বায়ুদূষণ
বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকায় বায়ুদূষণের কারণে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে মৃত্যু হয় ৪০% শিশুর
বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে বাতাসের মানের ওপর সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি উঠে এসেছে।
হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউটের (এইচইআই) সর্বশেষ স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার (এসওজিএ) ২০২৪ প্রতিবেদন অনুসারে, ইউনিসেফের অংশীদারিত্বে দক্ষিণ এশিয়ার পাশাপাশি পূর্ব, পশ্চিম, মধ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলো বায়ুদূষণের কারণে সৃষ্ট রোগগুলোতে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হচ্ছে।
শুধু ২০২১ সালেই বাংলাদেশে বায়ুরদূষণের কারণে ২ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বায়ু দূষণের কারণে সময়ের আগেই শিশুর জন্ম, কম ওজন নিয়ে জন্ম, হাঁপানি ও ফুসফুসের রোগ এবং বিভিন্ন সমস্যাসহ ৫ বছরের কম বয়সি শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।
আরও পড়ুন: ২০২১ সালে বিশ্বে বায়ু দূষণে ৮১ লাখ মৃত্যু: ইউনিসেফ
বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশে, পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণে ৪০ শতাংশের বেশি মৃত্যু হয়েছে বায়ুদূষণের কারণে। ২০২১ সালে বাংলাদেশে বায়ুদূষণজনিত কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সি ১৯ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
২০২১ সালে, বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সি ৭ লাখেরও বেশি শিশুর মৃত্যুর কারণ ছিল বায়ুদূষণ। অপুষ্টির পরে এই বয়সের জন্য বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান ঝুঁকিতে পরিণত হয়েছে এটি।
এর মধ্যে ৫ লাখ শিশুর মৃত্যু গৃহস্থালী বায়ুদূষণ থেকে যা দূষিত জ্বালানি ব্যবহারে বাড়ির ভেতরে রান্নার কারণে সৃষ্ট। এসব মৃত্যুর বেশিরভাগ আফ্রিকা ও এশিয়ায়।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, 'লাখ লাখ মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। খারাপ বায়ু মানের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে শিশুরা। হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার মতো রোগে ভুগছে তারা। তবে শুধু এখনকার শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্যও বায়ু মানের উন্নতি গুরুত্বপূর্ণ। সেলক্ষ্যে টেকসই সমাধানগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।’
আরও পড়ুন: শিশুদের হাইড্রেটেড-নিরাপদ রাখতে বাড়তি সতর্ক হওয়ার আহ্বান ইউনিসেফের
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে অনেক বেশি পরিমাণে ওজোনের প্রভাব রয়েছে, যা বায়ুদূষণজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ওজোনসম্পর্কিত ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিসঅর্ডারের কারণে (সিওপিডি) মৃত্যুর প্রায় ৫০ শতাংশ ভারতে (২ লাখ ৩৭ হাজার), তারপরে চীন (১ লাখ ২৫ হাজার ৬০০) এবং বাংলাদেশে (১৫ হাজার) হয়েছে।
প্রতিবেদনে শিশুস্বাস্থ্যের ওপর বায়ুদূষণের প্রভাবগুলো বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। বায়ুদূষণের প্রভাবে ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ অবস্থায় আছে শিশুরা এবং এর প্রভাব গর্ভাবস্থা থেকেই শুরু হয়ে আজীবন স্থায়ী হতে পারে। ফুসফুস, দেহ ও মস্তিষ্কের বিকাশের এই পর্যায়ে শিশুরা শ্বাসের সঙ্গে তাদের শরীরের প্রতি কেজি ওজনের তুলনায় বেশি বাতাস টেনে নেয় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় বাতাসের দূষণকারী পদার্থগুলো তাদের শরীরে বেশি প্রবেশ করে।
বায়ুদূষণজনিত রোগের প্রভাব বিশ্বজুড়ে সমানভাবে দেখা যায় না। ইস্কেমিক হৃদরোগে বায়ুদূষণের প্রভাব বিশ্বব্যাপী গড়ে ২৮ শতাংশ হলেও ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মতো উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে ১০ শতাংশেরও কম। অন্যদিকে নাইজেরিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডার মতো পূর্ব, পশ্চিম, মধ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলো এবং বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ৪০ শতাংশেরও বেশি।
এই বছরের এসওজিএ প্রতিবেদনে বায়ুদূষণের স্বাস্থ্যের প্রভাব এবং এই বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টার জরুরি প্রয়োজনের বিষয়টি উঠে এসেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন জনস্বাস্থ্য নীতি উন্নত করার চেষ্টা করছে, তখন বাংলাদেশ জনগণের বিশেষত তরুণ প্রজন্মের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বায়ুদূষণ মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসার আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
৬ মাস আগে
বায়ুদূষণ রোধে ৫ ঘোষণা মেয়র আতিকের
বায়ুদূষণ রোধে পাঁচটি ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
সোমবার (৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর শেরাটন হোটেলে শক্তি ফাউন্ডেশন এবং ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘সেভ ইয়োর ব্রেথ-ক্লিন এয়ার ইম্পারেটিভস’ শীর্ষক নীতিনির্ধারণী সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব ঘোষণা দেন।
মেয়র তার ঘোষণায় যেসব বিষয় উল্লেখ করেন তা হলো-
. ধূলাবাহিত বায়ুদূষণ রোধকল্পে নির্মাণস্থলে আচ্ছাদন ব্যবহার করা।
. বায়ুবাহিত সূক্ষ্ম কণা ছড়িয়ে দেয় এমন উপকরণ বহনকারী যানবাহনের জন্য উপযুক্ত আচ্ছাদন ব্যবহার নিশ্চিত করা।
. কালো ধোঁয়া নির্গমন হয় এমন অনুপযুক্ত যানবাহন নিষিদ্ধ করা।
. অপ্রয়োজনীয় পাতা ও বর্জ্য পোড়ানো পরিহার করা।
. নালা ও খালের অবৈধ পয়ঃনিষ্কাশন লাইন বন্ধ করা।
আরও পড়ুন: জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে কুইক রেসপন্স টিম: ডিএনসিসি মেয়র
মেয়র আতিক আরও বলেন, শহরের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। বিভিন্ন সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলে, গুলশান ও বারিধারা এলাকায় একটি সার্ভে করেছিলাম। বেশিরভাগ ভবনে সঠিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। অভিজাত এলাকায় পয়ঃবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ সিটি করপোরেশনের সারফেস ড্রেনে দিয়ে দূষণ করছে। গুলশান ও বারিধারা খালের পানি দূষিত। মাছের চাষ করা যায় না। সেখানে মশার চাষ হচ্ছে।
মেয়র বলেন, শহরের প্রায় সব ভবনেই এয়ার কন্ডিশন (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র) লাগানো আছে। সবাই হাজার হাজার টাকা খরচ করে ঘর ঠান্ডা করার জন্য এসি লাগাচ্ছে। সবাই কিন্তু অনসাইটে সুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা করা বিষয় কেউ চিন্তা করছে না। নির্বিচারে শহরের খালে, ড্রেনে সুয়ারেজের সংযোগ দিয়ে পানি, বায়ু দূষণ করছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। এসব অবৈধ সংযোগ বন্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ফার্মগেটের আনোয়ারা উদ্যানে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না, এটি পার্ক হিসেবেই জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এটি একসময় পার্ক ছিল। জনগণের চাহিদা অনুযায়ী এটি পার্ক হিসেবে ফিরিয়ে দিতে হবে। আমি জনগণের সঙ্গে আছি। এখানে কোন স্থাপনা নয়, এটি পার্ক হিসেবে থাকবে।
বায়ুর গুণমান উন্নতকরণে তথ্য-ভিত্তিক সমাধান এবং তার যথাযথ প্রয়োগের উপর গুরুত্বআরোপের লক্ষ্যে ইউএসএআইডি এবং শক্তি ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই সংলাপের আয়োজন করে।
শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও অংশ নেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পরিচালক মো. লোকমান হোসেন মোল্লা।
আরও পড়ুন: নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের পরিকল্পিত উন্নয়নে প্রকল্পের অনুমোদন: ডিএনসিসি মেয়র
নেদারল্যান্ডসের শহরগুলোর খালের আদলে ঢাকার খালগুলোর উন্নয়ন করতে চাই: ডিএনসিসি মেয়র
৬ মাস আগে
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসার আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর
বায়ু ও পরিবেশ দূষণ মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘সেভ ইয়োর ব্রিদ: পলিসি ডায়ালগ অন ক্লিন এয়ার ইমপারেটিভস’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বায়ু দূষণের কারণে মানুষ শারীরিক ক্ষতির পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ জায়গা থেকে দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: পরিবেশ সুরক্ষা ও টেকসই উন্নয়নে যুব সমাজের অংশগ্রহণ অপরিহার্য: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সরকার বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থার পরিকল্পনা করছে। বায়ু ও পরিবেশ দূষণ মোকাবিলায় আইনের যথাযথ প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বায়ুদূষণ কোনো একটি দেশের সমস্যা নয়- এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। তাই এ সমস্যা মোকাবিলায় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দক্ষিণ এশীয় পর্যায়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন। কারণ এক দেশের বায়ুদূষণের প্রভাব পড়ছে অন্য দেশের ওপর।
এছাড়া, বায়ুদূষণ রোধে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি সব পক্ষের সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন পরিবেশমন্ত্রী।
সেমিনারে ঢাকার বায়ুদূষণের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম।
সেমিনারে আরও ছিলেন- বাংলাদেশ ক্লাইমেট পার্লামেন্টের আহ্বায়ক ও সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ স্টেফান লিলার, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি আদিল মোহাম্মদ খান, ইউএসএইড এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কাউর এবং শক্তি ফাউন্ডেশনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান আহমেদ।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
৬ মাস আগে
বায়ুদূষণের দায়ে ৯ ইটভাটাকে ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ঘোষিত অভিযানে বায়ুদূষণের দায়ে ৯ টি যানবাহনকে ৯ হাজার টাকা, সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ৬০ হাজার টাকা ও ৯টি ইটভাটা হতে ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
পরিবেশ দূষণবিরোধী অভিযান ও পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সোমবার (১০ এপ্রিল) পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইং, বায়ুমান ব্যবস্থাপনা শাখা, ঢাকা অঞ্চল কার্যালয় ও সিরাজগঞ্জ জেলা কার্যালয় এর উদ্যোগে ঢাকা জেলার মানিকমিয়া এভিনিউ, ভাষানটেক, পিরেরবাগ ও সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ ও উল্লাপাড়া এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
আরও পড়ুন: অবৈধ ইটভাটা বন্ধ: সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ
নির্মাণ সামগ্রী খোলা অবস্থায় রেখে বায়ুদূষণের দায়ে ঢাকার পীরেরবাগ এলাকায় মোবাইল কোর্টে তিনটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২৫ হাজার টাকা এবং ভাষানটেক এলাকায় চারটি প্রতিষ্ঠান হতে মোট ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
মানিকমিয়া এভিনিউ এলাকায় মোবাইল কোর্টে যানবাহনের কালো ধোঁয়া দ্বারা বায়ুদূষণের দায়ে ৯ টি যানবাহন হতে হতে মোট ৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও রায়গঞ্জ এলাকায় মোবাইল কোর্টে অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করে ৯টি ইটভাটা হতে মোট ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইং কর্তৃক পরিচালিত বায়ুদূষণ বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণের দায়ে ৭ যানবাহন ও ৬ ইটভাটাকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা
বায়ু দূষণ: ঢাকায় ৮ যানবাহন, ৬ প্রতিষ্ঠান ও ৬ ইটভাটার জরিমানা
১ বছর আগে
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২ সপ্তাহের মধ্যে ঢাকাসহ ৫ জেলার অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের নির্দেশ
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ পাঁচ জেলার সব অবৈধ ইটভাটা দুই সপ্তাহের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদেশে আদালত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায় থাকা অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করে দুই সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজিকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন।
আদালতে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম।
আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিল পরিবেশ অধিদপ্তর
এর আগে বায়ু দূষণরোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০২০ সালে রায় দেন উচ্চ আদালত।
৯ দফা নির্দেশনায় বলা হয়:
১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহণ করতে হবে।
২. যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার কনট্রাকটররা তা ঢেকে রাখবে।
৩. এছাড়া ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনও পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণ কাজ এবং কার্পেটিং যেসব কাজ চলছে, যেসব কাজ যেন আইন-কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয় সেটা নিশ্চিত করার নির্দেশ।
৫. যেসব গাড়ি কালো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে বলা হয়েছে।
৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ।
৭. যেসব ইটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনও বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ।
৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকিলিং বন্ধের নির্দেশ।
৯.মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে এবং তা মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি কর্পোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করার নির্দেশ।
আরও পড়ুন: অবৈধভাবে চলছে ৬০ ভাগ ইটভাটা: মন্ত্রী
এই ৯ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি সোমবার হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
গত ৩১ জানুয়ারি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ু দূষণে কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
সেই আদেশ অনুযায়ী গত ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
ওই প্রতিবেদন দেখে বায়ু দুষণ রোধে আদেশ বাস্তবায়নে দুই সপ্তাহ সময় দেন।
এছাড়া আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আজকে যে প্রতিবেদন দিয়েছে সেটাতে আদালত বলছেন যথেষ্ঠ নয়। কয়েকটা গাড়ির কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু অবৈধ ইটভাটার উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি বলেন, তাই দুই সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার আশেপাশের পাঁচ জেলায় অবৈধ ইটাভাটা বন্ধ করে পরিবেশ অধিদপ্তরকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। সিটি করপোরেশনকে বলেছেন পর্যাপ্ত পানি ছিটাতে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহন করা, যে সব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার ঢেকে রাখাসহ আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ডিসিদের ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান
১ বছর আগে
বায়ুদূষণ রোধে ঢাকা ও আশপাশের ৫ স্থানে বিশেষ অভিযান
বায়ুদূষণ রোধে সরকার ঘোষিত বিশেষ অভিযানে ঢাকা ও আশপাশের পাঁচ স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে।
এ অভিযানে পরিবেশ দূষণের দায়ে মোট ২৬টি যানবাহনকে ৮৫ হাজার টাকা এবং ১০টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বুধবার পরিবেশ দূষণবিরোধী অভিযান ও পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইং, ঢাকা মহানগর কার্যালয়, ঢাকা জেলা কার্যালয়, গাজীপুর জেলা কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন ঢাকার উদ্যোগে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ: ঢাকার বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’
ঢাকা জেলার সাভার, মানিকমিয়া এভিনিউ, খিলক্ষেত, আফতাবনগর ও গাজীপুর জেলার বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়।
এর মধ্যে মানিক মিয়া এভিনিউ, খিলক্ষেত ও আফতাবনগরে পরিচালিত অভিযান পরিদর্শন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে যা যা করা দরকার সরকার তা করবে। জনগণ যাতে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে বসবাস করতে পারে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
সরকার জনসচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। একই সঙ্গে সরকার বায়ুদূষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখবে।
পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, সমাজের সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব সচেতনভাবে পালন করলে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে আসবে।
পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শুধুমাত্র সরকারের একার পক্ষে দূষণ নিয়ন্ত্রণ দুঃসাধ্য।
মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, বায়ুদূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সকল ডিসিদের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় যাতে স্ব স্ব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে এ জন্য ২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে এক বিশেষ সভা আহ্বান করা হয়েছে।
আজ এ অভিযানের অংশ হিসেবে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে এবং বিআরটি মহাসড়ক নির্মাণকারী দুইটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে মোট এব লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
সাভার এলাকায় মোবাইল কোর্টে যানবাহনের মাত্রাতিরিক্ত হর্ন দ্বারা শব্দ দূষণের দায়ে চারটি যানবাহন থেকে মোট ১১ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।
এবং যানবাহনের কালোধোঁয়া দ্বারা বায়ুদূষণের দায়ে চারটি যানবাহন থেকে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায় করা হয়।
খিলক্ষেত এলাকায় মোবাইল কোর্টে যানবাহনের মাত্রাতিরিক্ত হর্ন দ্বারা শব্দদূষণের দায়ে ৭টি যানবাহন হতে মোট ৩৫ হাজার টাকা এবং নির্মাণ সামগ্রী খোলা অবস্থায় রেখে বায়ুদূষণের দায়ে দুইটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আফতাবনগর এলাকায় মোবাইল কোর্টে নির্মাণসামগ্রী খোলা অবস্থায় রেখে বায়ুদূষণের দায়ে ৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট দুই লাথ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় যানবাহনের কালোধোঁয়া দ্বারা বায়ুদূষণের দায়ে ১১টি যানবাহন হতে মোট ২৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
বায়ুদূষণ: ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’
১ বছর আগে
ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপ জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের এ তথ্য জানাতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ মৌখিকভাবে এ আদেশ দিয়েছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী আমাতুল করিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন চেয়ে আমরা একটি আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত পরিবেশ অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশনসহ সব পক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন।
এছাড়া বায়ুদূষণ রোধে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা আগামী রবিবারের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেন।
বায়ুদূষণ রোধে ৯ দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন: বিচারকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার: নীলফামারীর বার সভাপতিহ ৩ আইনজীবীকে হাইকোর্টে তলব
৯ দফা নির্দেশনায় বলা হয়-
১. ঢাকা শহরের মধ্যে বালি বা মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোকে ঢেকে পরিবহন করতে হবে।
২. যেসব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে সেসব জায়গার কনট্রাক্টররা তা ঢেকে রাখবে।
৩. এছাড়া ঢাকার সড়কগুলোতে পানি ছিটানোর যে নির্দেশ ছিল, সে নির্দেশ অনুযায়ী যেসব জায়গায় এখনো পানি ছিটানো হচ্ছে না, সেসব এলাকায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪. সড়কের মেগা প্রজেক্টের নির্মাণকাজ এবং কার্পেটিং যেসব কাজ চলছে, যেসব কাজ যেন আইন-কানুন এবং চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন মেনে করা হয়, সেটা নিশ্চিত করার নির্দেশ।
৫. যেসব গাড়ি কালো ধোঁয়া ছাড়ে সেগুলো জব্দ করতে বলা হয়েছে।
৬. সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করতে হবে এবং যেসব গাড়ি পুরাতন হয়ে গেছে সেগুলো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ।
৭. যেসব উটভাটা লাইসেন্সবিহীনভাবে চলছে, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো এখনো বন্ধ করা হয়নি, সেগুলো বন্ধ করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ।
৮. পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া টায়ার পোড়ানো এবং ব্যাটারি রিসাইকিলিং বন্ধের নির্দেশ।
৯. মার্কেট এবং দোকানের বর্জ্য প্যাকেট করে রাখতে এবং তা মার্কেট ও দোকান বন্ধের পরে সিটি করপোরেশনকে ওই বর্জ্য অপসারণ করার নির্দেশ।
এই নয় দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা চেয়ে সোমবার হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
আবেদনের পর তিনি জানিয়েছিলেন, কয়েক দিন ধরে রিপোর্ট হচ্ছে-বিশ্বের সর্বোচ্চ বায়ুদূষণকারী শহর হচ্ছে ঢাকা। বায়ুদূষণে ঢাকার এই অবস্থান ধারাবাহিক হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
এটি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। যেটা দিল্লিতেও করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের এখানে কারো কোনো খবর নেই। এখন পর্যন্ত ঢাকা শহর বায়ুদূষণে এক নম্বরে আছে, অথচ কেউ কোনো পাত্তা দিচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত এ বিষয়ে বলে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: কাতারে ফিফা বিশ্বকাপ: নিহত ও আহত বাংলাদেশি কর্মীদের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
মমিনুল সাঈদকে জামিন দেননি হাইকোর্ট, আত্মসমর্পণের নির্দেশ
১ বছর আগে
সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার বিস্ফোরণে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়
সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে আশেপাশের এলাকার বাসিন্দারা।ঘটনার এক সপ্তাহ পর পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপশি স্থানীয় বাসিন্দাদের শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। আগুন লাগার পর অন্তত ৬৫ ঘণ্টা লাগে নিয়ন্ত্রণে আনতে। আর পুরোপুরি নেভাতে লেগেছে ৯৫ ঘণ্টার বেশি। তারপরও কালো ধোঁয়ার নির্গমন বন্ধ হয়নি।এতে চোখের যন্ত্রণার পাশাপাশি শ্বাসকষ্টে ভুগছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।এমনিতে আগুন ও বিস্ফোরণের পরপরই আতঙ্কিত হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে গেছেন অনেকে। তারা যেমন বসতবাড়িতে ফেরেননি, তেমনি বাকি যারা বাড়িতে ছিলেন তারাও গ্রাম ছাড়ছেন অসুস্থতার ভয়ে।ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, কন্টেইনার ডিপোটিতে ‘হাইড্রোজেন পারক্সাইড’ নামের বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক ছিল। হাইড্রোজেন পারক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ। এটি যদি উত্তপ্ত করা হয়, তাহলে তাপীয় বিয়োজনে হাইড্রোজেন পারক্সাইড বিস্ফোরকের আচরণ করে। আগুন লাগার পর কন্টেইনারগুলোয় বিস্ফোরণ ঘটে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: বিএম কন্টেইনার ডিপো থেকে দেহাবশেষ উদ্ধার
গত ৪ জুন শনিবার রাতের বিকট বিস্ফোরণের পর কন্টেইনারে থাকা বিষাক্ত রাসায়নিক মিশে গেছে বাতাসে। আবার পানির সঙ্গে মিশে চলে গেছে বিভিন্ন খাল হয়ে বঙ্গোপসাগরে। বিস্ফোরণের পর থেকেই সীতাকুণ্ডের ওই এলাকায় ঝাঁজালো গন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই চোখে ঝাপসা দেখছেন; কারও কারও চামড়া বিবর্ণ বা লাল হয়ে গেছে। শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, বমিসহ দেখা দিচ্ছে নিত্যনতুন নানা উপসর্গ।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও পরিবেশবিদরা বলছেন, সীতাকুণ্ডের এই এলাকায় প্রকৃতি বা পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে পড়তে পারে। সেটা স্বল্পমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। এ অবস্থায় ভারী বৃষ্টিপাত হলে বায়ুদূষণ কমে পরিবেশ কিছুটা স্বাভাবিক হবে। তবে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি খালগুলোতে গিয়ে দূষণ সৃষ্টি হতে পারে। সব মিলিয়ে জনস্বাস্থ্যের ওপর নিঃসন্দেহে বিরূপ প্রভাব পড়বে। তারা আরও বলছেন, সীতাকুণ্ডের বাতাসে কী পরিমাণ রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, সেটা পরিমাপ করে দেখতে পারে পরিবেশ অধিদপ্তর। ওই এলাকার বাতাসে পিপিএমের (পার্টস পার মিলিয়ন) মাত্রা বেশি হলে অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব পড়বে।সরেজমিন দেখা গেছে, ডিপোর প্রবেশপথে দক্ষিণ পাশে গভীর ও চওড়া একটি নালা। হাইড্রোজেন পার অক্সাইড মিশ্রিত পানি যাতে খাল-বিলে গিয়ে দূষণ ঘটাতে না পারে সেজন্য নালার মাঝ বরাবর বালির বস্তা ফেলে বাঁধ নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা। ঘটনার পরদিন তৈরি করা ওই বাঁধ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
বিএম কন্টেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনায় আগুন, উত্তাপ ও ধোঁয়া প্রত্যক্ষভাবে ছড়িয়েছে আড়াই বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে। আর এর দূরবর্তী প্রভাব পড়েছে ১০ বর্গকিলোমিটার এলাকায়। বিস্ফোরণে পুরো এলাকায় রাসায়নিকের বিষাক্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে।
বিএম ডিপোর পাশ্ববর্তি মোল্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রমজান হোসেন জানান, ভয়াবহ আগুনে আশপাশের এলাকাগুলোয় রাসায়নিকের পোড়া গন্ধে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তার পাঁচ বছরের সন্তান ধোঁয়ায় অসুস্থবোধ করলে আরেক আত্মীয়ের বাড়িতে পরিবারকে রেখে এসেছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণ: ফায়ার সার্ভিসের আরও এক কর্মীর মৃত্যু
২ বছর আগে
বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত দেশের তালিকায় শীর্ষে বাংলাদেশ
২০২১ সালে বিশ্বের সবচেয়ে কম শ্বাস-প্রশ্বাসের উপযোগী বাতাস ছিল ঢাকায়। বাংলাদেশের রাজধানী বায়ু মানের ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় খারাপ শহরের তালিকায় রয়েছে।
বায়ুদূষণ ও বায়ু পরিশোধন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা সুইস সংস্থা আইকিউ এয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত পাঁচটি দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও চাদ, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান ও ভারত শীর্ষে রয়েছে।
ঢাকা (বাংলাদেশ), এন’জামেনা (চাদ), দুশানবে (তাজিকিস্তান) ও মাস্কাট (ওমান) এবং নয়াদিল্লি (ভারত) টানা চতুর্থ বছরের মতো বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী শহর।
আরও পড়ুন: দূষিত শহরের তালিকায় আবারও শীর্ষে ঢাকা
প্রতিবেদনটি ১১৭টি দেশ, ছয় হাজার ৪৭৫ অঞ্চল এবং স্থলভিত্তিক বায়ুর গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে বায়ু দূষণ ডেটার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত বায়ুর গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে, ৪৪ শতাংশ সরকারি সংস্থাগুলো দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। অন্যগুলো বিজ্ঞানী, অলাভজনক সংস্থা দ্বারা পরিচালিত।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ বায়ুর গুণমান ছিল এবং বিশ্বের ৫০টি সবচেয়ে দূষিত শহরের মধ্যে ৪৬টি এই অঞ্চলের আওতাভুক্ত।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে চীনে বায়ুর গুণমান উন্নত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’
২ বছর আগে
দূষিত শহরের তালিকায় আবারও শীর্ষে ঢাকা
ঢাকার বায়ুর মান 'অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর'। আবারও বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ বায়ুর মানের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ২৪২ রেকর্ড করা হয়েছে।
কাজাখস্তানের নুর-সুলতান ও পাকিস্তানের লাহোর পরবর্তী দুটি স্থান দখল করেছে, উভয় দেশের একিউআই স্কোর ১৮৭।
একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে 'খারাপ' বলা হয়, যেখানে ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর 'ঝুঁকিরপূর্ণ' বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাস এখনও 'অস্বাস্থ্যকর'
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
আরও পড়ুন: সবচেয়ে দূষিত বাতাস গাজীপুরে, ভালো মাদারীপুরে: গবেষণা
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
২ বছর আগে