সিনেমা
‘ব্ল্যাক মানি’: পূজা চেরী ও রুবেলকে নিয়ে রায়হান রাফীর প্রথম ওয়েব সিরিজ
নতুন বছরের একদম শুরুতে প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিজ নিয়ে হাজির হচ্ছেন বর্তমান সময়ের হিট নির্মাতা রায়হান রাফী। ২০২৫-এর ২ জানুয়ারি দেশীয় ওটিটি (ওভার-দ্যা-টপ) প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে মুক্তি পেতে যাচ্ছে সিরিজটি। বরাবরের মতো এবারও রাফীর কাস্টিংয়ে থাকছে নতুন চমক। ওয়েব কন্টেন্টটির শ্রেষ্ঠাংশে পূজা চেরীর সঙ্গে দেখা যাবে এক সময়ের প্রখ্যাত চিত্রনায়ক ও মার্শাল আর্ট হিরো মাসুম পারভেজ রুবেলকে। চলুন, বাংলা ওটিটি প্লাটফর্ম বঙ্গতে আসন্ন ‘ব্ল্যাক মানি’ সিরিজটির কলাকুশলী এবং গল্পের থিম নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
‘ব্ল্যাক মানি’ নির্মাণের নেপথ্যে
ওটিটির জন্য এর আগে তার বেশ কিছু ওয়েব ফিল্ম থাকলেও ওয়েব সিরিজ পরিচালনায় এই প্রথম রায়হান রাফী। ২০১৮ সালে তার সফল অভিষিক্ত চলচ্চিত্র ‘পোড়ামন ২’ এবং ‘দহন’ বঙ্গ’র স্ট্রিমিং তালিকায় স্থান পেয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো প্রযোজক হিসেবে রাফীর সঙ্গে কাজ করেছে স্ট্রিমিং সাইটটি। যৌথ প্রযোজনায় সঙ্গে রয়েছে কানন ফিল্মস।
ভিএফএক্স (ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট)-এর দায়িত্বে ছিল ফোর্থ ডাইমেন্শন ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট।
আরো পড়ুন: আল্লু অর্জুনের পুষ্পা-২ রিভিউ: ছবি নিয়ে যত হইচই
সিরিজের গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আকাশ সেন এবং বাংলাদেশের দিলশাদ নাহার কণা। আরও আছেন র্যাপ সঙ্গীতশিল্পী সাইফ খান ও তার টিম সিএফইউ-৩৬।
কস্টিউম ডিজাইনে কাজ করেছেন এদিলা ফারিদ তুরিন। সাউন্ড ডিজাইনে রিপন নাথ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর করেছেন আরাফাত মহসিন। সিনেমাটোগ্রাফিতে তাহসিন রহমান, শিল্প নির্দেশনায় শিহাব নুরুন নবী এবং সার্বিক সম্পাদনায় ছিলেন সিমিত রায় অন্তর।
‘ব্ল্যাক মানি’ ওয়েব সিরিজের গল্প
রাতের অন্ধকারে একটি হোটেলের সামনে এসে থামে বস্তা ভর্তি একটি ট্রাক। প্রত্যেকটি বস্তা ভর্তি কাড়ি কাড়ি টাকা। কিন্তু এগুলো কার কাছে এসেছে, কোত্থেকেই বা এসেছে! আসল মালিকানা নিয়ে যখন দানা বেধে উঠছে রহস্য, অন্যদিকে তখনি এই টাকা নিতে সংঘর্ষে মেতে উঠেছে শহরের দুর্ধর্ষ দুই গ্যাংস্টার। একের পর এক পড়তে থাকে লাশ, যেখানে শহরের প্রভাবশালী মাফিয়া, শীর্ষ সন্ত্রাসী, ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ কেউই বাদ যাচ্ছেন না। এত সব লাশের মিছিল পেরিয়ে অবশেষে কোথায় এই কালো টাকার গন্তব্য- এই প্রশ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে সিরিজের কাহিনী।
আরো পড়ুন: ঈদুল ফিতর ২০২৫-এ মুক্তি বরবাদ ও দাগি: আবারও মুখোমুখি শাকিব খান ও আফরান নিশো
ছয় পর্বের সিরিজটিতে একই সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটানো হয়েছে অ্যাকশন, ড্রামা, কমেডি ও থ্রিলার।
বাংলাদেশে চলমান প্রেক্ষাপটের কালো টাকা বিদেশে পাচারকে ঘিরে সৃষ্ট জটিলতাগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সিরিজে। পটভূমির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সবচেয়ে সার্বজনীন শব্দটিকেই শিরোনাম হিসেবে নির্বাচন করেছেন রাফী। গল্পটি রচনাও তিনিই করেছেন। চিত্রনাট্য রচনায় তার সঙ্গে ছিলেন আনাম বিশ্বাস ও আশরাফুল আলম শাওন।
‘ব্ল্যাক মানি’র অভিনয়শিল্পীরা
বঙ্গ অরিজিনাল সিরিজটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হিসেবে থাকছেন ৯০’দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রুবেল। এখানে গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ওয়েব কন্টেন্টে অভিষেক ঘটতে যাচ্ছে অ্যাকশন হিরোর।
আরও একটি প্রধান চরিত্রে থাকা পূজা চেরীরও এটি প্রথম ওয়েব ধারাবাহিক। রাফীর সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের এই তারকারও বড় পর্দায় অভিষেক ঘটেছিল ‘পোড়ামন ২’-এর মাধ্যমে। তারপর দীর্ঘ ৬ বছরের বিরতির পর দর্শক আবারও দেখতে যাচ্ছে এই নায়িকা-পরিচালক জুটির কাজ।
আরো পড়ুন: মুক্তি পাচ্ছে মেহজাবীনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘প্রিয় মালতী’
এই ধারাবাহিকের মধ্যে দিয়ে পূজা অনেক গুণী অভিনয়শিল্পীদের সংস্পর্শ পেলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রথিতযশা পরিচালক ও অভিনেতা সালাহউদ্দিন লাভলু, ইন্তেখাব দিনার, সুব্রত ফারদিন এবং এজাজুল ইসলাম। সমসাময়িক চলচ্চিত্রকর্মীদের মধ্যে আছেন শিবা শানু, রাশেদ মামুন অপু, মীর নওফেল আশরাফী জিসান, সুমন আনোয়ার এবং আরফান মৃধা শিবলু।
ছোট পর্দার সুপরিচিত মুখগুলোর মধ্যে দেখা যাবে জয় রাজ, কচি খন্দকার, সাইদুর রহমান পাভেল, মুকিত জাকারিয়া, ইকবাল বাবু এবং ফরহাদ লিমন।
এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন তাশদিক নমিরা আহমেদ, মাহমুদ আলম এবং শাহরিয়ার ফেরদৌস সজীব।
পরিশিষ্ট
একসঙ্গে অনেক অভিষেকের অবতারণা নিয়ে বাংলা ওটিটি বঙ্গতে মুক্তি পেতে চলেছে পূজা, রুবেল, ও রাফীর ওয়েব সিরিজ ‘ব্ল্যাক মানি’। দুটি ভিন্ন সময়ের অভিনয়শিল্পী হিসেবে পূজা ও রুবেল দুজনেরই রয়েছে নিজস্ব দর্শক। অন্যদিকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হল ও ওটিটি উভয় মাধ্যমে চলচ্চিত্র দিয়ে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন রায়হান রাফী। তাই সমসাময়িক বাস্তবমুখী গল্পের চিত্রনাট্যে দুর্দান্ত পরিবেশনার প্রতিশ্রুতি রাখছে ওয়েব কন্টেন্টটি। একই সঙ্গে দেশীয় বিনোদন জগতের প্রেক্ষাগৃহ থেকে ওয়েবমুখী হওয়ারও অন্যতম এক নিদর্শন স্থাপিত হতে যাচ্ছে এই নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
আরো পড়ুন: মাস্তি ৪: আসছে বলিউডের জনপ্রিয় কমেডি মুভির চতুর্থ সংস্করণ
১৭ ঘণ্টা আগে
মাস্তি ৪: আসছে বলিউডের জনপ্রিয় কমেডি মুভির চতুর্থ সংস্করণ
শুরুটা ছিল ২০০৪ সালে ‘মাস্তি’ মুভির মধ্য দিয়ে। তারপর দীর্ঘ ৯ বছরের ব্যবধানে ২০১৩ সালে মুক্তি পায় ‘গ্র্যান্ড মাস্তি’। অতঃপর মাত্র ৩ বছর পর আসে পরিণত হয়ে ওঠা মাস্তি ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় মুভি
‘গ্রেট গ্র্যান্ড মাস্তি’। তারপর একটানা ৮ বছরের দীর্ঘ বিরতি। অবশেষে এই ২০২৪-এ এলো বলিউডের সাড়া জাগানো কমেডি মুভি সিরিজটির চতুর্থ সংস্করণের ঘোষণা। গত ১৪ ডিসেম্বর মুম্বাইতে শুরু হলো মাস্তি ৪-এর শুটিং। সেই থেকে প্রতীক্ষার বাধ ভাঙা জোয়ারে ভাসছে গোটা সিনেমা পাড়া। কেমন হতে যাচ্ছে এবারের পর্ব? আগের সেই মজার চরিত্রগুলো কি আবার ফিরছে?- চলুন জেনে নেওয়া যাক।
মাস্তি ৪ নির্মাণের নেপথ্যে
প্রথম তিন কিস্তি পরিচালনা করেছিলেন ইন্দ্র কুমার। কিন্তু এবার তার জায়গায় যুক্ত হচ্ছে নতুন নাম। তবে তিনি বাইরের কেউ নন, মাস্তি পরিবারেরই সদস্য মিলাপ জাভেরি। তিনি প্রথম দুই সংস্করণে সংলাপ রচয়িতা ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে ছিলেন। প্রথম দুই কিস্তিতে নির্দেশনার পাশাপাশি স্ক্রিপ্টের দায়িত্বও পালন করেছিলেন কুমার। নতুন সংস্করণে নির্দেশনা ও রচনা দুটোই করবেন জাভেরি।
আরো পড়ুন: ৩৬-২৪-৩৬: কারিনা কায়সার বনাম সমাজে নারীর প্রথাগত সৌন্দর্য্যের মাপকাঠি
প্রযোজনায় একদম শুরু থেকেই ছিল মারুতি ইন্টারন্যাশনাল। তৃতীয় কিস্তিতে যুক্ত হয়েছিল বালাজি মোশন পিকচার্স এবং শ্রী অধিকারী ব্রাদার্স। এবার মারুতি এবং বালাজি টেলিফিল্মসের সাথে থাকছে জি স্টুডিওস এবং ওয়েভব্যান্ড প্রোডাকশন।
এবারের ‘মাস্তি’তে কারা থাকছেন
সিরিজের বিগত চলচ্চিত্রগুলোর মতো এবারেও মিত মেহতা, প্রেম চাওলা ও অমর সাক্সেনা চরিত্রে ফিরছেন যথাক্রমে বিবেক ওবেরয়, আফতাব শিবদাসানি এবং রিতেশ দেশমুখ। পুরো সিরিজ জুড়ে যথারীতি অপরিবর্তিত ছিলেন এই তিন তারকা। তবে তাদের বিপরীতে প্রধান নারী অভিনয়শিল্পীসহ অন্যান্য সহশিল্পীদের বদলটা হয়েছে বেশ নিয়ম করেই।
প্রথমটিতে ছিলেন অমৃতা রাও, তারা শর্মা এবং জেনেলিয়া ডি’সুজা। সঙ্গে আরও ছিলেন অজয় দেবগন ও লারা দত্ত।
আরো পড়ুন: আল্লু অর্জুনের পুষ্পা-২ রিভিউ: ছবি নিয়ে যত হইচই
দ্বিতীয়টিতে দেখা গেছে সোনালী কুলকার্নি, কারিশ্মা তান্না ও মাঞ্জারি ফাড়নিসকে। আর সবশেষে ছিলেন পূজা ব্যানার্জি, মিষ্টি চক্রবর্তী এবং শ্রদ্ধা দাশ।
সেই ধারাবাহিকতায় এবারেও থাকবে তিনটি নতুন মুখ। কিন্তু সেই তিন নায়িকার ব্যাপারে নির্মাতাদের পক্ষ থেকে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।
শুটিংয়ের কয়েকটি ছবি হৈচৈ-এর খোরাক যোগাচ্ছে পুরো নেট দুনিয়া জুড়ে। একটিতে দেখা যাচ্ছে মাস্তি ৪-এর ক্ল্যাপারবোর্ড হাতে হাস্যজ্জ্বল আফতাবকে। কোনোটিতে আফতাব ও রিতেশের সঙ্গে রয়েছেন পরিচালক জাভেরি। আরেকটিতে রিতেশ ও আফতাবসহ মুভির অন্যান্য কলাকুশলীদের সঙ্গে ফ্রেমবন্দি হয়েছেন প্রবীণ অভিনেতা জিতেন্দ্র। সুতরাং মুভিতে জিতেন্দ্রেরও যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
আরো পড়ুন: ঈদুল ফিতর ২০২৫-এ মুক্তি বরবাদ ও দাগি: আবারও মুখোমুখি শাকিব খান ও আফরান নিশো
রিতেশ ও জাভেরির হাস্যরসে ভরপুর একটি ভিডিও নিজের ইন্স্টাগ্রাম প্রোফাইলে পোস্ট করে বিবেকও শিঘ্রই তার শুটিং-এ যোগ দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন।
মাস্তি সিনেমার এবারের জনরা
প্রথম সংস্করণটি সব মিলিয়ে ছিল একটি অ্যাডাল্ট কমেডি ছবি। অবিরাম হাস্যরসে ভরপুর থাকলেও দ্বিতীয় কিস্তির সঙ্গে প্রথমটির গল্পের কোনো সম্পর্ক ছিল না। সর্বশেষ সংস্করণে কমেডির সঙ্গে সংমিশ্রণ ঘটেছিল হরর জনরার। আর সদ্য ঘোষিত মুভিটি হতে যাচ্ছে রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার। সিনেমার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করার সময় ইন্স্টাগ্রাম পোস্টের ক্যাপশনে তারই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিবেক।
শেষাংশ
বিবেক, আফতাব ও রিতেশ-এর স্ব স্ব চরিত্রে প্রত্যাবর্তন 'মাস্তি ৪'-এর প্রতি প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে। চিত্রনাট্যকার মিলাপ জাভেরি নির্দেশনায় কতটা ইন্দ্র কুমারকে ছাড়িয়ে যাবেন তা নিয়ে ব্যাপক উদ্দীপনা মাস্তি ভক্তদের মাঝে। সেই সঙ্গে যোগ হচ্ছে মিত, প্রেম ও অমরের বিপরীতে কাদের দেখা যাবে তা-র কৌতূহল। উপরন্তু, শুটিংয়ের খবর প্রকাশের ভঙ্গিমাই বলে দেয়- কমেডি মুভিপ্রেমিদের জন্য হাস্যরসে ভরা দারুণ এক নির্মাণের নকশা হতে চলেছে।
আরো পড়ুন: মুক্তি পাচ্ছে মেহজাবীনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘প্রিয় মালতী’
২ দিন আগে
মুক্তি পাচ্ছে মেহজাবীনের প্রথম চলচ্চিত্র ‘প্রিয় মালতী’
প্রথমে মিসরের কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৪৫তম আসরে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার। তারপর ভারতের ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভালের ৫৫তম আসরে একমাত্র বাংলাদেশি চলচ্চিত্র হিসেবে প্রদর্শনী। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের এই বিশাল অর্জন নিয়ে এবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে ‘প্রিয় মালতী’।
আগামী ২০ ডিসেম্বর এই ছবি মুক্তির মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মত পূর্ণদৈর্ঘ্য পর্দায় দেখা যাবে মেহজাবিন চৌধুরীকে। ওটিটি কন্টেন্ট ওয়েব ফিল্মে নিজের বৈচিত্র্যময় অভিনয় দিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
চলুন, সিনেমাটির নির্মাণ ও গল্পের পাশাপাশি জেনে নেয়া যাক- এতে কারা হতে যাচ্ছেন মেহজাবিনের সহ-অভিনয়শিল্পী।
চলচ্চিত্র নির্মাণের নেপথ্যে
এই সিনেমাটি পরিচালনার মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটল তরুণ নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্তর। ছবির মূল গল্পও তারই লেখা। চিত্রনাট্যে তার সঙ্গে কাজ করেছেন আবু সাঈদ রানা, চিত্রগ্রাহক হিসেবে ছিলেন তাহসিন রহমান। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে ফ্রেম পার সেকেন্ড, ফিল্মি ফিচার্স এবং ওটিটি ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা চরকি।
ছায়াছবির গল্প
‘হুইসপার্স অব অ্যা থার্স্টি রিভার’ ইংরেজি শিরোনামের চলচ্চিত্রটির মূল গল্প মালতী রানী দাশ নামের একজন নিম্ন-মধ্যবিত্ত নারীকে নিয়ে। স্বামী পলাশ কুমার দাশকে নিয়ে তার সদ্য দাম্পত্য জীবন কাটছে খুনসুটি, ভালোবাসা, আর ছোট ছোট আনন্দে।
এই স্বপ্নীল জীবন নিমেষেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হয় আকস্মিক এক দুর্ঘটনায়। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে শহরের এক ব্যস্ততম বাণিজ্যিক ভবনে, যেখানে কাজ করত পলাশ। খবরটি পাওয়ার পর থেকে মালতী কোনোভাবেই তাকে ফোনে পায় না। নানা আশঙ্কা ও উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে স্বামীকে খুঁজতে মালতীর শুরু হয় এক দীর্ঘ সংগ্রামী যাত্রা। দিন গড়িয়ে যায়, মাস পেরিয়ে বছর হয়; এরপরও কোনো হদিস মেলে না তার। বরং সামাজিক রীতিনীতি ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা মালতীর প্রতিটি পদক্ষেপকে আরও কঠিন করে তোলে।
সত্য ঘটনা-নির্ভর অপরাধ ঘরানার ছবিটির কাহিনী এভাবে প্রধান চরিত্রের নানা চড়াই-উৎড়াইকে নিয়ে এগোতে থাকে ক্লাইম্যাক্সের দিকে। সেইসঙ্গে নাটকীয়তায় যুক্ত হতে থাকে মিস্ট্রি ও সাসপেন্স।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিদের জন্য থাইল্যান্ডের ই-ভিসা চালুর তারিখ ঘোষণা
৬ দিন আগে
'পুষ্পা-২'র প্রদর্শনীতে নারীর মৃত্যু, আল্লু অর্জুন গ্রেপ্তার
গত ৩ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারের বাইরে পদদলিত হয়ে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় দক্ষিণ ভারতীয় তারকা আল্লু অর্জুনকে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, বহুল প্রতীক্ষিত ছবি 'পুষ্পা ২: দ্য রুল'-এর প্রদর্শনীতে অভিনেতার অনির্ধারিত উপস্থিতির সময় নারীর মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল্লু অর্জুনকে জুবিলি হিলসের বাসভবন থেকে হেফাজতে নিয়ে চিক্কাদপল্লি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় তার বাবা ও বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা আল্লু অরবিন্দ এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাসায় ছিলেন।
গ্রেপ্তারের পর ৪১ বছর বয়সী এই অভিনেতা সোমবার পর্যন্ত তার আটকাদেশ স্থগিত রাখার আবেদন করেন। শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় এ আবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে হায়দরাবাদ পুলিশ আল্লু অর্জুন, তার নিরাপত্তা দলের সদস্য এবং সন্ধ্যা থিয়েটারের ব্যবস্থাপকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
ওই দিন অভিনেতাকে এক পলক দেখার জন্য প্রচুর ভিড় হওয়ায় পদপিষ্টের ঘটনায় তাদের ভূমিকার বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: আল্লু অর্জুনের পুষ্পা-২ রিভিউ: ছবি নিয়ে যত হইচই
১ সপ্তাহ আগে
ঈদুল ফিতর ২০২৫-এ মুক্তি বরবাদ ও দাগি: আবারও মুখোমুখি শাকিব খান ও আফরান নিশো
ছবি মুক্তির মঞ্চে ফের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান ও ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ আফরান নিশো। ২০২৫-এর ঈদুল ফিতরকে ঘিরে শাকিবের ‘বরবাদ’ ও নিশোর ‘দাগি’ মুক্তির কথা চলছে। এর আগে ২০২৩ সালের ঈদুল আজহায় ‘প্রিয়তমা’ ও ‘সুড়ঙ্গ’ নিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন দুজন। সেবার শাকিবের ব্লকবাস্টারের সঙ্গে বেশ ভালো প্রতিযোগিতা করেছিল নিশোর অভিষিক্ত সিনেমা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তবে কেমন হতে যাচ্ছে ঢালিউড বক্স অফিসের ডুয়েল! তা জানতে চলুন বিশদ পর্যালোচনা করা যাক- বহুদিন ধরে আলোচনায় থাকা ‘বরবাদ’ আর সদ্য ঘোষিত ‘দাগি’ নিয়ে।
শাকিব খানের বরবাদ
চলচ্চিত্রটি নির্দেশনার মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হতে যাচ্ছে ছোট পর্দার নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয়ের। শাকিবের বিপরীতে ছবির প্রধান চরিত্রে রয়েছেন কলকাতার ইধিকা পাল। ‘প্রিয়তমা’র পর এটি শাকিব-ইধিকা জুটির দ্বিতীয় সিনেমা।
অ্যাকশন ঘরানার ছবিটির আরও একটি বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে এতে অভিনয় করছেন ভারতের অভিনেতা যীশু সেনগুপ্ত। এছাড়া আইটেম গানে দর্শকদের নজর কাঁড়তে থাকবেন নুসরাত জাহান।বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে মিশা সওদাগর এবং মানব সাচদেবকে।
ইতিমধ্যে চলচ্চিত্রটির শুটিং শুরু হয়ে গেছে মুম্বাইতে। পরিকল্পনা রয়েছে ভারতেই করা হবে সিনেমার অধিকাংশ শুটিং।
‘বরবাদ’-এর দৃশ্য পরিচালনায় রয়েছেন মুম্বাইয়ের রবি বর্মা, যিনি সাধারণত বলিউড ও তেলুগু সিনেমাগুলোতে অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন। ড্যান্স কোরিওগ্রাফার হিসেবে আছেন বলিউডের আদিল শেখ। ছবির গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন প্রীতমসহ বলিউডের কিছু শিল্পী।
চলচ্চিত্রটির বাজেট নির্ধারণ হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা, যা রেকর্ড সৃষ্টি করবে বাংলাদেশি সিনেমাজগতে!
আরো পড়ুন: লাকি ভাস্কর মুভি রিভিউ: সততা বনাম লোভের এক জমজমাট গল্প
আফরান নিশোর দাগি
এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড ও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির প্রযোজনায় ‘দাগি’ সিনেমার পরিচালনা করছেন শিহাব শাহীন। ‘ছুঁয়ে দিলে মন’ (২০১৫)-এরপর এটি নির্মাতার দ্বিতীয় সিনেমা। একই সঙ্গে রায়হান রাফী পরিচালিত ‘সুড়ঙ্গ’(২০২৩)-এরপর এটি নিশোরও দ্বিতীয় সিনেমা।
মূল চরিত্রে নিশোর সঙ্গে দেখা যাবে তমা মির্জাকে। নিশোর মতো তিনিও প্রায় দেড় বছর বিরতির পর আসছেন ক্যামেরার সামনে। একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করবেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামাল।
ছবির গল্প আবর্তিত হবে নিশোর চরিত্রটিকে ঘিরে, যেখানে ফুটে উঠবে মুক্তি ও প্রায়শ্চিত্যের উপাখ্যান।
মুক্তির দিনক্ষণকে সামনে রেখে ‘দাগি’র শুটিং ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তবে তার বিশদ বৃত্তান্ত এখনও অপ্রকাশিত রেখেছেন নির্মাণ টিম।
আগে নিশো ও শিহাব শাহীন একত্রে কাজ করেছিলেন ‘মরীচিকা’(২০২১) ও ‘সিন্ডিকেট’(২০২২) ওয়েব সিরিজে। দুটোই যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছিলো দর্শক মহলে।
আরো পড়ুন: ৩৬-২৪-৩৬: কারিনা কায়সার বনাম সমাজে নারীর প্রথাগত সৌন্দর্য্যের মাপকাঠি
বরবাদ বনাম দাগি
গত বছর ‘প্রিয়তমা’ এবং ‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তির সময় যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছিল সারা দেশের হলগুলো। প্রথম দুই দিনে একক হলগুলোতে কর্তৃত্ব ছিল ‘প্রিয়তমা’র। আর মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে দাপিয়ে বেড়িয়েছিল ‘সুড়ঙ্গ’।
মুক্তির আগে স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘প্রিয়তমা’র থেকে ‘সুড়ঙ্গ’-এর জন্যই বেশি বুকিং হয়েছিল অগ্রিম টিকেটের। প্রথম দিনে স্টারের সব শাখায় ‘সুড়ঙ্গ’র মোট শো ছিল ১৮টি। দ্বিতীয় দিনে দর্শকের চাহিদার কারণে তা বাড়ানো হয়েছিল ৩০-এ। এমনকি হলিউডের সিনেমার শিডিউলও বাতিল করা হয়েছিল ‘সুড়ঙ্গ’র জন্য। অন্যদিকে প্রথম থেকেই ‘প্রিয়তমা’র নির্ধারিত আটটি শো অপরিবর্তিত ছিল। বাংলা ভাষার ছবি হিসেবে সিনেপ্লেক্সে এটি ছিল নতুন রেকর্ড।
সামাজিক মাধ্যমে সমালোচক ও ভক্তদের তর্ক-বিতর্কে একটি বিষয় খুব বেশি উঠে এসেছিল। আর তা হলো কনটেন্টের দিক থেকে ‘প্রিয়তমা’র চেয়ে ‘সুড়ঙ্গ’ অনেকটা এগিয়ে।
কিন্তু নির্দেশনায় এবারে রাফীর বদলে আছেন শাহীন। প্রযোজন সংস্থা এক হলেও গল্প ও চিত্রনাট্যে ‘দাগি’ কতটা ‘সুড়ঙ্গ’র সমপর্যায়ের হতে পারবে তা বলাই বাহুল্য। অভিনয় দিয়ে সুনেরাহ ও তমাকে নিয়ে বেশ শক্ত অবস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন নিশো। তবে ‘বরবাদ’-এর মতো মাসালা মুভিকে ছাড়িয়ে যেতে হলে গল্প, সঙ্গীত, সম্পাদনা; মোটকথা সামগ্রিক পরিবেশনায় হতে হবে অনবদ্য। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে হল সংকট এবং ছবিগুলোর প্রচারও বিরাট প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে।
আরো পড়ুন: আল্লু অর্জুনের পুষ্পা-২ রিভিউ: ছবি নিয়ে যত হইচই
শেষাংশ
শাকিব খানের ‘বরবাদ’ এবং আফরান নিশোর ‘দাগি’ নিঃসন্দেহে এক উপভোগ্য ২০২৫ ঈদ মৌসুম উপহার দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশি সিনেমাপ্রেমিদের। পরিচালনায় অভিজ্ঞতার দৌড়ে শিহাব শাহীনের তুলনায় মেহেদী হাসান হৃদয় যে কিছুটা পিছিয়ে থাকবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এই ঘাটতিটুকু নিমেষেই পূরণ করে দেবে ঢালিউড কিং খানের উপস্থিতি। অভিনয়ের দিক থেকে নিশো-শাকিব দুজনেরই রয়েছে স্বপ্রতিভ ক্ষেত্র, যেখানে প্রত্যেকে রয়েছেন শিখরে। তাই লড়াইয়ের মূল পরিণতি ঠিক করে দেবে ছবি দুটির গল্প, চিত্রনাট্য, সঙ্গীতায়োজন এবং সম্পাদনা। উপরন্তু, এমন প্রতিযোগিতাপূর্ণ চলচ্চিত্র মৌসুমের পুনরাবৃত্তি জানান দিচ্ছে যে, ঢাকাই সিনেমায় সুদিন ফিরতে যাচ্ছে।
১ সপ্তাহ আগে
আল্লু অর্জুনের পুষ্পা-২ রিভিউ: ছবি নিয়ে যত হইচই
সংলাপ, অ্যাকশন, গান ও বৈচিত্র্যপূর্ণ গল্পের পরিবেশনে সর্বদাই আলাদা আবেদন থাকে দক্ষিণ ভারতীয় মুভিগুলোতে। চলচ্চিত্র মুক্তির প্রতিটি উৎসবমুখর মৌসুমে তারই প্রমাণ মেলে কলিউড, টলিউড, মলিউড ও স্যান্ডালউড জুড়ে। সেখানে যদি আবার ভারতের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত নায়ক আল্লু অর্জুনের ছবির কথা আসে, তাহলে স্বভাবতই প্রত্যাশা আরও একটু বেড়ে যায়। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার রেকর্ড সৃষ্টিকারী সিনেমা ‘পুষ্পা: দ্যা রাইজ’-এর সিকুয়াল ‘পুষ্পা: দ্যা রুল’। এরই মধ্যে শিরোনামটির পাশে যুক্ত হয়েছে পাহাড় সমান উপার্জনের অংক। চলুন, এ পর্যন্ত পুষ্পা-২ চলচ্চিত্রটির মোট উপার্জন এবং পর্দার সামনের ও পেছনের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া জেনে নেওয়া যাক।
পুষ্পা-২ চলচ্চিত্র বৃত্তান্ত
তেলেগু ভাষার ছবিটির রচনা ও পরিচালনায় ছিলেন সুকুমার। সুকুমার রাইটিংস ও মিথ্রি মুভি মেকার্স প্রযোজিত চলচ্চিত্রটির সংলাপ রচনা করেছেন শ্রীকান্থ ভিস্সা। পুষ্পা ফ্যাঞ্চাইজির এই দ্বিতীয় কিস্তিটি ‘পুষ্পা: দ্যা রাইজ’ (২০২১)-এর সিক্যুয়াল। নাম ভূমিকায় আল্লু অর্জুনের পাশাপাশি প্রধান নারী চরিত্রে যথারীতি অভিনয় করেছেন রাশ্মিকা মন্দানা। অন্যান্য ভূমিকায় আছেন ফাহাদ ফাসিল, জগপতি বাবু, রাও রমেশ, সুনীল এবং অনসূয়া ভরদ্বাজ।
বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ছিল ধনঞ্জয়ের ক্যামিও। গত ৫ ডিসেম্বর ছবিটি ভারতসহ সারা বিশ্বে মুক্তি পায়।
আরো পড়ুন: মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সেরা কাজগুলো: চলচ্চিত্র, ধারাবাহিক ও নাটক
ভারতীয় বক্স অফিসে পুষ্পা-২
ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল চলচ্চিত্রগুলোর তালিকায় স্থান পাওয়া এই ছবিটির নির্মাণ বাজেট ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি রুপি। বাংলাদেশি টাকায় এই বাজেট ৫৬৫ কোটি থেকে ৭০৬ কোটি টাকা (১ রুপি = ১ দশমিক ৪১ বাংলাদেশি টাকা)।
আর উপার্জনের দিক থেকে চলচ্চিত্রটির বিস্ময়কর অবস্থান জন্ম দিয়েছে বিপুল উত্তেজনার। মুক্তির আগেই এটি ভারতে সর্বোচ্চ প্রি-রিলিজ ব্যবসার রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে থিয়েট্রিকাল ও নন-থিয়েট্রিকাল ব্যবসা থেকে সর্বমোট আয় ছিল ১ হাজার ৮৫ কোটি রুপি (১ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা)।
এর মধ্যে ২০০ কোটি রুপি (২৮২ কোটি টাকা) উঠেছে হিন্দি ডাব্ড ডিস্ট্রিবিউশন স্বত্ত্ব থেকে। ভারতের বাইরে গোটা বিশ্ব থেকে আয় হয়েছে ১৪০ কোটি রুপি (১৯৭ কোটি টাকা)। ডিজিটাল, স্যাটেলাইট এবং সঙ্গীত স্বত্ত্ব থেকে আয় হয়েছে মোট ৪২৫ কোটি রুপি (৬০০ কোটি টাকা)।
আরো পড়ুন: ভূতের গল্পে পর্দায় আসছেন সত্যম, সন্দীপ্তা ও সুহত্র
কেবল অগ্রিম টিকেট বুকিং থেকেই বিশ্বব্যাপি আয় হয়েছে ১০০ কোটি রুপি (১৪১ কোটি টাকা)। এভাবে অগ্রিম বিক্রি করা টিকেটের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। ছবিটি ‘বুকমাইশো’-তে প্রথম ১০ লাখ টিকেট বিক্রিতে দ্রুততম চলচ্চিত্র হওয়ার রেকর্ড স্থাপন করেছে।
আর মুক্তির পর প্রথম দিনেই মুভিটি বিশ্বজুড়ে ২৮০ কোটি রুপি (৩৯৫ কোটি টাকা) আয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ভারতীয় চলচ্চিত্রের রেকর্ডটি দখল করে নেয়। রবিবার, চতুর্থ দিনে (৯ই ডিসেম্বর) ভারতে ১৪১.৫০ কোটি টাকা আয় করেছে পুষ্পা-২ ছবিটি।
পুষ্পা-২ সিনেমা ঘিরে যত প্রতিক্রিয়া
গত ৪ ডিসেম্বর হায়দ্রাবাদের সন্ধ্যা হলে মুভি চলার সময় এক নারী তার ছোট ছেলেসহ দুর্ঘটনাবশত ভিড়ের মধ্যে মাটিতে পড়ে যান। এতে পায়ের নীচে চাপা পড়ে ছোট ছেলেটি গুরুতরভাবে আহত হয় আর নারীটি মারা যান। এতে আল্লু অর্জুনসহ গোটা ফিল্মের ইউনিট, হল মালিক ও অর্জুনের নিরাপত্তা দলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। অর্জুনের টিম ছেলেটিকে সবরকম সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয়।
আরো পড়ুন: সুজিত সরকারের সঙ্গে অভিষেক বচ্চনের নতুন ছবি 'আই ওয়ান্ট টু টক'
এর আগে মুক্তির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অনলাইন পাইরেসির শিকার হয় সিনেমাটি। এটি বিনামূল্যে ডাউনলোডের জন্য বেশ কয়েকটি পাইরেসি ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত হয়ে যায়। এগুলোর মধ্যে ছবিটির ন্যূনতম ২৪০ পিক্সেল থেকে ১ হাজার ৮০ পিক্সেলের এইচডি প্রিন্ট পর্যন্ত একাধিক রেজোলিউশন অন্তর্ভূক্ত ছিল। এর ফলে রোষানলে পড়ে চলচ্চিত্রটির উচ্চ মূল্যের টিকিট এবং সেই সঙ্গে বক্স অফিস সাফল্য। পরবর্তীতে রাজনৈতিক সমর্থনে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
এছাড়াও মুভিটির কিছু বানোয়াট সংলাপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সংলাপগুলোর রচয়িতা হিসেবে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তির নাম দাবি করা হয়, যারা কোনোভাবে এই মুভির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। এই মিথ্যাচার বন্ধের লক্ষ্যে মিথ্রি মুভি মেকার্স তাদের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মাধ্যমে কঠোর সতর্কতা জারি করে।
বক্স অফিসের প্রভাব কতটুকু ছিল সিনেমার পর্দায়
.
পরিচালনা
৩ ঘণ্টা ২০ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি স্থান পেয়েছে এখন পর্যন্ত নির্মিত ভারতের দীর্ঘতম পূর্ণদৈর্ঘ্য মুভিগুলোর তালিকায়। এই বিস্তৃত পরিসরের পরিবেশনার প্রধান দিক ছিল পরিচালক সুকুমারের নৈপুণ্য। তিনি এখানে সামাজিক আবহের সঙ্গে সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন চিত্তাকর্ষক বিনোদনের। চিত্রনাট্যের বুননে ছিল আবেগ, অ্যাকশন এবং চক্রান্তের ভারসাম্যপূর্ণ নাট্যরূপ। গ্রহণযোগ্য গতিশীলতার কারণে দীর্ঘ পরিসরের দৃশ্যায়নগুলোর প্রতিটি অংশ ছিল মনোযোগ ধরে রাখার মতো।
আরো পড়ুন: 'বাজিগর ২' নিয়ে আলোচনায় শাহরুখ খান
শুধু পুষ্প রাজ-ই নয়, বনওয়ার শিং শেখাওয়াতসহ অন্যান্য পার্শ্ব চরিত্রগুলোকেও তিনি প্রাণবন্ত রেখেছেন সূক্ষ্ম রসবোধের মাধ্যমে। প্রতিটি চরিত্র নিজের স্বতন্ত্র পরিচয় নিয়ে ধরা দিয়েছে পূর্ণদৈর্ঘ্য ফ্রেমে। এমনকি শেষের দিকে পুষ্পার আভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দ্বন্দ্বের দৃশ্যায়নটিও ছিল বেশ সন্তোষজনক এবং উপভোগ্য।
২ সপ্তাহ আগে
৩৬-২৪-৩৬: কারিনা কায়সার বনাম সমাজে নারীর প্রথাগত সৌন্দর্য্যের মাপকাঠি
শুধু মুখশ্রী ও শারীরিক গড়নের নিরীখে একজন নারীকে বিচার করা অনেক প্রাচীন ধ্যানধারণা। অথচ একবিংশ শতাব্দির তথ্য-প্রযুক্তির যুগেও এই সামাজিক স্টেরিওটাইপ থেকে বের হওয়া সম্ভব হয়নি। বরং আরও গেঁড়ে বসেছে সমাজের বেঁধে দেওয়া তথাকথিত সৌন্দর্যের মাপকাঠি। ফলে জন্মগত ভাবে যেসব নারী সেই শর্ত পূরণে অপারগ হচ্ছেন, তাদের বেছে নিতে হচ্ছে বিষণ্নতার জীবন। এমনি এক জীবনের বর্ণিল উপাখ্যান চরকি অরিজিনাল মুভি ৩৬-২৪-৩৬। ওটিটির আগেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে সিনেমাটির ভূয়সী প্রশংসা চলছে দর্শক মহলে। চলুন, ৩৬ ২৪ ৩৬ মুভিটির বিশদ বৃত্তান্তসহ জেনে নেওয়া যাক- কীভাবে চটকদার শিরোনামের চলচ্চিত্রটি বিস্তৃত পরিসরে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা পেল।
৩৬-২৪-৩৬ চলচ্চিত্রের নেপথ্যের মানুষ
চরকি ও ছবিয়ালের ব্যানারে নির্মিত এই কমেডি নাট্য-চলচ্চিত্রটি চরকির মিনিস্ট্রি অব লাভ প্রকল্পের পঞ্চম ছবি। এই প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে নির্মিত চারটি ছবি হলো- ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’, ‘মনোগামী’, ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’ ও ‘ফরগেট মি নট’।
‘৩৬-২৪-৩৬’-এর পরিচালনায় ছিলেন রেজাউর রহমান, যিনি মোনতাসির মান্নানের সঙ্গে ছবিটির গল্পও লিখেছেন। রচনায় আরও ছিলেন মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করা সামাজিক মাধ্যমের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে খ্যাত কারিনা কায়সার। এটিই তার বড় পর্দায় প্রথম কাজ। মুভির কয়েকটি দৃশ্যে দেখা গেছে তার বাবা জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় কায়সার হামিদ এবং মা লোপা কায়সারকে।
কারিনার সঙ্গে সিনেমার মূল চরিত্রগুলোতে ছিলেন সৈয়দ জামান শাওন, প্রার্থনা ফারদিন দীঘি, আবু হুরায়রা তানভীর এবং ডানা ভাই জোস খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কামরুন নাহার ডানা।
অন্যান্য গুরুত্ব ভূমিকায় দেখা গেছে শহীদুল আলম সাচ্চু, মিলি বাশার, গোলাম কিবরিয়া তানভীর, মানস বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস কুমার মৃধা, রোজী সিদ্দিকী ও শামীমা নাজনীনকে।
২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর ছবিটি দেশজুড়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। অতঃপর ২৮ নভেম্বর থেকে ওটিটি চরকির গ্রাহকদের জন্যও ছবিটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন: পেক্ষাগৃহে আসছে ‘ভয়াল’
৩৬ ২৪ ৩৬ মুভি রিভিউ
.
দুটি স্তরে বিভক্ত চিত্রনাট্য
হাস্যরস ও আবেগের মিশেলে ভরপুর পুরো গল্পটি চার বছর সময়ে দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে কেন্দ্রীয় চরিত্রকে ঘিরে গড়তে থাকে গল্পের গাঁথুনি।
এ অংশে সায়রাকে দেখা যায়, একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হিসেবে। নিছক আবেগের বশে নয়; মেধাবী ও বাস্তববাদী সায়রা যেকোনো কিছু বিচার করে যুক্তি দিয়ে। আর এই বৈশিষ্ট্য তাকে করে তুলেছে অনুসরণীয় পেশাদারিত্ব ও উদ্যোগী দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী।
নিজের স্থুল শরীর নিয়ে খুব ব্যতিব্যস্ত হওয়ার সুযোগ তার নেই।এরপরেও পেশা যখন সামাজিক অনুষ্ঠান নিয়ে, তখন প্রায়ই তাকে সমাজের তথাকথিত দৃষ্টিভঙ্গি সামাল দিতে হয়। তখন অলক্ষ্যেই হৃদয়ের গহীনে কোথাও গুপ্ত বঞ্চিত বিষণ্ণ সত্ত্বাটির মুখোমুখি হতে হয় সায়রাকে। অবশ্য প্রতিবারই বিষয়টিকে মেনে নিয়ে পেশাদারিত্বের সঙ্গে নিজেকে সামলে নেয় সে।
কিন্তু মেঘমুক্ত আকাশে হঠাৎ বৃষ্টির মতো সায়রার জীবনে প্রেম নিয়ে আসে তাহসির। জীবন নিয়ে তার মনে এতদিন ধরে গড়ে ওঠা চিন্তা-চেতনা সব ভুল প্রতীয়মান করে ঘটতে শুরু করে অমূল্য কিছু ঘটনা। তবে বেশি দিন স্থায়ী হয় না এই সুখের অনুভূতি। হঠাৎ তাহসিরের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারে না সায়রা। বহু কষ্টে তার বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগের পর জানতে পারে যে তাহসির ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন। প্রচণ্ড শঙ্কায় মনোকষ্টে দিন কাটতে থাকে সায়রার। তাহসিরের আরোগ্য লাভের জন্য দোয়া করতে থাকে।
তারপর হঠাৎ একদিন সেই বন্ধু ফোন করে জানায়, তাহসির আর বেঁচে নেই। এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় সিনেমার প্রথম ভাগ।
দ্বিতীয় অংশে দেখা যায়- সায়রার নিজেরই একটা ওয়েডিং প্ল্যানিং প্রতিষ্ঠান হয়েছে। একসঙ্গে অনেক ক্ল্যায়েন্টকে সার্ভিস দিতে গিয়ে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় তার টিমকে। এরই মধ্যে আবার এক পুরাতন ক্লায়েন্ট রহমান সাহেবের মেয়ের ওয়েডিং প্ল্যানের জন্য সময় বের করতে হয়। আর এখানেই দেখা মেলে নতুন চরিত্র প্রিয়ন্তির। প্রাণচ্ছল ও চঞ্চল প্রকৃতির মেয়েটির পুরো বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে আবর্তিত হয় গল্পের দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত ভাগ। এ অংশটি প্রথম অংশের তুলনায় আরও বিচিত্র এবং হাস্যরসে ভরপুর। সেই সঙ্গে রয়েছে সংগীত বিনোদন, প্রেম ও টুইস্ট।
আরো পড়ুন: কোন নাটকের মাধ্যমে নির্দেশনায় ইতি টানছেন অঞ্জন দত্ত
সায়রা চরিত্রের বিভিন্ন দিক
এই চরিত্রের মাঝে একাধারে রয়েছে একজন পেশাদার ব্যবস্থাপক, প্রতিভাবান শিল্পী, বিষণ্নতা আড়াল করে চলা মানুষ এবং ইতিবাচক মনোরম ব্যক্তি সত্ত্বা। কাহিনির বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে প্রাসঙ্গিকভাবে এগুলো ফুটিয়ে তোলা যেকোনো নতুন অভিনেত্রীর জন্যই চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু তা মোকাবিলায় বেশ ভালোভাবেই উতরে গেছেন কারিনা। বিশেষ করে মনোলগ, সংলাপহীন বিষণ্নতা ও দুঃখবোধের জায়গাগুলোতে তার অভিব্যক্তিগুলো ছিল প্রশংসনীয়।
গল্পের টুইস্ট ও ক্লাইমেক্স অংশগুলোতেও তার প্রতিক্রিয়াগুলো ছিল যথেষ্ট নিয়ন্ত্রিত এবং পরিমিতিবোধ সম্পন্ন। অবশ্য এখানে দৃশ্যের গতিশীলতার জন্য সম্পাদনা ও পরিচালনাও কৃতিত্বের দাবি রাখে।
২ সপ্তাহ আগে
লাকি ভাস্কর মুভি রিভিউ: সততা বনাম লোভের এক জমজমাট গল্প
জীবনমুখী গল্পের আবেগঘন নাটকীয়তা দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার বিরাট এক জনরা দখল করে আছে। এমন ঘরানার চলচ্চিত্রের প্রাণপুরুষদের অন্যতম হচ্ছেন দুলকার সালমান। তার উপস্থিতি অনায়াসে ঘুচিয়ে দেয় ছবির বাণিজ্যিক আবেদন ও শৈল্পিক গভীরতার মধ্যকার ব্যবধান। এই ধারাবাহিকতার উন্মুক্ত বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে সাম্প্রতিক মুভি লাকি ভাস্করে।
চরিত্র ও গল্পের বৈচিত্র্যময় পরিবেশনা নিয়ে সমালোচক ও দর্শকদের মধ্যে দুলকার সালমানের লাকি ভাস্কর সিনেমাটি ইতোমধ্যে বেশ আগ্রহের জন্ম দিয়েছে। কারা ছিলেন সিনেমাটির নেপথ্যের কলাকুশলী, পর্দায় তাদের পরিবেশনাই বা কেমন ছিল, চলুন, তা পর্যালোচনা করা যাক।
লাকি ভাস্কর বৃত্তান্ত
তেলেগু ভাষার অপরাধ ঘরানার চলচ্চিত্রটির রচনা ও পরিচালনায় ছিলেন ভেঙ্কি আটলুরি। সিথারা এন্টারটেইনমেন্ট্স, ফরচুন ফোর সিনেমা ও শ্রীকারা স্টুডিওর অধীনে ছবির প্রযোজনা করেছেন এস নাগা ভামসি ও সাই সৌজন্যা।
শ্রেষ্ঠাংশে সিনেমার নাম ভূমিকায় থাকা দুলকার সালমানের বিপরীতে ছিলেন মীনাক্ষী চৌধুরী। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন তিনু আনান্দ, পি সাই কুমার, রামকি, রঘু বাবু, সর্বদামান ডি ব্যানার্জি, শচীন খেড়েকার, প্রভাস শ্রীনু, হাইপার আদি, শিবনারায়ণ নারিপেদি ও সূর্য শ্রীনিবাস।
আরও পড়ুন: প্রসঙ্গ জেনারেশন জেড: কারা এই জেন জি প্রজন্ম, কী তাদের বৈশিষ্ট্য
সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র ভাস্কর কুমার একজন নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষ যিনি পেশায় ব্যাংকের ক্যাশিয়ার। টানাপোড়েনের জীবন থেকে বাঁচতে এক ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার পর তিনি জড়িয়ে পড়েন ভয়াবহ এক আর্থিক কেলেঙ্কারিতে।
সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী মুক্তি পায় চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর।
লাকি ভাস্কর মুভি রিভিউ
ছবিটিতে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ার বিষয়টি হচ্ছে একই চরিত্রের মধ্যে বিচিত্রতা। ভিন্ন অংশগুলোর প্রতিটি প্রেক্ষাপটের সঙ্গে পার্শ্ব-চরিত্রগুলোকে পরিমিত অনুষঙ্গে সম্পৃক্ত করেছেন নির্দেশক আটলুরি। ফলে উপজীব্য কাহিনীর আবহে উঠে এসেছে পরস্পরের মধ্যে সম্পর্কযুক্ত গুটি কয়েক বিষয়। চলুন, গভীরভাবে তা বিশ্লেষণ করা যাক।
গল্পের আবেদন ও পরিণতি
সিনেমার প্রধান চরিত্র ভাস্কর ব্যাংকের একজন ক্যাশিয়ার, যিনি নিজের সংসার চালাতে রীতিমত যুদ্ধ করে চলেছেন। তার পরিবারে রয়েছে তার স্ত্রী সুমতি ও অসুস্থ বাবা।
ভাস্করের দিন বদলের জন্য আলোকবর্তিকা নিয়ে হাজির হন অ্যান্টনি। জীবনের যাবতীয় সমস্যা থেকে বাঁচার চাবিকাঠি থাকলেও মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে অ্যান্টনির প্রস্তাবে।
আরও পড়ুন: কোন নাটকের মাধ্যমে নির্দেশনায় ইতি টানছেন অঞ্জন দত্ত
এই সুযোগ আপাতদৃষ্টিতে আশীর্বাদ মনে হলেও উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভাস্কর নিমেষেই এগিয়ে যেতে থাকে অন্ধকার জগতের দিকে। আর এভাবেই চলচ্চিত্রটি দর্শকদের নিকট আবেদন রেখে যায় গল্পে প্রবেশের।
এক দিকে ভাস্কারের অবৈধ পদক্ষেপগুলো সাময়িক স্বস্তির উদ্রেক করে, অন্যদিকে লোভের কারণে তার জীবন জড়িয়ে পড়তে থাকে নানাবিধ জটিলতায়। সফলতা পাওয়ার শর্টকাট রাস্তাগুলো খুব আকর্ষণীয় হলেও দিন শেষে যে এর চরম মূল্য দিতে হয়- তা-ই ফুটে ওঠে গল্পের পরিণতিতে।
কাহিনী বিন্যাসের জড়তার রোমাঞ্চকর রূপান্তর
মুভির প্রথমার্ধের ধীরগতিটা যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল তা খুব সহজেই বোঝা যায়। যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে প্রতিটি চরিত্র ও কাহিনীর স্তম্ভগুলোর গাঁথুনি দেয়া হয়েছে। দীর্ঘ ভনিতা দর্শকদের কিছুটা খেই হারানোর দিকে ধাবিত করলেও আবেগের উপকরণগুলো চিত্রনাট্যকে একদম গতিহীন হতে দেয়নি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হয় নাটকীয়তার অভিকর্ষ প্রভাব, যেখানে পরতে পরতে থাকে অপ্রত্যাশিত টুইস্ট।
নেপথ্যে আবেগঘন পটভূমি থাকলেও ব্যাংক রসিদ কেলেঙ্কারির ক্লাইমেক্সটি উত্তেজনাকে সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দেয়। এ অংশে মুভির সামগ্রিক সম্পাদনা ও আটলুরির চিত্রনাট্যে মেধার বিশদ পরিচয় মেলে।
আরও পড়ুন: শুক্রবার পেক্ষাগৃহে আসছে ‘ভয়াল’
বৈচিত্র্যপূর্ণ স্তরে চরিত্রের বিকাশ
একজন ভাস্করকে লাখ লাখ মধ্যবিত্ত চাকরীজীবীদের অন্তরে পৌঁছে দিয়েছেন দুলকার। আর্থিক নিরাপত্তাহীনতার সঙ্গে অপমান, হতাশা এবং সেই সঙ্গে ধন-দৌলতের নেশা ছিল তার চরিত্রের প্রধান দিক। বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রত্যেকটির স্বাধীন পরিস্ফূটন ঘটেছে তার অভিব্যক্তিতে, যা কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই স্পর্শ করেছে দর্শকদের অনুভূতি।
সুমতির চরিত্রে মীনাক্ষী চৌধুরীর অবস্থান সংলাপ ও আবহতে যোগ করেছে উষ্ণতা। চলচ্চিত্রের কাহিনীকে পূর্ণতা দিয়েছেন ব্যাংকের জিএমের ভূমিকায় শচীন খেড়েকার ও অ্যান্টনির চরিত্রের রামকি।
শৈল্পিকতা ও চিত্তবিনোদনের যুগপৎ বিচরণ
মুভির পরিবেশ, আবহ, দৃশ্যধারণের নৈপুণ্য বাড়ানোর জন্য প্রযুক্তিগত দিকগুলো নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। জি ভি প্রকাশ কুমারের সঙ্গীত পরিচালনা উদ্দীপনা ও অপ্রতুলতার পাশাপাশি প্রাসঙ্গিকতা বজায়ে পরিপূরক হিসেবে কাজ করেছে।
সঙ্গীতায়োজনে দারুণ সংযোজন ছিল ভিশা মিশ্র ও শ্বেতা মোহানের ডুয়েট এবং উশা উথুপের প্লেব্যাকগুলো। গল্পের মূল আবেদন থেকে রোমাঞ্চকর দৃশ্যের রূপায়নকে চমকপ্রদ করে তুলেছে নিমিশ রাভির সিনেমাটোগ্রাফি। ভাস্করের সংকট নিরসণের কায়দা এবং আর্থিক কেলেঙ্কারির ক্লাইম্যাক্স সিনেমার পরিণত সম্পাদনার দৃষ্টান্ত।
আরও পড়ুন: মার্চে মুক্তি পাচ্ছে সি শঙ্করন নায়ারকে নিয়ে নির্মিত অক্ষয় ও করণ জোহরের ছবি
কিছু অপূর্ণতা
মূলত প্রথমার্ধের ধীরগতিটাই এই ছবির সবচেয়ে বড় অপূর্ণতা। বিশেষত সংকটের সুবিধাজনক সমাধান দৃশ্যায়নে পরিমিতিবোধের কিঞ্চিত ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। উপরন্তু, মাঝেমধ্যেই দুলকারের চতুর্থ দেওয়াল ভাঙ্গার ব্যাপারটি ‘টুয়েল্ফথ ফেইলের’ রিস্টার্টের মতো স্লোগান বা পাঞ্চ লাইন হয়ে উঠতে পারেনি।
পরিশেষ
লাকি ভাস্কর মুভিটি ৮০-এর দশকের শেষের দিকে মধ্যবিত্তের সহজাত প্রবৃত্তি, উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও জীবন সংগ্রামের নিরঙ্কুশ পরিস্ফূটন। প্রধান ভূমিকায় দুলকার সালমানের সপ্রতিভ অভিনয়ের পাশাপাশি নিজেদের চরিত্রগুলোর সুবিচারে সচেষ্ট ছিলেন সহ-অভিনয়শিল্পীরা।
এখানে গল্পের মূল নির্যাস তুলে এনে কাঙ্ক্ষিত বার্তাটি প্রকাশে ভেঙ্কি আটলুরির অবদান অনস্বীকার্য। সিনেমার প্রথমার্ধে কাহিনী গঠনের জড়তা গতি পেয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে, যেখানে বায়োপিকের রূপান্তর ঘটেছে রুদ্ধঃশ্বাস থ্রিলারে।
সর্বোপরি, সম্পাদনা, সঙ্গীত ও সিনেমাটোগ্রাফির দুর্দান্ত সমন্বয়ে চলচ্চিত্রের শেষ পর্যন্ত দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সেরা কাজগুলো: চলচ্চিত্র, ধারাবাহিক ও নাটক
২ সপ্তাহ আগে
শুক্রবার পেক্ষাগৃহে আসছে ‘ভয়াল’
সার্টিফিকেশন বোর্ড চালু হওয়ার পর দেশের প্রথম প্রাপ্তবয়স্কদের সিনেমা হিসেবে এ গ্রেডে ছাড়পত্র পেয়েছে ‘ভয়াল’। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) প্রেক্ষাগৃহে অসছে সিনেমাটি।
সিনেমাটির ডিস্ট্রিবিউটর জাজ মাল্টিমিডিয়ার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ভয়াল সিনেমা পরিচালনা করেছেন বিপ্লব হায়দার। এতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ ও আইশা খান। অন্যতম একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন শওকত সজল। সিনেমাটিতে কামাল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভূতের গল্পে পর্দায় আসছেন সত্যম, সন্দীপ্তা ও সুহত্র
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি নেতিবাচক একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। কামাল সমাজের একজন খারাপ লোক। চোরাকারবারী, নারী লোভী ও অসৎ এক লোক। কমেডি ধাঁচের চরিত্রও বলতে পারেন। দর্শকের ভালো লাগার মতো এই চরিত্র। যখন কাজটির প্রস্তাব পাই তখন ওয়েব ফিল্ম নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল নির্মাতার। তাকে বলেছিলাম গল্পটি ভালো। এটি সিনেমা হতে পারে। শুরুতে প্রযোজক রাজি না হলেও পরে রাজি হন। সিনেমাটি নিয়ে আমরা অনেক আশাবাদী।’
সিনেক্রাফট ক্রিয়েশনসের ব্যানারে নির্মিত ‘ভয়াল’ চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছেন তরুণ প্রযোজক আশিকুর রহমান। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ, আইশা খান, গোলাম ফরিদা ছন্দা, লুৎফর রহমান জর্জ, ম্যাক বাদশা, পারভেজ সুমন, ইকবাল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: 'বাঘি ৪'র ফার্স্ট লুকে টাইগার শ্রফ
৩ সপ্তাহ আগে
'বাঘি ৪'র ফার্স্ট লুকে টাইগার শ্রফ
সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত 'সিংহাম এগেইন'র সাফল্যে উচ্ছ্বসিত টাইগার শ্রফ। এরই মধ্যে তার জনপ্রিয় অ্যাকশন ফ্র্যাঞ্চাইজির 'বাঘি ৪'র প্রথম পোস্টার প্রকাশ হয়েছে।
সোমবার তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ছবিটির উত্তেজনাপূর্ণ ও রক্তাক্ত প্রথম লুক শেয়ার করেছেন।
এক হাতে ছুরি, অন্য হাতে বোতল নিয়ে টয়লেট সিটে বসে থাকা পোস্টারের ছবি শেয়ার করেছেন টাইগার।
ছবিটির সঙ্গে অভিনেতা একটি ক্যাপশন জুড়ে দিয়েছেন। তাতে লেখা ছিল, ‘একটি অন্ধকার আত্মা, একটি রক্তাক্ত মিশন। এবার সে আগের মতো নেই!’
'বাঘি ৪' পরিচালনা করবেন কন্নড় নির্মাতা এ হর্ষ। এর মধ্যে দিয়ে বলিউডে তার অভিষেক ঘটবে।
নাদিয়াদওয়ালা গ্র্যান্ডসন ব্যানারে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা এবং ২০২৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে এটি।
২০১৬ সালে সাব্বির খান পরিচালিত প্রথম ‘বাঘি’ সিনেমার মাধ্যমে এ ফ্র্যাঞ্চাইজির যাত্রা শুরু হয়। এটি ছিল অ্যাকশন-ঘন থ্রিলার, যা ২০০৪ সালের তেলেগু সিনেমা ‘বর্ষম’ এবং ২০১১ সালের ইন্দোনেশিয়ান চলচ্চিত্র ‘দ্য রেইড: রিডেম্পশন’ থেকে অনুপ্রাণিত। সিনেমাটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন টাইগার শ্রফ, শ্রদ্ধা কাপুর ও সুধীর বাবু।
আহমেদ খান পরিচালিত দ্বিতীয় পর্ব ‘বাঘি ২’ মুক্তি পায় ২০১৮ সালে। এই সিনেমাটি ছিল তেলেগু সিনেমা ‘ক্ষনম’-এর রিমেক। এতে টাইগার শ্রফের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন দিশা পাটানি, মনোজ বাজপেয়ী ও রণদীপ হুদা।
২০২০ সালে ‘বাঘি ৩’ মুক্তি পায়।সেটিও আহমেদ খান পরিচালনা করেছিলেন। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন টাইগার শ্রফ, রিতেশ দেশমুখ ও শ্রদ্ধা কাপুর।
টাইগার শ্রফ ২০১৪ সালে বলিউডে তার অভিষেক ঘটান সাব্বির খান পরিচালিত ‘হিরোপান্তি’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর তিনি ‘বাঘি’, ‘বাঘি ২’, ‘বাঘি ৩’, ‘ওয়ার’, ‘স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ২’, ‘মুন্না মাইকেল’, ‘এ ফ্লাইং জাট’, ‘হিরোপান্তি ২’ এবং ‘গণপথ’-সহ বেশ কয়েকটি সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার সাম্প্রতিকতম উপস্থিতি ছিল ‘সিংহম অ্যাগেইন’ সিনেমায়।
১ মাস আগে