সোমবার এ তথ্য জানানোর পর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে করা রিট আবেদনের শুনানি ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী। আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী।
আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রাসেল চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে জানিয়েছেন দুই সপ্তাহের মধ্যে ওনারা (তদন্তকারী কর্মকর্তা) চার্জশিট দিয়ে দেবেন। যত তড়াতাড়ি সম্ভব দিয়ে দেবেন।’
এর আগে, গত ১২ অক্টোবর রিট করেন আইনজীবী সৈয়দ ফজলে এলাহী।
এছাড়া, রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে আরেকটি রিট করেছিলেন ফয়েজ উদ্দিন আহমদ। এ রিট আবেদনটি বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের বেঞ্চে শুনানির জন্য রয়েছে। এ রিট আবেদনে পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য গত রবিবার আবেদন করেছেন রায়হানের মা সালমা বেগম।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর বিকালে সিলেট নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমেদের (৩৫) মরদেহ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। তারা রায়হানের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে ওই দিনই সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়, সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা যান রায়হান।
রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তা তদন্তের জন্য সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আলম মামুনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পায়।
এ ঘটনায় বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, মূল অভিযুক্ত আকবর হোসেন ভূঁইয়া পলাতক আছেন।
পরিবারের দাবি, গত ১০ অক্টোবর রাতে রায়হানকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন পুলিশের কয়েকজন সদস্য। ফোনে পরিবারের সদস্যদের টাকা নিয়ে আসতে বলেন রায়হান। গত ১১ অক্টোবর সকালে ৫ হাজার টাকা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়ে জানতে পারেন, অসুস্থ হয়ে পড়ায় রায়হানকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে তারা রায়হান মারা গেছেন বলে জানতে পারেন।