বরিশাল
জাল বাঁচাতে গিয়ে লঞ্চে প্রোপেলারে কাটা পড়ে প্রাণ গেল জেলের
বরিশালে জাল বাঁচাতে গিয়ে লঞ্চের ইঞ্জিনের প্রোপেলারে কাটা পড়ে আবেদ আলী নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কীর্তনখোলা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবেদ আলী নগরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সোবাহান ফকিরের ছেলে।
আরও পড়ুন: সিলেট-তামাবিল সড়কে পিকআপ-লেগুনার সংঘর্ষ, নিহত ৫
নিহত আবেদ আলীর স্ত্রী রুমা জানান, সোমবার কীর্তনখোলা নদীতে মাছ ধরতে জাল ফেলেন আবেদ। এসময় স্রোতের টানে জাল গিয়ে ডবল ডেকার লঞ্চের (পারাবাত-১১) ইঞ্জিনের প্রোপেলারে জড়িয়ে যায়।
স্ত্রী রুমা আরও জানান, জাল খুলতে আবেদ যখন লঞ্চের কাছে যায় ঠিক সেই সময়ে ইঞ্জিন চালু হলে ইঞ্জিনের প্রোপেলারের ভেতরে ডুকে যায় আবেদ এবং লঞ্চের ইঞ্জিন বন্ধ না করায় নিখোঁজ হন তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, নিখোঁজের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ও বরিশাল নৌ পুলিশ উদ্ধার অভিযানে নামলে আবেদ আলীর বিচ্ছিন্ন একটি পা উদ্ধার হয়।
তবে শরীরের বাকি অংশ খুঁজে পেতে অভিযান চলমান রয়েছে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।
বরিশাল নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল জানান, আবেদ আলী মাছ ধরতে নেমে নিখোঁজ হন। আমরা তাকে খুঁজে পেতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। তবে এখন পর্যন্ত তার একটি বিচ্ছিন্ন পায়ের অংশ পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় ট্রাকচাপায় স্কুলছাত্র নিহত
সোনারগাঁওয়ে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনি, ৪ যুবক নিহত
বরিশালে চাকরি না পাওয়ায় হতাশা, প্রকৌশলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
বরিশালে শুভদ্বীপ কর্মকার (২৬) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে নগরীর ঝাউতলা দ্বিতীয় গলিতে তার বাসা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত যুবক শুভদ্বীপ কর্মকার ঝাউতলা এলাকার রনজিৎ কর্মকারের একমাত্র
পুলিশ প্রাথমিকভাবে এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে।
শুভদ্বীপের বড় বোন স্বর্ণা বলেন, ‘আমার ভাই শুভদ্বীপ প্রকৌশলে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি পাচ্ছিল না। সে চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছে। এ কারণে শুভদ্বীপ হতাশায় ভুগছিল। সে কারণেই আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে।’
শুভদ্বীপের মা বলেন, শনিবার সবাই খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাই। সকালে শুভদ্বীপের রুমের দরজায় নক করলে তার কোনো সাড়া পাইনি। তখন দরজার ফাঁক দিয়ে শুভদ্বীপকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। তখন চিৎকার করে আশেপাশের লোকজনকে জানালে তারা পুলিশে খবর দেয়।
কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) বিপ্লব মিস্ত্রি বলেন, শুভদ্বীপকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শুভদ্বীপকে মৃত ঘোষণা করে।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
বরিশালে সয়াবিন খেত থেকে আওয়ামী লীগ নেতার লাশ উদ্ধার
বরিশালের হিজলায় সয়াবিন খেত থেকে জামাল মাঝি নামে এক আওয়ামী লীগের এক নেতার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবাইর।
আরও পড়ুন: নাটোরে পৃথক স্থান থেকে ২ জনের লাশ উদ্ধার
নিহত জামাল মাঝি বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য (এমপি) পংকজ দেবনাথের অনুসারী।
তিনি উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলে জানিয়েছেন পংকজ দেবনাথ।
নিহতের স্ত্রী আঁখি বেগম জানান, রাতে ২টার দিকে স্বামীকে মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি জানান, ভালো আছেন ও নিরাপদে আছেন। পরে সকাল ৯টার দিকে জানতে পারি স্বামীর লাশ সয়াবিন খেতে পড়ে আছে।
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবাইর বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় লাশ পেয়েছি। নিহতের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত থাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কে বা কারা করেছে তা জানি না। তদন্ত করে বলতে পারব কারা জড়িত।
আরও পড়ুন: নাটোরে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
যশোরে ৫ কেজি স্বর্ণ ও পাচারকারীর লাশ উদ্ধার
বরগুনায় সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ৭ সহকর্মী কারাগারে
১৯ ফেব্রুয়ারি বরগুনা প্রেসক্লাবে হামলায় আরেক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে বরগুনা প্রেসক্লাবের ৭ সদস্যকে কারাগারে পাঠিয়েছে বরগুনার একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার আসামিদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে বরগুনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হারুন-অর-রশীদ এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, দায়ের হত্যা মামলায় উল্লেখিত ১৩ জন আসামির মধ্যে ৮ জন বৃহস্পতিবার সকালে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আরও পড়ুন: বরগুনার সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘট চলছে
আদালত আসামি সোহেল হাফিজ, আরিফুল ইসলাম মুরাদ, মো. কাশেম হাওলাদার, সাইফুল ইসলাম মিরাজ, অলিউল্লাহ ইমরান, সোহাগ হাওলাদার ও সগীর হোসেন টিটুর জামিন না-মঞ্জুর এবং অপর আসামি জাফর হোসেন হাওলাদারের জামিন মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, বরগুনা প্রেসক্লাবের অধিকাংশ সদস্য বার্ষিক শিক্ষা সফরে ভারতে অবস্থানরত অবস্থায় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় এক ইউপি সদস্য মাসুদ তালুকদার ও কথিত সাংবাদিক মুশফিক আরিফের নেতৃত্বে বরগুনা প্রেসক্লাবে হামলা চালিয়ে দখলের চেষ্টা চালায় একটি মহল।
আরও পড়ুন: বরগুনার বজ্রপাতে নদীতে ছিটকে পড়া জেলের লাশ উদ্ধার
এ ঘটনায় আহত হন বরগুনা প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার সোহেল হাফিজ, যমুনা টেলিভিশনের রিপোর্টার ফেরদৌস খান ইমন এবং সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম মিরাজসহ ৭ সংবাদকর্মী।
পরে এ ঘটনায় ২৯ ফেব্রুয়ারি ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০ জনকে অভিযুক্ত করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করে বরগুনা প্রেসক্লাব।
আরও পড়ুন: বরগুনায় পিকনিকের বাস খাদে পড়ে ব্যবসায়ী নিহত, আহত ১৮
বরিশালে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যানসহ নিহত ৪
বরিশালে পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যানসহ চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২০ জন।
বুধবার (১৩ মার্চ) জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া এলাকা, উজিরপুরের সানুহার ও বাবুগঞ্জের গড়িয়ারপাড় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১
নিহতরা হলেন, মাদারিপুর জেলার কালকিনি উপজেলার সাবেক ইউ পি চেয়ারম্যান সাঈয়াদুর রহমান, সিরাজগঞ্জ জেলার মনতাজ উদ্দিনের ছেলে মজনু হোসেন, উজিরপুর উপজেলার সানুহার গ্রামের বেল্লাল হোসেনের ছেলে সুমন ও চাকলাদার পরিবহণের সুপার ভাইজার কাদের।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুর রহমান সোহাগ বলেন, সকালে বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়ায় একটি মাহিন্দ্রা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে আছড়ে পড়ে।
এতে মাহিন্দ্রার যাত্রী কালকিনি উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নিহত হয়েছেন। এসময় আরও ছয় মাহিন্দ্রাযাত্রী আহত হয়েছে।
ওসি সোহাগ আরও বলেন, উজিরপুর উপজেলার সানুহারের ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দিয়ে চাকলাদার পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস বরিশালের দিকে আসছিলো।
এসময় পথের মধ্যে সুমন নামে একজন পথচারী চলে আসে। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে গাড়িটি পাশ্ববর্তী গাছে আচড়ে পড়ে। এতে পথচারীসহ বাসের সুপার ভাইজার নিহত হয়। এঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ১৩ জন।
আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বরিশাল মহানগর পুলিশের বিমান বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, বরিশাল বিমান বন্দর থানার গড়িয়ার পাড় এলাকায় মাহিন্দ্রার সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
এতে মোটর সাইকেল চালক মজনু মারা যান। এ সময় মোটরসাইকেলের একজন আরোহী আহত হয়েছে বলে জানান ওসি।
আরও পড়ুন: খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনা মোটরসাইকেল চালক নিহত
হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন আহত
পিরোজপুরে ৩ বাহনের সংঘর্ষে নিহত ৭, আহত ১০
পিরোজপুরে বাস, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার পিরোজপুর পাড়েরহাট সড়কের ঝাউতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- স্বপন হাওলাদার, মো. হেমায়েত, খাইরুল, নাইম, মনসুরা বেগম, আলমগীর ও জেসমিন।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে স্বামীর নির্যাতনে স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ
পিরোজপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মো. সেলিম মিয়া জানান, শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পিরোজপুর থেকে পাড়েরহাট যাওয়ার পথে অটোরিকশা্টি ঝাউতলায় যাত্রী নামাচ্ছিল।
এ সময় পিরোজপুর থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ইন্দুরকানী যাওয়ার পথে ওই অটোরিকশাকে অতিক্রম করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গেলে তিন বাহনের সংঘর্ষ হয়।
এতে ঘটনাস্থলেই চারজন ও পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় আরও ১০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের পিরোজপুর হাসপাতালে ও গুরুতর আহতদের খুলনা ও বরিশালের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে প্রবাসী যুবক খুন!
সিলেটে বাস-ট্রাকের সংঘর্ষে শিশু নিহত, আহত ১০
চরমোনাই মাহফিলে গিয়ে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার
চরমোনাই মাহফিলে গিয়ে কীর্তনখোলা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজের তিন দিন পর তানভির নামে এক যুবকে লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নসরীর চরবাড়িয়া ইউনিয়নের চরআবদানি এলাকাসংলগ্ন নদীতে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে নদীতে গোসল করতে নেমে তানভির নিখোঁজ হন।
আরও পড়ুন: সিংড়ায় ট্রাকচাপায় মেয়ের মৃত্যু, বাবা আহত
এ ঘটনায় শনিবার বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল।
নিহত তানভির ঢাকার ডেমরা এলাকায় থাকতেন। চরমোনাইর মাহফিলে এসে এমভি আঁচল লঞ্চের ২০২ নম্বরে কেবিনে থাকতেন তানভির।
বরিশাল সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল জানান, সকালে লাশটি ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে কাউনিয়া থানা পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
ওসি আরও জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ফুলবাড়ীতে দুবাই প্রবাসীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
পল্লবীতে নারীর লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার
বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ড: বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকা হলো না পটুয়াখালীর জুয়েলের
‘পোলাডায় আমারে থুইয়া আগেই চইল্যা গেল। অ্যাহন আমার কী হইবে’- পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে এ কথাগুলো বলে আহাজারি করছিলেন গাজী মো. জুয়েল রানার মা ফাতেমা বেগম।
জুয়েল রানা ঢাকার বেইলি রোডের বহুতল ভবনে আগুন লাগার পর নিজেকে বাঁচাতে জানালা ভেঙে নামতে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ওই ভবনটির সাত তলায় ‘এমবাসিয়া’ নামে একটি রেস্তোরাঁয় বাবুর্চির কাজ করতেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চার-পাঁচ বছর ধরে তিনি ওই রেস্তোরায় কাজ করেছেন।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম মধুখালী গ্রামে জুয়েলের বাড়ি। তার বাবার নাম মো. ইসমাইল গাজী। স্ত্রী রেবেকা সুলতানা এবং মেয়ে তাসমিম (৮), ছেলে তাইফুরকে (৩) নিয়ে ছিল তার সংসার। পরিবার নিয়ে তিনি ঢাকার বেইলি রোডের কাছাকাছি একটি এলাকায় বসবাস করতেন।
গতকাল বেইলি রোডের বহুতল ভবনটিতে আগুন লাগার পর জানালা ভেঙে নামতে গিয়ে গাজী মো. জুয়েল রানা মৃত্যুবরণ করেন। একই রেস্তোরাতে তার আপন ভাগিনা রাকিব আকনও কাজ করতো। মুঠোফোনে রাকিব আকন জানায়, বহুতল ভবনটিতে আগুন লাগার পর তারা তিনজন ছয়তলায় নেমে একটি জানালা ভেঙে বাইরে নামার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন: বেইলি রোড ট্র্যাজেড: বাঁচার আকুতিতে মামাকে রকির শেষ ‘কল’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমে রাকিব এবং পরে রেস্তোরাঁর আরেক কর্মচারী ডিসের তার বেয়ে নিচে নামেন। তার মামা জুয়েল রানা জানালা দিয়ে বের হয়ে একটি এসির উপর বসেন। এ সময় এসিসহ ভেঙে সে নিচে পড়ে যায়। ভবনটির জানালার কয়েকটি কার্নিশের সঙ্গে তার মামার শরীর আঘাত লেগে লেগে নিচে পড়ে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।’
এলাকারবাসীরা জানান, এক মাস আগে জুয়েলের ছোট বোন হাফিজার বিয়ে হয়েছে। জুয়েল ছুটি না পাওয়ায় বোনের বিয়েতে বাড়িতে আসতে পারেনি। রোজার আগে তার বাড়ি আসার কথা ছিল। এ সময় ছোট বোনকে বিদায় দেওয়ারও কথা ছিল।
আরও পড়ুন: বেইলি রোড ট্র্যাজেডি: ভোলার দুই যুবকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে গাজী মো. জুয়েল রানার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। শুক্রবার কলাপাড়া উপজেলার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম মধুখালী গ্রামে আসর নামাজ বাদ জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এমন মৃত্যুর খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম মধুখালী এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মো. কাওসার গাজী বলেন, ‘বাবা দিনমজুর। মানুষের বাড়ি-ঘরে কাজ করতেন। মূলত জুয়েলের আয় দিয়েই পরিবারটি চলতো। কর্মক্ষম সন্তানকে হারিয়ে পুরো পরিবার শোকে কাঁতর হয়ে গেছে।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরাও খোঁজ-খবর নিয়েছি। শুনেছি পরিবারটি অতি দরিদ্র। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পরিবারকে সার্বিক সহায়তা করা হবে।’
আরও পড়ুন: বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে ৩ জন আটক
বেইলি রোড ট্র্যাজেডি: ভোলার দুই যুবকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া
ঢাকার বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভোলার ২ যুবক প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে একজন পরীক্ষা শেষে বন্ধুদের নিয়ে খেতে যান ও অপরজন কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের কর্মচারী হিসেবে কর্মস্থলে যোগ দেন। দুই পরিবারে চলছে স্বজনদের আহাজারি।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকার স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এমদাদুল হক জোনায়েদ আাহমদ (২৪) বৃহস্পতিবার মাস্টার্সের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষে ৪ বন্ধু নিয়ে ঢাকার বেইলি রোডের একটি রেস্টুরেন্টে খেতে যান। অগ্নিকাণ্ডে বের হতে না পেরে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। শুক্রবার বিকালে তার মৃতদেহ ভোলায় আনা হলে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
তার স্বজনরা জানান, ভোলার বিএভিএস সড়কের অবসরপ্রাপ্ত ভূমি অফিসের জেলা কর্মকর্তা মাইনুল হক হারুনের একমাত্র ছেলে। মা-বাবা ও দুই বোনসহ তারা ঢাকায় বসবাস করতেন। বৃহস্পতিবার বাসা থেকে মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বের হন। পরীক্ষা শেষে ৪ বন্ধু মিলে বেইলি রোডের একটি রেস্টুরেন্টে খেতে যান।
আরও পড়ুন: বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে জবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
খাবারের অর্ডার দেওয়ার পর বন্ধুরা গল্প করছিলেন। এর মধ্যে সিয়াম টয়লেটে যান। টয়লেটে গিয়ে ধোঁয়া দেখে তিনি দ্রুত সিঁড়ি দিয়ে নিচে চলে আসেন এবং ফোনে বন্ধুদের দ্রুত নামতে বলেন।
বন্ধুরা সিঁড়ি দিয়ে নামতে গেলে সেখানে বিস্ফোরণে আগুন চলে আসলে তারা ৩ বন্ধু আটকা পড়ে আর বের হতে পারেননি।
এ অবস্থায় শেষবারের মতো তার মায়ের সঙ্গে মোবাইলে রাত ১০টার দিকে কথা হয়। জোনায়েদ বলেন, ‘মা আমি বেইলি রোডে আছি। আমি আসতেছি।’
এটাই ছিল তারা শেষ কথা। এরপর তার মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই জোনায়েদের মৃত্যু হয়। পরে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আংটি দেখে জোনায়েদকে শনাক্ত করা হয়।
এদিকে ভোলায় খলিফাপট্টি জামে মসজিদে জানাজা শেষে তাকে কালিবাড়ি রোড বিল্লা মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে সন্ধ্যার দিকে দাফন করা হয়।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের চাকরিতে যোগ দেন ভোলা সদর উপজেলা চর কুমারিয়া গ্রামের মো. সিরাজের ছেলে মো. নয়ন।
দরিদ্র কৃষক বাবাকে অর্থের যোগান দিতে কাচ্চি রেস্টুরেন্টে কাজ নেন। আর তার জীবিত ফেরা হয়নি বাড়িতে। অগ্নিকাণ্ডে আদরের ছোট ছেলেকে হারিয়ে শুক্রবার সারাদিন প্রলাপ করেছেন মা। আর নির্বাক বাবা অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন ছেলেকে শেষবার দেখার জন্য।
আরও পড়ুন: বেইলি রোড অগ্নিকাণ্ড: ৪৬টির মধ্যে ৩৯টি মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর
দুর্ঘটনার প্রায় ৯ ঘণ্টা পর শুক্রবার সকালে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ছেলের মৃত্যুর খবর পান নাজমা ও তার পরিবার। সেই থেকেই চলছে তার বিলাপ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা ১৯ বছর বয়সী নয়ন ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে চাকরির সন্ধানে ঢাকায় যান। বাবুর্চির সহকারী হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বেইলি রোডের ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্টুরেন্টে যোগদান করেন। ওইরাতের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় তার।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে শুক্রবার সকালে পরিবারের কাছে মৃত্যুর খবর আসে।
এদিকে নিহতের ভাই দুপুরে ঢাকা মেকিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে লাশ চিহ্নিত করেন। নয়নের বাবা-মায়ের দাবি কর্মস্থলে এমনভাবে আর কাউকে যেন প্রাণ দিতে না হয়। সিরাজ-নাজমা দম্পত্তির ৬ সন্তানের মধ্যে নয়ন সবার ছোট।
নয়নের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের মৃত্যুর খবরে নির্বাক নয়নের বাবা মো. সিরাজ। ছেলের এমন অপ্রত্যাশিত মৃত্যর খবর কোনোভাবেই মানতে পারছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে ছেলের মৃত্যুর খবর আসার পর থেকেই নির্বাক বসে আছেন। ছেলের লাশের অপেক্ষায় গ্রহর গুনছিলেন। খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে এসেছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
আরও পড়ুন: বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে ৩ জন আটক
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় ৮ জনের জেল-জরিমানা
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অভয়আশ্রম মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করায় আট জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল দিকে ভোলা সদর উপজেলার তুলাতুলি এলাকার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ৩ ইটভাটাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা
এসময় তাদের কাছ থেকে দুইটি মাছ ধরার ট্রলার ও ২৫ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, দুই মাস মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ ধরার সময় অভিযান চালিয়ে দুই জেলে ও দৌলতখান উপজেলার মেঘনা নদী থেকে ছয় জেলেকে আটক করা হয়।
আটক জেলেদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানা করা হয়।
তিনি আরও জানান, এ সময় তাদের কাছ থেকে দুইটি মাছ ধরার ট্রলার ও ২৫ হাজার মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। পরে জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয় ও মাছ স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: শেরপুরে ৩টি হাসপাতাল ও ডায়াগনোসিস সেন্টার সিলগালা, ২টির জরিমানা
মেঘনায় নিষিদ্ধ জালে মাছ ধরায় ১৫ জেলেকে জরিমানা