চট্টগ্রাম মহানগরীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত কাজল চৌধুরী হত্যা মামলায় দুই আসামিকে বিভিন্ন ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম ৩য় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিন এই রায় দেন।
দণ্ডিতরা হলেন- মহানগরীর কোতোয়ালী থানার জয়নগর ১ নম্বর গলি আহমদ মিয়ার বাড়ির আবু ছিদ্দিকের ছেলে মো. হাছান। তিনি বায়েজিদ থানার আতুরার ডিপু মৃধা পাড়া জহির সওদাগরের বাড়ির স্থায়ী বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় ধর্ষণের দুই মামলায় দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
অপর আসামি আবু বক্কর খান রাজু ডবলমুরিং থানার হাজীপাড়া জাহাঙ্গীর কলোনীর মো. আসসাফ আলীর ছেলে। তিনি ঝালকাঠির নলছিটি থানার বারই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা।
আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর দুলাল চন্দ্র দেবনাথ রায় প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কাজল চৌধুরী হত্যা মামলায় ৩০২ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুই আসামি হাছান ও রাজুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া ৩৯৪ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় হাছান উপস্থিত ছিলেন।
তাকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি রাজু পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা মূলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নিহত কাজল চৌধুরী সীতাকুণ্ডে একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার ভাই উজ্জ্বল চৌধুরী চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার সিরাজদ্দৌল্লা রোডের মাছুয়া ঝর্ণা এলাকায় চৌধুরী ফার্মেসি পরিচালনা করতেন।
২০০৪ সালের ১৩ আগস্ট রাত ১২টার দিকে ফার্মেসি বন্ধ করে নগদ টাকা নিয়ে বাসায় ফেরার পথে একটি অটোরিকশায় করে এসে চার ছিনতাইকারী তাদের উপর হামলা করে। এসময় কাজলকে ছুরিকাঘাত করে হাতে থাকা ব্যাগসহ ২৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় কাজলের বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারী।
এদিকে কাজলকে বাঁচাতে তার ভাই উজ্জ্বলকে হাতে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাইকারী। এসময় দুই ভাইয়ের চিৎকারে এলাকাবাসী এসে দুই ছিনতাইকারীকে আটক করে। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাজল চৌধুরী মারা যান।
এই ঘটনায় কাজলের স্ত্রী রত্না চৌধুরী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে ২০০৬ সালের ৩০ মে মামলা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগ পত্র দেন মামলা তদন্ত কর্মকর্তা। একই বছরের ২০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে। বিচারিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন আদালত। এই মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।