বিনিয়োগ
সূচক-লেনদেন দুটোই কমলো পুঁজিবাজারে
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস সুখকর ছিলো বিনিয়োগকারীদের জন্য। সূচক এবং লেনদেন কমেছে ঢাকার পুঁজিবাজারে। চট্টগ্রামে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সামান্য।
সারাদিনের লেনদেন শেষে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ২ এবং ব্লু-চিপ ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
সূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে ঢাকার বাজারে। তৃতীয় কার্যদিবসে লেনদেন ৫৯৯ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেলেও, এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন নেমেছে ৪২৭ কোটি টাকায়।
আরও পড়ুন: সূচকের পতন হলেও বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন পুঁজিবাজারে
ঢাকার মতোই সূচক কমেছে চট্টগ্রামের বাজারেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৬১ পয়েন্ট। তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসইতে। ৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকার লেনদেন ছাড়িয়ে গেছে ৬ কোটি টাকা।
কোম্পানির দাম
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। তালিকাভুক্ত ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১০৩, কমেছে ২২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির বিচারে এ, বি এবং জেড সব ক্যাটাগরিভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৭ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬, কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ব্লক মার্কেটে মোট ২৪ কোম্পানির ৪১ লাখ শেয়ার ২৩ কোটি ৩২ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস ১৬ লাখ শেয়ার সর্বোচ্চ ১২ কোটি টাকায় বিক্রি করেছে।
সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫২, কমেছে ১০৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শীর্ষ শেয়ার
ডিএসইতে ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে ইনটেক লিমিটেড। অন্যদিকে ৯ শতাংশের ওপর দাম হারিয়ে তলানিতে নেমে এসেছে মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসি।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে ঢাকায় পতন, চট্টগ্রামে উত্থান
চট্টগ্রামে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। একইভাবে ৯ শতাংশের বেশি দাম কমে তলানিতে মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসি।
২ দিন আগে
বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে জাপানি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার
বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগাতে জাপানি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাপানের টোকিওতে ইকনোমি, ট্রেড ও ইন্ডাস্ট্রি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওগুশি মাসাকির সঙ্গে বৈঠকে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এ সময়ে বাংলাদেশে আরও বেশিসংখ্যক জাপানি যাতে বিনিয়োগ করেন, সেই ব্যবস্থা নিতে ওগুশি মাসাকির প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি এবং পাবলিক প্রাইভেট ইকনোমিক ডায়ালগ (পিপিইডি) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে অনুকূল বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিনিয়োগকারীদের দ্রুত সেবা দিতে বাংলাদেশে সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) চালু করা হয়েছ। তিনি জাপানের বিনিয়োগকারীদের এ সুযোগ গ্রহণের অনুরোধ জানান।
আরও পড়ুন: চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধ: ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শি জিন পিংয়ের
বৈঠকে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী, জাইকার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সাচিকি ইমোতো, জেটরোর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজুয়া নাকাজো প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে টোকিওতে একটি হোটেলে ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশনের এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী জাপানি ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।।
জাপান বাংলাদেশের অত্যন্ত বিশ্বস্ত বন্ধু ও একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার। বাংলাদেশের উন্নয়নে অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
৩ দিন আগে
৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র: মেয়াদপূর্তি ও নগদায়নে নতুন মুনাফার হার
২০২৫ সালে জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতাভূক্ত প্রতিটি সঞ্চয়পত্রে এসেছে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। বিভিন্ন বিনিয়োগের বিপরীতে মেয়াদপূর্তি অথবা নগদায়ন উভয়ক্ষেত্রে বেড়েছে মুনাফার হার। গত ২১ জানুয়ারি জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে উৎসে করের বিষয়টি প্রকাশ পায়। এতে করে সঞ্চয়পত্রগুলোতে মেয়াদ শেষে বা নগদীকরণের ক্ষেত্রে প্রাপ্য অর্থের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। তন্মধ্যে তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফা ব্যবস্থার ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
১২ দিন আগে
পরিবার সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফা হার: প্রতি লাখে ধার্য করা মাসিক মুনাফা
বছরের শুরুতেই জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের নতুন সংস্করণে দেশের প্রচলিত সঞ্চয়পত্রের প্রতিটিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় বাড়ানো হয়েছে বিনিয়োগের সীমা এবং মুনাফার হার। গত ২১ জানুয়ারি জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে উৎসে করের তথ্যটি হালনাগাদ করা হয়। এর মাধ্যমে মেয়াদপূর্তি এবং নগদায়নে গ্রাহকদের প্রাপ্য অর্থের বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে চলুন, সর্বাধিক জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্রের নতুন মুনাফা ব্যবস্থার ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
১৯ দিন আগে
পুঁজিবাজারে বিশেষ বিনিয়োগের পরিমাণ ও সময়সীমা বাড়াতে গভর্নরকে চিঠি
পুঁজিবাজারে বিশেষ বিনিয়োগের পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা এবং সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর অনুরোধ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজ হাউস সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারী) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিটির অনুলিপি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকেও প্রেরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে সূচক বেড়েছে প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে
পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করতে এবং বাজারের তারল্য প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পুঁজিবাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে তাদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগের জন্য একটি বিশেষ তহবিল প্রদানের নির্দেশনা দেয়।
এই বিশেষ তহবিলের আকার প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকের জন্য ২০০ কোটি টাকায় সীমাবদ্ধ ছিল এবং এর মেয়াদ আছে চলতি বছর ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
ডিবিএ-এর পাঠানো চিঠিতে এই বিশেষ তহবিলের সময়সীমা ২০৩০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করে এর আকার প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকের জন্য ২০০ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিবিএ-এর পক্ষে থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের শেষ থেকে বাজারে দীর্ঘ মন্দা বিরাজ করছে। এতে করে ইক্যুইটি বাজার মূলধন প্রায় ৪০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই মন্দা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, বাজার মধ্যস্থতাকারী, স্টক-ব্রোকার এবং অন্যান্য অংশীদারদেরসহ ২০ লাখেরও বেশি বিনিয়োগকারীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়গে নতুন নির্দেশনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
বিশেষ এই তহবিলের আওতায় অনেক স্বনামধন্য তফসিলি ব্যাংক পুঁজিবাজারে তাদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ করেছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে তাদের পোর্টফোলিও বিনিয়োগ ৪০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আছে। এই মুহূর্তে এই ধরনের তহবিল বন্ধ করলে পোর্টফোলিও অ্যাকাউন্ট ক্ষতির মুখে পড়বে এবং বিনিয়োগকারীসহ পুঁজিবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেবে বলা চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ডিবিএ।
বাজার প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে, পুঁজিবাজারের সার্বিক স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ডিবিএ-এর দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
২৪ দিন আগে
ফার্নিচার শিল্পের বিকাশে অধিক বিনিয়োগকারী প্রয়োজন: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ফার্নিচার শিল্পে বাংলাদেশের বেশ সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে এ শিল্পের বিকাশে অধিক বিনিয়োগকারী প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘এই শিল্পে অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান নিয়ে ২০৩০ সালের মধ্য ৫০০ কোটি ডলার আয় সম্ভব নয়।’
বশির উদ্দিন বলেন, ‘এই শিল্পে আমাদের বেশ সম্ভাবনা আছে। তাই আমাদের সকল রিসোর্স একত্রিত করে, রাষ্ট্রীয় সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কত দ্রুত ফার্নিচার বিশ্বে স্থান করে নিতে পারি তা ভাবতে হবে।’
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে ‘বাংলাদেশ ফার্নিচার ইন্ডাস্ট্রি: আনলকিং এক্সপোর্ট পটেনশিয়াল’ শীর্ষক সেমিনারে বাণিজ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: চালের দাম বৃদ্ধিতে জনদুর্ভোগ হয়েছে, স্বীকার করলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববাজার টার্গেট করে ফার্নিচার উৎপাদন বাড়ানোসহ কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া আমাদের অর্থনীতিতে যে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে তা চিন্তার বাইরে। বিগত সরকারের আমলে ব্যাংকিং, গার্মেন্টসসহ দেশের প্রতিটি সেক্টরের সম্ভাবনাকে নষ্ট করা হয়েছে। বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে তাদের দুর্বৃত্তায়নের বোঝা আমাদের বহন করতে হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও বহন করতে হবে।’
অনেক ক্ষেত্রেই বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হয় উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি বন্ধ করতে হবে। বন্ড, এফটিএ সুবিধা দিয়ে যতটা কাজ হবে, তার থেকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের অনেক দূর এগিয়ে নেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেশি সংখ্যক দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করলে ব্যবসা বাড়বে এটা ভুল। ইউরোপের যে দেশের মার্কেটে আমাদের সুযোগ আছে, তাদের সঙ্গে এফটিএ করলে ক্ষতি। এফটিএ করতে হবে সেই দেশের সঙ্গে যাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আছে।’
আরও পড়ুন: ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স এসোশিয়েশনের পরিচালক দেওয়ান আতিফ রশিদ।
এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভলপমেন্ট স্টাডিজের সাবেক অধ্যাপক আবু ইউসুফ, বুয়েটের ম্যাটারিয়ালস অ্যান্ড ম্যাট্যালার্জিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ড. আহমেদ শরীফ, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ডিজাইনের ডীন অধ্যাপক ফুয়াদ এইচ মল্লিক, প্রাণ আরএফএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আহসান খান চৌধুরী, হাতিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম এইচ রহমান প্রমুখ।
৩২ দিন আগে
বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে জাপানের প্রতি রাষ্টপতির আহ্বান
বাংলাদেশের অবকাঠামো, অটোমোবাইল, আইসিটিসহ উদীয়মান বিভিন্ন খাতে আরও বিনিয়োগ করতে জাপানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
এদিন বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের পক্ষ থেকে নতুন রাষ্ট্রদূতকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
সাইদা শিনিচিকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাপান বাংলাদেশের একক সর্ববৃহৎ দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদার। দুদেশের সম্পর্ক স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপে (কৌশলগত অংশীদারত্ব) উন্নীত হয়েছে।
সাক্ষাতকালে বিগ বি ইনিশিয়েটিভের অধীনে বাংলাদেশের উন্নয়নে ঋণ ও অনুদান হিসেবে জাপানের ২৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি এ সহযোগিতা আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, জাপানের ৩৫০টির বেশি কোম্পানি বর্তমানে বাংলাদেশে কাজ করছে। বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করতে তিনি রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান।
রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানে জাপানের ভূমিকার প্রশংসা করে রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে এবং সম্মানজনকভাবে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে—সে বিষয়ে জাপান আগামীতেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।
এ সময় জাপানের রাজা, রানী ও রাজপরিবারের সদস্যদের বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
বাংলাদেশের বড় বড় অবকাঠামো খাতে জাপানের বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত বলেন, আগামীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী জাপান। তিনি বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী, প্রেস সচিব মো. সরওয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
৩৭ দিন আগে
বিনিয়োগ আনতে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
দেশের শিল্পখাতে আরও বিনিয়োগ আনতে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (বেপজা) কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান বেপজার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অর্থনৈতিক কূটনীতির জন্য একটি টিম তৈরি করুন এবং বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরুন। এর জন্য প্রয়োজনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করুন।’
বিদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, বিশেষ করে যারা চীন ও জাপানে আছেন তাদেরকে যুক্ত করে সেসব দেশের বিনিয়োগ আনা যায় কিনা সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা যেন ভাষাগত সমস্যা অতিক্রম করে এদেশে বিনিয়োগ করতে পারে, সে ব্যাপারে বিদেশে থাকা শিক্ষার্থীরা সহায়তা করতে পারে।’
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান জানান, ‘জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও বৈশ্বিক রাজনৈতিক দৃশ্যপটের পরিবর্তনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তারা ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন। গত তিন সপ্তাহে আমরা চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব পেয়েছি। আরও বিনিয়োগের আলোচনা চলছে।’
আরও পড়ুন: অভ্যুত্থানে আহতদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
তিনি আরও জানান, দেশে ৮টি রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল চালু রয়েছে। যেখানে ৪৫২টি কারখানা রয়েছে। এসব জোনে আরও ১৩৬টি কারখানা নির্মাণাধীন। চালু কারখানার মধ্যে ১০০টির বেশি স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন এবং বাকি কারখানাগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই যৌথ উদ্যোগ।
বেপজা চেয়ারম্যান জানান, কারখানাগুলোর ৫২ শতাংশ তৈরি পোশাক সামগ্রী, টেক্সটাইল পণ্য ও গার্মেন্টস এক্সেসরিজ উৎপাদন করে। অবশিষ্ট কারখানাগুলো বহুমুখী উৎপাদন করে যেমন- কফিন ও খেলনা সামগ্রী।
তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ, বেপজা এলাকায় বন্ডেড গুদামের সুবিধা, চট্টগ্রাম-সাংহাই সরাসরি ফ্লাইট চলাচল এবং চীনের সাংহাই শহরে ভিসা কাউন্সেলর সার্ভিসসহ বিনিয়োগকারীরা কয়েকটি বিষয়ে জানিয়েছেন। এসব সুবিধা পেলে বিনিয়োগ বাড়তে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বেপজাকে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার ও গ্যাস অনুসন্ধানে কাজ করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন কীভাবে করা যেতে পারে সে বিষয়েও বিশেষভাবে কাজ করতে বলেন।
প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে জ্বালানি আমদানি করে বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে উপস্থিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর জোর দেন।
তিনি জানান, সরকার দেশে বিদ্যমান প্ল্যান্টগুলো থেকে শিল্প কারখানায় যেন আরও বেশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পৌঁছাতে পারে সেজন্য একটি সমন্বিত বিতরণ ব্যবস্থা তৈরিতে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের উচিত বেপজার পাশাপাশি বেজাকেও আরও আকর্ষণীয় করে তোলা এবং আরও বিনিয়োগ আনার জন্য বিশ্বজুড়ে এসব অঞ্চলে থাকা সুযোগ-সুবিধা প্রচার করা।’
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
৪৬ দিন আগে
বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা, চান সহায়ক পরিবেশ
দেশের বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের ব্যাবসায়ীরা। এজন্য তারা সহায়ক পরিবেশ চান। কারণ যেকোনো দেশে বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য ডুয়িং বিজনেস (সহজে ব্যবসা করার সূচক) রিপোর্টে উন্নতি, সুশাসন, মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়ন ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন জরুরি।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার সঙ্গে এক বৈঠককালে এসব দাবি করেছে ঢাকায় সফররত ব্রিটিশ ব্যাবসায়িক প্রতিনিধি দল।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রশংসাসহ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলেন তারা।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্যাবসায়ীদের সংগঠন ইউকে বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইউকেবিসিসিআই) উদ্যোগে আয়োজিত সাত দিনব্যাপী এ সফরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ।
অন্যান্যের মধ্যে রয়েছেন— ব্রিটিশ সংসদ সদস্য ড. রুপা হক, ইউকেবিসিসিআইয়ের সভাপতি এমজি মৌলা মিঞা, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বজলুর রশিদ, মিডল্যান্ড অঞ্চলের সভাপতি ইমাম উদ্দিন আহমেদ, সদস্য আবু সুফিয়ান রনি, ফখরুল ইসলাম চৌধুরী ও এম এ কাদির।
এ ছাড়াও রয়েছেন ব্যাংক অব এশিয়ার পরিচালক আশরাফুল হক চৌধুরী, সুরি ইউনির্ভাসিটির অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ওয়াইউ জিয়ং, স্পিনর টেক লিমিটেডের প্রধান কর্মকর্তা কেন সু ও পরিচালক ইভা ঝাং, ম্যাট ট্যাম, গিনি লন্ডনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক রবিন্দ্র জাং লামিছানি প্রমুখ।
বিডার চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুনের সভাপতিত্বে সভায় বিডার পক্ষ থেকে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন ব্যাবস্থাপনা পরিচালক গাজী একেএম ফজলুল হক, সেক্রেটারি ড. দেওয়ান চৌধুরী প্রমুখ।
বৈঠক শেষে এক সংক্ষিপ্ত সংবা সম্মেলনে রুপা হক জানান, বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী। এজন্য তারা বিনিয়োগ-সহায়ক পরিবেশ চান।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ সম্পর্ক একটি সুদৃঢ় অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। এক্ষেত্রে দুদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিকাশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার অনেক ক্ষেত্র আছে। আমরা এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।
ব্রিটিশ সরকারের এই সংসদ সদস্য বলেন, বাংলাদেশে অনেক ব্রিটিশ কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে অনেকেই বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা আরও বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
সংগঠনটির চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ জানান, এ সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশে বৃটিশ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। এ সফরের মাধ্যমে আপতত কৃষি, ফার্মাসিউটিক্যাল ও গার্মেন্টস সেক্টরে বিনিয়োগ আসবে।
সভাপতি এমজি মৌলা মিঞা জানান, এরপরে আরও বিনিয়োগ আসবে। এটি প্রাথমিক পর্যায়। তবে বিশ্বব্যাপী এআইয়ের ব্যাবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সেক্টরের দিকে বেশি আগ্রহ রয়েছে বৃটিশ ব্যাবসায়ীদের।
এ বছরের শেষ নাগাদ এ সফরের বিনিয়োগ অসতে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান।
ভবিষ্যতে ব্যবসা পরিচালনা করতে ইচ্ছুক ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানান এমজি মৌলা মিঞা।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বজলুর রশিদ জানান, এ সফরের মাধ্যমে প্রায় এক হাজার মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেতে পারে।
৪৮ দিন আগে
নতুন বছরে সঞ্চয় বাড়ানোর কয়েকটি উপায়
বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালেও জনজীবনের ওপর সবচেয়ে বড় চাপ হিসেবে রয়েছে মুদ্রাস্ফীতির ক্রমবর্ধমান নিষ্পেষণ। জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি আর্থিক স্থিতিশীলতাকে ক্রমশঃ হুমকিতে ফেলছে। মৌলিক চাহিদা মেটাতেই যেখানে ঋণ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা, সেখানে সঞ্চয়ের প্রসঙ্গটি প্রশ্নবিদ্ধ থেকে যায়। আবার সঞ্চয় ব্যতীত জীবন আরও অবনতির দিকে ধাবিত হয়।
তবে অর্থনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও চরম সংকট মোকাবিলায় মোক্ষম হাতিয়ার হতে পারে অর্থের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা। চলুন, আত্মবিশ্বাস ও দূরদর্শিতার সঙ্গে সঞ্চয় বৃদ্ধির কয়েকটি প্রয়োজনীয় উপায় জেনে নেওয়া যাক।
সঞ্চয় বৃদ্ধির ৫টি কার্যকর কৌশল
জীবনের দৈনন্দিন লেনদেনে নিম্নোক্ত পাঁচটি পদ্ধতি অবলম্বনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয়ের নির্ভরযোগ্য সুযোগ সৃষ্টি করা যেতে পারে-
সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজেট তৈরি
প্রত্যেকটি ছোট ছোট বিষয়কে বিবেচনায় রেখে একটি বিশদ বাজেট পরিকল্পনা গড়ে দিতে পারে আর্থিক ব্যবস্থাপনার মূল ভিত্তি। এখানে আয়ের উৎসের বিপরীতে ব্যয়ের শ্রেণি বিভাজন হওয়ার কারণে সম্ভাব্য খরচের খাতগুলো স্পষ্টভাবে দৃষ্টিগোচর হয়।
আরো পড়ুন: ই-রিটার্ন: অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন যেভাবে
বাজেটে সঞ্চয়ের জন্য জায়গা রাখার কৌশল হচ্ছে শুধুমাত্র অতি প্রয়োজনীয় ব্যয়ের খাতগুলোকে আমলে নেওয়া। সেই সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত খরচগুলো চিহ্নিত করে রাখা উচিত, যেন সেগুলো থেকে দূরে থাকা যায়।
আকস্মিক জটিলতাগুলোর জন্য আগে থেকেই বিকল্প রাস্তা বের করে রাখা জরুরি। বর্তমান অর্থনৈতিক অস্থিরতার মাঝে এমন সময় আসা খুবই স্বাভাবিক যখন সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোবে না। এই বিষয়গুলোকে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত করে সেগুলোর প্রতিটির জন্য একটি বিকল্প নিরাপদ পন্থা বের করে রাখতে হবে। এর জন্যও কিছু জরুরি তহবিল রাখা বাঞ্ছনীয়।
স্প্রেডশিটযুক্ত (এক্সেল) মোবাইল বা কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এই পদক্ষেপটি সহজেই নেওয়া যায়। এই সফ্টওয়্যার ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এগুলো রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং প্রযুক্তি সম্পন্ন, অর্থাৎ তাৎক্ষণিক নিজের তৈরি করা বাজেটের ওপর চোখ বুলিয়ে নেওয়া যায়। ফলে শুধু পরিকল্পনাই নয়, সে অনুযায়ী অ্যাকশন প্ল্যানগুলো ঠিকমতো বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা, সেদিকেও খেয়াল রাখা সম্ভব হয়। প্রতিটি ব্যয়ের খাতের জন্য মাসিক আয়ের যে শতাংশ বরাদ্দ ছিল, সেই সীমা অতিক্রম করছে কিনা তা নজরে আসে।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশ সরকারের ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করার পদ্ধতি
পুনরাবৃত্তিমূলক খরচ কমানো
প্রয়োজনীয়তার মাত্রার নিরিখে প্রতি মাসের জন্য অবধারিত খরচগুলোর শ্রেণিবিন্যাস করা উচিত। এগুলোর মধ্যে কিছু থাকে যেগুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না, যেমন: বাড়িভাড়া, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল। আবার এর মধ্যে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিলও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ব্যবহার কমিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়া নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস এবং এনার্জি সেভিং যন্ত্রাদি ব্যবহারের মাধ্যমেও খরচ অনেকটা কমে আসে।
পুনরাবৃত্তিমূলক খরচের কিছু খাত রয়েছে যেগুলো মূলত জীবনধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন ক্যাবল টিভি ও ইন্টারনেট বিল, ফোন বিল, ওটিটি সাবস্ক্রিপশন এবং জিমের সদস্যতা। সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী এগুলোর মধ্যে এক বা একাধিক পরিষেবা বাদ দিয়ে খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
বিশেষ করে আজকাল ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন চ্যানেলের অনুষ্ঠান দেখা যায়। সেক্ষেত্রে ক্যাবল টিভি ও ওটিটি বিলের পুরোটাই বাদ দেওয়া যায়। ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যবহার করা হলে ফোনের বিলের ওপর থেকেও চাপ কমে যাবে।
আরো পড়ুন: বন্ডে বিনিয়োগের আগে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি
তাছাড়া নিতান্তই বাদ দেওয়া সম্ভব না হলে ব্যবহারের মাত্রা কমিয়ে বা দর কষাকষির মাধ্যমে কম খরচের পরিষেবা নেওয়া যেতে পারে।
কৌশলগত বিনিয়োগ
বিনিয়োগ আসলে সঞ্চয়ের কোনো প্রত্যক্ষ উপায় নয়। কিন্তু এই বিচক্ষণ কার্যক্রমটির পথ ধরে আসে সঞ্চয়ের সুযোগ। সঞ্চয়পত্র বা সরকারি বন্ডের মতো তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ খাতগুলোতে বিনিয়োগ করা হলে সঙ্গতিপূর্ণ রিটার্ন দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা আনে।
ঝুঁকি বেশি থাকা খাতগুলোর মধ্যে স্টক ও মিউচুয়াল ফান্ড বা এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড দিয়ে সর্তকতার সঙ্গে বিনিয়োগ পোর্টফোলিও গড়া যেতে পারে। এগুলো সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতিকে টেক্কা দিতে সহায়তা করে।
আরো পড়ুন: ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেভাবে বিনিয়োগ করবেন
চলতি বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশে। মোটা দাগে বলতে গেলে, এ বছরের শুরু থেকে সঞ্চিত ১০০ টাকা নতুন বছরে গিয়ে হয়ে যাবে ৮৮ টাকা। ফলে ১০০ টাকা দামের কোনোকিছু কিনতে গেলে তার সঙ্গে আরও ১২ টাকা যুক্ত করতে হবে। তাই কমপক্ষে ১৩ শতাংশ রিটার্ন দেওয়া কোনো খাতে বিনিয়োগ করা হলে প্রাপ্ত মুনাফা থেকে লেনদেনের পরও ১ টাকা সঞ্চয় হিসেবে থেকে যাবে।
এভাবে সুচিন্তিত বিনিয়োগ পরোক্ষভাবে সঞ্চয়ের ক্ষেত্র তৈরি করে। এছাড়া সরকারি খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে কর রেয়াতের সুবিধাটিও অর্থ সঞ্চয়ের একটি কার্যকর মাধ্যম।
ডিসকাউন্ট ও ফ্রি অফারে গুরুত্বারোপ
দৈনন্দিন কেনাকাটার সময় মূল্যহ্রাস ও ফ্রি সামগ্রীগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া টাকা বাঁচানোর সবচেয়ে পুরনো ও সহজ উপায়। ব্র্যান্ড, সাধারণ, খুচরা ও পাইকারি-নির্বিশেষে প্রতিটি বিপণী বছরজুড়ে নানা উপলক্ষে ডিসকাউন্ট, ক্যাশব্যাক বা রিডিমযোগ্য পয়েন্টের ব্যবস্থা রাখে। বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের দৌলতে এগুলো আরও সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।
আরো পড়ুন: পুরনো স্বর্ণ বিক্রির সময় যে কারণে দাম কেটে রাখা হয়
ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থাকার কারণে যাতায়াত খরচ বাঁচিয়ে ঘরে বসেই হ্রাসকৃত মূল্যে কেনাকাটা করা যাচ্ছে। জনপ্রিয় পেমেন্ট গেটওয়েগুলো ব্যবহারেও থাকে মূল্যছাড়ের অফার।
এছাড়া সিজনাল সেলস ও স্টক ক্লিয়ারেন্স ইভেন্টগুলোর প্রতিও নজর রাখা উচিত। সাশ্রয়ী মূল্যে পছন্দের জিনিসটি কেনার জন্য এটি সবচেয়ে আদর্শ উপায়।
সর্বদা সাশ্রয়ী বিকল্প পন্থা অবলম্বন
সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম সহনীয় যতক্ষণ না সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসে, ততক্ষণ অপেক্ষা করা উচিৎ। বিশেষ করে সাধারণ মুদিপণ্যের ব্যাপারে এই পদক্ষেপ নিতে হবে। দাম না কমলে তা পরিহার করতে হবে। মৌসুমি সবজি ও ফলমূলের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা উচিৎ।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষে নগদায়ন বা পুনরায় চালু করার উপায়
যাতায়াতের যানবাহন ব্যবহারের ক্ষেত্রে দর কষাকষি করা উচিত। বর্তমানে উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা সর্বত্র বিদ্যমান। এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে যতটা সম্ভব কম যাতায়াত করে প্রাত্যহিক কর্ম সম্পাদনের চেষ্টা করা উচিত। একটি ছোট ফোন কল বা হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেঞ্জারের মাধ্যমে এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা সম্ভব, যার জন্য আগে সশরীরে দেখা করার কোনো বিকল্প ছিল না।
এই কার্যক্রমগুলো প্রতিদিনের যাতায়াত খরচকে অল্প অল্প করে কমিয়ে দেয়। অথচ সপ্তাহ ও মাসের হিসাবে এগুলোই খরচের বোঝাও ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করে।
এই পন্থাগুলো মূলত জীবনধারণ পরিবর্তনের দিকে ইঙ্গিত করে। পরিমিত বাজেট অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করে সঞ্চয়ের অভ্যাসের জন্য মনকে প্রস্তুত করাও জরুরি।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রে যেভাবে বিনিয়োগ করবেন
২০২৫ সাল আসতে আর বেশি দেরি নেই। প্রত্যেকের আর্থিক জীবনপ্রবাহেও পড়বে নতুন বছরের প্রভাব। তাই এখন থেকেই ব্যয়ের বাজেট প্রণয়ন ও সঞ্চয় বৃদ্ধির বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ।
শেষাংশ
সঞ্চয় বৃদ্ধির উল্লিখিত কৌশলগুলোকে সমন্বয় করা মূলত আর্থিক স্থিতিশীলতারই নামান্তর। বাজেট প্রাথমকিভাবে আর্থিক স্বচ্ছতার ভিত্তি স্থাপন করে। পুনরাবৃত্তিমূলক খরচগুলো কমানো গেলে তা দিন শেষে অতিরিক্ত সঞ্চয়ের জন্যই জায়গা তৈরি করে।
এছাড়া, মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হলো কৌশলগত বিনিয়োগ। ডিসকাউন্ট, ফ্রি অফারের পাশাপাশি যেকোনো কাজে সাশ্রয়ী বিকল্প পন্থা অবলম্বন অনাকাঙ্ক্ষিত চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে ঢাল হিসেবে কাজ করে।
আরো পড়ুন: সঞ্চয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত ব্যাংক পরিবর্তন করে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের উপায়
সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই পদ্ধতিগুলো বাজেটবান্ধব জীবনধারণের প্রতি তাগিদ দেয় যেখানে থাকবে না ঋণের দুশ্চিন্তা ও অপ্রাপ্তির বিড়ম্বনা।
৫৫ দিন আগে