বৈদেশিক-সম্পর্ক
বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতার অঙ্গীকার
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত প্রধান সংস্কার উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা অবকাঠামো, জলবায়ু সহনশীলতা, সেবা প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজেশন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং দারিদ্র্য বিমোচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে সহায়তার জন্য সিককে ধন্যবাদ জানান।
সেক প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, বিশ্বব্যাংক ১৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরীতে স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং পানি ও স্যানিটেশন সেবার উন্নতির পাশাপাশি জলবায়ুর সহনশীলতা এবং পরিবেশগত টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তার জন্য তিনটি অর্থায়নে প্রায় ১২০ কোটি ডলার অনুমোদন করেছে।
রবিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ৯০ কোটি ডলারের দুটি অর্থায়ন সই হয়েছে।
এর মধ্যে একটি প্রকল্প দক্ষিণে কক্সবাজার থেকে উত্তরে পঞ্চগড় পর্যন্ত অর্থনৈতিক করিডোর বরাবর জলবায়ু-সহনশীল এবং জেন্ডার-প্রতিক্রিয়াশীল অবকাঠামো নির্মাণ করে সেকেন্ডারি শহরগুলোর উন্নয়ন করবে।
অন্য অর্থায়ন, সবুজ প্রবৃদ্ধিকে সমর্থন করার জন্য ৫০ কোটি ডলারের উন্নয়ন নীতি ঋণ, এই মাসের মধ্যে জাতীয় কোষাগারে বিতরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশন গঠন
১৯৭২ সাল থেকে বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন পোর্টফোলিও দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার, যা বাংলাদেশের উন্নয়ন গতিপথে বিশেষ করে দারিদ্র্য হ্রাস, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করা এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
প্রধান উপদেষ্টা জানুয়ারিতে অবসরে যাওয়া সেকের ও এবং তার পরিবারের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৬ ঘণ্টা আগে
শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চায় ঢাকা, দিল্লিকে চিঠি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক চিঠি পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লেখা নোট ভারবালের কথা উল্লেখ করে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ভারতকে অবহিত করেছি।’
গত ১২ নভেম্বর শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারির অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলামকে চিঠি দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ পৃথক মামলায় শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও একই ধরনের চুক্তি রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশন গঠন
পলাতক অপরাধীদের দ্রুত হস্তান্তর করার সুবিধার্থে ২০১৬ সালের জুলাইতে বাংলাদেশ ও ভারত তাদের দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তির ১০(৩) অনুচ্ছেদ সংশোধন করে।
৫ আগস্ট পদত্যাগের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়। এর পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগে
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন ব্রিফিংয়ে জানান, দুপুরে বঙ্গভবনে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত ইউসেফ রামাদান ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশের জন্য বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচারে নারী ও শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: সীমান্তে বিজিবিকে অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালনের আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
রাষ্ট্রপতি বলেন, ফিলিস্তিনের সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘ, ওআইসি, ন্যামসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশ সবসময় জোরালো ভুমিকা রেখে আসছে এবং আগামীতেও রাখবে।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি এবং সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
১১ ঘণ্টা আগে
‘গণতান্ত্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে সমর্থন করে ভারত’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে তারা একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে সমর্থন করে। এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘এটিই বাংলাদেশের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক।’
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে জয়সওয়াল বলেন, পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, উদ্বেগ ও স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে ভারত।
সম্প্রতি দুই দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে আমাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে আমাদের (ভারতের) দৃষ্টিভঙ্গি খুব স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।’
‘ভারত জোর দিয়ে বলছে যে, বাংলাদেশের জনগণই দুই দেশের সম্পর্কের প্রধান অংশীদার। বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগিতা, যোগাযোগ, বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বহুমুখী ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত ভারত। বাংলাদেশের জনগণের সুবিধার জন্যই এসব কার্যক্রম পরিচালিত হয়।’
আরও পড়ুন: সম্পর্কোন্নয়নে একাত্তরের সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুরসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে যুক্ত করে একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন। ১৯৪৭ সালে বাংলা ভাগের ধারাবাহিকতায় যে বাংলাদেশ হয়েছে, সেই ভূখণ্ডকে ‘খণ্ডিত’ আখ্যা দিয়ে তিনি লেখেন, ‘নতুন ভূখণ্ড ও বন্দোবস্ত লাগবে।’ অবশ্য পরে পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে এক সাংবাদিক ভারতের অবস্থান জানতে চাইলে মুখপাত্র জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। এই ইস্যুতে আমাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। পোস্ট সরিয়ে ফেলার বিষয়ে জেনেছি। জনসম্মুখে মন্তব্যের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে আমরা সতর্ক থাকার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘ভারত যখন বাংলাদেশের জনগণ ও অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে বারবার আগ্রহের ইঙ্গিত দিয়েছে, তখন জনসম্মুখে এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতা দেখানো দরকার।’
জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বার্থের ওপর প্রভাব ফেলে এমন সব ঘটনা ভারত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের বিষয়গুলো আমরা খুব গুরুত্ব সহকারে নেই এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসকে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ
২ দিন আগে
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিজি ও সামোয়ার ১২ প্রবাসীকে পুরস্কার প্রদান
ক্যানবেরা, ২১ ডিসেম্বর (ইউএনবি)- বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিজি ও সামোয়ার ১২ প্রবাসীকে পুরস্কার দিয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরা।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক প্রবাসী দিবস ও জাতীয় অভিবাসী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠানো, বাংলাদেশি পণ্য আমদানি এবং শিল্প, সাহিত্য, গবেষণায় অবদানসহ দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশিদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতার জন্য এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরার চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স ড. মো. দেওয়ান শাহরিয়ার ফিরোজ পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের সঙ্গে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে সেতুবন্ধন হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা কাজ করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য তুলে ধরার ওপরও জোর দেন তিনি।
বৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠানো ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মো. শহিদুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন নাঈম, সাফাত বিন আজাদ, নিউজিল্যান্ড প্রবাসী ফয়সাল মিয়া, সামোয়া প্রবাসী মো. শাহাজান এবং বাংলাদেশি পণ্য আমদানির জন্য অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মোহাম্মদ মুরাদ ইউসুফ ও নিউজিল্যান্ড প্রবাসী মো. সাইফুল ইসলাম খানকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
এছাড়া শিল্প, সাহিত্য, গবেষণায় অবদানের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ড. মোহাম্মাদ আলী মনি, অধ্যাপক এম আখতার হোসেন ও ফিজি প্রবাসী ড. কবির আল মামুনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশি হিসেবে সফলদের মধ্যে রামিম জাইয়ান খান ও অ্যানি রেনেসা সাবরিনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
হাইকমিশনের কাউন্সেলর (শ্রম ও কল্যাণ) মো. সালাহউদ্দিনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবসের এ অনুষ্ঠানে পুরস্কার গ্রহণকারীরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এ সময় বক্তব্য দেন ক্যানবেরায় কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. আবুল হাসান সৈয়দ এবং প্রবাসী বাংলাদেশি সৈয়দ আব্দুল্লাহ সাঈদ। অনুষ্ঠানে শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় এবং রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
২ দিন আগে
প্রযুক্তিকে কাজে লাগান, কার্যকর পদক্ষেপ নিন: ডি-৮ সদস্যদের অধ্যাপক ইউনূস
কীভাবে 'কাজের ক্ষেত্র' বিকশিত হচ্ছে তা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে প্রযুক্তি ব্যবহার এবং 'শিক্ষা' পুনঃউদ্ভাবনসহ কর্মমুখী উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি তরুণদের দক্ষতা ও শিক্ষার পুনর্গঠন এবং আরও বিকাশের মাধ্যমে সক্রিয় উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশের জন্য উৎসাহিত করেন।
কায়রো থেকে দেশে ফেরার পথে অধ্যাপক ইউনূস সম্মেলনের প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যুবসমাজের জন্য বিনিয়োগ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ডি-৮ দেশগুলোর তরুণদের মধ্যে উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা ও দক্ষতা উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব করেন তিনি।
ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মিশর, ইরান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষামন্ত্রীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ ও ওইসব দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বর্তমান অবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করে আগামী দিনগুলোতে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
১৯ ডিসেম্বর কায়রোতে অনুষ্ঠিত ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কার্যকর সংযোগ স্থাপনের আহ্বান জানান।
শীর্ষ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা ডি-৮ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি অনুমোদন এবং ঢাকায় ডি-৮ ইয়ুথ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তসহ মাইলফলক অর্জনসহ তিন বছরেরও কম সময় ধরে সফল মেয়াদে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির কাছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা ডি-৮ অর্গানাইজেশনের সভাপতিত্ব হস্তান্তর করেন।
সভাপতির দায়িত্ব হস্তান্তরের সময় অধ্যাপক ইউনূস ডি-৮ এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান।
তিনি কোভিড-১৯ মহামারি এবং বিশ্বকে আক্রান্ত করা বহুমুখী সংকটসহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও ডি-৮ সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
অধ্যাপক ইউনূস ডি-৮ এর সহযোগিতামূলক কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে মিশরকে সমর্থন দিতে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ডি-৮ সদস্য দেশগুলোর সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা ও অভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটিয়ে কায়রো ঘোষণাপত্র গ্রহণের মধ্য দিয়ে সম্মেলন সমাপ্ত হয়।
আরও পড়ুন:সম্পর্কোন্নয়নে একাত্তরের সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ তুগগার এবং মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষামন্ত্রী জামব্রি আবদুল কাদির অংশ নেন।
১৯ ডিসেম্বর শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক অধিবেশন শেষে মিশর সরকার এবং ডি-৮ সচিবালয় আয়োজিত 'গাজা ও লেবাননের পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ অধিবেশনে' প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দেন।
তিনি বিশ্ব নেতাদেরকে মানবিক সহায়তার বাইরেও গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননের পুনর্গঠনের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস ফিলিস্তিনিদের প্রতি বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং অবিলম্বে হামলা বন্ধের আহ্বান জানান।
তিনি যুদ্ধাপরাধের জবাবদিহিতার প্রয়োজনীয়তা এবং ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ও কার্যকর ফিলিস্তিনের রাজধানী হিসাবে আল-কুদস আল-শরিফকে নিয়ে দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের উপলব্ধির উপর জোর দিয়ে সংকট মোকাবিলায় চূড়ান্ত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস গাজা ও লেবাননের পুনর্গঠনে আনুমানিক খরচের বরাদ্দ দেওয়া এবং সম্পদ আহরণের জন্য আন্তর্জাতিক কৌশল প্রণয়নের জন্য ডি-৮ এর নেতৃত্বে প্রক্রিয়া শুরু করার প্রস্তাব করেন।
বিশেষ অধিবেশন শেষে ডি-৮ নেতারা ফিলিস্তিন ও লেবানন পরিস্থিতি নিয়ে একটি যৌথ ইশতেহার গ্রহণ করেন।
ডি-৮ নেতারা ছাড়াও বিশেষ অধিবেশনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি, আজারবাইজানের প্রধানমন্ত্রী আলী আসাদোভ, ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহা এবং আরব রাষ্ট্র লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: তরুণ জনশক্তিকে দক্ষ করতে দৃষ্টিভঙ্গি-নৈতিকতার ওপর গুরুত্বারোপের আহ্বান ড. ইউনূসের
৩ দিন আগে
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো পেল 'অ্যাম্বাসেডর'স ট্রাভেল গ্র্যান্ট'
মিয়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস দূতাবাসে 'আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৪' উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো চার প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে 'অ্যাম্বাসেডরস ট্রাভেল গ্রান্ট' দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত ড. এম মনোয়ার হোসেন নতুন প্রজন্মকে প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কে অবহিত করা এবং দু'দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই অনুদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এই কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ দূতাবাস মিয়ানমারে বা বাংলাদেশে তাদের শিক্ষা/গবেষণা কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভ্রমণ ব্যয় বহন করবে।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসকে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ
'আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৪' উপলক্ষে মিয়ানমারে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ দূতাবাস এক সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া, প্রবাসীদের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং অনুদানপ্রাপ্তদের অনুভূতি ব্যক্ত করার পর্বও ছিল।
রাষ্ট্রদূত মনোয়ার হোসেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
আরও পড়ুন: তরুণ জনশক্তিকে দক্ষ করতে দৃষ্টিভঙ্গি-নৈতিকতার ওপর গুরুত্বারোপের আহ্বান ড. ইউনূসের
৩ দিন আগে
তরুণ জনশক্তিকে দক্ষ করতে দৃষ্টিভঙ্গি-নৈতিকতার ওপর গুরুত্বারোপের আহ্বান ড. ইউনূসের
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন,আমাদের আরও গভীরভাবে ভাবতে হবে যে, কীভাবে লাখ লাখ তরুণকে এমন একটি কর্মক্ষেত্রে দক্ষ করে তোলা যায়- যেখানে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, মূল্যবোধ, নৈতিকতাও কঠিন দক্ষতার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
১১তম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা তারপরও ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রবাবে লাখ লাখ লোককে পুনরায় দক্ষ করার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হয়েছি।’
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং ডি-৮ সেক্রেটারি জেনারেল অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
এখন মৌলিক এআই-ভিত্তিক সরঞ্জাম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলোর সুবিধা আছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আসুন আমরা একটি সহযোগিতামূলক শিক্ষা কর্মসূচি সম্পর্কে চিন্তা করি, যা আমাদের জাতীয় উদ্যোগের পরিপূরক হতে পারে।’
অধ্যাপক ইউনূস কায়রো ঘোষণা এবং সম্মেলনের ফলাফল গ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো সমাধানে তাদের সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা ও অভিন্ন অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটান। সকলকে তাদের সম্মিলিত কর্মসূচিগুলোকে নতুন করে দেখার আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
সামনে এগিয়ে যাওয়ার উপায় হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা দুটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের প্রস্তাব করেন।
ফলিত বিজ্ঞান বিষয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'প্রথমত, আসুন আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কার্যকরী, প্রভাবিত সংযোগ তৈরি ও গভীর করি, বিশেষত ছেলে এবং মেয়েদের স্বার্থে তাদের উদ্যোক্তা হিসাবে প্রস্তুত করার দিকে মনোনিবেশ করি।’
ড. ইউনূস বলেন, উদ্যোক্তা ও উচ্চতর জ্ঞানকে বর্তমানের চেয়ে অনেক কাছাকাছি নিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ফলাফল ভিত্তিক জ্ঞানার্জন। যা ডি৮ দেশগুলোর তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বৈশ্বিক বাজারের নেতাদের কাছ থেকে বিশ্বব্যাপী সুরক্ষিত ব্যবসা এবং শিল্প তৈরি করতে পারে। যদি ডি-৮ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কাঠামোর দিকে নতুন করে নজর দিতে বলা হয়, তাহলে আমাদের তা করা উচিত।’
ড. ইউনূস বলেন, মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করার জন্য ব্যবসার পরিবর্তন কেবল মাত্র তাদের পেশা হবে না, বরং তারা নতুন সভ্যতা গড়তে সামাজিক ব্যবসায় জড়িত হবে।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, বহু বছর ধরে আমরা প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে আমাদের দেশগুলোতে লাখ লাখ লোককে মৌলিক শিক্ষা এবং দক্ষতা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘১২০ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায়শই এটি একটি ক্রমবর্ধমান কঠিন কাজ। একটি পর্যায়ে পৌঁছাতে আমরা দূরশিক্ষণের মাধ্যমে চেষ্টা করেছি।’
তিনি বলেন, তারা এমন এক সময়ে মিলিত হচ্ছেন যখন বিশ্ব নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। ‘তারপরও অনেক সুযোগ আমাদেরও তাক লাগিয়ে দিচ্ছে।’
ড. ইউনূস বলেন, 'তরুণ ও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের (এসএমই) ওপর আলোকপাত করা এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য আমাদের অভিন্ন আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যথাযথভাবে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।’
ডি-৮ দেশগুলোতে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে গড় মধ্যবয়সী (২৭ বছর) বেশি।
তিনি বলেন, প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। একটি বেসরকারি খাত চালিত অর্থনীতিতে, আমরা যখন তাদের বাজারের উপযোগী করে তোলার চেষ্টা করি বা চটপটে উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশে উৎসাহিত করি, তখন আমরা দেখতে পাই যে প্রযুক্তির উত্থান কীভাবে চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলো তৈরি করছে যা আগে কখনও হয়নি।
আমাদের দেশে ম্যানুফ্যাকচারিং ল্যান্ডস্কেপে লাখ লাখ শ্রমিক রয়েছে যাদের সাধারণত কম দক্ষ।
আরও পড়ুন: সম্পর্কোন্নয়নে একাত্তরের সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
ড. ইউনূস বলেন, 'কিন্তু আগামীর উৎপাদন ও সেবা অর্থনীতি দ্রুত রূপান্তরিত হচ্ছে, যা মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ডেটা-চালিত সরঞ্জাম এবং অ্যাপ্লিকেশনের উপর নির্ভর করে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষি এখনও সমাজ ও অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। তারা দেখতে পায় যে বেশিরভাগ ক্ষুদ্র কৃষকের সন্তানরা তাদের পিতামাতারা ঐতিহ্যের বিষয় হিসাবে যেভাবে গ্রহণ করেছিলেন সেভাবে তাদের জন্য কঠিন, ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রায়শই অনিশ্চিত কৃষিকাজ করতে খুব কমই আগ্রহী।
ড. ইউনূস বলেন, 'বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চল এমনকি এশিয়া, আফ্রিকা ও আরব বিশ্ব জুড়ে ভ্রমণ করে আমি দেখেছি আজকের লাখ লাখ তরুণ চারপাশের সবকিছুতে দ্রুত প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে গ্রহণ করছে। এটি হচ্ছে- হয় দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জ ঘুরিয়ে দিতে অথবা নতুন নতুন সুযোগের সন্ধান করতে। এসব কয়েক বছর আগেও অনেকে অসম্ভব বলে মনে করত।
প্রায়শই, তরুণরা মাঠে অসহনীয় জলবায়ু চাপ মোকাবিলায় অদ্ভুত কল্পনা করছে।
ড. ইউনূস বলেন, 'আমি বিশেষ করে এটি গুরুত্ব দিচ্ছি যে, আমাদের কৃষি ও খাদ্য আমাদের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত করতে এবং আমাদের নিজস্ব সমাজে সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হচ্ছে।’
এর ফলে লাখ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) তাদের বিবেচনায় আসে।
বেশিরভাগ এসএমই অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির মধ্যে সাফল্য লাভ করে। তারা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলের সঙ্গে বৃদ্ধি এবং সংযুক্ত হতে চায়।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘প্রায়শই, তাদের আনুষ্ঠানিক কাঠামো, প্রাতিষ্ঠানিক অর্থায়ন বা সমর্থন আর্কিটেকচারের সুবিধার অভাব রয়েছে এবং তারা বাজারের নিয়ম-অনুশীলন-মানগুলোর সঙ্গে অপরিচিত। তবুও, আমি দেখতে পাচ্ছি যে এসএমইগুলো কতটা আশ্চর্যজনকভাবে সক্ষম এবং প্রতিযোগিতামূলক।’
তিনি বলেন, ডি-৮ দেশগুলোতে সম্মিলিতভাবে তাদের যথেষ্ট সম্পদ রয়েছে। এমনকি ব্যক্তিগত জনকল্যাণমূলক অবস্থায়ও এই অসংখ্য এসএমইর পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের সামান্য সমর্থন দিয়ে আমরা তাদের জন্য এবং আমাদের জনগণের জন্য একটি পুণ্যময় 'শুভ চক্র' গঠন করতে পারি। আমাদের উচিত ঝুঁকিমুক্ত অর্থায়নের মাধ্যমে তাদের কাছে অর্থ প্রবাহের সুযোগ করে দেওয়া।”
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা যা আলোচনা করি তার বাইরে আমরা ডি-৮ সরকারগুলো, যুব সম্প্রদায় - স্টার্টআপ - ব্যবসা - অর্থের সঙ্গে জড়িত অকপট, ফলাফল-ভিত্তিক কথোপকথনের আয়োজন করি। দেখুন আমরা তাদের মধ্যে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পারি কিনা। বাংলাদেশ এ ধরনের উদ্যোগ এগিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকবে এবং ২০২৫ সালে প্রথম মাল্টি-স্টেকহোল্ডারদের বৈঠক আহ্বান করুন।’
তিনি বলেন, যুব উদ্যোক্তাদের বিশ্ব হিসাবে 'কাজের ক্ষেত্র' যেভাবে দ্রুত বিকশিত হচ্ছে, ডি-৮ দেশগুলোকে তাদের ছেলে এবং মেয়েদের অর্থনীতির নেতা হওয়ার জন্য জায়গা তৈরি করতে 'শিক্ষা' পুনরায় উদ্ভাবন করতে হবে।
ইউনূস বলেন, 'আমাদের দেশে রয়েছে সুমহান ঐতিহ্য, প্রজ্ঞা ও অর্জন। আমাদের দেখতে হবে কীভাবে আমরা সেগুলো সন্নিবেশিত করতে পারি এবং তৈরি করতে পারি।বহু বছর ধরে আমাদের সঙ্গে থাকা ডিজিটাল বিপ্লবের পূর্ণ সুবিধা আমরা এখনও গ্রহণ করতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, 'এখন যেহেতু এআই এসেছে, আসুন আমরা চিন্তা করি, আমাদের উদ্যোক্তা ছেলে-মেয়েদের সুবিধার্থে লাফিয়ে বাধাগুলো দূর করতে পারি।’
আরও পড়ুন: সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে চলতি মাসেই ঘোষণার ইঙ্গিত ড. ইউনূসের
৪ দিন আগে
সম্পর্কোন্নয়নে একাত্তরের সমস্যা সমাধানে পাকিস্তানের প্রতি ড. ইউনূসের আহ্বান
ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের প্রতি একাত্তরের সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ড. ইউনূস বলেন, ‘ইস্যুগুলো বারবার আসছে। আসুন আমরা এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করি।’
শাহবাজ শরীফ বলেন, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে, তবে 'যদি অন্যান্য অমীমাংসিত ইস্যু থেকে থাকে' তবে তিনি সেগুলো দেখতে পারলে তিনি খুশি হবেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সবকিছুর সমাধান করতে পারলে ভালো হবে।’
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন।
বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দল বিনিময়ের মাধ্যমে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে সম্মত হন তারা।
আরও পড়ুন: ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিশর পৌঁছেছেন ড. ইউনূস
দুই নেতা চিনি শিল্প ও ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস ও শরীফ সার্কের পুনরুজ্জীবনসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। এটি প্রধান উপদেষ্টা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ঘোষিত পররাষ্ট্রনীতির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।
২০০৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এই ড. ইউনূস 'প্রয়োজনীয় সংস্কার' শেষে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের আগে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে তার সরকারের পরিকল্পনার কথাও বলেন।
তিনি বলেন, সংস্কার নিয়ে সংলাপের মাধ্যমে ঐকমত্য হওয়ার জন্য তিনি একটি গঠন কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
শরীফ বলেন, 'আমরা আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চাই।’
তিনি সার্ক ও বাংলাদেশকে পুনরুজ্জীবিত করে আঞ্চলিক সংস্থার শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করার উদ্যোগের জন্য অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করেন।
'এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ বলেও শরীফকে জানান অধ্যাপক ইউনূস।
আরও পড়ুন: ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিসর গেলেন ড. ইউনূস
৪ দিন আগে
নির্বাচনি প্রস্তুতির অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত যুক্তরাষ্ট্রের
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা 'শান্তিপূর্ণভাবে' 'অবাধ ও সুষ্ঠু' নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, 'নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে আমরা তাকে স্বাগত জানাই, যা শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণকে তাদের নিজস্ব সরকারের প্রতিনিধি বেছে নেওয়ার সুযোগ দেবে।’
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) স্টেট ডিপার্টমেন্টে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্যাটেল বলেছিলেন যে আমেরিকা সময় সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা এই পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীন আইনের শাসনের প্রতি সম্মানকে উৎসাহিত করতে যাচ্ছি, পাশাপাশি গণতান্ত্রিক নীতিগুলোর প্রতি সম্মান যাতে একটি রূপান্তর সফল হয়।’
প্যাটেল আরও বলেন, 'বিশ্বের মতো আমারাও শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে কথা বলব।’
আরও পড়ুন: ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিসর গেলেন ড. ইউনূস
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত দুই দশকে শত শত বাংলাদেশিকে জোরপূর্বক গুম করার খবরে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, 'জোরপূর্বক গুম একটি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন। যা এর শিকারদের অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক বা নিখোঁজ হওয়ার ট্রমায় ফেলে।’
প্যাটেল বলেন, এটি পরিবারগুলোর উপর অনিশ্চয়তার ট্রমাও চাপিয়ে দেয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই অপরাধের তদন্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই এবং ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য ন্যায্য ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করি।’
১৭ ডিসেম্বর এক ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক উল্লেখ করেন, ৩০ জনেরও বেশি সাংবাদিক আছেন যারা কোনো শুনানি ও জামিন ছাড়াই ৬০ দিনেরও বেশি সময় কারাগারে রয়েছেন। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস এবং বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থা একটি পিটিশনে সই করেছে।
তাদের অন্তত জামিন পেতে যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিবৃতি দেবে কিনা, তা জানতে চান ওই সাংবাদিক।
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, তারা বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে দেখছেন।
মিলার বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা ও সম্মান করা উচিত। আইনের শাসন ও গণমাধ্যমের প্রতি সম্মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ ধরনের বিষয়গুলো মোকাবিলা করা উচিত।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসকে ২০২৫ সালে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ
৪ দিন আগে