বিএনপি
গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রাথমিক দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের: ড. মঈন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা।
এক আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা কাপুরুষের মতো ভারতে পালিয়ে যান।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সে যেসব তরুণ ভোটার হয়েছেন, তারা গত ১৬ বছর ধরে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ সংগ্রামের মাধ্যমে ভোটের অধিকার ফিরে পেতে দেশের জনগণকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ধামরাইয়ে সমাবেশ করেছে বিএনপি
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। ইনশাআল্লাহ সেই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে- যার জন্য ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষ জীবন দিয়েছিলেন।’
জাতীয়তাবাদী বাউল দল ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের 'সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান' স্মরণে 'জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস' উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে শাহ আলী মাজার প্রাঙ্গণে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ভোটের অধিকারসহ মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের স্বপ্ন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রকে মুছে ফেলে এবং মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ১৬ বছরের ক্ষমতায় থাকাকালে নতুন প্রজন্মকে বাকশালের ট্যাবলেট খাইয়েছে এবং পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করে বিকৃত ইতিহাস শিখিয়েছে।
ড. মঈন বলেন,'কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। এতে কাজ হলে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ঘটত না। আওয়ামী লীগের মনগড়া ইতিহাসে বিভ্রান্ত হয়নি বলেই ৫ আগস্ট তরুণরা নতুন ইতিহাস রচনা করেছে।‘
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আইনের শাসন, সত্য, ন্যায়বিচার ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করে। ‘তারা মিথ্যা, অবিচার, নিপীড়ন, কারাবাস বা মিথ্যা মামলা সমর্থন করে না। আমরা সত্যের পথে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।’
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা চালালে তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ করে দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ‘কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করা আওয়ামী লীগ পালিয়ে আসা রাজনৈতিক সত্তা হিসেবে কাজ করেছে। তাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি বলে দাবি করার কোনো যৌক্তিক ভিত্তি নেই।’
তিনি আরও বলেন,১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগ নেতারা যেভাবে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এবং জীবন বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে গেছে। ঠিক একইভাবে স্বৈরাচারী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট কাপুরুষের মতো দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।’
আরও পড়ুন: বিএনপি ফিরলে ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বৈরাচার দমনের অঙ্গীকার তারেকের
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিদেশে চিকিৎসার দাবি বিএনপির
৮ ঘণ্টা আগে
ধামরাইয়ে সমাবেশ করেছে বিএনপি
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আগামীর দেশ পরিচালনার পরিকল্পনা জনগণের মাঝে তুলে ধরতে সমাবেশ করেছে ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর ) বিকালে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্য ঢাকা জেলা যুব দল সভপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ বলেন, সরকারকে অতিদ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। নইলে অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে দল থেকে যে কর্মসূচি দেবে তা পালন করতে সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিদেশে চিকিৎসার দাবি বিএনপির
তিনি বলেন, গত ১৬ বছর গণতন্ত্র ফেরানোর যে আন্দোলন হয়েছে, তা এখনও শেষ হয়নি। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরেপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এলে এই আন্দোলন শেষ হবে।
ব্যবসায়ী ফজলুল হক ফজলের সভাপতিত্ব ও আবুল কালাম আজাদ ও মিজানুর রহমান জুয়েলের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন স্থানীয় নেতা খন্দকার আইয়ুব, আনসার আলী, আসিফুর রহমান খান মিলন, হাবিবুর রহমান শামীম, আবু তাহের মুকুট, শহীদুর রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন, ইবাদুল হক জাহিদ, খুররম চৌধুরী টুটুল প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিএনপি ফিরলে ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বৈরাচার দমনের অঙ্গীকার তারেকের
৯ ঘণ্টা আগে
বিএনপি ফিরলে ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বৈরাচার দমনের অঙ্গীকার তারেকের
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তার দল ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়ে তুলবে, যাতে প্রধানমন্ত্রীও যেন ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারেন বা স্বৈরাচারী হিসেবে আবির্ভূত হতে না পারেন।
বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এক সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, জনগণের মৌলিক মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে বিএনপি দেশকে গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্রে রূপান্তর করবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, যাতে কোনো ব্যক্তি, এমনকি প্রধানমন্ত্রীও ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে না পারেন।’
তিনি আরও বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়-এটি নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারের প্রতিটি স্তর পর্যন্ত জবাবদিহি ও আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: তারেকের জন্মদিন পালনের কর্মসূচি নেই বিএনপির
রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে, এরই মধ্যে দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুনর্গঠনে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ, যাতে স্বৈরাচারী বা ফ্যাসিবাদীরা আর কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।’
কেউ কোনো নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতা লঙ্ঘন করতে পারবে না-এমন বাংলাদেশ গড়াই বিএনপির ভিশন বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, 'আমরা সবাই নিরাপদ ও সুরক্ষিত বাংলাদেশ চাই। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে এবং নির্বাচিত ও জবাবদিহিমূলক সরকার জনগণের মালিকানা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলে তথাকথিত উন্নয়নের রাজনীতি দেখেছে জাতি; যার মূলে ছিল দুর্নীতি, দুঃশাসন ও দুর্বৃত্তায়ন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি জনগণের ভোটে সরকার গঠন করে, তাহলে জনগণের ক্ষমতায়ন ও অংশীদারিত্বের রাজনীতি দেখতে পাবেন। আইনের শাসন, মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতাই হবে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি।’
রাজধানীর একটি হোটেলে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি। সেমিনারে ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন বিদেশি মিশনের কূটনীতিক, সুশীল সমাজের সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন চলাকালে অর্ধশতাধিক দলের সঙ্গে ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রস্তাব প্রস্তুত করেছিল বিএনপি।
তিনি বলেন, হাসিনার শাসনের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে রাষ্ট্রীয় সংস্কার তদারকির জন্য বিভিন্ন কমিশন গঠন করেছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এসব কমিশন থেকে যেসব সংস্কার প্রস্তাব উঠে আসবে, তা ৩১ দফার রূপরেখার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। তাই আমরা ৩১ দফা রূপরেখা আবারও জনগণের সামনে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
২০২৩ সালের ১৩ জুলাই সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার 'সংস্কার' এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে ৩১ দফা রূপরেখা ঘোষণা করে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দলের সঙ্গে পরামর্শ করে এই প্রস্তাব তৈরি করা হয়।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারই জাতীয় সমস্যা সমাধানের চাবিকাঠি: তারেক
১ দিন আগে
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিদেশে চিকিৎসার দাবি বিএনপির
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত রোগীদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শন করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় তারা এ দাবি জানান।
আন্দোলনে ভুক্তভোগী প্রত্যেক নাগরিককে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে প্রতিশ্রুত আর্থিক সহায়তা দ্রুত দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান দলের নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যাদের অবস্থা সংকটাপন্ন এবং এ দেশে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়, তাদের দ্রুত শনাক্ত করতে সরকারের প্রতি আমারা আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে যারা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বা আঘাত পেয়েছেন এবং তাদের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়, তাদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে।’
এর আগে সালাহ উদ্দিন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।
বুধবার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জুলাই মাসের আন্দোলনে আহতদের দেখতে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শনে যান। এ সময় আহত রোগীদের ক্ষোভের মুখে তিনি সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন: মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।
পরে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন- এমন একদল রোগী যথাযথ চিকিৎসার দাবিতে নিটোরের সামনের সড়ক অবরোধ করেন।
পরিদর্শন শেষে সালাহউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শুনেছি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার এই হাসপাতালে এসেছিলেন কিন্তু সব রোগীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি, এতে তাদের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, রোগীরা তাদের জানিয়েছেন, চিকিৎসা ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনো সহযোগিতা তারা পাননি।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি, চিকিৎসার বাইরেও তাদের সহায়তা প্রয়োজন। অনেকে জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুত এক লাখ টাকা তারা এখনো পাননি। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের এই সহায়তা দিতে।’
তিনি বলেন, বুধবার রাতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাসপাতালে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
সালাহউদ্দিন জানান, ওই টাকা তারা বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলামকে আহতদের মধ্যে বিতরণের জন্য দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের অন্যান্য নেতারা হাসপাতালে গিয়ে জুলাই মাসের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন।
বিএনপি নেতা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা ও সমর্থন অব্যাহত রাখব। আমাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হলে গণঅভ্যুত্থানে যারা নিহত ও আহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করব।’
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা কীভাবে গণহত্যা চালানোর পর আবার বাংলাদেশে রাজনীতি করার কথা ভাবতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সালাহউদ্দিন।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে নির্বাচনি রোডম্যাপের দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশের পরিকল্পনা বিএনপির
১ দিন আগে
মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মেগান বোলদিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান,বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় গুলশানের বোলদিনের বাসায় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক শুরু হয়।
তিনি বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবেদকে নিয়ে তার আমন্ত্রণে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় চা খেতে যান মির্জা ফখরুল।
শায়রুল বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: পরাজিত ফ্যাসিস্টরা ভূত-পেত্নির মতো আওয়াজ দিচ্ছে: রিজভী
১ দিন আগে
পরাজিত ফ্যাসিস্টরা ভূত-পেত্নির মতো আওয়াজ দিচ্ছে: রিজভী
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সঙ্গী-সাথী ফেলে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পরাজিত ফ্যাসিস্টরা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝে মাঝেই আওয়াজ দেবে। তারা ভূত-পেত্নির মতো আওয়াজ দিচ্ছে।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে এক চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় জুলাই গণআন্দোলনে চক্ষু হারানো, চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে এই চক্ষুসেবা ক্যাম্পের আয়োজন করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’।
আরও পড়ুন: মুজিবের ছবি অপসারণ নিয়ে বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন রিজভী
রিজভী বলেন, ‘কয়েকদিন আগে তারা নূর হোসেন দিবসে ঢাকা শহর নাকি উথাল-পাতাল করে দেবে। ওইদিন আমাদের দলের নেতাকর্মীরা কয়েকটি মিছিল করেছে; ওদের মতো তো মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারা দেয়নি। তারপরও তো ওদের কোথাও দেখা যায়নি। কই যুবলীগ? কই ছাত্রলীগ? কারণ শেখ হাসিনা তাদের লুটপাটের জন্য তৈরি করেছিলেন।’
‘ফরিদপুরের ছাত্রলীগের নেতা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের বলেছিলেন- তোরা যত পারিস লুটপাট কর, কিন্তু বিএনপিকে বের হতে দিবি না; বের হলেই হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বি। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। এর পরিণাম হয় ভয়াবহ, তা-ই হয়েছে; সঙ্গী-সাথী ফেলে দিয়ে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার মতো একজন রক্তপিপাসুর এই দেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের আর কোনো সুযোগ নেই। আপনি শিশুদের রক্ত পান করা একজন রক্তপিপাসু নারী। আপনি যে পাপ করেছেন, যে হত্যালীলা চালিয়েছেন, এর জন্য হয় আল্লাহর কাছে মাফ চান, না হলে চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত হয়ে থাকবেন।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘শুধু নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে জিম্মি করে দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছে, সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুক। তিনি (শেখ হাসিনা) দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন, তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাই।’
ভারতের আদানির সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের বিদ্যুৎ চুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি ছিল অত্যন্ত অসম চুক্তি, অত্যন্ত অন্যায় চুক্তি। আদানির কাছ থেকে যে বিদ্যুৎ কেনা হয়, সেটা এক ইউনিটের দাম ১২ টাকা। পৃথিবীর কোথাও এত দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কেনা হয় না। তিনি (শেখ হাসিনা) আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে- তাকে যদি কখনো পালাতে হয়, তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে কোনো চুক্তি করেননি। না হলে আদানি কেন হুমকি দেবে?’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারতপ্রেম। ওই একটাই প্রেম ছিল শেখ হাসিনার। কারণ তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। সুতরাং তার প্রেম কার সঙ্গে ছিল এইটা জনগণ জানত এবং বুঝত।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যে মার্কেটগুলো এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে, বাজারগুলো এখনও তাদের সিন্ডিকেটের কাছে- আপনারা কী তাদের একজন লোককেও ধরেছেন? একটা লোককেও গ্রেপ্তার করেছেন? আপনারা শুল্ক কমিয়েছেন, তারপরও তো পেঁয়াজের দাম কমে না, তারপরও তো আলুর দাম কমে না, চিনির দাম কমে না, আটার দাম কমে না, সয়াবিন তেলের দাম কমে না। কারণ এগুলো ইমপোর্ট করতে হয়। এই বিষয়গুলি আপনারা যদি না দেখেন, পরাজিত ফ্যাসিস্টরা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝে মাঝেই আওয়াজ দেবে। ভূত-পেত্নির মতো আওয়াজ দিচ্ছে তারা।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’- এর আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: শেখ মুজিবের ছবি সরানো উচিত হয়নি: রিজভী
হাসিনার মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারে সরকারের বিরুদ্ধে'লুকোচুরি'র অভিযোগ রিজভীর
২ দিন আগে
উপদেষ্টা নিয়োগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের প্রয়োজন নেই: ফখরুল
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে কতজন থাকবেন, উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো হবে কিনা- এসব বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের প্রয়োজন দেখেন না বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার ভাষ্য, ‘উপদেষ্টা কতজন হবেন তার যেহেতু সুনির্দিষ্ট নিয়ম নেই, সেক্ষেত্রে এটা তারা প্রয়োজন অনুযায়ী করবেন।’
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ে কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায়, প্রয়োজন অনুযায়ী ৪০ থেকে ৫২ জনকে নিয়েও (অন্তর্বর্তী বা তত্ত্বাবধায়ক) সরকার হয়ে থাকে। এখন পর্যন্ত তারা ২১ জনকে (উপদেষ্টা) করেছেন। এত বড় একটা দেশ পরিচালনার জন্য এটি হতেই পারে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় দরকার নেই।’
‘তবে তারা প্রয়োজন মনে করলে সমন্বয় করতে পারেন। আর তারা কাকে উপদেষ্টা বানাবেন বা বানাবেন না- এটা সম্পূর্ণরুপে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনুসের বিষয়। তবে নির্দিষ্ট বিধান না থাকলেও উপদেষ্টা হিসেবে যাদের নেবেন, তারা যাতে বিতর্কিত না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে আমি অনুরোধ করব।’
আরও পড়ুন: বিতর্কিত ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সতর্ক করলেন ফখরুল
আওয়ামী লীগ নিয়ে বিএনপির কোনো মাথাব্যাথা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের চিন্তা হচ্ছে আগামী নির্বাচন নিয়ে। কারণ বর্তমানে যে অন্তবর্তীকালীন সরকার আছে, তারা এখন পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে কোনো রোডম্যাপ দেয়নি।’
‘তারা নির্বাচনি ব্যবস্থাকে সংস্কার করার জন্য একটি কমিটি করেছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে আমাদের চিঠিও দিয়েছে। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। এ নিয়ে আমরা খুব শিগগিরই আমাদের মতামত দেব।’
বাংলাদেশে বর্তমান প্রক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটি প্রয়োজন সেটি হলো একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তার আগে নির্বাচনি ব্যবস্থাপকে নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত করা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা- এ বিষয়গুলো আমরা বলেছি। দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা এবং সব কিছুর জন্য একটি নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত পার্লামেন্ট অত্যন্ত জরুরি। সে কথাটিই আমরা বারবার করে বলছি।’
এক প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ বা আওয়ামীলীগ যে কাজটা ভালভাবে করেছে, সেটা হলো জাতিকে বিভক্ত করা। এই বিভক্তি দূর করে আমরা একটা ঐক্যবদ্ধ জাতি চাই। একটি গণতান্ত্রিক দেশে মতামত ভিন্ন থাকতেই পারে, কিন্তু কতগুলো মৌলিক বিষয়ে ঐক্য থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বোভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার। সেই ঐক্য রাখতে আমরা চেষ্টা করেছি এবং সফলও হয়েছি। এ আন্দোলনকে বেগবান করতে আমরা ৬৩টি দল আন্দোলন করেছি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘১৭ বছরের একটা জঞ্জাল সরানো ১৭ দিনে সম্ভব না, ১৭ মাসেও না। এর জন্য আপনাদের যারা আছেন তাদের দায়িত্ব কম। যখন একটি গণতান্ত্রিক সরকার আসবে তখন সেই পার্লামেন্ট এই কাজগুলো করবে। এ (বর্তমান) সরকারের মূল দায়িত্ব হবে, নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। সকলেই যেন ভোটে অংশগ্রহণ করে ভোট দিতে পারে। পাশাপাশি নির্বাচন পরিচালনার জায়গাগুলোতে নিরপেক্ষ লোকজন বসানো, বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করা ও অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিরপেক্ষ করা।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন, সাবেক সংসদ সদস্য মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আল মামুন আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, জেলা যুবদলের সভাপতি চৌধুরী মাহেবুল্লাহ আবু নুরসহ জেলা বিএনপি ও এর সহযোগি অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।
তার আগে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: নেতিবাচক বক্তব্যে ফ্যাসিস্টরা আবারও মাথা তুলছে: ফখরুল
২ দিন আগে
অবিলম্বে নির্বাচনি রোডম্যাপের দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশের পরিকল্পনা বিএনপির
রাজধানীতে গত ৮ নভেম্বর সমাবেশের আয়োজন করে তাতে সফল হয় বিএনপি। দলে দলে বিশাল ওই সমাবেশে অংশ নেয় দলটির কর্মী-সমর্থকরা। এবার দেশকে অস্থিতিশীল করার যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে শক্তি প্রদর্শন এবং যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ উপস্থাপনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে বিভাগীয় সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছে তারা।
দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, এই সমাবেশের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারের এজেন্ডার আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা না করতে এবং বিএনপির রাজনৈতিক শক্তিকে যাতে খাটো করে না দেখা হয়, সে বিষয়ে তারা একটি বার্তা দেবেন।
সোমবার রাতে দলটির স্ট্যান্ডিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শুরুতে সমাবেশ শুরু হবে। এ বিষয়ে বুধবার দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে তফসিল চূড়ান্ত করবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা।
এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে আরও একটি বড় জনসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। পাশাপাশি, সংস্কারের অজুহাতে অন্তর্বর্তী সরকারের বেশি সময় নষ্ট করা উচিত হবে না মর্মে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে ৩১ দফা প্রস্তাব নতুন করে সাজানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেন, ক্ষমতায় এলে ৪২টি সমমনা রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দেশ পরিচালনার নীলনকশায় পরিণত হবে।
সংস্কার রূপরেখার মাধ্যমে জনগণের সমর্থন অর্জনের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ৩১ দফা প্রস্তাব ফের চালু করার কথা রয়েছে দলটির। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সহযোগী সংগঠনগুলোর কর্মীদেরও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বিএনপি।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এসব নেতাকর্মী দেশের বিভাগীয় শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরগুলোতে কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে ৩১ দফা সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করবেন। সেইসঙ্গে রূপরেখাটি আরও সমৃদ্ধ করতে বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন খাতের লোকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে বিএনপি প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করবে বলেও জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, তাদের শেষ দুটি বৈঠকে সংস্কার, নির্বাচন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জামায়াত ও অন্যান্য দলের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বিএনপির পরবর্তী করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
ওই নেতা বলেন, বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনি প্রক্রিয়া- দুটোই একইসঙ্গে এগিয়ে যাওয়া উচিত। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে একটি (নির্বাচনের) রোডম্যাপ উপস্থাপন করতে হবে। যতদিন এই রোডম্যাপ দেওয়া না হবে, ততদিন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন পেছানোর আশঙ্কা থেকেই যাবে।
তিনি বলেন, বিএনপির বিশ্বাস করে যে, এই সরকারের কেবল নির্বাচনি প্রক্রিয়া সংস্কারের দিকেই মনোনিবেশ করা উচিত। কারণ বড় আকারের সংস্কার বাস্তবায়নে এই সরকারের কোনো ম্যান্ডেট নেই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নীতিনির্ধারকদের সন্দেহ, পর্যায়ক্রমে উপদেষ্টার সংখ্যা বাড়ানো আসলে এই সরকারের দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার কৌশলের অংশ।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত কোনো কূটকৌশলের আশ্রয় না নিয়ে অবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা এবং রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা উপস্থাপন করা।
তিনি বলেন, ‘জাতি নির্বাচনের তারিখ জানতে চায়। সরকার যদি দেশের জনগণকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে, তাহলে অলসভাবে বসে বসে তাদের উপহাস দেখার কোনো কারণ দেখছি না।’
তার ধারণা, অহেতুক কালবিলম্ব না করে সরকার শিগগিরই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেবে। দেশের মানুষ অতীতে অনির্বাচিত সরকার মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নিজস্ব চিন্তা ও দর্শনের ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কারের কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, ‘তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) কেবল সেই সংস্কারগুলোই বাস্তবায়ন করতে পারে যা সব পক্ষের দ্বারা অনুমোদিত; এতে আমাদের (বিএনপির) কোনো আপত্তি নেই। জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে দেশে দ্রুত গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করবে- এমন সংস্কার তারা করতে পারে।’
খসরু বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ভিশন ২০৩০-এর মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারেক রহমানও এক বছর আগে সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন।
‘বিএনপি শুধু ঐক্যের ভিত্তিতে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবই উত্থাপন করেনি, তারা এটাও বলেছে যে, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ যদি আমাদের দলকে সমর্থন দেয় তাহলে জাতীয় সরকার গঠনের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য, জনগণের পূর্ণ সমর্থন ও আস্থার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের সংস্কার সাধন করতে হবে। আর নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই তা অর্জন করা সম্ভব।’
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুও একই কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই। সরকারের উচিত রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচন ঘিরে যেসব অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে, তা দূর করা।’
৩ দিন আগে
বিতর্কিত ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সতর্ক করলেন ফখরুল
বিতর্কিত ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এমন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া যাবে না, যার কারণে অন্তর্বর্তী সরকার বিতর্কিত হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা হাতছাড়া করা যাবে না। হাতছাড়া হলে জাতি হিসেবে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে বলেও সতর্ক করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: নেতিবাচক বক্তব্যে ফ্যাসিস্টরা আবারও মাথা তুলছে: ফখরুল
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) লালমনিরহাটের বড়বাড়ী কলেজ মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিস্টদের পরাজিত করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা শপথ নিয়েছি, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আধিপত্যবাদকে রুখে দেব। প্রয়োজনে শক্তিশালী আন্দোলন করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর বর্তমান সরকার এক নয়। এ সরকার একটি সংকটময় মুহূর্তে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এসেছে। ফলে এ সরকারকে নির্বাচনের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করতে হবে। এ জন্য সরকারকে সময় দিতে হবে আর আমাদের ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে সহযোগিতাও করতে হবে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক ও পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ।
আরও পড়ুন: ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন: ফখরুল
৩ দিন আগে
মুজিবের ছবি অপসারণ নিয়ে বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইলেন রিজভী
বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অপসারণ করায় সরকারের সমালোচনার কয়েক ঘণ্টা পর তার অপ্রত্যাশিত বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামানো হয়েছে, যেখানে সব রাষ্ট্রপতির ছবি রয়েছে। আসলে বঙ্গভবনের অন্য একটি অফিস কক্ষ থেকে মুজিবের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার আইন করে শেখ মুজিবের ছবি টাঙিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করেছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার শাসনামলের পতনের পর এ ধরনের ফ্যাসিবাদী আইনের কোনো কার্যকারিতা থাকে না।
তিনি বলেন, ‘অফিস থেকে আদালত সর্বত্রই যেন দুঃশাসনের প্রতীক না থাকে। ওই অনাকাঙ্ক্ষিত বক্তব্যের জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এর আগে বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানোর ঘটনাকে অযৌক্তিক বলে সমালোচনা করেন রিজভী।
সমালোচনা করে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেললেও জিয়াউর রহমান পরে তা আবার টাঙিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার(১২ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিজভী এসব কথা বলেন।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান উপলক্ষে দলটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়েছে: মাহফুজ আলম
বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে ফেলার ঘোষণা দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি বক্তব্যের কথাও উল্লেখ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আপারা এটি করতে পারেন, কিন্তু সময় সবসময় একইভাবে চলে না। সবার অবদানকে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। তাই আমি মনে করি, তার (মুজিবের) ছবি সরিয়ে ফেলা উচিত হয়নি।’
রিজভী আরও বলেন, জাতীয় জীবনে ব্যক্তির অবদান ইতিহাস শেষ পর্যন্ত বিচার করবে এবং যে কারও অবদান ও অপকর্মের মূল্যায়ন ও পরিমাপ করা জনগণের দায়িত্ব হওয়া উচিত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যেহেতু আমরা আওয়ামী লীগের মতো সংকীর্ণমনা নই, তাই আমরা মনে করি, বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানো উচিত হয়নি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সোমবার (১১ নভেম্বর) নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দরবার হল থেকে ৭১-পরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমানের ফ্যাসিবাদী ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার যে, ৫ আগস্টের পর বঙ্গভবন থেকে আমরা তার ছবি সরাতে পারিনি। ক্ষমাপ্রার্থী। তবে যতদিন মানুষের জুলাই মাসের চেতনা বেঁচে থাকবে ততদিন তাকে কোথাও দেখা যাবে না।’
আরও পড়ুন: শেখ মুজিবের ছবি সরানো উচিত হয়নি: রিজভী
৩ দিন আগে