ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়া হবে।
সোমবার তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের সরকার সব কূটনীতিকের পূর্ণ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনি কি কখনও শুনেছেন যে বাংলাদেশে কোন কূটনীতিককে হত্যা করা হয়েছে? ভয় পান কেন?’
মোমেন বলেন, বিএনপি-জামায়াতের আমলে বোমা বিস্ফোরণে বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী আহত হন।
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, ছোট্ট একটি ঘটনার কারণে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি হওয়ার কোনো সুযোগ তিনি দেখছেন না। ‘এটি একটি বহুমুখী সম্পর্ক।’
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে একটি পূর্বনির্ধারিত বৈঠক ছিল, যা মূলত ফোনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরে সশরীরে বৈঠক হয়।
মন্ত্রী বলেন, মার্কিন পক্ষ বলেছে যে তারা ১৪ ডিসেম্বরের ঘটনাটি বাংলাদেশ সরকারের ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ এবং সেইসঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে উত্থাপন করেছে।
আরও পড়ুন: আন্তরিকতার অভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মোমেন বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত (পিটার হাস) তার নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা আতঙ্কিত। আমাদের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
এর আগে, রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেছেন যে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকার শাহীনবাগ এলাকায় গেলে (সেখানে) নিরাপত্তার কোনো অভাব ছিল না।
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যায়।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন সেটিকে ‘নিরাপত্তা হুমকি’ হিসেবে দেখা যাবে না।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটিকে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। এ ঘটনা ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।’
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বলেছে যে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমস্ত অভিযোগকে ‘গুরুতরভাবে’ নেয় এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করে।
১৪ ডিসেম্বর ‘মায়ের ডাক’-নামক সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত হাসের বৈঠককে ঘিরে বিভিন্ন নিবন্ধ এবং বিবৃতির আলোকে রবিবার মার্কিন দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, গত কয়েক বছর ধরে ‘মায়ের কান্না’-নামের সংগঠনটি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।
একটি ইমেলে গণমাধ্যমকে দেয়া বার্তায় মুখপাত্র আরও বলেন, মানবাধিকার মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির ‘মূল বিষয়’।
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে’ ১৪ ডিসেম্বর ‘মায়ের ডাক’ নামক সংগঠনের সঙ্গে তার ‘পূর্বনির্ধারিত’ বৈঠক করছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।‘বিক্ষোভকারীরা সে বৈঠকটি বাধাগ্রস্ত করে। তারা (বিক্ষোভকারীরা) রাষ্ট্রদূত যেখানে ছিলেন সেখানে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। অন্য বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রদূতের গাড়ি ঘেরাও করেছিল।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার: মার্কিন উপ-সহকারী সচিব
শাহীনবাগের ঘটনাকে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখার সুযোগ নেই: পররাষ্ট্র সচিব