মোবাইল ফোনের জন্য স্কুলছাত্র নওফেল শেখকে (১৪) খুন করে তারই বন্ধু। এ ঘটনায় খুনী বন্ধুকে ( অপ্রাপ্ত বয়স্ক ) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া কিশোরের বাড়ি বগুড়া শাজাহানপুর থানা হলেও ঢাকায় তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে লন্ড্রীর দোকানে কাজ করতো। খুনের ঘটনার পর মোবাইল বিক্রির কাজে জড়িত ও ওই কিশোরের কথিত বান্ধবী শেরপুরের জাকিয়া খাতুন বৃষ্টি (২০) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
গত ২০ জুন বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুর থানার খরনা ইউনিয়নের দাড়িগাছা গ্রামের জঙ্গল থেকে নওফেলের (১৪) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে উপজেলার খরনা ইউনিয়নের দাড়িগাছা হাটপাড়া গ্রামের ইসরাফিলের ছেলে এবং দাড়িগাছা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
আরও পড়ুন: নড়াইলে ভাতিজার হাতে চাচা খুন
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, নওফেল এবং ওই কিশোর একে অপরের বন্ধু ছিল। তারা একসঙ্গে চলাফেরা করতো। প্রায় দুই মাস আগে নওফেলের বাবা শখের বশে জমি বিক্রির টাকায় নওফেলকে ১৮ হাজার টাকা দিয়ে একটি মোবাইল কিনে দেয়। গত ১৮ জুন নওফেলের জন্মদিনে ওই কিশোর নওফেলকে ওই জঙ্গলে ধুমপান করে আনন্দ ফুর্তির প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি হলে ওইদিন সকাল ১১টার দিকে ধুমপান করার জন্য নওফেল ও ওই কিশোর দাড়ীগাছা গ্রামের ফুলবাড়ীয়া নামক স্থানে জঙ্গলযুক্ত বাগানের মধ্যে ধূমপান করতে যায় । নওফেল জঙ্গলের একটি গাছের সঙ্গে হেলান দিলে মাফলার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর লাশ পাশের জঙ্গলে গুম করে স্মার্টফোন নিয়ে পালিয়ে যায় ওই কিশোর। এরপর বান্ধবী বৃষ্টিকে বগুড়া শহরে ডেকে নিয়ে স্মার্টফোনটি বিক্রি করে সেই টাকায় একটি হোটেলে যায়। পরে ২০ জুন নওফেলের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে খবর জেনে ওই কিশোর ঢাকায় আত্মগোপন করে। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত সেই মাফলার উদ্ধার করে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, এ ঘটনায় জড়িত কিশোরকে আজ আদালতে পাঠানো হয়। এছাড়াও মোবাইল বিক্রিতে সহায়তাকারী নারী বৃষ্টিকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রেস কনফারেন্সে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুর রশিদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোতাহার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হেলেনা খাতুন এবং শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।