ডাক্তার
পঞ্চম শ্রেণি পাশ না করেই তিনি ডাক্তার!
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেহন বাজারের নুরুজ্জামান বাবুল ওরফে বাবুল। তিনি একজন কথিত চিকিৎসক।
জানা গেছে, সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নে একটি ওষুধের দোকানের সঙ্গেই ডাক্তার, চেম্বারের পাশে ঝুলানো একটি সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা, ডাক্তার নুরুজ্জামান বাবুল, ডিএমএফ ঢাকা, মেডিসিন চিকিৎসক। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এবং বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রোগী দেখা হয়। এসব বলে এলাকায় মাইকিং চলে। তবে এই ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে এলাকাবাসী।
বাবুলের কাছে চিকিৎসা নেয়া ভুক্তভোগী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার জ্বর হয়েছিল। আমি তার কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে তিনি আমাকে কিছু হাই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিয়ে দেয়। তবে আমার এক পরিচিত বড় ভাই ওষুধগুলো দেখেই খেতে বারণ করেন এবং আমাকে অন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। সেই ডাক্তারের দেয়া প্যারাসিটামল খেয়ে আমি সুস্থ হই।
আরও পড়ুন: ডাক্তার দেখানোর কথা বলে রাস্তায় ফেলে গেলেন মাকে
আরেক ভুক্তভোগী রাবেয়া খাতুন বলেন, আমি মাথা ব্যথার কথা জানিয়ে তার কাছে ওষুধের পরামর্শ চাই। তিনি অনেকগুলো ওষুধ লিখে দেয়। তবে সুস্থতার বদলে আমি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে শহরের এক মেডিসিন ডাক্তারের শরণাপন্ন হই। সেই ডাক্তার পূর্বের খাওয়া সব ওষুধ ভুল ছিল জানায়।
ওই এলাকার ব্যবসায়ী আলতাফুর জানান, বাবুল আমাদের সামনেই বড় হয়েছে। আমরা জানি ও প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পার হয়নি। তাই আমরা তার কাছে চিকিৎসা নেই না। তবে অনেকে অজান্তে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। চিকিৎসার মত এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাবধান থাকা উচিত। দ্রুত এই ভুয়া ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে যেকোন বড় বিপদ হতে পারে।
এই বিষয়ে ডাক্তার পরিচয়দাতা বাবুলকে ডাক্তারি পড়ালেখা বা কোন প্রকার প্রশিক্ষণের কাগজ দেখতে চাইলে নেই বলে অকপটে স্বীকার করেন বাবুল। সেই সঙ্গে চেম্বারের পাশে থাকা ওষুধের দোকানের লাইসেন্সও নেই বলে স্বীকার করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ডাক্তার দেখানোর কথা বলে রাস্তায় ফেলে গেলেন মাকে
অভিযুক্ত বাবুল বলেন, যেখানে ব্যানার করছি সেখানে তারা ভুল করে ডাক্তার লিখে ফেলছে। তাছাড়া এই এলাকার আশেপাশে কোনেরা ডাক্তারও নেই। তাই আমি যা চিকিৎসা দিচ্ছি তাতে মানুষের উপকার হচ্ছে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, চিকিৎসার মত স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনো সমঝোতার সুযোগ নেই। বিষয়টি জানা ছিল না। দ্রুতই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
২ বছর আগে
যৌতুকের দাবিতে ডাক্তার স্ত্রীর করা মামলায় ডাক্তার স্বামী গ্রেপ্তার
যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীর করা মামলায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক মেডিকেল অফিসারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে গৌরনদী থানায় তার স্ত্রী যৌতুক ও তাকে মারধরের অভিযোগ জানিয়ে মামলা করলে রাতেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ডাক্তারের নাম টিপু সুলতান (৩২) এবং তার স্ত্রীর নাম মিলাদুজ্জামান ইরা (২৮)।
বুধবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন জানান, মামলার বাদী ডাক্তার মিলাদুজ্জামান ইরা ও মামলার আসামি ডাক্তার টিপু সুলতান উভয়েই গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত রয়েছেন। ২০২১ সালের ১৩ আগস্ট গৌরনদী উপজেলার নলচিড়া গ্রামের মো. বাদশা ফকিরের ছেলে ডা. টিপু সুলতানের সঙ্গে বিয়ে হয় কুমিল্লা দক্ষিণ সদর উপজেলার দৈয়ারা গ্রামের আ. আলিমের মেয়ে ডা. মিলাদুজ্জাহান ইরার সঙ্গে।
তিনি জানান, বিয়ের পর থেকেই ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী ডা. টিপু সুলতান তাকে প্রায়ই মারধর করতো এবং প্রাণনাশের হুমকি দিতো। নিরুপায় হয়ে মঙ্গলবার রাতে তিনি যৌতুকের জন্য মারধর ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ এনে গৌরনদী থানায় ডা. টিপু সুলতান ও তার বাবা বাদশা ফকিরকে আসামি করে মামলা করেন। রাতেই পুলিশ ডা. টিপু সুলতানকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ১২ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার
ফরিদপুরে যুবকের ওপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১
২ বছর আগে
ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
বাংলাদেশের মত ঘনবসতিপূর্ণ দেশে ডায়রিয়া রোগের ভয়াবহ রূপ নতুন নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডায়রিয়া সংক্রমণ দেশজুড়ে শঙ্কার সৃষ্টি করছে। আইসিডিডিআরবি (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ)-এর তথ্যানুসারে, বিগত নয় দিনে ভর্তি হওয়া ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ১৬১ জন। কর্মকর্তাদের দাবি-প্রতিষ্ঠানটির ৬০ বছরের ইতিহাসে রোগীর এমন চাপ নজিরবিহীন। এমনকি হাসপাতালের বাইরেও তাঁবু টানিয়ে চিকিৎসা চলছে। বিশুদ্ধ পানির যথেষ্ট যোগান না থাকায় এবং অতি ব্যস্ততার ফলে বাসি খাবারের উপর নির্ভরশীলতা ডায়রিয়ার সংক্রমণ বাড়াচ্ছে। এমন সংকটাপন্ন সময়ে সতর্ক থাকতে চলুন, ডায়রিয়া রোগের ব্যাপারে বিশদ জেনে নেয়া যাক।
কী কী কারণে ডায়রিয়া হয়
ভাইরাস
ডায়রিয়া সংক্রমণে শক্তিশালী ভূমিকা রাখা ভাইরাসগুলোর মধ্যে রয়েছে নরোভাইরাস, অ্যাস্ট্রোভাইরাস, এন্টারিক অ্যাডেনোভাইরাস, ভাইরাল হেপাটাইটিস এবং সাইটোমেগালোভাইরাস। রোটাভাইরাস বাচ্চাদের ডায়রিয়ার তীব্রতার জন্য দায়ী। কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসও ডায়রিয়া সংক্রান্ত জটিলতার সৃষ্টির পেছনে কাজ করে।
দূষিত পানি নরোভাইরাস, অ্যাস্ট্রোভাইরাস, হেপাটাইটিস এ ভাইরাস, এবং স্যাপোভাইরাসের একটি বড় উৎস। হিমায়িত সবজি হেপাটাইটিস এ ভাইরাসের বড় উৎস। নোরোভাইরাস থাকে পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজি এবং তাজা ফলের মধ্যে। হেপাটাইটিস এ এবং নোরোভাইরাস সংক্রমণ অনুপযুক্ত খাদ্য পরিচালনার মাধ্যমেও হয়ে থাকে।
ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী
দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ই কোলাইয়ের মত প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবীর সংস্পর্শে আসার ফলে ডায়রিয়া হয়। দূষিত পানি ছাড়াও ই কোলাই কাঁচা বা কম রান্না করা গরুর মাংস, কাঁচা শাকসবজি এবং পাস্তুরিত দুধে থাকে।
পড়ুন: খুলনায় শিশুরোগ ও ডায়রিয়া বেড়েছে
ওষুধ সেবন
কিছু অ্যান্টিবায়োটিক আছে যেগুলো দেহের খারাপ ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলার পাশাপাশি ভালো ব্যাকটেরিয়াও মেরে ফেলে। ফলে অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার স্বাভাবিক ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটে, যা পুরো শারীরিক অবস্থাকে ডায়রিয়ার দিকে ধাবিত করে। এছাড়াও অ্যান্টি-ক্যান্সার ওষুধ এবং ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত অ্যান্টাসিড ডায়রিয়া সৃষ্টির জন্য দায়ী।
ল্যাকটোজ সমস্যা
ল্যাকটোজ হল দুধ এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত দ্রব্যে পাওয়া এক ধরনের চিনি। যাদের ল্যাকটোজ হজম করতে অসুবিধা হয় তাদের দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার পর ডায়রিয়া হয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যাটি বাড়তে পারে, কারণ যে এনজাইমটি ল্যাকটোজ হজম করতে সাহায্য করে বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার মাত্রা কমতে থাকে।
ডায়রিয়ার লক্ষণসমূহ
ডায়রিয়ার প্রধান উপসর্গগুলো হল মলত্যাগের জন্য প্রচন্ড চাপ অনুভূত হওয়া, এবং ঘন ঘন পাতলা পায়খানা। এছাড়াও বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা, পেটে চাপ অনুভূত হওয়া, পেট ফোলা থেকে শুরু করে চূড়ান্ত অবস্থায় ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা হয়।
ডায়রিয়ার গুরুতর জটিলতা হল পানিশূন্যতা। ডায়রিয়ার কারণে শরীর থেকে প্রয়োজনী তরলের একটি বিশাল অংশ বেরিয়ে যায়। আর এর ফলেই পানিশূন্যতার ঝুঁকি বাড়ে। পানিশূন্যতার লক্ষণগুলো হলো প্রচন্ড ক্লান্তি, শুকনো শ্লেষ্মা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি, মাথাব্যথা, তৃষ্ণা বৃদ্ধি, প্রস্রাব হ্রাস এবং শুষ্ক মুখ।
বাচ্চারা ডায়রিয়া এবং পানিশূন্যতার ক্ষেত্রে বেশ সংবেদনশীল। এ সময় বাচ্চাদের প্রস্রাব কমে যায়, মুখ শুকিয়ে যায়, মাথাব্যথা হয়, ক্লান্ত দেখায়, কান্নার সময় চোখে পানি থাকে না, চোখ আধবোজা- আধখোলা অবস্থায় থাকে, তন্দ্রাতুর দেখায় এবং সবসময় বিরক্ত থাকে।
পড়ুন: ফরিদপুরে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে
ডায়রিয়া হলে করণীয়
সাধারণ অবস্থায় ডায়রিয়া কয়েক দিনের মধ্যে চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যেতে পারে। শরীর খারাপের সময়টুকু বিশ্রামের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানীয় পান করতে হয় এবং অন্যান্য খাবারের সময় সতর্ক থাকতে হয়।
শরীরকে পানিপূর্ণ রাখার জন্য পরিষ্কার তরল পান ও ফলের রস খেতে হবে। এ সময় দিনে প্রায় ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। একবারে টান দিয়ে পুরো গলধঃকরণের পরিবর্তে অল্প পরিমাণে চুমুক দিয়ে পান করা যেতে পারে।
ডায়রিয়া হলে দেহকে পানিপূর্ণ রাখতে ডাক্তার লবণ, পটাসিয়াম এবং ক্লোরাইড-এর মত স্পোর্টস পানীয়গুলো পানের পরামর্শ দিতে পারে। ঘন ঘন বমি বমি ভাব হলে ধীরে ধীরে তরলে চুমুক দিয়ে পান করা ভালো। এ সময়ের জন্য উপযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে আলু, চিনাবাদামের মাখন, টার্কির মাংস এবং দই।
যে খাবারগুলো ডায়রিয়া বা শরীরে গ্যাসের অবস্থা আরও খারাপ করে এমন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলোর মধ্যে আছে চর্বিযুক্ত বা ভাজা খাবার, কাঁচা ফল এবং শাকসবজি, মশলাদার খাবার, মটরশুটি এবং বাঁধাকপি এবং ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়, যেমন কফি ও সোডা।
যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসা ছাড়াই শরীর উন্নতির দিকে যায় এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডায়রিয়া ভালো হয়ে যায়। যদি উপসর্গ ২ দিনের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তখন ডাক্তারের সরণাপন্ন হওয়া আবশ্যক। এক্ষেত্রে কিছু উপসর্গ গুরুত্বের সাথে নিতে হবে এবং তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি অবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এগুলো হলো- অবিরাম বমি, ক্রমাগত ডায়রিয়া, পানিশূন্যতা, উল্লেখযোগ্য হারে ওজন হ্রাস, মলের মধ্যে পুঁজ ও রক্ত, কালো মল বের হওয়া ইত্যাদি।
বাচ্চাদের ক্ষেত্রে যে উপসর্গগুলো অবিলম্বে চিকিৎসার দাবি রাখে সেগুলো হলো- ২৪ ঘন্টা বা তার বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া, জ্বর ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি, রক্ত ও পুঁজ মল এবং কালো মল।
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে ডায়রিয়া হলে ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের কথা বলতে পারেন। অবশ্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার পূর্বে ডাক্তার রোগীর কিছু শারীরিক অবস্থা নিরীক্ষা করবেন। সেগুলো হলো- ডায়রিয়া তীব্রতা, পানিশূন্যতার তীব্রতা, রোগীর স্বাস্থ্যের সামগ্রিক অবস্থা, চিকিৎসা ইতিহাস, বয়স, এবং রোগীর বিভিন্ন পদ্ধতি বা ওষুধ সহ্য করার ক্ষমতা।
পড়ুন: চট্টগ্রামে বেড়েছে ডায়রিয়া: চাপ সামলাতে মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
ডায়রিয়া প্রতিরোধের উপায়
নিয়মিত হাত ধোয়া
যে কোন ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচার মোক্ষম উপায় হলো খাবার তৈরি ও খাওয়া আগে এবং পরে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেয়া। রান্না করা, টয়লেট ব্যবহার, বাচ্চার ডায়াপার পরিবর্তন, হাঁচি, কাশি এবং নাক ফুঁকানোর পরে হাত ধুয়ে নেয়া জরুরি। হাতে সাবান লাগানোর পরে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ডের জন্য দুই হাত একসাথে ঘষতে হবে। হাত ধোয়ার বিকল্প হিসেবে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে অ্যালকোহল-যুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা উচিত। এ সময় হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার এমনভাবে প্রয়োগ করতে হবে যেন তা উভয় হাতের সামনে এবং পিঠে ভালোভাবে লাগে। একটি ভালো হ্যান্ড-স্যানিটাইজারে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ অ্যালকোহল থাকে।
ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা
ডায়রিয়া বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের সময় সংক্রমণ হতে পারে। যেখানে ভ্রমণ করা হচ্ছে সেখানকার অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন এবং দূষিত খাবার নিমেষেই শরীরকে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে নিয়ে আসে। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকি কমাতে করণীয়গুলো হলোঃ
নতুন জায়গায় খাবারের ব্যাপারে সতর্কতা
গরম ও ভালোভাবে রান্না করা খাবার খান। কাঁচা ফল এবং শাকসবজি এড়িয়ে চলতে হবে। অবশ্য সেগুলো রান্নার জন্য প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ নিজেই করলে খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও কাঁচা বা কম রান্না করা মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি।
পড়ুন: রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবে হাসপাতালে ভর্তি শতাধিক
নতুন জায়গার পানীয়র ব্যাপারে সতর্কতা
বোতলজাত পানি বা সোডা বোতল থেকেই পান করা উচিত। কলের পানি এবং বরফের টুকরো এড়িয়ে চলতে হবে। এমনকি দাঁত ব্রাশ করার জন্যও বোতলজাত পানি ব্যবহার করা জরুরি। গোসল করার সময় বোতলের মুখ বন্ধ রাখতে হবে। সিদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি কফি এবং চা নিরাপদ। এক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত যে অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন ডায়রিয়াকে বাড়িয়ে তোলে যা পানিশূন্যতাকে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেয়।
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ
দীর্ঘ সময়ের ভ্রমণের জন্য আগে থেকেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে অ্যান্টিবায়োটিক নেয়া যেতে পারে। এ সময় ডাক্তার শরীরের যাবতীয় অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে এবং রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাচাই করে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিকের পরামর্শ দিবেন।
পরিশিষ্ট
কোভিডের চাপটা কমতে না কমতেই শুরু হয়ে গেছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। মুলত এরকম সংক্রমণ আকস্মিক নয়। বরং সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার অস্থিতিশীলতা এ ধরণের রোগবালাইয়ের কারণকে সুসঙ্গত করে। জীবন ও জীবিকা সামলানোর অনিয়ন্ত্রিত দৌড়ে আশেপাশের পরিবেশ ও শরীর-স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। আর এর সাথে যখন উদাসীনতা যোগ হয় তখনই চাপের ভয়াবহতা বাড়তে থাকে।
পড়ুন: ঢাকার কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার
২ বছর আগে
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন হাসপাতালে
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন মঙ্গলবার একটি সংক্রমণ নিয়ে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার তার মুখপাত্র জানিয়েছেন, তিনি ‘সুস্থ’ আছেন।
মুখপাত্র অ্যাঞ্জেল ইউরেনা এক বিবৃতিতে বলেন,৭৫ বছর বয়সী ক্লিনটন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া আরভিন মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হন তবে তার সংক্রমণ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত নয়।
ইউরেনা বলেন,‘তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং তিনি ডাক্তার, নার্সও কর্মীদের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
ক্লিনটনের মুখপাত্র দ্বিতীয় বিবৃতিতে চিকিৎসক ড. আলপেশ আমিন এবং ড.লিসা বারডাককে উদ্ধৃত করে বলেন, তাকে অ্যান্টিবায়োটিক এবং তরল দেয়া হয়েছে।
চিকিৎসকেরা বলেন, ‘দুই দিনের চিকিৎসার পর তার শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে এবং তিনি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি ভালোভাবে সাড়া দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: জাপানে পার্লামেন্ট ভেঙে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা
৩ বছর আগে
কেমিকো ফার্মাসিটিক্যালসের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
কেমিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে ডাক্তার, চিকিৎসক সহকারী ও ওষুধ ব্যবসায়ীসহ মানিকগঞ্জের অন্তত ৭০ জন বিনিয়োগকারী এখন সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন । লাভের টাকা দুরের কথা এখন আসল টাকাও না পাওয়ার হতাশায় দিন যাপন করছেন তারা। ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কয়েকজন ভুক্তভোগী এসব কথা জানান।
বুধবার দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগীরা ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অপচেষ্টার অভিযোগ করেন।
আরও পড়ুন: আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় থানায় জিডি
এদেরই একজন ভুক্তভোগী মানিকগঞ্জ জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সাবেক উপপরিচালক ডা. রঞ্জিত কুমার মন্ডল। ২০০৩ সালে দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কেমিকো ফার্মাসিটিক্যালসের ‘ডাক্তার বিনিয়োগ স্কীম’-এ এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। লাখে ওই কোম্পানির কাছ থেকে তিনি মুনাফা পেতেন ১৬৬৭ টাকা। ২০০৫ সালে ওই কোম্পানিতে তার বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৪ লাখে। ২০১২ সালে তার মোট বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৩০ লাখে।
ডা. রঞ্জিত কুমার মন্ডলের মত জেলার অন্তত ৩০ জন চিকিৎসকসহ শতাধিক স্বাস্থ্য সহকারী ও ওষুধ ব্যবসায়ীদের প্রায় সাত কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানে। গত দুই বছর ধরে কোম্পানি তাদেরকে লভ্যাংশ প্রদান করছে না। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: ফারমার্স ব্যাংকের ঋণ আত্মসাতের মামলার রায় ৫ অক্টোবর
বিনিয়োগকারী ডা.বিকাশ চন্দ্র তরফদার জানান, ওই প্রতিষ্ঠানে তার নিজের ও তার স্ত্রীর ৬০ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। প্রথম দিকে আমাদেরকে তারা লভ্যাংশ ঠিকমত দিলেও গত দুই বছর ধরে তারা আমাদের লভাংশ্য দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তারপর তারা আমাদের বিনিয়োগের টাকাও দিচ্ছে না।
ভুক্তভোগী ডা. ওসমান গনি বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে তার ১৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানে সর্বনিম্ন পাঁচ লাখ টাকা থেকে ৬০ লাখ টাকা করেও বিনিয়োগ রয়েছে অনেকের। অর্থ আদায়ের দাবিতে পাঁচ মাস আগে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আসা অন্যান্য ভুক্তভোগীরা জানান, ওষুধ কোম্পানি হিসেবে এই কোম্পানির সুনাম রয়েছে। ওমক্সে, কেফিন, কেসল্ড ওষুদের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এছাড়া ওই কোম্পানির রয়েছে আরও সাতটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। তারা সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহায়তা চেয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে ওই কোম্পানির উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলুল হকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেন নি।
আরও পড়ুন: ই-কমার্স নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চায় হাইকোর্ট
সংবাদ সম্মেলনে ডা. রঞ্জিত কুমার মন্ডল ছাড়াও ডা. বিকাশ চন্দ্র তরফদার, ডা. নরেন্দ্র কুমার রায়, ডা. মো. ওসমান গনি, ওষুধ ব্যবসায়ী পঙ্কজ কুমার, তোফায়েল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৩ বছর আগে
এমবিবিএস-বিডিএস ছাড়া নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করা যাবে না: হাইকোর্ট
এমবিবিএস-বিডিএস ছাড়া হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রিধারী কোনো ব্যক্তি নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। তবে তারা নামের পাশে কোন কোন শব্দ ব্যবহার করতে পারবেন তা উল্লেখসহ বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় তৈরির পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এর আগে হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রিধারীরা নামের পূর্বে ডাক্তার ব্যবহারের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট গত বছরের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে রায় প্রদানকারী বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের স্বাক্ষরের রায় শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
৭১ পৃষ্ঠার এই রায়ে বলা হয়েছে, দুঃখজনকভাবে এটি লক্ষণীয় যে, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন, ২০১০ এর ২৯ ধারা অনুযায়ী বিএমডিসি এর নিবন্ধনভুক্ত মেডিকেল বা ডেন্টাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিগত ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তারিখের সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে ‘অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার’ শীর্ষক অপারেশনাল প্লানের বিভিন্ন পদে কর্মরত হোমিওপ্যাথি, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক কর্মকর্তাদের স্ব-স্ব নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি সংযোজনের অনুমতি প্রদান করেছে, যা এক কথায় আইনের কর্তৃত্ব ব্যতীত তথা বেআইনি।
এছাড়া বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড কর্তৃক ইংরেজি ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন শাখায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদেরকে তাদের নামের পূর্বে পদবি হিসেবে ডাক্তার ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করাও বেআইনি।
রায়ে বলা হয়, বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পেশাধারীরা নামের আগে ইনটিগ্রেটেড ফিজিশিয়ান, কমপ্লিমেন্টারি ফিজিশিয়ান, ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন প্র্যাকটিশনার এবং কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিন প্র্যাকটিশনার পদবি ব্যবহার করতে পারেন। পাশের দেশ ভারতেও বিকল্প ধারার চিকিৎসকরা ডা. লিখতে পারেন না।
রায়ে হোমিও-ইউনানি তথা বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলা হয়েছে, বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি পাঁচ হাজার বছরের প্রাচীন। সুতরাং পাঁচ হাজার বছর ধরে পুরো পৃথিবীতে চলে আসা প্রাচীন বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতির যথাযথ এবং সঠিকভাবে পঠন এবং প্রশিক্ষণ জনমানুষের সামগ্রিক চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করবে। প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি তথা পশ্চিমা চিকিৎসা পদ্ধতি আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হওয়া শুরু হয় আজ থেকে মাত্র ১৬২ বছর আগে। পৃথিবীর প্রথম প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির আইনটির নাম ‘দ্য মেডিকেল অ্যাক্ট, ১৮৫৮’ যা ইংল্যান্ডের সংসদ পাস করেছিল। অর্থাৎ ১৮৫৮ সালের আগে চিকিৎসা ব্যবস্থা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল না। অপরদিকে পাঁচ হাজার বছর আগে থেকে মানুষ বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করে আসছে।
বিকল্প ধারার কিংবা প্রচলিত চিকিৎসক হওয়ার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো প্রস্তুত করে দেয়া সরকারের অন্যতম দায়িত্ব উল্লেখ করে রায়ে চার দফা পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পরামর্শ অংশে বলা হয়েছে, ‘সবার জন্য স্বাস্থ্য’ নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে ‘কাজাখাস্তান ঘোষণা’ থেকে ‘আলমাআটা ঘোষণা’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সার্বিক পরিকল্পনা, নীতিমালা এবং প্রয়োজনীয় আইন দ্রুত প্রণয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরামর্শ দেয়া হলো।
সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় তথা প্রচলিত এবং বিকল্প ধারার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় ‘রোগীকেন্দ্রিক চিকিৎসা সেবা’ নীতিমালা অনুসরণের পরামর্শ দেয়া হলো। প্রয়োজনে বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পৃথক মন্ত্রণালয় তথা ‘মিনিস্ট্রি অব আয়ুশ গভর্নম্যান্ট অব ইন্ডিয়া’ এর আদলে বাংলাদেশের একটি পৃথক মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করার পরামর্শ দেয়া হলো।
আরও পড়ুন: জমজ ১৯ শিশুকে ভিকারুননিসায় ভর্তি করতে হাইকোর্টের নির্দেশ
ফোনে আড়িপাতা বন্ধ ও তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট
চিকিৎসক নিয়োগে হস্তক্ষেপ করবেন না হাইকোর্ট
৩ বছর আগে
সানজিদার স্বপ্নপূরণে সারথি মানবিক জেলা প্রশাসক অতুল সরকার
সানজিদা আক্তার দিনা ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। পরিবারে অসুস্থ মা আর বাবা রয়েছে। দুই বোনের মধ্যে সে ছোট। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে কয়েক বছর আগে। পিতা গিয়াসউদ্দিন কর্মহীন গত ৯ মাস যাবৎ। এছাড়া পিতার বয়সও হয়েছে।
কর্মহীন পিতার পরিবারে অন্যকোনও উপার্জনক্ষম ব্যক্তি না থাকায় আত্মীয় স্বজনের সহায়তা আর মানুষের কাছ থেকে চেয়ে কোনও রকমে সংসার চলছিল। এরই মাঝে বহুকষ্টে সানজিদা আক্তার তার পড়ালেখা টিকিয়ে রেখেছিল। অসুস্থ মায়ের সেবা করতে করতে তার মনে একসময় একটা স্বপ্ন জাগে বড় হয়ে ডাক্তার হবার। পরিবারের অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কথা চিন্তা করে, মনের ভেতরেই সে স্বপ্ন রেখে দেয় সানজিদা।
আরও পড়ুন: গণপরিবহন চলাচলে ফরিদপুরে পরিবহন শ্রমিকদের স্বস্তি
ছাত্রী হিসেবে মেধাবী সানজিদা আক্তার ফরিদপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। এরপর ২০২০ সালে সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পায়। পাশ করার পর শুরু হয় নতুন বিড়ম্বনার। সংসারই যেখানে চলে না, সেখানে তার উচ্চশিক্ষা দুঃসাধ্য।
তবুও থেমে থাকেনি সানজিদা। ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য বাড়িতে বসেই প্রস্তুতি নিতে থাকে। বহুকষ্টে কিছু অর্থ সংস্থান করে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। মনের সুপ্ত স্বপ্ন আর অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, এরই মাঝে অসম্ভব সম্ভাবনার স্বপ্ন বাস্তব হিসেবে দেখা দেয় মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে। সানজিদা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে চান্স পায়। কিন্তু বিধি বাম, ভর্তি এবং বইপুস্তক কেনার মত টাকা তার পরিবারের দেয়ার উপায় নাই।
আরও পড়ুন: করোনার মধ্যে ফরিদপুরে মার্কেটগুলোতে উপচে পড়া ভিড়
চরম দুচিন্তায় সময় যাচ্ছিল সানজিদার পরিবারের। এরই মাঝে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করতে বলেন এক পরিচিত ব্যক্তি। তার কথামত রবিবার (৯ মে) অসুস্থ্য বাবাকে নিয়ে জেলা প্রশাসকের বাসায় যায় সানজিদা। ভর্তি ও বই কেনার জন্য সাহায্যে আবেদন করে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার তার কথা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে ভর্তি, বই কেনা ও প্রাথমিক খরচের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা করেন। একই সাথে তার ভবিষ্যতে তাকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় সাংবাদিক গুরুতর আহত, ঢামেকে স্থানান্তর
জেলা প্রশাসকের তাৎক্ষণিক এই সেবায় আবেগ আপ্লুত সানজিদার বাবা গিয়াসউদ্দিন বলেন, কোন উপায় ছিল না। ভর্তির সময়ও খুব নেই। এই উপকার পেয়ে আমার মেয়ের জীবনটাই পাল্টে যাবে। ওর স্বপ্নপূরণে ডিসি স্যার যে সহযোগিতা করলেন, তার ঋণ কোন দিন শোধ হওয়ার নয়। ভবিষ্যতে ডাক্তার হয়ে আমার মেয়েও প্রকৃত মেধাবীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সানজিদা বলেন, আমার স্বপ্নপূরণে সারথি হয়েছে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন। অতুল স্যার (জেলা প্রশাসক) যেভাবে আমাকে দ্রুততার সাথে সহায়তা করলেন আমি কোনদিন কল্পনাও করিনি কেউ এভাবে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, আমি ভর্তি হওয়ার চিন্তায় দুদিন যাবত অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আজ থেকে আমার চিন্তা দূর হলো। আমি চেষ্টা করবো ডাক্তার হয়ে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে মানুষের সেবায় নিয়োজিত করতে। আর আমার পথ প্রদর্শক হয়ে থাকবেন আজকের ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার স্যার।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, অর্থের অভাবে একটি মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে এটা কখনো কাম্য নয়। সানজিদার ভর্তির জন্য আপাতত যে পরিমাণ অর্থের দরকার ছিল, তার বাবার হাতে তা তুলে দিয়েছি। প্রয়োজনে আরও সহায়তা দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো মেধাবী মুখ যেনও ঝরে পড়তে না পারে তার জন্য সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। শিক্ষা প্রসারসহ যে কোনো মানবিক সহায়তা প্রদানে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন প্রস্তুত আছে এবং আগামীতেও থাকবে।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সুশাসনে গড়ি, সোনার বাংলা’ এই স্লোগানকে সামনে রেখেই আমরা কাজ করছি। চেষ্টা করছি অসহায় মানুষের কথা শুনে তাদের সেবা দিতে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।’
৩ বছর আগে
‘ফোন করলেই ডাক্তার যাবে রোগীর বাড়ি’
‘এই নম্বরে ফোন করি, ডাক্তার যাবে রোগীর বাড়ি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বাগেরহাটে স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে।
বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাগেরহাট সদর হাসপাতাল চত্বরে এই ব্যতিক্রমী কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক।
আয়োজকরা জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যতিক্রমী এই স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমের অধীনে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মিরাজুল করিম চারটি মেডিকেল টিম পরিচালনা করবেন। কোনো রোগী যদি হাসপাতালে আসতে ভয় পান তাহলে ০১৭৩০-৩২৪৭৯৩ এই নম্বরে ফোন করলে চিকিৎসক টিম রোগীর বাড়িতে যাবে। রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরামর্শ ও ওষুধ প্রদান করা করবেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র চালু করল আইওএম
বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন বলেন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের উদ্যোগে করোনা সংক্রমণের প্রথম ধাপে `ডাক্তারের কাছে রোগী নয়, রোগীর কাছে ডাক্তার‘ এই স্লোগান নিয়ে একটি ব্যতিক্রমী চিকিৎসা সেবা চালু করেছিলাম। করোনা সংক্রমণের এই দ্বিতীয় ঢেউয়েও মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত ও সংক্রমণ প্রতিরোধে রোগীদের হাসপাতালে আগমন নিরুৎসাহিত করতে বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই কার্যক্রমের আওতায় আপাতত বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলার মানুস বাড়িতে বসে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। পর্যায়ক্রমে জেলার সকল উপজেলায় এই সেবা চালু করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, সরকার ঘোষিত লকডাউনের ফলে যানচলাচল সীমিত করা হয়েছে। যার ফলে অনেক রোগী হাসপাতালে আসতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে বসে রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ফলে ওই রোগী একদিকে বাড়িতে বসে চিকিৎসা পাবেন। তিনি যদি সংক্রমিত হয়েও থাকেন, তার মাধ্যমে আর কারও মাঝে রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকবে না। এই উদ্যোগের ফলে করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ সঠিক চিকিৎসা পাবেন এবং করোনা সংক্রমণ রোধেও ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন: দেশে সবার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে শেখ হাসিনা সংকল্পবদ্ধ: নৌ প্রতিমন্ত্রী
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আ ন ম ফয়জুল হক বলেন, এই নম্বরে ফোন করি, ডাক্তার যাবে রোগীর বাড়ি। এর মানে হচ্ছে ওই নম্বরে ফোন করা হলে ডাক্তার রোগীর বাড়ি গিয়ে সেবা দিয়ে আসবেন। এটা বাগেরহাটবাসীর জন্য একটি বড় অর্জন।
এসময় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক দেব প্রসাদ পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার রিজাউল করিম, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোছাব্বেরুল ইসলাম, বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীব বকসি, বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. মিরাজুল করিমসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৩ বছর আগে
নবজাতকের ধড় বের হলেও মাথা থেকে গেল পেটের ভেতরে
যশোর জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে এক প্রসূতির গর্ভ থেকে একটি মেয়ে শিশুর ধড় বের করলেও মাথা ভেতরে রয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হাসপাতালের আয়া মোমেনা খাতুনকে দায়ী করা হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটেছে।
৩ বছর আগে
কুমিল্লায় করোনায় শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মৃত্যু
সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ কুমিল্লার শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান রিপন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
৪ বছর আগে