হাইকোর্ট
পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বাধা নেই
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় আর কোনো বাধা রইল না।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা দুটি রিটের শুনানি শেষে এই রায় দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ৪ ডিসেম্বর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা দুটি রিটের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছিলেন আদালত।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন এই আবেদনের সঙ্গে জড়িত। তাদের বেশিরভাগই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের পক্ষে ছিল।
২০১১ সালের ৩০ জুন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান বাতিল করে দিয়েছিলেন।
সংশোধনীতে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এটিকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
সংশোধনীতে সংসদ নির্বাচনের সময়সীমাও পরিবর্তন করা হয়েছিল। যাতে বলা হয়েছে যে সংসদীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু: পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রায় আজ
এর আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা ছিল।
পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানে ছোট ও বড় মিলে মোট ৫৫টি পরিবর্তন আনা হয়েছিল।
মঙ্গলবারের রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলে পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। সংবিধানের সৌন্দর্য হচ্ছে জনগণের ক্ষমতায়ন।
এই রায়ের মধ্যদিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছিল তার সবগুলোই বাতিল হয়ে গেল।
১ দিন আগে
‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান ঘোষণার রায় স্থগিত
‘জয় বাংলা’কে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান করতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। তিনি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২০২০ সালের ১০ মার্চ জায় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করার ওই রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘জয় বাংলা জাতীয় ঐক্যের স্লোগান। জয় বাংলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় স্লোগান এবং জয় বাংলা ৭ মার্চের ভাষণের সাথে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ’আদালত আরও বলেন, ‘আবেদনকারী সংবিধানের ৩ ও ৪ নম্বর অনুচ্ছেদের ধারাবাহিকতায় জাতীয় স্লোগান হিসেবে জয় বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছেন, এটা এই আদালতের এখতিয়ার বহির্ভূত। কারণ কোনো আইন প্রণয়ন করা এবং সংবিধান সংশোধন করার একমাত্র অধিকার জাতীয় সংসদের। ’
তবে রাষ্ট্রপক্ষ এ রুলের সমর্থনে হলফনামা দিয়েছেন উল্লেখ করে আদালত রায়ে বলেন, আইন সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব জয়বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করায় একমত পোষণ করেছেন। এরপর আদালত রায়ের আদেশ অংশ ঘোষণা করেন। আদেশে আদালত বলেন—ক. আমরা ঘোষণা করছি যে, জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।
খ. সকল জাতীয় দিবসগুলোতে এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদাধিকারী এবং রাষ্ট্রীয় সব কর্মকর্তা সরকারি অনুষ্ঠানের বক্তব্য শেষে জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ যেন করেন, সেজন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
গ. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি সমাপ্তির পরে ছাত্র-শিক্ষকরা যেন জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ করেন, তার জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন। আদালতের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন ৩ মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিলে নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। রুলে ‘জয় বাংলা’কে কেন জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে ৫ ডিসেম্বর থেকে এ রুলের শুনানি শুরু হয়। এরপর হাইকোর্ট রায় দেন। সম্প্রতি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
১ সপ্তাহ আগে
হারিয়ে যাওয়া হারিছ যেভাবে ফিরে এলেন
তিন বছর আগে সাভারের একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে ‘মাহমুদুর রহমান’ নামে এক ব্যক্তিকে দাফন করা হয় যার জীবন ও পরিচয় ছিল রহস্যে ঘেরা। তবে আদালতের নির্দেশে সেই ব্যক্তির লাশ তুলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আজ সেই রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা হলেও তিনিই যে বহু বছরের রহস্যে ঘেরা বিএনপি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী, তা এখন নিশ্চিত।
কবর থেকে তুলে এনে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শুধু একজন মানুষের পরিচয়ই শনাক্ত করা হয়নি, বরং বছরের পর বছর ধরে চলা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে এমন একটি গল্প বের করে আনা হয়েছে, দীর্ঘদিন যা মাটির নিচে সমাহিত ছিল।
লাশ উত্তোলন ও ডিএনএ পরীক্ষা
হাইকোর্টের নির্দেশে গত ১৬ অক্টোবর কবর থেকে ‘মাহমুদুর রহমান’ নামের ওই ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরপর লাশের ডিএনএ নমুনা হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরীর ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। পরীক্ষায় দুজনের ডিএনএ মিলে গেলে নিশ্চিত হয়ে যায়, মাহমুদুর রহমান নয়, লাশটি হারিছ চৌধুরীরই ছিল।
এরপর বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ হারিছ চৌধুরীকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যথাযথ সম্মান দিয়ে তাকে তার পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী দাফন করার অনুমতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডিএনএ মিলেছে, হারিছ চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ
সামিরা তানজিন চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী বলেন, আদালতের এই রায় তার পরিবারের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত ন্যায়বিচার দিয়েছে।
স্বস্তি প্রকাশ করে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন বলেন, সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ একটি নাটক রচনা করে বাবার মৃত্যুকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। মিডিয়া একটির পর একটি রিপোর্ট করলেও হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। এটি নিয়ে যেন কখনও প্রশ্ন না ওঠে, সেটি নিশ্চিত করার জন্যই এ রিট করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থাকবে- সন্তান হিসেবে এটি খুব মর্মান্তিক, কষ্টদায়ক।’ এখনও মানুষ জিজ্ঞেস করে- সত্যিই কি তিনি মারা গেছেন? এ নিয়ে আমাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। তাই বিষয়টি বন্ধের জন্য আমরা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি এবং আজ ন্যায়বিচার হয়েছে।’
রহস্যে ঘেরা এক জীবন
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব ছিলেন হারিছ চৌধুরী। তবে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আর তখন থেকেই নিখোঁজ হন এই রাজনীতিক।
সে বছর দেশে জরুরি অবস্থা জারির সপ্তাহখানেক পর স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে বেড়াতে যান হারিছ চৌধুরী। ওই রাতেই যৌথবাহিনী তার বাড়িতে অভিযান চালায়, তবে তাকে পায়নি।
এরপর কয়েক দিন সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান বিএনপি সরকারের দাপুটে এই নীতিনির্ধারক।
ভারতে গিয়ে তিনি ওঠেন নানার বাড়ি ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে। এরপর পাকিস্তান হয়ে ইরানে তার ভাই আবদুল মুকিত চৌধুরীর কাছে পৌঁছান- এমন খবরও চাউর হয়। ইরান থেকে তিনি যুক্তরাজ্যে পরিবারের কাছে যান। সেখান থেকে এই বিএনপি নেতা নিয়মিত ভারতে যাতায়াত ও ব্যবসা-বাণিজ্য দেখভাল করতেন বলে বিভিন্ন সময় নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।
স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তার ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার, আর মেয়ে ব্যারিস্টার।
আগে থেকেই হারিছ চৌধুরী ব্ল্যাড ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একবার রক্ত পরিবর্তন করে আসেন। দেশ ছাড়ার পর তিনি যুক্তরাজ্যে আরেকবার রক্ত পরিবর্তন করেন বলে জানা যায়।
২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন বলে গুজব ছড়ালেও সে সময় এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীরাও তার অবস্থান সম্পর্কে অবগত ছিলেন না।
এরপর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার সাত বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
‘মাহমুদুর রহমান’ ছদ্মনামে দেশে বসবাস করার একপর্যায়ে ২০২১ সালে তিনি করোনায় আক্রন্ত হন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আক্রান্ত হওয়ার আগে হারিছ চৌধুরী করোনার দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন, এরপরও তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার শরীরের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং পুরো ফুসফুস সংক্রমিত হয়ে পড়ে। ফলে করোনা থেকে সেরে ওঠার পরও তিনি ফুসফুস জটিলতায় ভূগছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন: ডিএনএ পরীক্ষার জন্য বিএনপি নেতা হারিছের লাশ তোলা হয়েছে
মৃত্যুর পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাপে তার পরিচয় গোপন রেখেই সাভারের জালালাবাদ এলাকার একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। সে সময় তার প্রকৃত পরিচয় অনুযায়ী মৃত্যুসনদও দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি (হারিছ চৌধুরী) ধানমণ্ডির পান্থপথের একটি বাড়িতে বসবাস করেন। প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিনের পর দিন থেকে গেলেও সরকার যে তাকে শনাক্ত করতে পারেনি, এটি ফ্যাসিস্ট সরকারের ব্যর্থতা ছিল। সে কারণেই তার মৃত্যুর পর তারা চায়নি যে হারিছ চৌধুরীর পরিচয় প্রকাশ তাদের ব্যর্থতা সবার সামনে ফুটে উঠুক। সে কারণেই তার পরিচয় গোপন রেখে দাফন করতে বাধ্য করা হয়।
তবে দীর্ঘকাল পর আদালতের নির্দেশে আর প্রযুক্তির সহায়তায় উন্মোচিত হয়েছে হারিছ রহস্য। সেইসঙ্গে তিনি পেয়েছেন পরিচয়, স্বীকৃতি। আর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছে তার পরিবার।
ব্যারিস্টার সামিরা বলেন, সত্য সূর্যের মতো। একদিন এ সত্য বের হওয়ারই ছিল। তৎকালীন সরকার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার বাবার প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করেছিল। আজকে আদালতের আদেশের মধ্য দিয়ে আমার বাবার মৃত্যুকে ঘিরে যে হয়রানি ও বিভ্রান্তি ছিল তার অবসান হলো। তাকে সম্মানের সঙ্গে পুনরায় দাফনের সুযোগ করে দেওয়ায় আমরা আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ।
২ সপ্তাহ আগে
১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
২০০৮ সালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টকে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক জানান, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে হত্যার দিন ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস এবং সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করে।
তবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস ও ছুটি বাতিল করে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। এরপর বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। পরে আবার জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটির ঘোষণা করা হয়।
হাইকোর্টে একটি আপিল দায়ের করা হয়েছিল, তাতে ১৫ আগস্টে সরকারি ছুটির উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়।
২ সপ্তাহ আগে
ইসকনের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ কী, জানতে চান হাইকোর্ট
‘ইসকন’ কী ধরনের সংগঠন, এই সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন আছে কি না, সংগঠনটির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, সেসব জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বুধবার (২৭ নভেম্বর) করা এক আবেদেনর শুনানিকালে বৃহস্পতিবারের (২৮ নভেম্বর) মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে এ তথ্য আদালতে জানাতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ইসকনের কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে এনে সংগঠনটির কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে আদালতের কাছে আবেদন করেন আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন।
এ সময় আদালত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে ইসকনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে চান।
আরও পড়ুন: আইনজীবী হত্যা: ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বাকৃবিতে বিক্ষোভ মিছিল
এর আগে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীদের হামলায় সাইফুল ইসলাম নামে চট্টগ্রামের এক আইনজীবী নিহত হন। এরপর মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাইফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।
হামলার ঘটনায় আহত আরও ৭-৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই নির্মম ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন আজ হাইকোর্টে তুলে ধরা হয়।
ইসকন নিষিদ্ধ করা এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারি এবং সংগঠনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গণমাধ্যমের রিপোর্ট তুলে ধরে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এ বিষয়ে আদেশ প্রার্থনা কর হয়। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যার্টনি জেনারেলকে ডেকে পাঠান আদালত। পরে ইসকন ও সাম্প্রতিক ইস্যুতে সরকারের পদক্ষেপ জানাতে বলেন হাইকোর্ট।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার আদালতের কাছে বিষয়টি জানাব।’
এছাড়া ইসকনের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুর্ভাগ্যজনক বলে ‘হাইকোর্টকে জানিয়েছি’ বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ওই ঘটনাটি ফৌজদারি অপরাধ। এ কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেবে সরকার। তবে ইসকন নিষিদ্ধ করা হবে কি না, তাদের নিবন্ধন আছে কিনা- এসব সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়।’
আরও পড়ুন: হিন্দু ধর্মান্ধদের হাতে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ইসকন নিষিদ্ধের দাবি
৩ সপ্তাহ আগে
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল
ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার (২৫ নভেম্বর) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
দুপুরে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে রবিবার (২৪ নভেম্বর) ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নুর মুহাম্মদ আজমী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে পিটিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আজ বা আগামীকাল আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে বিচারপতির কাছে আবেদনটি পেশ করতে পারি।
তিনি বলেন, স্থগিতাদেশের আবেদনে ব্যাটারিচালিত রিকশা বা অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং তাই হাইকোর্ট এই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলে উল্লেখ থাকবে।
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে গত ২০ নভেম্বর হাইকোর্ট তিন দিনের মধ্যে ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে এসব যানবাহনের কার্যক্রম বন্ধে তাদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা ব্যাখ্যা করতে রুল জারি করে।
৩ সপ্তাহ আগে
আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠনের আদেশ হাইকোর্টের
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির ক্ষেত্রে দরকষাকষির সকল নথিপত্র (ডকুমেন্টস) আগামী এক মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চুক্তিটির সার্বিক দিক বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদানির আলোচিত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি অসম দাবি করে তা বাতিল অথবা পুনঃমূল্যায়ন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুমের করা রিটের শুনানি শেষে রুলসহ এই আদেশ দেন আদালত।
হাইকোর্ট রুলে জানতে চেয়েছেন, অসম, অন্যায্য ও দেশের স্বার্থ পরিপন্থী বলে দাবি করা এই চুক্তিটি কেন বাতিল করা হবে না।
আরও পড়ুন: আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের সব চুক্তি বাতিল চেয়ে রিট
সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ওই কমিটিকে বিদ্যুৎ চুক্তিটির সার্বিক দিক বিশ্লেষণ করে দেশের স্বার্থ পরিপন্থী বিষয়গুলো চিহ্নিত করে আগামী ২ মাসের মধ্যে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরেকটি কমিটি করতে বলেছেন হাইকোর্ট। ওই কমিটিকে চুক্তিটির সম্পাদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনুসন্ধান করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম। এসময় রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান, আফরোজা ফিরোজ ও কামরুন মাহমুদ।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম পিডিবির চেয়ারম্যান ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এ বিষয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। সে নোটিশে তিন দিনের মধ্যে চুক্তি সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়। তা না হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: আদানির সময়সীমা নিয়ে আমরা খুবই মর্মাহত: প্রেস সচিব
এক পর্যায়ে লিগ্যাল নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। সে রিটে ‘আদানি গ্রুপের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিকে অসম, অন্যায্য ও দেশের স্বার্থ পরিপন্থী উল্লেখ করে চুক্তির শর্ত সমূহ সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সংশোধন করার কথা বলা হয়। আদানি গ্রুপ তাতে রাজি না হলে চুক্তিটি বাতিল করার জন্য রিটে সরকারের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আদানি গোষ্ঠী ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় এক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই বাংলাদেশে সরবরাহ করে।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে সেই চুক্তি হয়। শুরু থেকেই এই বিদ্যুতের দাম নিয়ে বিতর্ক ওঠে।
আরও পড়ুন: গোপনে আদানি গ্রুপের বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন প্রতিষ্ঠানের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা
৪ সপ্তাহ আগে
কুইক রেন্টালে দায়মুক্তি দেওয়া ছিল অবৈধ: হাইকোর্ট
কুইক রেন্টাল আইন নামে পরিচিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তির বিধান অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
দায়মুক্তির বিধান চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে আজ (১৪ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
কুইক রেন্টাল সংক্রান্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ এর ৯ ধারায় দায়মুক্তি কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলের শুনানি শেষে গত ৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রায়ের দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার সিনথিয়া ফরিদ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০’- এর ৯ ও ৬ (২) ধারা অনুযায়ী, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তুলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন বা মামলা করা যাবে না। এই ধারা দুটি চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট করা হয়।
রিটে বলা হয়, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে অস্বাভাবিক খরচ আর অনিয়মের কারণেই বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। অথচ সেই অনিয়মকে বৈধতা দেওয়ার জন্য আইন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব অনিয়মের কোনো বিচারও চাওয়া যাবে না-এটা জনস্বার্থবিরোধী ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এ রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ২ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্টে বেঞ্চ সোমবার রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি করে আজ হাইকোর্ট রায় দেন
ড. শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের জানান, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০’ সাধারণত কুইক রেন্টাল আইন নামে পরিচিত। আইনটির ৬-এর (২) উপধারা ও ৯ নম্বর ধারার সাংবিধানিক বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেছি।
তিনি বলেন, ৬ এর ধারায় বলা আছে, জ্বালানিমন্ত্রী তার একক বিবেচনায় কোনো একক ব্যক্তি বা কোম্পানির সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তার সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারবেন। এখানে মন্ত্রীর একক বিবেচনায় যাকে ইচ্ছা, যত টাকায় ইচ্ছা চুক্তি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
আর আইনটির ৯ নম্বর ধারায় বলা আছে, কাকে চুক্তি দেওয়া হয়েছে, কত টাকার চুক্তি করা হচ্ছে, এসব ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে আদালতে শরণাপন্ন হওয়া যাবে না। দুটি ধারাই সংবিধানের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে এই আইনজীবী অভিযোগ করেন, ধারা দুটির অপব্যবহারের ফলে বিগত সরকারের আমলে কুইক রেন্টালের পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৬(২) ধারা অনুযায়ী বেশ কিছু কুইক রেন্টাল আইন স্থাপন করা হয়েছে। কুইকরেন্টাল আইন অনুযায়ী বিদ্যুত সরবরাহ করুক আর না করুক তারা টাকা পাবে। এই ধারা মূলত লুটপাটের বিশেষ বিধান আইন হয়ে গেছে। এজন্য আদালত ৬(০২ ধারাাকে অসাংবিধানিক ও অবৈধ ঘোষণা করেছেন। আইনের এই ৬(২) ধারায় অধীনে যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলো সরকার পুনমূল্যায়ন করতে পারবে এবং যাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে তাদের স্বার্থে চুক্তির শর্ত পরিবর্তন করতে পারবে, দরকষাকষি করতে পারবে। এখন সরকার পুনমূল্যায়ন করে যারা বসে বসে টাকা নিচ্ছে তাদের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিতে পারবে।
আরও পড়ুন: হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন ২৩ জন
১ মাস আগে
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হাইকোর্টে বাতিল
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কার্যক্রম বাতিল করে তাদেরকে অভিযোগ থেকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
খালাসপ্রাপ্ত অন্য দুজন হলেন— একুশে টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক মাহাথীর ফারুকী খান ও সিনিয়র প্রতিবেদক কনক সারওয়ার।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আব্দুস সালামের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
পরে মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, আজকে শাহদীন মালিক সাহেব শুনানি করেছেন। আমরাও সেখানে ছিলাম। এই মামলার শুরুইটাই বেআইনি। তাই আব্দুস সালাম, তারেক রহমানসহ সবার মামলা বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি লন্ডন থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া বক্তব্য একুশে টিভি সরাসরি সম্প্রচার করে। পরদিন তারেক রহমান ও একুশে টেলিভিশনের মালিক আব্দুস সালামের নামে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চায় তেজগাঁও থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: অন্য ইস্যু নয় ভোটের দিকে নজর দিন: সরকারকে ফখরুল
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর তেজগাঁও থানার এসআই বোরহান উদ্দিন ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি এ মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, লন্ডন থেকে তারেক রহমানের দেওয়া বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচারের করে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি দেখানো, প্রতিষ্ঠিত সরকারের প্রতি ঘৃণা তৈরি করতে চেয়েছিলেন।
তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এমদাদুল হক। সেখানে তারেক ও সালামের সঙ্গে একুশে টেলিভিশনের প্রধান প্রতিবেদক মাহাথীর ফারুকী খান এবং জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক কনক সারওয়ারের নাম যোগ করা হয়।
পরে আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আব্দুস সালাম হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট ২০১৭ সালে রুল ও স্থগিতাদেশ দেন। সেই রুলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দেওয়া হলো।
আরও পড়ুন: জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস: বিএনপির ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
১ মাস আগে
আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ চেয়ে করা রিট প্রত্যাহার
আওয়ামী লীগসহ ১১টি রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে রুল জারির নির্দেশনা চাওয়ার রিটও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
রিটকারীদের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্টে বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: আ. লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিধিনিষেধ চেয়ে রিট
সোমবার (২৮ অক্টোবর) এ রিট দায়ের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও হাসিবুল ইসলাম।
আদালতে রিটকারীদের আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, রিটকারীরা আর রিট আবেদনটি চালাতে চান না। এ কারণে হাইকোর্ট রিট আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।
দলগুলো হলো- আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদ, জাতীয় পার্টি (জেপি), তরিকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, বিকল্পধারা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (এম-এল) (দিলীপ বড়ুয়া), বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজার রানার জামিন স্থগিতই থাকছে
১ মাস আগে