অর্থনীতি
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হলেন ড. আইয়ুব মিয়া
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছে দেশের পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে গঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’। দেশের সবচেয়ে বড় এই সরকারি ইসলামী ব্যাংকটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়াকে।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভায় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের চূড়ান্ত লাইসেন্স অনুমোদন করা হয়। এরপর চেয়ারম্যান নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই নতুন ব্যাংকটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করবে।
যে পাঁচটি ব্যাংক একীভূত হয়েছে সেগুলো হলো: ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বারবার তারল্য সহায়তা দেওয়ার পরও এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা উন্নতি হয়নি, বরং শেয়ারবাজারে তাদের শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে কমে গেছে এবং প্রায় সব ব্যাংকের নেট অ্যাসেট ভ্যালু (এনএভি) এখন ঋণাত্মক।
এই নাজুক পরিস্থিতিতেই একত্রীকরণের মাধ্যমে নতুন ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নতুন ব্যাংকটির মোট পেইড-আপ ক্যাপিটাল নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা দেবে, এবং বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা আসবে আমানতকারীদের শেয়ার থেকে। প্রাথমিকভাবে অনুমোদিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ নভেম্বর সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
৩ দিন আগে
২ হাজার ৪০৩ টাকা বেড়ে নতুন দরে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশের বাজারে মূল্যবান এ ধাতুটির দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৪০৩ টাকা। ফলে এখন এক ভরি স্বর্ণে দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার ৫৭০ টাকা।
রবিবার (৩০ নভেম্বর) থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
গতকাল (শনিবার) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এ দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪০৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার ৫৭০ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩১০ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ এক হাজার ৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৭১ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭২ হাজার ২৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৬৭৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৩২৭ টাকা।
বাজুস জানিয়েছে, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গহনার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।
এর আগে গত ২০ অক্টোবর স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয় ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা।
৪ দিন আগে
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রম আগামী সপ্তাহে শুরু হবে: গভর্নর
আর্থিকভাবে দুর্বল শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক নিয়ে গঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের’ কার্যক্রম ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলনে’ যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা জানান।
দৈনিক বণিক বার্তা আয়োজিত এই সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ছিল, অর্থনীতির ভবিষ্যৎ গতিপথ ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার (Economies Future Trajectory and Political Commitment)।
গভর্নর বলেন, বর্তমান সরকারের সামনে থাকা বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারকে গভীরভাবে বুঝতে হবে। কারণ এগুলো ‘সঞ্চিত সমস্যা’ হিসেবে রয়ে গেছে। তিনি বলেন, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকে বাংলাদেশ ব্যাংককে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে।
এলসি খোলার ওপর আরোপিত সব ধরনের বিধিনিষেধ ও প্রতিবন্ধকতা বাংলাদেশ ব্যাংক তুলে নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এলসি খোলার বিষয়টি বিভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ বেড়েছে; গতবারের এই সময়ের চাইতে বেশি।
তার ভাষ্যে, আমাদের এক্সটারনাল সেক্টরটা (বহির্বাণিজ্য খাত) স্থিতিশীল হয়েছে, সেখানে কোনো ভালনারবিলিটি (দুর্বলতা) নেই। ব্যাংকিং খাতে ডলারের কোনো অভাব নেই; যেকোনো পরিমাণ ডলার আপনারা কিনতে পারবেন যদি আপনি বাংলাদেশের টাকা নিয়ে আসেন।
৫ দিন আগে
ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিদেশযাত্রায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ি
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশযাত্রায় কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাংকিং কার্যক্রমে কোনও ধরনের শূন্যতা বা প্রশাসনিক বিঘ্ন এড়াতেই এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে সকল তফসিলি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অতি জরুরি ও একান্ত অপরিহার্য কারণ ছাড়া ব্যাংক-কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদেশ ভ্রমণ করবেন না।
নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক উল্লেখ করেছে, নির্বাচনকালীন ব্যাংকিং খাতকে স্থিতিশীল ও নির্বিঘ্ন রাখার স্বার্থেই এই ‘সীমিত ভ্রমণনীতি’ কার্যকর করা হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে শূন্যতা তৈরি হলে তা ব্যাংক পরিচালনায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে—এই বিবেচনায় প্রয়োজনীয় সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সিদ্ধান্তটি জারি করেছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
৮ দিন আগে
২০২৭ সালের জুলাইয়ের মধ্যে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় আসবে: গভর্নর
ব্যাংক, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস), বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানিসহ সব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থা চালু করে সম্পূর্ণ ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থায় পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২৭ সালের জুলাইয়ের মধ্যে এই ব্যবস্থা চালুর সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকার ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত ‘ইনস্ট্যান্ট পেমেন্ট ইন বাংলাদেশ: আনভেইলিং ইনক্লুশন অপরচুনিটিজ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন।
অনুষ্ঠানে গেটস ফাউন্ডেশন-সমর্থিত মোজোলুপের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন আন্তঃলেনদেন প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল চুক্তি সই করে। নতুন প্ল্যাটফর্মটির নাম হবে ‘ইনক্লুসিভ ইনস্ট্যান্ট পেমেন্ট সিস্টেম (আইআইপিএস)।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বর্তমান ইন্টারঅপারেবল সিস্টেমটি চালু করা হলেও তা সফল হয়নি। বহু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখনো এতে অংশ নেয়নি। বড় মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোরও কেউ কেউ এখনো যুক্ত হয়নি, ফলে ব্যবহার সীমিত। তাই আমরা আরও আধুনিক ও ব্যাপকতর একটি প্ল্যাটফর্মে যাচ্ছি।’
তিনি জানান, ২০২৭ সালের জুলাই মাসের মধ্যে ব্যাংক, এমএফএস, এজেন্ট ব্যাংকিং, এনবিএফআই, বিমা কোম্পানি—সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থা চালু করা হবে, যাতে ক্যাশ আউটের প্রয়োজনীয়তাও ধীরে ধীরে কমে আসে।
গভর্নরের বলেন, ‘ক্যাশলেস অর্থনীতি আমাদের ভবিষ্যৎ। ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে লেনদেনে স্বচ্ছতা বাড়বে, দুর্নীতি কমবে এবং সরকারের রাজস্ব সংগ্রহও বৃদ্ধি পাবে। এজন্য সব প্রতিষ্ঠানকে একই চ্যানেলের আওতায় আনতে হবে। গেটস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় নতুন প্ল্যাটফর্ম সেই লক্ষ্যই পূরণ করবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নতুন আইআইপিএস প্ল্যাটফর্ম চালুর মাধ্যমে ব্যাংক থেকে ব্যাংক, ব্যাংক থেকে এমএফএস, এমএফএস থেকে বিমা—সবকিছু একই প্রযুক্তি কাঠামোর আওতায় আসবে। এতে সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান—সবাই দ্রুত, নিরাপদ ও কম খরচে লেনদেন করতে পারবে।
১০ দিন আগে
এআই ব্যবহার করে অর্থ উপদেষ্টার ভুয়া ভিডিও প্রচার, মন্ত্রণালয়ের সতর্কতা
সম্প্রতি একটি স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের বিজ্ঞাপন বা প্রচারের কাজে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে একটি ভুয়া (ফেক) ভিডিও/নিউজ প্রচার করছে। এর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় বা অর্থ উপদেষ্টার কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভিডিওটিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভয়েস প্রদান ও ব্যাকগ্রাউন্ডে অর্থ উপদেষ্টার ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর কন্টেন্ট জনমনে ভুল ধারণা সৃষ্টি করছে এবং অর্থ উপদেষ্টার সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ইতোমধ্যে ভিডিওটি অপসারণ ও আইনগত ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের ভুয়া ভিডিও বা খবরে বিভ্রান্ত না হয়ে সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এ ছাড়া এসব ভিডিও বা খবর বিশ্বাস করে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।
১৮ দিন আগে
শরিয়াভিত্তিক ৫ ব্যাংকের বোর্ড বাতিল হলেও গ্রাহকসেবা চালু থাকবে: গভর্নর
শরিয়াভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংকের বোর্ড বাতিল হলেও গ্রাহকসেবায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না বলে বলে আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, ব্যাংকগুলোর পেমেন্ট, রেমিট্যান্স ও এলসিসহ সব ধরনের কার্যক্রম আগের মতোই চলবে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘যদিও বোর্ড বাতিল হয়েছে, তবে ব্যাংকগুলোর দৈনন্দিন ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ হবে না। বিজনেস কন্টিনিউ থাকছে। পেমেন্ট, রেমিট্যান্স, এলসি—সব চলবে। আমাদের লক্ষ্য, ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু রাখা এবং ধাপে ধাপে পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ ও আইটি সিস্টেম একীভূত করা।’
একীভূত করার জন্য নির্ধারিত পাঁচটি ব্যাংক হলো— ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, এক্সিম ব্যাংক পিএলসি ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি (সিবিএল)।
পরিচালনা পর্ষদ বিলুপ্তির পর বাংলাদেশ ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাংকগুলোতে অস্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। তারা সবাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কার্যক্রম তদারকি করবেন।
এর মধ্যে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. সালাহ উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাশেম নিয়োগ পেয়েছেন ইউনিয়ন ব্যাংকে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রশাসক হয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ বাদিউজ্জামান দিদার, গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকে প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. মকসুদুজ্জামান এবং এক্সিম ব্যাংকের প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. শওকতুল আলমকে।
এ ছাড়া, আরও চার কর্মকর্তাকে প্রশাসকদের সহায়তায় দৈনন্দিন কার্যক্রম এবং একীভূতকরণ প্রক্রিয়া তদারকির জন্য নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
২৯ দিন আগে
ব্যাংকের ঋণ অবলোপনের ৩০ কার্যদিবস আগে গ্রাহককে নোটিশ দিতে হবে
ঋণ অবলোপন নীতিমালায় গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়মে, কোনো খেলাপি ঋণ ব্যালান্স শিট থেকে বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে অন্তত ৩০ কার্যদিবস আগে লিখিতভাবে জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, দীর্ঘ সময় অনাদায়ী অবস্থায় থাকা অবলোপনকৃত ঋণ ব্যাংকের স্থিতিপত্রে প্রদর্শনের কারণে আর্থিক প্রতিবেদন অপ্রয়োজনীয়ভাবে বড় হয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যাংকিং নীতির অংশ হিসেবে, একটানা দুই বছর মন্দ বা ক্ষতিজনক শ্রেণিতে থাকা ঋণ অবলোপনের সুযোগ রাখা হয়েছে।
অবলোপন করা হলেও ঋণগ্রহীতা তার ঋণের সম্পূর্ণ দায় পরিশোধ না করা পর্যন্ত যথানিয়মে খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত থাকবেন। তাই কোনো ঋণ অবলোপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে অবহিত করার আবশ্যকতা থাকায় এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অবলোপনের আগে সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতাকে অন্তত ৩০ কর্মদিবস আগে লিখিতভাবে নোটিশ দিতে হবে।
এ ছাড়া ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নগদ প্রণোদনা দিতে পারবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে। তবে কোনো ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নীতিমালা না থাকলে, তা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে প্রণয়ন করতে হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে উল্লেখ করে সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৪৬ দিন আগে
হজ কার্যক্রমে সহায়তায় শনিবার খোলা থাকবে ব্যাংক
হজ কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আগামী ১৮ অক্টোবর শনিবার ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কিছু শাখা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মূলত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২৬ সালের হজের নিবন্ধনের অর্থ জমা দেওয়ার সুবিধার্থে হজের অর্থ গ্রহণকারী ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্ট শাখাসমূহ ওই দিন খোলা রাখতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, হজ নিবন্ধনের অর্থ জমা দেওয়ার জন্য আমানতকারীরা যতক্ষণ পর্যন্ত উপস্থিত থাকবেন, ততক্ষণ ব্যাংকগুলোকে ওই অর্থ গ্রহণ অব্যাহত রাখতে হবে।
এ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী এ নির্দেশনা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
৪৯ দিন আগে
ব্যাংক একীভূতকরণ: বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকে বিএসইসির চিঠি
দুর্বল ও তারল্যসংকটে থাকা পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে আমানতকারীদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার আশ্বাস থাকলেও সাধারণ বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে।
গেল সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুযায়ী, একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। নতুন ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। তবে সেখানে ওই পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের কোনো শেয়ার থাকবে না। এসব ব্যাংকের শেয়ার নতুন করে ইস্যু করা হবে।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংকের বর্তমান অবস্থার জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দায় নেই। এ জন্য দায়ী ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকেরা এবং তারা চিহ্নিত। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা দরকার বলে তারা মনে করছেন।
তারা বলছেন, যেহেতু এখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দায় নেই, তাহলে তাদের শেয়ার কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে? এ কারণে পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষণ বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি।
তাদের দাবি, সরকার ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি যেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, একই রকমভাবে শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত।
গভর্নরকে দেওয়া চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে, একীভূত করতে যাওয়া পাঁচটি ব্যাংক; ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবং এক্সিম ব্যাংক পিএলসির বর্তমান এই অবস্থার জন্য কোনোভাবেই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দায়ী নন।
ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ-২০২৫ এর ধারা-৭৭ এ বর্ণিত দায়ী ব্যক্তিগণ ব্যাংকগুলোর এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী, যা বাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশে স্বীকৃত।
উক্ত পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষণে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে বিএসইসি:
১. ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিটে প্রদর্শিত সম্পদ মূল্যায়নের পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর লাইসেন্স, ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্ক, ক্লায়েন্ট বেজ, হিউম্যান রিসোর্স বেজ, সার্ভিস ডেলিভারি মেকানিজম এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু, ইত্যাদি মূল্যায়ন করে বিক্রয় মূল্য বিবেচনায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নির্ধারণ করা।
২. ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিটে প্রদর্শিত সম্পদ মূল্যায়নের পাশাপাশি ব্যাংক প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে সংরক্ষিত জামানত এবং দায়ী ব্যক্তিপণের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করে আদায়যোগ্য অর্থ বিবেচনায় নিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ নির্ধারণ করা।
৩. ধারা-৭৭-এ বর্ধিত দায়ী ব্যক্তিগণ কর্তৃক ধারণকৃত শেয়ার ব্যাতীত অন্যান্য সাধারণ শেয়ারহোল্ডারগণ বা সাধারণ বিনিয়োগকারী কর্তৃক বিনিয়োগকৃত অর্থ সাধারণ বিনিয়োগকারীর ন্যূনতম স্বার্থ মূল্য বিবেচনা করে একীভূতকরণের অনুপাত নির্ধারণ করা।
৪. উপরিউক্ত মূল্যায়ন বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংক পাঁচটির সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ মূল্য অনুপাতে ব্যাংকগুলোকে একীভূত করা। এবং ব্যাংকগুলোতে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ মূল্য অনুপাত নির্ধারণ ও তা ঘোষণা না করে অথবা সাধারণ বিনিয়োগকারী কর্তৃক ধারণকৃত শেয়ারের এক্যুইজেশন মূল্য নির্ধারণ এবং তা ঘোষণা না করে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুত না করার কথাও গভর্নরকে দেওয়া চিঠিতে বিএসইসি জানিয়েছে।
৫৩ দিন আগে