বরিশাল
তাপমাত্রা বৃদ্ধি: পিরোজপুরে এক সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৮ ডায়রিয়া রোগী
দেশের বিভিন্ন জেলায় বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহের মধ্যে পিরোজপুরে এক সপ্তাহে বিপুল সংখ্যক ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে উপজেলার হাসপাতালে।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার ৭টি উপজেলা হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪০ জন। গত ৭ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা মোট ৫৬৮ জন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৩ লাখ মানুষ পাবেন ডায়রিয়ার টিকা
সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিদিন ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে শিশু রোগীর সংখ্যাই বেশি। জেলায় মোট ৭টি হাসপাতালে এই মুহূর্তে আইভি স্যালাইন রয়েছে ৪ হাজার ১৮৬ ব্যাগ। এবারে যেহেতু তাপমাত্রা বেশি ও দীর্ঘমেয়াদি হওয়ার কারণে রোগীর সংখ্যা আগামীতে আরও বাড়বে।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, গত একমাসে এ জেলায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৯৬ জন।
এদিকে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) পিরোজপুর সদর হাসপাতাল এবং শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মেঝতে ও বারান্দায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেড়েছে ডায়রিয়া, হাসপাতালে স্যালাইন সংকট
রাঙামাটিতে ডায়রিয়ার প্রকোপ
পিরোজপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
পিরোজপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে সোহাগ শেখ (৩৩) নামে এক যুবককে হত্যা করছে প্রতিপক্ষরা।
সোমবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের ভৈরমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য মিজান হাওলাদার।
নিহত সোহাগ পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের ভৈরমপুর গ্রামের সিদ্দিক শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় স্ত্রীহত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
নিহতের ভাই সিপন শেখ জানান, রাতে ফোন করে তার ভাই সোহাগ শেখকে বাড়ির সামনে বের করা হয়। পরে কাছে মাতুব্বর বাড়ির মসজিদের পাশে বসে স্থানীয় শামসু ও এমামসহ কয়েকজন সোহাগকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার শরীর থেকে হাত ও পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করে তারা পালিয়ে যায়। এর আগেও তার ভাইকে কয়েকবার মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল প্রতিপক্ষের লোকজন।
তিনি আরও জানান, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে একটি পক্ষের সঙ্গে সোহাগ ও তার পরিবারের বিরোধ ছিল। গত ইউপি নির্বাচনের পর শহিদুল নামে একজন খুন হন। সে মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছিল নিহত সোহাগ শেখকে। সোহাগ সেই মামলায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়। সেই পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে তার ভাই সোহাগ শেখকে হত্যা করা হয়েছে।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসিকুজ্জামান জানান, পূর্ব শত্রতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, প্রাথমিকভাবে এমনটা জানা গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে। এছাড়া লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, আটক ৩
মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় ৬০ বছরের নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা
মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় ৬০ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ পুতে রাখা হয় তারই ঘরের মেঝেতে।
নিখোঁজের সাত মাস পর ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন শেষে সংবাদ সম্মেলনে রবিবার এ তথ্য জানান বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় মুদি দোকানির গায়ে আগুন
সাত মাস আগে নিখোঁজ হন জেলার বাকেরগঞ্জের মধ্য কাটাদিয়া গ্রামের মৃত জয়নাল গাজীর স্ত্রীরিজিয়া বেগম। এ ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই হাওলাদার মাসুদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মামলার সূত্র ধরে তদন্তে নামে বরিশাল জেলা পুলিশ। প্রযুক্তির ব্যবহার করে এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারা হলেন- একই ইউনিয়নের মধ্য কাটাদিয়া গ্রামের মৃত আইউব আলীর ছেলে মো. ফয়সাল ও মৃত কালাম হাওলাদার কালুর ছেলে লালচাঁন।
পুলিশ সুপার বলেন, রিজিয়া বেগম একাই বসবাস করতেন। প্রায় সাত মাস আগে নিখোঁজ হন তিনি। গত ১৩ এপ্রিল রিজিয়ার ছেলে রাসেল বাড়ি এলে ঘরের ভেতরে মাটির স্তুপ দেখতে পান। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা আদালতের নির্দেশে ঘরের ভেতর থেকে রিজিয়ার লাশ উদ্ধার করে। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ফয়সাল ও লালচাঁন প্রতিনিয়ত ওই নারীর ঘরে ও আশপাশে মাদক সেবন করতেন। এতে বাধা দেওয়ায় ঘটনার দিন অর্থাৎ প্রায় সাত মাস আগে পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণের পর গলায় কাপড় পেঁচিয়ে হত্যা করেন ফয়সাল ও লালচাঁন। এরপর রিজিয়ার ঘরেই মাটি খুঁড়ে তাকে চাপা দেন তারা।
তিনি বলেন, ফয়সাল ও লালচাঁন দুইজনেই মাদকাসক্ত। গ্রেপ্তার দুইজনকে রবিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বাসে আগুন, প্রতিবাদে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ
মাদক সেবনের অভিযোগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
চাঁদপুরে যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন
চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী এমভি কর্ণফুলী-৩ লঞ্চে আগুন লাগে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় যাত্রীদের প্রাণ বাঁচাতে একটি চরে তাদের নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: মন্দিরে আগুন: ফরিদপুরে বিক্ষুব্ধ জনতার হামলায় ২ জন নিহতের ঘটনায় বিজিবি মোতায়েন
লঞ্চে থাকা যাত্রীরা জানান, ভোলার ইলিশাঘাট থেকে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ যাত্রী নিয়ে এমভি কর্ণফুলী-৩ লঞ্চ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। দুই ঘণ্টা চলার পর হঠাৎ মধ্য মেঘনায় ইঞ্জিন রুমে আগুন ধরে ধোঁয়া বের হতে থাকে। এসময় লঞ্চ স্টাফরা নদী থেকে পানি তুলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। এসময় যাত্রীদের প্রাণ বাঁচাতে চালক লঞ্চটি কোনো মতে চাঁদপুর এলাকায় একটি চরের কাছে নিয়ে তাদের নামিয়ে দেন। শত শত যাত্রীকে পানিতে ভিজে রোদে পুড়ে তীব্র তাপদাহে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বিশেষ করে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীরা পড়ে চরম বিপাকে।
কণফুলী লঞ্চের ভোলা অফিসের কর্মকর্তা লিটন বলেন, তাদের লঞ্চের আগুন এখন নিভানো হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চে যাত্রীদের কর্ণফুলী ৪ ও ১১ তে উদ্ধার করে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত লঞ্চের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যায়নি। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চটিকে অন্য একটি লঞ্চ টেনে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।
আরও পড়ুন: গাংনীতে পান বরজে আগুন, ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি
ঢাকা শিশু হাসপাতালে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩ ইউনিট
বরিশালে দুর্গাসাগরে নেমে কলেজছাত্রের মৃত্যু
বরিশালের বাবুগঞ্জে দুর্গাসাগরে পুণ্যস্নানে নেমে পানিতে ডুবে মনদ্বীপ মন্ডল (১৮) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মাধবপাশা দুর্গাসাগরের হাজার হাজার পুণ্যার্থীর স্নান চলাকালে এই ঘটনা ঘটে।
মনদ্বীপ বরিশাল নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডের বাঁশতলা এলাকার ঘোষ বাড়ির সাগর মন্ডলের ছেলে। তিনি বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
বরিশাল মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম জানান, পানিতে ডুবার আধাঘণ্টা পর মনদ্বীপের নিথর দেহ ভেসে উঠে। তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মনদ্বীপকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, মনদ্বীপ সাঁতার জানতেন না। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে স্নানে নেমে নিখোঁজ হন তিনি।
শেবাচিম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মৃত অবস্থাতেই তার লাশ ভেসে ওঠে।
বরিশাল মহানগরীর এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন জানান, লাশটি হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
হাসপাতালের প্রিজন সেলে আসামির হাতে আসামি খুনের অভিযোগ
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের প্রিজন সেলে মো. মোতাহার নামে হত্যা মামলার এক আসামিকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে তরিকুল ইসলাম নামে অপর এক আসামির বিরুদ্ধে। এসময় অজিত নামে আরও একজন আহত হয়েছেন।
রবিবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে হাসপাতালের নিচতলার প্রিজন সেলে এই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে নদীতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু
নিহত মো. মোতাহার বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার কাউনিয়া গ্রামের রফিজউদ্দিনের ছেলে। তিনি বরগুনার একটি হত্যা মামলার আসামি ছিলেন।
এছাড়া আহত অজিত হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর গ্রামের গৌরাঙ্গ মন্ডলের ছেলে।
হামলাকারী তরিকুল ইসলাম পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। তিনি পটুয়াখালীর একটি হত্যা মামলার আসামি।
বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন, হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন মানসিক রোগী ওই আসামি অপর দুই আসামিকে স্যালাইনের স্টিলের স্ট্যান্ড দিয়ে পিটিয়েছেন। এতে দুইজন আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডেপুটি জেলার নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, প্রিজন সেলে একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এ বিষয়ে আজ কিছু বলতে পারব না।
এদিকে হাসপাতালের একটি সূত্র বলছে, প্রিজন সেলের দায়িত্বে এক নায়েক ও দুই কনস্টেবল ছিলেন। মানসিক রোগীসহ তিনজন প্রিজন সেলের একটি কক্ষে ছিলেন। ভোরে আকস্মিকভাবে মানসিক রোগী অপর দুই আসামিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ট্যান্ড দিয়ে বেধড়কভাবে পেটাতে থাকেন।
এতে মোতাহারের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। অজিত আঘাত পেলেও ততটা গুরুতর নয়। ঘটনার সময় সেলের তালার চাবি নিয়ে একজন বাইরে নাস্তা করতে গিয়েছিলেন। তাই দায়িত্বরতরা দ্রুত সময়ে প্রিজন সেলে ঢুকতে পারেননি।
হাসপাতাল প্রশাসন বলছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ওই রোগীকে নিয়মানুযায়ী হাসপাতালের মানসিক ওয়ার্ডে রাখার কথা। আর সেখানে রাখলে এমনটা হতো না। কিন্তু সেখানে না রেখে সুস্থ মানুষের মধ্যে এভাবে রাখাটা আদৌ উচিত হয়নি কারা কর্তৃপক্ষের। রাখলেও সেভাবে ব্যবস্থা রাখা উচিত ছিল।
এ বিষয়ে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায় বলেন, কী ঘটনা ঘটেছে তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। আমরা ঘটনা তদন্ত করছি। তদন্ত শেষ করে বলতে পারব। দায়িত্বরতদের অবহেলার বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় কার্গোডুবির ঘটনায় আরও ১ জনের লাশ উদ্ধার
ফেনীতে চুরির অভিযোগে মাকে বেঁধে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
বরিশাল বিভাগে কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ৭
বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে পটুয়াখালীর বাউফলে ২ জন ও পিরোজপুরে ২ জন এবং ঝালকাঠিতে ৩ জন নিহত হয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- রুবি বেগম, অনিল পাল, হেলেনা বেগম, মিনারা বেগম, মাহিয়া আক্তার, রাতুল ও সুফিয়া বেগম।
জানা গেছে, রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পিরোজপুরে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হলে ঝড়ের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলা।
এ সময় ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টিতে গাছচাপায় রুবি বেগম নামে এক নারী মারা যান। এছাড়াও ঝড় থেমে যাওয়ার পর গ্রামের একটি খাল থেকে অনিল পাল নামে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজমির হোসেন মাঝি বলেন, রবিবার সকালে ঘর থেকে বের হয়ে অনিল পাল ঝড়ের তাণ্ডবের মধ্যে পড়েন। ধারণা করছি, ঝড়ের কারণে সম্ভবত তিনি খালের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন। ঝড় থামার পর তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: কালবৈশাখীতে সুনামগঞ্জে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, আহত ২০
পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ঝড়ে গাছপালা উপড়ে পড়ে পিরোজপুর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য শুকনো খাবার ও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিহত পরিবারকে সরকারের তরফ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে এবং ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নিরূপণ করে পরে জানানো হবে।
পিরোজপুর সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রমজান আলী বলেন, ঝড়ের পরে রুবি বেগম নামে এক নারীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এ ঝড়ে এখন পর্যন্ত ১২ থেকে ১৩ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছ।
এদিকে ঝালকাঠির সদর উপজেলার শেখেরহাট, পোনাবালিয়া ইউনিয়ন ও কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে ঝড়ের সময়ে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে দুই নারী ও এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে।
তারা হলেন- শেখেরহাট এলাকার ফারুক হোসেনের স্ত্রী মিনারা বেগম, আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের মৃত আলম গাজীর স্ত্রী হেলেনা বেগম ও পোনাবালিয়া এলাকার মো. বাচ্চুর ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে মাহিয়া আক্তার ঈশান।
রবিবার বেলা ১১টার দিকে ঝড় শুরু হয়।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, ঝালকাঠিতে ঝড়ের সময় মাঠে গরু আনতে গিয়ে দুই উপজেলায় এক শিশু ও দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা হবে।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত চলা ঝড়ে ঝড়ে রাতুল নামের এক কিশোর ও সুফিয়া বেগম নামের এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন।
রাতুল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামের জহির সিকদারের ছেলে। তাকে রাস্তায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে- বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে সে মারা গেছে।
আর সুফিয়া বেগম দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মৃত আহম্মেদ প্যাদার স্ত্রী। ঘরের উপর গাছ পড়ে তিনি মারা যান।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মারজান বলেন, রাতুলকে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, তার শরীরে বজ্রপাতে ঝলসানোর কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে বজ্রপাতের শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যেতে পারে।
দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়ে সুফিয়া বেগম মারা যান।
আরও পড়ুন: কালবৈশাখী ঝড়ে ভোলায় ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, নিহত ২
কালবৈশাখী ঝড়ে ভোলায় ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, নিহত ২
কালবৈশাখী ঝড় ও শীলা বৃষ্টিতে ভোলার মনপুরা ও লালমোহনে পাঁচ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে অসংখ্য গাছপালা। এ সময় ঘর চাপা পড়ে হারিস ও বজ্রপাতে বাচ্চু নামে ২ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও ৪ থেকে ৫ জন।
রবিবার সকালে লালমোহনে উপজেলায় বদরপুর সাতবাড়িয়া এলাকায় এবং চরভূতা ইউনিয়নের লেঙ্গুটিয়া গ্রামে ২ জন মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: কালবৈশাখীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফসলি জমি-বাড়ি বিধ্বস্ত, ক্ষতিগ্রস্ত বৈদ্যুতিক লাইন
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ করে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে কালবৈশাখী ঝড় ও শীলা বৃষ্টি শুরু হয়। এসময় ঝড়ে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট, উত্তর সাকুচিয়া ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঝড়ের সময় লালমোহনে উপজেলায় বদরপুর সাতবাড়িয়া এলাকায় ঘর চাপা পড়ে হারিস নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং লালমোহনের চরভূতা ইউনিয়নের লেঙ্গুটিয়া গ্রামের বাচ্চু নামে একজন বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। এছাড়া ৪ থেকে ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অনেক পরিবার মাথার উপর টিনের চালা পর্যন্ত নেই। রাস্তাঘাটে গাছপালা উপড়ে পড়ে আছে। বিদ্যুতের খুটি ভেঙে গেছে।
লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে ২ জনের মৃত্যুসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে বরাদ্দের জন্য জেলায় পাঠাবো। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের তা প্রদান করা হবে।
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহিরুল ইসলাম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ের পর ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কোনো সাহায্য সহযোগিতা পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: কালবৈশাখীতে বাগেরহাটে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু, আহত ৮
কালবৈশাখীতে সুনামগঞ্জে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, আহত ২০
পিরোজপুরে মোটরসাইকেলে-প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে কলেজছাত্র নিহত
পিরোজপুরে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে জহিরুল ইসলাম রিফাত নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলে থাকা আরেক কলেজছাত্র আসফাক আহম্মেদ সাজিদ।
সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুতে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জের ঘিওরে ট্রলিচাপায় কলেজছাত্র নিহত
নিহত জহিরুল ইসলাম রিফাত মুন্সি পিরোজপুরে জেলার ভান্ডারিয়া পৌর শহরের পুরাতন ইস্টিমারঘাট এলাকার মো. হালিম মুন্সির ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানায়, রিফাত ও তার বন্ধু পিরোজপুরে পাসপোর্ট অফিস থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর কুমিরমারা প্রান্তে কাউখালী উপজেলার বেকুটিয়ার দিক থেকে আসা একটি গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলের দুই আরোহী রিফাত ও সাজিদ গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের খুলনা মেডিকেলে পাঠানো হয়। যাওয়ার পাথে রিফাত মুন্সি মারা যান।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিকুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই গাড়ি চালক পালিয়ে যান। পুলিশ প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল জব্দ করেছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র নিহত
মাগুরায় ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে কলেজছাত্র নিহত
বরগুনা প্রেস ক্লাব দখলের চেষ্টার মামলায় ৭ আসামি কারাগারে
বরগুনা প্রেস ক্লাব দখলের চেষ্টা ও হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাত আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হারুন অর রশিদের আদালত এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বরগুনা প্রেস ক্লাবের অধিকাংশ সদস্য বার্ষিক শিক্ষা সফরে ভারতে থাকার সময় ১৯ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় এক ইউপি সদস্য মাসুদ তালুকদার ও মুশফিক আরিফের নেতৃত্বে বরগুনা প্রেস ক্লাবে হামলা চালায় একটি মহল।
এ ঘটনায় আহত হন বরগুনা প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার সোহেল হাফিজ, যমুনা টেলিভিশনের রিপোর্টার ফেরদৌস খান ইমন ও সময় টেলিভিশনের রিপোর্টার সাইফুল ইসলাম মিরাজসহ ৭ জন সংবাদকর্মী। পরে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০ জনকে অভিযুক্ত করে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করে বরগুনা প্রেস ক্লাব।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে স্কুলের গাছ বিক্রির টাকা আত্মসাতের মামলায় প্রধান শিক্ষক কারাগারে
বৃহস্পতিবার আসামিরা হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হারুন অর রশিদ কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।
আসামিরা হলেন- মুশফিকুল ইসলাম (মুশফিক আরিফ), এম হারুন অর রশিদ রিংকু, সগীর হোসেন, শাজনুস শরীফ, আল-আমিন, জাফরুল হাসান রুহান (রুদ্র রুহান) ও রাকিবুল হাসান রাজন খান।
বাদী পক্ষের মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী গোলাম মোস্তফা কাদের ও আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ কে এম শফিকুল ইসলাম নেছার।
এ ব্যাপারে বরগুনা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাফর হোসেন হাওলাদার বলেন, বরগুনা প্রেস ক্লাবে হামলার ঘটনার ১৩ দিন পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মামলার ১ নম্বর আসামি মাসুদ তালুকদার। এই স্বাভাবিক মৃত্যুকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা মামলা সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করে ওই মহল। এছাড়াও বরগুনা প্রেস ক্লাবের প্যাড ও লোগো ব্যবহার করে আসামিরাসহ বাইরের কিছু সাংবাদিকদের নিয়ে বরগুনা প্রেস ক্লাবের নামে একটি ভুয়া কমিটির ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: চেক জালিয়াতির মামলায় সীতাকুণ্ডের ইউপি সদস্য বাবলু কারাগারে