ইনস্টিটিউট অব রেডিয়েশন অ্যান্ড পলিমার টেকনোলজিসের প্রকল্প পরিচালক রুহুল আমিন খানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (বিএইসি) একটি প্রতিনিধি দল রাশিয়ার লেনিনগ্রাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি আইসোটোপ উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন।
২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের রাশিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোসাটম জানায়, কৃষিপণ্যের বিকিরণ প্রক্রিয়াকরণ ও গবেষণা কাজের জন্য দেশে আরপিপি-৩৫০ গামা রেডিয়েশন সুবিধার আধুনিকায়নে রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশে।
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি আমদানিতে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ গ্যারান্টি: কর্মকর্তা
প্রতিনিধি দলের সদস্যদের আইসোটোপ উৎপাদন প্রযুক্তি, বিশেষত কোবাল্ট-৬০ এর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
পরিদর্শন শেষে রুহুল আমিন বলেন, বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, বহুমুখী প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের জন্য রুশ আইসোটোপ পণ্য সরবরাহ, বাংলাদেশে পারমাণবিক ওষুধ সরবরাহসহ শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ ও রাশিয়া।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি গবেষণা চুল্লি নির্মাণে রোসাটমের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি। এই ধরনের রিয়্যাক্টর আমাদের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করতে এবং ভবিষ্যতের প্রকল্পগুলোতে এটি ব্যবহার করতে সহায়তা করবে।’
আরও পড়ুন: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি বর্জ্য ফেরত নেবে রাশিয়া: প্রধানমন্ত্রী
রোজনারগোঅ্যাটমের উপ-মহাপরিচালক এবং ব্যবসায় উন্নয়ন পরিচালক নিকিতা কনস্টান্তিনোভ বলেন, ‘এই মুহুর্তে রোসেনারগোঅ্যাটম (রোসাটমের বৈদ্যুতিক বিভাগ) রাশিয়ান ফেডারেশনে রেডিওআইসোটোপগুলোর অন্যতম প্রধান উৎপাদদনকারী। রাশিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চ্যানেল রিয়্যাক্টরগুলোতে উৎপাদিত জীবানুমুক্ত কোবাল্টের পরিমাণ চলতি বছরে বিশ্ব বাজারের প্রায় ৩০ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
লেনিনগ্রাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রেডিয়েশন টেকনোলজিস বিভাগের প্রধান আলেক্সি কনড্রাতিয়েভ বলেন, ‘আমাদের উৎপাদিত আইসোটোপ সারা বিশ্বে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার করছে এবং আরবিএমকে-১০০০ চ্যানেল রিয়্যাক্টরের অনন্য নকশা বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ না করে 'অন দ্য ফ্লাই' রিয়্যাক্টর থেকে আইসোটোপগুলোর ক্রমাগত উৎপাদন এবং আনলোড করার ব্যবস্থা আছে।’
রোজনারগোঅ্যাটমের পণ্যের পরিসরে অনেকগুলো আইসোটোপ রয়েছে যা শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া খাদ্য, ওষুধ সহ বেশ কয়েকটি পরিবেশগত সমস্যা সমাধান এবং আরও অনেক কিছু এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান পৌঁছাল রূপপুরে
উদাহরণস্বরূপ, চিকিৎসা ডিভাইস এবং উপকরণগুলো জীবাণুমুক্ত করার পাশাপাশি খাদ্য পণ্যের শেল্ফ লাইফ ও জীবাণুমুক্তকরণ এবং উপকরণগুলোর পলিমার বৈশিষ্ট্যগুলোকে সংশোধন করতে ব্যবহৃত হয় কোবাল্ট-৬০।
মেডিকেল আয়োডিন-১২৫, এবং আয়োডিন-১৩১ থাইরয়েড ক্যান্সার এবং মলিবডেনাম-৯৯ (টেকনেটিয়াম-৯৯ এম) নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য রেডিওফার্মাসিউটিক্যালস উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা সিন্টিগ্রাফি এবং একক-ফোটন টোমোগ্রাফি ব্যবহার করে হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়। অদূর ভবিষ্যতে লেনিনগ্রাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ সামারিয়াম-১৫৩ উৎপাদন শুরু করা হবে।
কার্স্ক এবং স্মোলেনস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আইসোটোপ উৎপাদন প্রযুক্তিও পরীক্ষা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কঠোর নিরাপত্তায় রূপপুরে পৌঁছাল ইউরেনিয়ামের পঞ্চম চালান