সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় সবকটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ হলেও তা আবারও চালু করতে মালিকরা দৌড়াচ্ছেন উচ্চ আদালতে। অন্যান্য উপজেলায় আইন-কানুনের তোয়াক্কা করছেন না অনেক ইটভাটা মালিক।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ ভাটাগুলো বন্ধ করে দেয়ার দু’এক দিনের মধ্যেই তা আবারও চালু হয়ে যাচ্ছে।
ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোও বন্ধ হয়নি। ফলে বায়ু দূষণের কারণে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত। চরম ঝুঁকির মুখে পড়ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন ও জনস্বাস্থ্য। বিপর্যস্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ।
কোনো অবস্থাতেই ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো যাবে না, পরিবেশ অধিদপ্তরের দেয়া ছাড়পত্রে এমন শর্ত উল্লেখ থাকলেও জেলার কালিয়াকৈর, কাপাসিয়া, ও শ্রীপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ইটভাটার মালিকরা সে শর্ত মানছেন না।
স্থানীয় শ্রমিকরা জানান, এমন ভাটাও রয়েছে যেখানে প্রতিদিনই কমপক্ষে ১০ টন কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।
ভাটার কালো ধোঁয়া, ছাই, ইটের গুঁড়া এবং ধুলাবালির প্রকোপে গ্রাম-শহরের বাতাস দূষিত হয়ে পড়েছে। কাঠ পোড়ানোর কারণে পরিবেশের ভারসাম্য যেমন নষ্ট হচ্ছে তেমনি মূল্যবান বিরল প্রজাতির উদ্ভিদও পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
সরকারি নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করে এবং পরিবেশ ও জনস্বার্থ উপেক্ষা করে আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন স্কুলের সীমানা পর্যন্ত ইটভাটা সম্প্রসারিত করেছে অনেক ভাটা মালিক।
এসব অবৈধ ভাটা উচ্ছেদের জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে বার বার দাবি জানালেও কোনো ফল মেলেনি। রাজধানীর পাশের জনবহুল এ জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভুমিকা দেখে হতাশ স্থানীয়রা।
ইটভাটার বিষয়ে হাইকোর্টের এক নির্দেশনার পর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু হলেও, একেক এলাকায় একেক ধরনের শাস্তি দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
কোথাও কোথাও ভাটা ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, আবার কোথাও জরিমানার টাকা দিয়েই অবৈধ ভাটা চালানোর সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন অনেকে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেটরা বেশিরভাগ ভাটায় জরিমানা করছেন ৫ লাখ টাকা করে।
আবার কাপাসিয়া উপজেলার সম্মানিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এখনো অভিযান চালাতে পারেনি পরিবেশ অধিদপ্তর। আর কোনো কোনো এলাকায় দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
তবে অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানোর কথা উল্লেখ করে গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুস সালাম জানান, কোনো এলাকার ভাটা মালিককেই ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।