মধ্যপ্রাচ্য
ফিরে আসার আনন্দে মেতেছেন ফিলিস্তিনিরা
তাদের কাছে যা কিছু ছিল—পোশাক, খাদ্য কিংবা কম্বল—যতটুকু তারা বহন করতে পারেন, তা নিয়েই টানা কয়েক ঘণ্টা ধরে হেঁটে এসেছেন। মুখে হাসি নিয়ে আলিঙ্গন করছেন প্রিয়জনদের, কত মাস পর তাদের দেখা!
গাজা উপত্যকার মূল উপকূলীয় সড়কে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। পনেরো মাসের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর উত্তর গাজায় ফিরে এসেছেন তারা।
ফুরফুরে মেজাজ—যদিও তারা জানতেন, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। উত্তরাঞ্চলসহ গাজা শহরের বড় একটি অংশ মাটিতে মিশে গেছে। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে বড় কথা হলো—তারা ফিরে এসেছেন, নিজ ভূখণ্ডে, আবাসভূমিতে।
আর কোনোদিন নিজ ভূখণ্ডে ফিরতে পারবেন কিনা; সেই শঙ্কাও জেগেছিল অনেকের মনে। ধারণা করেছিলেন, দেশ থেকে স্থায়ীভাবে বিতারণ করা হয়েছে তাদের।
৬ ঘণ্টা আগে
গাজা থেকে মিসর-জর্ডানে শরণার্থী বাড়াতে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে মিসর ও জর্ডানের আরও বেশি শরণার্থী নেওয়া উচিত বলে যে মন্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড করেছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে তাদের পক্ষে ট্রাম্পের এই নির্দেশনা গ্রহণ করা সম্ভব না।
গাজা উপত্যকার জন্য এটি কী অস্থায়ী কিংবা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান, প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘দুটোই হতে পারে।’
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হামলায় গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন অভিবাসী ফ্লাইট অবতরণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান, নিষেধাজ্ঞার মুখে কলোম্বিয়া
ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। তিনি বলেন, এটি একটি চমৎকার আইডিয়া। এটি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে দেব।
কিন্তু বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছে হামাস। বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের যে শঙ্কা রয়েছে, ট্রাম্পের বক্তব্যে সেটিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে তারা।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য বাসেম নাইম বলেন, বিষয়টি ভালো উদ্দেশ্য হিসেবে দেখা দিলেও এমন কোনো সমাধান কিংবা প্রস্তাব গ্রহণ করবে না ফিলিস্তিনিরা।
আর পূর্বসূরি জো বাইডেনের মতো ট্রাম্পকেও কোনো ‘ব্যর্থ ধারণার’ পুনরাবৃত্তি না করার আহ্বান জানিয়েছেন আরেক হামাস নেতা সামি আবু জুহরি। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা মরতে রাজি, কিন্তু তারা নিজেদের মাতৃভূমি ছাড়তে চায় না। কোনো অজুহাতে তারা এই ভূখণ্ড ছেড়ে যাবে না।’
ট্রাম্পের এই নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছে জর্ডানও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সাংবাদিকদের বলেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের বিরুদ্ধে জর্ডানের অবস্থান আগের মতোই অবিচল ও কঠোর।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত মিসরের কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ড থেকে উৎখাতের বিরোধিতা করে আসছেন তারা।
ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক গাসসান আল-খতিব বলন, অধিকৃত পশ্চিমতীর, গাজা উপত্যকাসহ জর্ডান ও মিসরে বাস করা ফিলিস্তিনিরাও ট্রাম্পের এই ধারণাকে গ্রহণ করবেন না। আমি মনে করি না, এমন কিছু ভাবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
নিজেদের মাটি থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদে সমর্থন করে না বলে গতবছর জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া গাজার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বছরজুড়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
কিন্তু সমালোচনার মুখে পড়লেও ইসরাইলকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। হিজবুল্লাহ, হুতি ও হামাসের মতো মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় সহায়তার কথা বলছে ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি অবরোধ, বাড়িঘরে ফিরতে পারছেন না ফিলিস্তিনিরা
শনিবার জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে ফোনকলের পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাকে বলেছি, তারা যাতে আরও বেশি শরণার্থী গ্রহণ করেন। কারণ জায়গাটি (গাজা) এখন একেবারে বিশৃঙ্খলায় অবস্থায় আছে। মিসরকেও একই কথা বলবো।
এ বিষয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
১ দিন আগে
ইসরাইলি অবরোধ, বাড়িঘরে ফিরতে পারছেন না ফিলিস্তিনিরা
যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা উত্তর গাজায় নিজেদের বসতবাড়িতে ফিরতে চাইলেও ইসরাইলি সামরিক বাহিনী অবরোধ করে রাখায় সড়কেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। এদিকে জর্ডান ও মিসরসহ অন্য আরব দেশগুলো আরও বেশি ফিলিস্তিনি শরণার্থীকে গ্রহণ করবে, সেটিই দেখতে চাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তা সন্দেহের চোখে দেখছেন ফিলিস্তিনিরা।
বসতবাড়িতে ফিরতে না পেরে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি রাস্তায় রাত যাপন করেছেন। হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে অভিযোগ তুলে অবরুদ্ধ সড়ক খুলে দিতে অস্বীকার করছে ইসরাইল।-খবর এপি ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের।
এই অচলাবস্থার কারণে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে একটা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মধ্য গাজায় উত্তর দিকের সড়ক বরাবর সারি সারি ফিলিস্তিনি অপেক্ষার প্রহর গুণছেন—কখন বাড়িঘরে ফিরতে পারবেন। তাদের মধ্যে কেউ গাড়িতে বসে, কেউ আছেন দাঁড়িয়ে।
তামের আল-বুরাই নামের এক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বলেন, গাজায় ফিরে যেতে এক বিশাল জনসমুদ্র অপেক্ষা করছেন। তাদের আর তর সইছে না।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত
কিন্তু ইসরাইলি বাহিনী সড়ক অবরোধ তুলে নিচ্ছে না। সবাই বিরক্ত ও হতাশ।
গাজা যুদ্ধে বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন তামের। তিনি বলেন, ‘এখানের অনেকেই জানেন না তারা যে বসতবাড়ি রেখে এসেছেন, তা কী আগের মতো আদৌ দাঁড়িয়ে আছে, নাকি ইসরাইলের বোমায় মাটিতে মিশে গেছে। কিন্তু এসব সত্ত্বেও তারা ফিরতে চাচ্ছেন।’
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে বহু বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি সালাউদ্দিন সড়কে রাত কাটিয়েছেন। উত্তর থেকে দক্ষিণ গাজায় যাওয়ার মূলসড়ক এটি। গাজা উপত্যকার কেন্দ্রস্থল বরাবর নেৎজারিম করিডরে অবস্থান নিয়ে আছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা এই পথ দিয়েই বসতবাড়িতে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
জাজিম, খাবার ও তাঁবুভর্তি গাড়ি, ট্রাক ও রিকশা নিয়ে তারা অপেক্ষা করছেন। যুদ্ধের সময় আশ্রয়ের জন্য তাদের এসব দিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবীরা। মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ও মার্কিন সমর্থনে দুই পক্ষের মধ্যে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, তাতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজেদের আবাসভূমিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথাও আছে।
কিন্তু ইসরাইল বলছে, জীবিত ইসরাইলি জিম্মিদের তালিকা দিতে ব্যর্থ হয়েছে হামাস। এছাড়াও আরবেল ইহুদ নামের এক নারীকেও তারা ফেরত দিতে পারেননি। ফলে উত্তর গাজায় যাওয়ার ক্রসিংগুলো খুলে দিতে অস্বীকার জানিয়েছে তারা।
এদিকে শনিবার দুই হাজার পাউন্ড ওজনের বোমা ইসরাইলের হাতে হস্তান্তরের নির্দেশনা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গাজায় নিরপরাধ মানুষের ওপর এই বোমা দিয়ে হামলা হতে পারে ভেবে এটির হস্তান্তর স্থগিত করে দিয়েছিলেন জো বাইডেন প্রশাসন।
ডর্জান ও মিসরকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার আহ্বান
গাজা থেকে আরও বেশি ফিলিস্তিনিকে অস্থায়ী কিংবা স্থায়ীভাবে আশ্রয় দিতে মিসর ও জর্ডানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সাথে কথা বলার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমাদের স্রেফ পুরো জায়গাটি পরিষ্কার করে ফেলা উচিত। আক্ষরিক অর্থে এটি একটি ধ্বংসস্তূপ, সেখানের প্রায় সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে এবং লোকজন মারা যাচ্ছেন।
‘আমি চাই, মিসর লোকজন নিয়ে যাক। তারা সম্ভবত ১৫ লাখ লোক নিতে যাচ্ছেন এবং পুরো জায়গাটা পরিষ্কার করে ফেলুন,’ বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৫ ফিলিস্তিনি নিহত
ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে সন্দেহের চোখে দেখছেন হামাসের এক নেতা। এটিকে ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িঘর থেকে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করার আভাস হিসেবেই বিবেচনা করছেন তিনি।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম বলেন, পুনর্গঠনের আড়ালে ভালো উদ্দেশ্য থাকলেও এ ধরনের প্রস্তাব কিংবা সমাধান আমরা গ্রহণ করবো না।
আল-আওদা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরাইলি গুলিতে চার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। তারা যাতে সড়ক ক্রসিংয়ের কাছে ঘেঁষতে না পারে, সে জন্যই এই গুলি করা হয়েছে।
২ দিন আগে
নতুন করে হামাসে যোগ দিল ১৫ হাজার যোদ্ধা
ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার যোদ্ধা নিয়োগ দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। মার্কিন গোয়েন্দা বরাতে এমন খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এতে ইসরাইলের জন্য ক্রমাগত হুমকি হিসেবেই থেকে যাচ্ছে ইরান সমর্থিত হামাস।
তবে এই যুদ্ধে একই পরিমাণ হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে আভাস দিয়েছে গোয়েন্দারা। রোববার (১৯ জানুয়ারি) থেকে যুদ্ধবিরতিতে যায় হামাস ও ইসরাইল। গেল ১৫ মাসের যুদ্ধে ধ্বংসস্তূপে রূপান্তরিত গাজা উপত্যকা, পুরো মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
খবরে বলা হয়—হামাসে যোগ দেওয়া নতুন সদস্যরা বয়সে তরুণ ও অপ্রশিক্ষিত। তাদের এখন কেবল নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরাইলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত
এ বিষয়ে জানতে মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের অফিসে যোগাযোগ করা হলে সাড়া মেলেনি। গত ১৪ জানুয়ারি তখনকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকিন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মনে করে যে, গাজায় যতজন যোদ্ধা হারিয়েছে হামাস, ততজনই তারা নতুন করে নিয়োগ দিয়েছে। এটি একটি চিরস্থায়ী বিদ্রোহ ও যুদ্ধেরই প্রস্তুতি।’
এ বিষয়ে তার কাছ থেকে আর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ইসরাইল বলছে, ‘গাজা যুদ্ধে প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।’
অ্যান্থনি ব্লিংকিন বলেন, ‘যখনই গাজায় ইসরাইল কোনো সামরিক অভিযান চালিয়ে ফিরে এসেছে, হামাস তখনই নতুন করে পুনর্গঠিত ও আবিভূত হয়েছে।’
হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরাইল। গেল বছরের জুলাইয়ে হামাসের সামারিক শাখার প্রধান আবু ওবায়দা বলেন, ‘তারা কয়েক হাজার নতুন যোদ্ধা নিয়োগ দিতে সক্ষম।’
এবারের যুদ্ধে ইসরাইল হামাসকে ধ্বংস করে দেওয়ার অঙ্গীকার করলেও গাজা উপত্যকায় গভীরভাবে নিজের অবস্থান জারি রেখেছে হামাস। গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে হামাস সেখানে নিরাপত্তা কার্যক্রম পুনর্প্রতিষ্ঠা করে। পাশাপাশি নাগরিকদের মৌলিক সেবাগুলোও তারা পুনর্বহাল করতে সক্ষম হয়েছেন।
গাজা যুদ্ধে কতজন হামাস যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা কেবল বলছেন, ‘ফিলিস্তিনি এই প্রতিরোধ বাহিনীর ব্যাপক শক্তি ক্ষয় হয়েছে—সম্ভবত কয়েক হাজার যোদ্ধা খুইয়েছে।’
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। এতে এক হাজার ২০০ ইসরাইলি অবৈধ বসতিস্থাপনকারী নিহত হন। এছাড়াও ২৫০ ইসরাইলিকে তারা জিম্মি করেছিল। পরবর্তীতে গাজায় ইসরাইলি হামলায় ৪৬ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
আরও পড়ুন: লেবানন-গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান সৌদি যুবরাজের
৩ দিন আগে
এরদোগানের সমালোচনায় পোস্ট, তুরস্কে বিরোধী দলীয় নেতা গ্রেপ্তার
তুরস্কের উগ্র-ডানপন্থি দল ভিক্টরি পার্টির নেতা উমিত ওজদাগকে কারাগারে আটকে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সামাজিকমাধ্যমে প্রকাশ্যে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগে তার বিচার চলছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিচার স্থগিত রেখে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানকে নিয়ে অসম্মানজনক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে সোমবার তাকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এরদোগান তুরস্কের যে পরিমাণ ক্ষতি করেছেন, কোনো ক্রুসেডেও তা হয়নি।’
সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে উমিত ওজদাগ বলেন, ‘আমাকে গ্রেপ্তার করার অর্থ হচ্ছে, জনগণের একজন প্রতিনিধিকে গ্রেপ্তার করা। এসব মানুষ দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর বিরোধিতা করছেন।’
‘ন্যূনতম মজুরি নিয়ে যেসব শ্রমিক জীবন ধারণ করছেন, অভাব-অনটন নিয়ে যেসব অবসরপ্রাপ্ত মানুষ বেঁচে আছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আপনি আমাকেও গ্রেপ্তার করতে পারবেন, কিন্তু আমাকে নীরব করিয়ে দিতে পারবেন না।’
ভিক্টরি পার্টির নেতার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা অজগুর ওজেল। ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অজগুরকে সমর্থন দিয়েছিলেন উমিত।
অজগুর ওজেল বলেন, এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করা ন্যায়বিচারকে হত্যার শামিল। এতে দেশের গণতন্ত্র ও বিচারিক স্বাধীনতা ধ্বংস হয়ে যাবে।
এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন ইস্তানবুলের মেয়র একরাম ইমামোগলু। তিনি বলেন, এটা বিচারবিভাগে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ।
৫ দিন আগে
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার: পশ্চিমতীরে দখলদারদের হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট
অধিকৃত পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনিদের গ্রামগুলোতে ঢুকে বসতবাড়ি, দোকানপাট, গাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে অবৈধ বসতিস্থাপনকারী ইহুদিরা। এসময়ে গাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগও করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ জানুয়ারি) দিনের শেষভাগে পশ্চিমতীরে হানা দিয়ে সহিংসতায় মেতে ওঠে তারা।এরআগে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের ওপর আরোপ করা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামলা ও সংঘাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ও ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদে ইসরাইলকে উদারভাবে সমর্থন দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এবারও তাকে ঘিরে যেসব সহযোগী রয়েছেন, তাদের সবারই ফিলিস্তিনে ইসরাইলের অবৈধ বসতিস্থাপনে সমর্থন রয়েছে।নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ট্রাম্পকে ব্যাপক প্রশংসায় ভাসান দখলদার নেতারা। বছরখানেক আগে অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের ওপর যখন বাইডেন নিষেধাজ্ঞা দেন, তখন গাজা যুদ্ধঘিরে ব্যাপক সহিংসতা চলছিল। পরে মৌলবাদী ও কট্টরপন্থি ইসরাইলিদেরও নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এমন খবর দিয়েছে।বাইডেনের নিষেধাজ্ঞাকে ভয়াবহ বিদেশি হস্তক্ষেপ আখ্যায়িত করে ইসরাইলের প্রতি অবিচল ও আপসহীন সমর্থন দেওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা করেন ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালের স্মোট্রিচ।পশ্চিমতীরের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে এমনিতেই ইসরাইলের প্রকাশ্য সামরিক শাসনের অধীনে বসবাস করতে হচ্ছে। ফিলিস্তিনের এই ভূখণ্ডকে ইসরাইলের সঙ্গে একীভূত করতে চান বেজালের মতো উগ্রপন্থি ইসরাইলিরা।তারা গাজা উপত্যকায়ও অবৈধ বসতি নির্মাণ করতে চান। ইসরাইলিদের এই দখলদারিত্বকে অবৈধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অন্তরায় হিসেবে বিবেচনা করে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। পশ্চিমতীরে পাঁচ লাখ অবৈধ বসতিস্থাপনকারী আছে, যারা ইসরাইলের নাগরিক।জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ট্রাম্প বেছে নিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান সদস্য এলিস স্টেফ্যানিককে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) কংগ্রেসের শুনানিতে তিনি বলেন, ইসরাইলকে বাইবেল অধিকার দিয়েছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করতে।জিনসাফুত ও আল-ফুনদুক এলাকার কর্মকর্তারা বলেন, গেল সোমবার ফিলিস্তিনিদের অন্তত দুটি গ্রামে হানা দিয়ে বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে এবং তাদের সম্পদ লুণ্ঠন করেছে মুখোশপরা কয়েক ডজন অবৈধ বসতিস্থাপনকারী।তাদের হামলায় আহত ১২ ফিলিস্তিনিকে চিকিৎসা দিয়েছে রেড ক্রিসেন্ট। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, ‘হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তাদের ওপর পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।’গাজাযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিমতীরে ইসরাইলিদের সহিংসতা বেড়েছে। তবে এসবের সঙ্গে ট্রাম্পের অভিষেকের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা; তা পরিষ্কার না। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) জেনিন শরণার্থী শিবিরে প্রাণঘাতী অভিযান চালিয়েছে ইসরাইল।জিনসাফুত গ্রামের কাউন্সিল প্রধান জালাল বশির বলেন, ‘মুখোশধারীরা তিনটি বাড়ি, একটি নার্সারি ও একটি কাঠমিস্ত্রির দোকানে হামলা চালিয়েছে। এগুলো সবই গ্রামের প্রধান সড়ক লাগোয়া অবস্থিত।আল-ফুন্দুক গ্রামের স্থানীয় কাউন্সিলের প্রধান লাওয়ি তায়েম বলেন, কয়েক ডজন দখলদার এসে গুলি করেছে, পাথর ছুড়েছে, গাড়িতে আগুন দিয়েছ এবং দোকান ও বসতবাড়িতে হামলা চালিয়েছে।‘তারা মাস্ক পরা ছিল, আর হাতে ছিল অগ্নিসংযোগের সরঞ্জামাদি। হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল অনেক বেশি এবং নজিরবিহীন।’
৬ দিন আগে
ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে রবিবার: কাতার
আগামী রবিবার গ্রিনিচ মান সময় সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা একটি চুক্তি অনুমোদন করায় গাজায় যুদ্ধবিরতির পথ প্রশস্ত হয়। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি সহজ করা। একইসঙ্গে দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে দুপক্ষের মধ্যে চলা প্রাঘাতী ও বিধ্বংসী এ যুদ্ধের অবসান।
ইসরায়েলের সীমিত নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর পূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠক করে সরকার যুদ্ধবিরতির সময় নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: আইসিজে’র প্রেসিডেন্ট নওয়াফ সালাম লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী
সাধারণত জরুরি অবস্থা দেখা না দিলে সীমিত নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় ইসরায়েলি সরকারের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়।
কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর গত বুধবার প্রাথমিকভাবে তা ঘোষণা করা হয়।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু শেষ মুহূর্তের চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে হামাসের জটিলতাকে দায়ী করে এটি চূড়ান্ত করতে আরও নেন। এরপর শুক্রবার ইসরায়েলের সীমিত নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা চুক্তিটি অনুমোদনের সুপারিশ করে এটি এগিয়ে নেয়।
চুক্তির প্রথম ধাপের অংশ হিসেবে গাজায় আটক তিন ইসরায়েলি নারী ও ৯৫ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ররিবার মুক্তি দেওয়া হবে।
চ্যানেল১২ এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে নেতানিয়াহু বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে জানিয়েছেন যে, তার দায়িত্ব গ্রহণের পর ইসরাইলে ফের অস্ত্র সরবরাহ শুরু হবে।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমরা যদি চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ে পৌঁছাতে না পারি, তবে যুদ্ধের জন্য আমাদের কাছে অতিরিক্ত সরঞ্জাম থাকবে না।’
আরও পড়ুন: গাজায় বিমান হামলার সময় ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল হুথি
এদিকে চুক্তি লঙ্ঘন না করতে ট্রাম্প ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন দিলেও দেশটির দুই উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং বেজালেল স্মোট্রিচ এই চুক্তির বিরোধিতা এবং চুক্তির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হওয়ার পর গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতি দাবি করেছেন।
চুক্তি অনুযায়ী এ সময়ে হামাস প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে। চুক্তির পূর্ণ শর্তাবলীর প্রতি তাদের অঙ্গীকার নিশ্চিত করার একদিন পর শুক্রবার হামাস এ কথা জানায়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হন। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৬ হাজার ৮৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছে। মানুষ বিভিন্ন মৌলিক সহায়তা পেতে সংগ্রাম করছে। বিশেষ করে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ ও নিরাপদ আশ্রয়ের তীব্র ঘাটতি রয়েছে।
ইসরায়েল বলছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর জিম্মি হওয়াদের মধ্যে ৯৪ জন এখনও হামাসের হাতে বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৪ জন বেঁচে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া যুদ্ধের আগে অপহৃত চার ইসরায়েলি রয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: জিম্মিদের মুক্ত করতে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অনুমোদন ইসরায়েলের
১ সপ্তাহ আগে
জিম্মিদের মুক্ত করতে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অনুমোদন ইসরায়েলের
দীর্ঘ মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর গাজা উপত্যকায় আটক জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলি সরকার। স্থানীয় সময় শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এই চুক্তিতে দেশটির মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেয় বলে জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২৪ জন মন্ত্রী পক্ষে এবং ৮ জন বিপক্ষে ভোট দেন।
রবিবার(১৯ জানুয়ারি) থেকে চুক্তিটি কার্যকর হবে বলে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
চুক্তির প্রথম ধাপের অংশ হিসেবে গাজায় আটক তিন ইসরায়েলি নারী ও ৯৫ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ররিবার মুক্তি দেওয়া হবে।
চ্যানেল১২ এর একটিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বৈঠকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে জানিয়েছেন, তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর ইসরাইলে বন্ধ থাকা অস্ত্র সরবরাহ শুরু হবে।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমরা যদি চুক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ে পৌঁছাতে না পারি, তবে যুদ্ধের জন্য আমাদের কাছে অতিরিক্ত সরঞ্জাম থাকবে না।’ এদিকে চুক্তি লঙ্ঘন না করতে ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছেন ট্রাম্প।
শুক্রবার ইসরায়েলের সীমিত নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজায় যুদ্ধবিরতি জিম্মিদের উদ্ধারে চুক্তির পক্ষে ভোট দেওয়ার পর মন্ত্রিসভার পূর্ণাঙ্গ বৈঠক হয়।
দুই উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং বেজালেল স্মোট্রিচ এই চুক্তির বিরোধিতা করেছেন এবং চুক্তির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হওয়ার পরে গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার জন্য সরকারের প্রতিশ্রুতি দাবি করেন।
চুক্তি অনুযায়ী এসময়ে হামাস প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে।
চুক্তির পূর্ণ শর্তাবলীর প্রতি তাদের অঙ্গীকার নিশ্চিত করার একদিন পর শুক্রবার হামাস এ কথা জানায়।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আইডিএফ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর একটি অভূতপূর্ব আন্তঃসীমান্ত হামলার প্রতিক্রিয়ায় হামাসকে ধ্বংস করতে অভিযান শুরু করে। ইসরায়েলে হামাসের ওেই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। আর ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নেওয়া হয়েছিল।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এরপর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৪৬ হাজার ৮৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। গাজায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে ২৩ লাখ জনসংখ্যার বেশিরভাগই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মানুষ বিভিন্ন চাহিদার সহায়তা পেতে সংগ্রাম করছে। বিশেষ করে খাদ্য, জ্বালানি, ওষুধ এবং নিরাপদ আশ্রয়ের তীব্র ঘাটতি রয়েছে।
ইসরায়েল বলছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর জিম্মি হওয়াদের মধ্যে ৯৪ জন এখনো হামাসের হাতে বন্দি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৪ জন বেঁচে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া যুদ্ধের আগে অপহৃত চার ইসরায়েলি রয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন।
সূত্র: সিনহুয়া ও অন্যান্য নিউজ এজেন্সি
আরও পড়ুন: গাজায় ১৫ মাসের বিয়োগান্তক উপাখ্যান শেষে যুদ্ধবিরতির বার্তা
১ সপ্তাহ আগে
গাজায় বিমান হামলার সময় ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল হুথি
মঙ্গলবার ভোরে মধ্য ইসরায়েলে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। এসময় সতর্কতামূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সাইরেন বেজে উঠলে ইসরায়েলিরা বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। হামাসের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে যুদ্ধবিরতি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছানো সত্ত্বেও গাজা উপত্যকায় যখন ইসরায়েলি বাহিনী রাতভর ও মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালায়, ঠিক তখনি হুথিদের এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকে একাধিক বাধা দেওয়ার চেষ্টার কথা জানিয়ে বলেছে যে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘সম্ভবত প্রতিহত করা হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: হামাসের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধানকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
ক্ষেপণাস্ত্র বা এর ধ্বংসাবশেষ থেকে কেউ আহত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা বিভাগ ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় কিছু লোক আহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসরায়েলি আকাশসীমায় ঢোকার আগেই একটি ক্ষেপণাস্ত্রও প্রতিহত করা হয় বলে জানিয়েছে।
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনের রাজধানী সানা নিয়ন্ত্রণকারী ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা গাজায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান সংঘর্ষের মধ্যে ইসরায়েল ও প্রায় ১০০টি বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। বিদ্রোহীরা এখনও সর্বশেষ হামলার দায় স্বীকার করেনি। যা তারা কখনও কখনও কয়েক ঘণ্টা বা দিন দেরি করে।
মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় দুই নারী, তাদের চার সন্তান (এক মাস থেকে ৯ বছর বয়সী) এবং এক অনাগত শিশুসহ ছয়জন বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এক নারী দুই সন্তানের জননী এবং অন্যজন তার ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে নিহত হয়েছেন।
দেইর আল-বালাহর আল আকসা মার্টারস হাসপাতাল লাশগুলো গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন: আইসিজে’র প্রেসিডেন্ট নওয়াফ সালাম লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী
২ সপ্তাহ আগে
আইসিজে’র প্রেসিডেন্ট নওয়াফ সালাম লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী
নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) প্রেসিডেন্ট নওয়াফ সালামকে লেবাননের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
দেশটিতে একটি নতুন সরকার গঠনের জন্য সোমবার (১৩ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্ট তাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের ঘোষণা দেন।
প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের পরিচালিত বাধ্যতামূলক পরামর্শ গ্রহণের সময় ১২৮টি সংসদীয় ভোটের মধ্যে সালাম ৮৪টি ভোট পেলে তাকে এই নিয়োগ দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট আউন সালামকে তলব করে তাকে এই দায়িত্ব দেন। তবে সালাম বর্তমানে বিদেশে আছেন এবং মঙ্গলবার তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
লেবাননের প্রচলিত রাজনৈতিক রীতিনীতির অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পদে ঐতিহ্যগতভাবে একজন সুন্নি মুসলমান আসীন থাকেন। আর প্রেসিডেন্ট সর্বদা একজন ম্যারোনাইট খ্রিস্টান এবং সংসদীয় স্পিকার একজন শিয়া মুসলিম।
১৯৫৩ সালে একটি বিশিষ্ট রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণকারী সালাম একজন সুন্নি মুসলিম। লেবাননের ১৯৭৫-১৯৯০ সালে লেবাননের গৃহযুদ্ধের আগে তার চাচা সায়েব সালাম দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তার চাচাতো ভাই তাম্মাম সালাম ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একই পদে ছিলেন।
আরও পড়ুন: লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ১০৫ বাংলাদেশি
সালাম হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং সরবোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে দুটি ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি ২০০৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে লেবাননের রাষ্ট্রদূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে ১৪ মাস ধরে চলা সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসার প্রেক্ষাপটে সালামকে এই নিয়োগ দেওয়া হলো।
সংঘাত-পরবর্তী পুনর্গঠন ছাড়াও দেশটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটসহ উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতির মধ্যেই লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫
২ সপ্তাহ আগে