমাসহ কয়েকটি অগ্রাধিকারযুক্ত অঞ্চলের উপর মনোনিবেশ করেছে।
মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার কঠোর মুদ্রানীতির প্রতিরক্ষা সত্ত্বেও ব্যবসাগুলো উচ্চ সুদের হারের সঙ্গে লড়ছে।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জন্য বৈদেশিক সহায়তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সরকারি সংস্থাগুলো সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যর্থতার কারণে সরকার কাটছাঁটের কথা বিবেচনা করছে।
ব্যাংকিং খাতে একীভূতকরণ, অধিগ্রহণ ও পুনঃমূলধন সহজতর করতে 'ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট' নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ব্যাংকিং, রাজস্ব আয় ও পুঁজিবাজার সংস্কারে সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
কৃষি উৎপাদনে সহায়তার জন্য সার আমদানিতে নগদ মার্জিন হার ন্যূনতম রাখতে ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এছাড়া, অর্থপ্রদানের ভারসাম্যে সাম্প্রতিক ব্যাঘাতের কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কাছ থেকে বাজেট-সহায়ক ঋণ চাইছে। যাতে অর্থনীতির জন্য স্বাচ্ছন্দের সুযোগ তৈরি করা যায়।
গত তিন মাসে বাংলাদেশ প্রবাসীদের কাছ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ে ঘাটতির কথা জানিয়েছে। যার ফলে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া বেড়েছে।
অনলাইন কর পরিশোধেল জন্য নতুন ফি প্রবর্তন করা হয়েছে। যা কর প্রদাদের প্রক্রিয়াকে সহজ করবে।
জাপানের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে এবং বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই ইতিবাচক অগ্রগতি সত্ত্বেও পোশাক খাতে দেরিতে মজুরি দেওয়ার কারণে শ্রমিক অসন্তোষ একটি উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ হিসাবে রয়ে গেছে।
রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে ৯০ দিনের ঋণে ১১টি পণ্য আমদানির অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) উল্লেখ করেছে যে, বাজেট-সহায়ক ঋণে সুইচ করা, রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বহিরাগত অর্থায়ন বাধাগুলোর মধ্যে অর্থনীতির জন্য কিছুটা স্বস্থির জায়গা দেবে।
কৃষি উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে সার আমদানিতে নগদ অর্থের মার্জিন কম রাখতেও ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
একদিকে রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের ঘাটতি আর্থিক স্থিতিশীলতার উপর প্রভাব ফেলছে। অন্যদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের হার বেড়েছে।
তাছাড়া এসিইউ’র পাওনা পরিশোধের পর সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ভঙ্গুরতাকে তুলে ধরেছে। শ্রমিক অসন্তোষ সত্ত্বেও শক্তিশালী তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয় এবং সৌদি আরবে বাংলাদেশি নার্স নিয়োগ উচ্চ-দক্ষ শ্রম রপ্তানির দিকে একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রটি বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে কৌশলগত পদক্ষেপের মিশ্রণে চিহ্নিত করা হয়েছে।
জাপানের সঙ্গে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের জন্য নতুন সুযোগ দেবে।
এদিকে, পূর্ববর্তী উচ্চাভিলাষী ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রকল্পের পরিবর্তে নির্বাচিত অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গুরুত্বারোপ, উন্নয়নের জন্য আরও লক্ষ্যযুক্ত পদ্ধতিকে তুলে ধরে।
পরিশেষে, বাংলাদেশ স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে কৌশলগত পদক্ষেপের মিশ্রণসহ একটি জটিল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে। এই যাত্রায় বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্য অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন।
আরও পড়ুন: সোম-মঙ্গল-বুধবার বন্ধ থাকবে ব্যাংক ও পুঁজিবাজার
৬ দিন আগে
বাংলাদেশ-ভারত, নেপাল ও ভুটানকে দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড তৈরির চিন্তা করা উচিত: অধ্যাপক ইউনূস
নেপাল ও ভুটানের উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ভাগাভাগির জন্য দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, ‘নেপাল মাত্র ৪০ মাইল দূরে হওয়ায় বাংলাদেশ সহজেই জলবিদ্যুৎ আনতে পারে। নেপালের জলবিদ্যুৎও সস্তা হবে,’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানকে দক্ষিণ এশিয়ার গ্রিড তৈরির কথা ভাবতে হবে।
বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে সোশ্যাল বিজনেস গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে বিদ্যুৎ গ্রিডের অভাবে হিমালয়ের দেশগুলোর জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনার বেশিরভাগই অব্যবহৃত রয়ে গেছে।
নেপালের কর্মকর্তারা বলেছেন, তার দেশের ৪০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভারত ও বাংলাদেশের মতো বড় দেশগুলোতে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে সহায়তা করতে পারে।
আজারবাইজানের রাজধানীতে কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বন্যা প্রতিরোধ এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পানির সর্বোত্তম ব্যবহারে বাংলাদেশ পানি ব্যবস্থাপনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পানি আমাদের প্রধান পরিবেশগত সমস্যা। আমাদের পানি ব্যবস্থাপনা এমনভাবে করতে হবে যাতে তা প্রকৃতিকে সহায়ক হয় ‘
সামাজিক ব্যবসা সভায় তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুব উন্নয়ন ও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের ওপরও জোর দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সরকার আগামী জানুয়ারিতে তরুণদের জন্য একটি উৎসবের আয়োজন করবে। এই আয়োজনে দেশের ক্রিকেট বোর্ডের বার্ষিক টি-টোয়েন্টি বিপিএল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: কপ২৯: বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
১ সপ্তাহ আগে
কপ-২৯: জলবায়ু সংলাপের অগ্রভাগে বাংলাদেশের তরুণ নেতারা
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (ইউএনএফসিসিসি) কপ২৯-এর জন্য বৈশ্বিক নেতারা জড়ো হওয়ার পাশাপাশি তরুণ নেতা, নীতিনির্ধারক এবং জলবায়ু সমর্থকদের মধ্যে ‘জলবায়ু পরিবর্তন’ একটি শক্তিশালী আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে।
কপ-২৯ পূর্ববর্তী 'ইয়ুথ অ্যাজ এজেন্ট অব চেঞ্জ' শীর্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ জলবায়ু কর্মীরা। তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইডেন এবং অন্যান্য টিম ইউরোপ সদস্যদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময়, সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের প্রস্তাব দেওয়াসহ জলবায়ু নীতিতে জরুরি অগ্রগতির দাবি জানাবে।
জলবায়ু মোকাবিলায় বাংলাদেশের তারুণ্যের কণ্ঠস্বর
নিজ দেশ যে জলবায়ু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এবং সেগুলোর মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে জোরালোভাবে কপ-২৯ পূর্ববর্তী সংলাপে তুলে ধরেন বাংলাদেশের তরুণ নেতারা।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে থাকায় তরুণ নেতারা জলবায়ু অভিযোজন, অর্থায়ন এবং জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে উত্তরণসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে মনোনিবেশ করেছেন।
গোলটেবিল বৈঠকে তরুণ প্রতিনিধিরা বেশ কিছু সুপারিশ করেন। এর মধ্যে আরও উচ্চাভিলাষী নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) বাড়ানো এবং টেকসই শক্তির জন্য দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রণয়ন অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আরও পড়ুন: কপ২৯: আজারবাইজানের পথে প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশি তরুণ জলবায়ু কর্মী রিনা আহমেদ বলেন, 'আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ চাই, যেখানে আমাদের সম্প্রদায়গুলো স্বাভাবিক অবস্থায় থাকবে, জাতীয় নীতি গঠনে আমাদের আহ্বানগুলো থাকবে এবং আমাদের জলবায়ু অভিযোজন পদক্ষেপগুলো সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় যথেষ্ট শক্তিশালী হবে।’
জলবায়ু পরিবর্তন: জরুরি সংকট
গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের কারণে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা সংকটজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে উল্লেখ করে জলবায়ু বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ রহমান বলেন, ‘২০২৩ সাল ছিল সবচেয়ে উষ্ণতম বছর।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন শুধু উষ্ণায়ন নয়, বরং এটি খরাকে তীব্রতর করছে, বন্যা বাড়াচ্ছে, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে এবং বিশ্বব্যাপী ঝড়কে আরও খারাপ করছে। বাংলাদেশের মতো দেশে এর প্রভাব আরও বেড়েছে ‘
অভিযোজন, প্রশমন এবং সমর্থন
গোলটেবিল বৈঠকে জলবায়ু কর্মকাণ্ডের জন্য দুটি প্রধান উপায়ের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে-
জলবায়ু অভিযোজন: জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় সম্প্রদায়গুলোকে প্রস্তুত করা। বাংলাদেশের জন্য এর মধ্যে রয়েছে সমুদ্র প্রাচীরের মতো অবকাঠামো নির্মাণ এবং চরম আবহাওয়া সহনশীল কৃষি পদ্ধতির প্রসার ঘটানো।
জলবায়ু প্রশমন: নবায়ণযোগ্য জ্বালানি গ্রহণ, জ্বালানি দক্ষতা উন্নত করা এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমানোসহ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করা।
অভিযোজন এবং প্রশমনের সমন্বয়ে একটি বিস্তৃত পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ বলে জোর দেন এই তরুণ নেতারা।
সুইডেনের জলবায়ু দূত মায়া সোভেনসন বলেন, 'জলবায়ু অভিযোজনের জন্য আমাদের সমর্থন অবশ্যই এই মুহুর্তে জরুরিভিত্তিতে পূরণ করতে হবে। মারাত্মক জলবায়ুর প্রভাবের মুখোমুখি দেশগুলোর ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য।’
ইউরোপ দলের ভূমিকা
আরেকটি মূল বিষয় আলোচনা হয়। আর তা হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্বন বর্ডার অ্যাডজাস্টমেন্ট মেকানিজম (সিবিএএম), যা ২০২৬ সালে কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগটি কার্বন নিঃসরণ কমাতে এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পদক্ষেপকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে কম কঠোর জলবায়ু নীতিযুক্ত দেশগুলো থেকে আমদানিতে কার্বন মূল্য প্রয়োগ করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু উপদেষ্টা মার্গারেটা নিলসন বলেছেন, ‘সিবিএএম দেশগুলোকে তাদের নির্গমনের জন্য দায়বদ্ধ রাখতে এবং বিশ্ব বাজারে একটি সমান ক্ষেত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
আরও পড়ুন: কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
কপ২৯’র বাইরে
জলবায়ু আলোচনা অব্যাহত থাকায় সংস্থাগুলো নির্গমন কমানো এবং জলবায়ু-ইতিবাচক উদ্যোগ উভয়ই অনুসরণে উৎসাহিত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, জলবায়ু-ইতিবাচক প্রচেষ্টার লক্ষ্য কেবল কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন করা নয়, বরং বায়ুমণ্ডল থেকে অতিরিক্ত সিও২ অপসারণ করা।
বাংলাদেশসহ টেকসই নেতাদের জন্য জলবায়ু পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যুব নেতাদের এসব উদ্যোগ স্থানীয় সম্প্রদায়কে একত্রিত করছে এবং আন্তর্জাতিক পদক্ষেপকে অনুপ্রাণিত করছে।
নির্গমন কমানো, অভিযোজন এবং সবুজ শক্তি রূপান্তরের জন্য ব্যাপক পরিষেবাগুলোর গুরুত্বকেও জোর দিয়ে আসছে পরিবেশগত পরীক্ষা এবং ছাড়পত্র প্রদানকারী একটি বৈশ্বিক সংস্থা এসজিএস। সংস্থার পরিষেবাগুলো জিএইচজি নির্গমন পরামর্শ থেকে শুরু করে কার্বন নিরপেক্ষতা যাচাইকরণ পর্যন্ত বিস্তৃত। বেসরকারি এবং সরকারি উভয় খাতের নেতৃত্বকে সমর্থন করে।
তরুণদের নেতৃত্বে বৈশ্বিক আন্দোলন
কপ২৯ গোলটেবিল বৈঠকে জোর দিয়ে বলা হয়, জলবায়ু কর্মকাণ্ডে তরুণদের সম্পৃক্ততা নিছক প্রতীকী নয়। বরং এটি একটি প্রাণোচ্ছল এবং টেকসই ভবিষ্যত অর্জনের জন্য অপরিহার্য। টিম ইউরোপের সহযোগিতায় বাংলাদেশি তরুণ জলবায়ু নেতারা কার্যকর কৌশল এবং জবাবদিহিতার জন্য চাপ দিচ্ছেন। তাদের বার্তা পরিষ্কার: রূপান্তরমূলক পদক্ষেপের এখনই সময়।
বাকুতে কপ২৯ সম্মেলন যখন শুরু হচ্ছে, তখন এটা স্পষ্ট যে, আজকের তরুণরা কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নয়, বরং পরিবর্তনের কঠোর সমর্থকও। বিশ্ব সম্প্রদায় শুনছে, এবং এটি এই প্রজন্মের প্রতিশ্রুতি এবং প্রচেষ্টা যা অবশেষে জলবায়ু পরিবর্তনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: কপ-২৯ সম্মেলনের আগে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে যুববন্ধন
১ সপ্তাহ আগে
এলএনজি প্রকল্পে বাংলাদেশের খরচ হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার: রিপোর্ট
ধরা, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, মার্কেট ফোর্সেস এক প্রতিবেদনে বলেছে, নতুন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং আমদানি টার্মিনাল উন্নয়নের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আনুমানিক ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হতে পারে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ধরা’র উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার এর সভাপতিত্বে এবং ধরা’র সদস্য সচিব শরীফ জামিলের সঞ্চালনায় প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন মার্কেট ফোর্সেসের এশিয়া অ্যানার্জি অ্যানালিস্ট মুনিরা চৌধুরী।
এতে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, ইন্সটিটিউট ফর এনার্জি ইকোনোমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের এনার্জি ফর বাংলাদেশের লিড অ্যানালিস্ট শফিকুল আলম, মার্কেট ফোর্সেস’র এশিয়া এনার্জি ফাইন্যান্স ক্যাম্পেইনার মেগু ফুকুজাওয়া এবং থ্রিফিফটি ডট ওআরজি (350.org) সাউথ এশিয়ার মোবিলাইজেশন কো-অর্ডিনেটর আমানুল্লাহ পরাগ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: শিগগিরই আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটের এলএনজি সরবরাহকারীদের তালিকা করবে পেট্রোবাংলা
প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নতুন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্রকল্প এবং আমদানি টার্মিনালগুলোর জন্য বাংলাদেশকে প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করতে হবে। এই প্রকল্পগুলোর কারণে দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। একই সঙ্গে দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব যেমন বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে লাখ লাখ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হবে।
এতে বলা হয়, বর্তমানে, বাংলাদেশের জনগণ বিদ্যুৎ খরচের চাপে রয়েছে। ব্যয়বহুল আমদানি করা এলএনজি’র ওপর নির্ভরতা অব্যাহত থাকলে এ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নতুন বিশ্লেষণে আরও প্রকাশ করা হয় যে, যখন দেশ তীব্র তাপপ্রবাহ এবং বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্কটে রয়েছে, এলএনজির উপর ৫০ বিলিয়ন ডলারের এ বিনিয়োগের পরিবর্তে বাংলাদেশ ৬২ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, যা দেশের বর্তমান বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার দ্বিগুণ।
‘ব্যয়বহুল এলএনজি সম্প্রসারণ’ শিরোনামে এই নতুন প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের জিই ভার্নোভা ও জাপানের জেরার মতো বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে এলএনজি প্রকল্প সম্প্রসারণে আগ্রহী, যা দেশটির পরিবেশ ও স্থানীয় জনগণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হতে পারে। জাপানের সরকারি সংস্থা জাইকা এবং এনার্জি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট অব এনার্জি ইকোনমিক্স জাপান (আইইইজে) বাংলাদেশে আমদানিনির্ভর ও এলএনজি-কেন্দ্রিক শক্তির মহাপরিকল্পনা তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে যে, প্রস্তাবিত ৪১টি নতুন গ্যাস চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাধ্যমে বিষাক্ত গ্যাস নির্গমন হবে, যা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাগুলোর প্রকোপ বৃদ্ধি করবে এবং বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম খারাপ অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাবে।
ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, এই গ্যাস ও এলএনজি প্রকল্পগুলো আমাদের জনগণের সম্পদ দখল করে গড়ে উঠেছে। যারা এসব স্থাপনা গড়ে আমাদের সম্পদ দখল করে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি মামলা দিতে হবে। তাদের কাছ থেকে জবাবদিহিতা চাইতে হবে। জনগণের ক্ষতি করে এমন কোনো প্রকল্প আমরা চাই না। অনুমান বাদ দিয়ে, আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বিনিয়োগ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করে সরকারের নীতিমালায় এই দাবি অন্তর্ভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
মার্কেট ফোর্সেসের এশিয়া এনার্জি বিশ্লেষক এবং প্রতিবেদনটির লেখক মুনিরা চৌধুরী বলেছেন, অন্যায্যভাবে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে দূষণকারী তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসে নির্ভরশীল করার চেষ্টা করছে, যা কোটি মানুষের স্বাস্থ্য ও পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর।
বাংলাদেশের জনগণ দূষিত জীবাশ্ম গ্যাস নয়, বরং পরিচ্ছন্ন, নির্ভরযোগ্য এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও শ্বাস নেওয়ার জন্য সুস্থ বায়ু প্রাপ্য। জাপানি কোম্পানি ও অর্থদাতাদের জন্য এটাই বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর এবং গ্রিড আধুনিকায়নে সহায়তা করার একটি সুবর্ণ সুযোগ।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক এবং ধরা’র সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, জাইকা এবং আইইইজে’র প্রণীত ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান (আইইপিএমপি) অবশ্যই সংশোধন করা উচিত। কারণ এটি বাংলাদেশকে এলএনজির ওপর নির্ভরশীল করার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, যা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
এই প্রস্তাবিত এলএনজি প্রকল্পগুলো শুধু আর্থিকভাবে ক্ষতিকর নয় বরং আমাদের মূল্যবান বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশগত জীববৈচিত্র্যের জন্যও বিধ্বংসী, যার উপর লাখ লাখ মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। সৌর ও বায়ুবিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাংলাদেশের জন্য একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের দিশা। যদিও জাপানি সংস্থাগুলোর বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ রয়েছে, জাইকা দ্বারা এই খাতে নীতি প্রণয়ন গুরুতর স্বার্থের দ্বন্দ্বের উদাহরণ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জীবাশ্ম জ্বালনি এবং এলএনজির আমদানি দেশের জন্য আর্থিক আর্থিক বোঝা এবং প্রাণ-প্রকৃতির বিনাশের সঙ্গে জড়িত। বিগত সরকারের সময়ে এনার্জি সেক্টরে পরিকল্পনা করা হয়। বিশ্বব্যাংক, এডিবি ট্রান্সন্যাশনাল পুঁজির পলিসি উন্নয়নে কাজ করে। বিগত সরকার যে এনার্জি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে তা অনিবার্য ছিল না। এর পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রযুক্তিগত বিকাশ দামে সস্তা। জীবাশ্মজ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো জলবায়ু বিপর্যয় জন্য দায়ী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে বিদেশি বিশেষজ্ঞদেরকে দিয়ে বিগত সরকারের এই জ্বালানি মহাপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। নীতিগত জায়গা থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এই মহাপরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। পিএসসিসহ অন্যান্য সকল নীতির পরিবর্তন না হয়, তাহলে বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ গঠন করা যাবে না। এজন্য বাংলাদেশি পরিকল্পনাগুলো গ্রহণ করতে হবে আর বিদেশিদের প্রস্তুত সকল পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে।
মার্কেট ফোর্সেস-এর এশিয়া এনার্জি বিশ্লেষক মুনিরা চৌধুরী বলেন,‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ৫০ বিলিয়ন ডলারের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে এলএনজি আমদানি টার্মিনাল এবং ৪১টি নতুন এলএনজি পাওয়ার প্ল্যান্টের নির্মাণ, যার সম্মিলিত ক্ষমতা দেশের বিদ্যমান বিদ্যুৎ উৎপাদন বহরের চেয়ে বেশি।’
এই প্রকল্পের বিপুল নির্মাণ ব্যয়ের বাইরে, বাংলাদেশকে গ্যাস আমদানি করতে প্রতি বছর ৭ থেকে ১১ বিলিয়ন ডলারের অর্থ ব্যয় করতে হবে।
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য শক্তিতে ২৪০ গিগাওয়াট সৌর এবং ৩০ গিগাওয়াট উপকূলীয় বায়ুশক্তির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। পরিকল্পিত এলএনজি প্রকল্পগুলোর তহবিল নবায়নযোগ্য শক্তি ও গ্রিড উন্নয়নের দিকে পুনঃনির্দেশ করার আহ্বান জানানো হয়।
আরও পড়ুন: এলএনজি-সার, সয়াবিন তেল, চিনি ও ছোলা আমদানির অনুমোদন
১ সপ্তাহ আগে
বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, বাংলাদেশ সবসময় ফিলিস্তিনের নিপীড়িত ও নির্যাতিত জনগণের পাশে আছে। তাদের ন্যায্য দাবিকে বাংলাদেশ সবসময় সমর্থন করে আসছে। আমরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে।
সোমবার বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দপ্তরে তার সঙ্গে সাক্ষাতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান। এসময় ফিলিস্তিনকে সমর্থন জানিয়ে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
আরও পড়ুন: সীমান্তে কোনো শিথিলতা দেখানো যাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈঠকে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ভিসা ইস্যুকরণের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ, ভিসা সহজীকরণ, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বৈশ্বিক সমর্থনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ফিলিস্তিন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন সবসময় অব্যাহত থাকবে।
উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ১৯৭৪ সাল থেকে ফিলিস্তিনের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য আসা-যাওয়া করছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ১২টি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০৭ জন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশে আরও বেশি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করুক। কিন্তু তা যেন হয় দূতাবাসের মাধ্যমে যথাযথ নিয়ম ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে।
এবিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।
বৈঠকে আরও ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা জামান ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ সরকারসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভালো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
২ সপ্তাহ আগে
ব্রাজিলে গ্লোবাল সাউথ মিডিয়া সামিটে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন এনায়েতউল্লাহ খান
ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল সাউথ মিডিয়া সামিটে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন ইউনাইটেড নিউজ অফ বাংলাদেশ (ইউএনবি) ও ঢাকা কুরিয়ারের ইমেরিটাস সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান।
সাও পাওলোতে আগামী ১০ নভেম্বর শুরু হয়ে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত এ সম্মেলন চলবে। এতে অংশ নেবেন এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার উন্নয়নশীল অঞ্চলের গণমাধ্যম নেতা, নীতিনির্ধারক ও পরামর্শকরা।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে আমন্ত্রণ পেলেন ইউএনবির প্রধান সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান
এই সম্মেলনের লক্ষ্য গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠস্বরকে জোরদার করা এবং ভুল তথ্য, সেন্সরশিপ, সীমিত প্রেস স্বাধীনতা ও সম্পদের সীমাবদ্ধতার মতো মিডিয়া চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার বিষয়ে কাজ করা।
ধারাবাহিক আলোচনা, কর্মশালা ও প্যানেলের মাধ্যমে এ সম্মেলনে টেকসই, স্বাধীন গণমাধ্যম ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।
সম্মেলনের মূল থিম হলো-জনমত গঠনে এবং গণতান্ত্রিক সম্পৃক্ততায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ভূমিকা। যেসব অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী সাংবাদিকতা অসংখ্য বাধার সম্মুখীন হয়, সেসব অঞ্চলে নতুন মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সুযোগ এবং বাধা নিয়ে আলোচনা করবেন অংশগ্রহণকারীরা।
আরও পড়ুন: এনায়েতউল্লাহ খানকে 'ন্যাশনাল অর্ডার ফর মেরিট' পদকে ভূষিত করেছে রোমানিয়া
শীর্ষ সম্মেলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় উদ্দেশ্য হলো-আঞ্চলিক সহযোগিতা উৎসাহিত করা, গ্লোবাল নর্থের গল্পের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ করা। গ্লোবাল সাউথের মিডিয়াকে ক্ষমতায়িত করে এ সম্মেলন অধিক অন্তর্ভুক্তিমূলক মিডিয়া পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করার আশা করছে; এতে সমাজের জন্য সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোর কাভারেজ দিতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশের ৫ আগস্টের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে পরিবর্তিত মিডিয়া পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে আলোচনা করবেন এনায়েতউল্লাহ খান।
গণতন্ত্রের সমর্থনে এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশ্বিক গল্প বলার ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপরও তিনি গুরুত্ব দেবেন তার বক্তব্যে।
আরও পড়ুন: চীনে ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে ইউএনবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এনায়েতউল্লাহ খান
ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে যোগ দিতে গুয়াংজুতে ইউএনবির প্রধান সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান
২ সপ্তাহ আগে