তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে ব্লুমবার্গ বাংলাদেশকে ২০তম দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম হয়েছে করোনা নিয়ন্ত্রণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুইবার প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে চিঠি পাঠিয়েছে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারা দেশে ১ হাজার ৫টি কেন্দ্রে একযোগে গণটিকা দান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের দেশে যে পরিমাণ লোক মারা গেছে, তার তুলনায় ভারতে, যুক্তরাষ্ট্রে অনেক লোক মারা গেছে। তারা উন্নত দেশ, আল্লাহর রহমতে আমরা ভালো আছি।’
আরও পড়ুন:জেলায় জেলায় চলছে টিকাদান
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডেন্স অনুযায়ী আমরা করোনা ফেইজ আউট পর্যায়ে চলে আসছি। আমাদের এখন ৩ শতাংশ সংক্রমণের হার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডেন্সে বলে ৩ শতাংশের নিচে যখন আসতে থাকে তখন করোনা আস্তে আস্তে দেশ থেকে ফেইজ আউট হয়ে যায়। কাজেই সেই পর্যায়ে চলে আসছি।’
এদিকে, বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর মহাখালী শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনার টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
টিকা নিলেন রেলপথমন্ত্রী
রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন সচিবালয় ক্লিনিক ভবনে কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণ করেন।
টিকা নেয়ার পর তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সকল মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। যে কয়েকটি দেশ খুব দ্রুত টিকা গ্রহণ করছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এটি প্রধানমন্ত্রীর কারণেই সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী ব্যাপকভাবে কোভিড টিকাদান শুরু
স্বাস্থ্যখাত ছাড়াও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী এবং তার সরকার জনগণকে সর্বত্র সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্ত্রী জানান।
রেলমন্ত্রী সরকার নির্ধারিত অগ্রাধিকার কোটা অনুযায়ী বিনা ভয়ে টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী টিকা নিয়েছেন
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রবিবার শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনার টিকা নিয়েছেন। টিকা নেয়ার পর তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, টিকা নেয়ার পর তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। কোনো ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বোধ করছেন না।
আরও পড়ুন: টিকা নিতে এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ৭৪ হাজার মানুষ: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই টিকাটি অত্যন্ত নিরাপদ। তাই, টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আতঙ্ক বা ভয়ের কিছু নেই।
এ সময় তিনি জনগণকে নির্ভয়ে টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
কোভিড-১৯ টিকা নিলেন পর্যটন প্রতিমন্ত্রী
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহণ করেছেন। বেলা ১১টা ৪০ মিনটে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টিকাদান কেন্দ্রে তিনি এ টিকা গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের মানুষের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় তিনি গুজব ও অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হতে নিরাপদ থাকতে জনগণকে টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
কৃষিমন্ত্রীও টিকা নিলেন
এদিকে, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক সকালে শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন।
টিকা গ্রহণ শেষে মন্ত্রী জানান, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বোধ করছেন না।
আরও পড়ুন: করোনা টিকার জন্য নিবন্ধন: ৪ ফেব্রুয়ারি প্লে-স্টোরে আসবে ‘সুরক্ষা অ্যাপ’
তিনি সবাইকে নির্ভয়ে টিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
এছাড়া, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন।
ভ্যাকসিন নিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বিভিন্ন মহলের নেতিবাচক প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
রাজধানীর মহাখালীতে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনা (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেয়া শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ আহ্বান জানান মন্ত্রী।
এদিন সকালে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর ১২০টির অধিক রাষ্ট্র এখনো করোনা ভ্যাকসিন নিতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক সাফল্য ও সেরা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন আনতে সক্ষম হয়েছে। করোনা মহামারিতে দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়া হয়েছে।’
করোনা ভ্যাকসিনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে এসময় আশ্বস্ত করেন মন্ত্রী। অসাধু ব্যক্তির অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে সকলকে ভ্যাকসিন গ্রহণে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি। একইসাথে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণেরও অনুরোধ জানান মন্ত্রী।
ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কোভিড-১৯-এর টিকা নিয়েছেন
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিড- ১৯ এর টিকা নিয়েছেন। এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীনসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ও প্রকল্প পরিচালক), ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) কর্মকর্তা এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ঢাকায় মহাখালীতে জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে কোভিড- ১৯ এর টিকা গ্রহণ করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশব্যাপী করোনা টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে ঢাকার ৫০টি হাসপাতালে ৫০টি কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মোট ২০৪টি দল ঢাকার টিকাদান পরিচালনা করছে।
এছাড়া, দেশের বিভিন্ন জেলার ৯৫৫টি হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনে টিকা দেয়া হচ্ছে। এতে মোট দুই হাজার ১৯৬টি দল কাজ করছে।