করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সারাদেশের মতো খুলনাও আশঙ্কাজনক হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। সংক্রমণের এক বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও হাসপাতালটিতে এখনও অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। ফলে করোনা রোগীদের অক্সিজেন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এ দিকে, নির্ধারিত অক্সিজেন প্লান্টটি খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে অদূরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসকরা। আর দুর্ভোগে পড়েছে রোগীরা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর গড়িমসি ও অবহেলার কারণে স্থাপন হচ্ছে না প্লান্টটি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক নেতারা।
আরও পড়ুন: করোনা: চট্টগ্রামে ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু ৪, শনাক্ত ২৩২
হাসপাতালে বর্তমানে লিকুইড (তরল) অক্সিজেন প্লান্ট থেকে ৩৬ জনকে সেবা দেয়ার কথা থাকলেও সক্ষমতা নিয়ে আছে প্রশ্ন। অথচ এই সক্ষমতা দ্বিগুণ করতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয়া হয় গত নয় মাস পূর্বে। আইসিইউতে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ১০টি হলেও মাত্র চারটি সচল রয়েছে। বাকি ৬ টি ভেন্টিলেটর ও ১৪ টি হাই ফ্লু নজেল অচল রয়েছে। কবে নাগাদ সচল হবে জানা নেই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের। অপর্যাপ্ত রয়েছে ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে আরও ২০ জন করোনায় আক্রান্ত
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত মার্চ মাসে পূর্বের তুলনায় সংক্রমণের হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ। গত ২৪ মার্চ থেকে শনিবার পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৭ জন। এছাড়া আইসিইউতে শয্যা সংখ্যা রয়েছে ১০টি, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। প্রতিদিন আনুপাতিক হারে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে না শয্যা সংখ্যা। এ নিয়ে বিপাকে চিকিৎসকরা। ফলে করোনা রোগীর চিকিৎসায় ভোগান্তি বাড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, ভর্তি রোগীদের অধিকাংশেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এত রোগীকে একসাথে সিলিন্ডারে অক্সিজেন দেয়া সম্ভব হয় না। লিকুইড (তরল) অক্সিজেন প্লান্ট না থাকায় নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে পড়ছেন করোনায় আক্রান্ত রোগীরা।
করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা কমিটির খুলনার সমন্বয়কারী ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান, করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। যা ধীরে ধীরে আরও প্রকট হচ্ছে। অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন না হওয়ায় দুঃশ্চিন্তায় সময় পার করছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: মহামারি করোনায় ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় আক্রান্ত ৩৮, মৃত্যু ২
তিনি জানান, শুধুমাত্র কয়েকটি দপ্তরের সমন্বয়হীনতা ও অবহেলার কারণে এই প্লান্টটি স্থাপন হয়নি এবং নির্ধারিত প্লান্টটি চরম অবহেলায় রয়েছে। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বিষয়টি জানালে তিনি খুব শিগগিরই প্লান্ট স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন।