শিল্প-সংস্কৃতি
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জন্মদিন আজ
অসংখ্য জনপ্রিয় বাউল গান ও গণসংগীতের রচয়িতা বাউল শাহ আব্দুল করিমের জন্মদিন আজ। ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধল-আশ্রম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ইব্রাহিম আলী ও মা নাইওরজান।
দারিদ্র ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া বাউল শাহ আবদুল করিমের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। শৈশব থেকেই একতারা ছিল তার নিত্যসঙ্গী। জীবন কেটেছে সাদাসিধে ভাবে। বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের তালিম নেন— কমর উদ্দিন, সাধক রসিদ উদ্দিন, শাহ ইব্রাহিম মোস্তান বকসের কাছ থেকে। কিংবদন্তিতুল্য এই বাউল স্বশরীরে আমাদের মাঝে না থাকলেও তার গান ও সুরধারা কোটি কোটি তরুণসহ সকল স্তরের মানুষের মন ছুঁয়ে যায়।
কিংবদন্তিতুল্য এই শিল্পী ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে মারা যান। মৃত্যুর পর সর্বস্তরের বিশেষ করে সাধারণের কাছে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বাউল শাহ আব্দুল করিম
শাহ আবদুল করিম বাংলার লোকজ সঙ্গীতের ধারাকে অশ্বস্থ করেছেন অনায়াসে। ভাটি অঞ্চলের সুখদুঃখ তুলে এনেছেন গানে। নারী-পুরুষের মনের কথা ছোট ছোট বাক্যে প্রকাশ করেছেন আকর্ষণীয় সুরে। ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সকল অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।
তিনি তার গানের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন প্রখ্যাত বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ এবং দুদ্দু শাহের দর্শন থেকে। জীবিকা নির্বাহ করেছেন কৃষিকাজ করে। কিন্তু কোনো কিছু তাকে গান সৃষ্টি করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। অসংখ্য গণজাগরণের গানের রচয়িতা বাউল শাহ আব্দুল করিম অত্যন্ত সহজ-সরল জীবন যাপন করতেন।
গানে-গানে অর্ধ শতাব্দীরও বেশী সময় লড়াই করেছেন ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে। এজন্য মৌলবাদীদের নানা লাঞ্চনারও শিকার হয়েছিলেন তিনি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, কাগমারী সম্মেলন, ভাষার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে মানুষকে প্রেরণা যোগায় শাহ আবদুল করিমের গান।
শাহ আবদুল করিম লিখেছেন ও সুর দিয়েছেন ১৬শর বেশি গান। যেগুলো সাতটি বইয়ে গ্রন্থিত আছে। বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে তার ১০টি গান ইংরেজীতে অনূদিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বর্ণিল আয়োজনে ঢাবিতে বসন্ত বরণ
কিশোর বয়স থেকে গান লিখলেও কয়েক বছর আগেও এসব গান শুধুমাত্র ভাটি অঞ্চলের মানুষের কাছেই জনপ্রিয় ছিল। তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে বেশ কয়েকজন শিল্পী বাউল শাহ আব্দুল করিমের গানগুলো নতুন করে গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলে তিনি দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন। পেয়েছেন একুশে পদক।
শাকুর মজিদ তাকে নিয়ে নির্মাণ করেছেন ভাটির পুরুষ নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র। এখনও সুবচন নাট্য সংসদ করিমকে নিয়ে শাকুর মজিদের লেখা ‘মহাজনের নাও’ নাটকের প্রদর্শনী করে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এছাড়াও ২০১৭ শাহ আবদুল করিমের জীবনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস লিখেন সাইমন জাকারিয়া। নাম কূলহারা কলঙ্কিনী।
বাউল সম্রাট আব্দুল করিমের গানের মধ্যে দিয়ে তাকে খুঁজতে প্রতিদিন ভক্ত ও স্বজনরা গানের আসর বসান। তার গান গেয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা আর গানের মধ্যে তাকে বাঁচিয়ে রাখতেই সবার মাঝে তার গান ছড়িয়ে দিতে চান ভক্ত আশেকানরা। একইসঙ্গে তার সুরধারাকে বিকৃতভাবে না গাওয়ার দাবিও তুলেছেন বাউলরা।
বন্দে মায়া লাগাইছে, পিরিতি শিখাইছে/আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, গাড়ি চলে না/আমি কূলহারা কলঙ্কিনী/কেমনে ভুলিবো আমি বাঁচি না তারে ছাড়া কোন মেস্তরি নাও বানাইছে/কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু/বসন্ত বাতাসে সইগো/আইলায় না আইলায় নারে বন্ধু/মহাজনে বানাইয়াছে ময়ুরপংখী নাও/আমি বাংলা মায়ের ছেলেসহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা শাহ আব্দুল করিম না থাকলেও গানে আর সুরে তিনি আমাদের মাঝে রয়েছেন, অনন্তকাল থাকবেন।
একটি সাক্ষাৎকারে শাহ আবদুল করিম গাড়ি চলে না গানটি প্রসঙ্গে বলেছিলেন, বন্ধুর বাড়ি এ আত্মায়। গাড়িতে চড়ে আত্মশুদ্ধির সন্ধানে ছুটি। কিন্তু পাই না। রিপু থামিয়ে দেয়। একদিন হয়তো এই গাড়ি পুরোদমে থেমে যাবে। প্রকৃত মালিকের কাছে ধরা দেবে। এই করিমকে তখন মানুষ খুঁজে পাবে শুধুই গানে আর সুরে।
৫১ দিন আগে
বর্ণিল আয়োজনে ঢাবিতে বসন্ত বরণ
অন্যান্য দিনের মতো সকাল হলেও আজকের সকালটি অনন্য। শীতের জড়তা শেষে আজ বসন্তের প্রথম দিন। তার ওপর পয়লা ফাল্গুনে ভালোবাসা দিবস হওয়ায় দিনটি নানাভাবে উদযাপন করছে দেশের মানুষ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আজ শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘বসন্ত উৎসব ১৪৩১’। ফাগুনের প্রথম দিন সকালে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চলে এই আয়োজন।
জুলাই অভ্যুত্থান আমার দ্রোহ-ভালোবাসার গানের ব্যানারে ঢাবির কলাভবনে সমগীত আয়োজিত ‘সমগীত বসন্ত উৎসব ১৪৩১’ দিয়ে শুরু হয় বসন্তের গান ও নৃত্য পরিবেশন। এ সময় লোকগীতির পাশাপাশি, পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সংগীতও পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
শুরুতে পাঠশালার নৃত্যশিল্পীরা নাচ পরিবেশন করেন। একই সঙ্গে পাহাড়ি ও চা বাগানের থিমের সুর থেকে নেওয়া গানে অংশ নেন সমগীতের শিল্পীরা।
উপস্থিত দর্শনার্থীরা ইউএনবিকে বলেন, সকালে উঠেই এখানে চলে এসেছি বসন্ত উৎসব দেখতে। এরপর বইমেলায় যাব। বসন্তের প্রথম দিনটি সারা দিন উপভোগ করব।
উৎসবে আসা একজন বলেন, ‘বসন্ত আমাদের প্রাণের উৎসব। একই দিনে ফাগুনের প্রথম দিন ও ভালোবাসা দিবস হওয়ায় দিনটি আরও বেশি উপভোগ করছি।’
৫৩ দিন আগে
নারী ফুটবল দলসহ একুশে পদক-২০২৫ পাচ্ছেন ১৪ বিশিষ্ট ব্যক্তি
খেলাধুলা ক্যাটাগরিতে নারী ফুটবল দলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য এবার ১৪ বিশিষ্ট নাগরিককে ‘একুশে পদক-২০২৫’র জন্য মনোনীত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে মনোনীতদের নাম ঘোষণা করা হয়।
এই তালিকায় রয়েছেন— শিল্পকলা(চলচ্চিত্র) ক্যাটাগরিতে আজিজুর রহমান (মরনোত্তর), শিল্পকলায় (সংগীত) ফেরদৌস আরা, শিল্পকলায় (আলোকচিত্র) নাসির আলী মামুন, শিল্পকলায়(চিত্রকলা) রোকেয়া সুলতানা, সাংবাদিকতায় মাহফুজ উল্লা(মরনোত্তর), সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারে মাহমুদুর রহমান, সংস্কৃতি ও শিক্ষায় ড. শহীদুল আলম, শিক্ষায় ড. নিয়াজ জামান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে মেহেদী হাসান খান, সমাজ সেবায় মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী (মরণোত্তর), ভাষা ও সাহিত্যে হেলাল হাফিজ(মরণোত্তর) ও শহীদুল জহির(মো.শহীদুল হক) (মরণোত্তর) এবং গবেষণায় মঈদুল হাসান।
এছাড়া খেলাধুলা ক্যাটাগরিতে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে অসাধারণ সাফল্যের জন্য এবার পদকটির জন্য মনোনীত করা হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে।
আরও পড়ুন: একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী সুজেয় শ্যাম আর নেই
৬০ দিন আগে
'পাওয়ার অব পেইন অ্যান্ড প্যাথোস ২': নেদারল্যান্ডস দূতাবাসে প্রীতি আলীর একক প্রদর্শনী চলছে
ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ড দূতাবাসে প্রখ্যাত বাংলাদেশী শিল্পী প্রীতি আলীর ‘পাওয়ার অফ পেইন অ্যান্ড প্যাথোস ২’ শিরোনামে মাসব্যাপী একক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
রাজধানীর গুলশান-২ এর নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের গ্যালারিত রেসিডেন্সে এই প্রদর্শনীর চলছে।
১৭ জানুয়ারি উদ্বোধন করা এ প্রদর্শনীতে প্রীতি আলীর ৪০টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কার্সটেন্স, বাংলাদেশি-স্প্যানিশ চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম এবং ওয়াইল্ডটিমের সিইও ড. আনোয়ারুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিনিধি।
১৯৮৬ সালে জন্ম নেওয়া প্রীতি আলী স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিমূর্ত অভিব্যক্তির শৈলীতে ছবি আঁকেন। তার শিল্পকর্মে মানুষের আবেগ ও অনুভূতির নানা প্রকাশ ফুটে উঠেছে, প্রকৃতির কাছে আত্মসমর্পণ করে ভালো-মন্দের মধ্যে জীবনের অর্থ অন্বেষণ করা হয়।
বিশুদ্ধ বিমূর্ত অভিব্যক্তিবাদের একনিষ্ঠ অনুসারী প্রীতি আলী উল্লেখ করেছেন, তার চিত্রকর্মগুলো মানুষের স্নেহ, পরমানন্দ, যন্ত্রণা এবং বিচ্ছিন্নতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একজন আবেগপ্রবণ চিত্রশিল্পী, তিনি তার আত্মার অন্তঃস্থল থেকে যা অনুভব করেন তা আঁকেন।
তাঁর চিত্রকলাকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, যেখানে রহস্যবাদের ছোঁয়া পাওয়া যায়; কেউ কেউ সম্প্রীতি, বিষণ্ণতা বা হতাশার স্বাদ পেতে পারেন। তাঁর চিত্রকর্মে নিঃসঙ্গ আত্মার বিলাপ, অন্তর্নিহিত দুঃখ বা নগ্নতার অনুভূতি অনুভব করা যায়।
প্রীতির ফর্মের কমবেশি, ছড়ানোর ধরন এবং কগনিজ্যান্ট ব্রাশ স্ট্রোক একই সঙ্গে প্রাকৃতিক এবং কল্পিত একটি ভাষা তৈরি করে। তার প্রাণবন্ত রঙ, ছন্দময় রেখা এবং বিমূর্ত ফর্মের ব্যবহার ক্যানভাসে একটি তীব্র সংবেদনশীল এবং নিমগ্ন স্থান তৈরি করে।
২০১৬ সালে ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে তার প্রথম একক প্রদর্শনী 'পাওয়ার অব পেইন অ্যান্ড প্যাথোস' অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে তিনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন একক ও দলীয় প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেছেন।
নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের গ্যালারি রেসিডেন্স, বাড়ি ৮, ৭ম তলা, রোড ৮৭-এ প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে ৭টা পর্যন্ত রাজধানীর গুলশান-২ এর গ্যালারি রেসিডেন্সে প্রদর্শনী চলবে।
প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখতে দর্শনার্থীরা pritiali024@gmail.com মাধ্যমে শিল্পীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আরও তথ্য www.pritiali.art এ পাওয়া যায়।
৭৯ দিন আগে
প্রাচীন জৈন্তারাজ্যের প্রত্নতত্ত্বের নান্দনিক স্থাপনা
মোহাম্মদ মহসীন, সিলেট, ৭ ডিসেম্বর (ইউএনবি)- সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ২০০ বছরের পুরোনো জৈন্তা রাজ্যের স্থাপনার ধ্বংসাবশেষগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। মোঘল আমলে বৃহত্তর জৈন্তার জনপদ ছিল মোঘল শাসনামলের বাইরে। সেই সময়টায় জৈন্তাপুর ছিল স্বাধীন জৈন্তা রাজ্য, যার স্মৃতিগুলো এখনও পরিচয় বহন করে বর্তমান প্রজন্মের কাছে।
জৈন্তা রাজ্যের শাসনামলের সমাপ্তির পরও এখনও কিছু স্মৃতি চিহ্ন রয়ে গেছে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের বিভিন্ন পরতে পরতে। কালের বিবর্তনে অনেক স্থাপনা ধ্বংস কিংবা মানুষের দখলে চলে গেলেও যে কয়টা স্থাপনা বা পুরাকীর্তি রয়েছে তাও দীর্ঘ সময় ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল।
তার মধ্যে অন্যতম জৈন্তেশ্বরী ইরাদেবী রাজবাড়ীর একটা বিশাল অংশ গত বছর বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর সংরক্ষণের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে স্থাপত্যশৈলীকে দৃশ্যমান করা হয়েছে। বর্তমানে ইরাদেবী রাজবাড়ীর বটতলার বিশাল অংশটি দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
১২২ দিন আগে
ঢাকায় লোকবাদ্যযন্ত্র প্রদর্শনী শুরু
‘নিরাময়ের ঐক্যতান’ শিরোনামে এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ও উদ্ভাবনী বাদ্যযন্ত্র নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন সংগীতশিল্পী মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
সোমবার আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে ব্যতিক্রমী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগীতশিল্পী শফি মণ্ডল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার পরিচালক ফ্রাঁসোয়া গ্রোসজিয়ান।
জাকির হোসেন ১৯৯৪ সালে গাইবান্ধায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কলকাতায় সংগীত অধ্যয়ন করেছেন। ভারতীয় শাস্ত্রীয়, বাংলা লোক, রবীন্দ্রসংগীত, আধুনিকসহ সংগীতের বিভিন্ন ধরন নিয়ে পড়ালেখা করেছেন তিনি। বাংলাদেশে ফিরে এসে তিনি মানবতাবাদ ও নিরাময়ের উপর সংগীতের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেন।
বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে শিল্প ও সংস্কৃতি লালনের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী ও নিরীক্ষাধর্মী সংগীত সংরক্ষণ ও বিকাশের চেষ্টায় ২০১৮ সালে 'অবকল্প' নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন জাকির।
এ আয়োজনে নিরীক্ষাধর্মী দেশীয় বাদ্যযন্ত্র প্রদর্শনের পাশাপাশি থাকবে সেমিনার, কর্মশালা ও বাংলা লোকসংগীত পরিবেশনা। প্রদর্শনীটি পরিচালনা করছেন লুসি তৃপ্তি গোমেস।
সবার জন্য উন্মুক্ত এ প্রদর্শনী চলবে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর )পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।
১৩৩ দিন আগে
শেরপুরে দুই দিন ধরে হবে ‘ওয়ানগালা’ উৎসব
নৃ-জনগোষ্ঠি গারোদের অন্যতম প্রধান উৎসব ‘ওয়ানগালা’। নতুন ফসল ঘরে তোলাকে কেন্দ্র করে নবান্ন উৎসব হিসেবে এ ওয়ানগালা উৎসব উদযাপন করা হয়।
এ বছর আগামী ২৩ ও ২৪ নভেম্বর শেরপুরে ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীতে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানগালা উৎসব।
মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর নিয়ন্ত্রণে জেলার শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতবাড়ী উপজেলা এবং পাশ্ববর্তী জামালাপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার গারো সমাজের ৪৭টি গ্রাম রয়েছে। ওইসব গ্রামের প্রায় ২২ হাজার খৃষ্টান ধর্মাবলম্বী গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য খৃষ্টভক্ত এবং গারাগানজিং, কতুচ, রুগা, মমিন, বাবিল, দোয়াল, মাতচি, মিগাম, চিবক, আচদক ও আরেং নামে ১২টি গোত্রের গারো সম্প্রদায়ের শত শত লোক ওয়ানগালা উৎসবে শামিল হন।
গারো সম্প্রদায়ের কয়েকশত মানুষ দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন।
এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গারোদের নিজস্ব ভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়। দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শেষে র্যাফেল ড্র ও বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। উৎসব ঘিরে ধর্মপল্লীর পাশে গারোদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও শিশুদের নানা রকমের খেলনা নিয়ে এক মেলা বসে।
আগামী রবিবার (২৪ নভেম্বর) মরিয়মনগর সাধূ জর্জের ধর্মপল্লীতে ওয়ানগালা উৎসবের ধর্মীয় ও সামাজিক আনুষ্ঠানিকতা চলবে। তবে আগেরদিন শনিবার ময়িমনগর ধর্মপল্লী উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী গারোদের ঐতিহ্যবাহী রান্না ও খাবারের প্রদর্শনী। এ উপলক্ষে গারোদের ঐতিহ্যবাহী রান্না ও খাবারের প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
ঝিনাইগাতী ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (টিডব্লিওএ) সাধারণ সম্পাদক অসীম ম্রং জানান, গারো জনগোষ্ঠির আধ্যাত্মিক ও মূল্যবোধকে আরও সমৃদ্ধ এবং ঐতিহ্যবাহী গারো কৃষ্টি ও সংস্কৃতি চর্চায় নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করা হয় এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। যাতে বর্তমান প্রজন্ম এখান থেকে বুঝতে ও শিখতে পারে। ওয়ানগালা উৎসবটি গারো সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবও বটে।
মরিয়মনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অঞ্জন আরেং বনে, ওয়ানগালা উৎসব আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো লুপ্তপ্রায় গারো জনগোষ্ঠির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির চর্চায় উৎসাহিত করা এবং ঐতিহ্যবাহী এই সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠির নিকট তুলে ধরা। যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম এই সংস্কৃতি চর্চা ও সংরক্ষণ করতে পারে।
১৩৬ দিন আগে
ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যার প্রতিবাদে প্রদর্শনী দৃকের
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় গণহত্যার খবর প্রচার দমন করতে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করায় ১৯১ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে দৃক পিকচার লাইব্রেরির উদ্যোগে 'গাজা হলোকাস্ট: কিলিং দ্য ট্রুথটেলারস' শীর্ষক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
দৃকের পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত দর্শনার্থীরা ফিলিস্তিনের মুক্তির জন্য চলমান লড়াইয়ে নিহত সাংবাদিকদের ছবি নিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
এ বছরের শুরুতে ৫ মে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৪ উপলক্ষে দৃক পান্থপথের দৃকপাঠ ভবনে একই শিরোনামে ৭ দিনব্যাপী একটি প্রদর্শনী এবং একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: গাজায় এক বছরের যুদ্ধে ৪৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত
গাজায় নিহত গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আয়োজিত প্রদর্শনীর ভূমিকায় বিশিষ্ট আলোকচিত্রী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আলম বর্ণনা করেন, ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার ইসরায়েল বন্ধ করায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরাই হাসপাতাল ধ্বংসের একমাত্র সাক্ষী ছিলেন। যেখানে একসময় মৃত্যুর পথযাত্রীদের জীবন বাঁচাতে তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে শ্রম দিয়েছিল এবং পরিত্যক্ত শিশুরা নির্জন ইনকিউবেটরে পড়ে ছিল। জীবন্ত অবস্থায় তাদের গণকবর দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘তারা দেখেছে ক্ষুধার্ত মানুষগুলো খাবারের ট্রাকের বাইরে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। তাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে এবং গর্ভবতী মায়েদের স্তন শুকিয়ে গেছে। তাদের হৃদয় ব্যথায় ভারি হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে। তারা অনেক কিছু দেখেছে। অনেক বেশি বলেছে এবং শুটিং আর্কেডে কার্নিভালের হাঁসের মতো তুলে ফেলা হয়েছিল। কখনো একা, কখনো পরিবারের সঙ্গে। প্রযুক্তি জায়ান্টদের পরিচালিত ড্রোনগুলো তাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
শহিদুল আলম বলেন, ‘এই সাহসী সাংবাদিকরা তাদের আত্মত্যাগে বিবেকের প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছেন। তারা মাংস এবং হাড়ের চেয়ে বেশি ছিল। সত্য বলার পবিত্র শিল্পের কাছে শহীদ হয়েছেন তারা। তাদের লেন্স এমন একটি আয়না মানবতার অন্ধকারতম কোণগুলোকে তুলে ধরে। তাদের গল্পের ওজন আমাদের সম্মিলিত বিবেকের উপর চাপ দেয়।’
এই সংহতি প্রদর্শনীটি ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং চলমান গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার অঙ্গীকারের অংশ।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত
১৪৩ দিন আগে
হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মদিন আজ
নন্দিত কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ৭৬তম জন্মদিন আজ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কাজী নজরুল ইসলামের পরে প্রায়শই বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা লেখক হিসাবে বিবেচিত তিনি।বাংলা সাহিত্যকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয় হুমায়ূন আহমেদকে। তিনি 'হিমু', 'মিসির আলী', 'বাকের ভাই' এবং অন্যান্য আইকনিক কাল্পনিক চরিত্রায়নের পাশাপাশি জাদুকরি গল্পের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
হুমায়ূন তার প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে (১৯৭২) এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিলেন। তিনি ২০০ টিরও বেশি উপন্যাস ও গল্পের বই লিখেছেন। যার সবগুলোই বাংলাদেশে সর্বাধিক বিক্রিত। এখনও সেগুলো পাঠকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়।
বাঙালি সংস্কৃতি ও বিনোদন জগতে অসামান্য অবদানের জন্য নব্বই ও ২০০০-এর দশকে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদক, বাচসাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন তিনি।
টেলিভিশনে একজন সফল কন্টেন্ট নির্মাতা হিসেবে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) প্রথম প্রহর (১৯৮৩) নাটকের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক করেন। টেলিভিশনে তার সফল যাত্রা অব্যাহত ছিল জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক 'এই সব দিনরাত্রি', 'বহুব্রীহি', 'অসময়', 'নক্ষত্রের রাত', 'আজ রবিবার' এবং 'বাকের ভাই' চরিত্রে অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর অভিনীত 'কোথাও কেউ নেই' নাটকটি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য।
হুমায়ূন আহমেদ ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসাবে সাফল্য লাভ করেছিলেন এবং তার চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্যারিয়ারে আটটি চলচ্চিত্র তৈরি করেছিলেন। প্রতিটি তার নিজের উপন্যাস অবলম্বনে। তার দুটি চলচ্চিত্র, 'শ্যামল ছায়া' (২০০৪) এবং 'ঘেটুপুত্র কমলা' (২০১২) তাদের নিজ নিজ মুক্তির বছরে সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য একাডেমি পুরস্কারের জন্য অফিসিয়ালি বাংলাদেশি জমা দিয়েছিল।
শঙ্খনীল কারাগার (চিত্রনাট্যকার হিসেবে), 'আগুনের পরশমণি', 'দারুচিনি দ্বীপ' ও 'ঘেটুপুত্র কমলা' চলচ্চিত্রের জন্য তিনি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সাতবার বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
আরও পড়ুন: হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
হুমায়ূন আহমেদের জীবন ও কর্ম স্মরণে তার পরিবার, বিভিন্ন সংগঠন এবং তার গুণগ্রাহীরা আজ জন্মদিন উদযাপন করবেন।
হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মেহের আফরোজ শাওন তাদের ছেলে নিষাদ হুমায়ূন ও নিনিথ হুমায়ূনকে নিয়ে এই দিনে প্রতি বছর রাত ১২টায় রাজধানীর দক্ষিণ হাওয়া বাসভবনে কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করেন।
বিশিষ্ট এই লেখকের বিখ্যাত ফ্যান গ্রুপ হিমু পরিবহন বেশ কয়েক বছর ধরে তার জন্মদিন পালন করে আসছে। সাহিত্যিকের জন্মদিন উপলক্ষে আজ গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে যাবেন তারা।
এদিকে লেখকের নিজ জেলা নেত্রকোনায় তরুণদের সংগঠন হিমু পাঠক আড্ডায় দিনব্যাপী 'হিমু উৎসব' অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে বিখ্যাত গ্রন্থ 'মিসির আলী' অবলম্বনে তাদের নাটক 'আমি এবং আমরা' বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ করবে নাট্যদল বহুবচন।
লেখকের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বিকাল ৪টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি, সংবাদপত্র ও মিলনায়তন বিভাগের পরিচালক ড. সরকার আমিন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেবেন অধ্যাপক আহমেদ মাওলা ও অধ্যাপক সুমন রহমান।
এছাড়া আজ সকালে নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদের সমাধিতে বিভিন্ন সংগঠন ও গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিকালে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
আরও পড়ুন: পাওয়া গেছে হুমায়ূন আহমেদের আঁকা হারিয়ে যাওয়া চিত্রকর্ম
১৪৬ দিন আগে
‘নাট্যশালার উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে জনতার মুখোমুখি দাঁড়ায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী’
সম্প্রতি জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে একটি নাটক মঞ্চায়নের সময় উদ্ভুত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ও বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনতার মুখোমুখি দাঁড় করা হয়নি।
সোমবার (৪ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় জাতীয় শিল্পকলা একাডেমি।
এতে বলা হয়, গত শনিবার (২ নভেম্বর ) ‘দেশ নাটক’ প্রযোজিত নাটক ‘নিত্যপুরাণ’ মঞ্চায়নের সময় এক দল লোক বিক্ষোভ করে তা বন্ধ করে দিতে জড়ো হয়। এসময় আলোচনার মাধ্যমে এটি সমাধানের জন্য শিল্পকলা একাডেমি একাধিকবার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা ক্ষান্ত হয়নি। বরং তাদের সংখ্যা বেড়ে গেলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার উপক্রম হয়। তখন অভিনয়শিল্পী ও দর্শকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ‘দেশ’ নাটকের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে দর্শকের নিকট দুঃখপ্রকাশ করে প্রদর্শনী বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এতে আরও বলা হয়, ৩ নভেম্বর দেশের কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় ‘শিল্পকলায় নাটকের প্রদর্শনী বন্ধের ঘটনা সমর্থন করে না সরকার’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের মূল বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে এটি জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি বিক্ষুব্ধকারীদের নাটক বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনাকে অর্থাৎ শিল্পচর্চার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সরকার সমর্থন করে না মর্মে বুঝিয়েছেন। তিনি মনে করেন , বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
তাছাড়া বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বাবস্থায় জনগণের, শিল্পচর্চার ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিশ্বাস করে। এজন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটির বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি চায় না শিল্পকলার কণ্ঠ কেউ রোধ করুক। কেননা, বাংলাদেশের হাজার বছরের নাটকের ইতিহাস আছে। নাটকের মাধ্যমেই সমাজের ত্রুটি বিচ্যুতি ও বিকল্প ধারণা তুলে ধরা সম্ভব। তাই যারা নাটক করতে চায় তাদের নাটক করতে দিতে হবে। নাটক দেখেই দর্শক বিবেচনা করবে তাদের নাটক তারা গ্রহণ করবে কিনা। মতাদর্শ ও শিল্পকলার হাজার মালভূমির এই বাংলাদেশে সকল দলের নাটক করার বিষয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সার্বিক সহযোগিতা রয়েছে।
শিল্পকলা একাডেমি মনে করে, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে কোনো ব্যক্তির কারণে নাটকের দল যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে প্রচেষ্টা সাংস্কৃতিক সংগঠন বা নাটকের দলের থাকা উচিত। কোনো দলের ভেতরে বিতর্কিত কেউ যদি থাকে, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অস্বীকার করে এবং স্বৈরাচারীর দোসর হয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের কার্যক্রমকে এখনো সমর্থন করে তাহলে দলের পক্ষ থেকেই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এসব গণহত্যার দোসর বা সমর্থনকারীদের তিরস্কার করে, নিন্দা জানায়।
সুস্থ, উৎসবমুখর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও জনবান্ধব শিল্পচর্চায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পাশে থেকে দেশের শিল্প সংস্কৃতিকে সমুন্নত রাখতে দেশের সাংবাদিক, সংস্কৃতিসেবীসহ দেশের জনসাধারণ এগিয়ে আসবে এটাই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রত্যাশা।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো প্রদর্শনী ২০২৪ -এর ঢাকা সংস্করণ শুরু
১৫৪ দিন আগে