অভিযোগ
রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ জুলাই আহতদের, ক্ষোভ প্রকাশ
রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে জুলাই আন্দোলনে আহতরা তাদের চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৫ জুন) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটির সদস্যরা হাসপাতাল পরিদর্শনে এলে চিকিৎসাবঞ্চিতরা তাদের কাছে এই অভিযোগ করেন।
চিকিৎসা নিতে আসা সৌরভ নামের একজন আহত বলেন 'এখানে কাউকেই সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। যারা ভর্তি ছিল কর্তৃপক্ষ তাদের বলেছে ঈদে বাড়ি যেতে এবং বাড়ি থেকে ঘুরে আসার পর তাদের আবার ভর্তি নেওয়া হবে। কিন্তু তারা(হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) তাদের কথা রাখেনি। বাড়ি থেকে আসার পর আহতদের আর ভর্তি নেওয়া হয়নি। আর যারা আহত হয়ে পড়ে আছে তাদের পচন ধরে যাচ্ছে। আপনারা যদি জিজ্ঞেস করেন আহতরা একই সুরে একই কথা বলবে, যে আমাদের চিকিৎসা দরকার।’ আমরা যদি সুচিকিৎসা না পাই—তাহলে এই হাসপাতালে আবার জুলাই হবে, বলেন সৌরভ।
আশিক নামের আরেকজন বলেন, আমি বাড়ি থেকে ১১ দিন পর এসেছি। আমাকে ভর্তি নেওয়নি। তারা বলেছে ভর্তি নেবে না, আমি তাই ফ্লোরে ঘুমাই এখন। কোনো চিকিৎসাও পাইনা। যদি ভর্তি নেয়, চিকিৎসা দেয়, সেজন্য এখানেই থাকি।
কাঁধে ব্যান্ডেজ লাগানো আয়েশা নামের এক নারীকে হাসপাতালের ভিতরে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়। তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন বলে দাবি তার। তিনি জানান, চিকিৎসা এবং সহায়তা তার পাওয়ার কথা ছিল সেটা তিনি পাননি।
হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে বৈষম বিরোধীবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির সদস্যরা ব্রিফিং করেন। কমিটির মুখপাত্র সিনথিয়া জাহীন আয়েশা বলেন, 'আমরা হাসপাতাল পরিদর্শন করে অনেক অভিযোগ পেয়েছি। একজন মা তার ছেলেকে নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন, এরপর ফিরে আসার পর ছেলেকে আর ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে সেই মা অভিযোগ করেছেন আমাদের কাছে।
তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগী সেই মা আমাদের জানান, তিনি হাসপাতালে এবং বাসা বাড়িতে কাজ করে ছেলের খাবার ওষুধের টাকা জোগাড় করছেন। আমরা শুনেছি তাদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এবং চিকিৎসার ব্যাপারে কোনো আশ্বাসও দেওয়া হয়নি।
পড়ুন: তোপের মুখে পঙ্গু হাসপাতাল ছাড়লেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
১৫২ দিন আগে
নরসিংদীতে ইউনিয়ন পরিষদে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
নরসিংদীর রায়পুরায় ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারীর কক্ষে শামীম নামে এক ব্যক্তি মোহাম্মদ শাহিন নামের এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (২ জুন) দুপুর ২-৩টর দিকে উপজেলার হাসনাবাদে স্থাপিত আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারীর কক্ষের ভিতর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শাহিন (৪২) মির্জানগর ইউনিয়নের মেজেরকান্দী গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। হাসনাবাদ বাজারের একজন স্যানিটারী ব্যবসায়ী তিনি।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেলা দুইটার দিকে তিনি ‘তাহসিন ইলেক্ট্রনিক অ্যান্ড স্যানিটারী’ প্রতিষ্ঠানের ট্রেডলাইসেন্স করতে আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ যান। সেখানে হিসাব সহকারীর কক্ষে বসে ট্রেডলাইসেন্স সংক্রান্ত কথা বার্তা বলার সময় হঠাৎ করে শামীম একটি ধারালো দা নিয়ে শাহিনকে কোপাতে থাকে। এসময় সঙ্গে থাকা হিসাব সহকারী কামাল হোসেন সহ অন্যান্যরা ঘাতক শামীমকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। শামীমের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সচিবসহ আরও দুইজন আহত হয়। পরে এলাকাবাসী ঘাতক শামীমকে আটক করে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে।
এ ব্যাপারে আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কামাল হোসেন বলেন, ঘটনার দিন দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে মাদক সেবী শামীম মাতাল অবস্থায় চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। এসময় ট্রেডলাইসেন্স করতে আসা শাহিন ও আমি মাদকসেবী শামীমকে চিৎকার চেচামেচি করতে বারণ করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর আক্রমণ করতে এলে আমরা রুমের দরজা বন্ধ করে দেই।
এসয় মাদক সেবী শামীম একটি বাঁশ নিয়ে দরজায় সজোরে আঘাত করে দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে সে ব্যর্থ হয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে সে ধারালো দা নিয়ে আমার রুমে ঢুকেই শাহিনকে দা দিয়ে এলোপাতারি কোপাতে থাকে। আমিসহ অন্যরা ফিরানোর চেষ্টা করলে দুইজন আহত হই। এ অবস্থায় সে শাহিনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ব্যবসায়ী শাহিনকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পড়ুন: কুষ্টিয়ায় মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে যাই এবং ঘাতক শামীমকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
১৫৫ দিন আগে
ডাকসু নির্বাচন বানচালে পাঁয়তারার অভিযোগ, আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা
সাম্য হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক ঘটনায় স্থবির হয়ে আছে ডাকসু নির্বাচন কার্যক্রম। নির্বাচন কমিশন গঠনের সময়সীমা মে মাসের মাঝামাঝি নির্ধারিত থাকলেও এখন পর্যন্ত নীরব রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে ডাকসু নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ করছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
শনিবার (২৪ মে) দুপুরে ডাকসু নির্বাচনসহ তিন দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা। মিছিল শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ভবনের সামনে অবস্থান নেন।
এসময় সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, ‘আজকের মধ্যেই ডাকসুর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। আর কোনো টালবাহানা আমরা মেনে নেব না। ডাকসু নির্বাচন বানচালের কোনো চেষ্টাই সফল হবে না।’
আরও পড়ুন: জুনের আগে ডাকসু নির্বাচনের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। তাদের দাবিগুলো হলো- সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার করা এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসির চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসন এবং পুলিশের নির্লিপ্ততা পরিলক্ষিত হচ্ছে। একটি মহল এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ডাকসু নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে। সাম্য হত্যাকাণ্ডের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে ইস্যু করে পরিকল্পিতভাবে ডাকসু নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চলছে। বিষয়টি এখন দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুরো পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকাণ্ড ব্যাহত এবং ডাকসু নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে।’
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগ নিলেও আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তাদের বক্তব্য, ‘আমরা আর কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। প্রশাসনকে এখন কাজের অগ্রগতি নিয়ে আমাদের সামনে আসতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যাল প্রশাসন জানিয়েছে, সাম্য হত্যার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আজ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
এদিকে একই দাবিতে উপাচার্য বাংলোর সামনে চতুর্থ দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছে স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক জামালুদ্দীন খালিদসহ একদল শিক্ষার্থী। অনশনরত অবস্থায় দুই শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এখনো পর্যন্ত তারা চিকিৎসাধীন।
১৯৪ দিন আগে
ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অর্থ আত্মসাত ও ভিডিও ফাঁসের অভিযোগ
যশোর জেলা ছাত্রদলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম রাফার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাত এবং অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ফাঁসের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লার আমতলী এলাকার বাসিন্দা মাহিনুর আক্তার মাহি নামের এক তরুণী যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ফেসবুকে পরিচয়ের মাধ্যমে মাহি ও রাফার মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে রাফা তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মাহি রাজি হন এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর রাফার অনুরোধে মাহি যশোরে আসেন। ওই দিন বিকালে মনিহার সিনেমা হলের সামনে থেকে রাফা তাকে যশোর আইটি পার্কের পঞ্চম তলার একটি কক্ষে নিয়ে যান এবং সেখানে সন্ধ্যায় বিয়ের আশ্বাসে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করেন। এ সময় কৌশলে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেন রাফা।
আরও পড়ুন: সীমান্তে উত্তেজনা: বাংলদেশের প্রতিবাদ সত্ত্বেও পুশ-ইন অব্যাহত
পরবর্তীতে রাফা তাকে জানায়, তার কাছে কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও আছে—যেগুলো মাহি কথা না শুনলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
ভিডিও ফাঁসের হুমকি দিয়ে মাহির কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন রাফা। টাকা না দিলে ভিডিও ছড়ানোর হুমকি দেন। ভয়ে মাহি যশোর ইসলামী ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে টাকা দেন। পরে আরও কয়েক দফায় মোট ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা দেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাহি জানান, ২৩ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বান্ধবী স্বর্ণা খাতুনকে নিয়ে রাফার শংকরপুরের বাড়িতে গিয়ে তার বাবা-মাকে সম্পর্কের বিষয়টি জানান। রাফার বাবা-মা সম্পর্ক মেনে নেওয়ার কথা বললেও, রাফা বন্ধুমহলের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে হুমকি দেন এবং মাহিকে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
১৯৪ দিন আগে
বারবার ডাকলেও আসেননি ডাক্তার, অবশেষে বৃদ্ধের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় আব্দুল মোমিন মালিতা পানু (৮০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। এসময় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে।
সোমবার (৫ মে) রাত ৯টা ৪০মিনিটে হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আব্দুল মোমিন মালিতা।
তিনি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং মৃত হায়দার মালিতার ছেলে।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, সদর হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আব্দুল মোমিন সোমবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তারা একাধিকবার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদেরকে ওয়ার্ডে আসার অনুরোধ করেন। তবে তিনি নিজে না গিয়ে একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক পাঠান। পরে প্রায় ২০ মিনিট পর তিনি এসে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মৃতের বড় ছেলে মাসুদ আল মাহমুদ তুষার বলেন, ‘অ্যাজমা-জনিত শ্বাসকষ্ট ও স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চারদিন ধরে বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা বারবার চিকিৎসককে ডাকলেও তিনি আসেননি। সময়মতো চিকিৎসা পেলে হয়ত বাবা বেঁচে যেতেন।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার পর স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে ডা. আব্দুল কাদেরের ওপর চড়াও হন। তাদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয় চিকিৎসকের। পরে হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আরও পড়ুন: ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দুই বন্দির মৃত্যু
চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের বলেন, জরুরি বিভাগে সবসময় রোগীর চাপ থাকে। প্রথমে ইন্টার্ন চিকিৎসক পাঠানো হয় এবং তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে রোগীর স্বজনরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও মারধরের চেষ্টা করেন, ফলে পুলিশের সহায়তা নিতে হয়।
চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের বলেন, ‘জরুরি বিভাগে সব সময়ই রোগীর চাপ থাকে। সব সময় ওয়ার্ডে যাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না। প্রথমে ইন্টার্ন চিকিৎসককে পাঠানো হয়, তারা রোগীর প্রাথমিক পরিস্থিতি জানালে আমরা সেই মোতাবেক চিকিৎসা দেই।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘রোগীর স্বজনরা জরুরি বিভাগে এসে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন, গালিগালাজ ও মারধরের চেষ্টা করেছেন। এ কারণে আমাকে পুলিশের সহায়তা নিতে হয়েছে।’
এদিকে, রাত প্রায় ১১টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আব্দুল মোমিন মালিতার লাশ তার গ্রামের বাড়ি গোপালপুরের উদ্দেশ্যে সদর হাসপাতাল থেকে নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।
এ বিষয়ে জানতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসা কর্মকর্তাকে (আরএমও) একাধিবার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
২১৩ দিন আগে
পাথর তুলতে বাধা, ২০ লাখ টাকার গাছ কেটে প্রতিশোধ নেয়ার অভিযোগ
নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে বাধা দেয়ায় এক পরিবেশ কর্মীর প্রায় ২০ লাখ টাকার গাছ কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তারই আপন চাচার বিরুদ্ধে।
পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার বড়বিল্লাহ গ্রামে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) জেলা শাখার সহ-সভাপতি কাজী মকছেদুর রহমান তার আপন চাচা কাজী মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষায় সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধে রিট
অভিযোগে মকছেদ জানান, তার আপন চাচা বহুদিন ধরে জমিতে নিষিদ্ধ ড্রিল ড্রেজার দিয়ে বিনা বাধায় পাথর উত্তোলন করে আসছিলেন। পরিবেশ আন্দোলনের নেতা হিসেবে এলাকার প্রকৃতি রক্ষা ও ভূমিকম্পের হাত থেকে তেঁতুলিয়াকে বাঁচাতে ড্রেজারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন মকছেদ। জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপিও দেন তিনি। এতে করে মাহবুব ভাতিজা মকছেদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে এ কাণ্ড করেন।
বিষয়টি তেঁতুলিয়া মডেল থানাকে অবগত করলেও প্রভাবশালী ড্রেজার মেশিন মালিকদের দাপটে ৭ দিনেও থানা পুলিশ আনত অভিযোগ এজাহার হিসেবে গণ্য করেনি বলে জানান মকছেদ। পরে তিনি জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেন।
মকছেদ বলেন, ‘২০ বছর আগে জমিতে আমি ও আমার বাবা ১ হাজার ২০০ ইউক্যালিপটাস গাছ রোপণ করি। ঈদের আগের দিন থেকে আমার চাচা গাছ কাটা শুরু করেন। এ পর্যন্ত দুইশ'র বেশি গাছ কেটে বিক্রি করেছেন তিনি।’
সরেজমিনে দেখা যায়, অভিযোগকারীর চাচা মাহবুবের নির্দেশে কাঠ ব্যবসায়ী রহমতুল্লাহ ১০-১৫ জন নিয়ে গাছ কাটছেন। কাটা গাছগুলো কয়েকটি ভ্যানে লোড করে কাঠের মিলে নেয়া হচ্ছে।
২৪০ দিন আগে
ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, আটক ৩
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট শাখায় গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। শাখার ক্যাশিয়ার প্রাথমিকভাবে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর গ্রাহকরা রবিবার(২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ব্যাংকটির ওই এজেন্ট শাখার মালিক ও কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করেন। পরে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের জয়পুরহাট শাখা ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, গ্রাহকদের মোট আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ এখনও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ৮০ লাখ টাকার মতো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ইসলামী ব্যাংকের ওই এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার এজেন্ট মালিক জাহিদুল ইসলাম, ইনচার্জ (ব্যবস্থাপক) রিদওয়ানা ফারজানা ও ক্যাশিয়ার মাসুদ রানাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার পর সোমবার তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের উপজেলা পরিষদের সামনে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখাটি খোলা হয়। সেখানে প্রায় দুই হাজার হিসাব রয়েছে। শাখাটির এজেন্ট মালিক, ইনচার্জ (ব্যবস্থাপক) ও ক্যাশিয়ারসহ তিন কর্মকর্তা কর্মরত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার আক্কেলপুর দারুল কোরআন মাদরাসার হিসাব থেকে টাকা উধাও হওয়ার পর শাখাটির থেকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি প্রথম ধরা পড়ে।
ওই মাদরাসার মুহতামিম মুফতি ফিরোজ আহমদ জানান, তাদের মাদরাসার হিসাবে ৩৯ লাখ টাকা ছিল। বৃহস্পতিবার তারা ১৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোনে ওই এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে টাকা জমা ও উত্তোলনের কোনো খুদে বার্তা আসত না। সন্দেহ হওয়ায় তারা জয়পুরহাট জেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখায় যান। সেখানে গিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিবরণী নেন।
আরও পড়ুন: অর্থ আত্মসাত: ডেসটিনির রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের ১২ বছরের কারাদণ্ড
হিসাব বিবরণীতে দেখা যায়, মাত্র ১৭ হাজার ২৯৯ টাকা রয়েছে। তারা হিসাব বিবরণী নিয়ে আক্কেলপুরের ওই এজেন্ট শাখায় গিয়ে ওই ব্যাংকের শাখায় তাদের জমা করা টাকা উধাও হওয়ার বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও ক্যাশিয়ারের মুখোমুখি বসে চাপ সৃষ্টি করলে তখন ক্যাশিয়ার তাদের প্রতিষ্ঠানসহ অন্য ব্যক্তিদের হিসাব থেকে কৌশলে টাকা তুলে আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, তারা ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলমকে জানিয়েছেন।
আটক ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে কৌশলে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা তুলে তার গ্রামের বাড়িতে জমি কিনেছেন ও জমি বন্ধক নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে আক্কেলপুরের ইউএনও মনজুরুল আলম বলেন, ‘আমি প্রথমে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা শুনেছি। এখন কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে শুনতে পাচ্ছি।’ তিনি গ্রাহকদের আশ্বস্থ করে বলেন, এ ঘটনায় মামলা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
২৫৫ দিন আগে
কুমিল্লায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২
কুমিল্লার চান্দিনায় এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বাদী হয়ে শুক্রবার (২১ মার্চ) সকালে ২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনকে আসামি করে চান্দিনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার জোয়াগ ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের মো. বিল্লালের ছেলে মো. সোয়েব ও একই ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে প্রভাত চন্দ্র সরকার এর ছেলে রতন চন্দ্র সরকার।
ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রী চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার বাসিন্দা। সে কচুয়া উপজেলার একটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। গত ১৯ মার্চ বিকালে চান্দিনা ও কচুয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কৈলাইন বাজারে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে এসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় ওই ছাত্রী।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে নারী সাংবাদিককে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’, গ্রেপ্তার ২
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানায়- বুধবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যার পর অটোরিকশায় বন্ধুর সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফেরার পথে ৫ থেকে ৬ জন যুবক আমার অটোরিকশাটি থামিয়ে অটোরিকশাচালক ও আমাকে চর থাপ্পর দিয়ে টেনে হেঁচরে জমির মাঝে একটি সেলু মেশিনের ঘরে নিয়ে যায়। অটোরিশাচালককের হাত-পা বেঁধে পাঁচ যুবক তাকে ধর্ষণ করে।
চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত দুই যুবককে তাৎক্ষণিক আটক করা হয়। পরদিন ভুক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার পর অভিযুক্তদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
২৫৮ দিন আগে
নরসিংদীতে কৃষকদের জমির মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
নরসিংদীতে কৃষকদের জমির মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি চক্রের বিরুদ্ধে।
আব্দুল কাইয়ুম ১৮ থেকে ২০টি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে গত তিন মাস যাবত অবৈধভাবে আলোকবালীর গৌরীপুরা চরের কৃষি জমি থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন। যার ফলে ১৩৯ কৃষকের কয়েকশত একর কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে থেকে একটি অভিযোগ পত্র পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, আলোকবালী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল কাইয়ুম মিয়া ১৮ থেকে ২০টি চুম্বক ড্রেজার দিয়ে তিনমাস ধরে অবৈধভাবে কৃষি জমি থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন। ইতোমধ্যে ১৩৯ জন কৃষকের প্রায় কয়েকশত একর কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বালু উত্তোলন বন্ধে দফায় দফায় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিযুক্তদের জরিমানা করলেও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন। উল্টো অবৈধ বালু উত্তোলনের গতি আরও বেড়েছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কাইয়ুম মিয়ার বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলা ও একাধিক অস্ত্র মামলাও রয়েছে। তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই কৃষকদের ভয় দেখানো হয়।
এমনকি, গত ৯ মার্চ ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে আয়োজিত নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার পথে আসা কৃষকদের ওপর দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে চারজন কৃষক আহত হয়েছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে জমি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, জীবিকা হুমকির মুখে পড়ছে ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তরা দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী কৃষক দুদুল মিয়া বলেন, ‘আমার ২৫৪ শতাংশ জমি কেটে নিয়ে গেছে কাইয়ুম। জমিতে ধান চাষ করতাম, আমাদের চরের দুই পাশে নদী হওয়ায় প্রতিবছর জমির পরিমাণ বৃদ্দি পায়। ফলে, প্রতিটি কৃষকের জমিই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসব জমি অবৈধ চুম্বক ড্রেজার ব্যবহার করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে বিএনপি নেতা কাইয়ুম।’
‘এমকি প্রতিবাদ করলেই হামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয় আমাদের।’
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে যুবক নিহত
আরেক ভুক্তভোগী কৃষক ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘কাইয়ুমের প্রভাবে আমরা অসহায়। জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। তারা কাইয়ুমকে জরিমানাও করেছে, কিন্তু কাইয়ুম আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’
কাইয়ুমের বক্তব্য জানতে একাধিকবার তাকে ফোন করলেও রিসিভ করেননি।
নরসিংদী জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব দীপক কুমার বর্মণ প্রিন্স বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর নির্দেশ, ‘কৃষক বাঁচলেই, দেশ বাঁচবে।’
‘কৃষকদের পাশে থাকতে কৃষক দল সারা দেশে কৃষক সমাবেশ আয়োজন করছে। যারা কৃষকদের ক্ষতি করবেন, তাদের বিপক্ষে আমাদের অবস্থান থাকবে। দলের নেতাদের প্রতি সুপারিশ করব তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আব্দুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবারও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
২৬০ দিন আগে
জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগ: শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ে কম নম্বর পেলেন শিক্ষার্থী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষের (৪৯তম ব্যাচ) এক শিক্ষার্থীর গবেষণার রিপোর্টে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নম্বর কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
তারা হলেন—প্রভাষক অশীষ কুমার দত্ত ও অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে জাবি উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্রটি পাঠিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রবিন হোসেন।
এতে বলা হয়, ‘গত ৫ মার্চ আমার অনার্স ৪র্থ বর্ষের রেজাল্ট প্রকাশিত হয়। আমি গত ১০ মার্চ ফলাফলের গ্রেডশিট উত্তোলন করি। সেই গ্রেডশিটে আমার ‘রিসার্চ রিপোর্ট’ কোর্সে ‘ডি’ গ্রেড দেখতে পাই, যা আমার প্রত্যাশার চেয়ে বহুলাংশে কম। বিগত বছরে অনার্সের কোনো পরীক্ষায় আমি ‘ডি’ গ্রেড পাইনি। আমার বিভাগের ‘ওয়াইল্ডলাইফ’ ব্রাঞ্চের কিছু শিক্ষক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা করেছেন। এমতাবস্থায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে আমার এই রিপোর্টটির রেজাল্ট পুনঃনিরীক্ষণ না করা হলে, আমি আমরণ অনশনে বসব।’
আরও পড়ুন: জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আটক রিকশাচালক নির্দোষ: দাবি পরিবারের
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ‘প্রাণিবিদ্যা বিভাগে চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রজেক্ট/রিসার্স রিপোর্ট কোর্স করতেই হবে। এটা বাধ্যতামূলক। এটি দুই ক্রেডিটের একটি মূল্যায়নভিত্তিক কোর্স। এখানে প্রথম পরীক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীর সুপারভাইজার, পাশাপাশি দ্বিতীয় ও তৃতীয় পরীক্ষক হিসেবে বিভাগের অন্য দুজন শিক্ষক নম্বর দিয়ে থাকেন।’
রবিন হোসেন বলেন, ‘আমি ওয়াইল্ডলাইফ ব্রাঞ্চের প্রফেসর ড. মনিরুল হাসান খানের অধীনে আমার গবেষণা রিপোর্ট সম্পন্ন করি। যিনি অরাজনৈতিক শিক্ষক হিসাবে পরিচিত। এতে অন্য গ্রুপের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে নম্বর কম দেন। আমার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পরীক্ষক উভয়ই আওয়ামীপন্থি।’
‘আমি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছি। আমার গবেষণা রিপোর্ট অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকের মাধ্যমে মূল্যায়ন করুক, এতে আমার মার্কস না বাড়লে মেনে নেব, আর যদি বাড়ে তাহলে যেন তদন্ত সাপেক্ষে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। অন্যথায় আমি অনশনে বসব,’ বলেন ওই শিক্ষার্থী।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী মারফত জানা যায়, বন্যপ্রাণিবিদ্যা গবেষক শিক্ষকদের মধ্যে দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি আওয়ামীপন্থি, অন্যটি অরাজনৈতিক। আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের নেতৃত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ও জুলাই হামলায় অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, প্রফেসর ড. কামরুল হাসানসহ অন্যন্য আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা। অরাজনৈতিক গ্রুপটির নেতৃত্বে আছেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খানসহ অন্যন্য শিক্ষকরা। তাদের মধ্যকার দ্বন্দের কারণে ভুগতে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থী জানান, ‘এখানে শিক্ষকদের মাঝে প্রচুর গ্রুপিং হয়ে থাকে। আমি একজন শিক্ষকের অধীনে থিসিস করেছিলাম, যার ফলে অন্যগ্রুপের শিক্ষকরা আমাকে ভাইভাতে অনেক কম মার্কস দিয়ে রেজাল্ট ধসিয়ে দিয়েছিলেন। অথচ বাকি কোর্সগুলোতে আমি ভালো করেছিলাম। শুধু আমি না, আমার মতো আরও অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটছে, কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেননি।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সুপারভাইজার অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান বলেন, ‘আমার অধীনে দুজন শিক্ষার্থী কাজ করেছেন। তার মধ্যে একজনকে অকৃতকার্য করা হয়েছে এবং ভুক্তভোগী রবিনকে 'ডি' গ্রেড দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ একটি অস্বাভাবিক বিষয়। কেননা, আমি দেখেছি তার অন্যান্য বিষয়গুলোতে অনেক ভালো মার্কস আছে। আমি বিষয়টি বিভাগীয় প্রধানকে জানিয়েছি। অথোরিটি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবে আশা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এটা ভালো কাজ হয়েছে। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কামরুজ্জামান মনির বলেন, ‘মার্কস দেওয়ার ক্ষেত্রে পরীক্ষা কমিটির কোনো ইখতিয়ার নেই। পরীক্ষা কমিটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস ও বিভাগের শিক্ষকদের যোগ করা মার্কস ক্রোস চেক করেন। ওই শিক্ষার্থী প্রশাসনের কাছে নিজের আবেদন পেশ করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রশাসন এ বিষয়ে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবেন।’
আরও পড়ুন: জাবিতে বসন্তের আগমন, প্রকৃতিতে স্নিগ্ধতার ছোঁয়া
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মানছুরুল হক বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখন কিছুই বলতে পারছি না। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্তসাপেক্ষে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে পারছি না। অভিযোগপত্র এখনো হাতে পাইনি। অভিযোগপত্র সম্ভবত অফিসে এসেছে। আমার হাতে এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তদন্তসাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
অভিযুক্ত দুই শিক্ষক প্রভাষক অশীষ কুমার দত্ত ও অধ্যাপক ড. কামরুল হাসানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
২৬৩ দিন আগে