ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে (ডিএসএ) ‘কুখ্যাত আইন’ উল্লেখ করে এটিকে বাংলাদেশের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় প্রধান বাধা বলে মনে করে অবিলম্বে তা বাতিল এবং এর অধীনে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
সোমবার রাতে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন, সরকার এই আইনের সুযোগ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে এবং এই পশ্চাদপসরণমূলক আইনকে 'ফ্যাসিবাদী' শাসনকে দীর্ঘায়িত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে কিডনী রোগে আক্রান্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খাদিজাতুল কুবরার মুক্তি দাবি করা হয়। যিনি ডিএসএ মামলায় গত আট মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন।
এতে বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ বাংলাদেশের (ইউএনবি) বিশেষ প্রতিবেদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ডিএসএ মামলা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে দমনমূলক আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে থাকা সকলের মুক্তি দাবি করা হয়।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল ২০২৩ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যা সম্প্রতি সংসদে পেশ করা হয়েছে যাতে এটি শিগগিরিই আইনে পরিণত হয়।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন, সরকার আইনের বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেয়নি এবং বিল অনুযায়ী সরকার চাইলে যে কোনো শিল্প-প্রতিষ্ঠান, পেশা ও সেবাকে এ আইনের আওতায় এনে এই সংস্থাগুলোকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে তা বন্ধ করতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
'অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা' বিলে ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়া যৌথ দর কষাকষির অধিকারও কেড়ে নেয়, তারা যোগ করে যে এটি সরকারের আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারেরও একটি সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং মালিকপক্ষের নিপীড়ন, বঞ্চনা ও শোষণ থেকে রক্ষার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন এবং আন্দোলনকে অবৈধ করার একটি হাতিয়ার।
বিএনপি মনে করে, প্রস্তাবিত আইন শুধু শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ ও অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না, এটা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জনগণের প্রতিবাদ করার সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী। ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা বিল ২০২৩’ প্রত্যাহারের জোরালো দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ডক্টর আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে বৈঠক করেছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ