হাইকোর্ট
চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত নগদ প্রশাসকের কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা: হাইকোর্ট
মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ করা প্রশাসকের সব কার্যক্রমের ওপর আবারও স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন।
শুনানির পর আদালত বলেছে, ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেবেন। নগদ প্রশাসকের সব কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থার আদেশ বলবৎ থাকবে।
এর আগে, গত ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের এক আদেশে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত নগদ প্রশাসকের সব কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থার আদেশ দেন হাইকোর্ট। তবে এরপরও প্রশাসক ও তার সহকারীরা নগদে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন, যা কোর্টের নির্দেশনার পরিষ্কার বরখেলাফ।
বুধবার হাইকোর্টের এই আদেশের পর নগদ লিমিটেডের শেয়ার হোল্ডারদের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ নওশাদ জমির বলেন, ‘আদালত নগদে প্রশাসকের স্থগিতাবস্থা বলবৎ রেখেছেন। এর ফলে চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত প্রশাসক ও তার দল নগদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনোরকম কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন না। হাইকোর্ট একইসঙ্গে এটিও প্রত্যক্ষ করেছেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যখন চূড়ান্ত রায় আসবে তখন এগুলো বাতিল হয়ে যাবে এবং তখনই এ বিষয়ে যথাপোযুক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে অবৈধঘোষিত এই প্রশাসকরা যাতে আদালতের রায় মেনে চলে, সেদিকে খেয়াল রাখতে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নগদ লিমিটেডের শেয়ার হোল্ডাররা।
এদিন রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবুল কালাম খান দাউদ, জিয়াউর রহমান এবং জামিলুর রহমান প্রমুখ।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা বদলে দেওয়ার ধারাবাহিকতায় গত ২১ আগস্ট থেকে এক বছরের জন্য ডিজিটাল লেনদেন সেবা নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যে আইনের ক্ষমতাবলে প্রশাসক নিয়োগ করা হয় বলে তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তখন পর্যন্ত সে আইনের গেজেট প্রকাশিত হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে প্রশাসক করার পাশাপাশি বিভিন্ন পদমর্যাদার আরও কয়েকজনকে সহকারী প্রশাসক করে নগদে পাঠায় তারা। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির সহযোগিতাকারীদের সমন্বয়ে নতুন করে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে। এসব প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে নগদের নির্বাহী পরিচালক সাফায়েত আলম হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে নগদে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবারের শুনানির পর দ্বিতীয় দফায় প্রশাসকের কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থার আদেশ দেন হাইকোর্ট।
২০১৯ সালে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে নগদ। গত বছর নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সও পায়। সে অনুসারে সেবা চালুর দ্বারপ্রান্তে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু কোনোরকম কারণ দর্শানো ছাড়াই শেষ মুহূর্তে নগদের ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স স্থগিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে মোবাইল আর্থিক সেবা হিসেবে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক ও তার সহযোগীরা অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেল নগদ
২২ ঘণ্টা আগে
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না: হাইকোর্ট
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণ চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও শিকদার মো. মাহমুদুর রাজীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট খারিজ করে দেন।
পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশের জনগণ বৈধ হিসেবে মেনে নিয়েছে, তাই এ বিষয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মহসীন রশিদ। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ গ্রহণ চ্যালেঞ্জ করে সম্প্রতি রিট করেছিলেন তিনি।
গত ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত চাওয়া হয়। সেদিন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পক্ষে মতামত দিয়ে স্পেশাল রেফারেন্স দেন। সুপ্রিম কোর্টের মতামত ও বৈধতা পাওয়ার পর রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তী সরকারকে শপথ পাঠ করান।
স্পেশাল রেফারেন্সে আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতি বলেন, দেশের বর্তমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন ও রাষ্ট্রপতি বিগত ৬ আগস্ট ২০২৪- এ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, সেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮ (৩) অনুসারে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গ্রহণ করা সম্ভবপর নয়।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণ বন্ধে ৭ দিনের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করার বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ হতে ৮/৮/২৪ তারিখের ১০.০০.০০০০.১২৭,৯৯.০০৭.২০.৪৭৫ নং স্মারকে প্রেরিত পত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জনগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত যাচনা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের বক্তব্য শোনা হলো। এমতাবস্থায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কোনো বিধান না থাকায় উল্লিখিত প্রশ্নের বিষয়ে বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই মতামত প্রদান করছে যে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি উক্তরূপে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টাকে শপথ পাঠ করাতে পারবেন।
৪ দিন আগে
তারেক রহমানের চার মামলা বাতিলের রায় বহাল
চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চার মামলা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে রবিবার (৫ জানুয়ারি) বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক।
চাঁদাবাজির অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাজধানীর পৃথক দুটি থানায় করা চারটি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে গত ২৩ অক্টোবর হাইকোর্ট রায় দেন।
আরও পড়ুন: তারেক রহমান-মামুনের ৭ বছরের দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত
২০০৭ সালে গুলশান থানায় তিনটি এবং ধানমন্ডি থানার একটি মামলাসহ ওই চার মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে তারেক রহমানের করা পৃথক আবেদনের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ওই রায় দেওয়া হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত ডিসেম্বরে পৃথক লিভ টু আপিল করে। পৃথক লিভ টু আপিল গত ৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। আদালত লিভ টু আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চারটি লিভ টু আপিল করা হয়। লিভ টু আপিলগুলো শুনানি করে খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।’
আইনজীবীদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, রেজা কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফতাব উদ্দিন ২০০৭ সালের ২৭ মার্চ তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনসহ অন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল আমিন কনস্ট্রাকশনের কর্মকর্তা সৈয়দ আবু শাহেদ সোহেল চাঁদাবাজির অভিযোগে একই বছরের ৪ মে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন।
তারেক রহমান ও তার একান্ত সহকারী মিয়া নূরউদ্দিন অপুকে আসামি করে ঠিকাদার আমীন আহমেদ ভূঁইয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে দ্রুত বিচার আইনে গুলশান থানায় ২০০৭ সালের ৮ মার্চ একটি মামলা করেন। ঠিকাদার মীর জাহির হোসেন ধানমন্ডি থানায় ২০০৭ সালের ১ এপ্রিল গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে অপর মামলাটি করেন। এই চার মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করেন তারেক রহমান।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (চূড়ান্ড) ঘোষণা করে গত ২৩ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী থেকে ইউপি সদস্য পর্যন্ত সবার জবাবদিহিতা চান তারেক
১ সপ্তাহ আগে
পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বাধা নেই
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় আর কোনো বাধা রইল না।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা দুটি রিটের শুনানি শেষে এই রায় দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ৪ ডিসেম্বর সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা দুটি রিটের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেছিলেন আদালত।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন এই আবেদনের সঙ্গে জড়িত। তাদের বেশিরভাগই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের পক্ষে ছিল।
২০১১ সালের ৩০ জুন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান বাতিল করে দিয়েছিলেন।
সংশোধনীতে বেআইনিভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এটিকে রাষ্ট্রদ্রোহ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।
সংশোধনীতে সংসদ নির্বাচনের সময়সীমাও পরিবর্তন করা হয়েছিল। যাতে বলা হয়েছে যে সংসদীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু: পঞ্চদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রায় আজ
এর আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা ছিল।
পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানে ছোট ও বড় মিলে মোট ৫৫টি পরিবর্তন আনা হয়েছিল।
মঙ্গলবারের রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলে পঞ্চদশ সংশোধনী অবৈধ। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। সংবিধানের সৌন্দর্য হচ্ছে জনগণের ক্ষমতায়ন।
এই রায়ের মধ্যদিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছিল তার সবগুলোই বাতিল হয়ে গেল।
১ মাস আগে
‘জয় বাংলা’ জাতীয় স্লোগান ঘোষণার রায় স্থগিত
‘জয় বাংলা’কে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান করতে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আপিলের অনুমতি দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। তিনি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
২০২০ সালের ১০ মার্চ জায় বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করার ওই রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘জয় বাংলা জাতীয় ঐক্যের স্লোগান। জয় বাংলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় স্লোগান এবং জয় বাংলা ৭ মার্চের ভাষণের সাথে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ’আদালত আরও বলেন, ‘আবেদনকারী সংবিধানের ৩ ও ৪ নম্বর অনুচ্ছেদের ধারাবাহিকতায় জাতীয় স্লোগান হিসেবে জয় বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করেছেন, এটা এই আদালতের এখতিয়ার বহির্ভূত। কারণ কোনো আইন প্রণয়ন করা এবং সংবিধান সংশোধন করার একমাত্র অধিকার জাতীয় সংসদের। ’
তবে রাষ্ট্রপক্ষ এ রুলের সমর্থনে হলফনামা দিয়েছেন উল্লেখ করে আদালত রায়ে বলেন, আইন সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব জয়বাংলাকে জাতীয় স্লোগান করায় একমত পোষণ করেছেন। এরপর আদালত রায়ের আদেশ অংশ ঘোষণা করেন। আদেশে আদালত বলেন—ক. আমরা ঘোষণা করছি যে, জয় বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হবে।
খ. সকল জাতীয় দিবসগুলোতে এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদাধিকারী এবং রাষ্ট্রীয় সব কর্মকর্তা সরকারি অনুষ্ঠানের বক্তব্য শেষে জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ যেন করেন, সেজন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
গ. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যাসেম্বলি সমাপ্তির পরে ছাত্র-শিক্ষকরা যেন জয় বাংলা স্লোগান উচ্চারণ করেন, তার জন্য বিবাদীরা যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন। আদালতের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন ৩ মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিলে নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ওই রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। রুলে ‘জয় বাংলা’কে কেন জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরে ৫ ডিসেম্বর থেকে এ রুলের শুনানি শুরু হয়। এরপর হাইকোর্ট রায় দেন। সম্প্রতি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
১ মাস আগে
হারিয়ে যাওয়া হারিছ যেভাবে ফিরে এলেন
তিন বছর আগে সাভারের একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে ‘মাহমুদুর রহমান’ নামে এক ব্যক্তিকে দাফন করা হয় যার জীবন ও পরিচয় ছিল রহস্যে ঘেরা। তবে আদালতের নির্দেশে সেই ব্যক্তির লাশ তুলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আজ সেই রহস্য উন্মোচিত হয়েছে।
মাহমুদুর রহমান নামে দাফন করা হলেও তিনিই যে বহু বছরের রহস্যে ঘেরা বিএনপি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী, তা এখন নিশ্চিত।
কবর থেকে তুলে এনে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শুধু একজন মানুষের পরিচয়ই শনাক্ত করা হয়নি, বরং বছরের পর বছর ধরে চলা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে এমন একটি গল্প বের করে আনা হয়েছে, দীর্ঘদিন যা মাটির নিচে সমাহিত ছিল।
লাশ উত্তোলন ও ডিএনএ পরীক্ষা
হাইকোর্টের নির্দেশে গত ১৬ অক্টোবর কবর থেকে ‘মাহমুদুর রহমান’ নামের ওই ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরপর লাশের ডিএনএ নমুনা হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরীর ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। পরীক্ষায় দুজনের ডিএনএ মিলে গেলে নিশ্চিত হয়ে যায়, মাহমুদুর রহমান নয়, লাশটি হারিছ চৌধুরীরই ছিল।
এরপর বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ হারিছ চৌধুরীকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যথাযথ সম্মান দিয়ে তাকে তার পরিবারের ইচ্ছা অনুযায়ী দাফন করার অনুমতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ডিএনএ মিলেছে, হারিছ চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ
সামিরা তানজিন চৌধুরীর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী বলেন, আদালতের এই রায় তার পরিবারের জন্য বহুল প্রতীক্ষিত ন্যায়বিচার দিয়েছে।
স্বস্তি প্রকাশ করে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন বলেন, সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ একটি নাটক রচনা করে বাবার মৃত্যুকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। মিডিয়া একটির পর একটি রিপোর্ট করলেও হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। এটি নিয়ে যেন কখনও প্রশ্ন না ওঠে, সেটি নিশ্চিত করার জন্যই এ রিট করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থাকবে- সন্তান হিসেবে এটি খুব মর্মান্তিক, কষ্টদায়ক।’ এখনও মানুষ জিজ্ঞেস করে- সত্যিই কি তিনি মারা গেছেন? এ নিয়ে আমাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। তাই বিষয়টি বন্ধের জন্য আমরা আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি এবং আজ ন্যায়বিচার হয়েছে।’
রহস্যে ঘেরা এক জীবন
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব ছিলেন হারিছ চৌধুরী। তবে বিএনপি ক্ষমতা ছাড়ার পর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। আর তখন থেকেই নিখোঁজ হন এই রাজনীতিক।
সে বছর দেশে জরুরি অবস্থা জারির সপ্তাহখানেক পর স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে বেড়াতে যান হারিছ চৌধুরী। ওই রাতেই যৌথবাহিনী তার বাড়িতে অভিযান চালায়, তবে তাকে পায়নি।
এরপর কয়েক দিন সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান বিএনপি সরকারের দাপুটে এই নীতিনির্ধারক।
ভারতে গিয়ে তিনি ওঠেন নানার বাড়ি ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে। এরপর পাকিস্তান হয়ে ইরানে তার ভাই আবদুল মুকিত চৌধুরীর কাছে পৌঁছান- এমন খবরও চাউর হয়। ইরান থেকে তিনি যুক্তরাজ্যে পরিবারের কাছে যান। সেখান থেকে এই বিএনপি নেতা নিয়মিত ভারতে যাতায়াত ও ব্যবসা-বাণিজ্য দেখভাল করতেন বলে বিভিন্ন সময় নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।
স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে নিয়ে হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তার ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার, আর মেয়ে ব্যারিস্টার।
আগে থেকেই হারিছ চৌধুরী ব্ল্যাড ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একবার রক্ত পরিবর্তন করে আসেন। দেশ ছাড়ার পর তিনি যুক্তরাজ্যে আরেকবার রক্ত পরিবর্তন করেন বলে জানা যায়।
২০১৫ সালে তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন বলে গুজব ছড়ালেও সে সময় এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এমনকি তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীরাও তার অবস্থান সম্পর্কে অবগত ছিলেন না।
এরপর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার সাত বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
‘মাহমুদুর রহমান’ ছদ্মনামে দেশে বসবাস করার একপর্যায়ে ২০২১ সালে তিনি করোনায় আক্রন্ত হন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আক্রান্ত হওয়ার আগে হারিছ চৌধুরী করোনার দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন, এরপরও তিনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার শরীরের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং পুরো ফুসফুস সংক্রমিত হয়ে পড়ে। ফলে করোনা থেকে সেরে ওঠার পরও তিনি ফুসফুস জটিলতায় ভূগছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন: ডিএনএ পরীক্ষার জন্য বিএনপি নেতা হারিছের লাশ তোলা হয়েছে
মৃত্যুর পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাপে তার পরিচয় গোপন রেখেই সাভারের জালালাবাদ এলাকার একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। সে সময় তার প্রকৃত পরিচয় অনুযায়ী মৃত্যুসনদও দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি (হারিছ চৌধুরী) ধানমণ্ডির পান্থপথের একটি বাড়িতে বসবাস করেন। প্রশাসনের নাকের ডগার ওপর দিনের পর দিন থেকে গেলেও সরকার যে তাকে শনাক্ত করতে পারেনি, এটি ফ্যাসিস্ট সরকারের ব্যর্থতা ছিল। সে কারণেই তার মৃত্যুর পর তারা চায়নি যে হারিছ চৌধুরীর পরিচয় প্রকাশ তাদের ব্যর্থতা সবার সামনে ফুটে উঠুক। সে কারণেই তার পরিচয় গোপন রেখে দাফন করতে বাধ্য করা হয়।
তবে দীর্ঘকাল পর আদালতের নির্দেশে আর প্রযুক্তির সহায়তায় উন্মোচিত হয়েছে হারিছ রহস্য। সেইসঙ্গে তিনি পেয়েছেন পরিচয়, স্বীকৃতি। আর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেয়েছে তার পরিবার।
ব্যারিস্টার সামিরা বলেন, সত্য সূর্যের মতো। একদিন এ সত্য বের হওয়ারই ছিল। তৎকালীন সরকার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার বাবার প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করেছিল। আজকে আদালতের আদেশের মধ্য দিয়ে আমার বাবার মৃত্যুকে ঘিরে যে হয়রানি ও বিভ্রান্তি ছিল তার অবসান হলো। তাকে সম্মানের সঙ্গে পুনরায় দাফনের সুযোগ করে দেওয়ায় আমরা আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ।
১ মাস আগে
১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত
২০০৮ সালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টকে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক জানান, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে হত্যার দিন ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস এবং সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করে।
তবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস ও ছুটি বাতিল করে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। এরপর বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। পরে আবার জাতীয় শোক দিবস ও সরকারি ছুটির ঘোষণা করা হয়।
হাইকোর্টে একটি আপিল দায়ের করা হয়েছিল, তাতে ১৫ আগস্টে সরকারি ছুটির উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার আবেদন করা হয়।
১ মাস আগে
ইসকনের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ কী, জানতে চান হাইকোর্ট
‘ইসকন’ কী ধরনের সংগঠন, এই সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন আছে কি না, সংগঠনটির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, সেসব জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বুধবার (২৭ নভেম্বর) করা এক আবেদেনর শুনানিকালে বৃহস্পতিবারের (২৮ নভেম্বর) মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানকে এ তথ্য আদালতে জানাতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ইসকনের কার্যক্রম নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে এনে সংগঠনটির কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে আদালতের কাছে আবেদন করেন আইনজীবী মো. মনির উদ্দিন।
এ সময় আদালত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে ইসকনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানতে চান।
আরও পড়ুন: আইনজীবী হত্যা: ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বাকৃবিতে বিক্ষোভ মিছিল
এর আগে, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীদের হামলায় সাইফুল ইসলাম নামে চট্টগ্রামের এক আইনজীবী নিহত হন। এরপর মঙ্গলবার বিকাল ৫টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাইফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।
হামলার ঘটনায় আহত আরও ৭-৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই নির্মম ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন আজ হাইকোর্টে তুলে ধরা হয়।
ইসকন নিষিদ্ধ করা এবং যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে চট্টগ্রাম ও রংপুরে জরুরি অবস্থা জারি এবং সংগঠনের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গণমাধ্যমের রিপোর্ট তুলে ধরে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে এ বিষয়ে আদেশ প্রার্থনা কর হয়। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যার্টনি জেনারেলকে ডেকে পাঠান আদালত। পরে ইসকন ও সাম্প্রতিক ইস্যুতে সরকারের পদক্ষেপ জানাতে বলেন হাইকোর্ট।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আমরা বৃহস্পতিবার আদালতের কাছে বিষয়টি জানাব।’
এছাড়া ইসকনের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুর্ভাগ্যজনক বলে ‘হাইকোর্টকে জানিয়েছি’ বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ওই ঘটনাটি ফৌজদারি অপরাধ। এ কারণে আইনগত ব্যবস্থা নেবে সরকার। তবে ইসকন নিষিদ্ধ করা হবে কি না, তাদের নিবন্ধন আছে কিনা- এসব সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়।’
আরও পড়ুন: হিন্দু ধর্মান্ধদের হাতে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ইসকন নিষিদ্ধের দাবি
১ মাস আগে
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল
ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার (২৫ নভেম্বর) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
দুপুরে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে রবিবার (২৪ নভেম্বর) ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নুর মুহাম্মদ আজমী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে পিটিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আজ বা আগামীকাল আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে বিচারপতির কাছে আবেদনটি পেশ করতে পারি।
তিনি বলেন, স্থগিতাদেশের আবেদনে ব্যাটারিচালিত রিকশা বা অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং তাই হাইকোর্ট এই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে না বলে উল্লেখ থাকবে।
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে গত ২০ নভেম্বর হাইকোর্ট তিন দিনের মধ্যে ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে এসব যানবাহনের কার্যক্রম বন্ধে তাদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা ব্যাখ্যা করতে রুল জারি করে।
১ মাস আগে
আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠনের আদেশ হাইকোর্টের
ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির ক্ষেত্রে দরকষাকষির সকল নথিপত্র (ডকুমেন্টস) আগামী এক মাসের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চুক্তিটির সার্বিক দিক বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
আদানির আলোচিত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি অসম দাবি করে তা বাতিল অথবা পুনঃমূল্যায়ন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুমের করা রিটের শুনানি শেষে রুলসহ এই আদেশ দেন আদালত।
হাইকোর্ট রুলে জানতে চেয়েছেন, অসম, অন্যায্য ও দেশের স্বার্থ পরিপন্থী বলে দাবি করা এই চুক্তিটি কেন বাতিল করা হবে না।
আরও পড়ুন: আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের সব চুক্তি বাতিল চেয়ে রিট
সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ওই কমিটিকে বিদ্যুৎ চুক্তিটির সার্বিক দিক বিশ্লেষণ করে দেশের স্বার্থ পরিপন্থী বিষয়গুলো চিহ্নিত করে আগামী ২ মাসের মধ্যে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরেকটি কমিটি করতে বলেছেন হাইকোর্ট। ওই কমিটিকে চুক্তিটির সম্পাদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে অনুসন্ধান করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম। এসময় রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান, আফরোজা ফিরোজ ও কামরুন মাহমুদ।
এর আগে গত ৬ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম পিডিবির চেয়ারম্যান ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এ বিষয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। সে নোটিশে তিন দিনের মধ্যে চুক্তি সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়। তা না হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: আদানির সময়সীমা নিয়ে আমরা খুবই মর্মাহত: প্রেস সচিব
এক পর্যায়ে লিগ্যাল নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। সে রিটে ‘আদানি গ্রুপের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিকে অসম, অন্যায্য ও দেশের স্বার্থ পরিপন্থী উল্লেখ করে চুক্তির শর্ত সমূহ সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সংশোধন করার কথা বলা হয়। আদানি গ্রুপ তাতে রাজি না হলে চুক্তিটি বাতিল করার জন্য রিটে সরকারের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আদানি গোষ্ঠী ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় এক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই বাংলাদেশে সরবরাহ করে।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে সেই চুক্তি হয়। শুরু থেকেই এই বিদ্যুতের দাম নিয়ে বিতর্ক ওঠে।
আরও পড়ুন: গোপনে আদানি গ্রুপের বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন প্রতিষ্ঠানের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা
১ মাস আগে