হত্যা
১৬ মাসে খুলনায় ৪৮ খুন, নভেম্বরেই ৭
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গত ১৬ মাসে খুলনায় ৪৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে সন্ত্রাসীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ, মাদক ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে হত্যা করা হয়েছে ২০ জনকে। কেবল গত নভেম্বর মাসেই ৭ জনকে হত্যা করা হয়েছে।
একের পর এক হত্যাকাণ্ডে ভয় আর আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হচ্ছে খুলনা। দিনদুপুরে আদালত এলাকার মতো জনবহুল জায়গায় হওয়া সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড সাধারণ মানুষকে আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
পুলিশের তথ্য বলছে, গত ১৬ নভেম্বর দুপুরে নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনারের কালভার্ট এলাকায় বাড়ির মধ্যে নানি মহিতুন্নেসা (৫৫), তার নাতি মুস্তাকিম (৮) এবং নাতনি ফাতিহাকে (৬) হত্যা করা হয়। ওই রাতেই করিমনগরে নিজ বাড়ির ভেতর আলাউদ্দিন মৃধা নামের এক যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
২৭ নভেম্বর রাতে খালিশপুর ফেয়ার ক্লিনিকের সামনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় ইমান নামের এক যুবককে। সর্বশেষ রবিবার (৩০ নভেম্বর) আদালত চত্বরে আরও দুটি খুনের ঘটনা ঘটল।
একের পর খুনে উদ্বিগ্ন নাগরিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। ধারাবাহিক হত্যা ও সহিংস ঘটনার প্রতিবাদে খুলনা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এ ছাড়া আইনশৃখলা পরিস্থিতি অবনতির প্রতিবাদে গত শনিবার নগরীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে আইন অধিকার বাস্তবায়ন ফোরাম। তার এক দিন পরেই আরও দুটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে চরমপন্থীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল খুলনা। নতুন শতাব্দীর শুরুতেও তা বহাল ছিল। বোমা মেরে অথবা গুলি করে মানুষ হত্যা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়। চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ হারায় সাংবাদিকসহ অসংখ্য মানুষ। পরবর্তীতে তৎকালীন চার দলীয় জোট সরকার দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশের সন্ত্রাস দমনে র্যাব গঠন করে। যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে শুরু হয় অপারেশন ক্লিনহার্ট, অপারেশন স্পাইডার ওয়েব। এসব অভিযানে অধিকাংশ চরমপন্থী নিহত হন, অনেকে গ্রেপ্তারও হন। ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে আসে খুলনাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে।
খুলনার আইনশৃখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আবারও বিশেষ অভিযান শুরুর দাবি জানিয়েছেন নাগরিক নেতারা।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ‘বেশিরভাগ হত্যার কারণ উদ্ঘাটন করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। এই (আদালত চত্বরে) হত্যার সঙ্গে জড়িতরাও দ্রুত গ্রেপ্তার হবেন।’
১ দিন আগে
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুকুর পাহারাদাকে চোখ উপড়ে হত্যা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুকুর পাহারাদারকে দুই চোখ উপড়ে দিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মুসলিমপুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তোজাম্মেল হক (৬৫) শাহবাজপুর ইউনিয়নের পারদিলালপুর এলাকার মৃত জোনাব আলীর সন্তান।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া জানান, অন্যান্য দিনের মতো শনিবার রাতেও তোজাম্মেল হক ওই এলাকায় একটি পুকুর পাহারায় ছিলেন। রাতের কোন এক সময়ে কে বা কারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তোজাম্মেলের দুই চোখ উপড়ে ফেলেছে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার শরীরে অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। হত্যার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।
রবিবার সকালে স্থানীয়রা লাশটি দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পুলিশ সকালে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠায় বলে জানান ওসি।
৪ দিন আগে
রাজশাহীতে এক পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার
রাজশাহীর পবা উপজেলায় ঋণের চাপে এবং অভাবের তাড়নায় দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছেন মিনারুল ইসলাম (৩০) নামের এক ব্যক্তি।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে পারিলা ইউনিয়নের বামনশেখর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ (শুক্রবার) সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন— মিনারুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী সাধিনা বেগম (২৮), ছেলে মাহিম (১৩) ও মেয়ে মিথিলা (দেড় বছর)। মাহিম খড়খড়ি উচ্চ বিদয়ালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, স্বামী গ্রেপ্তার
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মনিরুল ইসলাম কৃষি কাজ করতেন। তার ঋণ রয়েছে ছিল জানা গেছে। তারা মাটির ঘরে বসবাস করতেন।
পুলিশ জানায়, পরিবারের চারজন সদস্যই মারা গেছেন। এর মধ্যে এক ঘরে মা ও মেয়ে এবং অন্য ঘরে ছেলে ও বাবা মিনারুল ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছিলেন। এ সময় একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে।
চিরকুটে মিনারুল লিখেছেন, ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এই কারণে যে আমি যদি মরে যাই, তাহলে আমার ছেলেমেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে। কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। তাই আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম সেই ভালো।’
‘কারো কাছে কিছুই চাইতে হবে না। আমার জন্য কাউকে কারো কাছে ছোট হতে হবে না। আমার জন্য আমার বাবা অনেক লোকের কাছে ছোট হয়েছে। আর হতে হবে না। চিরদিনের জন্য চলে গেলাম। আমি চাই সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।’
১১১ দিন আগে
বগুড়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বশুর ও পুত্রবধূ খুন
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় এক বাড়ি থেকে এক বৃদ্ধ ও তার পুত্রবধূর গলায় ফাঁস দেওয়া লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা ওই দুজনকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বা কারা ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নিহতরা হলেন— দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়নের লক্ষ্মীমণ্ডপ গ্রামের বাসিন্দা মো. আফতাব হোসেন (৬৫) ও তর বড় ছেলের স্ত্রী রিভা (৩৫)।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। নিহত আফতাবের হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল। হত্যার আগে তাকে বাঁধা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনও জানা যায়নি।
১৪৮ দিন আগে
দুই যমজ শিশুকে হত্যার অভিযোগে শ্রীনগরে বাবা-মা আটক
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিবন্দি গ্রামে রাতে পানিতে ডুবিয়ে ৭ মাস বয়সী দুই যজম শিশুকন্যাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৭ জুলাই) রাত ৮টার দিকে বিবন্দীর একটি পুকুর থেকে লামিয়া ও সামিহা নামের ওই দুই শিশুকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার জন্য শিশুদুটির বাবা-মা একে অপরকে দায়ী করেন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের দুজনকেই আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা থানা পুলিশের।
স্থানীয়রা জানান, বিবন্দী গ্রামের দিনমজুর সোহাগ শেখের (২৮) সঙ্গে প্রায় দুই বছর আগে উপজেলার বীরতারা ইউনিয়নের মজিদপুর দয়হাটা গ্রামের শাহ আলমের মেয়ে শান্তার (২৪) বিয়ে হয়। ৫ মাস আগে শান্তা যমজ কন্যা সন্তান প্রসব করেন। সন্তান হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে প্রায়ই পারিবারিক কলহ হতো। এর জেরে শান্তা সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে গিয়ে থাকতেন। তবে সম্প্রতি তিনি স্বামীর বাড়িতে আসেন।
সবশেষ গতকাল (সোমবার) রাত ৮টার দিকে সোহাগের ঘর থেকে হট্টোগোলের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গিয়ে জানতে পারেন, বেশ কিছুক্ষণ আগে লামিয়া ও সামিহাকে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়ছে। এ সময় স্থানীয়রা পুকুরে নেমে শিশুদুটিকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে ছুটে যান সোহাগও। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: সিলেটের টিলাগড়ে ছাত্রদলের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আটক ২
এ ঘটনায় শান্তা বেগমের অভিযোগ, সোহাগ ঘর থেকে দুই মেয়েকে নিয়ে গিয়ে পাশের পুকুরে ফেলে দেন। আর সোহাগের অভিযোগ, তার স্ত্রীই পানিতে ফেলে দিয়ে মেয়েদুটিকে হত্যা করেছে।
শিশুদুটির চাচা সাকিব শেখ বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে হঠাৎ সোহাগের ঘর থেকে চিল্লাচিল্লির শব্দ শুনে এগিয়ে গেলে শান্তা জানায়, তার স্বামী বাচ্চাদের পুকুরে ফেলে দিয়েছে। সে সময় সোহাগকে আমি ঘরে দেখতে পাইনি। পরে আমি দৌড়ে পুকুরে গিয়ে দেখি উপুড় হয়ে তারা পানিতে পড়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে পানিতে নেমে তাদের উঠিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সিনথিয়া নূর বলেন, ‘দুই শিশুরই পেটভর্তি পানি ছিল। পানি থেকে তোলার আগেই হয়তো তাদের মত্যু হয়েছে।’
শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমূল হুদা খান জানান, স্থানীয়ভাবে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে মৃত্যুর সঠিক রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। এ বিষয়ে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে।
তিনি আরও জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই দম্পতিকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
১৫০ দিন আগে
খুলনায় ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা
খুলনার দক্ষিণপাড়া এলাকায় বাবলু দত্ত (৫০) নামের এক ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ৯টার দিকে নগরীর হরিণটানা থানাধীন রাজবন্ধ এলাকার দক্ষিণ পাড়ায় ঘটনাটি ঘটে।
নিহত বাবুল দত্ত দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা অমূল্য দত্তের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে বাইরের কাজ শেষ করে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে ফিরছিলেন বাবলু। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তার গতিরোধ করে ফাঁকা একটি প্লটের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গলা কেটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা চলে যায়। পরবর্তীতে ঘটনাটি জানতে পেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ
হরিণটান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কী কারণে বাবলুকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নিহত ব্যক্তি বালু ও জমির ব্যবসা করতেন। ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
১৬০ দিন আগে
শিশু ইনায়া হত্যাকাণ্ড: বাবাই মেয়ের গলা কেটেছে বলে দাবি পুলিশের
সিলেটে দেড় মাসের শিশু ইনায়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের দাবি, নিজের শিশুকন্যাকে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছেন তারই বাবা। পরে তিনিও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
বুধবার (২৫ জুন) বিকালে শাহপরান থানাধীন ইসলামপুর এলাকার কোরেশী ভিলা ১৮/এ বাসায় এ ঘটনা ঘটে বলে।
নিহত ইনায়া রহমান নামের শিশুটির বয়স মাত্র ৪৫ দিন। তার পিতার নাম আতিকুর রহমান (৪০)। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের টংঘর গ্রামের বাসিন্দা। আতিকুর পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় ঘরে উপস্থিত ছিলেন ইনায়ার মা ঝুমা বেগম। তার দেওয়া তথ্য ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পাওয়া অন্যান্য প্রমাণ বিশ্লেষণে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ইনায়ার বাবা নিজ হাতেই তার মেয়েকে হত্যা করেছেন।
আরও পড়ুন: দাফনের আগে জানা গেল ‘মৃত ব্যক্তি’ জীবিত
পুলিশ জানায়, আতিকুর ইনায়াকে বাথরুমে নিয়ে যান এবং ধারালো বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এবং বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, পরিবার নিয়ে ইসলামপুর এলাকার আনসার মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন আতিকুর। প্রতিদিনের মতো বুধবার দুপুরেও খাবার খাওয়ার পর পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। পরবর্তীতে হঠাৎ করে আসরের আজানের দিকে চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে দেখতে পান, আতিকুরের পাশে তার দেড় মাসের মেয়ে ইনায়ার গলাকাটা এবং তারও গলার খানিকটা কাটা রয়েছে।
নিহত শিশুটির মা ঝুমা বেগম জানান, দুপুরের খাওয়া শেষে ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার স্বামী শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর তার নিজের গলাও কাটছেন। তিনি চিৎকার করে উঠলে আশপাশের মানুষেরা গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে।
ঝুমার বোন নাজমা বেগম ও ভাই টিপু মিয়া বলেন, তাদের বোন-ভগ্নিপতি দীর্ঘদিন ধরে ওই বাসায় ভাড়া রয়েছেন। ঘটনার দিন তাদের বোন ফোনে চিৎকার করে বলেন, তার মেয়েকে জবাই করে স্বামীও নিজের গলা কাটছে। এরপর ঝুমা স্বামীকে থামিয়ে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করেন বলে জানান তারা।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগের প্রধান ডা. নুরুল হুদা নাঈম বলেন, ‘আতিকুরের গলার আঘাত বেশ বড়। তার শ্বাসনালি অনেকটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে তিনি এখন পর্যবেক্ষণে আছেন।’
বৃহস্পতিবার পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আতিকুর রহমান দাবি করেছেন, তিনি কিছুক্ষণের জন্য নিজের মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিলেন। তার ভাষ্যে, ‘মাথাব্যথার কারণে হঠাৎ মাথায় কী যেন হয়ে গিয়েছিল, বুঝতেই পারিনি।’
উপ-পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত বটি, দা উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
১৬০ দিন আগে
খুলনায় ২ যুবককে গুলি করে হত্যা
খুলনা রুপসা উপজেলায় দুইজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রাজাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— সাব্বির ও সাদ্দাম নামের দুই যুবক। এ ঘটনায় সাব্বির ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আর গুলিবিদ্ধ সাদ্দাম হোসেনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান।
এ ছাড়া মিরাজ নামের অপর আহত যুবকের কোমরের পেছনে গুলি লেগেছে। তিনি খুলনা নগরীর একটি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে দশটার দিকে রুপসা রাজাপুর এলাকার সোহাগের বাড়িতে যান সাব্বির, মিরাজ ওরফে কাউয়া মিরাজ ও সাদ্দাম। পরবর্তীতে হঠাৎ গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থলেই সাব্বিরের মৃত্যু হলে সাদ্দামকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন তার স্বজনরা। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গুলিটি মাথার পেছনের অংশে লাগায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। এরপর অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান সাদ্দাম।
এদিকে মিরাজের কোমরের পেছনে, নিচের অংশে গুলি লেগেছিল। পরে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি পালিয়ে যান বলে জানিয়েছে সূত্র।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা, অস্ত্র-মোটরসাইকেল ও কয়েক রাউন্ড গুলি জব্দ
বিশেষ সূত্রের খবর, খুলনার চানমারি ও লবণচরা এলাকার সন্ত্রাসী আশিক গ্রুপের অন্যতম প্রধান সদস্য সাজ্জাদ হোসেনসহ ১০-১২ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এই কিলিং মিশনে অংশ নেয়। মাদক-সংক্রান্ত বিষয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাজ্জাদ গ্রুপের সহায়তা নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
এ বিষয়ে রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মিরাজ ও সাব্বির দুজনেই সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর প্রধান সহযোগী। স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী সোহাগের বাড়িতে মাদক ব্যবসা-সংক্রান্ত বিষয় অভ্যন্তরীণ ঝামেলা হওয়ায় সাব্বির, মিরাজ ও সাদ্দামকে গুলি করা হয়।’
তবে এই ঘটনায় আশিক ও সাজ্জাদ গ্রুপ জড়িত রয়েছে কি না, তদন্ত করলে তা বেরিয়ে আসবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
১৬১ দিন আগে
মাগুরায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক
মাগুরা সদর উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে মনিরা আক্তার মীম (১৮) নামে এক নারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী শামিম শেখের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৫ জুন) বিকালে সদর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এক লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
ঘটনার পর মাগুরা সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মাগুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আয়ুব আলী জানান, প্রায় চার বছর আগে সদর উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের অটোরিকশা চালক শামিম শেখের সঙ্গে আলিধানী গ্রামের আরজু শেখের মেয়ে মনিরা আক্তার মীমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শামিম মীমের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। বুধবার বিকালে আবারও যৌতুকের জন্য মারধর করলে মীম গুরুতর আহত হন। পরে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরপরই শামিম শেখ পালিয়ে যায়।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
স্বামী শামিমকে ধরতে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পারিবারিক কলহের জেরে ঈদের দিন স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে
১৬১ দিন আগে
হত্যা করে যুবকের লাশ তারই ঘরের চালে ফেলে গেল দুর্বৃত্তরা
মাগুরা শহরের তাঁতীপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আল আমিন নামে এক কলেজছাত্রকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তাকে এক বন্ধু ডেকে নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকাল ৫টার দিকে নিজ বাড়ির টিনের চাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আল আমিন (১৮) মাগুরা পলিটেকনিক কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি তাঁতীপাড়ার বাসিন্দা হাবিবুর রহমানের ছেলে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার (১ জুন) রাত ১০ টার দিকে আল আমিনকে বাসা বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যান তার এক বন্ধু। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকাল ৫টার দিকে প্রতিবেশিরা তাদের টিনের চালের ওপর একটি লাশ দেখতে পেয়ে তার বাবাকে জানান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে তার লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: কুলাউড়া দত্তগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মাগুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আয়ুব আলী।
তিনি জানান, নিহত আল আমিনের পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখা গেছে। পূর্বশত্রুতার কারণে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ টিনের চালে রেখে গেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মাগুরা মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মাগুরা থানায় মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার রহস্য বের করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
১৮৩ দিন আগে