পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর থাইল্যান্ড সফরে ৫ দলিল সই ও বহুমুখী সহযোগিতার সম্ভাবনা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সফরে দেশটিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
থাইল্যান্ডের সঙ্গে সহযোগিতা প্রসারে এ সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি , তিনটি সমঝোতা স্মারক ও একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট সইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সফরের পর্দা উন্মোচনবিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আগামী ২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল থাইল্যান্ডের ব্যাংককে সরকারি এই সফরে ইউনাইটেড নেশনস ইকনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনেও যোগদান করবেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, ২৬ এপ্রিল থাইল্যান্ডের গভর্নমেন্ট হাউজে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
একই দিন শেখ হাসিনা তার সম্মানে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
এছাড়াও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তির পাশাপশি জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতাবিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরু করতে একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সফরে থাইল্যান্ডের রাজপ্রাসাদে রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাচাওউহুয়া ও রাণী সুধিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’র পর্যালোচনার পাশাপাশি অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষত বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল এবং সমুদ্র সংযোগ, উন্নয়ন প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে মানব-সম্পদ উন্নয়ন, বৌদ্ধ সার্কিট পর্যটন প্রচারণা, পর্যটন অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যৌথ কার্যক্রম ও দক্ষতা বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সুবিধা অর্জন করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন হাছান।
তিনি বলেন, পর্যটন শিল্পে এই সহযোগিতার ফলে উভয় দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি করা হলে উভয় দেশের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগ সহজতর হবে এবং বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও প্রশিক্ষণে সরকারি কর্মকর্তারা সময়মতো যোগদান করতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে আসিয়ানের ’সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ মর্যাদালাভে বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়ে আরও জোরালোভাবে অনুরোধ করা এবং রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন ও মিয়ানমারে চলমান সংঘাত নিরসনে থাইল্যান্ডসহ আসিয়ান সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে অধিকতর সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হবে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি আরও জানান, ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে ২৫ এপ্রিল এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বক্তব্য প্রদান করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইউএনএসক্যাপের নির্বাহী সচিব সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি সফরটি সফল এবং ফলপ্রসূ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
এ সফরে আরও থাকবেন অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরা।
কাতার আমিরের সফরে ৬ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ঢাকা। সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ সফরে আসবেন তিনি। এ সফরে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ১১টি সহযোগিতার বিষয়ে ৬টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক সই হবে।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। চলতি বছর নতুন সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে এটিই প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর।’
এ সফরে ৬টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক নিয়ে যে ১১টি দ্বিপক্ষীয় দলিল সই হওয়ার কথা রয়েছে-
১. দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি
২. আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি
৩. সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি
৪. উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি
৫. দুই দেশের মধ্যকার দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি সংক্রান্ত চুক্তি
৬. যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি
৭. শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক
৮. বন্দর পরিচালনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
৯. উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
১০. যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
১১. কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্র ছাড়াও ফিলিস্তিন-ইসরায়েলসহ বৈশ্বিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে, যেখানে বাংলাদেশ তার অবস্থান তুলে ধরবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই এই আলোচনা উঠতে পারে। গাজায় হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। সবাই এটা চায়। আমরাও চাই।’
গত মাসে তুরস্কে আন্তালিয়া কূটনীতি ফোরামে অংশ নেওয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নির্মূলের জন্য ইসরাইলকে জবাবদিহির আওতায় আনার উপরও জোর দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শান্তির পক্ষে, যুদ্ধের পক্ষে নয়।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার বাংলাদেশে আসবেন কাতারের আমির।
এক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমিরের দুই দিনের বাংলাদেশ সফরে তাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
সফর উপলক্ষে ঢাকার কয়েকটি রাস্তায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে।
প্রায় ১৯ বছর পর বন্ধুপ্রতীম দেশ কাতার থেকে ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী এমন উচ্চ পর্যায়ের সফর হচ্ছে।
এর আগে ২০০৫ সালের এপ্রিলে কাতারের তৎকালীন আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানি বাংলাদেশ সফর করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এই সফর দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমিরকে গান স্যালুট ও আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন অভ্যর্থনা জানাবেন।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমিরকে তার কার্যালয়ে অভ্যর্থনা জানাবেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুজনের মধ্যে বৈঠকের পর আরও একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
সহযোগিতাবিষয়ক নথি সই হওয়ার পর দুই নেতা একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
পরিদর্শন বইয়ে সই শেষে মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গভবনে যাবেন আমির। সেখানে রাষ্ট্রপতি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
বঙ্গভবনের দরবার হলে আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে রাজধানীর একটি সড়ক ও একটি পার্কের নামকরণ করা হবে।
এদিন বিকাল ৩টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় পার্ক এবং মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী ফ্লাইওভার পর্যন্ত সড়ক উদ্বোধন করবেন তিনি।
আমির যেখানে অবস্থান করছেন সেখানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন।
এদিনই সন্ধ্যা ৬টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বাংলাদেশ সফরের পর বাংলাদেশ ও কাতার জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায়।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি-৫) ফাঁকে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতারের কাছে জ্বালানি বিশেষ করে এলএনজি বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর ৪ মার্চ কাতার বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কাতারের কূটনৈতিক মিশন চালু হয়।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ, অভিন্ন ধর্মীয় ভিত্তি, অভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ। কাতারে ৪ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজ করেন এবং তারা নিবেদিত ও কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে প্রশংসিত।
বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ এবং কাতারের রূপকল্প ২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও কাতার একে অপরকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে।
প্রধানমন্ত্রী সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিচলিত হননি, বরং আরও দৃপ্ত পদভারে জনগণের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়েছেন, দেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদা ও সম্মানের আসনে আসীন করেছেন।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে একুশে পদকে ভূষিত সাংবাদিক প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের 'ভুবনজোড়া শেখ হাসিনার আসনখানি' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব বর্তমান বিশ্বে বিরল। তিনি শুধু দেশেরই নন, তিনি আজ বিশ্বনেতা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, শেখ হাসিনা শুধু তারই নন, তার সন্তানদেরও প্রেরণা। ভারতের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ধরে তাকে নিজের প্রেরণা বলে উল্লেখ করেছেন। ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আরব বিশ্বে একজন শেখ হাসিনা থাকলে হয়তো গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা যেত।’
আরও পড়ুন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
হাছান আরও বলেন, যে কোনো বিশ্বসভায় শেখ হাসিনা যোগ দিলে তিনিই মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন।
দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সবার সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে গত ১৫ এপ্রিল শুরু হওয়া 'নবম আওয়ার ওশান কনফারেন্সে' এ কথা বলেন তিনি।
এ সম্মেলনের সমাপনী দিন বুধবারে (১৭ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকালে সমুদ্রের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ড. হাছান মাহমুদ।
ড. হাছান বলেন, সমুদ্র উপকূলে বসবাসকারী মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকে এমন সমুদ্রের টেকসই ব্যবস্থাপনা নেওয়া প্রয়োজন। মানুষের একমাত্র আবাস পৃথিবী গ্রহকে টিকিয়ে রাখা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদের দায়িত্বশীল ও সযত্নে ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনসহ গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনা এবং সামুদ্রিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে গৃহীত নানা উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ড. হাছান বলেন, পরিবেশের ক্ষতি কমাতে জাতীয় সীমার বাইরের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, বাস্তুতন্ত্রের সার্বিক উন্নয়ন এবং গ্রিন শিপিং বা পরিবেশবান্ধব নৌপরিবহনের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিভিন্ন দেশ প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
সব রাষ্ট্রে জাতীয় সীমাবহির্ভূত জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ চুক্তি (বিবিএনজে) অনুমোদিত করা এবং মহাসাগরের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারে তহবিল বরাদ্দের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান।
প্যানেল আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে স্বাগতিক দেশ গ্রিস, কোস্টারিকা, কেপ ভার্দে, সাও টোমে এবং প্রিন্সেপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি বেশি ভয়ংকর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনসহ গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসন এবং গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ চায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ যুদ্ধ নয়, শান্তির পক্ষে এবং আমরা চাই, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে যে সব রাষ্ট্রের ভূমিকা রাখার কথা, তারা কার্যকর ভূমিকা নিক এবং গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হোক।’
রবিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিয়মকালে এ কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার বদলা হিসেবে শনিবার রাতে তেল আবিব, পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েল জুড়ে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মত জানতে চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: আশা করি পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ সময় ড. হাছান বলেন, ‘ইসরায়েল সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলা করায় ইরান এ আক্রমণের সুযোগ পেয়েছে, অন্যথায় এটি হতো না, ইরান 'রিটালিয়েট' করেছে -ইরানের বক্তব্য তাই।’
তিনি আরও বলেন, যেসব রাষ্ট্রের ভূমিকা রাখার কথা, তারা ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা নিরসনে এবং গাজায় যে নির্বিচারে মানুষ হত্যা হচ্ছে, অবিলম্বে সেই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। ড. হাছান বলেন, ‘আমরা কখনোই যুদ্ধ-বিগ্রহের পক্ষে নই, আমরা শান্তির পক্ষে।’
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা মানব সভ্যতার কলঙ্কজনক অধ্যায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অপহৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ উদ্ধার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক তৎপরতায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে জিম্মি নাবিক ও জাহাজ নিরাপদে উদ্ধার হয়েছে। জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকে ১০০ নটিক্যাল মাইল এগিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর সহযাত্রী হয়েছে।
সক্রিয় ভূমিকার জন্য জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরঅএম গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দক্ষিণ সীমান্তে মিয়ানমারের আরও ৯ বিজিপি সদস্যের দেশে প্রবেশ নিয়ে মন্ত্রী হাছান বলেন, পূর্বের ১৮০ জনসহ সবাইকে ফেরত পাঠানো নিয়ে কাজ চলছে।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি বেশি ভয়ংকর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি বেশি ভয়ংকর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বিএনপি অনেক বেশি ভয়ংকর বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুরা আমাদের নাবিকদের উপর কোনো নির্যাতন চালায়নি। তারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেনি। কিন্তু বিএনপি তো মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করে। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীদের নেতৃত্বে বিএনপি অনেক সময় সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়েও বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠে।’
শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের লালদিঘী চত্বরে “চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: যাদের জন্মই অগণতান্ত্রিক তারাই গণতন্ত্রের কথা বলে: বিএনপির উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের চেয়ে বাংলাদেশের দস্যুরা বেশি ভয়ংকর’- বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি বলেছেন, 'দেশের মানুষ খুব দুঃখ ও কষ্টের মধ্যে আছে, সাধারণ মানুষ ভালোভাবে ঈদ পালন করতে পারেনি।’
এ বিষয়ে ড. হাছান বলেন, ‘হয়তো মির্জা ফখরুল সাহেবদের মনে শান্তি নেই, উনাদের মনে অশান্তি বিধায় বাংলাদেশের মানুষের মনে শান্তি নেই বলছেন। কিন্তু মানুষের মনে সম্প্রীতি ও উৎসব আছে।’
তিনি বলেন, ‘এবার ঈদ অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন হয়েছে এবং হচ্ছে। মানুষ এখনো ঈদ উৎসবের মধ্যে আছে। আপনারা দেখেছেন ঈদযাত্রাও এবার অনেক নির্ঝঞ্ঝাট ছিল। ঈদের সময় অনেক ঘটনা ঘটে। সে ধরনের দুর্ঘটনা এবার অপেক্ষাকৃত অনেক কম ঘটেছে। মানুষ অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়েই ঈদ উদযাপন করছে।’
আরও পড়ুন: নাবিকদের উদ্ধারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, 'সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাইজ্যাক করা জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আছে। খুব শিগগিরই আপনারা সুখবর শুনতে পাবেন। আমি শুধু এটুকুই বলি, নাবিকরা খুব শিগগিরই মুক্তি লাভ করবে ইনশাআল্লাহ। আমরা জাহাজটাও মুক্ত করে নিয়ে আসতে পারব। গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি এরই মধ্যেই হয়েছে।'
এর আগে “চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান বলেন, 'আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন এবং আমরাও বলি, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আজকে ঈদ উৎসবকে উপলক্ষ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই শামিল হয়েছে। অর্থাৎ ধর্ম যার যার উৎসব যে সবার সেটি আসলে বাস্তবে রূপায়িত হয়েছে এই উৎসবের মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক অপশক্তির স্থান হবে না। কেউ সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে, সবসময় করেছি, ভবিষ্যতেও করব। এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
“চাটগাঁইয়া ঈদ আনন্দ উৎসব” আয়োজক কমিটির সভাপতি জহরলাল হাজারী, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ, কাউন্সিলর রুমকি সেন গুপ্তা, মো. শাহাবুদ্দিনসহ আযোজক কমিটির নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: দেশ থেকে অপরাজনীতি চিরতরে দূর হওয়ার প্রার্থনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
যাদের জন্মই অগণতান্ত্রিক তারাই গণতন্ত্রের কথা বলে: বিএনপির উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যাদের জন্মই অগণতান্ত্রিক আর প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য অপচেষ্টা চালায়, সেই বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে, এটিই হচ্ছে দুঃখজনক। এটি যেন, চোরের মায়ের বড় গলা।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেনস্থ ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিকরা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও অপর নেতা ড. আবদুল মঈন খানের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেছিল, ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়েছিল, ড. মঈন খান আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতারা সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য সন্নিবেশিত হয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দৈত্যের দল বিএনপি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. হাছান বলেন, ‘শুধু বিএনপির জন্মই অগণতান্ত্রিক নয়, তারা দেশে সবসময় গণতন্ত্র হরণ করার জন্য অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে তাদের হাত ছিল। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই সেটি ঘটানো হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং জঘন্য মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা তারা চালিয়েছিল।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে ৫০০ নির্বাচনি কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল এবং নির্বাচনি কর্মকর্তা ও বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছিল। সেটির উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও একই প্রচেষ্টা ছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের বিগত নির্বাচন বর্জন করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালানো হয়।’
এ সময় সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে আটক জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জলদস্যুদের হাত থেকে নাবিক এবং জাহাজ দুটোই উদ্ধার করার ক্ষেত্রে অল্প সময়ের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, আশা করছি শিগগিরই তাদের মুক্ত করতে পারব। তবে উদ্ধারের দিনক্ষণ বলাটা কঠিন।
আরও পড়ুন: নাবিকদের উদ্ধারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ড. হাছান আরও বলেন, ‘আমরা নাবিকদের পরিবারদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছে। নাবিকরা ভালো আছে, নিয়মিতভাবে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, এমনকি ভিডিও কলেও কথা বলছে। আমরা আশা করছি তাদের শিগগির মুক্ত করতে পারব।’
চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা এবং তাদের হামলায় এদিন এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত মন্ত্রিসভার মিটিংয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে কিশোর গ্যাং নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে এটি নতুন সমস্যা, এটিকে দূরীভূত করতে সরকার কাজ করছে এবং কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে ও নেপথ্যে যেই থাকুক, সে যেই দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: দেশবাসীকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা
দেশবাসীকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা
দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। কয়েক কোটি মানুষ যার যার গন্তব্যে যাচ্ছেন। এই সুযোগে পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বাড়তি ভাড়া আদায় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সরকার বিষয়টিতে নজর রাখছে।
এ ধরনের বাড়তি বাড়া আদায় অযৌক্তিক ও কোনোভাবেই সমীচীন নয় বলে মন্তব্য করেন ড. হাছান।
আরও পড়ুন: দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা
তিনি বলেন, ‘বাড়িতে যাওয়ার সময় জনগণেরও সচেতন থাকতে হবে, অযথা হুড়োহুড়ি করে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে। মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, বৃহস্পতিবার যেন সারা দেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উদযাপিত হয়।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অসাধু চক্র, মজুতদার, বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক- এ ধরনের নানা অপচেষ্টা সত্ত্বেও সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার প্রেক্ষিতে এবার রমজানের সময় বাজার স্থিতিশীল ছিল এবং অনেক পণ্যের দাম কমেছে।
আরও পড়ুন: ঈদের দিন গণভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী
বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি ও শিক্ষার পরিবেশ দুটিই থাকা উচিত: ড. হাছান মাহমুদ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) যেমন অবশ্যই ছাত্র রাজনীতি থাকা উচিত তেমনই শিক্ষার পরিবেশ যেন বজায় থাকে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।
মঙ্গলবার(৯ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালুর দাবি বুয়েট শিক্ষক সমিতির
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
ড. হাছান বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধে, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রেখে ছাত্রলীগ। এছাড়া এরশাদ এবং জিয়া যখন আমাদের গণতন্ত্রকে শিকল পরিয়েছিল, গণতন্ত্রকে বন্দী করেছিল সেই গণতন্ত্রকে মুক্ত করার লক্ষ্যেও ছাত্রলীগ ভূমিকা রেখেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বুয়েটে ছাত্র রাজনীতিই অবদান রেখেছে। সেই ছাত্র রাজনীতি থেকে অনেক দেশ বরেণ্য রাজনীতিবিদের জন্ম হয়েছে যারা দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছে, দিচ্ছে। কিন্তু আমি অবাক হয়েছি সেখানে একটি দুঃখজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা হয় এবং ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার জন্য আবার সেখানে আন্দোলনও হয়। এটা কোনভাবেই গণতান্ত্রিক নয় এবং হঠকারী সিদ্ধান্ত বলেই আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই আদেশ বাতিল করেছে এবং সেখানে ছাত্র রাজনীতি দুয়ার খুলেছে।
আরও পড়ুন: বিরাজনীতিকরণের নামে বুয়েটকে জঙ্গিবাদের আখড়া বানানো যাবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ছাত্রলীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে বলবো সেখানে যেন নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি হয়, হিংসা-বিদ্বেষের রাজনীতি যেন না ঢোকে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি থাকা প্রয়োজন, এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের নেতা তৈরি হয়।
এ সময় নিজের জীবনের উদাহরণ দিয়ে হাছান বলেন, আমি ১৫ বছর বয়সে ক্লাস টেনে পড়ার সময় থেকে ছাত্রলীগের কর্মী, ১৬ বছর বয়সে ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হয়েছি।
মন্ত্রী হাছান বলেন, রাজনীতি যে দেশ ও মানুষের সেবা এবং সমাজ পরিবর্তনের একটি ব্রত, সেটি অনেক রাজনীতিবিদরা ভুলে গেছে, প্রকৃতপক্ষে রাজনীতি কারো পেশা হওয়া উচিত নয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বস্তুগত উন্নয়নের সঙ্গে একটি মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে চাই। সেই লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধুকন্যা বহু কল্যাণ ভাতা চালু করেছেন। সেই ব্রত ধারণ করেই আজকে ছাত্রলীগ দুস্থ অসহায় মানুষের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট
সিএনজি বিস্ফোরণ: চালকের পরিবারকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সিএনজি উপহার
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে সিএনজি বিস্ফোরণে নিহত চালক আবদুস সবুরের পরিবারকে একটি নতুন সিএনজি উপহার দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মন্ত্রীর সহধর্মিণী নুরান ফাতিমা ও ছোট ভাই খালেদ মাহমুদ নিহতের স্ত্রী রুমি আকতারের হাতে সিএনজির চাবি তুলে দেন।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে হাতবোমা বানানোর সময় বিস্ফোরণে নিহত ১, আহত ২
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহধর্মিণী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই সিএনজি চালক সবুরের জীবন্ত দগ্ধের খবর দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
তিনি চিন্তা করেন নিহতের পরিবারের সদস্যদের বেঁচে থাকার জন্য একটা অবলম্বন প্রয়োজন, আর সেজন্য একটি নতুন সিএনজি কিনে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যেকোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করব।
এনএনকে ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, আমাদের পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশন থেকে আমাদের এলাকা রাঙ্গুনিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে মানবিক সহায়তা দিয়ে থাকি।
তিনি আরও বলেন, সাতকানিয়ার পশ্চিম ঢেমশার সবুরের দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা সারা দেশকে নাড়া দিয়েছে। পরিবারটি আজ নিঃস্ব হয়ে গেছে। সেজন্য তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্ঠা করেছি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এমরুল করিম রাশেদ, সাতকানিয়া উপজেলার ৯ নম্বর পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন, ইউপি সদস্য নাছির উদ্দিন ও নিহতের মা ও দুই শিশু সন্তান।
উল্লেখ্য, গত ২৫ মার্চ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের মাজার পয়েন্ট সেতু এলাকায় সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ভেতরেই দগ্ধ হয়ে আবদুস সবুর নিহত হন। তিনি সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের ইছামতি গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে।
আরও পড়ুন: গরু চুরি করে নিতে না পারায় গরুকে কুপিয়ে জখম, হাতবোমা বিস্ফোরণ
গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭