কেমিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ডাক্তার, চিকিৎসক সহকারী ও ওষুধ ব্যবসায়ীসহ মানিকগঞ্জের অন্তত ৭০ জন বিনিয়োগকারী এখন সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন । লাভের টাকা দুরের কথা এখন আসল টাকাও না পাওয়ার হতাশায় দিন যাপন করছেন তারা। ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কয়েকজন ভুক্তভোগী এসব কথা জানান।
বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগীরা ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অপচেষ্টার অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় থানায় জিডি
এদেরই একজন ভুক্তভোগী মানিকগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সাবেক উপপরিচালক ডা. রঞ্জিত কুমার মন্ডল। ২০০৩ সালে দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কেমিকো ফার্মাসিটিক্যালসের ‘ডাক্তার বিনিয়োগ স্কীম’-এ এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। লাখে ওই কোম্পানির কাছ থেকে তিনি মুনাফা পেতেন ১৬৬৭ টাকা। ২০০৫ সালে ওই কোম্পানিতে তার বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৪ লাখে। ২০১২ সালে তার মোট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৩০ লাখে।
ডা. রঞ্জিত কুমার মন্ডলের মত জেলার অন্তত ৩০ জন চিকিৎসকসহ শতাধিক স্বাস্থ্য সহকারী ও ওষুধ ব্যবসায়ীদের প্রায় সাত কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানে। গত দুই বছর ধরে কোম্পানি তাদেরকে লভ্যাংশ প্রদান করছে না। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ আত্মসাতের মামলার রায় ৫ অক্টোবর
বিনিয়োগকারী ডা.বিকাশ চন্দ্র তরফদার জানান, ওই প্রতিষ্ঠানে তার নিজের ও তার স্ত্রীর ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। প্রথম দিকে আমাদেরকে তারা লভ্যাংশ ঠিকমত দিলেও গত দুই বছর ধরে তারা আমাদের লভাংশ্য দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারপর তারা আমাদের বিনিয়োগের টাকাও দিচ্ছে না।
ভুক্তভোগী ডা. ওসমান গনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে তার ১৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানে সর্বনিম্ন পাঁচ লাখ টাকা থেকে ৬০ লাখ টাকা করেও বিনিয়োগ রয়েছে অনেকের। অর্থ আদায়ের দাবিতে পাঁচ মাস আগে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আসা অন্যান্য ভুক্তভোগীরা জানান, ওষুধ কোম্পানি হিসেবে এই কোম্পানির সুনাম রয়েছে। ওমক্সে, কেফিন, কেসল্ড ওষুদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এছাড়া ওই কোম্পানির রয়েছে আরও সাতটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। তারা সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহায়তা চেয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে ওই কোম্পানির উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলুল হকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেন নি।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চায় হাইকোর্ট
সংবাদ সম্মেলনে ডা. রঞ্জিত কুমার মন্ডল ছাড়াও ডা. বিকাশ চন্দ্র তরফদার, ডা. নরেন্দ্র কুমার রায়, ডা. মো. ওসমান গনি, ওষুধ ব্যবসায়ী পঙ্কজ কুমার, তোফায়েল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।