%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B7-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার আশায় নিরাশা এনে দিয়েছে লকডাউন!
গত মার্চের মাঝামাঝি থেকেই দেশে করোনা পরিস্থিতি বৃদ্ধি পেতে থাকায় সরকার সারাদেশে গত ৫ এপ্রিল থেকে সীমিত পরিসরে এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে। কিন্তু পরবর্তীতে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিলে এবং ২২ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে। যদিও এখনও দেশে শিথিলভাবে লকডাউন চলছে।
কিন্তু এই লকডাউনের ফলে, বিদেশে উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশী হাজার হাজার শিক্ষার্থী, যারা ইতিমধ্যেই ভর্তি এবং স্কলারশিপের সুযোগ পেয়েছিল, তারা শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের এই সমস্যায় বেশি পড়তে হচ্ছে।
৫ এপ্রিল থেকে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস পূর্বের সকল ভিসা ইন্টারভিউ বাতিল করে এবং নতুন ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেয়া বন্ধ করে দেয়। করোনা লকডাউন এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা যতদিন চলবে, ততদিন এমন অচলাবস্থাই চলবে বলে জানিয়েছে দূতাবাস। এতে অনেক শিক্ষার্থীই তাদের ফান্ডিং এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সকল আশঙ্কা করছে।
দেশে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি এবং ভারতে করোনার অস্বাভাবিকতার কারণে দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা দিন-দিন বেড়েই চলেছে।
বিশ্বে উচ্চশিক্ষায় সেরা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং এই দেশের শীর্ষ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ, ফেলোশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে। দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করা শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যেই নিজেদের আমেরিকার পড়ার জন্য প্রমাণ করেছে এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় মনোনিবেশ করতে আগ্রহী। কিন্তু ২০২০ সালের মতোই একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে ভিসা প্রত্যাশীদের।
পরিসংখ্যান বলছে, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ৩ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী সম্মানজনক স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকাতে গবেষণার মাধ্যমে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য যায়। সারাবিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েই বিদেশে পড়বার সুযোগ করে নেয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। এতে করে দেশেরও সুনাম বৃদ্ধি পায়।
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা সাধারণত তিনটি সেশনে ভর্তি হতে পারে, যেমন স্প্রিং (জানুয়ারি), সামার (মে) এবং ফল (জুলাই-আগস্ট)। সাধারণত অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ফল সেমিস্টারে ভর্তি হতে পছন্দ করেন। কিন্তু ২০২০ সালের ফল সেমিস্টারে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা করোনার প্রকোপের কারণে এখনও সেশন শুরু করতে পারেনি।
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, কোনও শিক্ষার্থী যদি ভর্তি হবার পর সঠিক সময়ে ক্লাস শুরু হবার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে তার ভর্তি এবং স্কলারশিপ বাতিল হয়। কিন্তু কিছু করোনার কারণে কিছু শিক্ষার্থী তাদের ভর্তির মেয়াদ ২০২১ সাল পর্যন্ত বাড়াতে পেরেছে। তাই ২০২১ সালের সামার এবং ফল সেশনে ভিসার চাহিদা অন্যসময়ের তুলনায় বেশি।
আরও পড়ুন: জাপানকে উচ্চশিক্ষার জেডিএস বৃত্তির পরিধি ও সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ
কিন্তু ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউনের কারণে আমেরিকান দূতাবাস সকল প্রকার ভিসা ইন্টার্ভিউ বাতিল করে দেয়। তবে সামার সেশনের জন্য আগামী ১১ মে জরুরি ভিসাস ইন্টার্ভিউ এর ব্যবস্থা করেছে দূতাবাস। যদিও ফল সেমিস্টারের ভর্তিচ্ছুদেরও এখন ভিসা পাওয়া প্রয়োজন।
লকডাউনের মধ্যেই সরকার জরুরি সেবা, শিল্প-কারখানা, বিপণীবিতন এবং আন্তঃশহর পরিবহন সেবা চালু করলেও, মার্কিন দূতাবাস নতুন করে কোনও ভিসা আবেদন গ্রহণ করছে না। দূতাবাস বলছে, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় পুনরায় কার্যক্রম শুরু হবে সরকারের কাছ থেকে নির্দেশনা পাবার পর। যদিও প্রতিবেশী দেশ চিন এবং শ্রীলঙ্কা শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে, কিন্তু মার্কিন দূতাবাস এব্যাপারে তেমন কোনও বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
যেহেতু ভর্তি পেছানোর আর তেমন সুযোগ নেই এবং পরপর দুই বছর একই সমস্যার সম্মখীন হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের, তাই স্কলারশিপের সুযোগ অনেকটা হাতছড়া হবার অবস্থাই হয়েছে। অনেক আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় এখন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ অফার করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে না।
কেস স্টাডি:
চুয়েট থেকে পাস করা যুক্তরাষ্ট্রে পিএইডি ডিগ্রি করার সুযোগ পাওয়া জ্যোতিরময়ী সাহা বলেন, “আমি ফান্ডিং এর মাধ্যমে ফল ২০২০ সেশনে ভর্তির সযোগ পাই। কিন্তু দুইবার আমাকে ভর্তি প্রক্রিয়া পেছাতে হয়েছে। ফান্ড ছাড়া আমার পক্ষে এই ডিগ্রি নেয়া সম্ভব না। যদি এবারও না হয়, তবে আমার পক্ষে আর ভর্তি হওয়া সম্ভব হবে না।”
আরও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ফাতিমা মুক্তি জানান, তিনি সাউথ ক্যারোলিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল ফেলোশিপসহ পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পেয়েছেন। তার ভর্তি হবার কথা ছিল ফল ২০২০ সেশনে। কিন্তু পুরো গবেষক দলের মধ্যে একমাত্র তিনিই এখনও কাজে যোগ দিতে পারেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেতে একজন শিক্ষার্থীর বিভিন্ন কোর্স করাসহ আবেদনের জন্য প্রায় ৩ লাখ টাকার মতো খরচ হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমান চলমান এই পরিস্থিতির কারণে অনেক শিক্ষার্থী দ্বিতীয়বার এই খরচ বহনের অবস্থাতেও নেই।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনা প্রকোপ রোধে লকডাউন অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু সরকার যদি শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রক্রিয়া লকডাউনের আওতার বাইরে না রাখে, তাহলে হাজার হাজার মেধাবী শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।
এই অচলাবস্থা দূর করার জন্য শিক্ষার্থীদের একটি অংশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে। তাদেরকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়া হলেও, এখনও অবস্থার তেমন কোনও উন্নতি দেয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, সরকার ও মার্কিন দূতাবাসের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
লকডাউনে পেশা পরিবর্তন করছে ফেনীর বাস শ্রমিকরা
ফেনী থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সোনাপুর, বারইয়ারহাট, ফেনী-লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ফেনী –পরশুরাম, সোনাগাজী রুটে বাস ও মিনিবাস চলাচল করে এসব পরিবহনে ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। গত ৫ এপ্রিল থেকে চলমান লকডাউনের গণপরিবহন বন্ধ থাকার পর থেকে অনেকে জীবিকার তাগিদে পেশা পরিবর্তন করেছে। অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
সুনামগঞ্জের অভিশাপ অবৈধ বালু উত্তোলন!
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী জাদুকাটা নদীর রূপ বৈচিত্রের জন্য এর ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। দেশজুড়ে ভ্রমণপিপাসুরা সারাবছর ই ছুটে আসে এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
নদীটি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসি পাহাড়ে উৎপত্তি লাভ করে বয়ে এসে বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলা দিয়ে বয়ে গেছে। এই তাহিরপুর উপজেলা বর্তমানে বাংলাদেশে নির্মাণ শিল্পের প্রয়োজনীয় বালু ও পাথরের অন্যতম যোগানস্থল।
কিন্তু অপরিকল্পিত এবং অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলনের ফলে নদীটির অস্তিত্ব ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ধলেশ্বরী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন: বসত-বাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন
স্থানীয়দের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই ক্ষমতাশালীরা অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনের সাহস পাচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, প্রশাসন বা পুলিশ পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনও হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায় না। তাই স্থানীয়রাও এই অবৈধ কাজে বাঁধা দিতে তেমন একটা সাহস পায় না।
স্থানীয় এক ব্যক্তি ইউএনবিকে বলেন, বছর-বছর ধরে চলে আসা এই অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলন একদিকে যেমন সরকারকে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, অন্যদিকে পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে।
গত ২৪ মার্চ স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বিজিবি এবং র্যাবের সমন্বিত টাস্ক ফোর্স বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বালু এবং পাথর জব্দ করে।
স্থানীয়রা জানায়, জব্দকৃত বালু ও পাথরের কিছু অংশ নিলামের মাধ্যমে দুই পক্ষের নিকট ৩৬ লাখ টাকায় বিক্রি করে প্রশাসন। বাকি জব্দকৃত বালু ও পাথর বর্তমানে প্রশাসনে জিম্মায় আছে। স্থানীয়রা বলছেন, খুব দ্রুত অবশিষ্ট মালামাল নিলামে বিক্রি করা না হলে সেগুলো চুরি হয়ে যেতে পারে।
তাহিরপুরের স্থানীয় এক বাসিন্দা তথ্য গোপন রাখার শর্তে ইউএনবিকে বলেন, “বালু ও পাথর উত্তোলনকারী চক্রের প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করা উচিৎ।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, “জব্দকৃত মালামালে একাংশ আমরা ইতিমধ্যেই নিলামেই বিক্রি করেছি এবং বাকিগুলোরও ব্যবস্থা নেয়া হবে।” এসয় হুশিয়ারি জানিয়ে তিনি বলেন, “খুব শিগগিরই পলাতক সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
আরও পড়ুন: অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে কৃষি জমি
অবিক্রিত বালু ও পাথর সম্পর্কে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মো: জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “করোনার লকডাউনের কারণে অবশিষ্ট মালামাল বিক্রিতে আমরা বাঁধাগ্রস্ত হয়েছি। লকডাউন শেষে আমরা নিয়ম অনুযায়ী সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
মৌসুম শেষ হলেও প্রণোদনা পায়নি ফরিদপুরে পাট চাষিরা
দেশের অন্যতম প্রধান অর্থকারী ফসল সোনালী আশ খ্যাত পাট চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে সরকার চাষিদের প্রণোদনা প্রদান করেছে। কিন্তু ফরিদপুর অঞ্চলের চাষিরা সরকারি দেয়া প্রণোদনা এখনো ঠিকঠাক মতো পায়নি।
তাদের অভিযোগ, প্রতিটি ইউনিয়নে গুটি কয়েক চাষিদের মাঝেই এই প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। আর সিংহভাগই বঞ্চিত রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে পাট উৎপাদনের শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে ফরিদপুর জেলা। প্রতি বছরই দেশের সেরা মানের পাট উৎপাদন হয় এ জেলায়। চলতি মৌসুমে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৮৬ হাজার হেক্টর জমিতে।
আরও পড়ুন: তীব্র তাপদাহে যশোরে শুকিয়ে যাচ্ছে পাটগাছ: বিপাকে কৃষক
কৃষি বিভাগ বলছে, এ পর্যন্ত জেলার লক্ষ্যমাত্রার ৯০ শতাংশ পাট চাষ সম্পন্ন হয়েছে। আর অল্প কিছুদিনের মধ্যে পাট চাষের মৌসুম শেষ হবে।
জেলার পাট অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায়‘ জেলা প্রতিটি উপজেলায় ২৫শ চাষিদের মধ্যে প্রণোদনা হিসাবে (পাট বীজ ও সার) বিতরণ করা হচ্ছে।
পাট চাষে চাষিদের আগ্রহী করতে সরকার পাট অধিদপ্তর জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকতাদের মাধ্যমে চাষিদের বিঘা প্রতি ১ কেজি উন্নত মানের বীজ ও তিন প্রকারের (টিএসপি,ইউরিয়া ও এমওপি) ১২ কেজি সার বিনা মূল্যে প্রণোদনা হিসেবে দিচ্ছে। কিন্তু পাট চাষের মৌসুম শেষ হওয়ার প্রাক্কালেও জেলা ৯ উপজেলার মধ্যে চারটিতে এখনো ওই প্রণোদনা দেয়া শেষ হয়নি।
করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ: ক্যাপসিকাম চাষে রাহুলের সফলতা
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মিষ্টি মরিচ ক্যাপসিকাম চাষ করে সফল হয়েছেন দিনাজপুর হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর শিক্ষার্থী রাহুল রায়।
ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি ও আবাহাওয়া দুটোই ক্যাপসিকাম চাষের অনূকুলে থাকায় ফলনও হয়েছে ব্যাপক। বিদেশি এ ফসলের আবাদ স্বচক্ষে দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন এসে ভিড় করছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পশ্চিম ফকদনপুর গ্রামে রাহুলের ক্যাপসিকাম বাগানে।
আরও পড়ুন: চাকরি হারিয়ে জীবিকা নির্বাহে ক্যাপসিকাম চাষে স্বাবলম্বি নাজিম উদ্দিন
জানা গেছে, শিক্ষার্থী রাহুল রায় তার গ্রামের দেড় বিঘা জমিতে গ্রিন হাউস বানিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম (মিষ্টি মরিচ) আবাদ করেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় সাত লাক টাকা। ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি ও আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় কাঙ্খিত ফলনও হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্যাপসিকাম বিক্রিও শুরু করেছেন তিনি। প্রতি কেজি ক্যাপসিকাম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দরে। বাজারে এর দাম অনেক বেশি, ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি।
রাহুল রায় বলেন, প্রথম দিকে একটু ভয় পাচ্ছিলাম এই ভেবে যে লোকসান হবে না তো! পরে ফলন আসার পর সে ভয় কেটে গেছে। আশা করি তিন থেকে চার মেট্রিক টন ক্যাপসিকাম পাব।
অর্ধশত বছর ধরে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জমি প্রভাবশালীদের দখলে
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে একুশে পদকপ্রাপ্ত ও বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম বসবাস করতেন। অথচ এই বিশিষ্ট জনের জমি প্রায় ৫০ বছর ধরে দখল করে রেখেছে এলাকার প্রভাবশালী দখলদার জোতদাররা।
২০ নয়, এক জায়গায় সব সুবিধা পাবে এলপিজি ব্যবসায়ীরা
বাংলাদেশ লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) অপারেটররা লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ওয়ান স্টপ সার্ভিসের অন্তুর্ভুক্ত হতে চলেছেন। এর ফলে এলপিজি অপারেটরদের এখন থেকে আর লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য ২০টি প্রতিষ্ঠানে দৌঁড়াতে হবে না। এর ফলে তাদের পরিচলানা খরচও কমে যাবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সূত্র মতে, এলপিজি সেক্টরের প্রসার ও নৈতিকতা বজায় রাখতে খুব দ্রুতই অপারেটরদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস বা এক জায়গায় সব সেবার ব্যবস্থা করা হবে।
জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান বলেন ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মতো ওয়ান স্টপ সার্ভিস ব্যবস্থার মাধ্যমে সকল সুবিধা এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।’
আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে এলপিজি অপারেটরদের বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সহ বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক এবং লাইসেন্সিং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়।
এ ব্যাপারে বসুন্ধরা এলপিজির বিপণন প্রধান জাকারিয়া জালাল বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এলপিজি অপারেটরদের জেলা হতে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত প্রায় ২১টি প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হতে হয়।
এই শিল্পের সাথে জড়িত এবং ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, জ্বালানিক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকার কারণে ব্যবসায়ী ও ভোক্ত পর্যায়ে দিন-দিন দাম বেড়েই চলেছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিবছর এসকল নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দেয়া ফি এর অতিরিক্ত খরচের সবশেষে ভোক্তার ওপরই চাঁপানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ এলপিজি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজম জে চৌধুরী এক সেমিনারে বলেন, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিবছর সরাকরি ও বেসরকারি ১৩টি সংস্থাকে লাইসেন্স নবায়ন ও বহাল রাখার জন্য ১ কোটি ৩৫ লাখ টাক ফি প্রদান করতে হয়।
আরও পড়ুন: প্রথমবার এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করল সরকার
সম্প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের এক শুনানিতে, ছয়টি বৃহৎ এলপিজি কোম্পানি একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাস্তবায়নের দাবি জানায়।
বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং কনভার্শন মালিক সমিতির সদস্য হাসিন পার্ভেজও অন্তত ২২টি প্রতিষ্ঠানে ফি জমা দিয়ে লাইসেন্স গ্রহণ এবং হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এই ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনা হল, এখানে লাইসেন্সিং ব্যবস্থার কোনও নির্দিষ্ট ধারাবাহিকতা নেই। এর দপ্তর থেকে অন্য দপ্তরে পাঠানো হয় লাইসেন্স পাওয়ার জন্য।’
একই অভিযোগের কথা উল্লেখ করে, বাংলাদেশ ভোক্তা সমিতির উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ‘আমরাও জ্বালানি খাতে একটি মাত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাই। নিয়ন্ত্রক সংস্থার আধিক্যের কারণে যেমন ব্যবসায়িকর খরচ বৃদ্ধি পায়, তেমনি ভোক্তাকে অধিক মূল্য পরিশোধ করতে হয়।’
বিইআরসি’র সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, জ্বালানি খাতে শুধু একটি এবং প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা উচিত। এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলো সাথে সমন্বয়ের ব্যবস্থা করবে।
১৫ বছর ধরে উৎপাদনে নেই খুলনা অক্সিজেন কোম্পানি
গত প্রায় ১৫ বছর ধরে উৎপাদনে নেই খুলনা অক্সিজেন কোম্পানিটির। তবে ঢাকা থেকে ভিন্ন কোম্পানি থেকে প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ৬০০ কিউবিক মিটার অক্সিজেন এনে খুলনার প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে সরবরাহ করছে এ প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া লিন্ডে ও স্পেকট্রা কোম্পানিও খুলনা জেলাতে অক্সিজেন সরবরাহ করছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কোভিড ডেডিকেট হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতাল, শহিদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ সকল সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহকারী স্পেকট্রা অক্সিজেন কোম্পানি লিমিটেড।
এসব কোম্পানিগুলোর দাবি, খুলনার হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত সরবরাহ সক্ষমতা রয়েছে তাদের। যদিও অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।
নগরীর রূপসা স্ট্যান্ড রোড (শিপইয়ার্ড এলাকা) খুলনা অক্সিজেন লিমিটেড ও লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড নামে দুটি বেসরকারি অক্সিজেন কোম্পানি রয়েছে। ২০০৬ সালের ১২ ডিসেম্বর খুলনা অক্সিজেন লিমিটেডের বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিটার স্থাপনকালে অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্লান্টের রোটার কমপ্রেসার বিস্ফোরিত হয়েছিল। এরপর থেকে বন্ধ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ব্যবস্থা উৎপাদনে নেই। বর্তমানে খুলনা অক্সিজেন লিমিটেড, লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড ও স্পেকট্রা অক্সিজেন কোম্পানি নামের তিনটি প্রতিষ্ঠান খুলনার বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করছে। খুলনায় নিজস্ব কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকায় ঢাকা, রূপগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে লিকুইড অক্সিজেন সংগ্রহ করে খুলনাতে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিভাগীয় শহর খুলনার সব কটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালসহ বহুতল বাণিজ্যিক ভবনে এক সময় অক্সিজেন সরবরাহ হতো খুলনা অক্সিজেন কোম্পানি থেকে কিন্তু উদ্যোক্তার অনাগ্রহ, অর্থ সঙ্কট ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় সেই ২০০৬ সালের ডিসেম্বর থেকে বেসরকারি এ কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে বাইরে থেকে বোতলজাত অক্সিজেন এনে সরবরাহ করছে কোম্পানিটি।
খুলনা অক্সিজেন প্লান্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, কোম্পানির অক্সিজেন উৎপাদন বন্ধ থাকায় এখন প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ৬০০ কিউবিক মিটার অক্সিজেন সংগ্রহ করে খুলনার কয়েকটি হাসপাতাল-ক্লিনিকে সরবরাহ করছি। কারখানাটি পুনরায় চালু করতে বিপুল অর্থের প্রয়োজন। আমেরিকা প্রবাসী মালিক তানভীর মাশরু করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে আসতে পারছেন না। তিনি দেশে ফিরলে কোম্পানিটি উৎপাদনে যাবে কি না, সেটার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
লিন্ডে বাংলাদেশের খুলনা ডিপোর একাধিক সূত্র মতে, কোম্পানিটি দুদিন পরপর রূপগঞ্জ থেকে ১৩০টি ছোট সিলিন্ডার ও ৫০টি বড় সিলিন্ডার নিয়ে আসছে। এতেই চাহিদার পর্যাপ্ত যোগান রয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি। আদ্বদীন মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, নার্গিস মেমোরিয়াল হাসপাতাল, ন্যাশনাল হাসপাতাল, গুড হেলথ, সুরক্ষা ক্লিনিক, সন্ধানী ক্লিনিকসহ ছোট-বড় অধিকাংশ হাসপাতাল ক্লিনিক লিন্ডে বাংলাদেশ থেকে অক্সিজেন নিয়ে থাকে।
লিন্ডে বাংলাদেশ খুলনার এরিয়া ম্যানেজার মো. মুশফিক আক্তার বলেন, এই মুহূর্তে চাহিদার তুলনায় আমাদের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। খুলনাবাসীর উদ্বিগ্ন হবার কোন কারণ নেই।
একাধিক হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খুলনা অক্সিজেন কোম্পানি ও লিন্ডে বাংলাদেশের খুলনা ডিপো থেকে ক্রয় করে আমাদের হাসপাতালের চাহিদা পূরণ করা হয়। কিন্তু মাঝে মধ্যে এমন সঙ্কট দেখা দেয় তখন সমস্যায় পড়তে হয়। খুলনায় হাসপাতাল ও ক্লিনিক বাড়লেও নতুন কোনো অক্সিজেন কোম্পানি গড়ে না ওঠায় ক্রেতারা প্রায়ই ভোগান্তির শিকার হন। খুলনায় অক্সিজেন উৎপাদন ফের চালু হলে এই শিল্পে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দ্রুত সময়ে ক্রেতাদের অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হতো।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে হঠাৎ করে জরুরি অক্সিজেন আমদানি বন্ধ
খুলনার সবগুলো সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহকারী স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেড।
স্পেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের এজিএম (খুলনা) ইঞ্জিনিয়ার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দেশের সবগুলো অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এ সংকট মোকাবিলা করবে ইনশাআল্লাহ। এখনো অবস্থা স্থিতিশীল। চাহিদার তুলনায় যোগান পর্যাপ্ত রয়েছে, উদ্বিগ্ন হবার কোন কারণ নেই।
চিকিৎসকদের মতে, সাধারণ রোগীর শরীরে অক্সিজেনের উপস্থিতি ৯০ শতাংশের নিচে নামতে শুরু করলেই অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে। পালস অক্সিমিটার নামে একটি সহজ ডিভাইসের মাধ্যমে অক্সিজেনের শতকরা উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়। অক্সিজেন যদি ৮০ শতাংশ বা এর আশপাশে থাকে তখন বাসায় রেখে অক্সিজেন দিয়েও সঙ্কট মোকাবিলা করা হয়। আর এর চেয়েও কমে গেলে তখন হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টের প্রয়োজন হবে।
এদিকে হঠাৎ করে ভারত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে বাংলাদেশে করোনার চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত জরুরি তরল অক্সিজেনের আমদানি। গত চার দিনে কোনো অক্সিজেনবাহী গাড়ি আসেনি। তবে গত ২১ এপ্রিলের আগে এক সপ্তাহে ৪৯৮ মেট্রিক টন ৮৪০ কেজি তরল অক্সিজেন ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। যার আমদানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টন ১৬৫ মার্কিন ডলার। ২৯টি ট্যাংকারে এই তরল অক্সিজেন বাংলাদেশে আসে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের শুধু বাণিজ্যিক সম্পর্ক না। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সূত্র ধরে এই ক্রান্তিকালে সীমিত পরিসরে হলেও দেশটি অক্সিজেন রপ্তানি সচল রাখবে।
জানা গেছে, দেশের চিকিৎসা খাতে অক্সিজেনের চাহিদার বড় একটি অংশ আমদানি হয় ভারত থেকে। প্রতি মাসে শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়েই প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন অক্সিজেন আমদানি হয়ে থাকে। করোনাকালীন সময়ে আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে সম্প্রতি এ অক্সিজেনের চাহিদা আরও বাড়ছে। কিন্তু এরই মধ্যে বাংলাদেশে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেছে ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি।
আমদানিকারকরা জানান, ভারতীয় রপ্তানিকারকরা বলছেন, অক্সিজেন রপ্তানি বন্ধে তাদের চাপ রয়েছে। তাই ভারতে ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা ভেবে বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি সাময়িক বন্ধ করেছে।
অক্সিজেন পরিবহনকারী বাংলাদেশি ট্রাক চালকেরা জানান, গত চার দিন ধরে বেনাপোল বন্দরে ট্রাক নিয়ে তারা দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ভারত থেকে কোনো অক্সিজেন বন্দরে প্রবেশ করেনি।
অক্সিজেন আমদানিকারকের প্রতিনিধি রাকিব হোসেন জানান, ভারতীয় রপ্তানিকারকেরা তাদের জানিয়েছেন সংকটের কারণে তারা বাংলাদেশে অক্সিজেন রপ্তানি করতে পারছেন না। এছাড়া রপ্তানি না করার বিষয়ে ভারত সরকারেরও কিছুটা চাপ রয়েছে।
বাংলাদেশ ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপ চলছে। এতে আক্রান্ত ও মৃত্যের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন অতি গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে অক্সিজেন স্বল্পতা থাকলেও বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সোহার্দ্য সম্প্রতি ও বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে তরল অক্সিজেন দেবে আশা রাখি।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বাংলাদেশে চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্রায় সবকিছুই আসে ভারত থেকে। হঠাৎ বন্ধে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। তবে আমরা আশা করছি বন্ধুত্বের সূত্র ধরে ভারত সরকার করোনার এ সময়ে অল্প করে হলেও বাংলাদেশে অক্সিজেন সরবরাহ সচল রাখবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, সর্বশেষ ২১ এপ্রিলের আগে ৪৯৮ মেট্রিক টন ৮৪০ কেজি তরল অক্সিজেন ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে আমদানি হয়। প্রতি মেট্রিক টন অক্সিজেনের আমদানি মূল্য ছিল ১৬৫ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি ১৪ হাজার ১৯০ টাকা।
করোনার প্রভাবে খুলনায় চিংড়ি শিল্পে বিপর্যয়
করোনার প্রভাবে খুলনায় চিংড়ি শিল্প দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। রপ্তানি বন্ধ থাকার কারণে ন্যায্যমূল্য থেকে চাষিরা বঞ্চিত হচ্ছে। সেই সাথে মৌসুমের শুরুতে ঘর পরিচর্যা শেষ করলেও চাহিদা অনুযায়ী পোনা ছাড়তে পারছেন না চাষিরা। ফলে গত বছরের মতো এবারও আর্থিক ক্ষতির মুখে তারা।
এছাড়া লকডাউনে চিংড়ি পোনা পরিবহন ব্যবস্থা অচল থাকায় পোনার সংকটও দেখা দিয়েছে। এ কারণেই গলদা-বাগদা পোনার দাম হুট করে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। অনেকেই বেশি দামে পোনা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
খুলনা জেলা মৎস্য অফিসের তথ্য অনুযায়ী, খুলনাসহ উপকূলীয় জেলাগুলোর প্রায় দুই লাখ ৭৬ হাজার হেক্টর জমিতে প্রতি বছর বাগদা ও গলদা চিংড়ির চাষ হয়। চাষের সাথে জড়িত রয়েছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। আর দেশের চিংড়ি ঘেরের ৮০ শতাংশই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তিন জেলা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায়। এ সব জায়গায় দেশে মোট ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদিত হয়। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে খুলনাঞ্চল হতে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি রপ্তানি হয়। ২০১৬-১৭ বছরে উৎপাদন কমায় রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ২৫ হাজার মেট্রিক টনে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে ২২ হাজার মেট্রিক টন।
আরও পড়ুন: ইউরোপে কমলেও, খুলনাঞ্চলের চিংড়ির রপ্তানি বেড়েছে জাপানে
বাগরহাট মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব মতে, বাগরহাটে ৭৯ হাজার ৭৩৬ জন চিংড়ি চাষি রয়েছেন। আর ৭১ হাজার ৮৮৬ হেক্টর জমিতে ৮১ হাজার ৩৫৮টি বাগদা ও গলদা চিংড়ির ঘের রয়েছে। এসব ঘেরে ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ১৭ হাজার ৪৮৭ মেট্রিক টন বাগদা ও ১৬ হাজার ৩৩৭ মেট্রিক টন গলদা চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে।
বাগরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম রাসেল জানান, করোনার প্রভাবে রপ্তানি বন্ধ থাকায় বর্তমানে মাছের দাম অনেকটা কমে গেছে। এর ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। রপ্তানি বন্ধ থাকায় গত এক বছর বাগরহাটের চিংড়ি শিল্প ক্ষতির পরিমাণ ১৪০ কোটি টাকা। আর সব মিলিয়ে এই ক্ষতির পরিমাণ হবো প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এরই মধ্য বাজারে পোনা সংকটও দেখা দিয়েছে। বাগেরহাটে ৭৭ কোটি বাগদা ও ২১ কোটি গলদা পোনার চাহিদা রয়েছে। চাষিদের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এর অংশ হিসেব জেলার ২৮ হাজার মৎস্য চাষিক আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার পাশাপাশি সহজ শর্তে চাষিদের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণের সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
খুলনা মৎস্য পরিদর্শন ও কোয়ালিটি কন্ট্রোল অফিস সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া হিমায়িত চিংড়ির ৮৫ ভাগ যায় ইউরোপে, আর ১৫ ভাগ আমেরিকাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে। তবে এসব দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানায় হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি এক প্রকার বন্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে আর্থিক মন্দার শিকার হয়েছে দেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্যের এই খাত।
আরও পড়ুন: ওজন বাড়ানো ও সতেজ রাখতে চিংড়ি মাছে ক্ষতিকর জেলি!
চিংড়ি চাষের সাথে জড়িত ঘের মালিকরা জানান, এ মৌসুমে ঘেরের হার বেশি। চিংড়ি পোনার দামের ঊর্ধ্বগতি, মাছের খাবারের দাম বেশি, ঘের প্রসেসিংয়ের জন্য মালামালের দাম এবং শ্রমিকের মজুরিও বেশি। কিন্তু মাছের দাম কম। আর তার জন্যই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
বাগরহাটের রামপাল উপজলার ফয়লাহাটে আগে প্রতিদিন কোটি টাকার গলদা-বাগদা বেচাকেনা হলেও এখন আর আগের মতো কর্মব্যস্ততা নেই । করোনার প্রভাবে পোনা পরিবহন সংকট দেখা দেয়ায় শূন্য হাঁড়ি নিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে এই আড়তের সাথে জড়িত শ্রমিকদের।
আড়তদার ও চিংড়ি পোনা গণনাকারি শ্রমিকরা জানান, গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের কারণে অনেকটা বেকার হয়ে পড়ছে এই হাটের সাতে জড়িত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকসহ প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষ। এমন অবস্থা চলতে থাকলে মৌসুমের শুরুতে চাহিদা অনুযায়ী পোনা সরবরাহ করতে না পারলে চিংড়ি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
আড়তদার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী ও কক্সবাজার থেকে বাগদা ও গলদা পোনা আসে এই হাটে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই হাটে প্রায় কোটি টাকার গলদা-বাগদার পোনা বেচাকেনা হয়। তবে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে হাটে। আগের মতো পোনার সরবরাহ নেই। চাষিরা চাহিদা অনুযায়ী পোনা পাচ্ছেন না। এ কারণে ৯৫ শতাংশ চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। লকডাউনের কারণে হাটে পোনা সরবরাহ কমে যাওয়ায় কারণে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা অসহায় দিনযাপন করছেন।
হাটে চিংড়ি পোনা গণনাকারী তরিকুল ইসলাম বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি ফ্যামিলিকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য আমাকে বাজার আসতে হচ্ছে। এক হাজার মাছ গুনলে আমি বিশ টাকা পাই। লকডাউনের কারণে তাও বন্ধ।
চিংড়ি পোনা গণনাকারী হাকিম শেখ বলেন, ‘পোনা-পাতি আসতিছে না, তালি আমরা কি করে বাঁচবো? বাড়ি ছেলে-মেয়ে আছে, মা আছে। আমাদের তো না খেয়ে মরার পথ।’
আরও পড়ুন: বিগত অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি বেড়েছে
চিংড়ি চাষি হারুন শেখ বলেন, ‘আমি আইজ ১২-১৩ বছর ঘের করি। আমার ঘেরের পরেই সংসার চলে। এই করোনাকালীন সময়ে আইসে মাছের রেট কুমে গেইছে। আগে গলদা-বাগদা বিক্রি করিছি ১৩০০-১৪০০ টাকা। এখন সেই মাছের দাম ৬০০ থেইকে ৯০০ টাকা। আমার ১০-১২ বিঘার দু’টি ঘের আছ। আমি যা লগ্নি করছি, তার অর্ধেক টাকাও আসবে না। এখন সামনে আর ঘের করবো কি না, সেই তৌফিক থাকবে কি না, টাকা থাকবে কি না...করার মতো সেই অবস্থা আর নাই।’
চিংড়ি চাষি আতিয়ার গাজী বলেন,‘আমরা ঘের রেডি করে রাইছি। মাছ ছারতি পারতিছি না করোনার কারণে। মাছ পাওয়া যাচ্ছে না, কম কম আসে, দাম বেশি। আগে ছিল ১ হাজার ৩০০ টাকা, এহন ডবল দাম। নদীর বাগদা ছিল ৭০০ টাকা এহন ১২০০-১৪০০ টাকা- তাও পাওয়া যাচ্ছে না। রেনু (গলদা) হালকা-পাতলা পাওয়া যাচ্ছে ৩ হাজার ২০০ টাকা করে।’
বারাকপুর চিংড়ি আড়তদার সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, করোনাকালীন সময়ে চিংড়ি শিল্পে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ১৭০০ টাকার চিংড়ি মাছ ৮০০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই চিংড়ি শিল্প থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়। চিংড়ি শিল্পকে বাঁচিয় রাখতে হলে চাষিদের সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। তা না হল এই খাতকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
ডুমুরিয়ার চাষি গাজী মেহেদী হাসান বলেন, ‘মৌসুমের শুরুতে চিংড়ি ঘেরে পোনা ছাড়া যাচ্ছে না। দাম বেশি, পোনা পাওয়া যাচ্ছে না।’
খুলনা বিভাগীয় পোনা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পাইকগাছা উপজেলার পুরস্কারপ্রাপ্ত ঘের ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া রিপন বলেন, চিংড়িতে করোনার প্রভাব মারাত্মক। আর আম্পানের আঘাতে সব স্বপ্নই চুরমার হয়েছে। তারপরও চাষিরা মাথা তুলে দাঁড়াতে সচেষ্ট। কিন্তু, ১০-১২ দিন হলো অজানা কারণে চিংড়ি মরতে শুরু করেছে। এখন মাছ তোলার গোনে চিংড়ি মরার কারণে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: খুলনাঞ্চলে হিমায়িত চিংড়ির আন্তর্জাতিক বাজার পরিধি কমছে
তিনি বলেন, পোনা স্বল্পতা রয়েছে। তারপরও হ্যাচারিতে সামান্য পোনা থাকলেও চাষিদের অনাগ্রহে তা বিক্রি হচ্ছে না। ঘেরে মাছ মরার কারণে চাষিরা নতুন করে পোনা ছাড়ছেন না।
চিংড়ি ব্যবসায়ী লিটন পরামানিক বলেন, করোনার প্রভাবে মাছ রপ্তানি বন্ধ। দেশের বাজারেও ক্রেতা নেই। তাই বেকার অবস্থায় দিন কাটছে।
খুলনার কয়রা বাগালি ইউনিয়নের বাগদা চাষি মফিজুল ইসলাম জানান, গরমের কারণে ঘের-পুকুরে চিংড়ি মরছে। গরমে ঘেরে পানি কম, বৃষ্টি নেই, পোনা ও খাবার সংকট, কর্মচারীদের বেতন সব মিলিয়ে বড় ধরনের লোকসানে তারা।
রাঙামাটিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
চলতি বোরো মৌসুমে রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
গত বছরের মতো এই বছরও করোনার প্রার্দুভাবে কারণে অনেক কৃষক ধান কাটার শ্রমিক সংকটে ভুগছেন। তবুও ধানের ফলন ভালো হওয়ায় খুশি কৃষকরা।
উপজেলার রাস্তার মাথা ও বনযোগীছড়া এলাকার কৃষক চৈতালী চাকমা ও জ্ঞান রঞ্জন চাকমা জানান, হ্রদের পানি যখন শুকিয়ে যায় তখন জলেভাসা জমিতে তারা নিজেরা অন্যান্য কাজের ফাঁকে ফাঁকে পরিশ্রম করে ধান চাষ করেন। এ কারণে তাদের খরচ কম হয়। এতে তাদের লাভ বেশি হয়। আর করোনাকালীন সময় তাদের পরিবারের সদস্যরা সারা বছর ভাতের জন্য আর ভাবতে হবে না।
আরও পড়ুন: সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কিনবে সরকার
তাদের মতে, অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর কোনো কোনো জমিতে ফলন খুব ভালো হয়েছে। এ রকম আরো অন্যান্য এলাকায় প্রত্যেক কৃষকরা ধান চাষ করে লাভবান হবেন বলে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
এ ব্যাপারে জুরাছড়ি কৃষি কর্মকর্তা সুস্মিতা চাকমা জানান, চলতি বোরো মৌসুমে ৪৬৮ হেক্টর জলেভাসা জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। এখন বোরো ধান কাটার উপযোগী হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার ফলে এবার বোরো আবাদে ফলনও ভালো হয়েছে। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তা হলে জুরাছড়ি উপজেলায় ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন চাল লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাড়ে ১১ লাখ টন চাল ও সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কিনবে সরকার
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে জেগে উঠা সমতল জলেভাসা জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে রাঙামাটি জেলায় কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসা ১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। সরকারিভাবে বোরো প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের হাইব্রিড বীজ ধান ও বিনামূল্যে সার দেয়া হয়েছে। ফলে বোরোতে এবার ভালো ফলন হয়েছে। এতে ৫ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, উপজেলার প্রত্যেকটি এলাকায় ধান কাটার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এবার ধানের ব্যাপক ফলন হওয়ায় যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় কৃষকেরা আশানুরূপ ফলন গোলায় তুলতে পারবেন।
আরও পড়ুন: কৃষকের ফসল ঘরে তুলতে ধান কাটলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক