শিল্প-সংস্কৃতি
রমনা বটমূলে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ছায়ানটের জমকালো পহেলা বৈশাখ উদযাপন
ঈদ উৎসবের মাঝে রাজধানীর রমনা পার্কের রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রবিবার(১৪ এপ্রিল) সকাল সোয়া ৬টায় দেশের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট পরিবেশন করে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। মর্তুজা কবির মুরাদের 'রাগ আহীর ভৈরব' গানের মন্ত্রমুগ্ধকর বাঁশি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই সাংস্কৃতিক উৎসবের। দেশের বিশিষ্ট শিল্পীদের পরিবেশনা, গান, আবৃত্তি ও অন্যান্য পরিবেশনা শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।
আরও পড়ুন:ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে: বইপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ১১টি কোরাস গান ও ১৫টি এককসহ ৩১টি একক পরিবেশনা পরিবেশন করা হয়। এরমধ্যে সত্যম কুমার দেবনাথ, খায়রুল আনাম শাকিল, চন্দনা মজুমদার, তানিয়া মান্নান, রামেন্দু মজুমদার, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়সহ প্রখ্যাত শিল্পীরা প্রকৃতি, মানবপ্রেম, আত্মশুদ্ধি ও দেশপ্রেমের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
নতুন বাংলা বর্ষপঞ্জি ১৪৩১ সনকে স্বাগত জানাতে রাজধানীর প্রতিটি প্রান্ত থেকে দর্শকরা জড়ো হয়ে নাচ-গানে মেতে উঠেছিল।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে নতুন বছরের ভাষণ পাঠ করেন ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি ড. সারওয়ার আলী। দলগত জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে অনুষ্ঠানের।
বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে দুই ঘণ্টার অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয় এবং ছায়ানট তাদের ইউটিউব চ্যানেলে https://www.youtube.com/@ChhayanautDigitalPlatform অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে।
সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং ১৩তম হুসার্স ওপেন রোভার স্কাউট গ্রুপের স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি ছায়ানটের স্বেচ্ছাসেবকরা অনুষ্ঠানস্থলে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পবিত্র শবে কদরের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও করণীয়
মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু
পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়।
ঐক্য, সাংস্কৃতিক গর্ব ও স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক শোভাযাত্রাটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পীসত্তা ও চেতনার মন্ত্রমুগ্ধকর প্রদর্শনীর মধ্যে দিয়ে সকাল ৯টা ১৮ মিনিটে আরম্ভ হয়।
উৎসাহী অংশগ্রহণকারীদের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা শাহবাগ, ঢাকা ক্লাব এবং শিশু পার্কের মতো ঐতিহাসিক স্থান হয়ে ঢাকার ব্যস্ত রাস্তা অতিক্রম করে। বর্ণিল পোশাকে সজ্জিত ও প্রতীকী নিদর্শন সম্বলিত শোভাযাত্রাটি বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিধ্বনি করে এবং আনন্দ-উল্লাসে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখ উদযাপনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ডিএমপির
সৃজনশীলতা ও শৈল্পিক প্রকাশের লালনের জন্য পরিচিত চারুকলা অনুষদ সাংস্কৃতিক তাৎপর্যের সূচনা স্থান। অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আয়োজিত এই আয়োজনে বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যের প্রচার ও সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটির অঙ্গীকারের দৃষ্টান্ত ফুটে ওঠে।
শোভাযাত্রাটি টিএসসিতে সমাপ্তির পথে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার বাতাস হর্ষধ্বনি, সংগীত এবং অংশগ্রহণকারী ও দর্শকদের সম্মিলিত উল্লাসে অনুরণিত হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা শুধু বাংলা নববর্ষের আগমনই উদযাপন করে না, প্রতিকূলতার মধ্যেও বাঙালি মানুষের সহনশীলতা ও চেতনার সাক্ষ্য বহন করে।
আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে এই জাতীয় আয়োজন ঐক্য, স্থিতিস্থাপকতা ও একাত্মতার বোধকে লালন করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্ব নিশ্চিত করে।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখ উদযাপনে প্রস্তুত ঢাবি
পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে ঘিরে যেকোনো জঙ্গি হামলা প্রতিহত করতে প্রস্তুত র্যাব: ডিজি
পবিত্র শবে কদরের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও করণীয়
পবিত্র রমজান মাসের সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ সময়টি হচ্ছে শবে কদর। ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই মহিমান্বিত রাতটির ব্যাপক প্রভাব রয়েছে ইসলামী জীবন ব্যবস্থায়। প্রতি বছর এই সময়টিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইবাদত-বন্দেগীতে নিজেদেরকে নিয়োজিত করেন। রমজানের ঠিক কততম দিনে এই রাতের আগমন ঘটে সে ব্যাপারে কোনও সুনির্দিষ্ট করা তারিখ নেই। তবে হাদীস অনুসারে মাসের একটি নির্দিষ্ট পরিসরের রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর অন্বেষণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। চলুন, তাৎপর্যপূর্ণ এই সৌভাগ্যের রাতের বিশেষত্ব বিশ্লেষণের পাশাপাশি জেনে নিই- কীভাবে এর সর্বোত্তম সদ্ব্যবহার করা যায়।
শবে কদর কী
আরবী ভাষায় ‘কদর’ বলতে ভাগ্যের পরিমাপ বা পরিধি বোঝানো হয়। আর শব শব্দটি ফার্সি ভাষার, যার অর্থ রাত। এছাড়া এই রাতের অন্যান্য নামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘লাইলাতুল কদর’ (সৌভাগ্যের রাত), ‘লাইলাতুল আযমা’ (মহত্বের রাত) এবং ‘লাইলাত আল-শরাফ’ (সম্মানের রাত)।
শবে কদরের সময়টি বিস্তৃত সূর্যাস্ত বা মাগরিবের ওয়াক্ত থেকে ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত। তবে রাতটি আসলে ঠিক কোন তারিখের তা সুনির্দিষ্ট নয়। তবে বুখারি ও মুসলিম সহ বিভিন্ন হাদীস গ্রন্থ অনুযায়ী এটি রমজানের শেষ দশ দিনের বিজোড় রাতগুলোর যে কোনও একটি। অর্থাৎ সুস্পষ্টভাবে রমজানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ তম রাতগুলোর প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দশটি প্রাচীন মসজিদ: দেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন
শবে কদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
৬১০ হিজরী সনের এই রাতে নাজিল হয়েছিল পবিত্র কুরআন শরীফের প্রথম ৫ আয়াত। মক্কার জাবালে নূর পর্বতের হেরা গুহায় ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে এসেছিলেন আল্লাহর বাণী নিয়ে। এটি ছিল আল কুরআনের ৯৬-তম সূরা আল আলাকের প্রথম ৫টি আয়াত। এরপর থেকে টানা ২৩ বছরে পুরো কুরআন নাজিল সম্পন্ন হয়।
এই মূল্যবান রাতটিকে উদ্দেশ্য করে কুরআন মাজিদের সম্পূর্ণ একটি সূরাই রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, কদরের রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ সময় সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে ফেরেশতারা পৃথিবীর আকাশে নেমে আসেন এবং ভোর না হওয়া পর্যন্ত শান্তি বর্ষণ করতে থাকেন।
অর্থাৎ এই এক রাতের একটি মাত্র নেক আমল হাজার মাসের বরকত নিয়ে আসে। সারা জীবন ইবাদত করেও এ রাতের ইবাদতের মাধ্যমে যে বরকত পাওয়া যায় তার সমান হবে না। একই সঙ্গে এটি আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা পাওয়ার রাত। এই সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত মুসলমানদের জন্য আল্লাহর নৈকট্য এবং আশীর্বাদ লাভের পরম সুযোগ। যারা এই সময় ঈমানের সঙ্গে নামাজ পড়বে, তাদের পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়
মুহাম্মদ (সা.) এই সম্মানের রাতটির জন্য অপেক্ষা করতেন। রমজানের শেষ দশ দিন শুরু হতেই তিনি ইতিকাফে বসে যেতেন এবং সারা রাত ধরে নামায পড়তেন। নিজের অনুসারীদেরকেও তিনি এভাবে সৌভাগ্যের রাতকে সম্মানিত করতে অনুপ্রাণিত করতেন।
ঢাকার জনপ্রিয় ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে: বইপ্রেমীদের স্বর্গরাজ্য
বইয়ের সঙ্গে কফি বা অন্যান্য কোমল পানীয় পরিবেশন মূলত ইউরোপ-আমেরিকার ধারা। কিন্তু প্রিয় বই হাতে নিয়ে আয়েশ করে চা বা কফিতে চুমুক দেয়াটা যে কোনও ব্যস্ত-সমস্ত শহরবাসীরই কাম্য। কেননা শুধু জ্ঞানার্জনের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরিতে নয়, এরকম স্থান যান্ত্রিক জীবনে বিস্তর প্রশান্তির জন্যও সহায়ক। স্বল্প পরিসরে হলেও এই ধরণের অভিজ্ঞতা বিগত কয়েক দশক ধরে পেয়ে আসছেন বাংলাদেশের বইপ্রেমীরা। চলুন, ঢাকা শহরে অবস্থিত ১০টি চমৎকার বুক ও স্টাডি ক্যাফের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।
বইপোকাদের জন্য ঢাকার সেরা ১০টি বুক ও স্টাডি ক্যাফে
পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র
দেশ ও বিদেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ বইয়ের ভান্ডার হিসেবে দেশের সবচেয়ে পুরনো সংগঠন পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র। এর প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৮৭ সালের ১২ জুলাই। ১৯৯৯ সালে পাঠক সমাবেশ রিডার্স ক্লাব কর্মসূচির ফলে সংগঠনটির সঙ্গে পাঠকদের সখ্যতা আরও বেড়ে যায়। বর্তমানে আরও যোগ হয়েছে শিশু কর্নার। বসে বই পড়ার জায়গা কম থাকলেও এর দেশি-বিদেশি অরিজিনাল প্রিন্টের সংগ্রহ কাছে টানে বইপ্রেমীদের।
শাহবাগ মোড়ের জাতীয় জাদুঘর থেকে কাঁটাবনের দিকে কিছুটা এগুলেই আজিজ সুপার মার্কেটের বিপরীত পার্শ্বে এর অবস্থান। এছাড়া কাঁটাবনের এলিফেন্ট রোডের ২৭৮/৩ ঠিকানায়ও একটি শাখা রয়েছে পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রের। প্রায় ৬ হাজার বর্গ ফুটের এই জায়গায় লাইব্রেরি ছাড়াও ঠায় পেয়েছে সাইলেন্ট রিডিং রুম এবং ক্যাফে। প্রতিদিন এর কার্যক্রম সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৯টায় শেষ হয়।
আরও পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
দ্যা রিডিং ক্যাফে
২০১৪ সাল থেকে চালু হওয়া দ্যা রিডিং ক্যাফের প্রতিষ্ঠাতা আতিকুর রহমান। রাজধানী জুড়ে ক্যাফেটির মোট ৪টি শাখা; গুলশান, বনানী, উত্তরা, এবং সায়েন্স ল্যাবরেটরি। সবগুলোতেই প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১২০ জন অতিথির জন্য আয়োজন চলে।
বিদেশী ফিকশনধর্মী বইগুলোর আধিক্য থাকায় তরুণদের আনাগোণাটাই বেশি হয় এখানে। তবে সেই সাথে বাচ্চাদের বইও রয়েছে। এমনকি শিশুদের খেলা করার জন্য আলাদা একটি জোনও রয়েছে।
পছন্দের বইটি পড়ার পাশাপাশি ব্যবস্থা রয়েছে চা-কফি খাওয়ার।
দ্যা রিডিং ক্যাফে পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত হয় সকাল ১০টায়, আর বন্ধ হয়ে যায় রাত ৯টার দিকে।
আরও পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
নার্ডি বিন কফি হাউজ
ফারিয়া মাহজাবিন এবং মাসরু হাসান কমল ২০১৭ সালের জুলাই মাসে শুরু করেন এই কফি শপটি।
গুটি কয়েক বইয়ের তাকগুলোকে ইউরোপীয় কায়দায় সামঞ্জস্য করা হয়েছে পুরো শপের আভ্যন্তরীণ নকশার সঙ্গে।
আরামপ্রদ বসার জায়গাগুলোতে কফি আর বই নিয়ে নিমেষেই একটি অলস বিকেল কাটিয়ে দেয়া যায়। এখানকার বইয়ের বিভাগটি ইংরেজি সাহিত্য পড়ুয়াদের জন্য উৎকৃষ্ট। তবে সেগুলো শুধু এই ক্যাফেতে পড়ার জন্য, কেনার উপায় নেই।
কফি হাউজটির অবস্থান ধানমন্ডির ২ নম্বর রোডের আহমেদ কাজী টাওয়ার নামের ৩৫ নম্বর বাড়িটির আন্ডারগ্রাউন্ডে। এখানে আগত টিনেজ ও তরুণ-তরুণীদের মূল আকর্ষণ থাকে বাহারি পদের কফি এবং স্ন্যাক্স। প্রতি চুমুকের স্বাদ বাড়িয়ে দেয় আড্ডা, আর মাঝে মাঝে লাইভ মিউজিক। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকে নার্ডি বিন কফি হাউজ।
আরও পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
বেঙ্গল বই
বইয়ের মাঝে ডুব; এই স্লোগান নিয়ে বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বেঙ্গল বইয়ের যাত্রা শুরু হয় ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর। দেশ-বিদেশের বইয়ের পাশাপাশি এখানে রয়েছে পুরনো মূল্যবান বই ও ম্যাগাজিন। নিরিবিলিতে বসে বই পড়ার আধুনিক ক্যাফেতে রয়েছে চা-কফি ও ফ্রেশ জুস খাওয়ার ব্যবস্থা। আছে আকাশ কুসুম নামের শিশু কর্ণার, যেখানে শিশুরা আঁকাআঁকি, পড়াশোনা ও খেলাধুলা করতে পারে।
বিভিন্ন সময়ে এর আয়োজনগুলোর মধ্যে থাকে কবিতা পাঠের আসর, পাঠচক্র, প্রকাশনা উৎসব, নতুন লেখক ও তাদের লেখা নিয়ে সভা, চিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
বেঙ্গল বইয়ের বর্তমান অবস্থান ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর রোডের ৪২ নম্বর বাসা। শুক্র ও শনিবার যাবতীয় কর্মকাণ্ড শুরু হয় সকাল ৯টায়, আর শেষ হয় রাত ৯টায়। সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে কাজ চলে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: টাকা কীভাবে এলো? মানব সভ্যতায় টাকার ইতিহাস
বাতিঘর
২০০৫-এর ১৭ জুন চট্টগ্রামের চেরাগি মোড়ে ১০০ বর্গফুটের ছোট্ট দোকান থেকে বাতিঘরের পথচলা। প্রতিষ্ঠাতা দীপঙ্কর দাশ। এখন চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেট মিলিয়ে বাতিঘরের মোট শাখা ৬টি। বাতিঘরের সংগ্রহে রয়েছে আড়াই হাজার প্রকাশনা সংস্থার প্রায় লক্ষাধিক বই।
দ্বিতীয় শাখা হিসেবে ঢাকার বাংলা মোটরের আউটলেটটি চালু হয়েছিল অনেক পরে; ২০১৭ সালে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ভবনের সাত তলায় এই বইঘরটি বানানো হয়েছে লালবাগ কেল্লার আদলে। বাংলা- ইংরেজি দুই ভাষার বইগুলো পাঠকরা ভেতরে বসেই পড়তে পারেন। ছেলে-বুড়ো সবার রুচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই সমৃদ্ধ করা হয়েছে বইয়ের সংগ্রহ। এমনকি প্রত্যেকটি শাখাতেই রয়েছে আলাদা শিশু-কিশোর কর্নার। সরকারি ছুটির দিনসহ প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে বাতিঘর।
৫ তরুণ আলোকচিত্রীর 'বোধ'
৩ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী 'বোধ' শুরু হয়েছে শাহবাগের ছবির হাট প্রাঙ্গণে।
শুক্রবার (৮ মার্চ) দুপুর ৩টায় প্রদর্শনীটির উদ্বোধন হয়। এটি চলবে ১০ মার্চ, প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত।
আলোকচিত্র প্রদর্শনীটির কিউরেট করেছেন তানজিমুল ইসলাম। প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী কে এম আসাদ। তার তত্ত্বাবধানে দুই মাসের কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন মো. আবু সুফিয়ান জুয়েল, জীবন আহমেদ, সৈয়দ মাহামুদুর রহমান, মেহেদী হাসান ও মো. সাজ্জাদ হোসেন।
এই তরুণ ৫ আলোকচিত্রী অংশগ্রহণ করে শেখার চেষ্টা করেছেন কীভাবে একটি বিষয়ের দিকে তাকাতে হয় এবং সেটিকে আলোকচিত্রের মাধ্যমে একটি গল্পের আকার দেওয়া যায়। আলোকচিত্রীরা নিজেদের জীবনের কাছাকাছি একটি গল্প বলার চেষ্টা করেছেন।
যদিও তারা ব্যক্তি বা একটি গোষ্ঠীর গল্প বলছেন, কিন্তু সবার প্রয়াস ছিল নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করা। যে ‘বোধের’ ভেতর দিয়ে নিজে গেছেন এবং প্রয়োজন মনে করেছেন সেটি প্রকাশ করতে চেয়েছেন তারা।
উল্লেখ্য, প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
আরও পড়ুন: জীবনে রঙ ও আনন্দ নিয়ে আসে পহেলা ফাল্গুন
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বাতিঘরে ‘রাইজিং ইকোস’ শুরু
শিল্পকলায় মিষ্টি মেলা: বাহারি মিষ্টির স্বাদ-গন্ধে মাতোয়ারা রাজধানীবাসী
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি নিয়ে গত বুধবার (৬ মার্চ) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হয়েছে প্রথমবারের মতো জাতীয় মিষ্টি মেলা ২০২৪।
৫ দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। খাদ্য সংস্কৃতি হিসেবে দেশের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিগুলোকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভিন্নধর্মী এ আয়োজন। এতে অংশ নিয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা ৬৪ এর অধিক মিষ্টি শিল্পীরা।
আরও পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) প্রথম জাতীয় মিষ্টিমেলার দ্বিতীয় দিন বিকেলে মূল অনুষ্ঠানের আগে পরিবেশিত হয় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী। লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সংগীত পরিবেশন করে সরকারি সংগীত কলেজ। সমবেত শাস্ত্রীয় সংগীত ‘রাগ বৈরাগী ভৈরব’ এবং সমবেত যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেন তারা। এরপর পর্যায়ক্রমে পরিবেশিত হয় একক সংগীত। একক সংগীত পরিবেশন করেন ড. ফকির শহীদুল ইসলাম, শেখ খালিদ হাসান, মাইনুল আহসান, ছন্দা চক্রবর্তী, উত্তম কুমার সাহা, মফিজুর রহমান, এম এ মমিন, উর্বী সোম, সৌমিতা বোম, পূর্ণ চন্দ্র মণ্ডল, সাইফুল ইসলাম, এম এম ইউনুসুর রহমান ও গোলাম মোস্তফা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মনসুর।
প্রথম জাতীয় মিষ্টি মেলা ২০২৪, ১০ মার্চ পর্যন্ত চলবে প্রতিদিন বিকাল ৩ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকাল ৫টায় থাকবে লোক-সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
আরও পড়ুন: পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়
পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়
বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য তাৎপর্যবহুল একটি দিবস শবে বরাত। বরাতের রাত বা ভাগ্যের রজনী হিসেবে পরিচিত এই দিনটি পালিত হয় আরবি বর্ষের শাবান মাসের ১৫ তারিখে। এর পটভূমিতে রয়েছে মূলত দিবাগত রাতের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর মাহাত্ম্য যথেষ্ট প্রভাব রাখে ইসলামী জীবন ধারা চর্চায়। এ রাতে মহান আল্লাহ অতীতের পাপ-পঙ্কিলতা শুধরে নিয়ে আগামী দিনগুলো নতুন করে শুরু করার সুযোগ দেন। আর তাই এক নিষ্পাপ জীবনের প্রত্যাশায় বিগত কৃতকর্মের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ। চলুন, মহিমান্বিত এই সময়ে পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য, শিক্ষা ও করণীয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
শবে বরাতের তাৎপর্য
এই রাতে নির্ধারিত হয়েছিল প্রতিটি মানুষের জীবনের শুরু ও শেষ দিনটি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভাগ্য বিধাতা আল্লাহ তায়ালা এই রাতে মানুষকে তার জীবনের যাবতীয় পাপ মোচনের সুযোগ দেন। এর মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের জন্য নতুন করে জীবন রচনার এক অভাবনীয় দিগন্ত উন্মোচিত হয়। তাই এই রাতকে ক্ষমা ও মুক্তির রাতও বলা হয়। পবিত্র কুরআনে ১৫ শাবানের রাতের কথা না থাকলেও নানা হাদীসগ্রন্থে এর বিভিন্ন ব্যাখা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: পবিত্র শবে বরাত ২৫ ফেব্রুয়ারি
বায়হাকী হাদিস অনুসারে, নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তার স্ত্রী আয়েশা (রাঃ) কে ১৫ শাবানের গুরুত্ব বোঝাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, কোন মানুষ কোন সময়ে জন্মগ্রহণ করবে এবং কোন সময়ে মারা যাবে তা এই রাতে নির্ধারণ হয়। তাই এই সময় মানুষের কৃতকর্মের হিসাব-নিকাশ হয় এবং তাদের রিজিকের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সঙ্গে তাদের জন্য খোলা থাকে আল্লাহর রহমত ও মাগফেরাতের সমস্ত দরজা।
ইবনে মাজাহ ও বায়হাকী হাদিসে আলী ইবনে আবী তালেব (রাঃ) এর বর্ণনায় আল্লাহর রাসুল (সাঃ) এর বাণীতে উঠে আসে শবে বরাতের তাৎপর্য।
এখানে মুহাম্মদ (সাঃ) শাবান মাসের মাঝামাঝি সময়ে সারা রাত জেগে নামায পড়তে আর দিনের বেলা রোযা রাখতে বলেছেন। কেননা আল্লাহ তায়ালা সূর্যাস্তের পর থেকে ফজরের সময় পর্যন্ত দুনিয়ার আকাশে নেমে এসে ক্ষমা প্রার্থনাকারীর ডাকে সাড়া দেন। এ সময় তিনি যার রিযিক দরকার তাকে রিযিক দেন এবং বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে বিপদমুক্ত করেন।
উমর ইবনে আবদুল আজিজসহ অন্যান্য ইসলামী পন্ডিতগণ বছরের চারটি রাতকে অবহেলা করতে নিষেধ করেছেন। কেননা রাতগুলোতে আল্লাহ তার বান্দাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন।
এগুলো হচ্ছে- রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫-তম রাত, ঈদুল ফিতরের আগের রাত এবং ঈদুল আজহার আগের রাতে।
আরও পড়ুন: কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
পবিত্র শবে বরাতের শিক্ষা
সত্যিকারের অনুতাপ
এই বিশেষ রাত পূর্বের ভুল-ভ্রান্তির জন্য সত্যিকার অর্থে অনুতপ্ত হতে শেখায়। এই অনুতাপ ভবিষ্যতে কোনো ভুল করার সময় এই রাত্রির কথা মনে করিয়ে দেবে। ফলে এক রকম দায়বদ্ধতার তৈরি হবে, যা জীবনকে পরিচালিত করতে পারে পূণ্যের পথে।
ক্ষমা করার মনোভাব
সমূহ পাপাচারের পরেও যে মন থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহর তাকে ক্ষমা করেন। আর এই বিষয়টি প্রতিটি মানুষকে অন্তরের ঘৃণা দূর করে পরস্পরকে ক্ষমা করতে শেখায়। এই শিক্ষা প্রতিহিংসাপরায়ণতা ও রাগের মত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মানুষকে দূরে রাখে।
ইবাদত
ইসলামের বিভিন্ন ধর্মীয় দিবসগুলোর মত শবে বরাতও আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য মুসলমানদেরকে উদ্বুদ্ধ করে। ছোট জীবনে যত বেশি ইবাদত করা যায়, পাপ কাজ থেকে ততটাই দূরে থাকা যায়। শুধু তাই নয়, এভাবে সার্বক্ষণিক ইবাদতের মধ্যে থাকা একসাথে দুইটি ক্ষেত্রে সুফল দেয়। এক, এভাবে তওবার মধ্যে থাকলে আল্লাহ যদি চান অতীতের সব গুণাহ ক্ষমা করে দেবেন। দ্বিতীয়ত, প্রতিটি ইবাদতই আল্লাহর কাছে দোয়া করা। এভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা গেলে, এই দোয়াই হবে ভবিষ্যতে বিপদ-আপদ থেকে মুক্তির উপায়।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় দৃষ্টিনন্দন ‘সাত গম্বুজ মসজিদ’
মিলানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের নিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে ইতালির মিলানের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে।
২১ ফেব্রুয়ারি ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে ভোরে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
প্রথম পর্বে সকাল ৯টায় কনসাল জেনারেলের নেতৃত্বে পদযাত্রার মাধ্যমে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে স্থাপিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এরপর কনস্যুলেটের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনে মহান শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের বিশেষ বাণী পাঠ করা হয়।
শহীদদের রুহের মাগফেরাত ও দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটে।
সম্মিলিতভাবে দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে স্থানীয় সময় ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭.০১ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২.০১ মিনিটে) ইতালির মিলানের অস্থায়ী শহীদ মিনারে কনসাল জেনারেলের নেতৃত্বে মিলানের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মাতৃভাষার বহুমাত্রিকতার প্রভাব তুলে ধরতে আলোচনাসভা আয়োজন করা হয়। কনসাল জেনারেল এম জে এইচ জাবেদের সঞ্চালনায় মিলানস্থ বিভিন্ন দেশের কনস্যুলেট-এ কর্মরত কূটনৈতিকদের মধ্যে মিলানে নিযুক্ত ক্রোয়োশিয়ার কনসাল জেনারেল স্টেফান রিবিচ, মিলানে নিযুক্ত মিশরের কনসাল জেনারেল মানাল আবদেলদাইম, লা স্টাম্পা এসতেরার সাংবাদিক ডেভিড রোসি এবং লা গেজেটা ডি মিলানের সাংবাদিক আগস্টিনো মারোতা বক্তব্য দেন।
এম জে এইচ জাবেদ বলেন, ভাষা শহীদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার সম্মান সুরক্ষিত হয়েছিল, যার পথ ধরে বঙ্গবন্ধুর সৃজনশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্জন করে পরম কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
কালের বিবর্তনে বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো বিলুপ্তির পথে
একটি ভাষা শুধু কতক জনগোষ্ঠীর যোগাযোগের মাধ্যম নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট মানবগোষ্ঠীর শত বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। একটি ভাষার মৃত্যু মানে সেই শত বর্ষের জীবনধারার ইতিহাসের পরিসমাপ্তি। সময়ের বিবর্তনে ঠিক সেই বিলুপ্তির শিকারেই পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষাগুলো। সংখ্যালঘু মানুষগুলোর নিবাস দেশের প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলগুলোতে হওয়ায় অগোচরেই থেকে যাচ্ছে এই ভাষা বিলুপ্তি। বিগত দশকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী বঙ্গদেশের বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সংখ্যা মোট ১৪টি। চলুন, বিপন্নপ্রায় সেই ভাষাগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বঙ্গদেশের যে ভাষাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে
কন্দ
১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে আগমন ঘটেছিল কন্দ ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর। কন্দদের আদিভাষার নাম কন্দফারসি। ভারতের ওড়িশা থেকে এ দেশে কন্দদের আনা হয়েছিল মূলত রেললাইন স্থাপন ও চা বাগানের কাজে। এদের মধ্যে বর্তমানে কেউই আর সেই কন্দতে কথা বলতে পারে না। ভাবের আদান-প্রদানটা হয়ে থাকে উড়িয়া ভাষায়।
খাড়িয়া
অস্ট্রো-এশিয়াটিক গোত্রের মুণ্ডা শাখার অন্তর্গত খাড়িয়া ভাষার সর্বাধিক ব্যবহার হয় ভারতের ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, ও ওড়িশায়। বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলে মংরাবস্তিতে প্রায় ১০০-এরও বেশি পরিবারের মাতৃভাষা খাড়িয়া। কিন্তু এ ভাষায় স্বাচ্ছন্দ্যে কথা বলতে পারে মাত্র ২ জন। এদের একজন খাড়িয়া সমাজকর্মী হিসেবে নিজেদের মাতৃভাষা রক্ষার কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: আসামের বাংলা ভাষা আন্দোলন নিয়ে মাসুদ করিমের তথ্যচিত্র
২০২০ সালে তিনি খাড়িয়াদের ওপর একটি সমীক্ষা করেছিলেন, যেখানে বাংলাদেশে ৪১টি খাড়িয়া গ্রামের খোঁজ পাওয়া যায়। গ্রামবাসীদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫ হাজার ৭০০ জন।
কোডা
পশ্চিমবঙ্গ, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং বাঁকুড়া জেলার প্রচলিত এক ধরনের মুণ্ডা ভাষার নাম কোডা। এর আরও নাম আছে, যেমন কোরা, কাওরা, কোরালি, কোরাটি, কোরে, এবং মুদিকোরা। ভারত ও বাংলাদেশের কোরা গোষ্ঠী দ্বারা কথিত একটি বিপন্ন মুণ্ডা ভাষা। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ কোডা-ভাষী গ্রামগুলো হচ্ছে রাজশাহী বিভাগের কুন্দং এবং কৃষ্ণপুর। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কোডা বাংলার সঙ্গে মিশে একাকার হয়ে গেছে। দুয়েক জন প্রবীণদের মুখে কিছু কোডা শোনা গেলেও তরুণদের সবাই বাংলাতেই কথা বলেন।
মুণ্ডারি
অস্ট্রোএশিয়াটিক ভাষা বিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুণ্ডা ভাষা এই মুণ্ডারি। নেপাল, পূর্ব ভারতীয় রাজ্যের ঝাড়খন্ড, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুণ্ডাদের এই কথ্য ভাষার সঙ্গে সাঁওতালি ভাষার অনেক মিল।
আরও পড়ুন: একুশে বইমেলার শিকড়ের সন্ধান
বাংলাদেশে মুণ্ডারির ব্যবহার দেখা যায় খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নে, ডুমুরিয়া, এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর, দেবহাটা ও তালা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে। সুন্দরবন সংলগ্ন নদী পাড়ের গ্রামগুলোর এই আদিবাসীরা এখন কদাচিৎ মুণ্ডা ব্যবহার করে। পাবনার ঈশ্বরদীর তরুণ মুণ্ডাদের অনেকেই প্রথম দিকে জানতো না যে, তাদের নিজস্ব একটি মাতৃভাষা ছিল।
কোল
একদম আলাদা মুণ্ডা ভাষা হলেও কোল এবং কোডাকে মুণ্ডারির মিশ্র ভাষা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ১৮৩১ থেকে ১৮৩২ সালে কোলরা বৃটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। সুযোগ্য নেতৃত্বের অভাব, আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতা, শিক্ষিত শ্রেণীর সমর্থনের অভাব এবং নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের অভাবে আন্দোলন ব্যর্থ হয়।
কোলদের গ্রাম সবচেয়ে বেশি রয়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার বরেন্দ্র অঞ্চলে এবং রংপুরের বাবুডাইংয়ে।
আরও পড়ুন: টাকা কীভাবে এলো? মানব সভ্যতায় টাকার ইতিহাস
সৌরা
ভারতের সীমান্ত পিলার ও ত্রিপুরা বনবাজার খেকে ২০০ গজ দূরত্বে বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলের রাজগাট ইউনিয়নের সৌরা পল্লী। এই গ্রাম পরম যত্নে আগলে রেখেছে ২২টি সৌরা পরিবারকে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের রংপুরেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সৌরারা। এদের বেশিরভাগই কথা বলেন ওড়িয়া, সাদরি ও স্থানীয় তথা উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক ভাষায়।
মালতো
পূর্ব ভারতের মাল্তো উপজাতির মুখে প্রচলিত উত্তর দ্রাবিড় ভাষা এই মালতো। এর ‘পাহাড়িয়া’ নামটিও বেশ প্রসিদ্ধ, তবে ‘রাজমহালি’ নামটি খুব কম শোনা যায়।
পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মাড়মি পল্লীর অধিবাসীদের প্রথম ভাষা মালতো। এছাড়া নাটোর, রাজশাহী ও নওগা জেলায়ও রয়েছে মালতোদের বসবাস। বর্তমানে জীবিকার উদ্দেশ্যে লেখালেখির যাবতীয় কাজ বাংলায় হওয়ায়, কথা বলার সময়েও কমে গেছে মালতোর ব্যবহার।
আরও পড়ুন: বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ: কোথা থেকে এলো বাংলা ভাষা
খুমি
বার্মার (বর্তমান মিয়ানমার) দক্ষিণ চীন রাজ্যের ভাষা দক্ষিণ চীনের একটি উপভাষা খুমি। বার্মার পালেওয়া ও তার আশেপাশের অঞ্চল এবং বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার আদিবাসীরা এই ভাষা ব্যবহার করে। আরাকানীয় (বর্তমান রাখাইন, যা মিয়ানমারের একটি অঞ্চল) এবং বর্মী ভাষার বিস্তর প্রভাব এই ভাষার ওপর। বান্দরবানের রুমা, থানচি এবং রোয়াংছড়িতে খুমিদের বসবাস।
পাংখোয়া
ভারতের মিজোরাম রাজ্যে ব্যবহৃত কুকি ভাষার নাম পাংখোয়া, যা পাংখু, পাংখোয়া বা পাং নামেও পরিচিত। পাংখোয়ার দুইটি উপভাষা হচ্ছে বিলাইছড়ি ও কংলাক। বাংলাদেশে পার্বত্য রাঙ্গামাটির সাজেক উপত্যকা থেকে বারাবানের রুমা সংলগ্ন এলাকায় পাংখোয়া জাতির বসবাস।
২০২২ সালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে পাহাড়ি ৭টি উপজাতীয় ভাষার স্বতন্ত্র শব্দকোষ প্রকাশ করা হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে পাংখোয়া অন্যতম।
আরও পড়ুন: বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস: রূপরেখায় অপশক্তির অবসান কামনায় শান্তি মিছিল
রেংমিটচ্য
খুমি এবং ম্রো ভাষার ঘনিষ্ট প্রভাব থাকলেও মায়ানমারের কুকি-চীন ভাষার শ্রেণীভুক্ত রেংমিটচ্য একটি স্বতন্ত্র ভাষা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে আলীকদমের পার্টি পাড়ায় বাস করতো শতাধিক রেমিটচ্য পরিবার। আলীকদম সদর থেকে ১০ থেকে ১২ মাইল দূরে তৈনখালের উপত্যকার ছোট্ট গ্রাম ক্রাংসিপাড়া। সেখানে রেমিটচ্যভাষীদের বসতি ছিল প্রায় ৩০০ বছর ধরে। কালের বিবর্তনে এই সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা কমতে কমতে ২০২২ সালে ৬-এ এসে দাঁড়ায়। এদের বেশিরভাগই আবার ছিলেন ষাটোর্ধ্ব। এদের মধ্যে ২ জন থাকতেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ম্রোদের সঙ্গে।
মূলত স্থানীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ায় সংখ্যা কমছে রেংমিটচ্য ভাষাভাষীদের।
চাক
মিয়ানমারের চাক নৃ-গোষ্ঠীর কথ্য হিসেবে প্রচলিত আরও একটি চীন-তিব্বতি ভাষা চাক। শাল বিভাগভুক্ত এই ভাষাটি সাক নামেও পরিচিত। ১৩ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কাদু জনগোষ্ঠী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা ভাবে পরিচিতি লাভ করে চাকরা। ১৪ শতকে তাদের রাজ্য আরাকানিরা দখল করলে তারা পার্বত্য চট্রগ্রামে প্রবেশ করে। বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ের ছড়া অঞ্চলগুলোই এখন এই চাকদের নিবাস। সুরপ্রধান চাক ভাষা সাহিত্যে বেশ সমৃদ্ধ হলেও লেখায় তেমন প্রচলন না থাকায় এখন বিপন্ন হতে চলেছে।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
খিয়াং
রাঙামাটির কাপ্তাই ও চন্দ্রঘোনা এবং বান্দরবানের থানচি ও রোয়াংছড়িতে বসবাসরত খিয়াং আদিবাসীদের কথ্য ভাষা খিয়াং। বাংলাদেশে খিয়াংরা মূলত দুটি গ্রুপে বিভক্ত- লাইতু ও কংতু। লাইতুরা থাকে সমতলে আর কুংতুরা থাকে পাহাড়ি এলাকায়। এদের বেশিরভাগই বর্তমানে বাস করে রাজকীয় মং সম্প্রদায়ের সঙ্গে। তাই কথ্য রীতিতে আর আগের সেই মৌলিকতা নেই। অবশ্য তা ফিরিয়ে আনার জন্য খুব ছোট পরিসরে হলেও তোড়জোড় শুরু হয়েছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ৭টি পাহাড়ি ভাষার শব্দকোষের মধ্যে খিয়াং একটি।
লুসাই
উত্তর-পূর্ব ভারত ও মিয়ানমারের প্রসিদ্ধ একটি উপজাতীয় ভাষা লুসাই। আসামের লুসাই পাহাড় থেকেই এই ভাষার নামকরণ হয়েছে। বাংলাদেশের লুসাইভাষীরা নিজেদের মঙ্গোলীয়দের বংশধর বলে দাবী করে। রাঙ্গামাটির সদরের বাঘাইছড়ি এবং বান্দরবান সদর ও রুমায় রয়েছে লুসাইদের গ্রাম।
পাহাড়ি ভাষা সংরক্ষণের জন্য রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক যে শব্দকোষগুলো প্রকাশ করা হয়েছিল, তার মধ্যে লুসাইও রয়েছে।
আরও পড়ুন: কীভাবে এল বাংলা ক্যালেন্ডার: দিনলিপি গণনার ইতিবৃত্ত
লালেং (পাত্র)
বাংলাদেশের উপভাষাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম পরিচিত পাত্র বা লালেং ভাষা। সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে গহীন জঙ্গলে এই ভাষাভাষী লোকদের বসবাস। এই ভাষার নাম মূলত লালেং ঠার বা লাইয়ুংটার। এর কোনও শব্দের সঙ্গে বাংলা অথবা অন্য ভাষার কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শেষাংশ
দেশের এই ১৪টি বিলুপ্তপ্রায় ভাষা কোনোরকম বেঁচে আছে উপজাতিগুলোর গুটি কয়েক প্রবীণ সদস্যের মাঝে। এলাকায় অন্যান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাষার প্রভাবে নৃ-গোষ্ঠীগুলোর নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মাতৃভাষা। ফলে হুমকির মুখে রয়েছে খাড়িয়া, কোল, রেংমিটচ্য, খিয়াং, ও লুসাইয়ের মত ভাষা, যেগুলো এক সময় নিজ নিজ অঞ্চলে যথেষ্ট প্রভাবশালী ছিল।
সমৃদ্ধ শব্দকোষ তৈরি পাংখোয়া, লুসাই ও খিয়াং ভাষার জন্য নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী উদ্যোগ। এমন পদক্ষেপ বাকি বিপন্নপ্রায় ভাষাগুলোর ক্ষেত্রেও শিগগিরই গ্রহণ করা জরুরি। এক্ষেত্রে শুধু সরকারি মহলগুলোই নয়, এগিয়ে আসতে হবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও।
আরও পড়ুন: ‘ধারণার চেয়েও বেশি’: মধ্যযুগে বাংলায় হাবশি শাসন এবং আফ্রিকা-ভারত সংযোগ সম্পর্কে ডা. কেনেথ রবিন্স
জীবনে রঙ ও আনন্দ নিয়ে আসে পহেলা ফাল্গুন
বাংলা ফাল্গুন মাসের বসন্তের প্রথম দিন পহেলা ফাল্গুনে বর্ণিল পোশাক, ফুল আর সংগীতায়জনের মধ্য দিয়ে উৎসবে মেতে উঠেছে দেশের উৎসবপ্রেমী মানুষ।
ফাল্গুন বাংলা বর্ষপঞ্জির একাদশ মাস এবং ঋতুর প্রথম মাস বসন্ত। উষ্ণ রোদ, প্রস্ফুটিত ফুল আর পাখির কিচিরমিচির বসন্তকে বাংলাদেশের ষষ্ঠ ঋতুর রাজা করে তোলে।
পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে হাজার হাজার মানুষের সমাগমে রাজধানীতে উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে চারুকলার বকুলতলা।
আরও পড়ুন: গ্যালারি অন হুইলস: ইউনেস্কোর ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় রিকশা পেইন্টারদের কসমস ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনা
বাংলাদেশে পহেলা ফাল্গুন উদযাপনের ঐতিহ্য শুরু হয় ১৪০১ বঙ্গাব্দে। এরপর থেকে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আনন্দঘন সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নিয়মিত পহেলা ফাল্গুন উদযাপন করে আসছে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ।
বুধবার সকাল ৭টায় সংগঠনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে চারুকলার বকুলতলায় পহেলা ফাল্গুন উৎসব শুরু হয়। বিকালে রাজধানীর উত্তরা রবীন্দ্র সরণি ও বাহাদুর শাহ পার্কে মুক্তমঞ্চে অনুরূপ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বাতিঘরে ‘রাইজিং ইকোস’ শুরু