সরকার
যুক্তরাষ্ট্রের অসম্মানজনক ভিসা নীতির জন্য সরকার দায়ী: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন ভিসা নীতি জাতির জন্য কলঙ্কজনক, কারণ এটি সারা বিশ্বের কাছে প্রকাশ করেছে যে দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন নেই।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) অস্থির হয়ে পড়েছে (মার্কিন ভিসা নীতিতে)। তারা বলার চেষ্টা করছে এটা তাদের সমস্যা নয়। তাহলে ভিসা নীতি কেন এলো... যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে তা আমাদের জন্য শোভনীয় নয়। একটি জাতি হিসাবে।’
শনিবার এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দল দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে, যারা রাজনীতিবিদ, আমলা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচারক যারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আমেরিকা ভিসা নীতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের দোষী সাব্যস্ত করতে সরকারের ‘ভয়ংকর মাস্টার প্ল্যান’: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘এর মানে শুধু দেশের জনগণের কাছে নয়, সারা বিশ্বের কাছে এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন নেই।’
বিএনপি নেতা বলেন, সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় না হওয়ায় এখনো তারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ‘মিথ্যা ও গায়েবি’ মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করে জেলে ভরার চেষ্টা করছে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন, গ্রেপ্তার ও কারাগারে রেখে সরকার বিএনপির চলমান আন্দোলনকে দমন করতে পারবে না।
পৃথক পৃথক দুর্নীতি মামলায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমানের সাজা বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখা।
আরও পড়ুন: নিঃসন্দেহে জনগণের টাকা লুটপাটের জন্য এটি একটি স্মার্ট বাজেট: বিএনপি
সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকায় উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করবে
গ্রামীণ এলাকার সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধ তালিকা হালনাগাদ কমিটি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধ অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শনিবার প্রজ্ঞার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিটি ১৪ মে এক বৈঠকে কমিউনিটি ক্লিনিকের ওষুধের তালিকায় উচ্চ রক্তচাপের জন্য "অ্যামালোডিপাইন ৫মিলি.’ এবং ডায়াবেটিসের জন্য ‘মেটফরমিন ৫০০ মিলি.’ অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এতে বলা হয়েছে, এটি বাংলাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে উচ্চ রক্তচাপের ব্যাপকতা মোকাবিলায় একটি বড় পদক্ষেপ।
এটি বলছে, বাংলাদেশে উচ্চরক্তচাপ ও উচ্চরক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের প্রকোপ ও মৃত্যু ক্রমশ বাড়ছে। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। কমিউনিটি ক্লিনিক স্তরে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ উপলব্ধ করার সিদ্ধান্ত উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য এই বিষয়ে একটি সাশ্রয়ী পদ্ধতি হতে পারে।
আরও পড়ুন: কমিউনিটি ক্লিনিক মডেল: শেখ হাসিনার উদ্যোগ তুলে ধরে জাতিসংঘে রেজুলেশন গৃহীত
উল্লেখ্য, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) এবং এর অংশীদার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং প্রজ্ঞা (নলেজ ফর প্রগ্রেস) বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে যাতে উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধক ওষুধের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা যায়। কমিউনিটি ক্লিনিকের বিদ্যমান ওষুধের তালিকা; উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে বহু মাস (২ থেকে ৩ মাস) হাইপারটেনসিভ ওষুধের প্রেসক্রিপশন এবং এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমান করেছে যে বিশ্বব্যাপী ১ দশমিক ২৮ বিলিয়ন মানুষ (৩০-৭০ বছর বয়সী) উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে, যার দুই তৃতীয়াংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বাস করে।
উচ্চ রক্তচাপ কার্ডিওভাসকুলার রোগ, স্ট্রোক এবং কিডনি রোগের পাশাপাশি মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।
আরও পড়ুন: সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকের ভূয়সী প্রশংসা প্রধানমন্ত্রীর
বিদেশে মিশনগুলোতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার
নতুন মিশন প্রধানসহ বিদেশে মিশনগুলোতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার।
একটি কূটনৈতিক সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে, ইতালিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসানকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের বর্তমান হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার সার্কের মহাসচিব হিসেবে যোগ দেবেন।
মিসরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলামকে ইতালিতে রাষ্ট্রদূত করা হয়েছে।
ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ মিসরে রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেবেন।
টরন্টোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল লুৎফর রহমানকে ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত করা হয়েছে।
পর্তুগালে রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দেবেন মরিশাসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ।
পর্তুগালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসানের অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: আ.লীগের প্রচারণায় বিদেশে মিশন ব্যবহার করছে সরকার: বিএনপি
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
বৈশ্বিক মন্দা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও সরকার দেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম এ লতিফের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মহামারি ও যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা মোকাবিলায় সরকার দ্রুত দেশের অর্থনীতিকে কোভিড-পূর্ব উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, ‘কোভিড-১৯ সংকটের মধ্যে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, যা সেই সময়ের জন্য বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ছিল।’
আরও পড়ুন: আজ থেকে ১২ ঘণ্টা চলবে মেট্রোরেল
তিনি বলেন যে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ১০ শতাংশে।
শেখ হাসিনা সরকারের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি ব্যয় যৌক্তিককরণ, সামাজিক সুরক্ষা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও কৃষি খাতে ভর্তুকি, রপ্তানি প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি, মুদ্রানীতি ইত্যাদি।
ঢাকা থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, সরকারের কর্মকাণ্ডের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে এবং দরিদ্র মানুষ এর সুফল পাচ্ছে।
পিরোজপুর থেকে নির্বাচিত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশনে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এবং যশোর সেকশনে ২০২৪ সালের জুন থেকে রেল চলাচল শুরু করা সম্ভব হবে।
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মমতা হেনা লাভলীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ লাখ ৫৫ হাজার ১৩৪টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ জুন
নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের দোষী সাব্যস্ত করতে সরকারের ‘ভয়ংকর মাস্টার প্ল্যান’: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার অভিযোগ করেছেন, সরকার বিরোধী দলগুলোর নেতাদের নির্বাচনের মাঠ থেকে সরাতে 'ভয়াবহ মাস্টারপ্ল্যান' নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যখন মৃত্যু ঘনিয়ে আসে এবং বেঁচে থাকার কোন আশা থাকে না, তখন অনেকেই বেঁচে থাকার জন্য কিছু একটা ধরে রাখার চেষ্টা করে। তাই, বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে সাজা তাদের (সরকার) পরিকল্পনার অংশ যে বাংলাদেশের রাজনীতিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেওয়া, রাজনীতিকে বিলুপ্ত করা। দেশ ও রাজনীতিবিদদের রাজনীতির মাঠ থেকে সরিয়ে দিয়ে একাই নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা পার করুন।’
এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা বলেন, তারা শুনেছেন যে সরকার আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাদের কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রায় ১ হাজার ৩৫০টি মামলা নিষ্পত্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি মামলার আসামি বিএনপিসহ বিরোধী দলের শীর্ষ নেতারা। তারা (সরকার) এখন এই ভয়ানক পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে।’
ফখরুল বলেন, সরকার ভাবছে বিরোধী দলের সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তার ও সাজা হলে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচন নিয়ে সংকট নিরসনে সরকারের সুর নেমে এসেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের কথা বলেন যেহেতু তারা তাদের ইচ্ছানুযায়ী জাতীয় সনদ সংশোধন করে একতরফা খেলা এবং একা গোল করার সুযোগ তৈরি করেছেন। ‘তারা কোনো প্রতিপক্ষ ছাড়াই (নির্বাচনের নামে) খেলার মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকবে। তারা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।’
বুধবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুর্নীতি মামলার শুনানি এবং দলের নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমানুল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের পৃথক দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের রায়ের প্রতিবাদে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
ফখরুল বলেন, ২০০৭ সালে তারেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা’ মামলায় আসামিদের আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগের সুযোগ না দিয়ে হঠাৎ করেই শুনানি শুরু হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘এখন খুব দ্রুত প্রতিদিন সাক্ষী হাজির করা হচ্ছে এবং রাত পর্যন্ত তাদের সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে। আমরা মনে করি এর মাধ্যমে দেশের বিচার বিভাগের কফিনে পেরেক ঠেকানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠিয়ে আন্দোলনকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করছে: ফখরুল
বিষয়টি নিয়ে ঢাকার বিশেষ আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা কথা বলার চেষ্টা করলে ফখরুল বলেন, সেখানে তাদের কথা বলতে দেওয়া হয়নি।
‘তারা (বিএনপিপন্থী আইনজীবী) ক্ষমতাসীন দলের আইনজীবীদের ওপর হামলা চালায় যখন পুলিশ বেআইনিভাবে আদালতে ঢুকে তাদের ওপর নির্যাতন চালায়। তাহলে আমরা কিভাবে বলবো, এ দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের সুযোগ আছে? আমরা কিভাবে বলবো যে বিরোধীদের রাজনীতি করার অধিকার আছে, জনগণের ভোটের অধিকার আছে, সাংবাদিকদের লেখার অধিকার আছে এই দেশে? তিনি প্রশ্ন করেন।
বিএনপি নেতা সরকারকে সতর্ক করে বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের দলের চলমান আন্দোলনকে কোনো কিছুই দমন করতে পারবে না। তিনি বলেন, বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে কারাগারে রেখে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। জনগণ জেগে উঠেছে এই শাসককে পরাজিত করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব নয়।‘আমরা সরকারকে বলতে চাই যে এখনও সময় আছে। সুতরাং, অশুভ খেলা পরিহার করে এবং জনগণকে প্রতারণা ও নির্যাতনের পথ থেকে সরে সরল পথে আসুন...দেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
বিএনপি নেতা টুকু ও আমানের বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, বিরোধী দলের নেতাদের দোষী সাব্যস্ত করে নির্বাচন থেকে দূরে রাখাই সরকারের মূল লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, একই ধরনের মামলায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও মহিউদ্দিন খান আলমগীরকে আদালত বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আ.লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না: ফখরুল
সরকারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ ও মানবিক রাষ্ট্র: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ' ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এ- টেকনোলজি অনুষদের ডিন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু গ্রন্থিত ‘স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
৩৯২ পৃষ্ঠার এ বইটির ২৩টি অধ্যায়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার বিভিন্ন দিক বিধৃত হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য: তথ্যমন্ত্রী
এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রথম তিনটি শিল্প বিপ্লব থেকে আমরা বহু বছর পিছিয়ে ছিলাম, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ধারণা থেকে আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অর্থাৎ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, রবোটিক্স, আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স এগুলোর সঙ্গে অত্যন্ত ঠিক সময়ে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি বলেন, ঠিক এ জন্যই আমরা ২০০৮ সালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শ্লোগান দিয়েছিলাম, মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছিলাম।
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুবিধার উদাহরণ তুলে ধরে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালে করোনা মহামারি দেখা দেওয়ার পর যখন সমগ্র পৃথিবীর জনজীবন থমকে গিয়েছিলো, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে গিয়েছিলো, তখন বাংলাদেশ থমকে যায়নি, সরকার পরিচালনা থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ সবকিছু চালু ছিল।
তিনি বলেন, সেই কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্বের ধনাত্মক জিডিপি অর্জনকারী মাত্র ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয়। সেই অর্থবছরেই আমরা মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়েছি।
তিনি বলেন, নিক্কি ইনস্টিটিউট এবং ব্লুমবার্গের যৌথ জরিপে করোনা মহামারি মোকাবিলার ক্ষেত্রেও বিশ্বে আমরা পঞ্চম, উপমহাদেশে প্রথম। ডিজিটাল বাংলাদেশ রচনা এবং প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের কাছেও ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছার ফলেই এগুলো সম্ভবপর হয়েছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ভিসা নীতি বিএনপির ওপরই বড় চাপ তৈরি করেছে: তথ্যমন্ত্রী
হাছান মাহমুদ এ সময় গ্রন্থকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, সরকার পরিচালনায় ডিজিটাল প্রযুক্তি সর্বোতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটে আমরা আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে যে নতুন ধারণা মানুষের সামনে উপস্থাপন করতে চাই সেটি হচ্ছে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।
মন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট ব্যবসা দরকার। সেই চারটি মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর গ্রন্থটির রচয়িতা অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুকে ধন্যবাদ জানাই।
একই সঙ্গে মন্ত্রী তার বক্তৃতায় নিজেকে একজন নাগরিক হিসেবে তুলে ধরে বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে মানুষ নিজের জন্য, খ্যাতির জন্য, বিত্তের জন্য ছুটছে, কোনো ফুরসত নাই।
তিনি বলেন, এতে করে মানুষের মানবিকতা, মনুষ্যত্ব, মমত্ববোধ যেন হারিয়ে না যায়, সে দিকেও নজর রাখতে হবে। মানুষের গুণ হারিয়ে যাচ্ছে। দেশ, সমাজ রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের পারিবারিক, সামাজিক মূল্যবোধগুলো যেন টিকে থাকে এবং আরো সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়ায় সে বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
গ্রন্থকার ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবুর সভাপতিত্বে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: হত্যা-খুনের রাজনীতি থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে পারেনি: তথ্যমন্ত্রী
সরকার কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে চায়: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার কৃষকদের দেশের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোই সরকারের লক্ষ্য।
মঙ্গলবার সাপাহারের গোডাউন পাড়া এলাকায় ২০২৩ মৌসুমে আম সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, তারা আম বা ধান চাষ করুক না কেন, কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে।
আরও পড়ুন: বোরো মৌসুমে সংগ্রহ করা চালের মান নিয়ে কোনো আপস হবে না: খাদ্যমন্ত্রী
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বোরো,আমন ধান ও আমের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আশা করি তারা আমেরও ন্যায্যমূল্য পাবেন।
সাধন চন্দ্র বলেন, এখন দেশি ফলের সরবরাহ বেশ ভালো। বিদেশ থেকে ফল আমদানি না করলে ডলার সাশ্রয় হবে এবং দেশি ফলের পুষ্টিগুণও বেশি হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ফল রপ্তানির সুযোগ রয়েছে এবং আমরা আম রপ্তানি করছি। ফলে আম চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা হলো, বিদেশিরা জানতে চান আম নিরাপদ কি না। আমরা তাদের সার্টিফিকেট দেখাতে পারব না।
ভবিষ্যতে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে আরও আম রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সাপাহার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শামসুল আলম শাহ চৌধুরী, কৃষি শ্রমিক শাপলা খাতুন প্রমুখ।
পরে মন্ত্রী জাবাই বিলে মৎস্য চত্বর এবং উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে জয় বাংলা চত্বর উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন: খাদ্যমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি এ দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য লজ্জার: খাদ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ সরকারকে সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে: জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ
জাতিসংঘের চরম দারিদ্র্য ও মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক ওলিভিয়ার ডি শ্যুটার বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) মর্যাদা থেকে প্রত্যাশিত স্তরে উন্নীত হওয়ার পর একটি অধিকারভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশ সরকারকে সস্তা শ্রমের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘মানুষকে দরিদ্রতার মধ্যে রেখে একটি দেশ তার আপেক্ষিক সুফল বা উন্নয়ন ভোগ করতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন মূলত তৈরি পোশাক শিল্পের মতো একটি রপ্তানি খাত দ্বারা ব্যাপকভাবে চালিত, যা সস্তা শ্রমের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল।’
সোমবার বাংলাদেশে ১২ দিনের সফর শেষে অলিভিয়ার ডি শ্যুটার এসব কথা বলেন।
ডি শ্যুটার সরকারকে ২০২৬ সালে এলডিসি মর্যাদা থেকে আসন্ন উন্নীতকরনের সুযোগকে ব্যবহার করে তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর তার নির্ভরতা পুনর্বিবেচনা করার জন্য আহ্বান জানান, কারণ এই শিল্প ৪ মিলিয়ন মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দেশের বর্তমান রপ্তানি আয়ে শতকরা ৮২ ভাগ অবদান রাখছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করছে ঢাকা ও বেইজিং
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যতো উন্নীতকরনের পথে এগুচ্ছে, ততো এটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের ট্যাক্স-প্রণোদনা প্রদান এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে।’
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, কর্মীদের শিক্ষিত করা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং সামাজিক সুরক্ষার উন্নতিতে সরকারকে আরও বেশি সময় এবং সম্পদ ব্যয় করা প্রয়োজন। তিনি জানান, ‘এ জাতীয় উদ্যোগ শুধু সুনামের চিন্তা করে এমন বিনিয়োগকারীদেরই আকৃষ্ট করবে না এটি বাংলাদেশে উন্নয়নের একটি নতুন রূপরেখা তৈরি করবে, যা বৈষম্যমূলক রপ্তানি সুযোগের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ চাহিদা দ্বারা চালিত হবে।’
বিশেষ প্রতিবেদক স্বাধীনভাবে কাজে বিশ্বাসী সুশীল সমাজের ওপর সরকারের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নানাবিধ প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, উক্ত আইনের অধীনে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, বিরোধী রাজনীতিবিদ এবং শিক্ষাবিদদের তাদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার প্রয়োগের কারণে আটক করা হয়েছে।
ডি শ্যুটার বলেন, ‘এই বিষয়গুলো দেশটি যে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে চাচ্ছে কেবল তাদেরই শঙ্কিত করবে না, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে।’
তিনি বলেন, ‘আপনি জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা বা সামাজিক সুরক্ষা দিতে পারবেন না।’
তার সফরকালে তিনি সারা দেশ ভ্রমণ করেন এবং দারিদ্র্যসীমায় থাকা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘দেশ সামগ্রিক আয়ের বৈষম্য হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করলেও, এখনও বহুমাত্রিক দারিদ্র্য রয়ে গেছে এবং বিশেষ করে, শহরাঞ্চলে আয়-বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা মামলা: সদস্য দেশগুলোর সমর্থন চেয়েছেন ওআইসি মহাসচিব
বিশেষ প্রতিবেদক বলেন, ‘সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি অসম হয়েছে; আদিবাসী, দলিত, বেদে, হিজরা এবং ধর্মীয় ও ভাষাগত সংখ্যালঘু যেমন- বিহারীদের সুযোগ বঞ্চিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার উন্নয়নের নামে অনানুষ্ঠানিক বসতিগুলোতে উচ্ছেদ চালিয়েছে। এক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন প্রদান না করে বাসস্থানের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।’
ডি শ্যুটার সরকারকে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও যৌক্তিক করার জন্য আহ্বান জানান, যেটিকে তিনি ‘এডহক বা সাময়িক ভিত্তিতে ১১৯টি স্কিমের একটি সমন্বিত কর্ম হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে এগুলো দুর্বলভাবে সমন্বিত, যা বাংলাদেশিদের প্রত্যাশিত আয়ের নিরাপত্তা প্রদান করে না।’
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে কর থেকে প্রাপ্ত জিডিপি-এর অনুপাত উল্লেখযোগ্য হারে কম হয়েছে (প্রায় ৭ দশমিক ৮ শতাংশ) এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতকরনে অর্থায়নের জন্য প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ সরকারি রাজস্ব আসে পরোক্ষ কর থেকে, অথচ আয়ের ওপর প্রত্যক্ষ কর থেকে আসে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ।
তিনি বলেন, ‘চিত্রটি উল্টো হওয়া উচিত। উচ্চ-আয় উপার্জনকারী মানুষ এবং বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জনসাধারণের পরিষেবা এবং সামাজিক সুরক্ষার অর্থায়নে অবদান রাখতে হবে, গ্রাহকদের নয়।’
বিশেষ প্রতিবেদক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট নতুন এবং উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি থেকে জনসংখ্যাকে রক্ষা করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি তৈরি করা উচিত।’
তিনি উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র ২০২২ সালে, ৭ দশমিক ১ মিলিয়ন বাংলাদেশি নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং অন্যান্য বিপর্যয়ের কারণে বা জলের লবণাক্তকরণের কারণে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে ও তাদের জীবিকা হুমকির সম্মুখীন হয়।
আরও পড়ুন: বিআরআই’র আঞ্চলিক সংযোগে অবদান রাখতে আগ্রহী বাংলাদেশ ও চীন
বিশেষ প্রতিবেদকের মিশনের অংশ হিসেবে কক্সবাজার সফর অন্তর্ভুক্ত ছিল, ডি শ্যুটার সেই শরণার্থী শিবিরসমূহ পরিদর্শন করেন যেখানে ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৭৯৮ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে, যাদের বেশিরভাগই ২০১৭ সালে তাদের মাতৃভূমির গণহত্যার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পালিয়ে এসেছে। প্রায় এক মিলিয়ন শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে জনাকীর্ণ দেশ বাংলাদেশের সরকারকে অভিবাদন জানানোর পাশাপাশি আশ্রয় শিবিরের বসবাস-অনুপযোগী অবস্থার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের একটি স্বচ্ছন্দ্য ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয়েরই ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।’
বিশেষ প্রতিবেদক জানান, এটি ‘অনভিপ্রেত’ যে ২০২৩ সালে রোহিঙ্গা শিবিরে জরুরি মানবিক প্রয়োজন মোকাবিলায় ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের যৌথ পরিকল্পনার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক দাতারা এতোই কম অবদান রেখেছে যে চাহিদার মাত্র শতকরা ১৭ ভাগ অর্থায়ন জোগাড় হয়েছে। মার্চ ২০২৩ সাল থেকে, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিকে তার খাদ্য ভাউচারের মূল্য প্রতি মাসে ১২ মার্কিন ডলার থেকে কমিয়ে ১০ ডলার করতে হয়েছে, এবং এটি আগামী জুনে আরও কমিয়ে ৮ ডলার করা হবে।
ডি শ্যুটার সতর্ক করেন, অপুষ্টি এবং যথেষ্ট পুষ্টির অভাব বৃদ্ধি পাবে, বিশেষ করে শিশুদের পরিণতি ভয়াবহ হবে। তার ভাষায়, ‘পরিবারগুলো মরিয়া হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ সরকার যদি রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের অধিকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং মানবাধিকার আইন অনুযায়ী তাদেরকে আয়-উপার্জনের সুযোগ করে দেয়, তবে অন্তত তাদের কিছুটা কষ্ট লাঘব হবে।’
২০২৪ সালের জুনে বিশেষ প্রতিবেদক তার বাংলাদেশ বিষয়ক সর্বশেষ প্রতিবেদন মানবাধিকার কাউন্সিলে পেশ করবেন।
টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন: খাদ্যমন্ত্রী
দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সরকারের ধারাবাহিকতা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
সোমবার নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ভাবিচা ইউনিয়নের আশেকপুর-বালাতৈর সড়কে বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
সাধন চন্দ্র বলেন, তালগাছ মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ‘এটি ফল দেয় এবং পথচারীদের জন্য ছায়া দান করে। এটি বজ্রপাত থেকেও সুরক্ষা দেয়। এছাড়াও, খেজুরের রস এবং গুড় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি এ দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্য লজ্জার: খাদ্যমন্ত্রী
তিনি খেজুরের চারা রোপণ ও সঠিক পরিচর্যা করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আশেকপুর-বালাতৈর সড়কের দুই পাশে মোট ৪০০টি তালের চারা রোপণ করা হবে।
পরে খাদ্যমন্ত্রী নিয়ামতপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৩ উদ্বোধন করেন এবং মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন: বোরো মৌসুমে সংগ্রহ করা চালের মান নিয়ে কোনো আপস হবে না: খাদ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে আ. লীগ সরকার বাধা: বিএনপি নেতা মোশাররফ
বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে যারা নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের ভিসা দেওয়া হবে না। আমরা এই জনসভা থেকে বলতে চাই, যারা বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন, গণতন্ত্র বা জনগণের ভোটাধিকারে বাধা দিচ্ছে তারাই বর্তমান সরকার।’
শনিবার রাজধানীর এক সমাবেশে বক্তব্যে বিএনপি নেতা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে বর্তমান সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের জন্য ‘খুবই লজ্জাজনক’।
তিনি বলেন, সরকার তাদের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে বিদেশিদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, কিন্তু দেশবাসীর পাশাপাশি বিদেশিরাও দেখেছে এর অধীনে অনুষ্ঠিত আগের দুটি নির্বাচনের কোনো মূল্য ছিল না।
‘তাদের (সরকার) পক্ষে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্রসহ গণতান্ত্রিক দেশগুলো বলছে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। তারা বুঝতে পেরেছেন শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অতীতে হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।
আরও পড়ুম: গাজীপুর নির্বাচন দেশের প্রকৃত ভোটের চিত্র তুলে ধরে: খসরু