অভিযোগ
পাথর তুলতে বাধা, ২০ লাখ টাকার গাছ কেটে প্রতিশোধ নেয়ার অভিযোগ
নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে বাধা দেয়ায় এক পরিবেশ কর্মীর প্রায় ২০ লাখ টাকার গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তারই আপন চাচার বিরুদ্ধে।
পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বড়বিল্লাহ গ্রামে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সহ-সভাপতি কাজী মকছেদুর রহমান তার আপন চাচা কাজী মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষায় সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধে রিট
অভিযোগে মকছেদ জানান, তার আপন চাচা বহুদিন ধরে জমিতে নিষিদ্ধ ড্রিল ড্রেজার দিয়ে বিনা বাধায় পাথর উত্তোলন করে আসছিলেন। পরিবেশ আন্দোলনের নেতা হিসেবে এলাকার প্রকৃতি রক্ষা ও ভূমিকম্পের হাত থেকে তেঁতুলিয়াকে বাঁচাতে ড্রেজারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন মকছেদ। জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও দেন তিনি। এতে করে মাহবুব ভাতিজা মকছেদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে এ কাণ্ড করেন।
বিষয়টি তেঁতুলিয়া মডেল থানাকে অবগত করলেও প্রভাবশালী ড্রেজার মেশিন মালিকদের দাপটে ৭ দিনেও থানা পুলিশ আনত অভিযোগ এজাহার হিসেবে গণ্য করেনি বলে জানান মকছেদ। পরে তিনি জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেন।
মকছেদ বলেন, ‘২০ বছর আগে জমিতে আমি ও আমার বাবা ১ হাজার ২০০ ইউক্যালিপটাস গাছ রোপণ করি। ঈদের আগের দিন থেকে আমার চাচা গাছ কাটা শুরু করেন। এ পর্যন্ত দুইশ'র বেশি গাছ কেটে বিক্রি করেছেন তিনি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, অভিযোগকারীর চাচা মাহবুবের নির্দেশে কাঠ ব্যবসায়ী রহমতুল্লাহ ১০-১৫ জন নিয়ে গাছ কাটছেন। কাটা গাছগুলো কয়েকটি ভ্যানে লোড করে কাঠের মিলে নেয়া হচ্ছে।
৮ দিন আগে
ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, আটক ৩
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট শাখায় গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। শাখার ক্যাশিয়ার প্রাথমিকভাবে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর গ্রাহকরা রবিবার(২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ব্যাংকটির ওই এজেন্ট শাখার মালিক ও কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করেন। পরে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের জয়পুরহাট শাখা ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, গ্রাহকদের মোট আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ এখনও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ৮০ লাখ টাকার মতো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ইসলামী ব্যাংকের ওই এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার এজেন্ট মালিক জাহিদুল ইসলাম, ইনচার্জ (ব্যবস্থাপক) রিদওয়ানা ফারজানা ও ক্যাশিয়ার মাসুদ রানাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার পর সোমবার তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের উপজেলা পরিষদের সামনে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখাটি খোলা হয়। সেখানে প্রায় দুই হাজার হিসাব রয়েছে। শাখাটির এজেন্ট মালিক, ইনচার্জ (ব্যবস্থাপক) ও ক্যাশিয়ারসহ তিন কর্মকর্তা কর্মরত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার আক্কেলপুর দারুল কোরআন মাদরাসার হিসাব থেকে টাকা উধাও হওয়ার পর শাখাটির থেকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি প্রথম ধরা পড়ে।
ওই মাদরাসার মুহতামিম মুফতি ফিরোজ আহমদ জানান, তাদের মাদরাসার হিসাবে ৩৯ লাখ টাকা ছিল। বৃহস্পতিবার তারা ১৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোনে ওই এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে টাকা জমা ও উত্তোলনের কোনো খুদে বার্তা আসত না। সন্দেহ হওয়ায় তারা জয়পুরহাট জেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখায় যান। সেখানে গিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিবরণী নেন।
আরও পড়ুন: অর্থ আত্মসাত: ডেসটিনির রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের ১২ বছরের কারাদণ্ড
হিসাব বিবরণীতে দেখা যায়, মাত্র ১৭ হাজার ২৯৯ টাকা রয়েছে। তারা হিসাব বিবরণী নিয়ে আক্কেলপুরের ওই এজেন্ট শাখায় গিয়ে ওই ব্যাংকের শাখায় তাদের জমা করা টাকা উধাও হওয়ার বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও ক্যাশিয়ারের মুখোমুখি বসে চাপ সৃষ্টি করলে তখন ক্যাশিয়ার তাদের প্রতিষ্ঠানসহ অন্য ব্যক্তিদের হিসাব থেকে কৌশলে টাকা তুলে আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, তারা ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলমকে জানিয়েছেন।
আটক ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে কৌশলে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা তুলে তার গ্রামের বাড়িতে জমি কিনেছেন ও জমি বন্ধক নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে আক্কেলপুরের ইউএনও মনজুরুল আলম বলেন, ‘আমি প্রথমে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা শুনেছি। এখন কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে শুনতে পাচ্ছি।’ তিনি গ্রাহকদের আশ্বস্থ করে বলেন, এ ঘটনায় মামলা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
২৩ দিন আগে
কুমিল্লায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
কুমিল্লার চান্দিনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বাদী হয়ে শুক্রবার (২১ মার্চ) সকালে ২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনকে আসামি করে চান্দিনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের মো. বিল্লালের ছেলে মো. সোয়েব ও একই ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে প্রভাত চন্দ্র সরকার এর ছেলে রতন চন্দ্র সরকার।
ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রী চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার বাসিন্দা। সে কচুয়া উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। গত ১৯ মার্চ বিকালে চান্দিনা ও কচুয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কৈলাইন বাজারে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় ওই ছাত্রী।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে নারী সাংবাদিককে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ২
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানায়- বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যার পর অটোরিকশায় বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফেরার পথে ৫ থেকে ৬ জন যুবক আমার অটোরিকশাটি থামিয়ে অটোরিকশাচালক ও আমাকে চর থাপ্পর দিয়ে টেনে হেঁচরে জমির মাঝে একটি সেলু মেশিনের ঘরে নিয়ে যায়। অটোরিশাচালককের হাত-পা বেঁধে পাঁচ যুবক তাকে ধর্ষণ করে।
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত দুই যুবককে তাৎক্ষণিক আটক করা হয়। পরদিন ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার পর অভিযুক্তদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
২৬ দিন আগে
নরসিংদীতে কৃষকদের জমির মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
নরসিংদীতে কৃষকদের জমির মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি চক্রের বিরুদ্ধে।
আব্দুল কাইয়ুম ১৮ থেকে ২০টি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে গত তিন মাস যাবত অবৈধভাবে আলোকবালীর গৌরীপুরা চরের কৃষি জমি থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন। যার ফলে ১৩৯ কৃষকের কয়েকশত একর কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে থেকে একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়া ১৮ থেকে ২০টি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে তিনমাস ধরে অবৈধভাবে কৃষি জমি থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন। ইতোমধ্যে ১৩৯ জন কৃষকের প্রায় কয়েকশত একর কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধে দফায় দফায় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্তদের জরিমানা করলেও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন। উল্টো অবৈধ বালু উত্তোলনের গতি আরও বেড়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কাইয়ুম মিয়ার বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলা ও একাধিক অস্ত্র মামলাও রয়েছে। তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই কৃষকদের ভয় দেখানো হয়।
এমনকি, গত ৯ মার্চ ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে আয়োজিত নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার পথে আসা কৃষকদের ওপর দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে চারজন কৃষক আহত হয়েছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে জমি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তরা দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী কৃষক দুদুল মিয়া বলেন, ‘আমার ২৫৪ শতাংশ জমি কেটে নিয়ে গেছে কাইয়ুম। জমিতে ধান চাষ করতাম, আমাদের চরের দুই পাশে নদী হওয়ায় প্রতিবছর জমির পরিমাণ বৃদ্দি পায়। ফলে, প্রতিটি কৃষকের জমিই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসব জমি অবৈধ চুম্বক ড্রেজার ব্যবহার করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিএনপি নেতা কাইয়ুম।’
‘এমকি প্রতিবাদ করলেই হামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয় আমাদের।’
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত
আরেক ভুক্তভোগী কৃষক ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘কাইয়ুমের প্রভাবে আমরা অসহায়। জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তারা কাইয়ুমকে জরিমানাও করেছে, কিন্তু কাইয়ুম আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’
কাইয়ুমের বক্তব্য জানতে একাধিকবার তাকে ফোন করলেও রিসিভ করেননি।
নরসিংদী জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব দীপক কুমার বর্মণ প্রিন্স বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশ, ‘কৃষক বাঁচলেই, দেশ বাঁচবে।’
‘কৃষকদের পাশে থাকতে কৃষক দল সারা দেশে কৃষক সমাবেশ আয়োজন করছে। যারা কৃষকদের ক্ষতি করবেন, তাদের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান থাকবে। দলের নেতাদের প্রতি সুপারিশ করব তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আব্দুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবারও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
২৮ দিন আগে
জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগ: শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ে কম নম্বর পেলেন শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের (৪৯তম ব্যাচ) এক শিক্ষার্থীর গবেষণার রিপোর্টে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নম্বর কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
তারা হলেন—প্রভাষক অশীষ কুমার দত্ত ও অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে জাবি উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্রটি পাঠিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রবিন হোসেন।
এতে বলা হয়, ‘গত ৫ মার্চ আমার অনার্স ৪র্থ বর্ষের রেজাল্ট প্রকাশিত হয়। আমি গত ১০ মার্চ ফলাফলের গ্রেডশিট উত্তোলন করি। সেই গ্রেডশিটে আমার ‘রিসার্চ রিপোর্ট’ কোর্সে ‘ডি’ গ্রেড দেখতে পাই, যা আমার প্রত্যাশার চেয়ে বহুলাংশে কম। বিগত বছরে অনার্সের কোনো পরীক্ষায় আমি ‘ডি’ গ্রেড পাইনি। আমার বিভাগের ‘ওয়াইল্ডলাইফ’ ব্রাঞ্চের কিছু শিক্ষক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা করেছেন। এমতাবস্থায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে আমার এই রিপোর্টটির রেজাল্ট পুনঃনিরীক্ষণ না করা হলে, আমি আমরণ অনশনে বসব।’
আরও পড়ুন: জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আটক রিকশাচালক নির্দোষ: দাবি পরিবারের
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ‘প্রাণিবিদ্যা বিভাগে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রজেক্ট/রিসার্স রিপোর্ট কোর্স করতেই হবে। এটা বাধ্যতামূলক। এটি দুই ক্রেডিটের একটি মূল্যায়নভিত্তিক কোর্স। এখানে প্রথম পরীক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীর সুপারভাইজার, পাশাপাশি দ্বিতীয় ও তৃতীয় পরীক্ষক হিসেবে বিভাগের অন্য দুজন শিক্ষক নম্বর দিয়ে থাকেন।’
রবিন হোসেন বলেন, ‘আমি ওয়াইল্ডলাইফ ব্রাঞ্চের প্রফেসর ড. মনিরুল হাসান খানের অধীনে আমার গবেষণা রিপোর্ট সম্পন্ন করি। যিনি অরাজনৈতিক শিক্ষক হিসাবে পরিচিত। এতে অন্য গ্রুপের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে নম্বর কম দেন। আমার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পরীক্ষক উভয়ই আওয়ামীপন্থি।’
‘আমি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছি। আমার গবেষণা রিপোর্ট অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকের মাধ্যমে মূল্যায়ন করুক, এতে আমার মার্কস না বাড়লে মেনে নেব, আর যদি বাড়ে তাহলে যেন তদন্ত সাপেক্ষে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। অন্যথায় আমি অনশনে বসব,’ বলেন ওই শিক্ষার্থী।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী মারফত জানা যায়, বন্যপ্রাণিবিদ্যা গবেষক শিক্ষকদের মধ্যে দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি আওয়ামীপন্থি, অন্যটি অরাজনৈতিক। আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের নেতৃত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ও জুলাই হামলায় অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, প্রফেসর ড. কামরুল হাসানসহ অন্যন্য আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা। অরাজনৈতিক গ্রুপটির নেতৃত্বে আছেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খানসহ অন্যন্য শিক্ষকরা। তাদের মধ্যকার দ্বন্দের কারণে ভুগতে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থী জানান, ‘এখানে শিক্ষকদের মাঝে প্রচুর গ্রুপিং হয়ে থাকে। আমি একজন শিক্ষকের অধীনে থিসিস করেছিলাম, যার ফলে অন্যগ্রুপের শিক্ষকরা আমাকে ভাইভাতে অনেক কম মার্কস দিয়ে রেজাল্ট ধসিয়ে দিয়েছিলেন। অথচ বাকি কোর্সগুলোতে আমি ভালো করেছিলাম। শুধু আমি না, আমার মতো আরও অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটছে, কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেননি।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সুপারভাইজার অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান বলেন, ‘আমার অধীনে দুজন শিক্ষার্থী কাজ করেছেন। তার মধ্যে একজনকে অকৃতকার্য করা হয়েছে এবং ভুক্তভোগী রবিনকে 'ডি' গ্রেড দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ একটি অস্বাভাবিক বিষয়। কেননা, আমি দেখেছি তার অন্যান্য বিষয়গুলোতে অনেক ভালো মার্কস আছে। আমি বিষয়টি বিভাগীয় প্রধানকে জানিয়েছি। অথোরিটি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে আশা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এটা ভালো কাজ হয়েছে। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান মনির বলেন, ‘মার্কস দেওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষা কমিটির কোনো ইখতিয়ার নেই। পরীক্ষা কমিটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস ও বিভাগের শিক্ষকদের যোগ করা মার্কস ক্রোস চেক করেন। ওই শিক্ষার্থী প্রশাসনের কাছে নিজের আবেদন পেশ করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবেন।’
আরও পড়ুন: জাবিতে বসন্তের আগমন, প্রকৃতিতে স্নিগ্ধতার ছোঁয়া
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মানছুরুল হক বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখন কিছুই বলতে পারছি না। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্তসাপেক্ষে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে পারছি না। অভিযোগপত্র এখনো হাতে পাইনি। অভিযোগপত্র সম্ভবত অফিসে এসেছে। আমার হাতে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তদন্তসাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
অভিযুক্ত দুই শিক্ষক প্রভাষক অশীষ কুমার দত্ত ও অধ্যাপক ড. কামরুল হাসানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
৩১ দিন আগে
গাজীপুরে ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ, যানবাহনে আগুন
গাজীপুরে প্যানারোমা গার্মেন্টসে এক নারী শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি অভিযোগ করা হয়েছে। পরে কর্মস্থলেই তিনি মারা যান বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এ সময়ে বিভিন্ন যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩ মার্চ) সকালে ভোগড়া বাইপাস মোড় এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
বিক্ষোভকারীরা কয়েকটি মোটরসাইকেল ও গাড়িতে আগুন দিলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর পর সকাল সোয়া ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শ্রমিকরা জানায়, প্যানারোমা গার্মেন্টসের এক নারী শ্রমিক কাজ করার সময় অসুস্থ বোধ করলে ছুটি প্রার্থনা করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে ছুটি না দিলে মারা যান তিনি।
এর পর কর্তৃপক্ষ লাশ তাদের হেফাজতে রেখে দেয়, এমন অভিযোগ তুলে সোমবার সকাল থেকেই শ্রমিকরা কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আরও পড়ুন: ছিনতাইকারী সন্দেহে গাজীপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা
৪৫ দিন আগে
নানা অভিযোগে ডিন অফিসে তালা দিলেন বাকৃবির ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের অধীনস্ত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিনের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ফুড শিক্ষার্থীরা জানান, ৪ মাস আগে ক্লাসরুম সংকট, ক্লাসরুমের দুরাবস্থা, নষ্ট প্রজেক্টর, ওয়াশরুমের দুরবস্থাসহ নানা সমস্যা প্রশাসনকে জানানো হলেও সমাধান হয়নি।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো জয়নাল আবেদীন বিষয়টি অস্বীকার করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আজকে (বুধবার) অভিযোগপত্র দিয়েছে। এর আগে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
এ সময় উপস্থিত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ক্লাসরুম ৩টি ও এর বিপরীতে ব্যাচ মোট ৬টি। দেখা যায়, অনেক সময় রুটিনে ক্লাস ওভারল্যাপ হলে ক্লাসরুমই পাওয়া যায় না। আজও একজন শিক্ষক ক্লাসরুম ফাঁকা না পেয়ে ক্লাস না নিয়েই চলে যান।
তারা আরও বলেন, ক্লাসের প্রজেক্টর নষ্ট, ফ্যান নষ্ট, ওয়াশরুম নষ্ট, ক্লাসরুমের পাশাপাশি ক্লাসে সিটেরও সংকট, ৩০ জনের ক্লাসে ৫০ জনকে ক্লাস করতে হয়, ল্যাবের অবস্থাও করুণ। আমরা কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিনের কাছে এসব বিষয় নিয়ে প্রায় চার মাস আগে কথা বলি, কিন্তু তিনি শুধু আশ্বাস দিয়েই ক্ষান্ত।
এ বিষয়ে ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগে অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার জানান, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন ধরে ক্লাসরুম সংকট, ল্যাব ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে অভিযোগ করে আসছে। এই বিষয়টা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ডিনকে অবহিত করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়ে আসে।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে ডিন বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া এ বছর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়াতে ক্লাসরুমের দরকার। বায়োইনফরম্যাটিকসে মাত্র ২টি ক্লাসরুম। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ২টি মাস্টার্স ডিগ্রি হওয়াতে রুমের সংকট হচ্ছে। রুটিন বিন্যাসে পরিকল্পনা ত্রুটির কারণে ক্লাসের অধিক্রমণ হচ্ছে। ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর এসে মেইন বিল্ডিংয়ে সাময়িকভাবে একটি রুমের ব্যবস্থা করেছেন।’
বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ বিএসসি এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বায়োইনফরমেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং—তিনটি ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।
৭৭ দিন আগে
অনিয়মের অভিযোগে এক প্রতিষ্ঠানের সদস্য পদ স্থগিত করলো বাজুস
সোনা বেচাকেনায় অনিয়মের অভিযোগে গোল্ড কিনেন টেকনোলজিসের সদস্য পদ স্থগিত করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস জানায়, সদস্যপদ গ্রহণের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সকল শর্ত পূরণ করায় ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে বাজুসের প্রাথমিক সদস্যপদ প্রদান করা হয়। কিন্তু স্বর্ণ বেচাকেনায় অনিয়ম করার বাজুস এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অনিয়ম প্রসঙ্গে বাজুস জানায়, প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম বহির্ভূতভাবে সোনার অলঙ্কারের পরিবর্তে সোনার বার ও কয়েন বিক্রি করায় সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির এ ধরনের কার্যক্রম বাজুসের গঠনতন্ত্রের ৪(ক) ধারা যথাযথভাবে অনুসরণ না করে না সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
৯৮ দিন আগে
সুনামগঞ্জে এইচএসসির ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ
আগামী এপ্রিলে সারাদেশে শুরু হবে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা। এজন্য ছাতকের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ফরম পূরণ শুরু হয়েছে।
তবে ছাতক চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ফরম পূরণের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার ৮০০ টাকা করে আদায় করা হলেও তা দেখার কেউ নেই।
এছাড়া গেল ২৯ ডিসেম্বর ছাতক চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম-নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু সফটওয়্যারজনিত ত্রুটি দেখিয়ে তিন দিনের ব্যবধানে গত ১ জানুযারি দ্বিতীয় বার নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখ রবিউল ইসলাম।
বার্ষিক পরীক্ষার নবম শ্রেণির দুটি ফল প্রকাশের ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।
অভিযোগ আছে, জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ফরম পূরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছে ছাতকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বহু শিক্ষার্থীর।
অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ করতে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অভিভাবকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ফিস ১৬৫০ টাকা, সেন্টার ফিস ৪৮০ টাকাসহ দুই হাজার ১৩৯ টাকা নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: বেনাপোল দিয়ে পণ্য রপ্তানিতে ১১ শর্ত
এছাড়া বিজ্ঞান বিভাগের জন্য পাঁচ হাজার ৮০০ টাকা এবং বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগের জন্য পাঁচ হাজার ৬০০ টাকা ধরা হয়েছে। তবে সুবিধাভোগীরা ম্যানেজিং কমিটির নাম ভাঙিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।
চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, তাদের কাছ তিন থেকে চার হাজার টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে।
নবম শ্রেণিতে দুবাব পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের সত্যতা স্বীকার করে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষিকা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘সফটওয়্যারজনিত যান্ত্রিক ত্রুটি দেখিয়ে এসব করা হয়।’
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শেখরবিউল ইসলামকে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলে কেউ রিসিভ করেননি।
উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা পুলিন চন্দ্র রায় বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা আদায় করা অন্যায়। এছাড়া নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার দুটি ফলাফল প্রকাশ করতে পারেন না। এসব ঘটনার খোঁজ-খবর নিয়ে আইনানুগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘এসএসসির নিধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।’
বার্ষিক পরীক্ষায় দুটি ফলাফল প্রকাশের ঘটনায় ইউএনও বলেন, ‘এসব ঘটনায় অভিযোগ পেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
৯৯ দিন আগে
শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মাইকেল চাকমার অভিযোগ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন। প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান অভিযোগটি গ্রহণ করেন।
এ সময় মাইকেল চাকমার সঙ্গে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক, অধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, শেখ হাসিনাসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মাইকেল চাকমা অভিযোগ দাখিল করেছেন। এছাড়া বাকি আটজনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে এসে প্রসিকিউশনে মৌখিক অভিযোগ করেন মাইকেল চাকমা। অভিযোগ দায়ের করার পর সেদিন মাইকেল চাকমা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমি মনে করি যে প্রতিহিংসার আমি শিকার হয়েছি, প্রধান আসামি হিসেবে আমার গুমের জন্য শেখ হাসিনাকেই দায়ী করছি। তার সঙ্গে আরও যারা জড়িত ছিল, তাকে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দিয়েছি।’
পরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মাইকেল চাকমার অভিযোগ আমলে নিয়েছি। এখন থেকেই তার অভিযোগের তদন্ত শুরু করব।’
২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে মাইকেল চাকমা গুমের শিকার হন।
আরও পড়ুন: থার্ড টার্মিনাল প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করবে দুদক
মাইকেলকে উদ্ধারের দাবিতে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠন, প্রগতিশীল ও মানবাধিকার সংগঠন, শিক্ষক-নাগরিক সমাজসহ পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরাও মাইকেলের সন্ধান দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিল।
পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের ও মাইকেলের সন্ধান চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হলেও তাকে উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিগত সরকার।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দীর্ঘ ৫ বছর ৩ মাস পর গত ৭ আগস্ট অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান মাইকেল চাকমা।
ওইদিন ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
১০৭ দিন আগে