ইউরোপ
সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করে তুলছে ইসরায়েল: এরদোগান
সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনের পর ইসরায়েল দেশটিকে আবারও অস্থিতিশীল করে তুলছে বলে অভিযোগ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। স্থানীয় সময় রবিবার (১২ এপ্রিল) তুরস্কে চলমান আন্টালিয়া কূটনীতি ফোরামে (এডিএফ) অংশগ্রহণ করে এই মন্তব্য করেন তিনি।
ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার মাত্র দুদিন পরেই এমন বক্তব্য বিস্মিত করেছে অনেক কূটনৈতিক বিশ্লেষককে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
মূলত, এই দুটি দেশেরই সামরিক বাহিনী সিরিয়াতে সক্রিয় রয়েছে। ফলে সেখানে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে গত বুধবার (৯ এপ্রিল) আজারবাইজানে বৈঠক করেন তুরস্ক ও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা।
তবে বৈঠকের পরও সিরিয়ায় শান্তি নষ্ট করায় ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ধরপাকড় উপেক্ষা করে এরদোগানবিরোধী বিক্ষোভ চলছে
আন্টালিয়া সম্মেলনে বিশ্ব নেতা ও কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে এরদোগান জানান, ‘সিরিয়ায় নতুন করে কোনো সংঘাত তারা চান না। যে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাসার-আল-আসাদ সরকারের পতন হয়েছে, তা ইসরায়েলের কারণে ব্যর্থ হচ্ছে।’
আসাদের পতনের পর সিরিয়ার গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক এরদোগান।
সিরিয়ার ভৌগলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। সিরিয়ার ওপর চলমান বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আঙ্কারার চেষ্টার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান আহমেদ আল সারা। সিরিয়ায় নতুন করে কাউকে সংঘাত সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না বলে সারাকে আশ্বস্ত করেন এরদোগান। সম্মেলনের ফাঁকে একটি বৈঠকও করেন তারা।
গত ৮ ডিসেম্বর আল সারার নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আলশামস (এইচটিএস) দামেস্ক দখল মাধ্যমে আসাদ সরকারের পতন ঘটায়। এরপর সিরিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেই দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে তুরস্ক।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে তুরস্কে গ্রেপ্তার ৩৪৩ জন
দামেস্কের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বিষয়ে একটি চুক্তিও করতে চাইছে আঙ্কারা, এর মাধ্যমে সিরিয়াতে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনসহ দেশটির আকাশসীমা ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে তুরস্কের।
অন্যদিকে আাসদের পতনের পরই সিরিয়ায় সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এ কারণে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। এ মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ায় তিনটি সামরিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
আবার হামা প্রদেশের প্রধান বিমানবন্দর ও হোমসের টি-৪ ও পালমিরা বন্দর পরিদর্শন করেছেন তুরস্কের সেনা কর্মকর্তারা। যেখানে তারা দামেস্কের সঙ্গে একটি যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তির অংশ হিসেবে নিজেদের সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে পারে। এ নিয়ে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যকারে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক থিংকট্যাঙ্ক সেঞ্চুরি ইন্টারন্যাশনালের আরন লুন্ড বলেছেন, ‘সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের দ্বিতীয়ার্ধে আসাদের অন্যতম রক্ষাকর্তা ছিল রাশিয়া। এখন আসাদের পতনের পর যদি সিরিয়ার আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে তুরস্ক, তাহলে এই অঞ্চলটিতে ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রম অনেকটাই সীমিত হয়ে পড়বে।‘
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের সামরিক অভিযানই শুধু আঙ্কারার জন্য সমস্যা নয়, সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে তেল আবিবের নানা বাধা নিয়েও চিন্তিত তারা। যেমন, দেশটির দক্ষিণে আল সারার সরকার কোনো সেনা মোতায়ন করতে পারবে না বলে জানিয়েছে তেল আবিব।’
আরও পড়ুন: তুরস্কের ইস্তানবুলের মেয়র গ্রেপ্তার
এরইমধ্যে সিরিয়ার দক্ষিণের দারাহ শহরে অনুপ্রবেশ শুরু করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। চলমান উত্তেজনার মধ্যে দেশ দুটির মধ্যকার বৈঠককে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন আরন।
তিনি বলেন, সিরিয়ায় এই দুটি দেশই নিজেদের সামরিক তৎপরতা বহাল রাখবে। তবে তাদের মধ্যে যদি একটি যোগাযোগ চ্যানেল স্থাপিত হয় সেটি সব পক্ষের জন্য ভালো হবে বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।
বুধবারের বৈঠকের পর তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ইসরাইলের সাথে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হয়েছে। দুই আঞ্চলিক শক্তির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি রোধ করার জন্য এবং সংঘাত বন্ধ করতে আলোচনা অত্যন্ত প্রয়োজন।
এদিকে বৈঠকের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য সংলাপ চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে তুরস্ক ও ইসরায়েল।
৭ দিন আগে
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সমাপ্তি চায় ইউক্রেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রাশিয়ার সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতি নয়, বরং ইউক্রেন চলতি বছরেই পুরোপুরি যুদ্ধের সমাপ্তি চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা।
শনিবার (১২ এপ্রিল) তুরস্কে আন্তালিয়া কূটনীতি ফোরামে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এ বছরই এই যুদ্ধের সমাপ্তি চাই। কিন্তু, এতে যেন কোনো ধরনের কারসাজি না করা হয়।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপ: ম্যাঁখো
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করাই আমাদের লক্ষ্য। কারণ, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের ফলাফলই ইউরোপের ভবিষ্যতের নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলবে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থায় ইউক্রেনের সম্ভাব্য সদস্যপদ রাখার উপরও জোর দেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের ১১০টি যুদ্ধ করার মতো ব্রিগেড প্রস্তুত রয়েছে, যা ট্রান্সআটলান্টিকের নিরাপত্তায় অবদান রাখতে পারে।’
৭ দিন আগে
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপে ইইউ প্রধানের নিন্দা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশন প্রধান উরসুলা ভন দের লিয়েন।
এর আগে, স্থানীয় সময় বুধবার (২ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর বহুল আলোচিত পাল্টা শুল্কারোপ ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্কারোপ করেন তিনি।
ট্রাম্পের দাবি, মার্কিন প্রশাসনের জন্য শত শত বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আনতে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। ৫০ বছর ধরে করদাতাদের ছাড় দেওয়া হলেও তা এবার বন্ধ হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই উদ্যোগের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি ও কারখানাগুলো ফিরে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্কারোপ
তবে তার এই পদক্ষেপকে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে অভিহিত করেছেন ইউরোপীয় কমিশন প্রধান। লাখ লাখ মানুষের ওপর এই শুল্কারোপের ভয়াবহ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
উরসুলা বলেন, ‘এই অতিরিক্ত শুল্কের কারণে নিত্যপণ্য, পরিবহন ও ঔষধের দাম বেড়ে যাবে। এতে নিম্ন আয়ের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
তবে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় গুরুতর ত্রুটি রয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি। শুল্কারোপের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইইউ প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে প্রয়োজনে পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুতি রয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন ইউরোপীয় কমিশন প্রধান।
বুধবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আরোপিত মার্কিন শুল্ক নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন আরও অনেকে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ বিশ্ব অর্থনীতির বিদ্যমান ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে বাণিজ্যযুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
১৭ দিন আগে
ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপ: ম্যাঁখো
রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা দিতে প্রস্তাবিত নিজস্ব সেনাবাহিনী মোতায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপ। কিয়েভের গুরুত্বপূর্ণ শহর ও কৌশলগত স্থাপনাগুলোতে এই সেনা মোতায়েন করা হতে পারে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো। বাহিনীতে থাকতে পারে ১০ থেকে ৩০ হাজার সেনা।
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) প্যারিসে ৩১টি দেশের নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সেনা মোতায়ন নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ম্যাঁখো। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বৃহস্পতিবার প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে ৩০টি দেশের নেতাদের অংশগ্রহণে শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
ম্যাঁখো বলেন, ‘ইউক্রেনের মাটিতে যারাই হামলা চালাবে, তাদেরও পাল্টা হামলার মুখোমুখি হতে হবে। আমাদের রণকৌশল অনুযায়ী সেনারা শত্রুদের মোকাবিলা করবে।’
ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনে যেসব দেশ সহায়তা করতে আগ্রহী; তাদের নিয়ে একটি জোট গঠন করতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তিনি কাজ করছেন বলে জানান ম্যাঁখো।
আরও পড়ুন: ‘ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে’ থাকা ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিতের তাগিদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর
ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত ও রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা প্রতিহত করতে এই উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে অভিমত দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তবে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলার জবাবে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে; সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।
ম্যাঁখো জানান, প্রস্তাবিত সশস্ত্র বাহিনীর সেনারা শুরুতেই ফ্রন্টলাইনে (সম্মুখযুদ্ধে) রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না। এমনকি এই বাহিনী ফ্রন্টলাইনে অবস্থানও করবে না। ইউক্রেনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর ও কৌশলগত ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তায় থাকবে তারা।
ম্যাঁখো বলেন, ইউক্রেনকে সমর্থন জানাতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও জোটগুলো এই উদ্যোগ নিয়েছে। যু্দ্ধ জড়াতে নয় বরং ইউক্রেনে সংঘাত বন্ধে এটি একটি শান্তি প্রস্তাব বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া সংঘাত একমাত্রই রাশিয়াই চায় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ৩১টি দেশের নেতার উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে। এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে নিরাপত্তা সম্মেলন আয়োজন করে প্যারিস। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোসহ ৭টি দেশের নেতারা সম্মেলনে অংশ নেয়।
এই সম্মেলনে উপস্থিত না থাকলেও আলোচনায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে শান্তিচুক্তির পর ইউক্রেনের স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবে প্রকাশ্যে কোনো আগ্রহ দেখায়নি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন।
অবশ্য ইউরোপীয় নেতাদের এই পরিকল্পনায় অনাগ্রহ দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। সেনা মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন না তিনি।
আরও পড়ুন: ইউরোপকে জেগে ওঠার আহ্বান গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর
তবে ইউরোপের নেতারা জানান, রুশ প্রেসিডেন্টের অতীত কার্যকলাপের ফলে তার প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না তারা।
এ সময় ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল ও ২০২২ সালের পূর্ণমাত্রায় ইউক্রেনে হামলা চালানোর ঘটনা উল্লেখ করে তারা বলেন, শান্তিচুক্তি হওয়ার পরও পুনরায় হামলা চালাতে পারে পুতিন। সম্ভাব্য এই হামলা প্রতিহত করতেই ইউক্রেনে সেনা মোতায়ন প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফরাসী কর্মকতা জানান, ইউরোপীয় জোটের সেনাবাহিনী ফ্রন্টলাইন থেকে কিছুটা দূরে ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে, দিনিপার নদীর তীরে মোতায়ন করা হতে পারে।
আবার ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চল বা প্রতিবেশী কোনো দেশেও সেনা মোতায়েন করা হতে পারে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ওই বাহিনীতে ১০ থেকে ৩০ হাজার সেনা থাকতে পারে। স্নায়ুযুদ্ধের পর সেনা সংকুচিত করা ইউরোপের দেশগুলোর সেনাবাহিনী গঠনের এই উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
২৪ দিন আগে
তুরস্কের ইস্তানবুলের মেয়র গ্রেপ্তার
তুরস্কের জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ও রাজধানী ইস্তানবুলের মেয়র একরেম ইমামোলুসহ বেশ কয়েকজন বিরোধীদলীয় নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মাকাণ্ডের অভিযোগে বুধবার (১৯ মার্চ) তাদের গ্রেপ্তার করে দেশটির পুলিশ।
মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবর বলছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের বড় প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে অন্যতম একরেম ইমামোলু। তিনি যাতে আগামীতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে এরইমধ্যে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাতিল করা হয়েছে।
তুরস্কের আইন অনুসারে, কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে তার বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অপরিহার্য।
হঠাৎ করেই দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর ধারপাকড় বেড়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, ইস্তানবুলের মেয়রসহ আরও ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন কৌঁসুলিরা। আটকদের মধ্যে একরেম ইমামোলুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী মুরাত অনগুনও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: আইসিসির পরোয়ানায় ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট দুতার্তে গ্রেপ্তার
ইস্তানবুলের বেশ কয়েকটি সড়ক বন্ধ করে দিয়েছেন তুরস্কের কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও শহরে সব ধরনের বিক্ষোভের ওপর চার দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
সমালোচকরা বলছেন, গত বছরের স্থানীয় নির্বাচনে এরদোগানের ক্ষমতাসীন দলের বড় ধরনের পরাজয় ঘটেছে। এজন্য দেশটিতে আগামী নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে। এ কারণে বিরোধীদের ওপর ধারপাকড় বেড়েছে।
দেশটির আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে বলে দাবি করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা। তারা বলেন, এই গ্রেপ্তার কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত না। গ্রেপ্তারের আগের দিন সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় একরেম ইমামোলু বলেন, ‘আমরা ব্যাপক অত্যাচারের মধ্যে আছি। কিন্তু কোনোভাবেই আমরা থেমে যাব না।’
সরকার মানুষের ইচ্ছাশক্তিকেও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রী কিংবা প্রেসিডেন্ট হিসেবে তুরস্কের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এরদোগান। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি শাসকও তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার বর্তমান মেয়াদ ২০২৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ভবিষ্যতে আর দীর্ঘসময় তিনি ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছেন।
৩২ দিন আগে
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত: ফের মার্কিন সামরিক সহায়তা পাচ্ছে ইউক্রেন
ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৩০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইউক্রেন সম্মত হওয়ায় পরেই এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সৌদি আরবের জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন। মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এমন খবর দিয়েছে।
বৈঠক শেষে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ওয়াশিংটনের সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কিয়েভ সম্মত হয়েছে। একই প্রস্তাব মস্কোকেও দেওয়া হবে।
রুবিও বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে। এবার মস্কোর সিদ্ধান্ত জানানোর পালা। মস্কো সম্মত না হলে তারা শান্তির পথে বড় একটি প্রতিবন্ধকতা হবে।’এ বিষয়ে ট্রাস্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ জানান, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনায় বসতে ট্রাম্পের সঙ্গে কিয়েভ একমত বলে নিশ্চিত করেছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা। ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতেও আলোচনা শুরু হয়েছে।’
এছাড়া ইউক্রেনকে দেওয়া বিলিয়ন ডলারের মার্কিন সামরিক সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে তুলে নেওয়ায় ট্রাম্প সম্মতি দিয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি যুবরাজের বৈঠক
মঙ্গলবারের এই বৈঠক কিছুদিন ধরে চলা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সম্পর্কের তিক্ততা কিছুটা হলেও প্রশমিত করেছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডায় জড়ান ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওভাল অফিসের একটি বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার মাত্র কয়েকদিন পরে সামরিক সহায়তা স্থগিত করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প।
চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে জেদ্দার এই বৈঠক ইউক্রেনের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জেদ্দার বৈঠক সম্পর্কে হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই একটি চুক্তি চূড়ান্ত রূপ নিতে পারে।’
যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ইউক্রেন সম্মত হওয়ায় তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন সম্মত হয়েছে, এটা ভালো।’ তিনি এ বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানান।
এদিকে সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে জেলেনস্কি জানান, ‘আমাদের অবস্থান প্রথম থেকেই স্পষ্ট। ইউক্রেন দীর্ঘমেয়াদে শান্তি চায়। তবে সেই সঙ্গে নিরাপত্তাও চান ইউক্রেনীয়রা, যেন যুদ্ধ আবার ফিরে না আসে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প
যুক্ররাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রে ইয়ারমার্ক জানান, ‘আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি ফেরাতে একই লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন।’
তবে এই বৈঠক বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি রাশিয়া। যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আগেই জানিয়েছেন, ‘তারা সাময়িক কোনো যুদ্ধবিরতি চান না। বরং তারা স্থায়ী শান্তি চুক্তি চান।’
এছাড়া ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়া ও ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল তারা দখলে নিয়েছে সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র কোনো ছাড় দিয়ে তারা কোনো চুক্তি করবে না বলেও জানিয়েছে মস্কো। ক্রিমিয়া উপদ্বীপসহ ইউক্রেনের ভূখণ্ডের এক–পঞ্চমাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। ২০১৪ সালের যুদ্ধে ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে ক্রেমলিন রাজি আছে বলেও জানিয়েছে রুশ প্রশাসন।
৩৯ দিন আগে
ব্রিটেনে গর্ভপাতের পর ‘শোক ছুটি’ পাবেন মা-বাবা
ব্রিটেনে গর্ভপাতের পর দুই সপ্তাহের ‘শোক ছুটি’ পেতে যাচ্ছেন মা-বাবারা। দেশটির লেবার পার্টির শ্রমিক অধিকার সংস্কারের অংশ হিসেবে এই ছুটি চালু করতে যাচ্ছে ব্রিটেন।
গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহের আগে গর্ভপাত হলে এই শোক ছুটি পাবেন তারা। নতুন আইনের মাধ্যমে শ্রমিক অধিকার সংক্রান্ত বিলটিতে এই পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে লেবার পার্টি। আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বিলটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে উত্থাপনের কথা রয়েছে।
এই বিলটি চূড়ান্ত হলে ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও স্কটল্যান্ডের বাসিন্দারা এই ছুটি পাবেন। এর আগে দেশটিতে গর্ভধারণের ২৪ সপ্তাহ অতিক্রম হওয়ার পর গর্ভপাত হলে কিংবা মৃত বাচ্চার জন্ম দিলে শোক ছুটি পেতেন। সংশোধিত বিলের আওতায় এখন ২৪ সপ্তাহের আগে গর্ভপাত হলেও শোক ছুটি পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতের অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ
সংশোধিত এই বিলটিরে প্রচার চালিয়েছিলেন লেবার পার্টির এমপি সারাহ ওয়ান। তার নের্তৃত্বাধীন নারী ও সমতা বিষয়ক কমিটি চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এই দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এই বিলটি সারাহর জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সন্তান হারানোর পর বাবা-মায়ের শারীরিক ও মানসিক কষ্ট লাঘবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।
ব্রিটেনে প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ গর্ভবতী মহিলা গর্ভপাতের শিকার হন। গর্ভধারণের প্রথম ১২ সপ্তাহের মধ্যেই ১০ থেকে ২০ শতাংশ গর্ভপাত হয়ে থাকে।
গর্ভপাতের কষ্টের অভিজ্ঞতা নিয়ে ব্রিটেনের এক ব্যবসায়ী জোনাথান রেনল্ডষ বলেন, ‘আমি জানি এই সময়টা কতটা কষ্টকর। অনেকের মতো আমিও এই অভিজ্ঞতা করেছি। এটি অত্যন্ত কঠিন সময়।’
সংশোধিত বিলে যেসব বাচ্চার জন্মদানের সময় তার মা মারা গেছেন; তবে শিশু জীবিত রয়েছেন ওই বাচ্চার বাবাও এই শোক ছুটি পাবেন বলে জানা গেছে।
৪৫ দিন আগে
রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার হামলা বন্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার অভিযান কিংবা অভিযানের পরিকল্পনা স্থগিত করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন চেষ্টার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (৩ মার্চ) এক মার্কিন কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
ওই কর্মকর্তা জানান, সিআইএ এবং সাইবার নিরাপত্তা ও অবকাঠামো সুরক্ষা সংস্থাসহ (সিআইএসএ) অন্যান্য সংস্থার সাইবার কার্যক্রম হেগসেথের এই সিদ্ধান্তের আওতায় থাকবে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সিআইএসএ তাদের কার্যক্রমে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলে নিশ্চিত করেছে। তবে এফবিআই ও অন্যান্য সংস্থাগুলোর ডিজিটাল ও সাইবার হুমকি মোকাবিলার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য পদক্ষেপও সীমিত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।-খবর এপি ও সিএনএনের।
পেন্টাগনের এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এসেছে, যখন সাইবার প্রতিরক্ষা ও আক্রমণাত্মক কার্যক্রমে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসছেন অনেক জাতীয় নিরাপত্তা ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ। বিশেষত চীন ও রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি, নির্বাচন ও নিরাপত্তাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা এই স্থগিতাদেশকে মার্কিন প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ‘এক বড় আঘাত’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি জানান, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার এবং এখানে বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন হয়।’
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত দেশটিতে মস্কোর সম্ভাব্য সাইবার হামলার ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে মত দেন এই কর্মকর্তা।
মার্কিন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বিকল করতে এবং স্পর্শকাতর গোয়েন্দা তথ্য হাতিয়ে নিতে সক্ষম রুশ হ্যাকাররা। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধ ও মস্কোর সাথে সম্পর্কোন্নয়নে ব্যাপক চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, প্রায় এক দশক আগে রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশগুলোর সাইবার হামলা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে সাইবার কমান্ড গঠন করে যুক্তরাষ্ট্র। ম্যারিল্যান্ডের ফোর্ট মিড ঘাঁটিতে অবস্থিত সাইবার কমান্ড ধীরে ধীরে মার্কিন শক্তির একটি হাতিয়ার হয়ে ওঠে। এই সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোতে বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে সাইবার অপরাধী এবং গোয়েন্দাদের হুমকি মোকাবিলায় সহায়তা করার চেষ্টা করে থাকে।
সূত্র: এপি ও সিএনএন
৪৭ দিন আগে
‘ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে’ থাকা ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিতের তাগিদ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর
ওভাল অফিসে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডার পর এবার ইউক্রেনের সমর্থনে ইউরোপকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এ সময় ইউরোপের দেশগুলোতে সীমান্ত সুরক্ষা জোরদারসহ ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে একটি কার্যকরী পরিকল্পনা প্রণয়নের ঘোষণা দেন তিনি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি দেশেরই উচিত নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসা। যার কাছে যা আছে, তা নিয়েই অবদান রাখতে হবে। সবাই নিজেদের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে এই বোঝা ভাগ করে নিতে হবে।’
স্থানীয় সময় রবিবার (২ মার্চ) ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে রাজধানী লন্ডনে আয়োজিত সম্মেলনে এসব কথা বলেন স্টারমার। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন।
সম্মেলনে ইউরোপের দেশগুলোকে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে পরামর্শ দেন স্টারমার। স্টারমার বলেন, ‘ইউরোপ বর্তমানে ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে রয়েছে। শুধু আলোচনা নয়; এবার সময় এসেছে পদক্ষেপ নেওয়ার।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে রাজকীয় অভ্যর্থনা ও পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন জেলেনস্কি
এর আগে গত বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাজ্যে বার্ষিক প্রতিরক্ষা খরচ জিডিপির ২.৫ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দেন কিয়ার স্টারমার। দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগ পর্যন্ত ইউক্রেন ইস্যুতে সহাবস্থানে ছিল ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে হোয়াইট ইউসে ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের সঙ্গেই ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্রনীতিতে এলো নাটকীয় পরিবর্তন।
গত তিন বছর ধরে একযোগেই ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। তবে সেই নীতির পরিবর্তন করে ইউক্রেন ও ইউরোপকে এক প্রকার পাশ কাটিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসলেন ট্রাম্প প্রশাসন।
এখানেই মতানৈক্য তৈরি হয় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের। এরপর যুক্তরাষ্ট্রকে যে আর আগের মতো ইউক্রেনের পাশে পাওয়া যাবে না; তা আরও নিশ্চিত করে দিয়েছে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিসের ঘটনা।
ওই ঘটনার পর আয়োজিত এই সম্মেলনকে স্টারমার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব দূর করাসহ শুক্রবারের আলোচনার আগে শান্তি আলোচনা যে অবস্থানে ছিলো সেখানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য একটা সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের পাশে থাকার আশ্বাস ইউরোপীয়দের
এছাড়া ইউক্রেন ইস্যুতে এবার কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন স্টারমার। তিনি বলেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের সঙ্গে এ বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সম্মেলনের আলোচনায় ৪টি বিষয়ে ইউরোপীয়দের এক হওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত এবং রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং শান্তি আলোচনায় কিয়েভকে রাখা, ভবিষ্যতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ঠেকানোর লক্ষ্যে কাজ করবে ইউরোপ এবং সর্বোপরি ইউক্রেনের নিরাপত্তায় জোট গঠন ও দেশটিতে শান্তি নিশ্চিত করার বিষয়ে ইউরোপের দেশগুলো একমত হয়েছেন। এ লক্ষ্যেই তারা কাজ করবে বলে জানান।
এর পাশাপাশি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য ইউক্রেনকে ১৬০ কোটি পাউন্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কিয়ার স্টারমার। এই অর্থে ইউক্রেনের জন্য পাঁচ হাজারের বেশি ক্ষেপণাস্ত্র কেনা হবে। ওই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহার করা হবে।
তবে ইউক্রেনের সমর্থনে নেওয়া যেকোনো পরিকল্পনায় বাধ সাধতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্টারমার বলেন, এক্ষেত্রে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রয়োজন। স্পষ্ট করে কিছু না বললেও সম্মেলনের আগে সংবাদ সংস্থা বিবিসিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ ব্যাপারে তীব্র আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
পরবর্তীতে একটি আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে আরও আলোচনা হবে বলে জানান তিনি। স্টারমার জানান, তিনি পুতিনকে বিশ্বাস করেন না কিন্তু ট্রাম্পের প্রতি তার আস্থা রয়েছে।
এর আগে ইউক্রেনে জল, আকাশ ও স্থলপথে এক মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেন কিয়ার স্টারমার ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো। এ সমযের মধ্যে তারা স্থায়ীভাবে ইউক্রেনে শান্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চিতের বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
৪৮ দিন আগে
ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক: শূন্যহাতে ফিরলেও প্রশংসায় ভাসছেন জেলেনস্কি
ওভাল অফিসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর খালি হাতে হোয়াইট হাউস ছাড়লেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তা সত্ত্বেও নিজ দেশের জনগণের কাছ থেকে অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন তিনি। দেশের স্বার্থে নতজানু না-হওয়ার কারণে প্রশংসায় ভেসেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের প্রক্রিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে ওভাল অফিসে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। এ সময় বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন দুই প্রেসিডেন্ট।
শুধু ট্রাম্পই নন; যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্সও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তর্কে জড়ান। জেলেনস্কি ওভাল অফিসের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়াও জেলেনস্কি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেননি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভ্যান্স।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চুক্তি সইয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তবে চুক্তি না-হলেও ইউক্রেনের জনসাধারণের মন জয় করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরলেও, দেশের স্বার্থে আপস না করায় প্রশংসায় ভেসেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: খনিজ চুক্তি সই না করেই হোয়াইট হাউস ছাড়লেন জেলেনস্কি
জেলেনস্কিকে ‘সিংহের’ সাথে তুলনা করে ইউক্রেনীয় নারী নাতালিয়া সেরহিয়েনকো (৬৭) বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সিংহের মতো লড়াই করেছেন। তাদের মধ্যে উতপ্ত বাক্যবিনিময় হলেও ইউক্রেনের স্বার্থ রক্ষা করেছেন তিনি।’
ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের প্রধান ওলেহ সিনিহুবভ জেলেনস্কির প্রশংসা করে বলেছেন, ‘আমাদের নেতা চাপের মুখেও ইউক্রেন ও ইউক্রেনীয়দের স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ়তা বজায় রেখেছেন। ... নিরাপত্তার নিশ্চয়তাসহ আমরা শান্তি চাই।’
ওভাল অফিসের বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যা হয়েছে; সেটিকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুরোপরি অসম্মান হিসেবেই দেখছেন কিয়েভের বাসিন্দা ৩৭ বছর বয়সী আর্তেম ভাসিলিভ। তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করছি, কিন্তু আমাদের যোদ্ধা, সৈনিক ও দেশবাসীর প্রতি পাচ্ছি পুরোপুরি অবজ্ঞা।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে ইউক্রেনের জনগণের সীমাহীন দুর্ভোগ ও কষ্ট বুঝতে পারছেন না বলে তার সমালোচনা করেন ভাসিলিভ। ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এটা (ইউক্রেনীয়দের কষ্ট) তিনি বুঝতে অক্ষম, তিনি কেবল একজন ব্যবসায়ী। তার কাছে টাকাই সবচেয়ে মূল্যবান।’
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের খারসন শহরের প্রধান আলেকজান্ডার প্রোকুদিন বলেছেন, ‘এই ঘটনা প্রেসিডেন্ট ও আমাদের সবাইকে আরও শক্তিশালী করেছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই এই সংকট কাটিয়ে উঠব।’
৫০ দিন আগে